Ajker Patrika

বিটরুট জুসের উপকারিতা, জেনে নিন অতিরিক্ত পানে যে সমস্যাগুলো হতে পারে

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৩: ২২
ছবি: ক্যানভা
ছবি: ক্যানভা

বিটরুট জুস আজকাল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কেউ ব্যায়ামের আগে পান করেন শক্তি বাড়ানোর জন্য, তো কেউ সকালের নাশতার সঙ্গে। লাল রঙের এই জুস শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, এটি শরীরের জন্যও উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন সি, নাইট্রেট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীর সতেজ রাখে। তবে যেকোনো স্বাস্থ্যকর খাবারের মতোই এটি খুব বেশি পান করলে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে শরীরে।

বিটরুট জুসের উপকারিতা:

  • হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে

বিটরুট জুসে থাকে নাইট্রেট। এই উপাদান রক্তনালি প্রশস্ত করতে সাহায্য করে। ফলে রক্ত চলাচল সহজ হয়। নিয়মিত পান করলে হার্টের ওপর চাপ কমে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বিটরুট জুস পান করলে হৃদ্‌যন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত হয়।

  • ব্যায়ামে সহায়তা করে

খেলোয়াড়দের অনেকে ব্যায়ামের আগে বিটরুট জুস পান করেন। কারণ, এটি পেশিতে রক্ত চলাচল বাড়ায়, ক্লান্তি কমায় এবং ব্যায়াম করার ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে দেহ ভালোভাবে শক্তি ধরে রাখতে পারে এবং ব্যায়াম আরও কার্যকর হয়।

  • মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়

বিটরুটে থাকা নাইট্রেট মস্তিষ্কে রক্তের প্রবাহ বাড়ায়। ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি পায়। এতে মনোযোগ ঠিক থাকে, স্মৃতিশক্তি উন্নত হয় এবং নতুন কিছু শিখতে বা সমস্যা সমাধান করতে মস্তিষ্ক আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।

  • রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়

বিটরুটের জুসে ভিটামিন সি থাকে প্রচুর। এটি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। সাধারণ ঠান্ডা, জ্বর বা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ায় এটি দৈনন্দিন জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

  • লিভারের জন্য উপকারী

বিটরুট জুস লিভারের জন্যও সহায়ক। এটি শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি অ্যালকোহলবিহীন ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

বিটরুট জুসের অপকারিতা:

  • কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা আছে

বিটরুটে অক্সালেট থাকে। এটি শরীরে থাকা ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিশে কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে। যাঁরা আগে থেকেই কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জরুরি।

  • রক্তচাপ কমে যেতে পারে

যাঁদের রক্তচাপ প্রাকৃতিকভাবে কম, তাঁদের জন্য বেশি বিটরুট জুস পান করা ঝুঁকিপূর্ণ। হঠাৎ রক্তচাপ কমে গেলে মাথা ঘোরা বা বমি হতে পারে।

  • হজমে সমস্যা হতে পারে

বিটরুট জুসে অ্যাসিড থাকে। খুব বেশি বা খালি পেটে পান করলে গ্যাস বা ডায়রিয়া হতে পারে। তাই দিনের খাবারের সঙ্গে বা মাঝারি পরিমাণে পান করা ভালো।

  • চুলের ক্ষতির আশঙ্কা

অক্সালেট শরীরে জিংকের মতো খনিজের শোষণ কমায়। জিংক চুলের বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ সময় অতিরিক্ত জুস পান করলে চুল পাতলা হতে বা পড়ে যেতে পারে।

  • রক্তে চিনি বাড়াতে পারে

বিটরুটে প্রাকৃতিক চিনি থাকে। পুরো বিটে আঁশ থাকায় রক্তের চিনি ধীরে বাড়ে। কিন্তু জুসে আঁশ কম থাকে, তাই রক্তে চিনি দ্রুত বাড়তে পারে। এটি বিশেষভাবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

  • ওষুধের গুণ প্রভাবিত করতে পারে

বিটরুট জুসে ভিটামিন কে থাকে। এটি রক্ত জমাট বাঁধাতে ভূমিকা রাখে। এটি কিছু রক্ত পাতলা করার ওষুধের কার্যকারিতা কমাতে পারে।

নিরাপদ মাত্রা এবং ব্যবহারের টিপস

  • প্রতিদিন আধা থেকে ১ কাপ বা ১২০ থেকে ২৪০ মিলিলিটার বিটরুট জুস পান করা সাধারণত নিরাপদ।
  • জুস না করে আস্ত বিট খেলে আঁশ পাওয়া যায়। এটি হজম সহজ এবং রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • শরীরের প্রতিক্রিয়া লক্ষ করুন। সমস্যা হলে কমান বা বন্ধ করুন।
  • প্রোটিন বা স্বাস্থ্যকর চর্বির সঙ্গে পান করলে রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • ওষুধ খেলে কিংবা স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে পান করুন।

বিটরুট জুস স্বাস্থ্যকর, শক্তি বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। তবে সবকিছুতে মিতব্যয়িতা জরুরি। নিরাপদ মাত্রায় পান করলে শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। কিন্তু অতিরিক্ত হলে কিডনি, রক্তচাপ, হজম, চুল পড়া এবং রক্তের চিনি সমস্যা হতে পারে।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দাম্পত্য কলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

অবশেষে ইকবালের পরিবারমুক্ত হলো প্রিমিয়ার ব্যাংক

‘হেল্প, হেল্প’ বলে চিৎকার—শিক্ষক এগিয়ে যেতেই গলায় ছুরি চালাল কিশোরী

‘আপত্তিকর’ ভিডিও: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠালেন গভর্নর

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাদের যৌন সহিংসতার প্রসঙ্গ জাতিসংঘে তুললেন ভারতীয় দূত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত