আমিনুল ইসলাম নাবিল
‘জাতে আমি ঢাকাইয়া কইতে আমার সিনা টান’—শিল্পী হায়দার হোসেনের বিখ্যাত এই গান পুরোনো হওয়ার নয়। গানটি ঢাকাইয়াদের অনেক মহব্বতের। বাহান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির এই শহরের পরতে পরতে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ইতিহাস-ঐতিহ্য বইপুস্তক কিংবা দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে গল্প শুনে জানা যায় কিন্তু যে জিনিসটা জানা যায় না বা পরিমাপ করা যায় না, সেটি হচ্ছে ‘ভালোবাসা’। এই পুরোনো শহরেই জড়িয়ে আছে আমাদের প্রেম-ভালোবাসার অনেক গল্প।
সেসব কথা থাক। অনেক পাওয়ার মাঝেও আমাদের ঢাকাইয়াদের একটা জিনিসের ভীষণ অভাব। সেটি হচ্ছে ‘অক্সিজেন’। অক্সিজেনের খোঁজে আমরা সব সময়ই চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকি। সুযোগ পেলেই দৌড়। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকেই এবার আমরা ৬ ঢাকাইয়া মিলে ট্যুর দিই কুয়াকাটায়। সেটি নিয়েই মূলত এই লেখা...
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এর কারণ ছিল দুটো। এক. পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ছোট ভাই নাইমের বাসায় দাওয়াত আর দুই. ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা বিলাসী লঞ্চে ভ্রমণ।
সারা দিন অফিস শেষে রাত ৯টার সুন্দরবন-১৬ লঞ্চে সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশে আমরা রওনা হই। একদিকে অনেক দিন পর ট্যুর, আরেকদিকে এমন জাঁকালো আরামদায়ক লঞ্চ রীতিমতো স্বস্তি ও প্রশান্তি দিয়েছে। দুই কেবিনে সারা রাত এপাশ-ওপাশ করলেও ঘুমানো যায়নি। কেননা এমন সুন্দর আবহাওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে গান, আড্ডাকেই বেশি আনন্দদায়ক মনে হয়েছে। গান, আড্ডাতেই আমাদের রাতটা কেটেছে। মাঝে রাতের খাবার সেরেছি লঞ্চের ডাইনিংয়ে। লঞ্চের ভেতর এমন বিলাসী ডাইনিং তার ওপর মজার মজার খাবার সত্যিই অবাক করেছে। এভাবে হাসি-আড্ডা-গানের পর আসে কুয়াশা ঢাকা ভোর। ততক্ষণে আমরা পৌঁছে গেছি বরিশাল লঞ্চ ঘাটে। ফজর নামাজ পড়ে এবার আমাদের গন্তব্য নাইমের বাসা পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলায়।
লঞ্চ থেকে নেমে আমরা চাপাচাপি করে উঠে পড়লাম অটোতে। চলে গেলাম বাস কাউন্টারে। আরামদায়ক লঞ্চের পর বাসের ভ্রমণটা কেমন যেন শরীরে সইল না। ক্লান্ত শরীরে যেখানে চোখ বন্ধ করলেই ঘুমিয়ে পড়ার কথা সেখানে অপলক চেয়ে আছি জানালার বাইরে। বাইরেও প্রকৃতি উপভোগের সুযোগ নেই। কেননা জানালার বাইরে শুধু কুয়াশা আর কুয়াশা। নাইমের বাসায় গিয়ে অনেক মজা করতে হবে এই চিন্তায় অনেকটা জোর করেই ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। ঘুমিয়েই পড়লাম কীভাবে যেন। চোখ খুলতেই দেখি বাস ফেরি পার হচ্ছে। কত স্মৃতি যে তখন মনের জানালায় উঁকি দিল। এর আগে প্রথমবার ফেরিতে উঠেছিলাম ২০১৮ সালে। ঢাকা থেকে খুলনায় গিয়েছিলাম সেবার বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। স্মৃতিচারণ করতে করতে পৌঁছে গেলাম পটুয়াখালী সদরে। এবার ফের চেপে বসলাম অটোতে। রাস্তা যেন ফুরাবার না। শরীরটাকে একদম আধমরা করে দুপুর ১১টায় আমাদের অটো থামল নাইমের বাড়ির উঠানে। নাইমদের বাড়িটা অনেক আকর্ষণীয়। মাটির ডুপ্লেক্স বাড়ি। দেখেই মনে ধরল। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই আপ্যায়ন শুরু। সতেজ খাবার খেয়ে শরীরটা মুহূর্তেই চাঙা হয়ে গেল। বেরিয়ে পড়লাম ব্যাট-বল হাতে। বহুদিন পর খেলায় মেতে উঠলাম। একসময় এ রকম কত ক্রিকেট খেলেছি বংশাল টেকপট্টির মাঠে। সে যাই হোক তিন ম্যাচের সিরিজে আমার দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেসব কথা থাক, এবার পালা খাবারের। ওমা একি আয়োজন! টেবিল জুড়ে খাবার আর খাবার। হাঁসের মাংসটা যা মজাদার ছিল, উফ!
ঢাকায় থাকলে নির্ঘাত এমন উদরপূর্তির পর নাক ডেকে ঘুম দিতাম। কিন্তু জায়গাটিতো আর ইট-পাথরের নয়, জায়গাটা মাটি আর সবুজের, আহা! ছোট ভাই নাইম ও তাঁর চাচাতো ভাই সাকিবের নির্দেশনায় আমরা ছুটে চললাম তেঁতুলিয়া নদীর দিকে। অনেকটা পথ হাঁটলেও ক্লান্তি নেই। পাশে বন্ধু আনাস ও সাদের নানান মজার মজার কথা। মনে হলো যেন ফিরে গেছি সেই শৈশবে। তেঁতুলিয়া নদী অনেক সুন্দর, তার চেয়েও সুন্দর ছিল আবহাওয়া। একদম পড়ন্ত বিকেল। একটা ট্রলার ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম। সাঁতার না জানায় কিছুটা ভয় হচ্ছিল। কিন্তু ভয়কে জয় করেইতো জীবনের পথ চলতে হয়। সাহসটা আরও বেড়ে গেছে যখন ট্রলার চালক নিজেই বললেন, ‘এখানটায় চড়, পানি হাঁটুর সমান।’ লোভ সামলাতে না পেরে নদীর চড়ে নেমে হাঁটলাম, দৌড়ালাম, ছবি তুললাম। আহ! কি যে শান্তি। ট্রলার থেকে নামার সময় বন্ধু সাদ কিছুটা ব্যথা পেলেও সেগুলোকে পাত্তা দেওয়ার ছেলে সে নয়। একদম ‘ঢাকাইয়া আগুন’। বাখরখানির চুল্লিতে বেড়ে ওঠা!
নদী পর্ব শেষে এখন গ্রাম ঘুরে দেখার পালা। একদম গ্রাম্য সাজেই বেরিয়ে পড়লাম, লুঙ্গি ও গায়ে চাদর জড়িয়ে। বন্ধুদের থেকে উপাধিও পেয়ে গেলাম ‘ইউপি চেয়ারম্যান’। আমি মানুষটা এমনই। ফাইভ স্টার হোটেলের চেয়ে টং দোকান আমায় বেশি টানে। গ্রাম্য বাজারের গরম-গরম জিলাপি, কাচা পাতির রং চা খেলাম। এটার যে কি অনুভূতি সেটা বোঝানোর মতো নয়। টং দোকানে মান্নার সিনেমা চলছে, একদম ভিড় জমিয়ে মানুষ তা উপভোগ করছে। একদম গ্রামের সাদামাটা জীবন। বাঁশের সাঁকো পার করে ফিরলাম নাইমের বাসায়। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানায় একটু গড়াগড়ি খেতেই বারবিকিউর জন্য ডাকাডাকি। খোলা আকাশের নিচে, হাড়কাঁপানো শীতে পরিবেশে বারবিকিউ এবারই প্রথম। বারবিকিউ পর্ব শেষে অবশেষে ঘুমের পালা। রাত পেরোলেই আমাদের যাত্রা কুয়াকাটা।
পরদিন সকাল সকাল রওনা দেওয়ার প্ল্যান থাকলেও খেজুরের রস ও ডাব খাওয়ার লোভ সামলানো যায়নি। খেতে খেতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল, রওনা হলাম কুয়াকাটার উদ্দেশে। অটোযোগে প্রথমে দশমিনা বাজার, সেখান থেকে মোটরসাইকেলে আমাদের এবারের গন্তব্য পটুয়াখালী সদর। মোটরসাইকেলে দীর্ঘপথ বেশ আরামদায়কই ছিল। কিন্তু মাঝে একটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। ক্লান্ত শরীরে মোটরসাইকেলেই ঘুমিয়ে পড়েন আমাদের একজন। ভাগ্য সহায় না হলে মোটরসাইকেল কাত হয়ে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। মোটরসাইকেল থেকে নেমে পানি পার হতে উঠে পড়লাম ট্রলারে। ট্রলারে উঠে মাথায় হাত! ছোট্ট একটা ট্রলারে ধারণক্ষমতার তিনগুণ মানুষ। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, পানি তেমন গভীর নয়। তবুও মনের ভেতর উঁকি দিল সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পঞ্চগড়ের বোদার সেই ট্রলার দুর্ঘটনাটি। এমনই অল্প গভীর পানিতে ট্রলার ডুবে প্রাণ গিয়েছিল ৭১ জন মানুষের। এ কথা ভাবতে ভাবতে আরেক ট্রলারের ধাক্কায় আমাদের ট্রলার উল্টে যাওয়ার উপক্রম হলো। কী যে ভয় পেয়েছিলাম। এ যাত্রায়ও দয়ালের অশেষ কৃপায় রক্ষা।
ট্রলার থেকে নেমে উঠে পড়লাম অটোতে। পটুয়াখালী শহরটা দেখে বেশ হিংসা হলো। নিঃসন্দেহে আমাদের যান্ত্রিক এই ঢাকার চেয়ে সুন্দর। অটো থেকে নেমে বাসে, আমাদের গন্তব্য কুয়াকাটা। দীর্ঘ যাত্রা শেষে অবশেষে আমরা পৌঁছে যাই সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। কুয়াকাটায় এসে আপনি কক্সবাজারের ফিল খুঁজলে আশাহত হবেন। কুয়াকাটায় কক্সবাজারের মতো ওতো ‘গ্ল্যামার’ নেই। এখানকার হোটেলগুলোও তেমন লাক্সারি না। একটু হাঁটাহাঁটি করে আমরা উঠে পড়লাম মাঝারি মানের একটি হোটেলে। কিছুটা ফ্রেশ হয়েই কনকনে শীতে বেরিয়ে পড়লাম। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। কেমনই যেন এক অনুভূতি। আজ আমাদের রাতের খাবার—সামুদ্রিক মাছ। একে একে কোরাল, চিংড়ি ও বাঁশপাতা মাছও বাদ গেল না খাবারের তালিকা থেকে। এই ঠান্ডায় একটু পাগলামি না করলে কি চলে? খাবারদাবারের পর খেয়ে নিলাম আইসক্রিম।
এবার এল আমাদের ঘুমের পালা। দুর্দান্ত একটা ঘুম দিয়ে উঠে মোটরসাইকেল ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম কুয়াকাটার দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখতে। এরপর একে একে আমরা ঘুরলাম লাল কাঁকড়ার চর, ঝাউবন, কাউয়ার চর, লেবু চরসহ নানা জায়গা। সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে এমন বাইক রাইডের আনন্দ ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। এবার খাবারের পালা। পুরো ট্যুরেই আমরা খেয়েছি ভরপুর। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। গরম ভাত-ডালের সঙ্গে টুনা মাছ, বাঁশপাতা মাছের ভর্তা ও চিংড়ি, আহা শান্তি! আর সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে খাওয়ার মজাই আলাদা।
সবশেষে এবার সাগরকন্যাকে বিদায় জানানোর পালা। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত—পদ্মা সেতু দেখব তাই যাত্রা হবে বাসে, লঞ্চে নয়। টিকিট কেটে উঠে পড়লাম বাসে। সিট নিলাম ‘ই’ ও ‘এফ’ লাইনে। শুরু হলো ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা। চলছে আমাদের বাস। হঠাৎ বিপত্তি এক জায়গায় আটকে রইল পাক্কা ২০ মিনিট। এই সুযোগে বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে আড্ডা জুড়ে দিলাম। জানতে পারলাম সামনে আগুন লেগেছে তাই এই দশা। কিছুক্ষণ পরে ফের চলতে শুরু করল বাস। বরিশাল পার হওয়ার পর দেওয়া হলো যাত্রাবিরতি। আমাদের চোখও বলতে হবে, একদম খাদক চোখ। যাত্রাবিরতিতে খাবারের টেবিলে বসে চোখ গিয়ে পড়ল ফ্রিজে থাকা পায়েসের দিকে। একটা না একেকজন দুটা করে পায়েস খেলাম।
বাস যখন পদ্মা সেতু পার হচ্ছে জানালা দিয়ে কিছুটা দেখার চেষ্টা করলাম। তেমন স্পষ্ট করে দেখা না গেলেও মনের ভেতরে বেশ ভালো লাগল। অবাক দৃঢ়তায় দাঁড়িয়ে আমাদের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু পার হওয়ার পরে এখন শুধু ঢাকায় ফেরার অপেক্ষা। কুয়াকাটা থেকে কেনা আচার-চকলেট পরিবারের সদস্যদের বণ্টনের চিন্তা। আহ! কত দিন পর বাসায় ফিরছি। দু’চোখ জুড়ে শান্তির ঘুমটা আসতেই এক চরম ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠলাম। শুধু চারদিকে চিৎকার-আর্তনাদ। বুঝতে আর বাকি নেই আমাদের বাস অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। ‘ই’ সিট থেকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে যেতে দেখলাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রক্ত। ফায়ার সার্ভিস-পুলিশ সদস্যরাও দ্রুত এসে হাজির দুর্ঘটনাকবলিত বাস উদ্ধারে। তখনো চালক ও কয়েকজন যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়েই পোস্তগোলা থেকে দুটি সিএনজি অটোরিকশায় আমরা ছয়জন চলে এলাম বংশাল পুকুরপাড়। সবাই সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত। তবে বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম। ভাগ্য সহায় না হলে সেদিন লাশ হয়েও ফিরতে পারতাম। এই কুয়াকাটা ট্যুর হতে পারত জীবনের শেষ ট্যুর। ওই যে যাত্রাবিরতিতে খাওয়া সেই পায়েসটাই হতে পারত জীবনের শেষ খাওয়া। কত স্বপ্ন নিমেষেই দুমড়ে-মুচড়ে যেতে পারত। বাসায় এসে দুর্ঘটনার কথা বলতেই আমার স্ত্রীর সে কি কান্না। এ সময়ে এমন ভালোবাসা পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আপাতত বেঁচে আছি এইতো জরুরি খবর। জীবনে ঢাকার বাইরে অনেক ঘুরেছি, ভবিষ্যতেও ঘুরব। তবে এই জার্নিটা আমার কাছে ‘ডেড জার্নি’ হয়ে থাকবে। ভুলব না তোমায় কুয়াকাটা...
আমাদের শরীরের সামান্য আঘাত ধীরে ধীরে সেরে উঠেছে। তবে মনের ভেতরের ভয়টা হয়তো তাড়িয়ে বেড়াবে অনেকটা দিন। এই দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাসের চালক। শুনেছি লোকটা বেঁচে আছেন, তবে দুই পা ভেঙেছে ও পাঁজরের হাড়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তিনি দ্রুত সেরে উঠুক—এই কামনাই করি। আর হ্যাঁ, শীতের এই সময়টায় ঘন কুয়াশায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এই সময়ে সাবধান থাকাটা বেশ জরুরি।
আরও পড়ুন:
‘জাতে আমি ঢাকাইয়া কইতে আমার সিনা টান’—শিল্পী হায়দার হোসেনের বিখ্যাত এই গান পুরোনো হওয়ার নয়। গানটি ঢাকাইয়াদের অনেক মহব্বতের। বাহান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির এই শহরের পরতে পরতে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ইতিহাস-ঐতিহ্য বইপুস্তক কিংবা দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছে গল্প শুনে জানা যায় কিন্তু যে জিনিসটা জানা যায় না বা পরিমাপ করা যায় না, সেটি হচ্ছে ‘ভালোবাসা’। এই পুরোনো শহরেই জড়িয়ে আছে আমাদের প্রেম-ভালোবাসার অনেক গল্প।
সেসব কথা থাক। অনেক পাওয়ার মাঝেও আমাদের ঢাকাইয়াদের একটা জিনিসের ভীষণ অভাব। সেটি হচ্ছে ‘অক্সিজেন’। অক্সিজেনের খোঁজে আমরা সব সময়ই চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকি। সুযোগ পেলেই দৌড়। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকেই এবার আমরা ৬ ঢাকাইয়া মিলে ট্যুর দিই কুয়াকাটায়। সেটি নিয়েই মূলত এই লেখা...
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এর কারণ ছিল দুটো। এক. পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ছোট ভাই নাইমের বাসায় দাওয়াত আর দুই. ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা বিলাসী লঞ্চে ভ্রমণ।
সারা দিন অফিস শেষে রাত ৯টার সুন্দরবন-১৬ লঞ্চে সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশে আমরা রওনা হই। একদিকে অনেক দিন পর ট্যুর, আরেকদিকে এমন জাঁকালো আরামদায়ক লঞ্চ রীতিমতো স্বস্তি ও প্রশান্তি দিয়েছে। দুই কেবিনে সারা রাত এপাশ-ওপাশ করলেও ঘুমানো যায়নি। কেননা এমন সুন্দর আবহাওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে গান, আড্ডাকেই বেশি আনন্দদায়ক মনে হয়েছে। গান, আড্ডাতেই আমাদের রাতটা কেটেছে। মাঝে রাতের খাবার সেরেছি লঞ্চের ডাইনিংয়ে। লঞ্চের ভেতর এমন বিলাসী ডাইনিং তার ওপর মজার মজার খাবার সত্যিই অবাক করেছে। এভাবে হাসি-আড্ডা-গানের পর আসে কুয়াশা ঢাকা ভোর। ততক্ষণে আমরা পৌঁছে গেছি বরিশাল লঞ্চ ঘাটে। ফজর নামাজ পড়ে এবার আমাদের গন্তব্য নাইমের বাসা পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলায়।
লঞ্চ থেকে নেমে আমরা চাপাচাপি করে উঠে পড়লাম অটোতে। চলে গেলাম বাস কাউন্টারে। আরামদায়ক লঞ্চের পর বাসের ভ্রমণটা কেমন যেন শরীরে সইল না। ক্লান্ত শরীরে যেখানে চোখ বন্ধ করলেই ঘুমিয়ে পড়ার কথা সেখানে অপলক চেয়ে আছি জানালার বাইরে। বাইরেও প্রকৃতি উপভোগের সুযোগ নেই। কেননা জানালার বাইরে শুধু কুয়াশা আর কুয়াশা। নাইমের বাসায় গিয়ে অনেক মজা করতে হবে এই চিন্তায় অনেকটা জোর করেই ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। ঘুমিয়েই পড়লাম কীভাবে যেন। চোখ খুলতেই দেখি বাস ফেরি পার হচ্ছে। কত স্মৃতি যে তখন মনের জানালায় উঁকি দিল। এর আগে প্রথমবার ফেরিতে উঠেছিলাম ২০১৮ সালে। ঢাকা থেকে খুলনায় গিয়েছিলাম সেবার বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। স্মৃতিচারণ করতে করতে পৌঁছে গেলাম পটুয়াখালী সদরে। এবার ফের চেপে বসলাম অটোতে। রাস্তা যেন ফুরাবার না। শরীরটাকে একদম আধমরা করে দুপুর ১১টায় আমাদের অটো থামল নাইমের বাড়ির উঠানে। নাইমদের বাড়িটা অনেক আকর্ষণীয়। মাটির ডুপ্লেক্স বাড়ি। দেখেই মনে ধরল। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই আপ্যায়ন শুরু। সতেজ খাবার খেয়ে শরীরটা মুহূর্তেই চাঙা হয়ে গেল। বেরিয়ে পড়লাম ব্যাট-বল হাতে। বহুদিন পর খেলায় মেতে উঠলাম। একসময় এ রকম কত ক্রিকেট খেলেছি বংশাল টেকপট্টির মাঠে। সে যাই হোক তিন ম্যাচের সিরিজে আমার দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেসব কথা থাক, এবার পালা খাবারের। ওমা একি আয়োজন! টেবিল জুড়ে খাবার আর খাবার। হাঁসের মাংসটা যা মজাদার ছিল, উফ!
ঢাকায় থাকলে নির্ঘাত এমন উদরপূর্তির পর নাক ডেকে ঘুম দিতাম। কিন্তু জায়গাটিতো আর ইট-পাথরের নয়, জায়গাটা মাটি আর সবুজের, আহা! ছোট ভাই নাইম ও তাঁর চাচাতো ভাই সাকিবের নির্দেশনায় আমরা ছুটে চললাম তেঁতুলিয়া নদীর দিকে। অনেকটা পথ হাঁটলেও ক্লান্তি নেই। পাশে বন্ধু আনাস ও সাদের নানান মজার মজার কথা। মনে হলো যেন ফিরে গেছি সেই শৈশবে। তেঁতুলিয়া নদী অনেক সুন্দর, তার চেয়েও সুন্দর ছিল আবহাওয়া। একদম পড়ন্ত বিকেল। একটা ট্রলার ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম। সাঁতার না জানায় কিছুটা ভয় হচ্ছিল। কিন্তু ভয়কে জয় করেইতো জীবনের পথ চলতে হয়। সাহসটা আরও বেড়ে গেছে যখন ট্রলার চালক নিজেই বললেন, ‘এখানটায় চড়, পানি হাঁটুর সমান।’ লোভ সামলাতে না পেরে নদীর চড়ে নেমে হাঁটলাম, দৌড়ালাম, ছবি তুললাম। আহ! কি যে শান্তি। ট্রলার থেকে নামার সময় বন্ধু সাদ কিছুটা ব্যথা পেলেও সেগুলোকে পাত্তা দেওয়ার ছেলে সে নয়। একদম ‘ঢাকাইয়া আগুন’। বাখরখানির চুল্লিতে বেড়ে ওঠা!
নদী পর্ব শেষে এখন গ্রাম ঘুরে দেখার পালা। একদম গ্রাম্য সাজেই বেরিয়ে পড়লাম, লুঙ্গি ও গায়ে চাদর জড়িয়ে। বন্ধুদের থেকে উপাধিও পেয়ে গেলাম ‘ইউপি চেয়ারম্যান’। আমি মানুষটা এমনই। ফাইভ স্টার হোটেলের চেয়ে টং দোকান আমায় বেশি টানে। গ্রাম্য বাজারের গরম-গরম জিলাপি, কাচা পাতির রং চা খেলাম। এটার যে কি অনুভূতি সেটা বোঝানোর মতো নয়। টং দোকানে মান্নার সিনেমা চলছে, একদম ভিড় জমিয়ে মানুষ তা উপভোগ করছে। একদম গ্রামের সাদামাটা জীবন। বাঁশের সাঁকো পার করে ফিরলাম নাইমের বাসায়। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানায় একটু গড়াগড়ি খেতেই বারবিকিউর জন্য ডাকাডাকি। খোলা আকাশের নিচে, হাড়কাঁপানো শীতে পরিবেশে বারবিকিউ এবারই প্রথম। বারবিকিউ পর্ব শেষে অবশেষে ঘুমের পালা। রাত পেরোলেই আমাদের যাত্রা কুয়াকাটা।
পরদিন সকাল সকাল রওনা দেওয়ার প্ল্যান থাকলেও খেজুরের রস ও ডাব খাওয়ার লোভ সামলানো যায়নি। খেতে খেতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল, রওনা হলাম কুয়াকাটার উদ্দেশে। অটোযোগে প্রথমে দশমিনা বাজার, সেখান থেকে মোটরসাইকেলে আমাদের এবারের গন্তব্য পটুয়াখালী সদর। মোটরসাইকেলে দীর্ঘপথ বেশ আরামদায়কই ছিল। কিন্তু মাঝে একটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। ক্লান্ত শরীরে মোটরসাইকেলেই ঘুমিয়ে পড়েন আমাদের একজন। ভাগ্য সহায় না হলে মোটরসাইকেল কাত হয়ে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। মোটরসাইকেল থেকে নেমে পানি পার হতে উঠে পড়লাম ট্রলারে। ট্রলারে উঠে মাথায় হাত! ছোট্ট একটা ট্রলারে ধারণক্ষমতার তিনগুণ মানুষ। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানলাম, পানি তেমন গভীর নয়। তবুও মনের ভেতর উঁকি দিল সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পঞ্চগড়ের বোদার সেই ট্রলার দুর্ঘটনাটি। এমনই অল্প গভীর পানিতে ট্রলার ডুবে প্রাণ গিয়েছিল ৭১ জন মানুষের। এ কথা ভাবতে ভাবতে আরেক ট্রলারের ধাক্কায় আমাদের ট্রলার উল্টে যাওয়ার উপক্রম হলো। কী যে ভয় পেয়েছিলাম। এ যাত্রায়ও দয়ালের অশেষ কৃপায় রক্ষা।
ট্রলার থেকে নেমে উঠে পড়লাম অটোতে। পটুয়াখালী শহরটা দেখে বেশ হিংসা হলো। নিঃসন্দেহে আমাদের যান্ত্রিক এই ঢাকার চেয়ে সুন্দর। অটো থেকে নেমে বাসে, আমাদের গন্তব্য কুয়াকাটা। দীর্ঘ যাত্রা শেষে অবশেষে আমরা পৌঁছে যাই সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। কুয়াকাটায় এসে আপনি কক্সবাজারের ফিল খুঁজলে আশাহত হবেন। কুয়াকাটায় কক্সবাজারের মতো ওতো ‘গ্ল্যামার’ নেই। এখানকার হোটেলগুলোও তেমন লাক্সারি না। একটু হাঁটাহাঁটি করে আমরা উঠে পড়লাম মাঝারি মানের একটি হোটেলে। কিছুটা ফ্রেশ হয়েই কনকনে শীতে বেরিয়ে পড়লাম। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। কেমনই যেন এক অনুভূতি। আজ আমাদের রাতের খাবার—সামুদ্রিক মাছ। একে একে কোরাল, চিংড়ি ও বাঁশপাতা মাছও বাদ গেল না খাবারের তালিকা থেকে। এই ঠান্ডায় একটু পাগলামি না করলে কি চলে? খাবারদাবারের পর খেয়ে নিলাম আইসক্রিম।
এবার এল আমাদের ঘুমের পালা। দুর্দান্ত একটা ঘুম দিয়ে উঠে মোটরসাইকেল ভাড়া করে বেরিয়ে পড়লাম কুয়াকাটার দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখতে। এরপর একে একে আমরা ঘুরলাম লাল কাঁকড়ার চর, ঝাউবন, কাউয়ার চর, লেবু চরসহ নানা জায়গা। সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে এমন বাইক রাইডের আনন্দ ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। এবার খাবারের পালা। পুরো ট্যুরেই আমরা খেয়েছি ভরপুর। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। গরম ভাত-ডালের সঙ্গে টুনা মাছ, বাঁশপাতা মাছের ভর্তা ও চিংড়ি, আহা শান্তি! আর সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে খাওয়ার মজাই আলাদা।
সবশেষে এবার সাগরকন্যাকে বিদায় জানানোর পালা। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত—পদ্মা সেতু দেখব তাই যাত্রা হবে বাসে, লঞ্চে নয়। টিকিট কেটে উঠে পড়লাম বাসে। সিট নিলাম ‘ই’ ও ‘এফ’ লাইনে। শুরু হলো ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা। চলছে আমাদের বাস। হঠাৎ বিপত্তি এক জায়গায় আটকে রইল পাক্কা ২০ মিনিট। এই সুযোগে বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে আড্ডা জুড়ে দিলাম। জানতে পারলাম সামনে আগুন লেগেছে তাই এই দশা। কিছুক্ষণ পরে ফের চলতে শুরু করল বাস। বরিশাল পার হওয়ার পর দেওয়া হলো যাত্রাবিরতি। আমাদের চোখও বলতে হবে, একদম খাদক চোখ। যাত্রাবিরতিতে খাবারের টেবিলে বসে চোখ গিয়ে পড়ল ফ্রিজে থাকা পায়েসের দিকে। একটা না একেকজন দুটা করে পায়েস খেলাম।
বাস যখন পদ্মা সেতু পার হচ্ছে জানালা দিয়ে কিছুটা দেখার চেষ্টা করলাম। তেমন স্পষ্ট করে দেখা না গেলেও মনের ভেতরে বেশ ভালো লাগল। অবাক দৃঢ়তায় দাঁড়িয়ে আমাদের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু পার হওয়ার পরে এখন শুধু ঢাকায় ফেরার অপেক্ষা। কুয়াকাটা থেকে কেনা আচার-চকলেট পরিবারের সদস্যদের বণ্টনের চিন্তা। আহ! কত দিন পর বাসায় ফিরছি। দু’চোখ জুড়ে শান্তির ঘুমটা আসতেই এক চরম ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠলাম। শুধু চারদিকে চিৎকার-আর্তনাদ। বুঝতে আর বাকি নেই আমাদের বাস অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। ‘ই’ সিট থেকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে যেতে দেখলাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রক্ত। ফায়ার সার্ভিস-পুলিশ সদস্যরাও দ্রুত এসে হাজির দুর্ঘটনাকবলিত বাস উদ্ধারে। তখনো চালক ও কয়েকজন যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চোখেমুখে আতঙ্ক নিয়েই পোস্তগোলা থেকে দুটি সিএনজি অটোরিকশায় আমরা ছয়জন চলে এলাম বংশাল পুকুরপাড়। সবাই সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত। তবে বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম। ভাগ্য সহায় না হলে সেদিন লাশ হয়েও ফিরতে পারতাম। এই কুয়াকাটা ট্যুর হতে পারত জীবনের শেষ ট্যুর। ওই যে যাত্রাবিরতিতে খাওয়া সেই পায়েসটাই হতে পারত জীবনের শেষ খাওয়া। কত স্বপ্ন নিমেষেই দুমড়ে-মুচড়ে যেতে পারত। বাসায় এসে দুর্ঘটনার কথা বলতেই আমার স্ত্রীর সে কি কান্না। এ সময়ে এমন ভালোবাসা পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আপাতত বেঁচে আছি এইতো জরুরি খবর। জীবনে ঢাকার বাইরে অনেক ঘুরেছি, ভবিষ্যতেও ঘুরব। তবে এই জার্নিটা আমার কাছে ‘ডেড জার্নি’ হয়ে থাকবে। ভুলব না তোমায় কুয়াকাটা...
আমাদের শরীরের সামান্য আঘাত ধীরে ধীরে সেরে উঠেছে। তবে মনের ভেতরের ভয়টা হয়তো তাড়িয়ে বেড়াবে অনেকটা দিন। এই দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাসের চালক। শুনেছি লোকটা বেঁচে আছেন, তবে দুই পা ভেঙেছে ও পাঁজরের হাড়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তিনি দ্রুত সেরে উঠুক—এই কামনাই করি। আর হ্যাঁ, শীতের এই সময়টায় ঘন কুয়াশায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এই সময়ে সাবধান থাকাটা বেশ জরুরি।
আরও পড়ুন:
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১৭ ঘণ্টা আগেগত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১৭ ঘণ্টা আগেজাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভি
১৮ ঘণ্টা আগেসবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ...
১৯ ঘণ্টা আগেমুহাম্মদ জাভেদ হাকিম
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
বান্দরবানের গহিনে থাকা তুক-অ-দামতুয়া ইদানীং সাধারণ পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকায় উঠে এসেছে। সে কারণেই একদিন বন্ধুরা মিলে হাঁড়ি-পাতিল আর বোঁচকা নিয়ে রাতের গাড়িতে উঠে খুব ভোরে গিয়ে নামলাম চকরিয়া। তারপর চান্দের গাড়িতে আলীকদম উপজেলার সতেরো কিলো নামক জায়গায়। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে নাজেম নামের চালকটি হেলিকপ্টারের গতিতেই নিয়ে গেলেন আমাদের! আড়াই ঘণ্টার পথ চলতে কখনো কখনো মনে হয়েছে, এই বুঝি চান্দের গাড়ি উড়াল দিল আকাশে।
দশ কিলো থ্যিঙ্কু পাড়া এসে কষে ব্রেক করে দাঁড়াল আমাদের গাড়ি। আর্মি চেকপোস্ট। নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ করে অনুমতি নেওয়া হলো। তারপর আবার ছুট। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম সতেরো কিলো। গাইড আগেই উপস্থিত ছিলেন সেখানে। পরিচয় পর্ব শেষে তাঁর পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করলাম আমরা। যাচ্ছি আদু পাড়ার দিকে। পাড়ায় গিয়ে তাঁর ঘরে বাড়তি মালপত্র রেখে, পাহাড়ের পরম বন্ধু নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের বাঁশ নিয়ে সবাই ছুটলাম দামতুয়ার দিকে।
কথা সেই একটিই, দেখতে হলে হাঁটতে হবে। রীতিমতো মন ও দেহের সঙ্গে লড়াই করে হাঁটতে হচ্ছে। মাথার ওপর প্রখর রোদ। চোখের সামনে শুধুই উঁচু উঁচু পাহাড়। হাঁটছি, উঠছি, নামছি! মাঝেমধ্যে ঝিরির পানি চোখে-মুখে ছিটিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছি।
দূর পাহাড়ের নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য মনের শক্তি বাড়িয়েছিল বহুগুণ। প্রায় তিন ঘণ্টা ট্রেকিং করার পর কানে ভেসে এল ঝরনার পানির শব্দ! কিন্তু চোখের সামনে বাঁশবন আর নানান গাছে ঘেরা খাড়া পিচ্ছিল পথ। নামতে হবে নিচের দিকে। একটু এদিক-সেদিক হলেই সুচালো বাঁশ দেহের কোথায় গিয়ে গেঁথে যাবে, কেউ জানে না। তবু পেতে হবে দামতুয়ার কোমল পরশ।
বহু কষ্টে নিচে নেমে চক্ষু একেবারে ছানাবড়া! বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম বিশালা ঝরনার দিকে, একেবারে হাঁ করে। দুপাশ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। একেবারে বুনো পরিবেশে দামতুয়া চোখের সামনে! নির্বাক হয়ে যাওয়ার আগে এর উচ্চতা মাপি মনে মনে।
নব্বই থেকে এক শ ফুট উঁচু না হয়েই যায় না দামতুয়া।
বর্ষা শেষে শরৎ পেরিয়ে হেমন্ত।
তুক-অ-দামতুয়ার উচ্ছলতা এখনো কমেনি। গাইড জানালেন, সারা বছর এ ঝরনায় পানির প্রবাহ থাকে। বেশ উচ্চতা আর অনেকখানি জায়গাজুড়ে প্রচণ্ড বেগে পানি নেমে আসে এখানে।
এই কারণে ঝরনার সামনে বিশাল জলাশয় তৈরি হয়েছে। সেই প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে সাঁতার না কাটলে চলে! বান্দরবানের অন্যান্য ঝরনার চেয়ে দামতুয়ার ভৌগোলিক আকৃতি ভিন্ন রকম। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়েছে। মুরং ভাষা থেকে আসা ‘তুক-অ-দামতুয়া’ শব্দের অর্থটাও বেশ চমৎকার। তুক অর্থ ব্যাঙ, অ অর্থ ঝিরি আর দামতুয়া মানে খাড়া। অর্থাৎ এই খাড়া ঝিরির উজান ঠেলে ব্যাঙ বা মাছ ওপরের দিকে উঠতে পারে না বলে এই ঝরনার এমন নাম। আমাদের গাইড ছিলের মুরং সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনিই জানালেন এসব।
ঝরনার উৎস দেখার পালা এবার। চরাই-উতরাই পেরিয়ে দেখা গেল এক সবুজে ঘেরা ঝিরি। বড় বড় কিছু পাথর পেরিয়ে একেবারে তার কাছে চলে গেলাম। বেশ চমৎকার একটা জায়গা। এই ঝিরির পানি দামতুয়া হয়ে ঝরে পড়ে নিচের প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে।
এই ঝিরির নাম ব্যাঙ ঝিরি। সাধারণত ঝিরির নাম অনুসারে ঝরনাগুলোর নামকরণ হয়।
ব্যাঙ ঝিরির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সময়জ্ঞান প্রায় ভুলতে বসেছিলাম সবাই। গাইডের ডাকে আবার শুরু হলো ট্রেকিং। এই পাহাড়-জঙ্গলের গহিনে গাইডই তখন ক্যাপ্টেন। তাঁর নির্দেশ অমান্য করার উপায় নেই। আমরা আদুপাড়ার পথ ধরি। গাইড জানালেন, আবারও প্রায় নয় মাইল চড়াই-উতরাই পেরোতে হবে!
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। এমনিতেই পাহাড়ে সন্ধ্যা আসে ঝুপ করে। দুপুরে শুকনো দুই-চার পিস বিস্কুট ছাড়া তেমন কিছুই পড়েনি পেটে। তাই খিচুড়ির এন্তেজাম হবে রাতে। হাঁটছি ধীরে ধীরে, একেবারে উদ্দেশ্যপূর্ণ কারণে। আজ পূর্ণিমা। পাহাড়ের নির্জনতায় ভরা জোছনার আলো সঙ্গী করে হাঁটব। পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আমি মনে মনে কিছুটা উদ্দীপিত। এ রকম সুযোগ সব সময় মেলে না।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। আকাশছোঁয়া পাহাড় টপকে গোলাকার চাঁদ উঁকি দিল আকাশে। নিঝুম অন্ধকার পাহাড়ের চারপাশ আলোকিত হয়ে পড়ল। গাছের পাতাগুলো সবুজের মাঝে সোনালি বর্ণ ধারণ করল। অসাধারণ এক অনুভূতি। সবার মনে বিস্ময়ের দোলা। এখন আর কারও ফেরার তাড়া নেই। তবু ফিরতে হচ্ছে এই অলৌকিক রাতে।
যাবেন যেভাবে
ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবানের আলীকদমে বাস যায়। সেখান থেকে মোটরবাইক কিংবা চান্দের গাড়িতে যেতে হবে সতেরো কিলো এলাকায়। সেখানকার চা-দোকানিদের সহায়তা নিয়ে পেয়ে যাবেন গাইড। তাঁকে ছাড়া পাহাড়ে যাওয়া ঠিক হবে না।
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
বান্দরবানের গহিনে থাকা তুক-অ-দামতুয়া ইদানীং সাধারণ পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকায় উঠে এসেছে। সে কারণেই একদিন বন্ধুরা মিলে হাঁড়ি-পাতিল আর বোঁচকা নিয়ে রাতের গাড়িতে উঠে খুব ভোরে গিয়ে নামলাম চকরিয়া। তারপর চান্দের গাড়িতে আলীকদম উপজেলার সতেরো কিলো নামক জায়গায়। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে নাজেম নামের চালকটি হেলিকপ্টারের গতিতেই নিয়ে গেলেন আমাদের! আড়াই ঘণ্টার পথ চলতে কখনো কখনো মনে হয়েছে, এই বুঝি চান্দের গাড়ি উড়াল দিল আকাশে।
দশ কিলো থ্যিঙ্কু পাড়া এসে কষে ব্রেক করে দাঁড়াল আমাদের গাড়ি। আর্মি চেকপোস্ট। নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ করে অনুমতি নেওয়া হলো। তারপর আবার ছুট। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম সতেরো কিলো। গাইড আগেই উপস্থিত ছিলেন সেখানে। পরিচয় পর্ব শেষে তাঁর পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করলাম আমরা। যাচ্ছি আদু পাড়ার দিকে। পাড়ায় গিয়ে তাঁর ঘরে বাড়তি মালপত্র রেখে, পাহাড়ের পরম বন্ধু নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের বাঁশ নিয়ে সবাই ছুটলাম দামতুয়ার দিকে।
কথা সেই একটিই, দেখতে হলে হাঁটতে হবে। রীতিমতো মন ও দেহের সঙ্গে লড়াই করে হাঁটতে হচ্ছে। মাথার ওপর প্রখর রোদ। চোখের সামনে শুধুই উঁচু উঁচু পাহাড়। হাঁটছি, উঠছি, নামছি! মাঝেমধ্যে ঝিরির পানি চোখে-মুখে ছিটিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছি।
দূর পাহাড়ের নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য মনের শক্তি বাড়িয়েছিল বহুগুণ। প্রায় তিন ঘণ্টা ট্রেকিং করার পর কানে ভেসে এল ঝরনার পানির শব্দ! কিন্তু চোখের সামনে বাঁশবন আর নানান গাছে ঘেরা খাড়া পিচ্ছিল পথ। নামতে হবে নিচের দিকে। একটু এদিক-সেদিক হলেই সুচালো বাঁশ দেহের কোথায় গিয়ে গেঁথে যাবে, কেউ জানে না। তবু পেতে হবে দামতুয়ার কোমল পরশ।
বহু কষ্টে নিচে নেমে চক্ষু একেবারে ছানাবড়া! বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম বিশালা ঝরনার দিকে, একেবারে হাঁ করে। দুপাশ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। একেবারে বুনো পরিবেশে দামতুয়া চোখের সামনে! নির্বাক হয়ে যাওয়ার আগে এর উচ্চতা মাপি মনে মনে।
নব্বই থেকে এক শ ফুট উঁচু না হয়েই যায় না দামতুয়া।
বর্ষা শেষে শরৎ পেরিয়ে হেমন্ত।
তুক-অ-দামতুয়ার উচ্ছলতা এখনো কমেনি। গাইড জানালেন, সারা বছর এ ঝরনায় পানির প্রবাহ থাকে। বেশ উচ্চতা আর অনেকখানি জায়গাজুড়ে প্রচণ্ড বেগে পানি নেমে আসে এখানে।
এই কারণে ঝরনার সামনে বিশাল জলাশয় তৈরি হয়েছে। সেই প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে সাঁতার না কাটলে চলে! বান্দরবানের অন্যান্য ঝরনার চেয়ে দামতুয়ার ভৌগোলিক আকৃতি ভিন্ন রকম। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়েছে। মুরং ভাষা থেকে আসা ‘তুক-অ-দামতুয়া’ শব্দের অর্থটাও বেশ চমৎকার। তুক অর্থ ব্যাঙ, অ অর্থ ঝিরি আর দামতুয়া মানে খাড়া। অর্থাৎ এই খাড়া ঝিরির উজান ঠেলে ব্যাঙ বা মাছ ওপরের দিকে উঠতে পারে না বলে এই ঝরনার এমন নাম। আমাদের গাইড ছিলের মুরং সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনিই জানালেন এসব।
ঝরনার উৎস দেখার পালা এবার। চরাই-উতরাই পেরিয়ে দেখা গেল এক সবুজে ঘেরা ঝিরি। বড় বড় কিছু পাথর পেরিয়ে একেবারে তার কাছে চলে গেলাম। বেশ চমৎকার একটা জায়গা। এই ঝিরির পানি দামতুয়া হয়ে ঝরে পড়ে নিচের প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে।
এই ঝিরির নাম ব্যাঙ ঝিরি। সাধারণত ঝিরির নাম অনুসারে ঝরনাগুলোর নামকরণ হয়।
ব্যাঙ ঝিরির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সময়জ্ঞান প্রায় ভুলতে বসেছিলাম সবাই। গাইডের ডাকে আবার শুরু হলো ট্রেকিং। এই পাহাড়-জঙ্গলের গহিনে গাইডই তখন ক্যাপ্টেন। তাঁর নির্দেশ অমান্য করার উপায় নেই। আমরা আদুপাড়ার পথ ধরি। গাইড জানালেন, আবারও প্রায় নয় মাইল চড়াই-উতরাই পেরোতে হবে!
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। এমনিতেই পাহাড়ে সন্ধ্যা আসে ঝুপ করে। দুপুরে শুকনো দুই-চার পিস বিস্কুট ছাড়া তেমন কিছুই পড়েনি পেটে। তাই খিচুড়ির এন্তেজাম হবে রাতে। হাঁটছি ধীরে ধীরে, একেবারে উদ্দেশ্যপূর্ণ কারণে। আজ পূর্ণিমা। পাহাড়ের নির্জনতায় ভরা জোছনার আলো সঙ্গী করে হাঁটব। পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আমি মনে মনে কিছুটা উদ্দীপিত। এ রকম সুযোগ সব সময় মেলে না।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। আকাশছোঁয়া পাহাড় টপকে গোলাকার চাঁদ উঁকি দিল আকাশে। নিঝুম অন্ধকার পাহাড়ের চারপাশ আলোকিত হয়ে পড়ল। গাছের পাতাগুলো সবুজের মাঝে সোনালি বর্ণ ধারণ করল। অসাধারণ এক অনুভূতি। সবার মনে বিস্ময়ের দোলা। এখন আর কারও ফেরার তাড়া নেই। তবু ফিরতে হচ্ছে এই অলৌকিক রাতে।
যাবেন যেভাবে
ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবানের আলীকদমে বাস যায়। সেখান থেকে মোটরবাইক কিংবা চান্দের গাড়িতে যেতে হবে সতেরো কিলো এলাকায়। সেখানকার চা-দোকানিদের সহায়তা নিয়ে পেয়ে যাবেন গাইড। তাঁকে ছাড়া পাহাড়ে যাওয়া ঠিক হবে না।
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই
১১ জানুয়ারি ২০২৩গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১৭ ঘণ্টা আগেজাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভি
১৮ ঘণ্টা আগেসবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ...
১৯ ঘণ্টা আগেমইনুল হাসান, ফ্রান্স
গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। অফিস পাড়ায় ভিড় নেই। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। সকালের ঠান্ডা এ সময়ে তীব্র নয়। পুব আকাশে তখনো সূর্য অনেকটাই রক্তিম। নগরজীবনের প্রাণচাঞ্চল্য প্রকৃতির উষ্ণতায় আচ্ছাদিত। চারদিকে সুনসান। সবেমাত্র ঐতিহাসিক লুভর জাদুঘরের প্রধান ফটক দর্শনার্থীর জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে কৌতূহলী দর্শনার্থীরা অতীত ইতিহাসের বর্ণাঢ্য জগতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে নানান ভাষাভাষী দর্শনার্থীর ভিড় জমতে শুরু করেছে কাচ আর ইস্পাতে ঘেরা অনুপম পিরামিডের চৌদিকে, নেপোলিয়ন চত্বরে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরার চোখ সর্বত্র। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র।
বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের এই লুভর। বলা যায় জাদুঘরের এক উজ্জ্বল আইকন। অনেক কিংবদন্তি আছে এই বিস্ময়কর রহস্যময় স্থাপত্য সৌকর্যের অনুপম দৃষ্টান্ত এই রাজপ্রাসাদ নিয়ে। ১৫৪৬ সালে ফরাসি রাজা প্রথম ফ্রঁসোয়া এই ভবন ফরাসি রাজাদের মূল বাসভবনে রূপান্তর করেন। এরপর বহুবার ভবনটি সম্প্রসারণ করা হলে বর্তমান রূপ পায়। ১৬৮২ সালে ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুই তাঁর বাসভবন ভার্সাই প্রাসাদে স্থানান্তর করেন। তখন এই প্রাসাদ রাজকীয় সংগ্রহশালার চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্যের প্রদর্শনী কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো।
ফরাসি বিপ্লবের চার বছর পর, ১৭৯৩ সালে ৫৩৭টি শিল্পকর্ম নিয়ে লুভর প্রাসাদটি ‘কেন্দ্রীয় শিল্পকলা জাদুঘর’ নামে উদ্বোধন করা হয়। সেই থেকে বর্তমান জাদুঘরের যাত্রা শুরু। এখানে রক্ষিত আছে মোট ৪ লাখ ৬০ হাজার বস্তু-প্রদর্শনী। এর মধ্যে হাজার পঁয়ত্রিশেক বস্তু দর্শনার্থীর প্রদর্শনের জন্য রাখা আছে। একনাগাড়ে এর প্রতিটি বস্তু দেখতে ১০ সেকেন্ড করে ব্যয় করলেও শেষ করতে সময় লাগবে তিন থেকে চার দিন। লুভর প্রাসাদে কক্ষ আছে ৪০৩টি, মেঝের আয়তন ২৬ লাখ বর্গফুটের বেশি। সব কটি করিডর ঘুরে এলে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ হাঁটা হবে। সিঁড়িতে আছে ১০ হাজার ধাপ এবং ৭০টির মতো লিফট। এই জাদুঘর পরিচালনায় আছেন প্রায় ২ হাজার কর্মচারী। তাঁদের মধ্যে শুধু নিরাপত্তাপ্রহরীর সংখ্যাই হচ্ছে ১ হাজার ৩৬৬ জন। এটি বর্তমান সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর হিসেবে বিখ্যাত। গত বছর প্রায় ৯০ লাখ দর্শনার্থী প্রবেশ করেছিল এই জাদুর জাদুঘরে।
তবে ১৯ অক্টোবর এই জাদুঘরে ঢুকেছিলেন দুজন বিশেষ ব্যক্তি। তাঁরা দর্শনার্থী ছিলেন না, ছিলেন না কোনো সাধারণ চোর। অনেকে বলেন, রাজরত্ন চুরি করতে সবার চোখে ধুলো দিয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করেছিলেন ‘চোরের রাজা’ কিংবা ‘জাদুকর চোর’। ঘড়ির কাঁটা যখন সকাল ৯টার ঘরে, তখন সেন নদীর ডান তীরের রাস্তা ধরে ধীরে ধীরে বিশ্বের সেরা জাদুঘর লুভর প্রাসাদের দিকে এগিয়েছেন দুটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকে করে দুজন চালক। আর তাঁদের পেছনে ধাতব মইবাহী একটি লরি। তাতে সাধারণ শ্রমিকের পোশাকে আরও দুজন ব্যক্তি। মই বহনকারী লরিটি রাস্তার পাশে, লুভর জাদুঘরের এক কোণ ঘেঁষে থামল। লরি থেকে মুখ ঢাকা দুজন ব্যক্তি নেমে এলেন। একজনের পরনে উজ্জ্বল হলুদ এবং অন্যজন গায়ে চড়িয়েছেন উজ্জ্বল কমলা রঙের পোশাক। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এমন পোশাক পরা, কাজে ব্যস্ত শ্রমিকদের দেখতে সবাই অভ্যস্ত। তাই তাঁদের দেখে কেউ তেমন সন্দেহ করেনি। তখন ঠিক ৯টা ৩০ মিনিট।
দুজন তস্কর কাচ ও ইস্পাত কাটার যন্ত্র হাতে, মই দিয়ে তরতর করে উঠে গেলেন প্রথম তলায়। একটি জানালার কাচ আর গ্রিল কেটে ঢুকে গেলেন অ্যাপোলো গ্যালারিতে। সে সময়ে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন জনা দশেক দর্শনার্থী। তখন ৯টা ৩৪ মিনিট। প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতায় দুটি কাচের প্রদর্শনী বাক্স কেটে হাতিয়ে নেওয়া হলো ফরাসি রাজপরিবারের বহু পুরোনো বহুরত্নখচিত ৮টি অমূল্য অলংকার—নীলকান্তমণি, পান্না আর হীরার বহুপ্রাচীন সব গয়না। মোট ৮ হাজার হীরা ছিল তাতে! রানি মেরি-অ্যামেলির নেকলেসে ছিল ৮টি নীলকান্তমণি আর ৬৩১টি হীরা। তৃতীয় নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির মুকুটে খচিত ছিল ২ হাজার হীরা। এর মধ্যে সব থেকে বড় হীরা ১৪০ ক্যারেটের।
ইতিমধ্যে, জাদুঘরের বাইরে অপেক্ষমাণ ডিউটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকের দুই স্মার্ট চালক অস্থির হয়ে উঠলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই, রাজরত্ন চুরি করে অতি নিপুণ, দুর্ধর্ষ চারজন তস্কর মোটরবাইকে করে লাপাত্তা হয়ে গেলেন। তীব্র শব্দে বেজে উঠল সতর্কসংকেত। সেই সংকেত সরাসরি পৌঁছে গেল ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। নগরীর শান্ত প্রভাতের নীরবতায় ছেদ ঘটিয়ে চারদিকে পুলিশের সাইরেন। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে ঘটল শতাব্দীর সেরা চুরি!
ফরাসি জাতির ইতিহাসের অংশ অমূল্য ধন, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির এমন চুরির খবর আলোর গতিতে ছড়িয়ে পড়ল পৃথিবীর সব প্রান্তে। চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলো সংবাদমাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব হলো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিরমি খেলেন। রোববারে একটু আলস্য করবেন বলে ঠিক করেছিলেন সদা ব্যস্ত সংস্কৃতিমন্ত্রী। তা না করে ছুটে গেলেন ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে দেখতে। বাঘা বাঘা বিশেষজ্ঞ চুরি যাওয়া রত্ন ও অলংকারের অর্থমূল্য নির্ধারণ না করতে পেরে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘অমূল্য’—অর্থ দিয়ে কেনা যায় না ইতিহাস। সাংবাদিকদের প্রশ্নের বিষমাখা তির বিদ্ধ হয়ে কাতরাতে কাতরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশেষে স্বীকার করলেন, ‘সুবিশাল এই প্রাসাদের ৮ হাজার দরজা, জানালা পাহারা দেওয়া সত্যিই কঠিন কাজ’। তিনি আরও জানিয়েছেন, এর আগে যে চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল, তা সেই ১৯৯৮ সালে, আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্যামিল কোরোতের একটি তেলচিত্র চুরি হয়েছিল। আজও তা উদ্ধার হয়নি।
দুর্ধর্ষ এই চুরির ঘটনা দেশটির রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। বিরোধীরা এই ঘটনাকে ‘জাতির মুখে কালিমা লেপন’ বলে অভিহিত করে বর্তমান সরকারের পরনের কাপড় নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অচিরেই তাঁর দক্ষ গোয়েন্দারা তস্করদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে এবং জড়িত সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ছাড়বেন। সরকার মোট ৬০ জন বাছাই করা তদন্তকারী গোয়েন্দাকে দায়িত্ব দিল চোরাই মালপত্রসহ চোরদের পাকড়াও করার। এসব গোয়েন্দার আছে সারমেয় নাসিকা আর তাঁদের হাতে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ইতিমধ্যে তাঁদের হাতে অনেক আলামত জমা হয়েছে।
যাঁরা অপরাধজগতের খবর রাখেন, তাঁরা এমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উচ্চারণে আস্থা রাখতে পারছেন না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যাঁরা চুরি করেছেন, তাঁরা কোনো সাধারণ চোর বা ডাকাত নন। অত্যন্ত ঝানু এবং বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তস্কর। অঢেল সম্পদশালী কোনো সংগ্রাহক মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাঁদের ঐতিহাসিক অলংকার চুরি করার কাজে লাগিয়েছে। কিংবা বিদেশি কোনো রাষ্ট্র তাদের দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। হতে পারে, অলংকার থেকে হীরা, জহরত আলাদা করে, খুচরা বিক্রির জন্য চুরি করা হয়েছে। তাই যতই সময় গড়াবে, ততই এই রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসবে।
এদিকে এমন দুর্ধর্ষ চুরির কাহিনি নিয়ে বলিউড চলচিত্র নির্মাণ শুরু করলে, তাতে বিস্মিত হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না। সে ছায়াছবির শিরোনাম হতে পারে, ‘সাত মিনিটে চুরি হলো সাত রাজার ধন’।
গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। অফিস পাড়ায় ভিড় নেই। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। সকালের ঠান্ডা এ সময়ে তীব্র নয়। পুব আকাশে তখনো সূর্য অনেকটাই রক্তিম। নগরজীবনের প্রাণচাঞ্চল্য প্রকৃতির উষ্ণতায় আচ্ছাদিত। চারদিকে সুনসান। সবেমাত্র ঐতিহাসিক লুভর জাদুঘরের প্রধান ফটক দর্শনার্থীর জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে কৌতূহলী দর্শনার্থীরা অতীত ইতিহাসের বর্ণাঢ্য জগতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে নানান ভাষাভাষী দর্শনার্থীর ভিড় জমতে শুরু করেছে কাচ আর ইস্পাতে ঘেরা অনুপম পিরামিডের চৌদিকে, নেপোলিয়ন চত্বরে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরার চোখ সর্বত্র। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র।
বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের এই লুভর। বলা যায় জাদুঘরের এক উজ্জ্বল আইকন। অনেক কিংবদন্তি আছে এই বিস্ময়কর রহস্যময় স্থাপত্য সৌকর্যের অনুপম দৃষ্টান্ত এই রাজপ্রাসাদ নিয়ে। ১৫৪৬ সালে ফরাসি রাজা প্রথম ফ্রঁসোয়া এই ভবন ফরাসি রাজাদের মূল বাসভবনে রূপান্তর করেন। এরপর বহুবার ভবনটি সম্প্রসারণ করা হলে বর্তমান রূপ পায়। ১৬৮২ সালে ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুই তাঁর বাসভবন ভার্সাই প্রাসাদে স্থানান্তর করেন। তখন এই প্রাসাদ রাজকীয় সংগ্রহশালার চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্যের প্রদর্শনী কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো।
ফরাসি বিপ্লবের চার বছর পর, ১৭৯৩ সালে ৫৩৭টি শিল্পকর্ম নিয়ে লুভর প্রাসাদটি ‘কেন্দ্রীয় শিল্পকলা জাদুঘর’ নামে উদ্বোধন করা হয়। সেই থেকে বর্তমান জাদুঘরের যাত্রা শুরু। এখানে রক্ষিত আছে মোট ৪ লাখ ৬০ হাজার বস্তু-প্রদর্শনী। এর মধ্যে হাজার পঁয়ত্রিশেক বস্তু দর্শনার্থীর প্রদর্শনের জন্য রাখা আছে। একনাগাড়ে এর প্রতিটি বস্তু দেখতে ১০ সেকেন্ড করে ব্যয় করলেও শেষ করতে সময় লাগবে তিন থেকে চার দিন। লুভর প্রাসাদে কক্ষ আছে ৪০৩টি, মেঝের আয়তন ২৬ লাখ বর্গফুটের বেশি। সব কটি করিডর ঘুরে এলে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ হাঁটা হবে। সিঁড়িতে আছে ১০ হাজার ধাপ এবং ৭০টির মতো লিফট। এই জাদুঘর পরিচালনায় আছেন প্রায় ২ হাজার কর্মচারী। তাঁদের মধ্যে শুধু নিরাপত্তাপ্রহরীর সংখ্যাই হচ্ছে ১ হাজার ৩৬৬ জন। এটি বর্তমান সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর হিসেবে বিখ্যাত। গত বছর প্রায় ৯০ লাখ দর্শনার্থী প্রবেশ করেছিল এই জাদুর জাদুঘরে।
তবে ১৯ অক্টোবর এই জাদুঘরে ঢুকেছিলেন দুজন বিশেষ ব্যক্তি। তাঁরা দর্শনার্থী ছিলেন না, ছিলেন না কোনো সাধারণ চোর। অনেকে বলেন, রাজরত্ন চুরি করতে সবার চোখে ধুলো দিয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করেছিলেন ‘চোরের রাজা’ কিংবা ‘জাদুকর চোর’। ঘড়ির কাঁটা যখন সকাল ৯টার ঘরে, তখন সেন নদীর ডান তীরের রাস্তা ধরে ধীরে ধীরে বিশ্বের সেরা জাদুঘর লুভর প্রাসাদের দিকে এগিয়েছেন দুটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকে করে দুজন চালক। আর তাঁদের পেছনে ধাতব মইবাহী একটি লরি। তাতে সাধারণ শ্রমিকের পোশাকে আরও দুজন ব্যক্তি। মই বহনকারী লরিটি রাস্তার পাশে, লুভর জাদুঘরের এক কোণ ঘেঁষে থামল। লরি থেকে মুখ ঢাকা দুজন ব্যক্তি নেমে এলেন। একজনের পরনে উজ্জ্বল হলুদ এবং অন্যজন গায়ে চড়িয়েছেন উজ্জ্বল কমলা রঙের পোশাক। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এমন পোশাক পরা, কাজে ব্যস্ত শ্রমিকদের দেখতে সবাই অভ্যস্ত। তাই তাঁদের দেখে কেউ তেমন সন্দেহ করেনি। তখন ঠিক ৯টা ৩০ মিনিট।
দুজন তস্কর কাচ ও ইস্পাত কাটার যন্ত্র হাতে, মই দিয়ে তরতর করে উঠে গেলেন প্রথম তলায়। একটি জানালার কাচ আর গ্রিল কেটে ঢুকে গেলেন অ্যাপোলো গ্যালারিতে। সে সময়ে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন জনা দশেক দর্শনার্থী। তখন ৯টা ৩৪ মিনিট। প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতায় দুটি কাচের প্রদর্শনী বাক্স কেটে হাতিয়ে নেওয়া হলো ফরাসি রাজপরিবারের বহু পুরোনো বহুরত্নখচিত ৮টি অমূল্য অলংকার—নীলকান্তমণি, পান্না আর হীরার বহুপ্রাচীন সব গয়না। মোট ৮ হাজার হীরা ছিল তাতে! রানি মেরি-অ্যামেলির নেকলেসে ছিল ৮টি নীলকান্তমণি আর ৬৩১টি হীরা। তৃতীয় নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির মুকুটে খচিত ছিল ২ হাজার হীরা। এর মধ্যে সব থেকে বড় হীরা ১৪০ ক্যারেটের।
ইতিমধ্যে, জাদুঘরের বাইরে অপেক্ষমাণ ডিউটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকের দুই স্মার্ট চালক অস্থির হয়ে উঠলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই, রাজরত্ন চুরি করে অতি নিপুণ, দুর্ধর্ষ চারজন তস্কর মোটরবাইকে করে লাপাত্তা হয়ে গেলেন। তীব্র শব্দে বেজে উঠল সতর্কসংকেত। সেই সংকেত সরাসরি পৌঁছে গেল ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। নগরীর শান্ত প্রভাতের নীরবতায় ছেদ ঘটিয়ে চারদিকে পুলিশের সাইরেন। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে ঘটল শতাব্দীর সেরা চুরি!
ফরাসি জাতির ইতিহাসের অংশ অমূল্য ধন, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির এমন চুরির খবর আলোর গতিতে ছড়িয়ে পড়ল পৃথিবীর সব প্রান্তে। চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলো সংবাদমাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব হলো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিরমি খেলেন। রোববারে একটু আলস্য করবেন বলে ঠিক করেছিলেন সদা ব্যস্ত সংস্কৃতিমন্ত্রী। তা না করে ছুটে গেলেন ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে দেখতে। বাঘা বাঘা বিশেষজ্ঞ চুরি যাওয়া রত্ন ও অলংকারের অর্থমূল্য নির্ধারণ না করতে পেরে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘অমূল্য’—অর্থ দিয়ে কেনা যায় না ইতিহাস। সাংবাদিকদের প্রশ্নের বিষমাখা তির বিদ্ধ হয়ে কাতরাতে কাতরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশেষে স্বীকার করলেন, ‘সুবিশাল এই প্রাসাদের ৮ হাজার দরজা, জানালা পাহারা দেওয়া সত্যিই কঠিন কাজ’। তিনি আরও জানিয়েছেন, এর আগে যে চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল, তা সেই ১৯৯৮ সালে, আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্যামিল কোরোতের একটি তেলচিত্র চুরি হয়েছিল। আজও তা উদ্ধার হয়নি।
দুর্ধর্ষ এই চুরির ঘটনা দেশটির রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। বিরোধীরা এই ঘটনাকে ‘জাতির মুখে কালিমা লেপন’ বলে অভিহিত করে বর্তমান সরকারের পরনের কাপড় নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অচিরেই তাঁর দক্ষ গোয়েন্দারা তস্করদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে এবং জড়িত সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ছাড়বেন। সরকার মোট ৬০ জন বাছাই করা তদন্তকারী গোয়েন্দাকে দায়িত্ব দিল চোরাই মালপত্রসহ চোরদের পাকড়াও করার। এসব গোয়েন্দার আছে সারমেয় নাসিকা আর তাঁদের হাতে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ইতিমধ্যে তাঁদের হাতে অনেক আলামত জমা হয়েছে।
যাঁরা অপরাধজগতের খবর রাখেন, তাঁরা এমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উচ্চারণে আস্থা রাখতে পারছেন না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যাঁরা চুরি করেছেন, তাঁরা কোনো সাধারণ চোর বা ডাকাত নন। অত্যন্ত ঝানু এবং বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তস্কর। অঢেল সম্পদশালী কোনো সংগ্রাহক মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাঁদের ঐতিহাসিক অলংকার চুরি করার কাজে লাগিয়েছে। কিংবা বিদেশি কোনো রাষ্ট্র তাদের দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। হতে পারে, অলংকার থেকে হীরা, জহরত আলাদা করে, খুচরা বিক্রির জন্য চুরি করা হয়েছে। তাই যতই সময় গড়াবে, ততই এই রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসবে।
এদিকে এমন দুর্ধর্ষ চুরির কাহিনি নিয়ে বলিউড চলচিত্র নির্মাণ শুরু করলে, তাতে বিস্মিত হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না। সে ছায়াছবির শিরোনাম হতে পারে, ‘সাত মিনিটে চুরি হলো সাত রাজার ধন’।
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই
১১ জানুয়ারি ২০২৩তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১৭ ঘণ্টা আগেজাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভি
১৮ ঘণ্টা আগেসবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ...
১৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক
জাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভিসা ফি এবং বর্তমান পরিস্থিতিও তাঁরা বিবেচনায় রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বর্তমানে জাপানের ভিসা ফি অনেক কম।
এখন জাপানের একক এন্ট্রি ভিসার
ফি বাংলাদেশি টাকায় মাত্র ১ হাজার ৭০০ টাকা। মাল্টিপল ভিসা ফি প্রায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অধিকাংশ দেশের ভিসা ফির তুলনায় অনেক কম। জি-সেভেন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার গড় ভিসা চার্জের তুলনায় জাপানের ফি এখনো অনেক নিচে।
চলতি সময়ে জাপানে পর্যটকের ভিড় বেড়েছে ব্যাপক। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩১ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক জাপান ভ্রমণ করেছে। এটি ২০২৪ সালের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এ বছরের শেষ নাগাদ দেশটিতে পর্যটকের সংখ্যা ৪০ মিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছাবে।
ভিসা ফি বাড়ানোর পাশাপাশি জাপান ‘ডিপারচার ট্যাক্স’ বা আন্তর্জাতিক পর্যটক
ফি বাড়ানোর বিষয় নিয়েও ভাবছে। বর্তমানে এর পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০৫ টাকা। জাপানি নাগরিক ও বিদেশি পর্যটক উভয়কেই এই ফি দিতে হয়। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে জাপানে ভ্রমণ তুলনামূলক ব্যয়বহুল হতে পারে। কারণ, প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে বিদেশি পর্যটকদের জাপানে প্রবেশ করতে এখনকার চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন দেশের পর্যটনশিল্পকে দুর্বল করবে না। জাপানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ইতিহাস ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কারণে পর্যটকেরা সব সময় দেশটি ভ্রমণে আগ্রহী থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জাপানের বিশ্বমানের পর্যটন অভিজ্ঞতা ও নিরাপদ পরিবেশের কারণে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে। এর পাশাপাশি, পর্যটন থেকে পাওয়া রাজস্বও বাড়বে, যা দেশটির জাতীয় অর্থনীতি ও পরিষেবা খাতকে আরও বড় করবে। ফলে জাপান অন্য অনেক দেশের মতো ব্যয়বহুল হলেও পর্যটকদের ভ্রমণ আনন্দে ঘাটতি পড়বে না।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
জাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভিসা ফি এবং বর্তমান পরিস্থিতিও তাঁরা বিবেচনায় রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বর্তমানে জাপানের ভিসা ফি অনেক কম।
এখন জাপানের একক এন্ট্রি ভিসার
ফি বাংলাদেশি টাকায় মাত্র ১ হাজার ৭০০ টাকা। মাল্টিপল ভিসা ফি প্রায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অধিকাংশ দেশের ভিসা ফির তুলনায় অনেক কম। জি-সেভেন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার গড় ভিসা চার্জের তুলনায় জাপানের ফি এখনো অনেক নিচে।
চলতি সময়ে জাপানে পর্যটকের ভিড় বেড়েছে ব্যাপক। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩১ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক জাপান ভ্রমণ করেছে। এটি ২০২৪ সালের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এ বছরের শেষ নাগাদ দেশটিতে পর্যটকের সংখ্যা ৪০ মিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছাবে।
ভিসা ফি বাড়ানোর পাশাপাশি জাপান ‘ডিপারচার ট্যাক্স’ বা আন্তর্জাতিক পর্যটক
ফি বাড়ানোর বিষয় নিয়েও ভাবছে। বর্তমানে এর পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০৫ টাকা। জাপানি নাগরিক ও বিদেশি পর্যটক উভয়কেই এই ফি দিতে হয়। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে জাপানে ভ্রমণ তুলনামূলক ব্যয়বহুল হতে পারে। কারণ, প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে বিদেশি পর্যটকদের জাপানে প্রবেশ করতে এখনকার চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন দেশের পর্যটনশিল্পকে দুর্বল করবে না। জাপানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ইতিহাস ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কারণে পর্যটকেরা সব সময় দেশটি ভ্রমণে আগ্রহী থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জাপানের বিশ্বমানের পর্যটন অভিজ্ঞতা ও নিরাপদ পরিবেশের কারণে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে। এর পাশাপাশি, পর্যটন থেকে পাওয়া রাজস্বও বাড়বে, যা দেশটির জাতীয় অর্থনীতি ও পরিষেবা খাতকে আরও বড় করবে। ফলে জাপান অন্য অনেক দেশের মতো ব্যয়বহুল হলেও পর্যটকদের ভ্রমণ আনন্দে ঘাটতি পড়বে না।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই
১১ জানুয়ারি ২০২৩তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১৭ ঘণ্টা আগেগত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১৭ ঘণ্টা আগেসবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ...
১৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক
সবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ অনেক আকর্ষণীয় গন্তব্য থাকায় দেশটির ঠিক কোথা থেকে দেখা শুরু করবেন, তা ভাবতেই সময় চলে যাবে। আপনার বাজেট যা-ই হোক, জেনে নিন শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণের জন্য বিশেষ ৫টি জায়গার কথা।
কলম্বো
খাবার, সংস্কৃতি ও শহুরে জীবনের অভিজ্ঞতার জন্য শ্রীলঙ্কার আদর্শ শহর এটি। দেশটির সাংস্কৃতিক রাজধানী কলম্বো ভ্রমণ ছাড়া শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। শহরটিতে আছে ঔপনিবেশিক যুগের ঐতিহাসিক ভবন। এর মধ্যে রয়েছে ১৬০০ সালে প্রতিষ্ঠিত টেরাকোটা-ছাদযুক্ত ডাচ হাসপাতাল।
কলম্বোর জনপ্রিয় সমুদ্র উপকূলীয় ওয়াকিংওয়ে গ্যাল ফেস গ্রিনে কিছু সময় কাটাতে ভুলবেন না। এটি দেশটির স্থানীয় খাবার ও সূর্যাস্ত দেখার অনন্য জায়গা। অবেলায় পানিতে নামতে না চাইলে তীরে বসে পাশের রেস্তোরাঁয় ডুবো তেলে ভাজা চিংড়ি, মসুর ডাল ভাজা, মসলাদার সম্বর দিয়ে সাজানো থালি অর্ডার করুন।
ত্রিঙ্কোমালি
স্থাপত্য, স্মৃতিস্তম্ভ ইত্যাদি মিলিয়ে সলো ট্রাভেলারদের জন্য ত্রিঙ্কোমালি বিশেষ আকর্ষণের জায়গা। এখানকার পানি স্নোরকেলিংয়ের জন্য উপযুক্ত। মাইলের পর মাইল প্রবালপ্রাচীর আর সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবন দেখার সুযোগ মিলবে এখানে। তবে জেনে রাখা ভালো, এখানকার সৈকতে লাইফগার্ড নেই; তাই সাঁতার কাটার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
আরুগাম উপসাগর
এককথায় সার্ফারদের প্রিয় গন্তব্য় এটি। শ্রীলঙ্কার পূর্ব উপকূলের এই উপসাগর সুন্দরতম সৈকত ও সার্ফিংয়ের জন্য পুরো বিশ্বে পরিচিত। অভিজ্ঞ সার্ফারদের জন্য আরুগাম উপসাগরের চেয়ে মনোরম আর বন্য জায়গা খুব কমই আছে। সার্ফিংয়ের বাইরে সূর্যাস্ত উপভোগ, বালুতে শুয়ে রৌদ্রস্নানসহ বিভিন্ন অ্যাকটিভিটি করার দুর্দান্ত জায়গা এটি। এখানে রয়েছে সার্ফ স্কুল, অসংখ্য রেস্তোরাঁ ও বিশ্রামাগার। এখানে ভ্রমণের সেরা সময় এপ্রিল থেকে অক্টোবর।
মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান
হাতিপ্রেমীদের জন্য এটি স্বর্গের সমান! মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান শ্রীলঙ্কার উত্তর-মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। নৈসর্গিক মিনেরিয়া হ্রদকে কেন্দ্র করে এ-জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৯ হাজার হেক্টর
বন ও তৃণভূমিজুড়ে ঘুরে বেড়ায় বন্য হাতির দল। শুষ্ক মৌসুমে পার্কের প্রায় ৩০০ হাতি হ্রদের তীরে জড়ো হয়, যা বিশ্বের এশিয়ান হাতির বৃহত্তম সমাবেশ হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনা এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে ঘটে। ফলে যেতে চাইলে এই সময়ের মধ্য়েই সাফারি প্রি-বুক করতে হবে।
অনুরাধাপুর
প্রাচীন বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখার জন্য সেরা এই ঐতিহাসিক শহর। অনুরাধাপুরে আছে ঘড়ির টাওয়ার, পুরোনো রেলস্টেশন ইত্যাদি। এই শহরের উপকণ্ঠে আছে প্রাচীন শ্রীলঙ্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ। আছে প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির, সুউচ্চ দাগোবা বা স্তূপ এবং পবিত্র মহা বোধি গাছ। ভারতের বোধগয়াতে
বুদ্ধ যে গাছের নিচে নির্বাণ লাভ করেছিলেন, তার অংশ থেকে এটি জন্মানো বলে বিশ্বাস করা হয়। এসবের বাইরে আশপাশের জঙ্গল ও গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আরও নানা ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক বিস্ময়।
সবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ অনেক আকর্ষণীয় গন্তব্য থাকায় দেশটির ঠিক কোথা থেকে দেখা শুরু করবেন, তা ভাবতেই সময় চলে যাবে। আপনার বাজেট যা-ই হোক, জেনে নিন শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণের জন্য বিশেষ ৫টি জায়গার কথা।
কলম্বো
খাবার, সংস্কৃতি ও শহুরে জীবনের অভিজ্ঞতার জন্য শ্রীলঙ্কার আদর্শ শহর এটি। দেশটির সাংস্কৃতিক রাজধানী কলম্বো ভ্রমণ ছাড়া শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। শহরটিতে আছে ঔপনিবেশিক যুগের ঐতিহাসিক ভবন। এর মধ্যে রয়েছে ১৬০০ সালে প্রতিষ্ঠিত টেরাকোটা-ছাদযুক্ত ডাচ হাসপাতাল।
কলম্বোর জনপ্রিয় সমুদ্র উপকূলীয় ওয়াকিংওয়ে গ্যাল ফেস গ্রিনে কিছু সময় কাটাতে ভুলবেন না। এটি দেশটির স্থানীয় খাবার ও সূর্যাস্ত দেখার অনন্য জায়গা। অবেলায় পানিতে নামতে না চাইলে তীরে বসে পাশের রেস্তোরাঁয় ডুবো তেলে ভাজা চিংড়ি, মসুর ডাল ভাজা, মসলাদার সম্বর দিয়ে সাজানো থালি অর্ডার করুন।
ত্রিঙ্কোমালি
স্থাপত্য, স্মৃতিস্তম্ভ ইত্যাদি মিলিয়ে সলো ট্রাভেলারদের জন্য ত্রিঙ্কোমালি বিশেষ আকর্ষণের জায়গা। এখানকার পানি স্নোরকেলিংয়ের জন্য উপযুক্ত। মাইলের পর মাইল প্রবালপ্রাচীর আর সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবন দেখার সুযোগ মিলবে এখানে। তবে জেনে রাখা ভালো, এখানকার সৈকতে লাইফগার্ড নেই; তাই সাঁতার কাটার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
আরুগাম উপসাগর
এককথায় সার্ফারদের প্রিয় গন্তব্য় এটি। শ্রীলঙ্কার পূর্ব উপকূলের এই উপসাগর সুন্দরতম সৈকত ও সার্ফিংয়ের জন্য পুরো বিশ্বে পরিচিত। অভিজ্ঞ সার্ফারদের জন্য আরুগাম উপসাগরের চেয়ে মনোরম আর বন্য জায়গা খুব কমই আছে। সার্ফিংয়ের বাইরে সূর্যাস্ত উপভোগ, বালুতে শুয়ে রৌদ্রস্নানসহ বিভিন্ন অ্যাকটিভিটি করার দুর্দান্ত জায়গা এটি। এখানে রয়েছে সার্ফ স্কুল, অসংখ্য রেস্তোরাঁ ও বিশ্রামাগার। এখানে ভ্রমণের সেরা সময় এপ্রিল থেকে অক্টোবর।
মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান
হাতিপ্রেমীদের জন্য এটি স্বর্গের সমান! মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান শ্রীলঙ্কার উত্তর-মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। নৈসর্গিক মিনেরিয়া হ্রদকে কেন্দ্র করে এ-জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৯ হাজার হেক্টর
বন ও তৃণভূমিজুড়ে ঘুরে বেড়ায় বন্য হাতির দল। শুষ্ক মৌসুমে পার্কের প্রায় ৩০০ হাতি হ্রদের তীরে জড়ো হয়, যা বিশ্বের এশিয়ান হাতির বৃহত্তম সমাবেশ হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনা এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে ঘটে। ফলে যেতে চাইলে এই সময়ের মধ্য়েই সাফারি প্রি-বুক করতে হবে।
অনুরাধাপুর
প্রাচীন বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখার জন্য সেরা এই ঐতিহাসিক শহর। অনুরাধাপুরে আছে ঘড়ির টাওয়ার, পুরোনো রেলস্টেশন ইত্যাদি। এই শহরের উপকণ্ঠে আছে প্রাচীন শ্রীলঙ্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ। আছে প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির, সুউচ্চ দাগোবা বা স্তূপ এবং পবিত্র মহা বোধি গাছ। ভারতের বোধগয়াতে
বুদ্ধ যে গাছের নিচে নির্বাণ লাভ করেছিলেন, তার অংশ থেকে এটি জন্মানো বলে বিশ্বাস করা হয়। এসবের বাইরে আশপাশের জঙ্গল ও গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আরও নানা ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক বিস্ময়।
পাঁচ ব্যবসায়ীর মধ্যে আমিই ছিলাম একমাত্র সংবাদকর্মী। কুয়াকাটার উদ্দেশে আমাদের যাত্রাটা শুরু হয় চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি। আগেই বলে রাখা ভালো, আমরা সফরের সূচি ঠিক করি একটু ভিন্নভাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সরাসরি কুয়াকাটায় না গিয়ে ভেঙে ভেঙে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই
১১ জানুয়ারি ২০২৩তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১৭ ঘণ্টা আগেগত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১৭ ঘণ্টা আগেজাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভি
১৮ ঘণ্টা আগে