মানসিক স্বাস্থ্য
বিভুরঞ্জন সরকার
‘ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস করো’। ঋত্বিক ঘটকের এই কথা শোনেনি, এমন মানুষ কি আছে। কোথাও না কোথাও, কোনো না কোনোভাবে এই উক্তি আমরা বহুবার শুনেছি। খুব ইতিবাচক কথা নিঃসন্দেহে। তবে এই ‘ভাবা’ বা ‘ভাবনা’ কিংবা ‘চিন্তা’ শব্দটির উল্টো দিকে আছে ‘দুর্ভাবনা’ শব্দটি। এটি যে নেতিবাচক শব্দ, সেটা বলে দিতে হয় না। অদ্ভুত বিষয় হলো, এই দুটি শব্দ মিলেই আমাদের জীবন। সে জন্যই ইতি আর নেতির ভারসাম্য জরুরি।
চিন্তা ও দুশ্চিন্তা, ভাবনা ও দুর্ভাবনা—শব্দের উচ্চারণে মিল থাকলেও এদের অন্তর্নিহিত অর্থ ও প্রভাব একেবারে বিপরীতমুখী, সে কথা একটু আগে একবার বলা হয়েছে। মানুষ যখন চিন্তা করে, তখন সেই জগৎকে নতুন করে বোঝার চেষ্টা থাকে, বাস্তবতাকে উপলব্ধির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে। চিন্তা তাকে আগলে রাখে না, তাকে উন্মুক্ত করে; যেমন খোলা জানালা দিয়ে নতুন হাওয়া ঘরে প্রবেশ করে, চিন্তাও তেমনি জীবনে তাজা বাতাস আনে। কিন্তু দুশ্চিন্তা সেই জানালাকেই বন্ধ করে দেয়। সে বলে, বাইরে ঝড় আছে, বাইরে অন্ধকার আছে—তুমি ভেবো না, তুমি ভয় পাও।
চিন্তা মানুষকে ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেয়, দুশ্চিন্তা অতীতের প্রেতাত্মাকে সামনে দাঁড় করিয়ে রাখে। একদিকে উন্নয়নের সম্ভাবনা, অন্যদিকে ব্যর্থতার ভীতি। চিন্তা মানুষকে সাহস দেয়, দুশ্চিন্তা তাকে সংকোচে ফেলে। যখন কেউ গভীর চিন্তায় ডুবে থাকে, সে তখন নিজের সীমা অতিক্রম করে নতুন কিছুর খোঁজে থাকে। অন্যদিকে, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষ নিজেরই বানানো শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। তার স্বপ্নগুলো কুঁকড়ে যায়, মনুষ্যত্বের সম্ভাবনা চুপসে যায়।
‘ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস করো’। ঋত্বিক ঘটক, বাঙালি চলচ্চিত্রকার
ভাবনা হচ্ছে মননের একটি সৌন্দর্যময় রূপ। ভাবনায় থাকে জীবন দেখার একধরনের আলো, থাকে অনুভবের কোমলতা, অনুভবের গভীরতা। ভাবনা কবিতার মতো, দর্শনের মতো, ভালোবাসার মতো মানুষকে উজ্জীবিত করে। মানুষ যখন ভাবনায় ডুবে থাকে, সে তখন কেবল নিজের জন্যই নয়, অন্যদের জন্যও চিন্তিত হয়। ভাবনার এই সৌন্দর্য আমাদের মাঝে সহমর্মিতা সৃষ্টি করে, উদারতা জাগায়, একটি বৃহৎ অর্থ খোঁজার প্রেরণা জোগায়।
কিন্তু দুর্ভাবনা সেই আলো নিভিয়ে দেয়। সে ভয় দেখায়, সংশয় ছড়ায়, উদ্যম কমিয়ে দেয়। দুর্ভাবনার চেহারা কুয়াশাচ্ছন্ন, তার শব্দগুলো অস্পষ্ট, তার পথ নিরাশার দিকে। দুর্ভাবনায় থাকা মানুষ কারও পাশে দাঁড়াতে পারে না, নিজের দেহটুকুও সোজা রাখতে পারে না। দুর্ভাবনা মানুষকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে দেয়।
চিন্তা হচ্ছে কাঠামো তৈরির নির্মাণশিল্প, দুশ্চিন্তা সেই কাঠামোতে ফাটল ধরায়। ভাবনা হচ্ছে হৃদয়ের অন্তঃকরণে আলো জ্বালানোর প্রয়াস, আর দুর্ভাবনা সেই আলোকে অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয়। তাই আমাদের পছন্দ করতে হবে কোনটি বেছে নেব—চিন্তার স্বাধীনতা, না দুশ্চিন্তার জেলখানা; ভাবনার প্রেরণা, না দুর্ভাবনার নিঃসঙ্গতা।
মানুষের জীবনে সব সময় আলো থাকে না, প্রতিকূলতা আসে, অনিশ্চয়তা আছড়ে পড়ে। তখনই আমাদের যাচাই হয়—আমরা কি চিন্তাকে আপন করে দুশ্চিন্তার থাবা থেকে মুক্ত হতে পারব? আমরা কি ভাবনার স্বপ্নকে ধরে রাখতে পারব দুর্ভাবনার বিষ থেকে দূরে থেকে?
চিন্তা করলে আমরা পথ খুঁজি, পথ তৈরি করি। দুশ্চিন্তা করলে আমরা পথ ভুলে যাই। ভাবনা আমাদের ভাবায়—জীবনের অর্থ নিয়ে, অন্যদের কষ্ট নিয়ে, নিজের দায় নিয়ে। দুর্ভাবনা কেবল আত্মকেন্দ্রিক এক ক্লান্তিকর চিন্তায় নিয়ে যায়, যার শেষ নেই, শান্তি নেই।
তাই, আমাদের চিন্তা করা ও ভাবা শিখতে হবে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মাঝে সম্ভাবনার আলো খুঁজতে। আর ধীরে ধীরে শিখে যেতে হবে দুশ্চিন্তাকে দূরে রাখা, দুর্ভাবনাকে অতিক্রম করা। কারণ, এই পৃথিবীতে যত বড় অর্জনই হোক না কেন, তার শুরুতে ছিল একটি চিন্তা, একটি ভাবনা—যা কখনো দুশ্চিন্তার ভয়ে থেমে যায়নি, দুর্ভাবনার বাধায় ভেঙে পড়েনি।
এই তো জীবন। এই তো বেঁচে থাকার শর্ত। চিন্তার পথে হেঁটে ভাবনার দিকে এগিয়ে যাওয়া।
‘ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস করো’। ঋত্বিক ঘটকের এই কথা শোনেনি, এমন মানুষ কি আছে। কোথাও না কোথাও, কোনো না কোনোভাবে এই উক্তি আমরা বহুবার শুনেছি। খুব ইতিবাচক কথা নিঃসন্দেহে। তবে এই ‘ভাবা’ বা ‘ভাবনা’ কিংবা ‘চিন্তা’ শব্দটির উল্টো দিকে আছে ‘দুর্ভাবনা’ শব্দটি। এটি যে নেতিবাচক শব্দ, সেটা বলে দিতে হয় না। অদ্ভুত বিষয় হলো, এই দুটি শব্দ মিলেই আমাদের জীবন। সে জন্যই ইতি আর নেতির ভারসাম্য জরুরি।
চিন্তা ও দুশ্চিন্তা, ভাবনা ও দুর্ভাবনা—শব্দের উচ্চারণে মিল থাকলেও এদের অন্তর্নিহিত অর্থ ও প্রভাব একেবারে বিপরীতমুখী, সে কথা একটু আগে একবার বলা হয়েছে। মানুষ যখন চিন্তা করে, তখন সেই জগৎকে নতুন করে বোঝার চেষ্টা থাকে, বাস্তবতাকে উপলব্ধির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে। চিন্তা তাকে আগলে রাখে না, তাকে উন্মুক্ত করে; যেমন খোলা জানালা দিয়ে নতুন হাওয়া ঘরে প্রবেশ করে, চিন্তাও তেমনি জীবনে তাজা বাতাস আনে। কিন্তু দুশ্চিন্তা সেই জানালাকেই বন্ধ করে দেয়। সে বলে, বাইরে ঝড় আছে, বাইরে অন্ধকার আছে—তুমি ভেবো না, তুমি ভয় পাও।
চিন্তা মানুষকে ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেয়, দুশ্চিন্তা অতীতের প্রেতাত্মাকে সামনে দাঁড় করিয়ে রাখে। একদিকে উন্নয়নের সম্ভাবনা, অন্যদিকে ব্যর্থতার ভীতি। চিন্তা মানুষকে সাহস দেয়, দুশ্চিন্তা তাকে সংকোচে ফেলে। যখন কেউ গভীর চিন্তায় ডুবে থাকে, সে তখন নিজের সীমা অতিক্রম করে নতুন কিছুর খোঁজে থাকে। অন্যদিকে, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষ নিজেরই বানানো শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। তার স্বপ্নগুলো কুঁকড়ে যায়, মনুষ্যত্বের সম্ভাবনা চুপসে যায়।
‘ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস করো’। ঋত্বিক ঘটক, বাঙালি চলচ্চিত্রকার
ভাবনা হচ্ছে মননের একটি সৌন্দর্যময় রূপ। ভাবনায় থাকে জীবন দেখার একধরনের আলো, থাকে অনুভবের কোমলতা, অনুভবের গভীরতা। ভাবনা কবিতার মতো, দর্শনের মতো, ভালোবাসার মতো মানুষকে উজ্জীবিত করে। মানুষ যখন ভাবনায় ডুবে থাকে, সে তখন কেবল নিজের জন্যই নয়, অন্যদের জন্যও চিন্তিত হয়। ভাবনার এই সৌন্দর্য আমাদের মাঝে সহমর্মিতা সৃষ্টি করে, উদারতা জাগায়, একটি বৃহৎ অর্থ খোঁজার প্রেরণা জোগায়।
কিন্তু দুর্ভাবনা সেই আলো নিভিয়ে দেয়। সে ভয় দেখায়, সংশয় ছড়ায়, উদ্যম কমিয়ে দেয়। দুর্ভাবনার চেহারা কুয়াশাচ্ছন্ন, তার শব্দগুলো অস্পষ্ট, তার পথ নিরাশার দিকে। দুর্ভাবনায় থাকা মানুষ কারও পাশে দাঁড়াতে পারে না, নিজের দেহটুকুও সোজা রাখতে পারে না। দুর্ভাবনা মানুষকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে দেয়।
চিন্তা হচ্ছে কাঠামো তৈরির নির্মাণশিল্প, দুশ্চিন্তা সেই কাঠামোতে ফাটল ধরায়। ভাবনা হচ্ছে হৃদয়ের অন্তঃকরণে আলো জ্বালানোর প্রয়াস, আর দুর্ভাবনা সেই আলোকে অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয়। তাই আমাদের পছন্দ করতে হবে কোনটি বেছে নেব—চিন্তার স্বাধীনতা, না দুশ্চিন্তার জেলখানা; ভাবনার প্রেরণা, না দুর্ভাবনার নিঃসঙ্গতা।
মানুষের জীবনে সব সময় আলো থাকে না, প্রতিকূলতা আসে, অনিশ্চয়তা আছড়ে পড়ে। তখনই আমাদের যাচাই হয়—আমরা কি চিন্তাকে আপন করে দুশ্চিন্তার থাবা থেকে মুক্ত হতে পারব? আমরা কি ভাবনার স্বপ্নকে ধরে রাখতে পারব দুর্ভাবনার বিষ থেকে দূরে থেকে?
চিন্তা করলে আমরা পথ খুঁজি, পথ তৈরি করি। দুশ্চিন্তা করলে আমরা পথ ভুলে যাই। ভাবনা আমাদের ভাবায়—জীবনের অর্থ নিয়ে, অন্যদের কষ্ট নিয়ে, নিজের দায় নিয়ে। দুর্ভাবনা কেবল আত্মকেন্দ্রিক এক ক্লান্তিকর চিন্তায় নিয়ে যায়, যার শেষ নেই, শান্তি নেই।
তাই, আমাদের চিন্তা করা ও ভাবা শিখতে হবে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মাঝে সম্ভাবনার আলো খুঁজতে। আর ধীরে ধীরে শিখে যেতে হবে দুশ্চিন্তাকে দূরে রাখা, দুর্ভাবনাকে অতিক্রম করা। কারণ, এই পৃথিবীতে যত বড় অর্জনই হোক না কেন, তার শুরুতে ছিল একটি চিন্তা, একটি ভাবনা—যা কখনো দুশ্চিন্তার ভয়ে থেমে যায়নি, দুর্ভাবনার বাধায় ভেঙে পড়েনি।
এই তো জীবন। এই তো বেঁচে থাকার শর্ত। চিন্তার পথে হেঁটে ভাবনার দিকে এগিয়ে যাওয়া।
রান্নায় চিনি ব্যবহারে খাবারের রঙ ও স্বাদ দুটোই বাড়ে। বিশ্বাস না হলে গরুর মাংসে চিনি ব্যবহার করেই দেখুন। তবে শুধু চিনি ব্যবহার করলেই হবে না, কীভাবে রান্না করছেন তার ওপরও নির্ভর করবে স্বাদ কেমন হবে।
২ ঘণ্টা আগেশ্রাবণের শেষেই যদি থাকে রোদের এত তাপ, তাহলে আসছে শরতে কী হবে, বোঝাই যাচ্ছে। সকালে স্নান সেরে সেজেগুজে বের হয়েও নিস্তার নেই। আধা ঘণ্টার মধ্য়ে ঘেমে-নেয়ে নাজেহাল। রোদের তাপে ত্বকের অবস্থা খারাপ। ব্রণ হওয়ার প্রবণতাও এ ঋতুতে বেড়ে যায়। এ সময় ত্বক ঠান্ডা রাখতে পারলে ব্রণ ও র্যাশ হওয়ার আশঙ্কা কমে...
৭ ঘণ্টা আগেরোমকূপে ত্বক নষ্ট! সেই সঙ্গে নষ্ট শান্তি। বহু কিছু করেও বাগে আনা যাচ্ছে না সেগুলো; বরং ধীরে ধীরে সংখ্যা বেড়ে চলেছে। একটু ধৈর্য ধরে বসুন। এরও প্রতিকার আছে। ঘরোয়া উপায়ে ধীরে ধীরে পোরস বা রোমকূপ বড় হয়ে যাওয়ার সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
২০ ঘণ্টা আগেত্বকের বিশেষ যত্নে হোক বা না হোক, কমবেশি সবাই রোজ ত্বকে দুই বেলা ব্যবহার করেন, এমন একটি প্রসাধনী হচ্ছে ফেসওয়াশ। সাধারণত এটি খুব ভেবেচিন্তে বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না মেনে পছন্দ হলেই কিনে ফেলি। কিন্তু কাজ হয় কি না, সেদিকে অনেক সময় খেয়ালও করি না। কিন্তু নালিশ করেই যাই, অমুক ব্র্যান্ডের ফেসওয়াশ...
১ দিন আগে