Ajker Patrika

পেছনে কথা বলা লোকদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন

পেছনে কথা বলা লোকদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন

অপরাহ গেইল উইনফ্রে একজন আমেরিকান টক শো হোস্ট, টেলিভিশন প্রযোজক, অভিনেত্রী, লেখিকা ও সমাজসেবী। তিনি শিকাগো থেকে সম্প্রচারিত তাঁর টক শো ‘দ্য অপরাহ উইনফ্রে শো’র জন্য সর্বাধিক পরিচিত। ১৯৮৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ২৫ বছর ধরে জাতীয় সিন্ডিকেশনে এই শো সম্প্রচারিত হয়েছিল। তিনি বিশ্বের সর্বাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের মধ্যে অন্যতম। তাঁর কিছু জীবনদর্শন তুলে ধরা হলো—

‘যদি কেউ আপনার কাছে এসে অন্যদের নিয়ে সমালোচনা করে, জেনে রাখুন যে তারা আপনার অগোচরে আপনার সম্পর্কেও অন্যদের কাছে সমালোচনা করছে।’ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ, কিন্তু সহজ ও সত্য। ২০১৮ সালে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট গোল্ডেন গ্লোব গ্রহণ করার সময় অপরাহ এটিকে তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা পরামর্শ হিসেবে উল্লেখ করেন। পরামর্শটি হলো পেছনে কথা বলা লোকদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। 

নিজের জন্য ছুটি নিন
‘নিজের আধ্যাত্মিক ভিত্তিকে নতুনভাবে উপলব্ধি করার জন্য আমি সব সময় নিজেকে একটি ছুটির দিন উপহার দিই। এটি এমন একটি দিন, যে দিন আমি একদমই কোনো কাজ করি না। আমি ঢিলেঢালা ঘরোয়া পোশাকে বসে থাকি, হাঁটতে বের হই অথবা আমি নিজেকে পুরোপুরিভাবে নিজের মতো হওয়ার জন্য উন্মুক্ত করে দিই। আর যখন আমি এসব করি না, আমি অবসন্ন, খিটখিটে আর উদ্বেগপ্রবণ এক মানুষ হয়ে পড়ি, যেমন মানুষ হয়ে আমি কখনোই এই পৃথিবীতে থাকতে চাইনি।’

প্রত্যেক মানুষেরই নিজের ভালো থাকার জন্য নিজের সঙ্গে সময় কাটানো উচিত। হতে পারে সেটা কোনো ব্যায়াম, ধ্যান কিংবা কোনো শখের কাজ। এটা মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
‘যখন আপনি নিজের না পাওয়াগুলো ভুলে নিজের প্রাপ্তি সম্পর্কে সচেতন থাকবেন, তখন আপনি নিজের জন্য আরও ভালো কিছু পাওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলেন। আপনার যা আছে সেটার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। আপনার যা নেই, সেটুকু নিয়ে বেশি মনোযোগী হলে আপনার জন্য কখনোই কোনো কিছু যথেষ্ট হবে না।’ অপরাহ বলেন, তিনি তাঁর টিভি নেটওয়ার্ক তৈরির সময়গুলোতে এক দশক পর্যন্ত নিজের জন্য একটি জার্নাল তৈরি করেছিলেন, যেখানে তিনি জীবন সম্পর্কে নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। 

শুধু পরবর্তী পদক্ষেপের জন্যই ভাবুন
‘যেকোনো কাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হচ্ছে স্থিরভাবে বসে চিন্তা করা—আমার পরবর্তী পদক্ষেপটি ঠিক কী হওয়া উচিত। কখনোই এটা ভাববেন না, আমাকে এতগুলো কাজ শেষ করতে হবে। সব সময় শুধু পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেটা নিয়েই ভাবুন। তারপর, এই ভাবনার জায়গা থেকেই আপনি ঠিক করে নিতে পারবেন, পরের পদক্ষেপ ঠিক কোনটি হওয়া উচিত। আর এভাবেই আপনার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। তখন কোনো কাজের ফলাফল আপনাকে চিন্তিত করতে পারবে না। কারণ, আপনি জানবেন যে আমাদের জীবনের ব্যাপ্তি এসব মুহূর্তের চেয়ে অনেক বিস্তৃত।’

অপরাহ বলেন, তিনি তাঁর তরুণ বয়সের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছেন জীবন নিয়ে ঠিক কী করা উচিত এটা ভেবেই। তিনি তরুণদের উৎসাহিত করেন সঠিক পদক্ষেপটি নিতে এবং সেখান থেকেই কাজ শুরু করতে। কোনো বিষয় নিয়ে খুব বেশি চিন্তা অপ্রয়োজনীয় উদ্বেগই শুধু বাড়ায়।

ব্যর্থতাকে আলিঙ্গন করুন
‘বড় কোনো কিছু অর্জনের পথে ব্যর্থতা শুধু আরেকটি ধাপ মাত্র।’ আপনি হঠাৎ কোনো কিছু অর্জন করতে পারবেন না। জীবনের কোনো না কোনো সময়ে আপনাকে ব্যর্থতার সম্মুখীন হতেই হবে। যাঁরা সফল মানুষ, তাঁরা ব্যর্থতাগুলো থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং এই শিক্ষাকেই কাজে লাগিয়ে তাঁরা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। 

জীবনের জন্য বৃহৎ দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করুন
‘আপনার জীবনের জন্য সম্ভাব্য সর্বোচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করুন। কারণ, মানুষ তা-ই হয়ে ওঠে যা সে বিশ্বাস করে।’ আপনি জীবনে কী হতে চান, সে বিষয়ে নিজের ভেতরে স্বচ্ছ ও সুন্দর একটি ধারণা রাখুন। আপনার যদি ধারণাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার মতো যথেষ্ট ইচ্ছাশক্তি ও দৃঢ় সংকল্প থাকে, তাহলে নিজের কাজের ফলাফল আপনাকেই অবাক করে দেবে।’

তথ্যসূত্র: থাউজেন্ড ইয়ারস অব ক্যারিয়ার অ্যাডভাইস

অনুবাদ: যারীন তাসনিম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত