ইশতিয়াক হাসান

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নিয়েছি। আজ কাজীদার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর সঙ্গে নিজের কিছু অভিজ্ঞতা, সেই সঙ্গে কাজী আনোয়ার হোসেন থেকে জানা তাঁর কিছু বিষয় ভাগাভাগি করছি পাঠকদের সঙ্গে।
বইয়ের জগতে প্রবেশ তাঁর কারণে
ক্লাস ফোরে-ফাইভে পড়ি। আব্বুর স্টিলের আলমারির নিচে গাদাগাদি করে রাখা ছিল অনেক বই। সেবা প্রকাশনী, ভারতীয় নানা লেখকের উপন্যাস আরও কত কী! আব্বুকে বললে চাবি দিয়ে খুলে দিতেন। তারপর নাওয়া-খাওয়া ভুলে হামলে পড়তাম বই নিয়ে। তবে আমাকে টানত সেবা প্রকাশনীর বইগুলোই। মাসুদ রানার বই থাকলেও তখন ওগুলো পড়া বারণ ছিল। তাতে কী! আরও কত্ত বই। ছয় রোমাঞ্চ, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, কুয়াশা সিরিজের বই, জঙ্গল, শিকার-১, শিকার-২, শিকার-৩, রুদ্র প্রয়াগের চিতা, জুলভার্নের নাইজারের বাঁকে, মরু শহর—এমনই সব বই বলা চলে নতুন এক পৃথিবীর সন্ধান দিয়ে দিল আমাকে। আজ এই আধবুড়ো বয়সেও বইয়ের প্রতি আগ্রহ কমেনি একটুও। আর বইয়ের প্রতি আমার এই ভালোবাসার জন্ম, বই পড়ে পাহাড়-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর আগ্রহ সৃষ্টি—এই সবকিছু কাজী আনোয়ার হোসেনের জন্যই। তিনি না থাকলে যে সেবা প্রকাশনী হতো না। আমারও বই পড়ে অন্য এক জগতে হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ মিলত না।
রহস্যমানব
স্কুলে পড়ার সময় সেবার বই পড়ুয়া অনেক বন্ধুবান্ধবও জুটে যায়। আমাদের কাছে সেবার বিভিন্ন বইয়ের চরিত্রগুলোর মতো কাজী আনোয়ার হোসেনও তখন রহস্যঘেরা এক চরিত্র। আমাদের বই পড়ুয়াদের দলে এক বড় ভাই ছিলেন, নোমান ভাই। তিনি মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলতেন, আমরা পুরোপুরি বিশ্বাসও করতে পারতাম না, আবার অবিশ্বাস করতে পারতাম না। একবার যেমন বললেন, মাসুদ রানা সিরিজের বিসিআই (বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স) ঢাকায় সত্যি আছে। আর কাজী আনোয়ার হোসেন বড় একটা পদে আছেন। তবে এটা একেবারেই গোপনীয়! তাই কেউ জানে না। কাজী আনোয়ার হোসেন আমাদের কাছে এমনই এক রহস্যঘেরা মানুষ ছিলেন, আমরা তাঁর এ কথা বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম। তখন একবারও মনে হয়নি, এত গোপনীয় বিষয়টি আমাদের চেয়ে কয়েক বছরের বড় নোমান ভাই জানলেন কীভাবে?
দুরু দুরু বুকে
২০০৫-০৬ সালের ঘটনা। রহস্য পত্রিকায় লিখছি নিয়মিত। তবে তখন পর্যন্ত কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা হয়নি। রহস্য পত্রিকার অফিস ২৪/৪ সেগুনবাগিচার দোতলায়। কাজী আনোয়ার হোসেন বসেন তৃতীয় তলায়। আমার দৌড় তখন পর্যন্ত ওই দোতলা পর্যন্ত। সেখানে গিয়ে লেখা জমা দিই। আর হাকিম আংকেল (শেখ আবদুল হাকিম) ও শাহনূর ভাইয়ের (কাজী শাহনূর হোসেন) সঙ্গে গল্প করি, নতুন নতুন লেখার পরিকল্পনা করি। একদিন শাহনূর ভাইকে সাহস করে বললাম, কাজীদার সঙ্গে দেখা করতে চাই। পরদিন সকালেই ডাক পড়ল। আমার মনে হলো বিসিআই চিফ রাহাত খানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।
দোতলা থেকে তৃতীয় তলা ওঠার পথে একটি তালা মারা দরজা। দালানের এই পাশ দিয়ে কাজী আনোয়ার হোসেনের কামরায় যেতে হলে ওই দরজা খুলেই যেতে হয়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে শেষ পর্যন্ত দুরু দুরু বুকে ঢুকলাম কাজী আনোয়ার হোসেনের কামরায়। আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। বসতে বললেন। শুরুতে কেমন ঘোরের মধ্যে ছিলাম। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না কাজী আনোয়ার হোসেনের সামনে বসে আছি।
তারপর অনেকবারই গিয়েছি কাজীদার সঙ্গে দেখা করতে। বেশির ভাগ সময় কোনো না কোনো কাজে। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারও নিয়েছি তাঁর। তবে ওই প্রথম দিনের অনুভূতি আজও অটুট আমার মনে। এখনো মনে পড়লে কেমন ভয়-রোমাঞ্চের একটি শিহরণ খেলে যায় শরীরে।
সেই ক্যামেরা
পরের বছরের ঘটনা। তখন বনে, পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানোর নেশা প্রবলভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে আমার ওপর। সেই সঙ্গে ছবি তোলার আগ্রহ পেয়ে বসেছে। সমস্যা হলো, ভালো ক্যামেরা নেই। একদিন কথায় কথায় শাহনূর ভাইকে বললাম, ক্যামেরা না থাকায় ভালো ছবি তুলতে পারছি না। একটা ক্যামেরা কিনতে হবে।
কয়েক দিন পরের কথা। সেবা প্রকাশনীতে গেলাম আবার। কোনো একটা লেখা নিয়ে কিংবা নিছক আড্ডা দিতে। কতক্ষণ গল্প করার পর চলে আসতে যাব, এমন সময় শাহনূর ভাই বললেন, ‘একটু দাঁড়াও।’ একটু পর ফিরে এলেন। হাতে একটা ব্যাগ। আমাকে চমকে দিয়ে ভেতর থেকে বের করলেন একটি নাইকন ক্যামেরা। বললেন, ‘আব্বাকে বলেছিলাম তোমার ছবি তোলার আগ্রহের কথা। তখন বললেন তাঁর এই ক্যামেরাটা পড়ে আছে। কী অবস্থা এটার জানেন না। চাইলে তুমি এটা নিতে পারো, যদি কোনো কাজে লাগে।’
আমার তখনো বিশ্বাস হচ্ছিল না, কাজীদা আমাকে তাঁর ব্যবহার করা ক্যামেরা দিয়েছেন! তাঁর মনে আমার জন্য আলাদা একটি জায়গা আছে ভেবে খুব ভালো লাগছিল।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই ক্যামেরাটা দিয়ে পরে আর ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। অনেক দিন পড়ে থেকে এটার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সযতনে ক্যামেরাটা নিজের কাছে রেখে দিয়েছি। এখন আমার কাছে একটি মোটামুটি ভালো একটা ডিএসএলআর ক্যামেরা আছে, বাড়তি লেন্সসহ আমেরিকা থেকে আনিয়েছি আমার বোনকে দিয়ে। কিন্তু আমার কাছে ওই ক্যামেরার থেকেও বেশি প্রিয় কাজীদার দেওয়া সেই পুরোনো ক্যামেরাটি।
পরে ক্যামেরা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে কাজীদার সঙ্গে। এক সাক্ষাৎকারে যেমন আমাকে বলেছিলেন, ‘বহু বছর ধরে ক্যামেরা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেছি, যদিও শিল্প সৃষ্টির তাগিদে নয়। আমি মুহূর্তকে ধরতে চেয়েছি। যেই শাটারে চাপ দিলাম, থমকে দাঁড়িয়ে গেল একটা মুহূর্ত। স্থির হয়ে গেল একটা নাটকের ছোট্ট এক অংশ। যখন খুশি, যতবার খুশি দেখব আমি ওটা। স্মৃতি মলিন হয়ে যায়, কিন্তু ছবি বহু বছর পর্যন্ত জলজ্যান্ত থাকে। ফটোগ্রাফির এই গুণটাই আমাকে আকর্ষণ করেছিল সবচেয়ে বেশি। মাঝে মাঝে এক-আধটা ফটোগ্রাফ দারুণ হয়ে যায়। তখন খুব ভালো লাগে, নিজেকে বিরাট শিল্পী মনে হয়। ছবি তোলার মোটামুটি নিয়মগুলো শেখা থাকলে, দূরত্ব আর আলোছায়ার হিসাব ঠিক থাকলে, সেই সঙ্গে কম্পোজিশন সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকলে মাঝারি মানের একটা ছবি নিশ্চিতভাবেই আশা করা যায়। তাই ফটোগ্রাফিকে আমি একান্ত বিশ্বস্ত ডায়েরি হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম।
...কত্তো কষ্ট করেছি ফটোগ্রাফির জন্য! অথচ এখন? একদম সোজা। মোবাইল ফোনের কল্যাণে এখন টিপ দিলেই ছবি। অহরহ ইনস্ট্যান্ট ছবি তুলে নিজে দেখা যাচ্ছে, মানুষকে দেখানো যাচ্ছে, ফেসবুকে পোস্ট করা যাচ্ছে। এটা যে কত বিরাট অগ্রগতি, ভাবলে বিশ্বাস হতে চায় না। মনে হয় জাদুমন্ত্র! কোথা থেকে হাঁটতে হাঁটতে কোথায় চলে এসেছে আজ মানুষ!’
রানা গিয়েছে কত দেশে...কাজীদা?
কাজী আনোয়ার হোসেন তাঁর সৃষ্টি চরিত্রগুলোকে পৃথিবীর অনেক দেশ, দুর্গম সব জায়গায় ঘুরিয়ে এনেছেন। কিন্তু নিজে কি খুব বেশি দেশ ভ্রমণ করেছেন? জানতে চেয়েছিলাম এক সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়। কাজী আনোয়ার হোসেনের উত্তর, ‘না, ভাই। কোথাও না। আমি আর্মচেয়ার ট্রাভেলার। চৌদ্দ-পনেরো বছর বয়সে একবার শুধু বিহারের কয়লা শহর গিরিডিতে গিয়েছিলাম আমার আব্বুর সঙ্গে। স্মৃতি নেই কোনো। শুধু মনে আছে রাতে ঘুমোতে দেওয়া হয়েছিল দোতলার খোলা বারান্দায়; অসংখ্য উজ্জ্বল তারা ছিল আকাশে, আর বেশ দূরের শহর থেকে ভেসে আসছিল মোহাম্মাদ রফির গাওয়া সিনেমার গান: দিল্মে ছুপাকে পেয়ার কা তুফান লে চ্যলে/ হ্যম আজ আপনি মওতকা সামান লে চ্যলে...’
মাছ শিকারে কাজীদার গুরু জিম করবেট
কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কিংবা সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে অনেক মজার সব ঘটনাও জানতে পারতাম। কাজী আনোয়ার হোসেনের মাছ শিকারের বাতিক ছিল। একবার মাছ শিকারের একটা সাক্ষাৎকার নিই। সেখানে কাজীদা বলেন, মাছ ধরায় তাঁর গুরু বিখ্যাত শিকারি ও পরে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবিদ জিম করবেট।
‘১৯৭৭ কি ’৭৮ সাল। মশারির নিচে বন্দী হয়েছিলাম তিন সপ্তাহের জন্য। চিকেন পক্স। আমার প্রথম পুত্র স্কুল থেকে বয়ে এনে উপহার দিয়েছিল ওটা আমাকে। আমার সঙ্গেই ঘুমাত ও, নিজে দু-চারটে গোটার ওপর দিয়ে পার পেয়ে গেল, কিন্তু আমার শরীর ছেয়ে গেল পানিভরা ফোসকায়, আধ ইঞ্চি জায়গা ফাঁকা থাকল না কোথাও। লোকজন ভয়ে কাছে আসে না...অবশ্য, আমিই বারণ করেছি। শুয়ে শুয়ে একের পর এক বই ঘাঁটতে ঘাঁটতে পেয়ে গেলাম জিম করবেটের লেখা সেই বইটা। নাম আজ আর মনে নেই। বাঘ শিকার করতে করতে একবার উত্তর ভারতের চমৎকার এক পাহাড়ি জলাশয় দেখে ছিপ-বড়শি নিয়ে বসে গিয়েছিলেন তিনি মাছ ধরতে। কী অপূর্ব বর্ণনা! কীভাবে ঠোকর দিল মাছ, তিনিও ছিপে মারলেন টান। কেমনভাবে বড়শিতে গাঁথল মাছ, ছুট দিলেন তিরবেগে, পাথরে বাঁধিয়ে সুতো ছেঁড়ার চেষ্টা করল, তিনিই বা কী কায়দায় তাকে মতলব হাসিল করতে না দিয়ে আস্তে আস্তে খেলিয়ে তীরে নিয়ে এসে নেট করলেন। এসবের জলজ্যান্ত, পুঙ্খানুপুঙ্খ, লোভনীয় বর্ণনা পড়ে আমার তো পাগল হবার দশা। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে তাঁকে ১০-১২ কেজি ওজনের কয়েকটা ‘মহাশের’ মাছ মারতে দেখে আমি মশারির নিচে শুয়ে ছটফট করতে থাকলাম...কবে সেরে উঠব!’
ওই সময় কিছু পুকুর বা দিঘিতে মাঝে মাঝে মাছ ধরার টিকিট দেওয়া হতো, কিন্তু ওসব জায়গায় সচরাচর তেমন সুবিধে হতো না। কাজীদার পছন্দ ছিল ধানমন্ডি লেক।
তাঁর মাছ শিকারের বন্ধুদের নিয়ে বলেছিলেন, ‘সে সময় ধানমন্ডি লেকে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-দরিদ্র, ছেলে-বুড়ো, ব্যবসায়ী-চাকরিজীবী-পেশাজীবী সব মিলিয়ে আমরা মৎস্যশিকারি ছিলাম তিন শর ওপরে। স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা যে-যার মনপছন্দের মানুষ খুঁজে নিয়ে ছোট ছোট দল গড়ে এক-একটা এলাকা দখল করতাম। আমি গিয়ে জুটেছিলাম স্বর্ণহ্নদয় দুই শিকারি কালা ভাই (গোলাম রশিদ কালা, আচার প্রস্তুতকারক) ও রব ভাই (আবদুর রব, রঙের কনট্রাক্টর)—এঁদের গ্রুপে। এই গ্রুপে একে একে এসে জুটেছিলেন শামসু ভাই (জনকণ্ঠ পত্রিকার সিনিয়র সহকারী সম্পাদক এ টি এম শামসুদ্দীন), সোশোলজিতে মাস্টার্স লুডু খান (গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক), ইসহাক ভাই (মোজাইকের ঠিকাদার), মোসলেম ভাই (পিঁপড়ার ডিম ও মাছের চার বিক্রেতা), শফি সাহেব (ঠিকাদার), মোবারক ভাই (বাচ্চাদের রাবারের বল তৈরি করে পাইকারি বেচতেন চকবাজারে) ...এরকম আরও বেশ কয়েকজন। মাছ ধরার পাশাপাশি লেকের ধারে বসে চা-নাশতার ফাঁকে হাসি-তামাশা-গল্প চলত আমাদের হাজারো বিষয়ে। গল্পের টানে পুব পাড় থেকে প্রায়ই আমাদের পশ্চিমে চলে আসতেন একজন কোটিপতি মৎস্যশিকারি, তোপখানা রোডের ক্রিসেন্ট কোম্পানির মালিক খলিলুর রহমান। আমি নানাভাই বলতাম, তিনিও আমাকে তা-ই ডাকতেন; আমেরিকা থেকে আমার জন্য একটা মাল্টিপ্লাইং হুইল আর রিডিং ল্যাম্প এনে উপহার দিয়েছিলেন। আর আসতেন নিতাইদা, ঢাকা বেতারের ক্ল্যাসিক্যাল কণ্ঠশিল্পী নিতাই রায়, বড় সজ্জন ছিলেন ভদ্রলোক। রোজ এসে হাজির হতেন শিকারি নন এমন অনেকেও। তাঁদেরই একজন ছিলেন ঢাকা রাইফেল ক্লাবের এয়ার পিস্তল শুটার শারফুদ্দীন টিপু।’
‘আমাদের ছোট্ট গ্রুপের বাইরেও আরও কয়েকজনের কথা না বললেই নয়। তাদের একজন হচ্ছে শাহনেওয়াজ ভুঁইয়া দি গ্রেট, এত বড় মৎস্যশিকারি আমি আর দেখিনি। ওর মতো বড় মাপের শিকারি যেকোনো দেশেই দুর্লভ...নিত্যনতুন টেকনিক তার, সেই সঙ্গে ইমপ্রোভাইজেশন। কোথাও শিকারে গিয়ে কেউ যদি একটা মাছও না পায়, দেখা যাবে ও ধরে বসে আছে বড়সড় পাঁচ-ছয়টা রুই-কাতলা।
আমার হাতে বিদঘুটে আকৃতির স্পিনিং রিল দেখে যে সময় সবাই হাসাহাসি করত, ডিম বিক্রেতা আবদুল মিঞা বলত: ওই ইচার (চিংড়ি মাছের) ঠ্যাংডা হালান দি, আনুয়ার সাপ, বালা হুইল লন। সবাই যখন ছ্যা-ছ্যা করছে, তখন একদিন শাহনেওয়াজ এসে বলল: আনোয়ার ভাই, আপনার এই স্পিনিং হুইল দিয়ে কী করে বেইট থ্রো করতে হয় একটু দেখিয়ে দেবেন? আমি খুশি মনে শিখিয়ে দিলাম। বার কয়েক থ্রো করেই আয়ত্ত করে ফেলল ও কায়দাটা। আর ওরই হাত ধরে গোটা বাংলাদেশে আজ স্পিনিং হুইলের ছড়াছড়ি...মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে সেদিনের সেই সিঙ্গেল অ্যাকশন হুইলের কথা...আর একজনের কথা বলব: মোস্তফা সাহেব। প্রথম দিন লেকে গিয়ে তাঁকেই ওস্তাদ ধরেছিলাম। তিনিই কিনিয়ে দিয়েছিলেন ছিপ, বড়শি, কয়েক শ গজ চৌদ্দ পাউন্ডের ভালো জাতের সুতো, আর আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কলকাতার উমাচরণ কর্মকারের তৈরি আদ্যিকালের একটা চার ইঞ্চি বেয়ারিং হুইল।’
কাজীদা বলেছিলেন, নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় মাছটিও শিকার করেছিলেন ধানমন্ডি লেকে। আধা মণের এক-আধ সের বেশি বা কম ছিল ওটা।
শিকারে যেতেন...
বন্যপ্রাণীর প্রতি আমার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। পুরোনো দিনের জঙ্গল আর বন্যপ্রাণীর অবস্থা জানতে শিকারের বই বড় ভরসা। তাই ছোটবেলা থেকেই জিম করবেট, কেনেথ এন্ডারসন কিংবা জন হান্টারের বইয়ের বড় পোকা আমি। তাই যখন শুনলাম মাছ ধরার পাশাপাশি কাজী আনোয়ার হোসেনের শিকারের নেশাও ছিল, তখন এক সাক্ষাৎকারে চেপে ধরলাম।
তখন বলেন, ‘শিকারের নেশা বলতে যা বোঝায়, তা কিন্তু কোনো দিনই পুরোপুরি ছিল না আমার। বাঘটাঘ টানেনি আমাকে। এমনকি রাজহাঁস বা চখা শিকারেও গিয়েছি মাত্র অল্প কয়েকবার। আমার মূল আকর্ষণ ছিল আউটিং। কয়েকজন বন্ধু মিলে শুক্রবারগুলোতে গাড়ি নিয়ে চলে যেতাম যেদিকে খুশি, একেকদিন একেক রাস্তায়। দলের বেশির ভাগই ছিলাম আমরা ধানমন্ডি লেকের মৎস্যশিকারি। আমাদের মধ্যে পাখি শিকারের পাগল ছিল আসলে লুডু খান। আমি ষাটের দশকেই পাখির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। আশির দশকে রব ভাই, কালা ভাই আর আমি ছিলাম জেনুইন মৎস্যশিকারি।...লুডু ভাইয়ের এক নিপাট ভদ্রলোক বন্ধু শারফুদ্দীন টিপুও জুটে গিয়েছিলেন আমাদের সঙ্গে। রব ভাই তো উৎসাহের আতিশয্যে বন্দুক-রাইফেল-পিস্তল কিনে রীতিমতো বন্দুকবাজই বনে গিয়েছিলেন। তবে, প্রতিটা ট্রিপে আমাদের সঙ্গে থাকলেও জীবনে একটি গুলিও ছোড়েননি আমাদের সবার প্রিয় গোলাম রসুল কালা ভাই। টিফিন ক্যারিয়ারে করে খাবার নিয়ে যাওয়ার এবং শিকার শেষে সবার মধ্যে পাখি ভাগ করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর।’
কাজীদা বলেন, ‘চলতে চলতেই থেমে রাস্তার দুপাশের ডালে বসা ঘুঘু, হরিয়াল, কবুতর বা বক মারতাম আমরা পয়েন্ট টুটু রাইফেল দিয়ে। তার আগে অবশ্য থাকত একটা প্রস্তুতিপর্ব: ছুটির আগের দিন রাইফেল নিয়ে গুলশানের শুটিং রেঞ্জে গিয়ে নিখুঁতভাবে রাইফেলগুলো জিরো করে রাখা একটা বড় কাজ ছিল। একমাত্র তাহলেই নিশ্চিত হওয়া যেত যেদিকে তাক করেছি, গুলিটা সেই জায়গায় গিয়ে লাগবে। সবাই আমরা সিঙ্গাপুর থেকে দামি টেলিস্কোপ আনিয়ে ফিট করে নিয়েছিলাম যার যার পয়েন্ট টুটু রাইফেলে। সারাটা দিন রোদে রোদে টোটো করে ঘুরে, ত্রিশ থেকে পঞ্চাশটা পাখি মারতাম আমরা। দুপুরের খাওয়াটা কোনো গাছের নিচে সেরে নিয়ে ঘণ্টাখানেক চলত গল্পগুজব, বিশ্রাম। তারপর আরও কিছুক্ষণ পাখির পেছনে ঘুরে রাস্তার ধারের কোনো দোকানে বসে চা-নাশতা খেয়ে সন্ধের পর ফিরে আসতাম পাখি নিয়ে। এই ছিল আমাদের শিকার বা আউটিং।’
শেষ দেখা
আমার খুব আফসোস ছিল একটি বিষয়ে। টুকটাক কয়েকটা বই রূপান্তর করা হলেও কাজীদাকে কোনো বই উৎসর্গ করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁকে একটি বই উৎসর্গ করতে পারি। সেবা প্রকাশনী থেকেই শাহনূর ভাই জেমস হিলটনের ‘লস্ট হরাইজন’ বইটি রূপান্তর করেছিলেন। একটু সংক্ষিপ্তভাবে রূপান্তর করা তিব্বতের পটভূমিতে লেখা বইটি খুব টেনেছিল তখন। চার-পাঁচবার পড়া হয়ে গিয়েছিল। পরে ঐতিহ্য থেকে ২০২০ সালে পূর্ণাঙ্গ রূপান্তর করি বইটি। এটি উৎসর্গ (অনুবাদকের উৎসর্গ) করি কাজী আনোয়ার হোসেনকে। বইটি কাজীদাকে দিতে স্ত্রী-মেয়েসহ দেখা করেছিলাম তাঁর সঙ্গে। অনেক গল্পই হয়েছিল তখন। মেয়ে ওয়াফিকাকে কোলে নিয়ে বইটার একটু অংশ পড়েছিলেনও কাজীদা। তখন অবশ্য কল্পনাও করতে পারিনি তাঁর সঙ্গে এই আমার শেষ দেখা। আফসোস হয়... যদি সেদিন কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে আরেকটু সময় কাটাতে পারতাম।
সিভিতে নাম...
আমার সিভিতে রেফারেন্স হিসেবে দিতে চাইলাম কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম। বললেন, কোনো সমস্যা নেই। আমার সিভিতে তারপর অনেকগুলো দিন রেফারেন্সের জায়গায় এক নম্বরে ছিল কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম। তারপর ২০২২-এর ১৯ জানুয়ারি আমাদের সবাইকে ছেড়ে চিরতরে চলে গেলেন কাজীদা। তাঁর নামটা বাদ দিয়ে সিভিটা ঠিক করার সময় মনটা অনেক কেঁদেছিল। এখনো লেখাটা লিখতে গিয়ে বারবার মনে পড়ছে তাঁর কথা... কাজী আনোয়ার হোসেন আপনি বেঁচে থাকবেন আমাদের মতো পাঠকদের মনে।

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নিয়েছি। আজ কাজীদার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর সঙ্গে নিজের কিছু অভিজ্ঞতা, সেই সঙ্গে কাজী আনোয়ার হোসেন থেকে জানা তাঁর কিছু বিষয় ভাগাভাগি করছি পাঠকদের সঙ্গে।
বইয়ের জগতে প্রবেশ তাঁর কারণে
ক্লাস ফোরে-ফাইভে পড়ি। আব্বুর স্টিলের আলমারির নিচে গাদাগাদি করে রাখা ছিল অনেক বই। সেবা প্রকাশনী, ভারতীয় নানা লেখকের উপন্যাস আরও কত কী! আব্বুকে বললে চাবি দিয়ে খুলে দিতেন। তারপর নাওয়া-খাওয়া ভুলে হামলে পড়তাম বই নিয়ে। তবে আমাকে টানত সেবা প্রকাশনীর বইগুলোই। মাসুদ রানার বই থাকলেও তখন ওগুলো পড়া বারণ ছিল। তাতে কী! আরও কত্ত বই। ছয় রোমাঞ্চ, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, কুয়াশা সিরিজের বই, জঙ্গল, শিকার-১, শিকার-২, শিকার-৩, রুদ্র প্রয়াগের চিতা, জুলভার্নের নাইজারের বাঁকে, মরু শহর—এমনই সব বই বলা চলে নতুন এক পৃথিবীর সন্ধান দিয়ে দিল আমাকে। আজ এই আধবুড়ো বয়সেও বইয়ের প্রতি আগ্রহ কমেনি একটুও। আর বইয়ের প্রতি আমার এই ভালোবাসার জন্ম, বই পড়ে পাহাড়-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর আগ্রহ সৃষ্টি—এই সবকিছু কাজী আনোয়ার হোসেনের জন্যই। তিনি না থাকলে যে সেবা প্রকাশনী হতো না। আমারও বই পড়ে অন্য এক জগতে হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ মিলত না।
রহস্যমানব
স্কুলে পড়ার সময় সেবার বই পড়ুয়া অনেক বন্ধুবান্ধবও জুটে যায়। আমাদের কাছে সেবার বিভিন্ন বইয়ের চরিত্রগুলোর মতো কাজী আনোয়ার হোসেনও তখন রহস্যঘেরা এক চরিত্র। আমাদের বই পড়ুয়াদের দলে এক বড় ভাই ছিলেন, নোমান ভাই। তিনি মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলতেন, আমরা পুরোপুরি বিশ্বাসও করতে পারতাম না, আবার অবিশ্বাস করতে পারতাম না। একবার যেমন বললেন, মাসুদ রানা সিরিজের বিসিআই (বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স) ঢাকায় সত্যি আছে। আর কাজী আনোয়ার হোসেন বড় একটা পদে আছেন। তবে এটা একেবারেই গোপনীয়! তাই কেউ জানে না। কাজী আনোয়ার হোসেন আমাদের কাছে এমনই এক রহস্যঘেরা মানুষ ছিলেন, আমরা তাঁর এ কথা বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম। তখন একবারও মনে হয়নি, এত গোপনীয় বিষয়টি আমাদের চেয়ে কয়েক বছরের বড় নোমান ভাই জানলেন কীভাবে?
দুরু দুরু বুকে
২০০৫-০৬ সালের ঘটনা। রহস্য পত্রিকায় লিখছি নিয়মিত। তবে তখন পর্যন্ত কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা হয়নি। রহস্য পত্রিকার অফিস ২৪/৪ সেগুনবাগিচার দোতলায়। কাজী আনোয়ার হোসেন বসেন তৃতীয় তলায়। আমার দৌড় তখন পর্যন্ত ওই দোতলা পর্যন্ত। সেখানে গিয়ে লেখা জমা দিই। আর হাকিম আংকেল (শেখ আবদুল হাকিম) ও শাহনূর ভাইয়ের (কাজী শাহনূর হোসেন) সঙ্গে গল্প করি, নতুন নতুন লেখার পরিকল্পনা করি। একদিন শাহনূর ভাইকে সাহস করে বললাম, কাজীদার সঙ্গে দেখা করতে চাই। পরদিন সকালেই ডাক পড়ল। আমার মনে হলো বিসিআই চিফ রাহাত খানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।
দোতলা থেকে তৃতীয় তলা ওঠার পথে একটি তালা মারা দরজা। দালানের এই পাশ দিয়ে কাজী আনোয়ার হোসেনের কামরায় যেতে হলে ওই দরজা খুলেই যেতে হয়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে শেষ পর্যন্ত দুরু দুরু বুকে ঢুকলাম কাজী আনোয়ার হোসেনের কামরায়। আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। বসতে বললেন। শুরুতে কেমন ঘোরের মধ্যে ছিলাম। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না কাজী আনোয়ার হোসেনের সামনে বসে আছি।
তারপর অনেকবারই গিয়েছি কাজীদার সঙ্গে দেখা করতে। বেশির ভাগ সময় কোনো না কোনো কাজে। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারও নিয়েছি তাঁর। তবে ওই প্রথম দিনের অনুভূতি আজও অটুট আমার মনে। এখনো মনে পড়লে কেমন ভয়-রোমাঞ্চের একটি শিহরণ খেলে যায় শরীরে।
সেই ক্যামেরা
পরের বছরের ঘটনা। তখন বনে, পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানোর নেশা প্রবলভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে আমার ওপর। সেই সঙ্গে ছবি তোলার আগ্রহ পেয়ে বসেছে। সমস্যা হলো, ভালো ক্যামেরা নেই। একদিন কথায় কথায় শাহনূর ভাইকে বললাম, ক্যামেরা না থাকায় ভালো ছবি তুলতে পারছি না। একটা ক্যামেরা কিনতে হবে।
কয়েক দিন পরের কথা। সেবা প্রকাশনীতে গেলাম আবার। কোনো একটা লেখা নিয়ে কিংবা নিছক আড্ডা দিতে। কতক্ষণ গল্প করার পর চলে আসতে যাব, এমন সময় শাহনূর ভাই বললেন, ‘একটু দাঁড়াও।’ একটু পর ফিরে এলেন। হাতে একটা ব্যাগ। আমাকে চমকে দিয়ে ভেতর থেকে বের করলেন একটি নাইকন ক্যামেরা। বললেন, ‘আব্বাকে বলেছিলাম তোমার ছবি তোলার আগ্রহের কথা। তখন বললেন তাঁর এই ক্যামেরাটা পড়ে আছে। কী অবস্থা এটার জানেন না। চাইলে তুমি এটা নিতে পারো, যদি কোনো কাজে লাগে।’
আমার তখনো বিশ্বাস হচ্ছিল না, কাজীদা আমাকে তাঁর ব্যবহার করা ক্যামেরা দিয়েছেন! তাঁর মনে আমার জন্য আলাদা একটি জায়গা আছে ভেবে খুব ভালো লাগছিল।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই ক্যামেরাটা দিয়ে পরে আর ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। অনেক দিন পড়ে থেকে এটার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সযতনে ক্যামেরাটা নিজের কাছে রেখে দিয়েছি। এখন আমার কাছে একটি মোটামুটি ভালো একটা ডিএসএলআর ক্যামেরা আছে, বাড়তি লেন্সসহ আমেরিকা থেকে আনিয়েছি আমার বোনকে দিয়ে। কিন্তু আমার কাছে ওই ক্যামেরার থেকেও বেশি প্রিয় কাজীদার দেওয়া সেই পুরোনো ক্যামেরাটি।
পরে ক্যামেরা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে কাজীদার সঙ্গে। এক সাক্ষাৎকারে যেমন আমাকে বলেছিলেন, ‘বহু বছর ধরে ক্যামেরা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেছি, যদিও শিল্প সৃষ্টির তাগিদে নয়। আমি মুহূর্তকে ধরতে চেয়েছি। যেই শাটারে চাপ দিলাম, থমকে দাঁড়িয়ে গেল একটা মুহূর্ত। স্থির হয়ে গেল একটা নাটকের ছোট্ট এক অংশ। যখন খুশি, যতবার খুশি দেখব আমি ওটা। স্মৃতি মলিন হয়ে যায়, কিন্তু ছবি বহু বছর পর্যন্ত জলজ্যান্ত থাকে। ফটোগ্রাফির এই গুণটাই আমাকে আকর্ষণ করেছিল সবচেয়ে বেশি। মাঝে মাঝে এক-আধটা ফটোগ্রাফ দারুণ হয়ে যায়। তখন খুব ভালো লাগে, নিজেকে বিরাট শিল্পী মনে হয়। ছবি তোলার মোটামুটি নিয়মগুলো শেখা থাকলে, দূরত্ব আর আলোছায়ার হিসাব ঠিক থাকলে, সেই সঙ্গে কম্পোজিশন সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকলে মাঝারি মানের একটা ছবি নিশ্চিতভাবেই আশা করা যায়। তাই ফটোগ্রাফিকে আমি একান্ত বিশ্বস্ত ডায়েরি হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম।
...কত্তো কষ্ট করেছি ফটোগ্রাফির জন্য! অথচ এখন? একদম সোজা। মোবাইল ফোনের কল্যাণে এখন টিপ দিলেই ছবি। অহরহ ইনস্ট্যান্ট ছবি তুলে নিজে দেখা যাচ্ছে, মানুষকে দেখানো যাচ্ছে, ফেসবুকে পোস্ট করা যাচ্ছে। এটা যে কত বিরাট অগ্রগতি, ভাবলে বিশ্বাস হতে চায় না। মনে হয় জাদুমন্ত্র! কোথা থেকে হাঁটতে হাঁটতে কোথায় চলে এসেছে আজ মানুষ!’
রানা গিয়েছে কত দেশে...কাজীদা?
কাজী আনোয়ার হোসেন তাঁর সৃষ্টি চরিত্রগুলোকে পৃথিবীর অনেক দেশ, দুর্গম সব জায়গায় ঘুরিয়ে এনেছেন। কিন্তু নিজে কি খুব বেশি দেশ ভ্রমণ করেছেন? জানতে চেয়েছিলাম এক সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়। কাজী আনোয়ার হোসেনের উত্তর, ‘না, ভাই। কোথাও না। আমি আর্মচেয়ার ট্রাভেলার। চৌদ্দ-পনেরো বছর বয়সে একবার শুধু বিহারের কয়লা শহর গিরিডিতে গিয়েছিলাম আমার আব্বুর সঙ্গে। স্মৃতি নেই কোনো। শুধু মনে আছে রাতে ঘুমোতে দেওয়া হয়েছিল দোতলার খোলা বারান্দায়; অসংখ্য উজ্জ্বল তারা ছিল আকাশে, আর বেশ দূরের শহর থেকে ভেসে আসছিল মোহাম্মাদ রফির গাওয়া সিনেমার গান: দিল্মে ছুপাকে পেয়ার কা তুফান লে চ্যলে/ হ্যম আজ আপনি মওতকা সামান লে চ্যলে...’
মাছ শিকারে কাজীদার গুরু জিম করবেট
কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কিংবা সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে অনেক মজার সব ঘটনাও জানতে পারতাম। কাজী আনোয়ার হোসেনের মাছ শিকারের বাতিক ছিল। একবার মাছ শিকারের একটা সাক্ষাৎকার নিই। সেখানে কাজীদা বলেন, মাছ ধরায় তাঁর গুরু বিখ্যাত শিকারি ও পরে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবিদ জিম করবেট।
‘১৯৭৭ কি ’৭৮ সাল। মশারির নিচে বন্দী হয়েছিলাম তিন সপ্তাহের জন্য। চিকেন পক্স। আমার প্রথম পুত্র স্কুল থেকে বয়ে এনে উপহার দিয়েছিল ওটা আমাকে। আমার সঙ্গেই ঘুমাত ও, নিজে দু-চারটে গোটার ওপর দিয়ে পার পেয়ে গেল, কিন্তু আমার শরীর ছেয়ে গেল পানিভরা ফোসকায়, আধ ইঞ্চি জায়গা ফাঁকা থাকল না কোথাও। লোকজন ভয়ে কাছে আসে না...অবশ্য, আমিই বারণ করেছি। শুয়ে শুয়ে একের পর এক বই ঘাঁটতে ঘাঁটতে পেয়ে গেলাম জিম করবেটের লেখা সেই বইটা। নাম আজ আর মনে নেই। বাঘ শিকার করতে করতে একবার উত্তর ভারতের চমৎকার এক পাহাড়ি জলাশয় দেখে ছিপ-বড়শি নিয়ে বসে গিয়েছিলেন তিনি মাছ ধরতে। কী অপূর্ব বর্ণনা! কীভাবে ঠোকর দিল মাছ, তিনিও ছিপে মারলেন টান। কেমনভাবে বড়শিতে গাঁথল মাছ, ছুট দিলেন তিরবেগে, পাথরে বাঁধিয়ে সুতো ছেঁড়ার চেষ্টা করল, তিনিই বা কী কায়দায় তাকে মতলব হাসিল করতে না দিয়ে আস্তে আস্তে খেলিয়ে তীরে নিয়ে এসে নেট করলেন। এসবের জলজ্যান্ত, পুঙ্খানুপুঙ্খ, লোভনীয় বর্ণনা পড়ে আমার তো পাগল হবার দশা। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে তাঁকে ১০-১২ কেজি ওজনের কয়েকটা ‘মহাশের’ মাছ মারতে দেখে আমি মশারির নিচে শুয়ে ছটফট করতে থাকলাম...কবে সেরে উঠব!’
ওই সময় কিছু পুকুর বা দিঘিতে মাঝে মাঝে মাছ ধরার টিকিট দেওয়া হতো, কিন্তু ওসব জায়গায় সচরাচর তেমন সুবিধে হতো না। কাজীদার পছন্দ ছিল ধানমন্ডি লেক।
তাঁর মাছ শিকারের বন্ধুদের নিয়ে বলেছিলেন, ‘সে সময় ধানমন্ডি লেকে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-দরিদ্র, ছেলে-বুড়ো, ব্যবসায়ী-চাকরিজীবী-পেশাজীবী সব মিলিয়ে আমরা মৎস্যশিকারি ছিলাম তিন শর ওপরে। স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা যে-যার মনপছন্দের মানুষ খুঁজে নিয়ে ছোট ছোট দল গড়ে এক-একটা এলাকা দখল করতাম। আমি গিয়ে জুটেছিলাম স্বর্ণহ্নদয় দুই শিকারি কালা ভাই (গোলাম রশিদ কালা, আচার প্রস্তুতকারক) ও রব ভাই (আবদুর রব, রঙের কনট্রাক্টর)—এঁদের গ্রুপে। এই গ্রুপে একে একে এসে জুটেছিলেন শামসু ভাই (জনকণ্ঠ পত্রিকার সিনিয়র সহকারী সম্পাদক এ টি এম শামসুদ্দীন), সোশোলজিতে মাস্টার্স লুডু খান (গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক), ইসহাক ভাই (মোজাইকের ঠিকাদার), মোসলেম ভাই (পিঁপড়ার ডিম ও মাছের চার বিক্রেতা), শফি সাহেব (ঠিকাদার), মোবারক ভাই (বাচ্চাদের রাবারের বল তৈরি করে পাইকারি বেচতেন চকবাজারে) ...এরকম আরও বেশ কয়েকজন। মাছ ধরার পাশাপাশি লেকের ধারে বসে চা-নাশতার ফাঁকে হাসি-তামাশা-গল্প চলত আমাদের হাজারো বিষয়ে। গল্পের টানে পুব পাড় থেকে প্রায়ই আমাদের পশ্চিমে চলে আসতেন একজন কোটিপতি মৎস্যশিকারি, তোপখানা রোডের ক্রিসেন্ট কোম্পানির মালিক খলিলুর রহমান। আমি নানাভাই বলতাম, তিনিও আমাকে তা-ই ডাকতেন; আমেরিকা থেকে আমার জন্য একটা মাল্টিপ্লাইং হুইল আর রিডিং ল্যাম্প এনে উপহার দিয়েছিলেন। আর আসতেন নিতাইদা, ঢাকা বেতারের ক্ল্যাসিক্যাল কণ্ঠশিল্পী নিতাই রায়, বড় সজ্জন ছিলেন ভদ্রলোক। রোজ এসে হাজির হতেন শিকারি নন এমন অনেকেও। তাঁদেরই একজন ছিলেন ঢাকা রাইফেল ক্লাবের এয়ার পিস্তল শুটার শারফুদ্দীন টিপু।’
‘আমাদের ছোট্ট গ্রুপের বাইরেও আরও কয়েকজনের কথা না বললেই নয়। তাদের একজন হচ্ছে শাহনেওয়াজ ভুঁইয়া দি গ্রেট, এত বড় মৎস্যশিকারি আমি আর দেখিনি। ওর মতো বড় মাপের শিকারি যেকোনো দেশেই দুর্লভ...নিত্যনতুন টেকনিক তার, সেই সঙ্গে ইমপ্রোভাইজেশন। কোথাও শিকারে গিয়ে কেউ যদি একটা মাছও না পায়, দেখা যাবে ও ধরে বসে আছে বড়সড় পাঁচ-ছয়টা রুই-কাতলা।
আমার হাতে বিদঘুটে আকৃতির স্পিনিং রিল দেখে যে সময় সবাই হাসাহাসি করত, ডিম বিক্রেতা আবদুল মিঞা বলত: ওই ইচার (চিংড়ি মাছের) ঠ্যাংডা হালান দি, আনুয়ার সাপ, বালা হুইল লন। সবাই যখন ছ্যা-ছ্যা করছে, তখন একদিন শাহনেওয়াজ এসে বলল: আনোয়ার ভাই, আপনার এই স্পিনিং হুইল দিয়ে কী করে বেইট থ্রো করতে হয় একটু দেখিয়ে দেবেন? আমি খুশি মনে শিখিয়ে দিলাম। বার কয়েক থ্রো করেই আয়ত্ত করে ফেলল ও কায়দাটা। আর ওরই হাত ধরে গোটা বাংলাদেশে আজ স্পিনিং হুইলের ছড়াছড়ি...মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে সেদিনের সেই সিঙ্গেল অ্যাকশন হুইলের কথা...আর একজনের কথা বলব: মোস্তফা সাহেব। প্রথম দিন লেকে গিয়ে তাঁকেই ওস্তাদ ধরেছিলাম। তিনিই কিনিয়ে দিয়েছিলেন ছিপ, বড়শি, কয়েক শ গজ চৌদ্দ পাউন্ডের ভালো জাতের সুতো, আর আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কলকাতার উমাচরণ কর্মকারের তৈরি আদ্যিকালের একটা চার ইঞ্চি বেয়ারিং হুইল।’
কাজীদা বলেছিলেন, নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় মাছটিও শিকার করেছিলেন ধানমন্ডি লেকে। আধা মণের এক-আধ সের বেশি বা কম ছিল ওটা।
শিকারে যেতেন...
বন্যপ্রাণীর প্রতি আমার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। পুরোনো দিনের জঙ্গল আর বন্যপ্রাণীর অবস্থা জানতে শিকারের বই বড় ভরসা। তাই ছোটবেলা থেকেই জিম করবেট, কেনেথ এন্ডারসন কিংবা জন হান্টারের বইয়ের বড় পোকা আমি। তাই যখন শুনলাম মাছ ধরার পাশাপাশি কাজী আনোয়ার হোসেনের শিকারের নেশাও ছিল, তখন এক সাক্ষাৎকারে চেপে ধরলাম।
তখন বলেন, ‘শিকারের নেশা বলতে যা বোঝায়, তা কিন্তু কোনো দিনই পুরোপুরি ছিল না আমার। বাঘটাঘ টানেনি আমাকে। এমনকি রাজহাঁস বা চখা শিকারেও গিয়েছি মাত্র অল্প কয়েকবার। আমার মূল আকর্ষণ ছিল আউটিং। কয়েকজন বন্ধু মিলে শুক্রবারগুলোতে গাড়ি নিয়ে চলে যেতাম যেদিকে খুশি, একেকদিন একেক রাস্তায়। দলের বেশির ভাগই ছিলাম আমরা ধানমন্ডি লেকের মৎস্যশিকারি। আমাদের মধ্যে পাখি শিকারের পাগল ছিল আসলে লুডু খান। আমি ষাটের দশকেই পাখির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। আশির দশকে রব ভাই, কালা ভাই আর আমি ছিলাম জেনুইন মৎস্যশিকারি।...লুডু ভাইয়ের এক নিপাট ভদ্রলোক বন্ধু শারফুদ্দীন টিপুও জুটে গিয়েছিলেন আমাদের সঙ্গে। রব ভাই তো উৎসাহের আতিশয্যে বন্দুক-রাইফেল-পিস্তল কিনে রীতিমতো বন্দুকবাজই বনে গিয়েছিলেন। তবে, প্রতিটা ট্রিপে আমাদের সঙ্গে থাকলেও জীবনে একটি গুলিও ছোড়েননি আমাদের সবার প্রিয় গোলাম রসুল কালা ভাই। টিফিন ক্যারিয়ারে করে খাবার নিয়ে যাওয়ার এবং শিকার শেষে সবার মধ্যে পাখি ভাগ করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর।’
কাজীদা বলেন, ‘চলতে চলতেই থেমে রাস্তার দুপাশের ডালে বসা ঘুঘু, হরিয়াল, কবুতর বা বক মারতাম আমরা পয়েন্ট টুটু রাইফেল দিয়ে। তার আগে অবশ্য থাকত একটা প্রস্তুতিপর্ব: ছুটির আগের দিন রাইফেল নিয়ে গুলশানের শুটিং রেঞ্জে গিয়ে নিখুঁতভাবে রাইফেলগুলো জিরো করে রাখা একটা বড় কাজ ছিল। একমাত্র তাহলেই নিশ্চিত হওয়া যেত যেদিকে তাক করেছি, গুলিটা সেই জায়গায় গিয়ে লাগবে। সবাই আমরা সিঙ্গাপুর থেকে দামি টেলিস্কোপ আনিয়ে ফিট করে নিয়েছিলাম যার যার পয়েন্ট টুটু রাইফেলে। সারাটা দিন রোদে রোদে টোটো করে ঘুরে, ত্রিশ থেকে পঞ্চাশটা পাখি মারতাম আমরা। দুপুরের খাওয়াটা কোনো গাছের নিচে সেরে নিয়ে ঘণ্টাখানেক চলত গল্পগুজব, বিশ্রাম। তারপর আরও কিছুক্ষণ পাখির পেছনে ঘুরে রাস্তার ধারের কোনো দোকানে বসে চা-নাশতা খেয়ে সন্ধের পর ফিরে আসতাম পাখি নিয়ে। এই ছিল আমাদের শিকার বা আউটিং।’
শেষ দেখা
আমার খুব আফসোস ছিল একটি বিষয়ে। টুকটাক কয়েকটা বই রূপান্তর করা হলেও কাজীদাকে কোনো বই উৎসর্গ করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁকে একটি বই উৎসর্গ করতে পারি। সেবা প্রকাশনী থেকেই শাহনূর ভাই জেমস হিলটনের ‘লস্ট হরাইজন’ বইটি রূপান্তর করেছিলেন। একটু সংক্ষিপ্তভাবে রূপান্তর করা তিব্বতের পটভূমিতে লেখা বইটি খুব টেনেছিল তখন। চার-পাঁচবার পড়া হয়ে গিয়েছিল। পরে ঐতিহ্য থেকে ২০২০ সালে পূর্ণাঙ্গ রূপান্তর করি বইটি। এটি উৎসর্গ (অনুবাদকের উৎসর্গ) করি কাজী আনোয়ার হোসেনকে। বইটি কাজীদাকে দিতে স্ত্রী-মেয়েসহ দেখা করেছিলাম তাঁর সঙ্গে। অনেক গল্পই হয়েছিল তখন। মেয়ে ওয়াফিকাকে কোলে নিয়ে বইটার একটু অংশ পড়েছিলেনও কাজীদা। তখন অবশ্য কল্পনাও করতে পারিনি তাঁর সঙ্গে এই আমার শেষ দেখা। আফসোস হয়... যদি সেদিন কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে আরেকটু সময় কাটাতে পারতাম।
সিভিতে নাম...
আমার সিভিতে রেফারেন্স হিসেবে দিতে চাইলাম কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম। বললেন, কোনো সমস্যা নেই। আমার সিভিতে তারপর অনেকগুলো দিন রেফারেন্সের জায়গায় এক নম্বরে ছিল কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম। তারপর ২০২২-এর ১৯ জানুয়ারি আমাদের সবাইকে ছেড়ে চিরতরে চলে গেলেন কাজীদা। তাঁর নামটা বাদ দিয়ে সিভিটা ঠিক করার সময় মনটা অনেক কেঁদেছিল। এখনো লেখাটা লিখতে গিয়ে বারবার মনে পড়ছে তাঁর কথা... কাজী আনোয়ার হোসেন আপনি বেঁচে থাকবেন আমাদের মতো পাঠকদের মনে।

লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়...
১ ঘণ্টা আগে
আজ মানসিক শান্তিতে থাকবেন। কারণ, হয়তো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনটা চার্জে দিতে ভুলে গিয়েছিলেন! আধ্যাত্মিকতায় মন বসবে, কিন্তু মনে রাখবেন অফিসের বস কিন্তু ভগবান নন, তাই কাজে ফাঁকি দেবেন না। বন্ধুদের কাছে আজ বেশি ‘হিরোগিরি’ দেখাতে যাবেন না, মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগে
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ বছর পৃথিবীর ওপর ছিল মঙ্গলগ্রহের প্রভাব। ফলে বছরটি কম-বেশি সবার জন্যই খারাপ গেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি, সম্পর্কে ভাঙন, সংসারে অশান্তি, প্রিয়জনের মৃত্যু, ব্যবসায়ে লোকসান—এসব ঘটনা কোনো না কোনোভাবে আমাদের প্রভাবিত করেছে পুরো বছর। এ বছর লাল রঙের পোশাক যতটা এড়িয়ে যাওয়া যায়, সে পরামর্শই...
৩ ঘণ্টা আগে
ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ...
১৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

ক্যালেন্ডারের পাতায় বছর শেষ। উৎসবের আমেজ আর নতুন বছরের প্রস্তুতির ভিড়ে আমরা অনেকেই নতুন করে গুছিয়ে নিচ্ছি আমাদের ঘরবাড়ি। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগে একবার কি আপনার ড্রেসিং টেবিলের দিকে নজর দিয়েছেন? যে মেকআপ আইটেমগুলো দিয়ে আপনি নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলেন, সেগুলোর মেয়াদ ঠিকঠাক আছে তো?
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়। কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয়; বরং ত্বকের সুস্বাস্থ্যের খাতিরেই আমাদের জানা প্রয়োজন, কোন প্রসাধনী কত দিন ব্যবহার করা নিরাপদ।

আপনার ত্বকের সুস্বাস্থ্য এবং সাজের নিখুঁত ফিনিশিং ধরে রাখতে ড্রেসিং টেবিলের এই মেকআপ ক্লিন আউট বা অকেজো পণ্য ছেঁটে ফেলা এখন সময়ের দাবি। নতুন বছর শুরু করার আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়।
মেয়াদোত্তীর্ণ মেকআপ কেন বিপজ্জনক

মেকআপের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তার রাসায়নিক গঠন বদলে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়াদ শেষ হওয়া পণ্য ব্যবহারে ত্বকে সংক্রমণ, প্রদাহ (কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস) এমনকি রাসায়নিক পোড়া ভাবও দেখা দিতে পারে।
চোখের প্রসাধনী, যেমন আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ পণ্যগুলো চোখের খুব আর্দ্র পরিবেশে ব্যবহৃত হয় বলে সেখানে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জন্মায়, যা থেকে আঞ্জনি বা কনজাংটিভাইটিসের মতো সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া মেয়াদ ফুরোলে ফাউন্ডেশন বা কনসিলার ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দেয়, যা থেকে ব্রণের সমস্যা প্রকট হয়।
মেয়াদ বোঝার সহজ উপায়
প্রসাধনীর মোড়কের গায়ে তাকালেই আপনি একটি খোলা কৌটার ছোট ছবি দেখতে পাবেন। তার পাশে লেখা থাকে ৬ এম, ১২ এম বা ২৪ এম। এগুলোর মানে হলো, পণ্যটির মুখ খোলার পর তা যথাক্রমে ৬, ১২ বা ২৪ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা নিরাপদ। তবে যদি এ চিহ্ন খুঁজে না পান, তবে নিজের ইন্দ্রিয় ব্যবহার করুন। যদি দেখেন লিপস্টিক বা ফাউন্ডেশন থেকে অদ্ভুত গন্ধ আসছে, তরল মেকআপের ওপর তেলের স্তর জমে গেছে কিংবা আইশ্যাডোর ওপর পাউরুটির মতো কালো বা ধূসর ছাতা পড়েছে, তবে বুঝে নেবেন সেটি বিদায় করার সময় হয়েছে।
কোন পণ্য কত দিন টেকে
চোখের সাজ টেকে ৩ থেকে ৬ মাস: মাসকারা ও তরল আইলাইনার সবচেয়ে কম সময় ভালো থাকে। যেহেতু এগুলো সরাসরি চোখের সংস্পর্শে আসে, তাই প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর এগুলো বদলে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ।
ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর: লিপস্টিক সাধারণত পানির পরিমাণ কম থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। তবে লিপগ্লসের মেয়াদ সাধারণত ১ বছরের বেশি হয় না।
বেস মেকআপ টেকে ২ বছর: ফাউন্ডেশন, কনসিলার কিংবা ফেস পাউডার সাধারণত ২ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। তবে তরল ফাউন্ডেশনের উপাদান আলাদা হয়ে গেলে তা আর ব্যবহার করবেন না।
ব্লাশ ও ব্রোঞ্জার ৩ বছর: পাউডার জাতীয় ব্লাশ বা ব্রোঞ্জার সঠিক যত্নে থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত আপনার ড্রেসিং টেবিলের শোভা বাড়াতে পারে।
পারফিউম ও নেলপলিশ টেকে ৩ থেকে ৫ বছর: সুগন্ধি বা পারফিউম ৩ থেকে ৫ বছর অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। আর নেলপলিশের ক্ষেত্রে রঙের পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ৩ বছরের বেশি সময় এটি নিরাপদ থাকে।
প্রসাধনী দীর্ঘস্থায়ী করার কিছু টিপস
আপনার প্রিয় প্রসাধনীগুলো যাতে মেয়াদের পুরোটা সময় ভালো থাকে সে জন্য:
সূত্র: ভোগ

ক্যালেন্ডারের পাতায় বছর শেষ। উৎসবের আমেজ আর নতুন বছরের প্রস্তুতির ভিড়ে আমরা অনেকেই নতুন করে গুছিয়ে নিচ্ছি আমাদের ঘরবাড়ি। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগে একবার কি আপনার ড্রেসিং টেবিলের দিকে নজর দিয়েছেন? যে মেকআপ আইটেমগুলো দিয়ে আপনি নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলেন, সেগুলোর মেয়াদ ঠিকঠাক আছে তো?
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়। কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয়; বরং ত্বকের সুস্বাস্থ্যের খাতিরেই আমাদের জানা প্রয়োজন, কোন প্রসাধনী কত দিন ব্যবহার করা নিরাপদ।

আপনার ত্বকের সুস্বাস্থ্য এবং সাজের নিখুঁত ফিনিশিং ধরে রাখতে ড্রেসিং টেবিলের এই মেকআপ ক্লিন আউট বা অকেজো পণ্য ছেঁটে ফেলা এখন সময়ের দাবি। নতুন বছর শুরু করার আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়।
মেয়াদোত্তীর্ণ মেকআপ কেন বিপজ্জনক

মেকআপের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তার রাসায়নিক গঠন বদলে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়াদ শেষ হওয়া পণ্য ব্যবহারে ত্বকে সংক্রমণ, প্রদাহ (কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস) এমনকি রাসায়নিক পোড়া ভাবও দেখা দিতে পারে।
চোখের প্রসাধনী, যেমন আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ পণ্যগুলো চোখের খুব আর্দ্র পরিবেশে ব্যবহৃত হয় বলে সেখানে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জন্মায়, যা থেকে আঞ্জনি বা কনজাংটিভাইটিসের মতো সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া মেয়াদ ফুরোলে ফাউন্ডেশন বা কনসিলার ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দেয়, যা থেকে ব্রণের সমস্যা প্রকট হয়।
মেয়াদ বোঝার সহজ উপায়
প্রসাধনীর মোড়কের গায়ে তাকালেই আপনি একটি খোলা কৌটার ছোট ছবি দেখতে পাবেন। তার পাশে লেখা থাকে ৬ এম, ১২ এম বা ২৪ এম। এগুলোর মানে হলো, পণ্যটির মুখ খোলার পর তা যথাক্রমে ৬, ১২ বা ২৪ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা নিরাপদ। তবে যদি এ চিহ্ন খুঁজে না পান, তবে নিজের ইন্দ্রিয় ব্যবহার করুন। যদি দেখেন লিপস্টিক বা ফাউন্ডেশন থেকে অদ্ভুত গন্ধ আসছে, তরল মেকআপের ওপর তেলের স্তর জমে গেছে কিংবা আইশ্যাডোর ওপর পাউরুটির মতো কালো বা ধূসর ছাতা পড়েছে, তবে বুঝে নেবেন সেটি বিদায় করার সময় হয়েছে।
কোন পণ্য কত দিন টেকে
চোখের সাজ টেকে ৩ থেকে ৬ মাস: মাসকারা ও তরল আইলাইনার সবচেয়ে কম সময় ভালো থাকে। যেহেতু এগুলো সরাসরি চোখের সংস্পর্শে আসে, তাই প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর এগুলো বদলে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ।
ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর: লিপস্টিক সাধারণত পানির পরিমাণ কম থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। তবে লিপগ্লসের মেয়াদ সাধারণত ১ বছরের বেশি হয় না।
বেস মেকআপ টেকে ২ বছর: ফাউন্ডেশন, কনসিলার কিংবা ফেস পাউডার সাধারণত ২ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। তবে তরল ফাউন্ডেশনের উপাদান আলাদা হয়ে গেলে তা আর ব্যবহার করবেন না।
ব্লাশ ও ব্রোঞ্জার ৩ বছর: পাউডার জাতীয় ব্লাশ বা ব্রোঞ্জার সঠিক যত্নে থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত আপনার ড্রেসিং টেবিলের শোভা বাড়াতে পারে।
পারফিউম ও নেলপলিশ টেকে ৩ থেকে ৫ বছর: সুগন্ধি বা পারফিউম ৩ থেকে ৫ বছর অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। আর নেলপলিশের ক্ষেত্রে রঙের পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ৩ বছরের বেশি সময় এটি নিরাপদ থাকে।
প্রসাধনী দীর্ঘস্থায়ী করার কিছু টিপস
আপনার প্রিয় প্রসাধনীগুলো যাতে মেয়াদের পুরোটা সময় ভালো থাকে সে জন্য:
সূত্র: ভোগ

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নি
১৯ জানুয়ারি ২০২৩
আজ মানসিক শান্তিতে থাকবেন। কারণ, হয়তো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনটা চার্জে দিতে ভুলে গিয়েছিলেন! আধ্যাত্মিকতায় মন বসবে, কিন্তু মনে রাখবেন অফিসের বস কিন্তু ভগবান নন, তাই কাজে ফাঁকি দেবেন না। বন্ধুদের কাছে আজ বেশি ‘হিরোগিরি’ দেখাতে যাবেন না, মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগে
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ বছর পৃথিবীর ওপর ছিল মঙ্গলগ্রহের প্রভাব। ফলে বছরটি কম-বেশি সবার জন্যই খারাপ গেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি, সম্পর্কে ভাঙন, সংসারে অশান্তি, প্রিয়জনের মৃত্যু, ব্যবসায়ে লোকসান—এসব ঘটনা কোনো না কোনোভাবে আমাদের প্রভাবিত করেছে পুরো বছর। এ বছর লাল রঙের পোশাক যতটা এড়িয়ে যাওয়া যায়, সে পরামর্শই...
৩ ঘণ্টা আগে
ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ...
১৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আপনি আজ মানসিক শান্তিতে থাকবেন। কারণ, হয়তো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনটা চার্জে দিতে ভুলে গিয়েছিলেন! আধ্যাত্মিকতায় মন বসবে, কিন্তু মনে রাখবেন অফিসের বস কিন্তু ভগবান নন, তাই কাজে ফাঁকি দেবেন না। বন্ধুদের কাছে আজ বেশি ‘হিরোগিরি’ দেখাতে যাবেন না, মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হতে পারে।
বৃষ
আজ আপনার অর্থভাগ্যে একটু ‘ব্রেকফাস্ট’ লেগেছে, মানে খরচ বেশি। অচেনা লোক দেখলে আজ একটু দূরত্ব বজায় রাখুন, বিশেষ করে যারা বিমা বা ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করতে আসে। বাবার কথা আজ শুনে নিন, না হলে পকেট গড়ের মাঠ হতে সময় লাগবে না। পেটের দিকে একটু নজর দিন, রাস্তার চপ-শিঙাড়া আজ বিষবৎ!
মিথুন
গ্রহরা বলছে আপনার আজ ঝগড়া করার খুব ইচ্ছা হবে। কিন্তু দয়া করে তা বাড়ির লোকের ওপর প্রয়োগ করবেন না। ধৈর্য ধরুন, না হলে রাতে কিন্তু না খেয়ে শুতে হতে পারে! কথা বলার আগে দুবার ভাবুন। আপনি ভাবছেন আপনি রসিকতা করছেন, কিন্তু সামনের জন হয়তো ভাবছে আপনাকে ব্লক করবে!
কর্কট
আজ আপনার জন্য ‘শুভ’ দিন। নতুন ব্যবসার আইডিয়া মাথায় আসতে পারে, যেমন ধরুন ‘অনলাইন ধৈর্য বিক্রয় কেন্দ্র’। শেয়ারবাজারে আজ আপনার পোয়াবারো হতে পারে, তবে পকেট সামলে। বিয়ের সিদ্ধান্তে সবাই খুশি হবে, কিন্তু আপনি নিজে কি খুশি? সেটা একবার আয়নায় নিজেকে জিজ্ঞাসা করে নিন।
সিংহ
স্ত্রীর সঙ্গে আজ বিবাদ হতে পারে। মনে রাখবেন, তর্ক করে সিংহের মতো গর্জন করলে শেষে কিন্তু বিড়ালের মতো রান্নাঘরে গিয়েই লুকাতে হবে। সন্তানদের কারণে আনন্দ পাবেন। খরচ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে শেষমেশ মুড়ি খেয়ে দিন কাটাতে হবে।
কন্যা
আজ আপনার আয় দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা! হয়তো পুরোনো জিনসের পকেটে ৫০০ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হওয়ার চান্স ১০০%।
বসের সামনে কথা বলার সময় জিব একটু নিয়ন্ত্রণে রাখুন। বস মানেই ঠিক—এই নীতিতে চললে আজ দিনটা বেঁচে যাবেন।
তুলা
আজ পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হতে পারে। তারা আপনার কাছে টাকা ধার চাইবে নাকি খাওয়াতে চাইবে—সেটা আপনার গ্রহ ঠিক করবে। সম্পর্কে স্বচ্ছতা আসবে।সন্ধ্যায় প্রিয়জনের সঙ্গে সিনেমা দেখতে যান, তবে পপকর্নের দাম দেখে আবার হার্ট অ্যাটাক করবেন না!
বৃশ্চিক
আজ আপনার কপালে ‘ঘোর দুর্দিন’ লেখা নেই, তবে একটু সাবধান থাকাই ভালো। আয়ের উৎস ভালো থাকবে। আপনার কথা শুনে সবাই মুগ্ধ হবে (অথবা বিরক্ত হয়ে চলে যাবে)। আজ বাদাম বা শুকনা রুটি দান করুন, এতে অন্তত কারও পেটে খাবার জুটবে!
ধনু
আজ আপনি খুব দয়ালু হয়ে উঠতে পারেন। পাড়ার কুকুর থেকে শুরু করে অফিসের পিওন—সবাইকে সাহায্য করতে চাইবেন। কর্মক্ষেত্রে বসের নেক নজরে থাকবেন।
বেশি আবেগপ্রবণ হবেন না, আবেগ দিয়ে তো আর ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করা যায় না!
মকর
তাড়াহুড়ো করলেই আজ বিপদ! রাস্তা পার হওয়ার সময় হোক বা অফিসের মেইল পাঠানোর সময়—একটু ধীরে চলুন। ব্যবসায়িক পরিকল্পনা নিয়ে বেশি লাফালাফি করবেন না। আপনার আজ অলসতা গ্রাস করবে। বিছানা থেকে উঠতে গেলেই মনে হবে বিছানা আপনাকে জড়িয়ে ধরে বলছে, 'যেও না'!
কুম্ভ
আজ অর্থভাগ্যে তেমন কোনো বিপর্যয় নেই, কিন্তু শরীরটা নিয়ে চিন্তা আছে। পিঠের ব্যথা বা ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে—হয়তো সারা দিন রিলস দেখার ফল! চুক্তিতে সই করার সময় চশমাটা সঙ্গে রাখবেন। বন্ধুরা ডাকলে আজ এড়িয়ে চলাই মঙ্গল, না হলে বিলটা আপনার কাঁধেই পড়বে।
মীন
আপনি আজ নতুন কিছু করার ইচ্ছা অনুভব করবেন, যেমন ধরুন নতুন ডায়েট শুরু করা (যা দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে)। সন্তানের আচরণে একটু চিন্তিত হতে পারেন। যদি কারও কাছে টাকা ধার নিয়ে থাকেন, আজ তার ফোন না ধরাই ভালো। কারণ, সে টাকা ফেরত চাইতে পারে!

মেষ
আপনি আজ মানসিক শান্তিতে থাকবেন। কারণ, হয়তো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনটা চার্জে দিতে ভুলে গিয়েছিলেন! আধ্যাত্মিকতায় মন বসবে, কিন্তু মনে রাখবেন অফিসের বস কিন্তু ভগবান নন, তাই কাজে ফাঁকি দেবেন না। বন্ধুদের কাছে আজ বেশি ‘হিরোগিরি’ দেখাতে যাবেন না, মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হতে পারে।
বৃষ
আজ আপনার অর্থভাগ্যে একটু ‘ব্রেকফাস্ট’ লেগেছে, মানে খরচ বেশি। অচেনা লোক দেখলে আজ একটু দূরত্ব বজায় রাখুন, বিশেষ করে যারা বিমা বা ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করতে আসে। বাবার কথা আজ শুনে নিন, না হলে পকেট গড়ের মাঠ হতে সময় লাগবে না। পেটের দিকে একটু নজর দিন, রাস্তার চপ-শিঙাড়া আজ বিষবৎ!
মিথুন
গ্রহরা বলছে আপনার আজ ঝগড়া করার খুব ইচ্ছা হবে। কিন্তু দয়া করে তা বাড়ির লোকের ওপর প্রয়োগ করবেন না। ধৈর্য ধরুন, না হলে রাতে কিন্তু না খেয়ে শুতে হতে পারে! কথা বলার আগে দুবার ভাবুন। আপনি ভাবছেন আপনি রসিকতা করছেন, কিন্তু সামনের জন হয়তো ভাবছে আপনাকে ব্লক করবে!
কর্কট
আজ আপনার জন্য ‘শুভ’ দিন। নতুন ব্যবসার আইডিয়া মাথায় আসতে পারে, যেমন ধরুন ‘অনলাইন ধৈর্য বিক্রয় কেন্দ্র’। শেয়ারবাজারে আজ আপনার পোয়াবারো হতে পারে, তবে পকেট সামলে। বিয়ের সিদ্ধান্তে সবাই খুশি হবে, কিন্তু আপনি নিজে কি খুশি? সেটা একবার আয়নায় নিজেকে জিজ্ঞাসা করে নিন।
সিংহ
স্ত্রীর সঙ্গে আজ বিবাদ হতে পারে। মনে রাখবেন, তর্ক করে সিংহের মতো গর্জন করলে শেষে কিন্তু বিড়ালের মতো রান্নাঘরে গিয়েই লুকাতে হবে। সন্তানদের কারণে আনন্দ পাবেন। খরচ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে শেষমেশ মুড়ি খেয়ে দিন কাটাতে হবে।
কন্যা
আজ আপনার আয় দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা! হয়তো পুরোনো জিনসের পকেটে ৫০০ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হওয়ার চান্স ১০০%।
বসের সামনে কথা বলার সময় জিব একটু নিয়ন্ত্রণে রাখুন। বস মানেই ঠিক—এই নীতিতে চললে আজ দিনটা বেঁচে যাবেন।
তুলা
আজ পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হতে পারে। তারা আপনার কাছে টাকা ধার চাইবে নাকি খাওয়াতে চাইবে—সেটা আপনার গ্রহ ঠিক করবে। সম্পর্কে স্বচ্ছতা আসবে।সন্ধ্যায় প্রিয়জনের সঙ্গে সিনেমা দেখতে যান, তবে পপকর্নের দাম দেখে আবার হার্ট অ্যাটাক করবেন না!
বৃশ্চিক
আজ আপনার কপালে ‘ঘোর দুর্দিন’ লেখা নেই, তবে একটু সাবধান থাকাই ভালো। আয়ের উৎস ভালো থাকবে। আপনার কথা শুনে সবাই মুগ্ধ হবে (অথবা বিরক্ত হয়ে চলে যাবে)। আজ বাদাম বা শুকনা রুটি দান করুন, এতে অন্তত কারও পেটে খাবার জুটবে!
ধনু
আজ আপনি খুব দয়ালু হয়ে উঠতে পারেন। পাড়ার কুকুর থেকে শুরু করে অফিসের পিওন—সবাইকে সাহায্য করতে চাইবেন। কর্মক্ষেত্রে বসের নেক নজরে থাকবেন।
বেশি আবেগপ্রবণ হবেন না, আবেগ দিয়ে তো আর ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করা যায় না!
মকর
তাড়াহুড়ো করলেই আজ বিপদ! রাস্তা পার হওয়ার সময় হোক বা অফিসের মেইল পাঠানোর সময়—একটু ধীরে চলুন। ব্যবসায়িক পরিকল্পনা নিয়ে বেশি লাফালাফি করবেন না। আপনার আজ অলসতা গ্রাস করবে। বিছানা থেকে উঠতে গেলেই মনে হবে বিছানা আপনাকে জড়িয়ে ধরে বলছে, 'যেও না'!
কুম্ভ
আজ অর্থভাগ্যে তেমন কোনো বিপর্যয় নেই, কিন্তু শরীরটা নিয়ে চিন্তা আছে। পিঠের ব্যথা বা ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে—হয়তো সারা দিন রিলস দেখার ফল! চুক্তিতে সই করার সময় চশমাটা সঙ্গে রাখবেন। বন্ধুরা ডাকলে আজ এড়িয়ে চলাই মঙ্গল, না হলে বিলটা আপনার কাঁধেই পড়বে।
মীন
আপনি আজ নতুন কিছু করার ইচ্ছা অনুভব করবেন, যেমন ধরুন নতুন ডায়েট শুরু করা (যা দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে)। সন্তানের আচরণে একটু চিন্তিত হতে পারেন। যদি কারও কাছে টাকা ধার নিয়ে থাকেন, আজ তার ফোন না ধরাই ভালো। কারণ, সে টাকা ফেরত চাইতে পারে!

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নি
১৯ জানুয়ারি ২০২৩
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়...
১ ঘণ্টা আগে
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ বছর পৃথিবীর ওপর ছিল মঙ্গলগ্রহের প্রভাব। ফলে বছরটি কম-বেশি সবার জন্যই খারাপ গেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি, সম্পর্কে ভাঙন, সংসারে অশান্তি, প্রিয়জনের মৃত্যু, ব্যবসায়ে লোকসান—এসব ঘটনা কোনো না কোনোভাবে আমাদের প্রভাবিত করেছে পুরো বছর। এ বছর লাল রঙের পোশাক যতটা এড়িয়ে যাওয়া যায়, সে পরামর্শই...
৩ ঘণ্টা আগে
ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ...
১৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

‘বছরটা খুব একটা ভালো গেল না’! ২০২৫ সাল নিয়ে এমন ভাবনা আছে অনেকের। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ বছর পৃথিবীর ওপর ছিল মঙ্গলগ্রহের প্রভাব। ফলে বছরটি কম-বেশি সবার জন্যই খারাপ গেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি, সম্পর্কে ভাঙন, সংসারে অশান্তি, প্রিয়জনের মৃত্যু, ব্যবসায়ে লোকসান—এসব ঘটনা কোনো না কোনোভাবে আমাদের প্রভাবিত করেছে পুরো বছর। এ বছর লাল রঙের পোশাক যতটা এড়িয়ে যাওয়া যায়, সে পরামর্শই দিয়েছিলেন অনেকেই।
আর কিছুদিন পরই ২০২৬ সালে প্রবেশ করতে যাচ্ছি আমরা। নতুন বছর সবার জন্যই রোমাঞ্চকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানলে হয়তো খুশি হবেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় হয়তো পড়েও ফেলেছেন যে, ২০২৬ সালকে সম্ভাবনার বছর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সংখ্যাতত্ত্ব অনুসারে ২০২৬ সাল হলো সূর্যের বছর। সূর্য আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, নতুন শুরু, শক্তি এবং কর্তৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি একটি চমৎকার বছর হতে চলেছে, যা ব্যক্তিগত ও পেশাদার উন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং নতুন শুরু দিকনির্দেশনা দেবে বলে আশাবাদী জ্য়োতিষশাস্ত্র।

এ শাস্ত্র মতে, সূর্যের বছরে মানুষ জীবনে নতুন কিছু অন্বেষণ করবে এবং তাদের ভাগ্য গঠনের দায়িত্ব নেবে। এ বছর আপনার জীবন তার গন্তব্য দেখিয়ে দেবে, জীবনে এগিয়ে যেতে, নেতৃত্ব নিতে এবং নেতৃত্বদানের স্থান বুঝতে সাহায্য করবে।
সূর্যের রাজত্বের বছরে দৈনন্দিন জীবনযাপনে এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন, যেগুলো জীবনে অপার শক্তি ও প্রাচুর্য হয়ে ধরা দেয়।
সৌর চক্রকে শক্তিশালী করুন
সৌর চক্র সূর্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। সুফল পেতে আপনাকে ২০২৬ সালে এই বিশেষ চক্রের ওপর কাজ করতে হবে। আপনি কীভাবে এ চক্র উন্নত করতে পারেন? সে পরামর্শ রইল এখানে।
প্রতিদিন গায়ে রোদ লাগান। দুপুর ১২টার আগে সূর্যের আলোতে বসুন, এরপর নয়। এতে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি তো পূরণ হবেই, পাশাপাশি কাজকর্মে উদ্যমী হয়ে উঠবেন আপনি। ঠান্ডা বা সাইনাসের মতো অসুখ যাঁদের লেগেই থাকে, তাঁরাও সেরে উঠবেন। সূর্যের আলো মন ফুরফুরে রাখতে সাহায্য় করে। ফলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কটাও জোরালো হবে।
সকালে নরম সূর্যের আলোতে বসে যোগব্যায়াম করুন। ফিট থাকতে তো বটেই, মুড ভালো রাখতেও এটি জরুরি। হাতে সময় কম থাকায় সূর্য নমস্কার আসনটিই বেছে নিন। এতে একের ভেতর অনেকগুলো আসন সেরে ফেলা যায়। এতে আপনার সৌরশক্তিও বৃদ্ধি পাবে।
সূর্যকে বলা হয় গ্রহদের রাজা। তাই পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কটা এ বছর আরেকটু ভালো করার চেষ্টা করুন। তাঁদের যত্ন নিন, সময় দিন।

দৈনন্দিন জীবনে যা মেনে চলতে পারেন
সকালে উঠে জানালা খুলে পর্দা সরিয়ে দিন। প্রতিটি ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে দিন। এতে করে ঘরের স্যাঁতসেঁতে ভাব কেটে যাবে ও পোকামাকড়ের উপদ্রবও কমবে।
২০২৬-এ রান্নাঘর ও ডাইনিং টেবিলে তামার প্লেট, বাটি, গ্লাস, জগ, হাঁড়ি ব্যবহার করুন। তামা হলো সূর্যগ্রহের ধাতু, যা শক্তি ও সাহসের প্রতিনিধিত্ব করে। সারা রাত তামার পাত্রে পানি রেখে প্রতিদিন সকালে তা পান করার চেষ্টা করুন। এতে শরীরে শক্তি সঞ্চার হবে ও বাড়বে জীবনীশক্তিও।
২০২৬-এ সূর্যের রঙের পোশাক পরুন। কী সেই রং? হলুদ ও সোনালি। এই রং দেখতে যেমন উজ্জ্বল, তেমনি মনও ফুরফুরে রাখবে।
রান্নায় জাফরান ব্যবহার করুন এবং ঘরে ওয়ার্ম বাল্ব ব্যবহার করুন। প্রতিটি ঘরে ওয়ার্ম বাল্ব ব্যবহার করা সম্ভব না হলে বাড়ির সেন্টার পয়েন্টে উষ্ণ আলো ব্যবহার করুন।
বাড়ির সেন্টার পয়েন্টে বেশি আসবাব রাখবেন না। অপ্রয়োজনীয় ও অব্যবহৃত জিনিস দান করে দিন বা বিক্রি করে ফেলুন।
প্রতিদিন ঘর মোছার সময় পানিতে লবণ মিশিয়ে তারপর মুছে নিন। ঘরে তরতাজা ভাব বিরাজ করবে। আর ঘর পরিচ্ছন্ন থাকলে কাজকর্মেও মন বসবে। তাহলেই না সবকিছু ঠিকঠাক চলবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

‘বছরটা খুব একটা ভালো গেল না’! ২০২৫ সাল নিয়ে এমন ভাবনা আছে অনেকের। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ বছর পৃথিবীর ওপর ছিল মঙ্গলগ্রহের প্রভাব। ফলে বছরটি কম-বেশি সবার জন্যই খারাপ গেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি, সম্পর্কে ভাঙন, সংসারে অশান্তি, প্রিয়জনের মৃত্যু, ব্যবসায়ে লোকসান—এসব ঘটনা কোনো না কোনোভাবে আমাদের প্রভাবিত করেছে পুরো বছর। এ বছর লাল রঙের পোশাক যতটা এড়িয়ে যাওয়া যায়, সে পরামর্শই দিয়েছিলেন অনেকেই।
আর কিছুদিন পরই ২০২৬ সালে প্রবেশ করতে যাচ্ছি আমরা। নতুন বছর সবার জন্যই রোমাঞ্চকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানলে হয়তো খুশি হবেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় হয়তো পড়েও ফেলেছেন যে, ২০২৬ সালকে সম্ভাবনার বছর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সংখ্যাতত্ত্ব অনুসারে ২০২৬ সাল হলো সূর্যের বছর। সূর্য আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, নতুন শুরু, শক্তি এবং কর্তৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি একটি চমৎকার বছর হতে চলেছে, যা ব্যক্তিগত ও পেশাদার উন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং নতুন শুরু দিকনির্দেশনা দেবে বলে আশাবাদী জ্য়োতিষশাস্ত্র।

এ শাস্ত্র মতে, সূর্যের বছরে মানুষ জীবনে নতুন কিছু অন্বেষণ করবে এবং তাদের ভাগ্য গঠনের দায়িত্ব নেবে। এ বছর আপনার জীবন তার গন্তব্য দেখিয়ে দেবে, জীবনে এগিয়ে যেতে, নেতৃত্ব নিতে এবং নেতৃত্বদানের স্থান বুঝতে সাহায্য করবে।
সূর্যের রাজত্বের বছরে দৈনন্দিন জীবনযাপনে এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন, যেগুলো জীবনে অপার শক্তি ও প্রাচুর্য হয়ে ধরা দেয়।
সৌর চক্রকে শক্তিশালী করুন
সৌর চক্র সূর্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। সুফল পেতে আপনাকে ২০২৬ সালে এই বিশেষ চক্রের ওপর কাজ করতে হবে। আপনি কীভাবে এ চক্র উন্নত করতে পারেন? সে পরামর্শ রইল এখানে।
প্রতিদিন গায়ে রোদ লাগান। দুপুর ১২টার আগে সূর্যের আলোতে বসুন, এরপর নয়। এতে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি তো পূরণ হবেই, পাশাপাশি কাজকর্মে উদ্যমী হয়ে উঠবেন আপনি। ঠান্ডা বা সাইনাসের মতো অসুখ যাঁদের লেগেই থাকে, তাঁরাও সেরে উঠবেন। সূর্যের আলো মন ফুরফুরে রাখতে সাহায্য় করে। ফলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কটাও জোরালো হবে।
সকালে নরম সূর্যের আলোতে বসে যোগব্যায়াম করুন। ফিট থাকতে তো বটেই, মুড ভালো রাখতেও এটি জরুরি। হাতে সময় কম থাকায় সূর্য নমস্কার আসনটিই বেছে নিন। এতে একের ভেতর অনেকগুলো আসন সেরে ফেলা যায়। এতে আপনার সৌরশক্তিও বৃদ্ধি পাবে।
সূর্যকে বলা হয় গ্রহদের রাজা। তাই পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কটা এ বছর আরেকটু ভালো করার চেষ্টা করুন। তাঁদের যত্ন নিন, সময় দিন।

দৈনন্দিন জীবনে যা মেনে চলতে পারেন
সকালে উঠে জানালা খুলে পর্দা সরিয়ে দিন। প্রতিটি ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে দিন। এতে করে ঘরের স্যাঁতসেঁতে ভাব কেটে যাবে ও পোকামাকড়ের উপদ্রবও কমবে।
২০২৬-এ রান্নাঘর ও ডাইনিং টেবিলে তামার প্লেট, বাটি, গ্লাস, জগ, হাঁড়ি ব্যবহার করুন। তামা হলো সূর্যগ্রহের ধাতু, যা শক্তি ও সাহসের প্রতিনিধিত্ব করে। সারা রাত তামার পাত্রে পানি রেখে প্রতিদিন সকালে তা পান করার চেষ্টা করুন। এতে শরীরে শক্তি সঞ্চার হবে ও বাড়বে জীবনীশক্তিও।
২০২৬-এ সূর্যের রঙের পোশাক পরুন। কী সেই রং? হলুদ ও সোনালি। এই রং দেখতে যেমন উজ্জ্বল, তেমনি মনও ফুরফুরে রাখবে।
রান্নায় জাফরান ব্যবহার করুন এবং ঘরে ওয়ার্ম বাল্ব ব্যবহার করুন। প্রতিটি ঘরে ওয়ার্ম বাল্ব ব্যবহার করা সম্ভব না হলে বাড়ির সেন্টার পয়েন্টে উষ্ণ আলো ব্যবহার করুন।
বাড়ির সেন্টার পয়েন্টে বেশি আসবাব রাখবেন না। অপ্রয়োজনীয় ও অব্যবহৃত জিনিস দান করে দিন বা বিক্রি করে ফেলুন।
প্রতিদিন ঘর মোছার সময় পানিতে লবণ মিশিয়ে তারপর মুছে নিন। ঘরে তরতাজা ভাব বিরাজ করবে। আর ঘর পরিচ্ছন্ন থাকলে কাজকর্মেও মন বসবে। তাহলেই না সবকিছু ঠিকঠাক চলবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নি
১৯ জানুয়ারি ২০২৩
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়...
১ ঘণ্টা আগে
আজ মানসিক শান্তিতে থাকবেন। কারণ, হয়তো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনটা চার্জে দিতে ভুলে গিয়েছিলেন! আধ্যাত্মিকতায় মন বসবে, কিন্তু মনে রাখবেন অফিসের বস কিন্তু ভগবান নন, তাই কাজে ফাঁকি দেবেন না। বন্ধুদের কাছে আজ বেশি ‘হিরোগিরি’ দেখাতে যাবেন না, মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগে
ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ...
১৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যেখানে শর্করাজাতীয় খাবার বিপাকের জন্য শরীরে যতটুকু ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, ততটুকু থাকে না। আপনারা জেনে থাকবেন, ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়—টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ইনসুলিন একেবারেই থাকে না। তাই রোগ ধরা পড়ার সময় থেকে ইনসুলিন নিতে হয়। আর টাইপ-২ ডায়াবেটিসে শরীরে ইনসুলিন থাকে, কিন্তু ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের জন্য তা কাজ করতে পারে না। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগে শর্করাজাতীয় খাবারের বিপাকে সমস্যা হয়, তাই আমরা চিকিৎসকেরা এ ধরনের খাবার; যেমন চিনি, মিষ্টি, ভাত, মিষ্টি ফল, মধু ইত্যাদি পরিমাণমতো খেতে বলি। ডা. মাজহারুল হক তানিম, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ
কেন খাবারের সময় মেনে চলা জরুরি
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একই সময়ে নিয়মিত খাবার ও প্রয়োজন অনুযায়ী হালকা নাশতা খেলে রক্তে শর্করা তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকে এবং শরীরের শক্তির মাত্রাও বজায় থাকে। বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এবং সেই সব টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণ করেন।
খাবার বাদ দিলে কী সমস্যা হয়
খাবার না খেলে অনেক সময় পরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। এতে রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। আবার নিয়মিত খাবার না খেলে রাতে ঘুমের মধ্যেও রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যাকে বলা হয় রাতের হাইপোগ্লাইসেমিয়া। এটি বিপজ্জনক হতে পারে; কারণ, ঘুমের মধ্যে অনেক সময় বোঝা যায় না কী হচ্ছে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করা কমে গেলেও কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। একে বলা হয় হাইপোগ্লাইসেমিয়া আন অ্যাওয়ারনেস। এটি গাড়ি চালানো বা ব্যায়ামের সময় ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সকালের নাশতা গুরুত্বপূর্ণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সকালের নাশতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর নাশতা দিনের শুরুতে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং সারা দিন শক্তি ধরে রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে ভালোভাবে খেয়ে দুপুর ও রাতের খাবার তুলনামূলক হালকা রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ইনসুলিনের প্রয়োজনও কমে। অন্যদিকে, নাশতা বাদ দিলে বিকেল ও রাতে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ পরে সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন।
দুপুর ও রাতের খাবার
দুপুর ও রাতের খাবারে প্রতিদিন প্রায় একই পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রাখা ভালো। এতে রক্তে শর্করার ওঠানামা কম হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খুব দেরিতে রাতের খাবার খাওয়া উচিত নয়। ঘুমানোর খুব কাছাকাছি সময়ে রাতের খাবার খেলে ওজন এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নাশতার প্রয়োজন
সব ডায়াবেটিস রোগীর নিয়মিত নাশতার প্রয়োজন হয় না। রক্তে শর্করার মাত্রা ও ক্ষুধার ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। তবে ইনসুলিন গ্রহণকারী বা যাঁদের রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে হালকা নাশতা উপকারী হতে পারে। রাতে রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলে ঘুমের আগে অল্প নাশতা উপকারী হতে পারে।
ব্যায়াম ও খাবারের সময়
খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পর হালকা ব্যায়াম করলে রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করে; বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে। তবে যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ নেন, তাঁদের ব্যায়ামের আগে বা পরে সামান্য খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। ব্যায়ামের সময় পেশি বেশি গ্লুকোজ ব্যবহার করে, ফলে রক্তে শর্করা কমে যেতে পারে। তাই ব্যায়ামের সময় খাবার ও ইনসুলিনের সমন্বয় চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত।
নিজের জন্য সঠিক পরিকল্পনা কীভাবে করবেন
ডায়াবেটিসে খাবারের সময় ও ধরন ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। তাই নিজের শরীরের প্রতিক্রিয়া বুঝে পরিকল্পনা করা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো—
চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে খাবারের সময়সূচি ঠিক করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
সূত্র: হেলথ

ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যেখানে শর্করাজাতীয় খাবার বিপাকের জন্য শরীরে যতটুকু ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, ততটুকু থাকে না। আপনারা জেনে থাকবেন, ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়—টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ইনসুলিন একেবারেই থাকে না। তাই রোগ ধরা পড়ার সময় থেকে ইনসুলিন নিতে হয়। আর টাইপ-২ ডায়াবেটিসে শরীরে ইনসুলিন থাকে, কিন্তু ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের জন্য তা কাজ করতে পারে না। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগে শর্করাজাতীয় খাবারের বিপাকে সমস্যা হয়, তাই আমরা চিকিৎসকেরা এ ধরনের খাবার; যেমন চিনি, মিষ্টি, ভাত, মিষ্টি ফল, মধু ইত্যাদি পরিমাণমতো খেতে বলি। ডা. মাজহারুল হক তানিম, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ
কেন খাবারের সময় মেনে চলা জরুরি
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একই সময়ে নিয়মিত খাবার ও প্রয়োজন অনুযায়ী হালকা নাশতা খেলে রক্তে শর্করা তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকে এবং শরীরের শক্তির মাত্রাও বজায় থাকে। বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এবং সেই সব টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণ করেন।
খাবার বাদ দিলে কী সমস্যা হয়
খাবার না খেলে অনেক সময় পরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। এতে রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। আবার নিয়মিত খাবার না খেলে রাতে ঘুমের মধ্যেও রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যাকে বলা হয় রাতের হাইপোগ্লাইসেমিয়া। এটি বিপজ্জনক হতে পারে; কারণ, ঘুমের মধ্যে অনেক সময় বোঝা যায় না কী হচ্ছে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করা কমে গেলেও কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। একে বলা হয় হাইপোগ্লাইসেমিয়া আন অ্যাওয়ারনেস। এটি গাড়ি চালানো বা ব্যায়ামের সময় ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সকালের নাশতা গুরুত্বপূর্ণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সকালের নাশতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর নাশতা দিনের শুরুতে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং সারা দিন শক্তি ধরে রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে ভালোভাবে খেয়ে দুপুর ও রাতের খাবার তুলনামূলক হালকা রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ইনসুলিনের প্রয়োজনও কমে। অন্যদিকে, নাশতা বাদ দিলে বিকেল ও রাতে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ পরে সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন।
দুপুর ও রাতের খাবার
দুপুর ও রাতের খাবারে প্রতিদিন প্রায় একই পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রাখা ভালো। এতে রক্তে শর্করার ওঠানামা কম হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খুব দেরিতে রাতের খাবার খাওয়া উচিত নয়। ঘুমানোর খুব কাছাকাছি সময়ে রাতের খাবার খেলে ওজন এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নাশতার প্রয়োজন
সব ডায়াবেটিস রোগীর নিয়মিত নাশতার প্রয়োজন হয় না। রক্তে শর্করার মাত্রা ও ক্ষুধার ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। তবে ইনসুলিন গ্রহণকারী বা যাঁদের রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে হালকা নাশতা উপকারী হতে পারে। রাতে রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলে ঘুমের আগে অল্প নাশতা উপকারী হতে পারে।
ব্যায়াম ও খাবারের সময়
খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পর হালকা ব্যায়াম করলে রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করে; বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে। তবে যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ নেন, তাঁদের ব্যায়ামের আগে বা পরে সামান্য খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। ব্যায়ামের সময় পেশি বেশি গ্লুকোজ ব্যবহার করে, ফলে রক্তে শর্করা কমে যেতে পারে। তাই ব্যায়ামের সময় খাবার ও ইনসুলিনের সমন্বয় চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত।
নিজের জন্য সঠিক পরিকল্পনা কীভাবে করবেন
ডায়াবেটিসে খাবারের সময় ও ধরন ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। তাই নিজের শরীরের প্রতিক্রিয়া বুঝে পরিকল্পনা করা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো—
চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে খাবারের সময়সূচি ঠিক করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
সূত্র: হেলথ

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নি
১৯ জানুয়ারি ২০২৩
লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়...
১ ঘণ্টা আগে
আজ মানসিক শান্তিতে থাকবেন। কারণ, হয়তো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনটা চার্জে দিতে ভুলে গিয়েছিলেন! আধ্যাত্মিকতায় মন বসবে, কিন্তু মনে রাখবেন অফিসের বস কিন্তু ভগবান নন, তাই কাজে ফাঁকি দেবেন না। বন্ধুদের কাছে আজ বেশি ‘হিরোগিরি’ দেখাতে যাবেন না, মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগে
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ বছর পৃথিবীর ওপর ছিল মঙ্গলগ্রহের প্রভাব। ফলে বছরটি কম-বেশি সবার জন্যই খারাপ গেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি, সম্পর্কে ভাঙন, সংসারে অশান্তি, প্রিয়জনের মৃত্যু, ব্যবসায়ে লোকসান—এসব ঘটনা কোনো না কোনোভাবে আমাদের প্রভাবিত করেছে পুরো বছর। এ বছর লাল রঙের পোশাক যতটা এড়িয়ে যাওয়া যায়, সে পরামর্শই...
৩ ঘণ্টা আগে