Ajker Patrika

আগামী বছর বিশ্বের যে ১০টি শহরে না গেলেই নয়

আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ১৫
আগামী বছর বিশ্বের যে ১০টি শহরে না গেলেই নয়

লোনলি প্ল্যানেট নামটির সঙ্গে অন্তত ভ্রমণপ্রিয় পাঠকেরা বেশ পরিচিত। ভ্রমণগাইড প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়াবার নানা তথ্য দিয়ে পর্যটকদের সাহায্য করে তারা। আর এ বিষয়ের লোনলি প্ল্যানেটের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন জায়গা, শহর বা দেশের যে তালিকা তারা করবে সেটি মোটেই হেলাফেলা করার মতো কিছু হবে না। আজ আমরা পরিচিত হবে লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন ১০টি শহরের সঙ্গে।

জাদুঘর এবং ঐতিহাসিক সব দালান-কোঠার জন্য বিখ্যাত তুলুজ শহর। ছবি: উইকিপিডিয়াতুলুজ, ফ্রান্স
লোনলি প্ল্যানেটের অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় সবার ওপরে আছে ফ্রান্সের তুলুজ। গেহনে নদীর তীরে গড়ে ওঠা পুরোনো এই শহরটি প্রচুর সংখ্যায় জাদুঘর এবং ঐতিহাসিক সব দালান-কোঠার জন্য বিখ্যাত। এখনকার খাবারেরও আলাদা নাম আছে। 

লোনলি প্ল্যানেটের কনটেন্ট ও নির্বাহী সম্পাদক নিতিয়া চেম্বারস সিএনএনকে বলেন, ‘ছুটি কাটানোর জন্য এটি দারুণ একটি জায়গা। শিল্পসামগ্রীর গ্যালারি, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, রেস্তোরাঁ মিলিয়ে দারুণ ও বৈচিত্র্যময় এক শহর এটি।’ 

জনসংখ্যার দিক থেকে প্যারিস, মার্সেই এবং লিওর পরে ফ্রান্সের চতুর্থ বৃহত্তম শহর এটি। এর বিভিন্ন দালানকোঠায় গোলাপি রংয়ের ছটার কারণে কেউ কেউ একে পিংক সিটি নামেও ডাকে। ১২২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দ্য ইউনিভার্সিটি অব তুলুজ ইউরোপের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি। এখানকার সেতুগুলো মুগ্ধ করবে আপনাকে। আর বার, ক্লাব ও লাইভ মিউজিক মিলিয়ে রাতে জীবন্ত এক শহর তুলুজ।

সুন্দর সব সাগরসৈকতের জন্য নাম আছে পদুচেরি শহরের। ছবি: উইকিপিডিয়াপদুচেরি, ভারত
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় দুইয়ে থাকা শহরটি আপনাকে চমকে দিতে পারে। এটি ভারতের পদুচেরি, যেটি একটা সময় পরিচিত ছিল পন্ডিচেরি নামে। 

নিতিয়া চেম্বার বলেন, ‘পদুচেরি তালিকায় দুইয়ে থাকার কারণ এখানকার সৈকত এবং তীরে আছড়ে পড়া একের পর এক ঢেউ। এদিকে সাগরের ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সৈকতগুলোকেও পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে এখানে।’ চেন্নাই থেকে সহজেই ট্রেনে চেপে পৌঁছে যেতে পারবেন জায়গাটিকে।

১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ফরাসি কলোনিয়াল শাসন চলে জায়গাটিতে। এখানকার পথ-ঘাট, স্থাপত্য, খাবার-দাবার সবকিছুতে এখনো ফরাসিদের প্রভাব চোখে পড়ে। এখানকার কিছু মানুষ এখনো ফরাসি ভাষায় কথা বলেন। অনেকেই জায়গাটিতে ভারতের ‘লিটল ফ্রান্স’ নামে ডাকেন আদর করে। আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ শ্রী অরবিন্দ আশ্রম শহরের উত্তরে অবস্থিত।

বাঁচকো বিখ্যাত স্কিইংয়ের জন্য। ছবি: উইকিপিডিয়াবাঁচকো, বুলগেরিয়া
বুলগেরিয়ার ছোট্ট এই পার্বত্য শহরটি বছরজুড়েই টানে পর্যটকদের। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় তিনে থাকা শহরটি সবচেয়ে বেশি নাম কাটিয়েছেন বরফে ঢাকা পর্বতে স্কিইংয়ের জন্য।

রোমাঞ্চপ্রিয় কিংবা প্রকৃতির কোলে শান্ত একটি শহরের প্রত্যাশা করা পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য এটি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এটি ডিজিটাল নোমাডদের পছন্দের জায়গায় পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ সুন্দর এ শহরটিতে থেকে অনলাইনে চাকরি করেন কোনো ব্যস্ত শহরের প্রতিষ্ঠানে।

পুরোনো জাদুঘর, গির্জাসহ নানা স্থাপনাও আকৃষ্ট করবে। এখানকার মুখোরোচক খাওয়া-দাওয়াও আকৃষ্ট করবে আপনাকে। গন্ডোলা বা ক্যাবল কারে চলা, মাউন্টেন বাইকিং, পাহাড়ে ট্র্যাকিং এমন রোমাঞ্চকর আরও নানা কিছু করার সুযোগ মেলে এখানে স্কিইংয়ের পাশাপাশি। 

লোনলি প্ল্যানেটর তালিকায় চিয়াং মাইয়ের অবস্থান চারে। ছবি: উইকিপিডিয়াচিয়াং মাই
থাইল্যান্ডের শীতল শহরগুলির একটি চিয়াং মাই। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় এর অবস্থান চার। ‘আপনি যদি একজন ভোজনবিলাসী ভ্রমণপ্রেমী হন কিংবা নতুন স্বাদ নিতে আগ্রহী থাকেন তবে এটি আপনার পছন্দের তালিকায় ওপরের দিকে থাকবে। এখানকার প্রকৃতি, পরিবেশ খাবার-দাবারের সঙ্গে দারুণ মানানসই।’ বলেন চেম্বারস।

ব্যস্ত শহর এবং জমকালো সমুদ্র সৈকতগুলি এমনিতে থাইল্যান্ডকে পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত করেছে। তবে চিয়াং মাইয়ের শান্ত পাহাড়ি প্রকৃতি সম্পূর্ণ বিপরীত একটি পরিস্থিতি নিয়ে হাজির হয় পর্যটকদের সামনে। শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য, ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প এবং পাকা সব রাঁধুনির জন্য আলাদা নাম আছে শহরটির। বুঝতেই পারছেন এখানে দেখার এবং করার মতো  অনেক কিছু রয়েছে।

প্রাচীর ঘেরা পুরোনো শহর ছাড়িয়ে, রোমাঞ্চপ্রেমীরা পছন্দ অনুযায়ী জায়গা বেছে নেওয়াতেও বাধা নেই। জঙ্গল, নদী, গুহা, পাহাড় এবং জলপ্রপাত সবই পাবেন আশপাশে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে খাবার এবং অরণ্য চিয়াং মাই-এর বড় আকর্ষণ। আপনি যতবারই যান না কেন সেখানে সব সময় নতুন কিছু আবিষ্কার করা যায়।

জেনোয়ার রাস্তার দু-পাশে সুন্দর সব অট্টালিকা। ছবি: উইকিপিডিয়াজেনোয়া, ইতালি
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পাঁচে জেনোয়া। ইতালির বৃহত্তম সমুদ্র বন্দরটিতে পরস্পরবিরোধী কিছু বিষয় চোখে পড়বে। কোথাও জমকালো, ঝলমলে আলো এবং কোথাও গভীর ছায়ায় পূর্ণ। এটি অনেক ভ্রমণকারীর জন্য নৌভ্রমণে বেরিয়ে পড়ার একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ সকরে। তবে এর স্থাপত্য ঐতিহ্য তার পুরোনো গৌরবের কথা মনে করিয়ে দেয়। রিপাবলিক অব জেনোয়া বারো এবং তেরো শতকে ভূমধ্যসাগর শাসন করে। জেনোয়াতে এলে পুরোনো সেই ইতিহাস জীবন্ত হয়ে যেন আপনার সামনে ধরা দেবে। পুরোনো সেই শহরের অনেক কিছুই এখনো অক্ষত এখানে।

এখনকার স্থানীয় নানা খাবার মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহরের বাসিন্দারাও খুব বন্ধুভাবাপন্ন। তেমনি সমুদ্রবিষয়ক জাদুঘর, থিয়েটার ও সংগীত পরিবেশনার নানা জায়গা মুগ্ধ করে পর্যটকদের।

পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় জনবহুল শহর পিটার্সবার্গ। ছবি: উইকিপিডিয়াপিটার্সবার্গ, যুক্তরাষ্ট্র
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পিটসবার্গের অবস্থান ছয়ে। ফিলাডেলফিয়ার পর পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় জনবহুল শহর এটি। অ্যালিঘেনি এবং মনোনগাহেলা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থান শহরটির। এ দুটি নদী মিলে জন্ম দিয়েছে ওহাইও নদীর।

যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত শিল্পে বড় অবদানের জন্য একসময় স্টিল সিটি নামেই বেশি পরিচিত ছিল। তবে এখনকার নতুন কিছু পরিচয় যোগ হয়েছে শহরটির। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।

শহর জুড়ে গড়ে উঠেছে মুখরোচক খাবারের সব রেস্তোরাঁ, জাদুঘরগুলো বিশ্বমানের শিল্প ও আঞ্চলিক ইতিহাসে ভরপুর; শহরের তিনটি নদী বরাবর সারা বছর প্রচুর কার্যকলাপের সুযোগ আছে।

রাতের ওসাকা শহর। ছবি: উইকিপিডিয়াওসাকা, জাপান
বিশ্বে জনবহুল শহরের তালিকায় সেরা দশে থাকা জাপানের এ শহরটিতে এক কোটি ৮৯ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষের বাস। আর লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন সপ্তম শহর এটি। 

বাণিজ্য ও শিল্পের কেন্দ্র হিসাবে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরটিতে এখনো অনেক বড় জাপানি কোম্পানির সদর দপ্তর অবস্থিত।

ওসাকা তার নানা পদের খাবার এবং আধুনিক স্থাপত্যের জন্য পর্যটকদের কাছে প্রিয় গন্তব্য। শহরের মেট্রো বছরে ৯০ কোটির বেশি যাত্রী পরিবহন করে। এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান ওসাকা ক্যাসল। চৌদ্দ শ বছর আগে স্থাপিত বৌদ্ধ মন্দির শিতেনো-জি ছাড়াও বিখ্যাত ওসাকা অ্যাকোরিয়াম কাইয়ুকান এবং তেমপোজান নাগরদোলা এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য জায়গা।

কুরিতিবার বোটানিক্যাল গার্ডেন। ছবি: উইকিপিডিয়াকুরিতিবা, ব্রাজিল 
ব্রাজিলের পারানা রাজ্যের রাজধানী শহর কুরিতিবা তার উদ্ভাবনী নগর-পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগের জন্য বিখ্যাত। কীভাবে একটি শহর সফলভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য পরিচিত শহরটি। এখানকার উদ্ভিদ উদ্যানটি একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। শহরটিতে অসংখ্য আর্ট গ্যালারি, থিয়েটার রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী ব্রাজিলিয়ান খাবার থেকে শুরু করে নানা দেশের বিভিন্ন পদের খাবারের জন্য আলাদা নাম আছে। কুরিতিবায় ৩০টির বেশি পার্ক এবং সবুজ আচ্ছাদনযুক্ত জায়গা রয়েছে।

পালমা দে মালোরকা শহরের একটি ক্যাথেড্রাল। ছবি: উইকিপিডিয়াপালমা দে মালোরকা, স্পেন
মালোরকা দ্বীপের রাজধানীটি একই নামের একটি উপসাগরের তীরে অবস্থিত। এখানকার চমৎকার জলবায়ু পর্যটকদের ভারি পছন্দ। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা আঠারো ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। চমৎকার সব সৈকত এবং ঐতিহ্যবাহী ইমারতে ভরপুর পুরোনো শহর পালমা দে মালোরকাকে পর্যটকদের কাছে এক আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে।

এখানে বেড়াতে আসা মানুষদের দ্য ক্যাথেড্রাল, দা আলদমাদাইনা প্যালেস, প্লাজা মেয়র স্কয়ারের জন্য হাতে আলাদা করে কিছুটা সময় রাখতে হয়। পাইনের জঙ্গল এবং পাম গাছের সারি শহরের বড় বৈশিষ্ট্য।

দ্বীপের উপকূল বরাবর সৈকত এবং পাহাড়ের দেখা মেলে। ভেতরের দিকে গ্রাম এবং এক হাজার ৫০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতার পর্বতশ্রেণী রয়েছে।

কানাডার আলবার্টা শহরের রাজধানী এডমন্টন। ছবি: উইকিপিডিয়াএডমন্টন, কানাডা
কানাডার আলবার্টা শহরের রাজধানী এডমন্টন। ঝাঁ চকচকে আকাশচুম্বী ভবন, বিভিন্ন বিনোদনের সুবিধা এবং নানা ধরনের উৎসব মিলিয়ে আলবার্টার মতো শহর পাবেন কমই । ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে কানাডার পঞ্চম বৃহত্তম শহরটি গত এক দশকে পরিবর্তিত হয়েছে। 

নর্থ সাসকাচোয়ান নদীর তীরের এর অবস্থান। বছরে ২২০০ ঘণ্টার বেশি উজ্জ্বল সূর্যালোক পায় শহরটি। গ্রীষ্মে ১৭ ঘণ্টা পর্যন্ত সূর্যালোক পায় এটি। শীতে নিয়মিতই দেখা মেলে নর্দান লাইটের। বছরজুড়ে অন্তত ৩০টি ফেস্টিভ্যাল বা উৎসব হয় এখানে। শহরের কেন্দ্র থেকে কেবল এক ঘণ্টায় গাড়িতে পৌঁছে যেতে পারবেন বিখ্যাত এল্ক আইল্যান্ড ন্যাশনাল পার্কে।

সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট, সিএনএন, ফ্যাক্টস ডট নেট, ওয়ার্ল্ড সিটি ট্রেইল ডট কম 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী ১০ রুটি

ফিচার ডেস্ক
বোলানি, আফগানিস্তান। ছবি: উইকিপিডিয়া
বোলানি, আফগানিস্তান। ছবি: উইকিপিডিয়া

রুটি শব্দটি দেশভেদে বদলে যায়। কোথাও তা পাউরুটি, কোথাও নান, আবার কোথাও ডালপুরি। রুটি কী দিয়ে তৈরি হবে বা কেমন হবে, এটা নির্ধারণ করে দেয় সেই দেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাস।

‘ব্রেড: আ গ্লোবাল হিস্ট্রি’ বইয়ের লেখক উইলিয়াম রুবেল বলেন, ‘রুটি কেমন হবে, সেটি বিভিন্ন সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে। এটাকে নির্দিষ্ট সংজ্ঞায় বাঁধা যায় না।’ রুটির ইতিহাস বিভিন্ন সংস্কৃতির মতো হাজার বছরের পুরোনো।

পুরাতাত্ত্বিকদের গবেষণায় জানা গেছে, প্রায় ১০ হাজার বছর আগে জর্ডানের ব্ল্যাক ডেজার্ট অঞ্চলে মানুষ কন্দজাতীয় উদ্ভিদ ও শস্য একসঙ্গে মিশিয়ে আগুনে পুড়িয়ে রুটির মতো একধরনের খাবার তৈরি করত। সেটাই ছিল মানুষের তৈরি প্রাচীনতম রুটি।

এশিয়া অঞ্চলে রুটি বেশ জনপ্রিয়। প্রায় প্রতিটি দেশে রুটি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। কোথাও তা প্রধান খাবার, আবার কোথাও নিয়মিত খাবারের অংশ। দেখে নিন কোন দেশের রুটির নাম কী।

বোলানি, আফগানিস্তান

আফগানিস্তানের খুব জনপ্রিয় খাবার বোলানি। পাতলা ময়দার রুটির ভেতরে ভরা থাকে আলু, পালংশাক বা ডাল। এরপর তেলে ভাজা হয় যতক্ষণ না বাইরে মচমচে আর ভেতরে নরম হয়। গরম-গরম বোলানি পরিবেশনে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে আলু আর পেঁয়াজপাতার ঘ্রাণ। ঘরে হোক বা উৎসবের আয়োজন—আফগানদের খাবারের টেবিলে বোলানি মানেই বিশেষ স্বাদ।

লাভাশ, আর্মেনিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া
লাভাশ, আর্মেনিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া

লাভাশ, আর্মেনিয়া

আর্মেনিয়ার রুটি লাভাশ কেবল খাবার নয়, এটি তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। দেশটিতে নবদম্পতির মাথা লাভাশে ঢেকে দেওয়া হয় আশীর্বাদের নিদর্শন হিসেবে। রুটি তৈরির কাজটিও একধরনের সামাজিক আয়োজন। গ্রামের নারীরা দল বেঁধে ময়দা বেলে বড় চাদরের মতো পাতলা করে নেন। তারপর সেটি সাবধানে মাটির ওভেনে দেওয়া হয়। মাত্র ৩০ সেকেন্ডে রুটি হয়ে ওঠে বাদামি আর মচমচে। ২০১৪ সালে ইউনেসকো লাভাশকে আর্মেনিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

লুচি, বাংলাদেশ। ছবি: উইকিপিডিয়া
লুচি, বাংলাদেশ। ছবি: উইকিপিডিয়া

লুচি, বাংলাদেশ

বাংলাদেশের নাশতার জন্য জনপ্রিয় লুচি। গমের ময়দা ময়ান করে নির্দিষ্ট আকারে গরম তেলে দিলেই ফুলে ওঠে গোল, সোনালি লুচি। ঢাকার ফুটপাতের দোকান থেকে শুরু করে বাড়ির রান্নাঘর—সব জায়গাতেই লুচি মানে দারুণ স্বাদ। এর সঙ্গে রাখুন আলুর দম কিংবা ছোলার ডাল অথবা মাংসের ঝোল। বাংলা ঘরানার এই রুটি উৎসব বা অতিথি আপ্যায়নের জন্য বেশ জনপ্রিয়।

শাওবিং, চীন। ছবি: উইকিপিডিয়া
শাওবিং, চীন। ছবি: উইকিপিডিয়া

শাওবিং, চীন

চীনের উত্তরাঞ্চলের রুটি শাওবিং। এর বাইরের অংশে থাকে তিল, ভেতরে অসংখ্য পাতলা স্তর। অভিজ্ঞ রুটিওয়ালারা ময়দা বেলে ঘুরিয়ে ও ভাঁজ করে তৈরি করে এই রুটি। একেকটি শাওবিংয়ে ১৮ টির বেশি স্তর থাকে। চাইলে মিষ্টি হিসেবে তিলের পেস্ট বা চিনি ভরা শাওবিং খাওয়া যায়। তবে যাঁরা ঝাল পছন্দ করেন, তাঁরা মরিচ ও মাংস যুক্ত শাওবিং খান। উত্তর চীনের সকালের টেবিলে শাওবিং প্রায় প্রতিদিনের খাবার।

পরোটা, ভারত। ছবি: উইকিপিডিয়া
পরোটা, ভারত। ছবি: উইকিপিডিয়া

পরোটা, ভারত

ভারতের জনপ্রিয় রুটি হলো পরোটা। এটি সাধারণ রুটি থেকে একটু আলাদা। কারণ, একেকটি পরোটা বানাতে ময়দা বারবার ভাঁজ ও ঘি বা তেল মেখে তৈরি করা হয়। ফলে রুটির একাধিক স্তর তৈরি হয়ে ভাজার পর মচমচে হয়ে যায়। পরোটা শুধু সুস্বাদুই নয়, এটি ভারতের রান্নার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১২ শতকের ভারতীয় রান্নার বইতেও পরোটার উল্লেখ পাওয়া যায়।

গামবাং, ইন্দোনেশিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া
গামবাং, ইন্দোনেশিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া

গামবাং, ইন্দোনেশিয়া

জাকার্তার পুরোনো বেকারিগুলোতে আজও পাওয়া যায় রুটি গামবাং। এই রুটি বানানোর সময় গমের ময়দার সঙ্গে পাম চিনি ও দারুচিনি মেশানো হয়। ফলে এটি নরম হয় এবং সুগন্ধ ছড়ায়। রুটির নাম এসেছে ‘গামবাং’ নামে এক পুরোনো বাদ্যযন্ত্র থেকে। মূলত, গামবাং রুটি দেখতে লম্বাটে আকৃতি বাদ্যযন্ত্রের মতো।

সানগাক, ইরান। ছবি: উইকিপিডিয়া
সানগাক, ইরান। ছবি: উইকিপিডিয়া

সানগাক, ইরান

ইরানের রুটি সানগাক বানানো হয় বিশেষ পদ্ধতিতে। সেখানে গরম পাথরের ওপর সরাসরি রুটি বেক করা হয়। ফলে রুটির গায়ে ছোট ছোট পোড়া দাগ পড়ে। এটি খেতে মচমচে হয়। গরম-গরম সানগাক সাধারণত পনির, জলপাই ও তাজা সবুজ শাকের সঙ্গে খাওয়া হয়।

কারে পান, জাপান। ছবি: উইকিপিডিয়া
কারে পান, জাপান। ছবি: উইকিপিডিয়া

কারে পান, জাপান

জাপানের কারে প্যান বা কারি রুটি বিশেষ খাবার। নরম গমের ময়দার ভেতরে ভরা থাকে ঘন জাপানি কারি। এর বাইরের আবরণে থাকে ব্রেডক্রাম্বের আস্তরণ। এরপর ডুবো তেলে ভাজার পর রুটি হয় বাইরে মচমচে, ভেতরে নরম ও সসযুক্ত। এটি শিশুদের কাছে এত জনপ্রিয় যে জাপানে ‘কারে পান ম্যান’ নামের এক কার্টুন চরিত্রও তৈরি হয়েছে।

আপ্পম, শ্রীলঙ্কা। ছবি: উইকিপিডিয়া
আপ্পম, শ্রীলঙ্কা। ছবি: উইকিপিডিয়া

আপ্পম, শ্রীলঙ্কা

চালের গুঁড়া ও নারকেল দুধ মিলিয়ে তৈরি হয় আপ্পম। শ্রীলঙ্কার রাস্তায় দাঁড়িয়ে গরম আপ্পম খাওয়া সেখানকার নিয়মিত চিত্র। এটি পাতলা ও মচমচে এবং এর মাঝের অংশ নরম। এটি খাওয়া হয় নারকেলের চাটনি, মুরগির কারি বা ডিম দিয়ে। শ্রীলঙ্কা ছাড়াও দক্ষিণ ভারতের কেরালায় এর জনপ্রিয়তা অনেক।

মালাওয়াচ, ইয়েমেন। ছবি: উইকিপিডিয়া
মালাওয়াচ, ইয়েমেন। ছবি: উইকিপিডিয়া

মালাওয়াচ, ইয়েমেন

মালাওয়াচ বানাতে প্রথমে ময়দা বেলা হয় পাতলা করে। এরপর প্রতিটি স্তরের মাঝে মাখন বা তেল মেখে ভাঁজ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় একাধিক স্তর তৈরি হয়, যা ভাজার পর মুখে একেবারে গলে যায়। রুটি গরম তাওয়ায় সোনালি হয়ে উঠলে ছিটানো হয় কালোজিরা বা তিল। ইয়েমেনিরা সাধারণত সকালে চায়ের সঙ্গে এটি খেয়ে থাকে।

হাজার বছর পেরিয়ে রুটি এখনো বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে জনপ্রিয় খাবার। রুটির আকৃতি, স্বাদ, তৈরি করার পদ্ধতি দেশভেদে ভিন্ন। প্রতিটি সংস্কৃতি রুটিকে তাদের নিজের রন্ধনপ্রণালি, ইতিহাস ও খাবারের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে। তাই রুটি শুধু খাবার নয়, এটি মানুষের সৃজনশীলতা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ।

সূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হেমন্তের সকালে দুধ লাউ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
দুধ লাউ।
দুধ লাউ।

রোজ সকালে রুটি-সবজি খেতে কার ভালো লাগে! একদিন না হয় হেমন্তের মিঠে রোদমাখা সকালে নাশতার টেবিলে রাখুন দুধ লাউ আর ফুলকো লুচি। আপনাদের জন্য দুধ লাউয়ের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।

উপকরণ

কচি লাউ অর্ধেকটা বা ১ কাপ, তরল দুধ ১ লিটার, চিনি পৌনে ১ কাপ, লবণ ১ চিমটি, এলাচি ও দারুচিনি আধা পিস করে, কিশমিশ ১০ থেকে ১২টা, বাদাম কুচি সাজানোর জন্য।

দুধ লাউয়ের সঙ্গে রাখুন ফুলকো লুচি।
দুধ লাউয়ের সঙ্গে রাখুন ফুলকো লুচি।

প্রণালি

লাউয়ের খোসা ফেলে মিহি কুচি করে কেটে ধুয়ে নিন। এবার হাঁড়িতে দুধ দিয়ে ফুটে উঠলে এলাচি ও দারুচিনি, লবণ, লাউ, চিনি দিয়ে অনবরত নেড়ে নিন। ঘন হয়ে এলে কিশমিশ দিয়ে নামিয়ে নিন। সার্ভিং ডিশে ঢেলে বাদাম কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। তৈরি হয়ে গেল সুস্বাদু দুধ লাউ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ২৮
আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

মেষ: আজ আপনার এনার্জি থাকবে তুঙ্গে। তাই সাবধানে থাকুন, অতিরিক্ত এনার্জি দিয়ে যেন আবার কারও সঙ্গে ঝগড়া না করে বসেন! প্রেমজীবন ভালো যাবে, তবে বেশি ফ্লার্ট করতে গিয়ে বসের সঙ্গে ঝামেলা বাধাবেন না যেন!

বৃষ: আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকবে। মানে, আপনার ওয়ালেট আজ আপনাকে বলবে, ‘আজ একটু আরাম করতে দাও প্লিজ, কাল দেখব!’ ফালতু খরচ থেকে দূরে থাকুন। রেগে গেলে কিন্তু মুড়ি-মুড়কির মতো টাকা খরচ হবে।

মিথুন: যোগাযোগের দিন আজ! তবে খেয়াল রাখবেন, মুখ ফসকে যেন এমন কিছু বলে না দেন—যাতে আপনার বন্ধুরা আপনাকে ‘মীরজাফর’ বলে ডাকে! আর যদি দেখেন আপনার প্রিয়জন আপনাকে কিছু বলছে না, তাহলে বুঝবেন নিশ্চয়ই কিছু একটা লুকানো হচ্ছে!

কর্কট: পারিবারিক শান্তি বজায় রাখতে গিয়ে আজ হিমশিম খাবেন। মনে হবে যেন আপনি কোনো চিড়িয়াখানায় দাঁড়িয়ে আছেন, যেখানে সবাই শুধু চেঁচাচ্ছে। রাতে ভালো করে ঘুমান, না হলে সকালে দেখবেন আপনার মুড ‘দাদাগিরি’ করার মতো হয়ে গেছে।

সিংহ: আজ আপনি নিজেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করবেন। তবে সবার কাছে গিয়ে যদি বলেন, ‘আমিই আসল বস!’ , তাহলে আপনার কপালে দুঃখ আছে! কাজের জায়গায় একটু নমনীয় হন, না হলে লোকে আপনাকে ‘হিটলার’ ভেবে বসবে।

কন্যা: সবকিছু নিখুঁত করার নেশা আজ আপনাকে চেপে ধরবে। অফিসের ফাইল থেকে শুরু করে আলুর চিপসের প্যাকেট পর্যন্ত সবকিছু আপনার কাছে ‘পারফেক্ট’ চাই। এতে চারপাশে লোক কমবে, তাই একটু ছাড় দিন নিজেকে!

তুলা: আজ দিনটি ভালোবাসার জন্য একদম পারফেক্ট। তবে ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে ঝগড়া হলে, নিজেকে সামলান। না হলে আপনার ‘ব্যাংক ব্যালেন্স’ একেবারে বিগড়ে যাবে! সন্ধ্যায় পছন্দের খাবার খান, মন ভালো হবে।

বৃশ্চিক: গোপনীয়তা বজায় রাখা আজ আপনার জন্য খুব জরুরি। আপনার গোপন তথ্য যদি আজ ফাঁস হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন আপনার সর্বনাশ! তাই নিজের ফোনটা আজ সাবধানে রাখুন, আর কাউকে হাত দিতে দেবেন না।

ধনু: অ্যাডভেঞ্চার আর ভ্রমণের নেশা আজ আপনাকে পাগল করে তুলবে। তবে বিদেশ ভ্রমণে না গিয়ে, না হয় আজ আশপাশের কোনো চায়ের দোকান থেকে ঘুরে আসুন! তাতে মনও ভালো হবে, আর পকেটও বাঁচবে!

মকর: কাজের প্রতি আপনার মনোযোগ আজ প্রশংসিত হবে। তবে অতিরিক্ত কাজ করতে গিয়ে নিজেকে ‘যন্ত্রমানব’ বানিয়ে ফেলবেন না। ছুটির দিনেও যদি কাজ করেন, তাহলে আপনার পার্টনার আপনাকে সত্যি সত্যি ‘রোবট’ ভেবে বসতে পারে!

কুম্ভ: আজ আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেবেন। কিন্তু আড্ডায় বেশি জ্ঞান দিতে যাবেন না। তাতে দেখবেন, বন্ধুরাই আপনাকে ‘গ্রহরাজ’ বলে খেপাচ্ছে! একটু সহজ হন, মজা করুন!

মীন: আজ আপনার মন খুব উড়ু উড়ু থাকবে। দিবাস্বপ্ন দেখতে দেখতে হঠাৎ যেন পকেটমার না হয়ে যান! ‘কল্পনার জগতে’ বেশি ডুবে থাকবেন না। বাস্তবের দিকে নজর দিন। না হলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মিস করে যেতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চুলে তেল মাখলে কী করবেন ও কী করবেন না

সানজিদা সামরিন, ঢাকা 
তেল যেমন চুলের গোড়া মজবুত করে, তেমনি বাড়ায় ঔজ্জ্বল্য। মডেল: সুমাইয়া, ছবি: মঞ্জু আলম
তেল যেমন চুলের গোড়া মজবুত করে, তেমনি বাড়ায় ঔজ্জ্বল্য। মডেল: সুমাইয়া, ছবি: মঞ্জু আলম

শত শত বছর ধরে মানুষ কেশচর্চার অংশ হিসেবে চুলে নানা রকম তেল ব্যবহার করে আসছে। তেল চুলের জন্য ভীষণ উপকারী, এ কথা কে না জানে? তেল যেমন চুলের গোড়া মজবুত করে, তেমনি বাড়ায় ঔজ্জ্বল্য। এ ছাড়া নিয়মিত তেল ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বকও থাকে সুস্থ। কিন্তু তেল চুল ও মাথার ত্বকের জন্য কতখানি উপকারী, তা নির্ভর করছে আপনি কীভাবে ব্যবহার করছেন তার ওপর। চুলের তেল মাখার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় মেনে চলবেন ও যা বর্জন করতে হবে, তা জেনে নিন।

যা করবেন

সঠিক তেল নির্বাচন করুন

চুলের যত্নে সঠিক তেল নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরনের তেল রয়েছে। প্রতিটি তেলই আবার গুণের দিক থেকে আলাদা। চুলের কোন সমস্যার জন্য কোন তেল বেছে নিতে হবে, তা আগে বুঝতে হবে। যেমন নারকেল ডিপ ক্লিনজিংয়ের জন্য খুবই ভালো। অন্যদিকে আরগান তেল চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এনে দেয়, পেঁয়াজের তেল চুল গজাতে ও বড় করতে সহায়তা করে। চুলের কোন সমস্যার জন্য কোন তেল ব্যবহার করতে হবে, সেটা বুঝে তেল বাছাই করুন।

মাথার ত্বকের ধরন অনুসারে সঠিক তেল নির্বাচন করুন। ছবি: পেক্সেলস
মাথার ত্বকের ধরন অনুসারে সঠিক তেল নির্বাচন করুন। ছবি: পেক্সেলস

মাথার ত্বক, চুলের দৈর্ঘ্য ও ডগায় তেল দিন

চুলে তেল ব্যবহারের সময় অবশ্যই গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত ভালোভাবে মাখুন। এতে করে তেলের পুষ্টি মাথার ত্বক থেকে শুরু করে পুরো চুলই পাবে। চুল ফিরে পাবে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা ও কোমলতা।

আলতো হাতে ম্যাসাজ করুন

মাথার ত্বকে তেল দিয়ে আঙুলের ডগার সাহায্যে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। আপনার মাথার ত্বকে নখের আঁচড় যেন না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে করে তেলের পুষ্টি মাথার ত্বক খুব ভালোভাবে শুষে নিতে পারবে। চুলেও ছড়িয়ে পড়বে জেল্লা।

চুলে তেল মেখে কয়েক ঘণ্টা রাখুন

চুলে তেল মাখার পর ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা রাখতে পারলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। চুল যদি খুব বেশি শুষ্ক বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে ভালোভাবে তেল ম্যাসাজ করে সারা রাত রেখে দিন। সকালে ভালোভাবে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার দিলেই চুল মসৃণ দেখাবে।

যা করবেন না

অতিরিক্ত তেল ব্যবহার এড়িয়ে চলুন

অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করলে চুলের গোড়ায় ময়লা জমার আশঙ্কা থাকে। আর এই ময়লা থেকেই হতে পারে সংক্রমণ। কারণ অতিরিক্ত তেল ব্যবহারের ফলে শ্যাম্পু করে যদি বাড়তি তেল তুলে ফেলা না যায়, তাহলে পরবর্তী সময়ে ধুলাবালু ও দূষণ খুব সহজেই চুলে আটকে থাকে। এর ফল কিন্তু ভালো হয় না।

তৈলাক্ত চুলে বেশিক্ষণ তেল রাখবেন না

যাঁদের চুল প্রাকৃতিকভাবেই তৈলাক্ত, তাঁরা দীর্ঘক্ষণ চুলে তেল রাখলে ভালোর পরিবর্তে খারাপই হতে পারে। এতে করে মাথার ত্বকে প্রাকৃতিক তেল ও ব্যবহৃত তেল জমা হয়ে ছিদ্র বন্ধ করে দিতে পারে। এতে খুশকি ও চুলকানি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এ ছাড়া অতিরিক্ত তেল জমা হলে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে।

চুল ধুতে গরম পানি ব্যবহার করবেন না

অনেকের ধারণা, চুলে তেল মাখার পর কুসুম গরম পানি ব্যবহার করলে সহজে তেল অপসারিত হয়। কিন্তু চুলে কেবল ঠান্ডা পানিই ব্যবহার করতে হবে। গরম পানি ব্যবহার করলে চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা নষ্ট হতে পারে। তাতে চুল হয়ে উঠতে পারে অতিরিক্ত শুষ্ক।

অতিরিক্ত সালফেটযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না

সোডিয়াম লরেল সালফেট ও সোডিয়াম লরেথ সালফেট, সাধারণত এই দুই ধরনের সালফেট শ্যাম্পু তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। শ্যাম্পু করার সময় যদি অল্পতেই মাথায় ফেনা হয়, তা হলে বুঝতে হবে সেই শ্যাম্পুতে যথেষ্ট পরিমাণ সালফেট রয়েছে। মাথার ত্বক খুব ভালো করে পরিষ্কার করতে পারলেও স্পর্শকাতর ত্বকের ক্ষেত্রে এ সালফেট ক্ষতিকর হতে পারে। মাথার ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠার জন্যও এটি দায়ী। এ ছাড়া, চড়া গন্ধযুক্ত ও ‘আলফা-হাইড্রক্সি অ্যাসিড’ রয়েছে এমন প্রসাধনী ব্যবহার করা ভালো। ত্বকে র‍্যাশ, চুলকানি, লালচে ভাব বা কোনো সংক্রমণ থাকলে এই রাসায়নিকনির্ভর প্রসাধনী ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। নয়তো মাথার ত্বকে তেল মেখে উপকার পাওয়া যাবে না।

এসব নিয়ম মেনে যদি তেল ব্যবহার করেন, তাহলে চুলের শুষ্কতা দূর হবে, চুলও হয়ে উঠবে ঝলমলে।

সূত্র: হেলথলাইন, স্কিনক্র‍্যাফট ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

আজকের রাশিফল: আপন গোপন তথ্য সামলে রাখুন, প্রচুর ভালোবাসুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে এক দিনে ১৫৩ টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত