Ajker Patrika

আসছে শীত, জেনে নিন মধু খাওয়ার উপকারিতা

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ০৯
শীতকালে মধু খাওয়ার অভ্যাস আপনাকে সুস্থ রাখতে পারে। ছবি: পেক্সেলস
শীতকালে মধু খাওয়ার অভ্যাস আপনাকে সুস্থ রাখতে পারে। ছবি: পেক্সেলস

মধু মূলত একটি উচ্চ ঔষধিগুণ সম্পন্ন ভেষজ তরল। এটি চিনির চেয়ে অনেক মিষ্টি। মধুতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ, যা যকৃতে গ্রাইকোজেনের রিজার্ভ গড়ে তোলে। রাতে ঘুমানোর আগে মধু খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ভালো থাকে। এটি মানবদেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় বলে নিয়মিত মধু পানে রোগ-বালাই কমে। ঠান্ডায় মধু ভালো কাজ করে। শীতকালে মধু খাওয়ার অভ্যাস আপনার সুস্থতার একটি বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। খালি পেটে মধু খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এ ছাড়া, এটি ওজন কমাতে, অ্যাসিডিটি ও আলসারের সমস্যা কমাতে এবং ফুসফুসের রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। তাই সকালে মধু খাওয়া শরীরের জন্য ভালো। মধুতে কোনো চর্বি নেই। এতে সামান্য পরিমাণে প্রোটিন ও আঁশ থাকে।

মধুর স্বাস্থ্য উপকারিতা

মধুতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেটাবলিক সিনড্রোম ও টাইপ২ ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। ছবি: পেক্সেলস
মধুতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেটাবলিক সিনড্রোম ও টাইপ২ ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। ছবি: পেক্সেলস

মধু পুষ্টি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে ব্যাকটেরিয়াবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একটি সুষম খাদ্যের অংশ হিসেবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে। মধু অনেক খাবারে একটি সাধারণ উপাদান এবং বিভিন্ন রূপে পাওয়া যায়। ১ টেবিল চামচ বা ২০ গ্রাম মধুতে থাকে,

  • ক্যালরি ৬১
  • শর্করা ১৭ গ্রাম
  • রাইবোফ্ল্যাভিন দৈনিক মানের ১ শতাংশ
  • কপার দৈনিক মানের ১ শতাংশ
  • অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ

ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত মধুতে ফ্ল্যাভোনয়েড ও ফেনোলিক অ্যাসিডের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ জৈব-সক্রিয় উদ্ভিদ যৌগ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। হালকা রঙের মধুর চেয়ে গাঢ় রঙের মধুতে সাধারণত বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এগুলো শরীরের রিঅ্যাকটিভ অক্সিজেন নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করে। এ ধরনের অক্সিজেন কোষে জমা হয়ে ক্ষতি করতে পারে। এই ক্ষতি অকালবার্ধক্য, টাইপ২ ডায়াবেটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো অবস্থার জন্ম দিতে পারে।

রক্তে শর্করার মাত্রার জন্য ভালো

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মধু সাধারণ চিনির চেয়ে কিছুটা বেশি সুবিধা দিতে পারে। যদিও মধু অন্যান্য চিনির মতোই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়। তবে এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেটাবলিক সিনড্রোম ও টাইপ২ ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। গবেষকেরা দেখেছেন, মধু অ্যাডিপোনেকটিন নামক একটি হরমোনের মাত্রা বাড়াতে পারে, যা প্রদাহ কমায় এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ উন্নত করে। এমন প্রমাণও রয়েছে, প্রতিদিন মধু খাওয়া টাইপ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা ভালো রাখতে পারে। তবে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পরিশ্রুত চিনির চেয়ে মধু সামান্য ভালো হলেও, তাদের এটি পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।

হৃদ্‌রোগের জন্য উপকারী

মধু হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করতে পারে। একটি পর্যালোচনা অনুসারে, মধু রক্তচাপ কমাতে, রক্তের চর্বির মাত্রা উন্নত করতে, হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করতে এবং স্বাস্থ্যকর কোষের মৃত্যু প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে। এসব কারণে হৃদ্‌যন্ত্রের কার্যকারিতা ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ৪০ বছরের বেশি বয়সী ৪ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিয়ে করা একটি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের পরিমিত পরিমাণে মধু খাওয়া উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া, কাঁচা মধুতে সাধারণত প্রোপোলিস থাকে। মৌমাছিরা গাছের রস বা আঠা-উৎপাদনকারী গাছ থেকে তৈরি করে এটি। প্রোপোলিস কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা উন্নত করতে পারে। তবে হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্যের ওপর মধুর প্রভাব ভালোভাবে বোঝার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

শিশুদের কাশি কমাতে মধু

শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত সমস্যায় ভোগা শিশুদের জন্য কাশি একটি সাধারণ সমস্যা। এ সংক্রমণ শিশু ও মা-বাবার ঘুমের এবং জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করতে পারে। শিশুদের কাশি ও মধুর ওপর করা বেশ কয়েকটি গবেষণার একটি পর্যালোচনায় মনে করা হয়েছে, কাশির উপসর্গের জন্য ডাইফেনহাইড্রামিনের চেয়ে মধু বেশি কার্যকর। এটি কাশির স্থায়িত্ব কমাতে সাহায্য করতে পারে। উপরন্তু, কাশির ওষুধের মতো মধুর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে, এক বছরের কম বয়সী শিশুদের মধু খাওয়ানো উচিত নয়।

শিশুদের কাশির উপসর্গের জন্য ডাইফেনহাইড্রামিনের চেয়ে মধু বেশি কার্যকর। ছবি: পেক্সেলস
শিশুদের কাশির উপসর্গের জন্য ডাইফেনহাইড্রামিনের চেয়ে মধু বেশি কার্যকর। ছবি: পেক্সেলস

খাদ্যের সঙ্গে মধু মেশানো সহজ

মধু খাদ্যের সঙ্গে যোগ করা সহজ। এ থেকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের সামান্য বাড়তি সুবিধা পেতে, আপনি সাধারণত যেভাবে চিনি ব্যবহার করেন, সেভাবে এটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি দই, কফি বা চায়ে মিষ্টির উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যায়। রান্না ও বেকিংয়েও ব্যবহার করতে পারেন মধু। মনে রাখতে হবে, মধু হলো একধরনের চিনি। তাই এটি গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে পরিমাণে মধু খেলে ওজন বৃদ্ধি ও টাইপ২ ডায়াবেটিস বা হৃদ্‌রোগের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

সূত্র: হেলথ লাইন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...