ফিচার ডেস্ক
অ্যারিজোনা রাজ্যের টেম্পে শহরে গাড়ি ছাড়াই গড়ে উঠেছে এক আধুনিক আবাসিক এলাকা কালডিস্যাক। যুক্তরাষ্ট্রে এটাই প্রথম বড় আকারে নির্মিত কার-ফ্রি বা গাড়িমুক্ত অঞ্চল। এখানে গাড়ির হর্ন নেই, নেই ধোঁয়া আর যানজটের ভিড়; বরং রয়েছে খোলা চত্বর, সরু গলি, ক্যাফে, রেস্তোরাঁ আর প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশার মতো পরিবেশ।
ভূমধ্যসাগরের ছোঁয়া অ্যারিজোনায়
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা করছেন কালডিস্যাকের বাসিন্দা শেরিল মারডক। প্রতিদিন নিজের বাড়ি ফেরার পথে তাঁর মনে হয়, তিনি যেন গ্রিসের কোনো দ্বীপে চলে এসেছেন। মধ্যবর্তী বড় চত্বরটি যেন মুক্ত আকাশে বসার কোনো ঘর। গাড়ির শব্দ এখানে মিলিয়ে যায়, শুধু শোনা যায় মানুষের হাসি, আলাপ কিংবা কর্নহোল খেলার আওয়াজ। সরু পথ ধরে হাঁটলে চোখে পড়ে সাদা বাড়ির দেয়াল, রঙিন দেয়ালচিত্র, ফেয়ারি লাইট আর বোগেনভেলিয়ার ফুল। স্থপতি ড্যানিয়েল পারোলেক এই নকশা করেছেন ইতালি ও ফ্রান্সের পাহাড়ি গ্রাম ও সমুদ্রতীরবর্তী শহর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে।
গাড়ি নয়, মানুষের জন্য শহর
শহরগুলো গত শতকে গাড়িকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে। এর ফল—দূষণ, যানজট, একঘেয়ে শহরতলি আর সামাজিক বিচ্ছিন্নতা। কিন্তু এখনকার গবেষণা বলছে, হাঁটার উপযোগী শহরে মানুষ বেশি সুখী, সুস্থ আর কম একাকী হয়। ইউরোপে যেমন কোপেনহেগেনের নর্দহাভন বা বার্সেলোনার সুপারব্লক প্রকল্প বিশ্বে হাঁটাভিত্তিক নগরায়ণের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে বছরের পর বছর। তবে কালডিস্যাকের অবস্থান অনেকটাই ব্যতিক্রমী। কারণ, ফিনিক্স মহানগর এলাকা গাড়িনির্ভরতার জন্য সমালোচিত। তাই ২০২৩ সালে যখন এই প্রকল্প শুরু হয়, তখন অনেকে সন্দেহ করেছিলেন, গাড়িবিহীন এ প্রকল্প টিকবে কি না।
গাড়ি না থাকলেও চলাচলে অসুবিধা নেই
১৭ একরের এই অঞ্চলে বাসিন্দাদের জন্য সবকিছু আছে হাতের নাগালে। এখানে রয়েছে খাবারের দোকান, আর্টি ক্যাফে, ডাক্তারের চেম্বার, কোরিয়ান দোকান, কুকুরের পার্ক, সুইমিংপুল এবং ব্যায়াম করার জিম। বাসিন্দারা প্রয়োজনমতো এগুলো মাত্র কয়েক মিনিটের হাঁটায় পেয়ে যান। বাইরে যেতে হলে রয়েছে লাইট রেল। এতে করে কয়েক মিনিটে শহরের কেন্দ্র বা বিমানবন্দর পর্যন্ত যাওয়া যায়। চাইলে ব্যবহার করা যায় স্বয়ংক্রিয় বৈদ্যুতিক রোবোট্যাক্সি, ভাড়া সাইকেল এবং শেয়ার করা বৈদ্যুতিক গাড়ি। এই সুবিধাগুলো বাসিন্দাদের জীবনকে সহজ, স্বাধীন এবং আরামদায়ক করে তুলেছে।
পরিবেশবান্ধব জীবন
জাতিসংঘের হিসাবে, ব্যক্তিগত গাড়ির বদলে গণপরিবহন, হাঁটা বা সাইকেল ব্যবহারে একজন মানুষ বছরে ২ দশমিক ২ থেকে ৩ দশমিক ৬ টন কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারেন। পুরো কালডিস্যাক সম্পূর্ণ হলে বছরে প্রায় ৩ হাজার টন গ্রিনহাউস গ্যাস কমানো সম্ভব হবে।
গরমে আরামদায়ক পরিবেশ
রাজধানী ফিনিক্সের ভয়াবহ গরম পড়ে ২০২৩ সালে। ১৪৩ দিন তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। তাই কালডিস্যাকের ভবনগুলো ভূমধ্যসাগরীয় ধাঁচে সাদা রং করা হয়েছে। বাড়িগুলো কাছাকাছি বানানো, সরু হাঁটার পথ। ফলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, কালডিস্যাকের ভেতরের জমি বাইরের চেয়ে ১৭–২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠান্ডা।
প্রাণবন্ত সম্প্রদায়
কালডিস্যাকে প্রায় ২১টি ছোট ব্যবসা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে রেস্তোরাঁ, মৃৎশিল্পের দোকান, সাইকেল দোকান এবং টেকসই পোশাকের স্টোর। বাজারের দিনে বাজে লাইভ মিউজিক, মানুষ ঘুরে ঘুরে দেখে হাতে বানানো সিরামিক সামগ্রী আর নাভাহো-প্রাণিত ব্লু কর্ন ক্রোসঁ। স্থপতি পারোলেকের কথায়, ‘গাড়ি বাদ দিলে, মানুষের জন্য প্রাণবন্ত সম্প্রদায় গড়ে ওঠার সুযোগ অনেক বেড়ে যায়।’ বাসিন্দারাও এ কথা মেনে চলেছেন। গাড়িমুক্ত পরিবেশের কারণে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলাপচারিতা বেড়েছে, একাকিত্ব কমেছে।
কালডিস্যাক শুধু একটি আবাসন প্রকল্প নয়। এটি দেখায়, শহরকে মানুষবান্ধব করা সম্ভব। গাড়ি ছাড়াই এখানে মানুষ হাঁটতে, সাইকেল চালাতে, বাজার ঘুরতে পারে। কালডিস্যাকের মতো এই পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রে নতুন নতুন শহরে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। স্থানীয় সরকার ও ডেভেলপাররাও এই মডেল নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
অ্যারিজোনা রাজ্যের টেম্পে শহরে গাড়ি ছাড়াই গড়ে উঠেছে এক আধুনিক আবাসিক এলাকা কালডিস্যাক। যুক্তরাষ্ট্রে এটাই প্রথম বড় আকারে নির্মিত কার-ফ্রি বা গাড়িমুক্ত অঞ্চল। এখানে গাড়ির হর্ন নেই, নেই ধোঁয়া আর যানজটের ভিড়; বরং রয়েছে খোলা চত্বর, সরু গলি, ক্যাফে, রেস্তোরাঁ আর প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশার মতো পরিবেশ।
ভূমধ্যসাগরের ছোঁয়া অ্যারিজোনায়
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা করছেন কালডিস্যাকের বাসিন্দা শেরিল মারডক। প্রতিদিন নিজের বাড়ি ফেরার পথে তাঁর মনে হয়, তিনি যেন গ্রিসের কোনো দ্বীপে চলে এসেছেন। মধ্যবর্তী বড় চত্বরটি যেন মুক্ত আকাশে বসার কোনো ঘর। গাড়ির শব্দ এখানে মিলিয়ে যায়, শুধু শোনা যায় মানুষের হাসি, আলাপ কিংবা কর্নহোল খেলার আওয়াজ। সরু পথ ধরে হাঁটলে চোখে পড়ে সাদা বাড়ির দেয়াল, রঙিন দেয়ালচিত্র, ফেয়ারি লাইট আর বোগেনভেলিয়ার ফুল। স্থপতি ড্যানিয়েল পারোলেক এই নকশা করেছেন ইতালি ও ফ্রান্সের পাহাড়ি গ্রাম ও সমুদ্রতীরবর্তী শহর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে।
গাড়ি নয়, মানুষের জন্য শহর
শহরগুলো গত শতকে গাড়িকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে। এর ফল—দূষণ, যানজট, একঘেয়ে শহরতলি আর সামাজিক বিচ্ছিন্নতা। কিন্তু এখনকার গবেষণা বলছে, হাঁটার উপযোগী শহরে মানুষ বেশি সুখী, সুস্থ আর কম একাকী হয়। ইউরোপে যেমন কোপেনহেগেনের নর্দহাভন বা বার্সেলোনার সুপারব্লক প্রকল্প বিশ্বে হাঁটাভিত্তিক নগরায়ণের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে বছরের পর বছর। তবে কালডিস্যাকের অবস্থান অনেকটাই ব্যতিক্রমী। কারণ, ফিনিক্স মহানগর এলাকা গাড়িনির্ভরতার জন্য সমালোচিত। তাই ২০২৩ সালে যখন এই প্রকল্প শুরু হয়, তখন অনেকে সন্দেহ করেছিলেন, গাড়িবিহীন এ প্রকল্প টিকবে কি না।
গাড়ি না থাকলেও চলাচলে অসুবিধা নেই
১৭ একরের এই অঞ্চলে বাসিন্দাদের জন্য সবকিছু আছে হাতের নাগালে। এখানে রয়েছে খাবারের দোকান, আর্টি ক্যাফে, ডাক্তারের চেম্বার, কোরিয়ান দোকান, কুকুরের পার্ক, সুইমিংপুল এবং ব্যায়াম করার জিম। বাসিন্দারা প্রয়োজনমতো এগুলো মাত্র কয়েক মিনিটের হাঁটায় পেয়ে যান। বাইরে যেতে হলে রয়েছে লাইট রেল। এতে করে কয়েক মিনিটে শহরের কেন্দ্র বা বিমানবন্দর পর্যন্ত যাওয়া যায়। চাইলে ব্যবহার করা যায় স্বয়ংক্রিয় বৈদ্যুতিক রোবোট্যাক্সি, ভাড়া সাইকেল এবং শেয়ার করা বৈদ্যুতিক গাড়ি। এই সুবিধাগুলো বাসিন্দাদের জীবনকে সহজ, স্বাধীন এবং আরামদায়ক করে তুলেছে।
পরিবেশবান্ধব জীবন
জাতিসংঘের হিসাবে, ব্যক্তিগত গাড়ির বদলে গণপরিবহন, হাঁটা বা সাইকেল ব্যবহারে একজন মানুষ বছরে ২ দশমিক ২ থেকে ৩ দশমিক ৬ টন কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারেন। পুরো কালডিস্যাক সম্পূর্ণ হলে বছরে প্রায় ৩ হাজার টন গ্রিনহাউস গ্যাস কমানো সম্ভব হবে।
গরমে আরামদায়ক পরিবেশ
রাজধানী ফিনিক্সের ভয়াবহ গরম পড়ে ২০২৩ সালে। ১৪৩ দিন তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। তাই কালডিস্যাকের ভবনগুলো ভূমধ্যসাগরীয় ধাঁচে সাদা রং করা হয়েছে। বাড়িগুলো কাছাকাছি বানানো, সরু হাঁটার পথ। ফলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, কালডিস্যাকের ভেতরের জমি বাইরের চেয়ে ১৭–২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠান্ডা।
প্রাণবন্ত সম্প্রদায়
কালডিস্যাকে প্রায় ২১টি ছোট ব্যবসা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে রেস্তোরাঁ, মৃৎশিল্পের দোকান, সাইকেল দোকান এবং টেকসই পোশাকের স্টোর। বাজারের দিনে বাজে লাইভ মিউজিক, মানুষ ঘুরে ঘুরে দেখে হাতে বানানো সিরামিক সামগ্রী আর নাভাহো-প্রাণিত ব্লু কর্ন ক্রোসঁ। স্থপতি পারোলেকের কথায়, ‘গাড়ি বাদ দিলে, মানুষের জন্য প্রাণবন্ত সম্প্রদায় গড়ে ওঠার সুযোগ অনেক বেড়ে যায়।’ বাসিন্দারাও এ কথা মেনে চলেছেন। গাড়িমুক্ত পরিবেশের কারণে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলাপচারিতা বেড়েছে, একাকিত্ব কমেছে।
কালডিস্যাক শুধু একটি আবাসন প্রকল্প নয়। এটি দেখায়, শহরকে মানুষবান্ধব করা সম্ভব। গাড়ি ছাড়াই এখানে মানুষ হাঁটতে, সাইকেল চালাতে, বাজার ঘুরতে পারে। কালডিস্যাকের মতো এই পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রে নতুন নতুন শহরে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। স্থানীয় সরকার ও ডেভেলপাররাও এই মডেল নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ফার্স্টট্রিপ গুরুত্ব দিয়েছে তিনটি বিষয়ে—স্বচ্ছতা, সুবিধা ও নির্ভরযোগ্যতা। ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল প্রজন্মের ভ্রমণপ্রবণতার সঙ্গে এই দৃষ্টিভঙ্গি মিলেছে সবচেয়ে বেশি। ফলে অল্প সময়েই সারা দেশ থেকে হাজারো গ্রাহক যুক্ত হয়েছেন তাদের সঙ্গে।
৫ ঘণ্টা আগেহাঁসের মাংস খেতে ইচ্ছা হলে বাড়িতেই রেঁধে ফেলা ভালো। আপনাদের জন্য সুস্বাদু উপায়ে হাঁসের মাংস রান্নার রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী ওমাম রায়হান।
১ দিন আগেযুগে যুগে ফ্যাশন পরিবর্তন হয়েছে। ইউরোপে একসময় পিঠে কেপ, গলায় রাফল ও করসেট ছিল প্রচলিত পোশাক। এখন এসব হারিয়ে গেলেও নতুন নতুন ফ্যাশনের উদ্ভব ঘটছে। চীনে বর্তমানে এমনই এক নতুন ফ্যাশন ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে—‘ফেসকিনি’।
১ দিন আগেচীনের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সব সময় ভ্রমণপিয়াসি ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের আকর্ষণ করে এসেছে। মহাপ্রাচীর থেকে শুরু করে পোড়ামাটির সৈন্যবাহিনী মতো স্থাপনা—প্রতিটি পর্যটন গন্তব্যে আছে অনন্য অভিজ্ঞতার হাতছানি। এসবের পাশাপাশি আরও একটি বিস্ময়কর প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে চীনের পূর্বাঞ্চলীয় চচিয়া
১ দিন আগে