মো. ইকবাল হোসেন
বাঙালির উৎসব মানেই বিশেষ খাওয়াদাওয়ার আয়োজন। দুর্গাপূজায়ও এর ব্যতিক্রম ঘটে না। ষষ্ঠী থেকে শুরু করে দশমী পর্যন্ত চলতে থাকে নানান পদের খাবারের আয়োজন।
পূজার ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে রয়েছে নিরামিষ ও আমিষের বিভিন্ন পদ। যেমন—লুচি, আলুর দম, ভোগের খিচুড়ি, বিভিন্ন ভর্তা, খাসির মাংস, পাঁপড়সহ আরও বাহারি সব খাবার। এ ছাড়া মনকে তৃপ্ত করতে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি যেমন—সন্দেশ, চমচম, বাতাসা, নারকেলের নাড়ু, লাড্ডু, পিঠা, মোয়া, রসগোল্লা, ক্ষীর, মিষ্টি দই ও বাহারি স্বাদের পায়েসের আয়োজন তো থাকেই। এই উৎসবে পোলাও, বিরিয়ানি, কষা মাংস, মাছের তরকারি, রোল এবং ফুচকাও কিন্তু বেশ জনপ্রিয় খাবার।
উৎসবের ভোজ ও রোগের যোগসূত্র
একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, পূজার আয়োজনের খাবারগুলোর একটা বড় অংশ উচ্চ কার্বোহাইড্রেট এবং উচ্চ ফ্যাট-সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট আমাদের শরীরের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে এই জ্বালানি খরচ করতে হয়। কিন্তু আমরা পূজার দিনগুলোতে খাবার যতটা গ্রহণ করি, শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে ক্যালরি পোড়াই ততটাই কম।
বর্তমান সময়ে ওবেসিটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস, হাইপার কোলেস্ট্রেমিয়া, ফ্যাটি লিভার এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগীও রয়েছে ঘরে ঘরে। এসব রোগকে বলা হয় সঠিক নিয়মে জীবনযাপন করার ফলে হওয়া অসুখ। সঠিক জীবনযাপনের অন্যতম একটি অংশ হচ্ছে সঠিক খাবার ব্যবস্থাপনা। পূজার সময় আমরা যদি এমন উচ্চ কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার মাত্রারিক্ত খাই, তাহলে ওপরে উল্লেখিত রোগে আক্রান্তদের সমস্যাগুলো আরও বাড়বে। আর যাঁরা সুস্থ রয়েছেন, তাঁদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কাও অনেক বেড়ে যাবে।
করণীয়
সুস্থ থাকতে উৎসবে কি তাহলে কড়া ডায়েট মেনে চলতে হবে? একেবারেই না। শুধু একটু বুঝে চললেই ভালো থাকা সম্ভব।
ডুবোতেলে ভাজা খাবার দিনে একবারের বেশি খাওয়া যাবে না এবং পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। এক গ্রাম সিদ্ধ ভাত থেকে আমরা ১.২৫ কিলোক্যালরি পাই, আর এক গ্রাম তেল থেকে ৯ কিলোক্যালরি পাওয়া যায়। অর্থাৎ, তেল এই সমস্যাগুলোকে ভাতের চেয়ে প্রায় সাত গুণ বেশি ত্বরান্বিত করে। আবার যেকোনো তেলকে তার স্ফুটনাঙ্কের ওপরে উত্তপ্ত করলে অনেক বেশি ট্রান্সফ্যাট তৈরি হয়। তাই এসব খাবারে ট্রান্সফ্যাটের পরিমাণ অন্যান্য যেকোনো খাবারের চেয়ে বেশি থাকে। ট্রান্সফ্যাট আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।
কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে অন্য কার্বোহাইড্রেট মেশাবেন না বা খাবেন না। যেমন–লুচির সঙ্গে আলুর দম বা আলুভাজি খাবেন না। ভাতের সঙ্গে আলুভর্তা খাবেন না। এতে খাবারে পুষ্টির ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি শর্করার পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে।
‘শেষপাতে দই-মিষ্টি’ এই প্রবাদ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। অর্থাৎ, প্রধান খাবারের পর মিষ্টিজাতীয় কিছুই খাবেন না। এতেও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে, যা আপনার রক্তের সুগার বৃদ্ধিসহ অন্যান্য জটিলতা বাড়াবে। মিষ্টিজাতীয় খাবারগুলো সব সময় স্ন্যাক্স হিসেবে অল্প পরিমাণে খাবেন।
পূজার মণ্ডপে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে একটু ব্যায়াম করে নিন। এতে বাড়তি ক্যালরি কিছুটা খরচ হয়ে যাবে।
খাবারের একটা পরিকল্পনা করে নিন। একদিন হয়তো ভাজাপোড়া খাবেন, পরদিন মিষ্টি খাবেন। এর পরদিন লুচি, আলুর দম বা কষা মাংস খাবেন। এভাবে বুঝেশুনে খেলে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমবে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খাবেন। বিকেলের পর থেকে কোনো উচ্চ ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার খাবেন না।
যাঁরা ডায়াবেটিস, হাইপার কোলেস্ট্রেমিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, ফ্যাটি লিভার বা কিডনি জটিলতায় ভুগছেন, তাঁরা প্রতিটি খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেবেন।
লেখক: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
বাঙালির উৎসব মানেই বিশেষ খাওয়াদাওয়ার আয়োজন। দুর্গাপূজায়ও এর ব্যতিক্রম ঘটে না। ষষ্ঠী থেকে শুরু করে দশমী পর্যন্ত চলতে থাকে নানান পদের খাবারের আয়োজন।
পূজার ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে রয়েছে নিরামিষ ও আমিষের বিভিন্ন পদ। যেমন—লুচি, আলুর দম, ভোগের খিচুড়ি, বিভিন্ন ভর্তা, খাসির মাংস, পাঁপড়সহ আরও বাহারি সব খাবার। এ ছাড়া মনকে তৃপ্ত করতে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি যেমন—সন্দেশ, চমচম, বাতাসা, নারকেলের নাড়ু, লাড্ডু, পিঠা, মোয়া, রসগোল্লা, ক্ষীর, মিষ্টি দই ও বাহারি স্বাদের পায়েসের আয়োজন তো থাকেই। এই উৎসবে পোলাও, বিরিয়ানি, কষা মাংস, মাছের তরকারি, রোল এবং ফুচকাও কিন্তু বেশ জনপ্রিয় খাবার।
উৎসবের ভোজ ও রোগের যোগসূত্র
একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, পূজার আয়োজনের খাবারগুলোর একটা বড় অংশ উচ্চ কার্বোহাইড্রেট এবং উচ্চ ফ্যাট-সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট আমাদের শরীরের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে এই জ্বালানি খরচ করতে হয়। কিন্তু আমরা পূজার দিনগুলোতে খাবার যতটা গ্রহণ করি, শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে ক্যালরি পোড়াই ততটাই কম।
বর্তমান সময়ে ওবেসিটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস, হাইপার কোলেস্ট্রেমিয়া, ফ্যাটি লিভার এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগীও রয়েছে ঘরে ঘরে। এসব রোগকে বলা হয় সঠিক নিয়মে জীবনযাপন করার ফলে হওয়া অসুখ। সঠিক জীবনযাপনের অন্যতম একটি অংশ হচ্ছে সঠিক খাবার ব্যবস্থাপনা। পূজার সময় আমরা যদি এমন উচ্চ কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার মাত্রারিক্ত খাই, তাহলে ওপরে উল্লেখিত রোগে আক্রান্তদের সমস্যাগুলো আরও বাড়বে। আর যাঁরা সুস্থ রয়েছেন, তাঁদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কাও অনেক বেড়ে যাবে।
করণীয়
সুস্থ থাকতে উৎসবে কি তাহলে কড়া ডায়েট মেনে চলতে হবে? একেবারেই না। শুধু একটু বুঝে চললেই ভালো থাকা সম্ভব।
ডুবোতেলে ভাজা খাবার দিনে একবারের বেশি খাওয়া যাবে না এবং পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। এক গ্রাম সিদ্ধ ভাত থেকে আমরা ১.২৫ কিলোক্যালরি পাই, আর এক গ্রাম তেল থেকে ৯ কিলোক্যালরি পাওয়া যায়। অর্থাৎ, তেল এই সমস্যাগুলোকে ভাতের চেয়ে প্রায় সাত গুণ বেশি ত্বরান্বিত করে। আবার যেকোনো তেলকে তার স্ফুটনাঙ্কের ওপরে উত্তপ্ত করলে অনেক বেশি ট্রান্সফ্যাট তৈরি হয়। তাই এসব খাবারে ট্রান্সফ্যাটের পরিমাণ অন্যান্য যেকোনো খাবারের চেয়ে বেশি থাকে। ট্রান্সফ্যাট আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।
কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে অন্য কার্বোহাইড্রেট মেশাবেন না বা খাবেন না। যেমন–লুচির সঙ্গে আলুর দম বা আলুভাজি খাবেন না। ভাতের সঙ্গে আলুভর্তা খাবেন না। এতে খাবারে পুষ্টির ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি শর্করার পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে।
‘শেষপাতে দই-মিষ্টি’ এই প্রবাদ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। অর্থাৎ, প্রধান খাবারের পর মিষ্টিজাতীয় কিছুই খাবেন না। এতেও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে, যা আপনার রক্তের সুগার বৃদ্ধিসহ অন্যান্য জটিলতা বাড়াবে। মিষ্টিজাতীয় খাবারগুলো সব সময় স্ন্যাক্স হিসেবে অল্প পরিমাণে খাবেন।
পূজার মণ্ডপে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে একটু ব্যায়াম করে নিন। এতে বাড়তি ক্যালরি কিছুটা খরচ হয়ে যাবে।
খাবারের একটা পরিকল্পনা করে নিন। একদিন হয়তো ভাজাপোড়া খাবেন, পরদিন মিষ্টি খাবেন। এর পরদিন লুচি, আলুর দম বা কষা মাংস খাবেন। এভাবে বুঝেশুনে খেলে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমবে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খাবেন। বিকেলের পর থেকে কোনো উচ্চ ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার খাবেন না।
যাঁরা ডায়াবেটিস, হাইপার কোলেস্ট্রেমিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, ফ্যাটি লিভার বা কিডনি জটিলতায় ভুগছেন, তাঁরা প্রতিটি খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেবেন।
লেখক: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
ছুটির দিন সকালে আয়েশ করে একটু ভিন্ন ধরনের নাশতা করতে কে না চায়? তবে তার জন্য সময় ব্যয় করতেও মন সায় দেয় না। তাই চটজলদি মজাদার কিছু খেতে চাইলে তৈরি করে ফেলুন লুচি। আর লুচির সঙ্গে খাওয়ার জন্য আলুর ঝোল। লুচি গড়তে তো সবাই পারেন। তবে আলুর ঝোলের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
২ ঘণ্টা আগেবিমান ভ্রমণ কখনো কখনো দীর্ঘ হতে পারে। এর মধ্যে যাত্রীরা একাধিকবার খাবার খান, একটু ঘুমিয়ে নেন। দীর্ঘ ভ্রমণের সময় কাপড় বদলানো আরামদায়ক মনে হতে পারে। অনেকেই স্বস্তির জন্য ভ্রমণের সময় আরামদায়ক পোশাক পরে নেন। পোশাক পরিবর্তনের এই ভ্রমণসংক্রান্ত দ্বিধা নিয়ে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন।
৪ ঘণ্টা আগেস্কিন ডায়েট হলো এমন এক খাদ্যাভ্যাস, যেখানে স্বাস্থ্যকর ত্বক পেতে নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়া ও পানীয় পান করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, ত্বক ভেতর থেকে সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখা, ব্রণের মতো সমস্যা কমানো, দাগছোপ ও অকালে বলিরেখা পড়তে না দেওয়া এবং ত্বকের অকালবার্ধক্য প্রতিরোধ করা।...
৭ ঘণ্টা আগেবিদেশ ভ্রমণের আনন্দ ধরে রাখতে চাইলে কিছুটা পরিকল্পনা, সময়জ্ঞান ও সচেতনতা প্রয়োজন। দীর্ঘ সারি, লাগেজের ঝামেলা, সময়মতো না পৌঁছানো, এমনকি বোর্ডিং পাস হারানোর মতো সাধারণ ভুল যাত্রাকে করে তুলতে পারে বিরক্তিকর। কিছু ছোট প্রস্তুতি ও সচেতনতা পুরো ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে বদলে দিতে পারে।...
১০ ঘণ্টা আগে