Ajker Patrika

বন্ধুর জন্য বন্ধু দিবসে

তানিয়া ফেরদৌস
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২১, ২২: ২৮
বন্ধুর জন্য বন্ধু দিবসে

বন্ধুত্বের বন্ধন আসলে কাগজে লিখে বা মুখে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। সৃষ্টির আদিকাল থেকেই যুগে যুগে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে বহু কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। কোনো রকম রক্তের সম্পর্ক বা লেনদেনের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই মানুষ বন্ধু হয় আরেক মানুষের। জাতপাত, ধর্ম, জাতি,  শ্রেণি—এ ব্যাপারগুলো বন্ধুত্বে কোনো প্রভাবই ফেলতে পারে না প্রায় সময়েই। বন্ধুত্ব এক মনের খেলা বলা যায়। কারণ, চাইলেও জোর করে বন্ধুত্ব হয় না। আবার খুব কম সময়েই হয়তো কারও সঙ্গে খুব গাঢ় বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বিশ্বজনীন এই অবাক করা আত্মার সম্পর্কটি উদ্‌যাপন করতে আজকের বন্ধু দিবসের তাই আছে আলাদা গুরুত্ব।

গোড়ার কথা
বন্ধুত্ব ব্যাপারটি একেবারে নিঃস্বার্থ আর নির্লোভ বন্ধনের রূপ হলেও বন্ধু দিবসের প্রচলনটির পেছনে বাণিজ্যিক চিন্তাভাবনা ছিল—এমন অভিযোগ রয়েছে। সেই ১৯৩৫ সালে বিখ্যাত শুভেচ্ছা উপহার ও কার্ড কোম্পানি হলমার্ক বন্ধু দিবস পালনের প্রচলন ঘটায়। এ উপলক্ষে ফি বছর কার্ড আর স্মৃতিস্বরূপ বিভিন্ন উপহার আর বিশেষায়িত কার্ড বিক্রি করে রমরমা ব্যবসা করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি বহু বছর ধরে। তবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাই ভাবুক না কেন, বন্ধুত্বের আবেদন আর গুরুত্ব সারা বিশ্বেই এত বেশি যে, এ বন্ধুত্ব আর বন্ধুদের ঘিরে বছরে একটি বিশেষ দিন উদ্‌যাপনের তাগিদ আসতই। তাই ২০১১ সাল থেকে খোদ জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ৩০ জুলাই আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে ভারত, বাংলাদেশসহ অনেক দেশ দিবসটি পালন করে আগস্ট মাসের প্রথম রোববার। বন্ধু দিবসের প্রতীক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র নাদুসনুদুস আদুরে ভালুক উইনি দ্য পুহ–কে।

বন্ধু কথাটির ব্যাপ্তি কিন্তু অত্যন্ত বিস্তৃত। সেই শৈশবের খেলার সাথি, স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী, প্রতিবেশী, খালাতো–চাচাতো ভাইবোন, কোথাও বেড়াতে গিয়ে দেখা হওয়া, বাসে আলাপ হওয়া–যে কেউ জীবনের অপরিহার্য, আত্মার বাঁধনে বাঁধা বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে মনের মিল হওয়াটা জরুরি খুব। আবার একই ধরনের শখ থাকলেও খুব দ্রুত বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। দুজনই ক্রিকেট পাগল হলে অথবা দুই বইপোকার বন্ধুত্ব জমে উঠতে দেরি লাগে না।

 আবার পরিবারেই থাকে সবচেয়ে আপন, সবার চেয়ে বেশি শুভ চিন্তক বন্ধুস্বরূপ স্বামী, স্ত্রী, বাবা, মা, ভাই, বোন। বর্তমান সময়ের নিরিখে সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকাটা প্যারেন্টিং বা অভিভাবকত্বের অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাবা–মা বন্ধুর মতো করে সন্তানকে বোঝার চেষ্টা করলে, তাদের সঙ্গে সব ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা করলে, ভরসার জায়গা হতে পারলে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের বিভিন্ন ধরনের বিপথগামিতা ঠেকানো যায় অনায়াসে—এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ।

সাইবার ক্রাইম, ইভ টিজিং বা যৌন নির্যাতনের মতো দুঃসহ পরিস্থিতি আসলে ভুক্তভোগী ছেলেমেয়েদের পরম বন্ধু আর বেঁচে থাকার অবলম্বন হয়ে উঠতে পারেন বন্ধুরূপী বাবা, মা, ভাই, বোন। আর জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কের মূল ভিত্তিটা বন্ধুত্ব হলে তা শক্ত শেকড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে সম্পর্কের মহিরুহকে অবিচলভাবে বিকশিত করে তুলতে পারে। শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে নয়, বিশ্ব শান্তি, বৈশ্বিক কল্যাণে রাষ্ট্রগুলোর মধ্যেও বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্কের কোনো বিকল্প নেই।

বন্ধু দিবসে কার্ডের পাশাপাশি এক সময়ে ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ডের খুব প্রচলন হয়েছিল বিশ্বজুড়ে। তবে বন্ধু দিবসে নিজের ও বন্ধুর পছন্দমতো যেকোনো উপহারই দেওয়া যায়। বন্ধুত্বের মজার বা আবেগপূর্ণ মেসেজ লেখা জোড়া মগ, ফরমাশ দিয়ে নাম লিখিয়ে একই রকম লেখা বা কার্টুন সংবলিত টি–শার্ট, জোড়া লকেটের দুই অংশ জোড়া দিলে পূর্ণ মেসেজ পড়া যায়—এমন অভিনব সব আইডিয়ায় বন্ধু দিবসে প্রিয় বন্ধুর দিনটি অনন্য করে তোলা যায়।

বন্ধুদের নিয়ে সেই আগের আড্ডা, হৈ হুল্লোড়, বেড়াতে যাওয়া, একসঙ্গে মজার কিছু খাওয়া—এসব আনন্দঘন মুহূর্তগুলো করোনার থাবায় কেমন ম্লান হয়ে গেছে আজকাল। বন্ধু ও তার পরিবারের সবার কথা ভেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক পরে উন্মুক্ত স্থানে দেখা করাই ভালো এ দুঃসময়ে।  তবে অনলাইনে বন্ধুর প্রিয় কোনো খাবার ডেলিভারি দিয়ে তাকে চমকে দেওয়া যায়,  প্রিয় কোনো ফুল, বই, শাড়ি, টি–শার্ট পাঠিয়ে দেওয়া যায় অনায়াসে। আর দলগত ভিডিওকলের আড্ডায় বন্ধু দিবসের বিকেলটা মুখরিত করে তোলা তো যায়ই। হতে পারে অনলাইন আড্ডা,  গানের আসর অথবা শুধুই এলোমেলো স্মৃতিচারণ।

বিপদেই বন্ধুর আসল পরিচয়,  ছোটবেলায় ভালুক আর দুই বন্ধুর গল্পে শেখা সেই কথাটির বাস্তব রূপ এখন অহরহই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। করোনায় বিপর্যস্ত বন্ধুর পাশে নিজের জানমাল নিয়ে সাধ্যমতো দাঁড়ানোই এখন বন্ধুত্বের আসল রূপ। খাবারের ব্যবস্থা করে হোক, চিকিৎসার ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে হোক, মনোবল বাড়াতে একটা ছোট্ট আন্তরিক খুদেবার্তা পাঠিয়ে হোক, বন্ধুর পাশে যেন এ সময়ে আমরা দাঁড়াই। রক্ত দিয়ে,  অর্থ সাহায্য করে, অসুস্থতায় খাদ্য–পথ্য জুগিয়ে, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সাহস দিয়ে যে–ই এখন আমাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, সেই আমাদের প্রকৃত বন্ধু।

আজকের বন্ধু দিবস তাই নিছক উপহার বিনিময়কেন্দ্রিক নয়, বরং মানবিকতা আর আন্তরিকতার কষ্টিপাথরে বন্ধুত্বের সত্যতা ও গভীরতা যাচাইয়ের নিরিখেই আমাদের সামনে এসেছে। বেঁচে থাক, সুস্থ থাক সবার বন্ধু। জয় হোক বিশ্বজনীন বন্ধুত্বের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গরুর মাংসের চেয়েও বেশি আয়রন থাকে যেসব খাবারে

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৭
ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ দুই ধরনের খাবারেই আয়রন পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন, গরুর মাংসই আয়রনের প্রধান উৎস। সত্যি বলতে, রান্না করা ৩ আউন্স গরুর কিমা মাংসে থাকে প্রায় ২.২৭ মিলিগ্রাম আয়রন, যা দৈনিক চাহিদার ১২ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে আপনি যদি নিরামিষ খান বা লাল মাংস পছন্দ না করেন, তবুও চিন্তার কিছু নেই। আরও বেশ কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো লাল মাংসের তুলনায় অনেক বেশি আয়রন সরবরাহ করে।

মুরগির কলিজা

আয়রন: ৯.৮৬ মিলিগ্রাম

পরিমাণ: ৩ আউন্স

মুরগির লিভার আয়রনের দারুণ উৎস এবং এতে থাকা আয়রন শরীরে খুব সহজে শোষিত হয়। প্রাণিজ খাবারের হিম আয়রন শরীর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণ করতে পারে, যেখানে উদ্ভিজ্জ খাবারের আয়রন শোষিত হয় প্রায় ১৭ শতাংশ।

ডাল

আয়রন: ৬ মিলিগ্রাম

পরিমাণ: ১ কাপ

আয়রনের সবচেয়ে সমৃদ্ধ উদ্ভিজ্জ উৎসগুলোর একটি ডাল। গরুর মাংসের তুলনায় এতে প্রায় দিগুণ আয়রন থাকে, তাই যারা শাকসবজি ও উদ্ভিজ্জ খাবারের ওপর নির্ভর করে, তাদের জন্য ডাল বিশেষ পুষ্টির উৎস। যদিও ডালে থাকা আয়রনটি নন-হিম, ফলে শরীর এটিকে ধীরে শোষণ করে, তবুও পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাল খেলে দৈনিক আয়রনের চাহিদা ভালোভাবে পূরণ হয়। ডাল নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখার আরও অনেক সুবিধা আছে। এতে প্রোটিন, ফাইবার, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে, যা শরীরকে শক্তি দেয় এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

টোফু

আয়রন: ৬ মিলিগ্রাম

পরিমাণ: ১ কাপ

সয়াবিন থেকে তৈরি টোফু আয়রনের দারুণ উৎস এবং গরুর স্টেকের তুলনায় এতে দ্বিগুণ আয়রন থাকে। নিরামিষভোজীদের জন্য এটি একটি মূল প্রোটিন উৎস। টোফু ভাজা, বেক করা বা স্মুদি সব ধরনের খাবারেই যোগ করা যায়।

পালংশাক

আয়রন: ৬ মিলিগ্রাম

পরিমাণ: ১ কাপ

পালংশাকে গরুর মাংসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ আয়রন থাকে। তাই যারা বেশি সবজি খেতে চায় বা বাজেটের মধ্যে পুষ্টি নিশ্চিত করতে চায়, তাদের জন্য পালংশাক দারুণ বিকল্প। এটি সহজলভ্য, সস্তা এবং দ্রুত রান্না করা যায়। পালংশাকের আরেকটি সুবিধা হলো, এতে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও প্রচুর থাকে, যা সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। সালাদ, ভাজি, স্যুপ অথবা স্মুদিতেও পালংশাক সহজেই ব্যবহার করা যায়, যা দৈনন্দিন খাবারে পুষ্টি যোগ করে।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

ডার্ক চকলেট

আয়রন: ৪ মিলিগ্রাম

পরিমাণ: ২ আউন্স

চকলেটে আয়রন থাকে, এ তথ্য অনেকের কাছেই অজানা। কোকো বিনে স্বাভাবিকভাবেই আয়রন থাকে, আর সেখান থেকে তৈরি হওয়া ডার্ক চকলেটে এই আয়রনের ঘনত্ব আরও বেড়ে যায়। তাই ডার্ক চকলেট শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিতেও সমৃদ্ধ। সাধারণ মিল্ক চকলেটের তুলনায় ডার্ক চকলেটে কোকোর পরিমাণ বেশি থাকায় এতে আয়রনের মাত্রাও বেশি থাকে। যারা তুলনামূলকভাবে কম চিনি খেতে চায়, তারা ডার্ক চকলেট বেছে নিতে পারে। আরও পুষ্টিকর উপায় হলো ডার্ক চকলেটের সঙ্গে চিনিবিহীন বাদাম মাখন খাওয়া। এতে শুধু আয়রনই নয়, ভালো মানের ফ্যাট ও প্রোটিনও পাওয়া যায়। এটি খাবার হিসেবে মুখরোচক এবং একই সঙ্গে শরীরের জন্য উপকারী।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

সেদ্ধ টমেটো

আয়রন: ৪ মিলিগ্রাম

পরিমাণ: ১ কাপ

তাজা টমেটোতে আয়রন কম, কিন্তু রান্না বা সেদ্ধ টমেটোতে আয়রন অনেক বেশি। সেদ্ধ টমেটোতে ভিটামিন সি থাকে, যা উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে আয়রন শোষণ বাড়াতে সাহায্য করে। স্যুপ, সস ও পাস্তা রান্নায় এটি খুব কার্যকর।

আয়রন শোষণ বাড়ানোর উপায়

ভিটামিন সির সঙ্গে খাবেন: ক্যাপসিকাম, লেবুর রস, মাল্টার রস আয়রন শোষণ বাড়ায়।

যেসব খাবার শোষণ কমায়, সেগুলো খেয়াল রাখুন: দুগ্ধজাত পণ্যের ক্যালসিয়াম এবং শস্যদানার ফাইটেট আয়রন শোষণ কমাতে পারে।

হিম আয়রন বনাম নন-হিম আয়রন: প্রাণিজ উৎসের হিম আয়রন সহজে শোষিত হয়। নিরামিষভোজীরা নন-হিম উৎস বেশি খায়, তাই তাদের সচেতনভাবে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার বেছে নিতে হয়।

সূত্র: হেলথ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্তানের সামনেই রেগে যাচ্ছেন? জেনে নিন, রেগে গেলে কী করবেন

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৮
রাগ পরিচালনা শেখা সন্তানের সুস্থ বিকাশের জন্য অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। ছবি: পেক্সেলস
রাগ পরিচালনা শেখা সন্তানের সুস্থ বিকাশের জন্য অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। ছবি: পেক্সেলস

সন্তান কথা শুনছে না। খেতে বললে খাচ্ছে না, পড়তে বললে পড়তে বসছে না। এই সমস্যায় মোটামুটি সব অভিভাবকই জর্জরিত। আর এই কাজগুলো সন্তান যখন করছে, তখন রেগে উঠছেন বাবা-মায়েরা। রাগ মানব মনের এক স্বাভাবিক ও শক্তিশালী অনুভূতি। অন্যদিকে শিশুরা কথা শুনতে চাইবে না, একবার বললেই বুঝবে না, এটাও খুব সাধারণ সমস্যা। কিন্তু অভিভাবক হিসেবে রাগের অনিয়ন্ত্রিত প্রকাশ আপনার সন্তানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হতে পারে। সন্তানেরা সাধারণত দুষ্টুমি করবেই, আর উচ্চ মানসিক চাপের সময়ে বাবা-মায়ের জন্য সামান্য ভুলের কারণেও রাগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু কার্যকরভাবে রাগ পরিচালনা করা শেখা কেবল আপনার মানসিক প্রশান্তিই দেবে না, পারিবারিক পরিবেশ এবং সন্তানের সুস্থ বিকাশের জন্যও অপরিহার্য ভূমিকা পালন করবে।

রাগের মুহূর্তে কী করবেন

যদি আপনি প্রায়ই রাগের শিকার হন, তবে আপনার রাগের কারণ বা ’ট্রিগার’ চিহ্নিত করা দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের প্রথম ধাপ। তবে যখন রাগ চরমে ওঠে, তখন তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণই সবচেয়ে বেশি জরুরি। এর জন্য প্রথমে নিরাপদে সরে আসুন। রাগের সময় প্রথমে নিশ্চিত করুন যে আশপাশে সবাই নিরাপদ আছে। তারপর সেই পরিস্থিতি থেকে কিছুক্ষণের জন্য শারীরিকভাবে সরে যান। রাগ থেকে মনোযোগ সরানোর একটি কার্যকর উপায় হলো ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া। অথবা নীরবে ১০ পর্যন্ত গুনতে পারেন। এ ছাড়া ‘গ্রাউন্ডিং’ কৌশল ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য হাতে সহজে বহনযোগ্য একটি ছোট বস্তু ধরে রাখুন কিংবা আশপাশের জিনিসপত্র চিহ্নিত অথবা গণনা করে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণকে পরিবেশের দিকে সরিয়ে দিন। আপনার শরীরের প্রতিটি অংশকে সচেতনভাবে শিথিল করার দিকে মনোযোগ দিন।

রাগ থেকে মনোযোগ সরানোর কার্যকর উপায় ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া। ছবি: পেক্সেলস
রাগ থেকে মনোযোগ সরানোর কার্যকর উপায় ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া। ছবি: পেক্সেলস

একটি কোড ওয়ার্ড ঠিক করুন, যা ব্যবহার করে আপনি অন্যদের জানাতে পারবেন, আপনি কেমন অনুভব করছেন। এটা করলে বেশি কথা বলার প্রয়োজন পড়ে না। দীর্ঘমেয়াদি স্বস্তির জন্য নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ, পর্যাপ্ত ঘুম, শিল্প বা লেখার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ এবং প্রকৃতির কাছে যাওয়া সহায়ক হতে পারে।

পরামর্শকের সাহায্য নিন

রাগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পেশাদার ব্যক্তির সাহায্য নেওয়া অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, রাগ ব্যবস্থাপনা থেরাপি নেওয়া প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ ইতিবাচক উন্নতি লাভ করেন। আপনার রাগ নিয়ে আপনি একজন থেরাপিস্টের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। প্রয়োজনে আপনার চিকিৎসক আপনাকে রেফার করতে পারবেন। ২০২২ সালের একটি গবেষণা অনুযায়ী, অভিভাবকদের জন্য গ্রুপভিত্তিক রাগ ব্যবস্থাপনা প্রোগ্রাম বেশ কার্যকর। এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারী মায়েরা প্যারেন্টিং এবং মনোভাবে এমন উন্নতি দেখেছেন, যা প্রোগ্রাম শেষেও বজায় ছিল। এটি একাকিত্ব দূর করে সামাজিক সমর্থন বাড়াতে সহায়ক। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য রাগ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইন ক্লাস করতে পারেন। এমনকি ইয়েল ইউনিভার্সিটির মতো প্রতিষ্ঠান শিক্ষাবিদদের জন্য বিনা মূল্যে অনলাইন কোর্স অফার করে।

অতিরিক্ত রাগের প্রকাশ শিশুর মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতিকে বদলে দিতে পারে। ছবি: পেক্সেলস
অতিরিক্ত রাগের প্রকাশ শিশুর মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতিকে বদলে দিতে পারে। ছবি: পেক্সেলস

শিশুদের আবেগের শিক্ষক হতে পারেন

শিশুদের মধ্যেও রাগ বা ক্রোধের অনুভূতি আসা স্বাভাবিক। অভিভাবক হিসেবে আপনার দায়িত্ব হলো, তাদের এই অনুভূতিগুলোকে কার্যকরভাবে পরিচালনা এবং প্রক্রিয়া করতে শেখানো। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজে সঠিক রাগ ব্যবস্থাপনা করে তাদের সামনে ইতিবাচক উদাহরণ তৈরি করা। আপনার সন্তানকে সাইকেল চালানো বা দৌড়ানোর মতো শারীরিক কার্যকলাপ অথবা জার্নালিং বা পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে তাদের অনুভূতি প্রকাশের নিরাপদ উপায় শেখান। তাদের রাগের কারণগুলো খুঁজে বের করতে সাহায্য করুন। তারা যখনই উপযুক্ত উপায়ে রাগ সামলাবে, ছোট প্রচেষ্টার জন্যও তাদের প্রশংসা করুন।

সন্তানের ওপর রাগের নীরব আঘাত

অতিরিক্ত রাগ, বিশেষ করে চিৎকার-চেঁচামেচি, শিশুদের ওপর দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতি করতে পারে। অতিরিক্ত রাগের প্রকাশ শিশুর মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতি বদলে দিতে পারে। চিৎকার-চেঁচামেচি আচরণ সংশোধনের পরিবর্তে উল্টো প্রায়শই তারা অবাঞ্ছিত আচরণ করে। এটি শিশুদের মধ্যে বিষণ্নতা ও উদ্বেগের জন্ম দিতে পারে। যারা বাড়িতে চিৎকার-চেঁচামেচি দেখে বড় হয়, তাদের মধ্যে অবিশ্বাস এবং সামাজিক সম্পর্কে সমস্যা দেখা দেওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এই মানসিক চাপের কারণে শিশুদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা; যেমন মাথাব্যথা এবং পেটের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

সূত্র: হেলথলাইন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বের কোন দেশের মানুষ বেশি লম্বা, জেনে নিন বাংলাদেশের অবস্থান

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৭
জাতি, ভৌগোলিক অবস্থান এবং খাদ্যাভ্যাসের ভিন্নতা মানুষের শারীরিক গড়নকে প্রভাবিত করে। ছবি: পেক্সেলস
জাতি, ভৌগোলিক অবস্থান এবং খাদ্যাভ্যাসের ভিন্নতা মানুষের শারীরিক গড়নকে প্রভাবিত করে। ছবি: পেক্সেলস

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষের গড় উচ্চতায় ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়। জাতি, ভৌগোলিক অবস্থান ও খাদ্যাভ্যাস প্রভাবিত করে। বৈশ্বিক জনসংখ্যার গড় উচ্চতার পরিসংখ্যান বরাবরই কৌতূহলোদ্দীপক। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ ২০২৫ সালের গড় উচ্চতার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গ্রহের কোন প্রান্তে সবচেয়ে লম্বা এবং কোন প্রান্তে সবচেয়ে খর্ব মানুষজন বসবাস করে, তার একটি আকর্ষণীয় চিত্র উঠে এসেছে। গড় মানব উচ্চতার দিক থেকে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি ধরে রেখেছে ইউরোপীয় দেশগুলো আর এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে নেদারল্যান্ডস।

গড় মানব উচ্চতার দিক থেকে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি ধরে রেখেছে ইউরোপীয় দেশগুলো, যার শীর্ষে আছে নেদারল্যান্ডস। ছবি: পেক্সেলস
গড় মানব উচ্চতার দিক থেকে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি ধরে রেখেছে ইউরোপীয় দেশগুলো, যার শীর্ষে আছে নেদারল্যান্ডস। ছবি: পেক্সেলস

বিশ্বের দীর্ঘতম মানুষ: শীর্ষস্থান ডাচদের

এই পরিসংখ্যান দেখায়, পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা এবং জীবনযাত্রার উন্নত মান কীভাবে একটি জাতির গড় উচ্চতাকে প্রভাবিত করে। তালিকার শীর্ষে থাকা নেদারল্যান্ডসের পুরুষদের গড় উচ্চতা ৬ ফুট ১ ইঞ্চি এবং নারীদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি। এই উচ্চতাই বিশ্ব রেকর্ড। এখানে একটি মজার তথ্য পাওয়া যায়। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর প্রকাশিত তথ্যগুলোতে ৫, ১০, ১৫ ও ১৯ বছর বয়সী নারী ও পুরুষদের উচ্চতার তালিকা দেওয়া হয়। সেখানে ১৯ বছরের নারী ও পুরুষের উচ্চতা অনুযায়ী নেদারল্যান্ডস শীর্ষে থাকলেও ৫ ও ১০ বছর বয়সীদের ক্যাটাগরিতে উচ্চতার ক্ষেত্রে শীর্ষে আছে ফ্রান্স পলিনেশিয়া, যা মূলত প্রশান্ত মহাসাগরের একাধিক দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। আর ১৫ বছর বয়সীদের তালিকায় শীর্ষে আছে মন্টিনিগ্রো। ডাচদের পরেই দীর্ঘতম জনসংখ্যার তালিকায় রয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে বলকান এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলের। ৬ ফুট গড় উচ্চতার তালিকায় আছে মন্টিনিগ্রো, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড। যেখানে পুরুষদের গড় উচ্চতা ৬ ফুট। এই দেশগুলোতে নারীদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি থেকে ৫ ফুট ৭ ইঞ্চির মধ্যে। ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড ও মন্টিনিগ্রোর নারীরা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি গড় উচ্চতা নিয়ে এগিয়ে রয়েছে। পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, স্লোভেনিয়া, ইউক্রেন, স্লোভাকিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র ও লাটভিয়ার মতো দেশগুলোর পুরুষদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি। সেখানে নারীদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি।

পুরুষদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চির তালিকায় আছে বাংলাদেশের নাম। ছবি: পেক্সেলস
পুরুষদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চির তালিকায় আছে বাংলাদেশের নাম। ছবি: পেক্সেলস

খর্বতম জনসংখ্যা: এশিয়া-আফ্রিকার চিত্র

তালিকায় থাকা এই দেশগুলোর জনসংখ্যা সাধারণত পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা এবং জীবনযাত্রার কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। আর এই বিষয়গুলোই তাদের শারীরিক বিকাশে প্রভাব ফেলে। বিশ্বের সবচেয়ে খর্বকায় জনসংখ্যার সন্ধান মেলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকার কয়েকটি দেশে। এই তালিকায় সর্বনিম্ন গড় উচ্চতা নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে পূর্ব তিমুর। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ পূর্ব তিমুরে পুরুষদের গড় উচ্চতা মাত্র ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি। নারীদের গড় উচ্চতা এখানে ৫ ফুট। পূর্ব তিমুরের পর সবচেয়ে খর্বকায় জনসংখ্যার দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে লাওস, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং পাপুয়া নিউগিনি। লাওস, পাপুয়া নিউগিনি এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জের পুরুষদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। বাংলাদেশ, নেপাল, ইয়েমেন, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন, লাইবেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মোজাম্বিক ও মাদাগাস্কারের পুরুষদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। লাতিন আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালার নারীদের গড় উচ্চতা মাত্র ৪ ফুট ১১ ইঞ্চি। এটি এই তালিকায় সর্বনিম্ন। পুরুষদের গড় উচ্চতা এখানে ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। বাংলাদেশ ও নেপালে নারীদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট।

গড় উচ্চতার এই বিশ্ব মানচিত্র একটি জাতির স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার মান কেমন, তার একটি নীরব সূচক। নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলো প্রমাণ করে যে উন্নত জীবনধারণের ব্যবস্থা উচ্চতার মতো শারীরিক বৈশিষ্ট্যকেও প্রভাবিত করতে পারে। যেখানে এশিয়া ও আফ্রিকার কিছু অঞ্চলের পরিসংখ্যান বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে।

সূত্র: ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৫
আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মেষ

আপনার জন্মগত রণংদেহী মেজাজ আজ চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছাবে। কিন্তু সমস্যা হলো, যুদ্ধের ময়দান আজ আপনার কিচেন! আজ ঠিক করবেন, হয় পৃথিবীর সেরা ডিনার বানাবেন, না হয় গ্যাস ওভেনটিকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে দেবেন। আজ প্রেমিকের/প্রেমিকার কাছে সামান্য প্রশংসা না পেলে, নিজেকে ঘরের কোণে ‘বিপ্লবী’ বলে ঘোষণা করতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আজ কারও ‘লাইক’ বা ‘কমেন্ট’ নিয়ে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখালে কপালে দুঃখ আছে। ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন।

বৃষ

আপনার প্রতি গ্রহদের বার্তা: ‘আজ নড়া মানেই মহাপাপ!’ বিছানা বা সোফা থেকে উঠবেন না। যদি ওঠেনও, তবে তা হবে শুধু ফ্রিজ বা ফুড ডেলিভারি বয়ের উদ্দেশ্যে। আজ ডায়েট প্ল্যানটি এতটা কঠোর হবে যে এক চুমুক চা খেয়েই ভাববেন, ‘থাক, আজ অনেক ক্যালরি হলো!’ ভালোবাসার মানুষের কাছে নিজেকে প্রমাণ করতে চাইলে, তাঁর প্রিয় খাবারটা নিজের হাতে রান্না করুন। রান্নার গন্ধই আপনার প্রেমজীবনকে গতি দেবে।

মিথুন

মিথুন রাশির জাতক-জাতিকারা আজ একই সঙ্গে দুটি বিপরীত কাজ করার চেষ্টা করবেন, যেমন একদিকে মেডিটেশন করে শান্তি খুঁজবেন, আর অন্যদিকে পাশের জনের সঙ্গে অকারণে তর্ক করে সেই শান্তি নষ্ট করবেন। আজ সকালে যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন, দুপুরে নিজেই তার তীব্র বিরোধিতা শুরু করে দেবেন। বন্ধুবান্ধব আপনার ‘মিনি-পার্সোনালিটি ক্রাইসিস’ দেখে হাসবে। কোনো মিটিংয়ে এমন একটি জটিল আইডিয়া দেবেন, যা নিজেও বোঝেন না। ভাগ্য ভালো থাকলে সবাই চুপ করে থাকবে, আর খারাপ থাকলে সেই আইডিয়া আপনাকে দিয়ে করিয়ে নেবে।

কর্কট

চাঁদের প্রভাব আজ আপনার ওপর তীব্র। দিনের বেলাতেই মনে হবে, পৃথিবীর সব কষ্ট শুধু আপনার জন্যই বরাদ্দ। সামান্য চিপসের প্যাকেট ছিঁড়ে গেলে বা রিমোট খুঁজে না পেলেও আপনার চোখ ভিজে উঠতে পারে। সামান্য ব্যাপারে ড্রামা কুইন/কিং সেজে বসে থাকবেন। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবেন, ‘তোমরা আমার ভেতরের কষ্টটা বুঝবে না!’ পরিবারের সবাই আজ আপনার মুড দেখে ভয়ে থাকবে। শান্তি চাইলে, সবার জন্য সুস্বাদু কিছু রান্না করুন। কারণ, পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।

সিংহ

আজ সারা দিন এমন সুযোগ খুঁজবেন, যেখানে নিজেকে ‘শো-স্টপার’ হিসেবে প্রমাণ করা যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আজ স্পটলাইট আপনার দিকে নয়, বরং পেছনের দেয়ালটার দিকে থাকবে। অফিসে বা বন্ধুদের আড্ডায় এমনভাবে গল্প বলবেন, যেন আপনি নিজেই সেই গল্পের মূল চরিত্র, যিনি কোনো বিশ্ব-সমস্যা সমাধান করেছেন। আজ কেনাকাটার সময় এমন কিছু কিনতে পারেন, যা শুধু অন্যের চোখধাঁধানোর জন্য দরকার। পকেট ফাঁকা হলেও ইগো টইটম্বুর!

কন্যা

আজ আপনার ভেতরের ‘পারফেকশনিস্ট’ ভূতটি সক্রিয় হয়ে উঠবে। নিজের ঘর বা ডেস্ক এমনভাবে পরিপাটি করতে চাইবেন, যেন সেটা কোনো মিউজিয়ামের প্রদর্শনী। এই করতে গিয়ে সারা দিনের কাজ পণ্ড হবে। আজ রান্নাঘরের মসলার কৌটো গোছাতে গিয়ে আবিষ্কার করবেন, গত ছয় মাস ধরে ভুল মসলা ব্যবহার করছিলেন। সামান্য হাঁচি হলেও গুগলে কঠিন রোগের লক্ষণ খুঁজতে শুরু করবেন। অযথা ডাক্তার না সেজে বরং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজটি শেষ করুন।

তুলা

তুলা রাশির মানুষজন আজ এমনভাবে দোদুল্যমান থাকবেন, যেন পাল্লায় একদিকে আছে চা আর অন্যদিকে কফি। এই দোটানা এতটা তীব্র হবে যে নিজের জন্য একটা টুথব্রাশ কিনতেও ঘণ্টাখানেক লাগিয়ে ফেলবেন। আজ কাউকে ‘হ্যাঁ’ বলতে চাইলেও মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসবে ‘না-এর মাঝামাঝি কিছু একটা’। প্রেমিকার/প্রেমিকের জন্মদিনে কী দেবেন, তা ঠিক করতে গিয়ে রাত কাবার হবে। আজ বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে টস করুন। কারণ, গ্রহের মতে, ভাগ্য আজ আপনার ইচ্ছার চেয়েও ভালো সিদ্ধান্ত নেবে।

বৃশ্চিক

আপনার রাশিতে আজ গভীর ষড়যন্ত্রের যোগ। সারা দিন এমন গম্ভীর মুখ করে থাকবেন, যেন কোনো আন্তর্জাতিক গুপ্তচরবৃত্তির প্ল্যান কষছেন। কিন্তু এই রহস্যময়তা আসলে কোনো অপ্রয়োজনীয় বিল বা ভুলে যাওয়া ডেডলাইন নিয়ে দুশ্চিন্তা ছাড়া আর কিছুই নয়। বন্ধু বা সহকর্মীরা ভাববে, আপনি কোনো মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত। কিন্তু আসলে ফোনের গ্যালারিতে গত পাঁচ বছরের সব অপ্রয়োজনীয় স্ক্রিনশট ডিলিট করছেন। ভালোবাসার মানুষকে কাছে টানুন, কিন্তু অতিরিক্ত রহস্যময় আচরণ করলে তাঁরা আপনাকে ‘পাগল’ ভাবতে পারেন। হাসি পেলে হাসুন!

ধনু

মনে আজ বিশ্বভ্রমণের ঢেউ। কিন্তু পকেট আর অফিসের কাজের চাপে সেই ঢেউ এসে আছড়ে পড়বে বাড়ির বারান্দা বা ছাদে। ছাদে পায়চারি করতে করতে জীবন ও জগতের রহস্য নিয়ে গভীর দার্শনিক মন্তব্য করতে পারেন। আজ অফিসের ড্রেস কোড নিয়ে এমন এক জটিল দর্শন ঝাড়বেন, যাতে বসও কনফিউজড হয়ে যাবেন। কোনো দূরবর্তী ভ্রমণের প্ল্যান আজ চূড়ান্ত হবে, যা শেষ পর্যন্ত শুধু আপনার ড্রয়িংরুম পর্যন্তই যাবে। তবু স্বপ্ন দেখা ছাড়বেন না।

মকর

আপনার রাশিতে আজ ‘অতি কার্যকলাপ’-এর যোগ। আজকের দিনটি এমনভাবে কাটাবেন যেন আপনিই বিশ্বের একমাত্র ব্যক্তি, যার কাছে কাজ করার সময় আছে। অন্য সবাই আপনার চোখে শুধু অলস আর অকেজো। ছুটি থাকলেও সকালে উঠে অফিসের ই-মেইল চেক করবেন এবং মনে মনে ভাববেন, ‘আহ! কী শান্তি!’ সিনেমা দেখতে গেলে হিরো-হিরোইনদের কাজের প্রতি তাদের সিরিয়াসনেস নিয়ে সমালোচনা করবেন। আজ বিনোদনের চেয়ে কাজের তালিকা তৈরি করা আপনার কাছে বেশি আনন্দের।

কুম্ভ

আজ এমন কিছু করতে চাইবেন, যা কেউ কখনো করেনি। ধরুন, হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন, আজ থেকে শুধু উল্টো দিকে হাঁটবেন, অথবা বেগুনভাজা দিয়ে কফি খাবেন। এমন একটি অদ্ভুত বিষয়ে জ্ঞান ঝাড়বেন, যা গুগলেও খুঁজে পাওয়া যায় না। নিজেকে ‘ভবিষ্যতের মানুষ’ মনে করে বর্তমানের মানুষের প্রতি করুণা করবেন। আপনার অদ্ভুত আইডিয়াগুলো শুনে বন্ধুরা আজ মজা পাবে। তাই তাদের বিরক্ত না করে, নিজের মতো করে ‘আলাদা’ থাকুন।

মীন

আপনার মন আজ মেঘে ঢাকা। সারা দিন কল্পনার রাজ্যে ঘুরে বেড়াবেন। মিটিংয়ের মাঝে, রাস্তার ভিড়ে বা খাবার টেবিলে—হঠাৎ করে এমন এক গভীর চিন্তায় ডুবে যাবেন যে পাশের লোক কী বলল, তা আপনার কানেই যাবে না। হাঁটতে হাঁটতে হয়তো দেয়ালে ধাক্কা খাবেন, বা দুবার ভুল বাসে উঠে পড়বেন। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবেন, আপনি নাকি মহাজাগতিক কোনো সিগন্যালের অর্থোদ্ধার করছিলেন। আজ গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পাঠানোর আগে দুবার চেক করুন, নইলে স্বপ্নে দেখা কোনো রেসিপি হয়তো বসের কাছে চলে যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত