ইশতিয়াক হাসান

একটা গির্জার ঘড়ি বেজে উঠল দূর থেকে। সেন্ট পলসের ঘড়ি। সাড়ে এগারোটা বাজল...কাছাকাছি একটা কুকুর ডেকে উঠল। আর ঠিক সেই মুহূর্তে...একটা লোক ডান দিকের পাঁচিল থেকে লাফিয়ে ফেলুদার ওপর পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা। ফেলুদার হাতের বাক্সটা আর হাতে নেই। সে হাত খালি করে এক ঝটকায় ঘাড় থেকে প্রথম লোকটাকে ফেলে তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।....'
বুঝতেই পারছেন আগাগোড়া রহস্য-রোমাঞ্চে ভরপুর ফেলুদার একটি কাহিনির কিছুটা অংশ তুলে দিয়েছি। বইয়ের নামটা কী? জানা না থাকলে, লেখাটা শেষ অবধি অপেক্ষা করুন।
তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। আব্বুর চাকরিসূত্রে থাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ডাক্তার দেখাতে কিংবা ছুটিছাটায় আসা হতো ঢাকায়। বেইলি রোডে খালার বাসা ছিল সাময়িক আস্তানা হিসেবে ভারি প্রিয়। কারণ, দুই খালাতো ভাই নাহিদ ভাইয়া, আর জাহিদ। ওদের সঙ্গে আচ্ছাসে দুষ্টুমির সুযোগ মিলত।
নাহিদ ভাইয়া বইয়রে পোকা। তাঁর বইয়ের আলমারিতে হত্যাপুরী, বাক্স রহস্য, গোরস্তানে সাবধান, দার্জিলিং জমজমাট, গ্যাংটকে গণ্ডোগল বইগুলো দেখতাম। কৌতূহলও জাগত মনে। তবে তখনও গোয়েন্দা বইয়ের দুনিয়া নিতান্ত অপরিচিত। আমার দৌড় রূপকথা আর কমিকস পর্যন্ত।
পরের বছর। ক্লাস ফোরে পড়ি। তিন গোয়েন্দা দিয়ে রহস্য-রোমাঞ্চ জগতে পদার্পণ হয়েছে এরই মধ্যে। একদিন নাহিদ ভাইয়ার আলমারি থেকে কি মনে হতে সাহস করে হত্যাপুরী বইটা নিলাম। পড়তে পড়তে খুন-জখম-সাগর–সৈকতময় এক কেসে ফেলুদার সঙ্গে জড়িয়ে পড়লাম আমিও। ব্যাস, পরের কয়েকটা দিন ফেলুদায় বুঁদ হয়ে রইলাম।
ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকিহিনি, এককথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণ কাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে। এদের বাস্তব অস্তিত্ব নেই—এটা বিশ্বাস করতে মন চাইত না। এখনো মানতে পারি না।
এর পর থেকে ফেলুদা পড়েই যাচ্ছি। নতুন বই কিনেছি ঢাকার নিউমার্কেট থেকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লাইব্রেরি থেকে, কলেজে ওঠার পর নীলক্ষেত থেকে। একই বই কয়েকবারও কিনেছি, পড়েছি।
চেহারাটা ভাসছে লিখতে বসে। সাতাশ বছরের এক তরুণ, বয়স যার আটকে আছে। উচ্চতা ছয় ফুট দুই ইঞ্চি। ঠোঁটে চারমিনার। মার্শাল আর্টে দক্ষ ফেলুদা, সঙ্গের ৩২ কোল্ট রিভলবার ভয়ানক সব অপরাধীদের সঙ্গে লড়াইয়ে বাড়তি সু্বিধা দেয়। তবে তাঁর মূল অস্ত্র ধারালো মগজটা। দুর্দান্ত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা ব্যবহার করে জটিল সব রহস্য সমাধান করে অবলীলায়।
একটা বই পড়ি, নতুন একটা দুয়ার খুলে যায় আমার সামনে। রহস্য-রোমাঞ্চের প্রতি মারাত্মক একটা টান ছিল ছোটবেলায়। ফেলুদা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় সেই মনটাকেও উন্মাতাল করে তুলল।
গ্যাংটকে গন্ডগোল পড়তে পড়তে বরফঢাকাও শহরটিতে না গিয়েও যেন যাওয়া হয়ে গেল আমার। সিকিমের রাজধানীটিতে সশরীরে হাজিরা দিতে পারিনি এখনো, তবে ফেলুদা বা শ্রী প্রদোষচন্দ্র মিত্রর ট্রেইল অনুসরণ করে গিয়েছি অনেক জায়গাতেই।
‘রাজেনবাবুকে রোজ বিকেলে ম্যাল্-এ আসতে দেখি। মাথার চুল সব পাকা, গায়ের রং ফরসা, মুখের ভাব হাসিখুশি। পুরনো নেপালি জিনিস-টিনিসের যে দোকানটা আছে, সেটায় কিছুক্ষণ কাটিয়ে বাইরে এসে বেঞ্চিতে আধঘণ্টার মতো বসে সন্ধে হব-হব হলে জলাপাহাড়ে বাড়ি ফিরে যান।’ ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’র শুরুটা এভাবেই, দার্জিলিংয়ে। ওটাই ছিল ফেলুদার প্রথম গোয়েন্দা কাহিনি। সন্দেশ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। ডিসেম্বর ১৯৬৫ থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ তক। তবে আমার দার্জিলিংকে চেনা শুরু ফেলুদার ‘দার্জিলিং জমজমাট’ বইটি দিয়ে। কারণ ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির আগেই আমার পড়া হয়ে যায় দার্জিলিং জমজমাট।
তেমনি তোপসের মতো আমিও কিউরিও যে পুরোনো দুষ্প্রাপ্য জিনিস, সেটা শিখি ফেলুদার কাছ থেকেই। তাই ২০১৭ সালে প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, সিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নিই।
তবে আমার ফেলুদাকে অনুসরণের শুরু আরও আগে। সালটা ২০১৪, জানুয়ারির ৭ তারিখ রাতে স্ত্রী পুনমসহ মধুচন্দ্রমিায় পৌঁছাই কাঠমাণ্ডু। নেপাল আমাকে টেনেছিল, সেই ক্লাস সেভেনে পড়ায় সময়। তখন ফেলুদার যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডু পড়েই বলা চলে হিমালয়রাজ্যের শহরটা মনে গেঁথে যায়। এক খুনির পিছু নিয়ে তোপসে আর লালমোহন গাঙ্গুলীসমতে প্রাচীন শহরটিতে হাজির হয়েছিলেন ফেলুদা। তারপর চিরশত্রু মগনলাল মেঘরাজের সঙ্গে টক্কর। নেপালের রাজধানী শহরে যাওয়ার বড় সাধ জাগে কিশোর মনে। বহু বছর বাদে সেটা পূরণ হয়।
একইভাবে ২০১৮ সালে ঋষিকেষের রামঝুলা-লছমন ঝুলা দেখতে যাওয়ার পেছনেও ওই ফেলুদাই। লছমন ঝুলার কথা প্রথম জানতে পারি ফেলুদার ‘বাদশাহী আংটি’ পড়ে। পাহাড়-অরণ্যময় জায়গা না হয়েও ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে ভারতের কলকাতার প্রতি আমার টানটা ফেলুদা এবং কলেজ স্ট্রিটের কল্যাণেই।
তবে গতবার কলকাতায় গিয়ে গোরস্তানে সাবধানের সেই পার্ক স্ট্রিট সিমেট্রিতে একবার ঢুঁ মারতে না পারার যন্ত্রণাটা পোড়াচ্ছে এখনো। আশ্চর্য ব্যাপার ফেলুদার ওই বইয়ের স্মৃতি আমার মনে ভেসে ওঠে এখনো কোনো গোরস্তানে গেলে। বিশেষ করে ওয়ারি এবং বান্দুরার খ্রিষ্টান গোরস্তানটায় যখন গিয়েছি, অনুভূতিটা প্রকট হয়ে উঠেছে। আবার গত বছর বরিশাল শহরের গাছগাছালিময় একটি মুসলিম কবরস্তানে গিয়েও কেমন ফেলুদা ফেলুদা মনে হচ্ছিল নিজেকে।
আমার ধারণা রহস্য-রোমাঞ্চ-ইতিহাসের রাজ্যে ঢুঁ মারার পাশাপাশি, ভারতের জঙ্গল-পাহাড়-সৈকত-গ্রাম-কলকাতায় ইচ্ছেমতো চষে বেড়ানোর সুযোগ পাওয়াতেই বেশি করে মজেছি প্রদোষ চন্দ্র মিত্রর বইগুলোতে। আমার ভ্রমণ প্রিয় হয়ে ওঠার পেছনেও তাই ফেলুদা, মায় সত্যজিতের অবদান কম-বেশি আছেই।
প্রদোষচন্দ্র মিত্র একা নয়। আরও কত চরিত্র মিলে আশ্চর্য ও এক আকর্ষণীয় রূপ প্রাপ্তি। তোপসে, অর্থাৎ তপেশরঞ্জন মিত্রর কথা বলতে হবে সবার আগে। একেবারে শুরু থেকেই যে প্রিয় গোয়েন্দার সঙ্গে আছে, তাঁর খুড়তুতো ভাইটি। তাঁর জবানিতেই ফেলুদার কাহিনিগুলো জানতে পারি। তা ছাড়া যখন ফেলুদা পড়া শুরু করি, তোপসের জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেওয়াটা তখন অনেক সহজ ছিল।
সোনার কেল্লায় ওই যে লালমোহন গাঙ্গুলির সঙ্গে পরিচয় হলো, তারপর থেকে ফেলুদার প্রতিটি বইয়ের আশ্চর্য এক চাটনি হয়ে উঠলেন রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যিক জটায়ু। টানটান উত্তেজনায় ভরা রহস্যকাহিনিগুলোয় জটায়ুর অদ্ভুত, হাস্যরসাত্মক কাণ্ড-কীর্তি যেন আনন্দময় রিলিফ। ফেলুদা পড়তে পড়তে আরও কত চরিত্র যে আপন হয়ে গেল আমার! দুর্ধর্ষ মগনলাল মেঘরাজ, জীবন্ত জ্ঞানকোষ সিধু জ্যাঠা, ছিন্নমস্তার অভিশাপের দুর্ধর্ষ কারাণ্ডিকার, ধাঁধাপাগল মহেশ চৌধুরী, বাদশাহী আংটির বনবিহারী বাবু, সোনার কেল্লার মুকুলসহ কত কত চরিত্র লিখতে বসে চোখের সামনে চলে আসছে। সাধারণত কোনো বই পড়তে গেলে চরিত্রগুলোর চেহারা-ছবি নিজের মতো করে তৈরি করে নিই মনে মনে। তবে এ ক্ষেত্রে সত্যজিতের আঁকায় যে সাদাকালো চেহারাগুলো পেয়েছি, সেগুলো প্রভাব বিস্তার করেছে মনের ওপর বড় বেশি।
আশ্চর্য ব্যাপার এই আধবুড়ো বয়সেও ফেলুদা আমাকে টানে। এখনো হাতের কাছে মনের মতো বই না পেলে বুকশেলফের ভেতরের নির্দিষ্ট একটি তাক চাবি দিয়ে খুলে বের করে আনি জয় বাবা ফেলুনাথ কিংবা গ্যাংটকে গণ্ডগোল। তারপর বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে হারিয়ে যাই প্রিয় ফেলুদার সঙ্গে।
প্রত্যেকটি শুরুরই কোনো না কোনো অনুপ্রেরণা থাকে। ফেলুদার জন্মটা যে শার্লক হোমসে অনুপ্রাণিত হয়ে বুঝে নিতে কষ্ট হয় না। সত্যজিৎ ফেলুদার গুরু হিসেবে বারবারই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন হোমসকে। এমনকি ফেলুদাকে ঘুরিয়ে এনেছেন তাঁর গুরু হোমসের বেকার স্ট্রিট থেকে। শুধু তাই নয়, সত্যজিৎ রায় ফেলুদার আস্তানা হিসাবে ২২১ বি বেকার স্ট্রিটের অদলেই হয়তো দেখিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার ২১ রজনী সেন রোডকে। মজার ঘটনা ২২১ বি নামে বাড়ির কোনো অস্তিত্ত্ব যেমন নেই, তেমনি রজনী সেন রোড থাকলেও ২১ নম্বর বাড়ির খোঁজ মেলেনি সেখানে।
এবার ফেলুদা নিয়ে কিছু তথ্য দিয়ে দিচ্ছি ঝটপট। ফেলুদা চরিত্রটির জন্ম যেন অনেকটা হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষুরধার গোয়েন্দাটির স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়ের একটি লাল খেরো খাতা ছিল। ওখানে নিজের গল্পগুলোর খসড়া লিখতেন। খসড়া লেখার জন্য আরও বেশ কয়েকটি খাতাও ছিল। কিন্তু কী আশ্চর্য! ১৯৬৫ সালের আগে কোথাও ফেলুদা চরিত্রটি সম্পর্কে কিছুই ছিল না। ১৯৬৫ সালে লাল খেরো খাতার তৃতীয় পাতায় হঠাৎ করেই এই গোয়েন্দার দেখা মেলে।
তারপর তো ১৯৬৫ সালে সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি দিয়ে আবির্ভাব। তবে ফেলুদার প্রথম উপন্যাস বাদশাহী আংটি, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বই আকারে যেটি বের হয় ১৯৬৯-এ। সত্যজিৎ সম্ভবত নিজেও ভাবেননি এভাবে বাঙালি পাঠকের মন জয় করে নেবে ফেলুদা। সিরিজটির জনপ্রিয়তা এতই তুঙ্গে ছিল যে, বাদশাহী আংটির পর থেকে ফি বছরই বলা চলে গোয়েন্দাটিকে নিয়ে উপন্যাস, না হয় গল্প; কিছু না কিছু লিখেছেন সত্যজিৎ। ১৯৯২ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রবল জনপ্রিয় এই গোয়েন্দাকে নিয়ে সত্যজিৎ লেখেন ৩৫টি সম্পূর্ণ গল্প-উপন্যাস। এ ছাড়া শেষ হয়নি এমন কয়কেটি পাণ্ডুলিপিও ছিল।

সত্যজিৎ রায় মারা যাওয়ার কয়েক বছর পরের ঘটনা। চট্টগ্রামে বেড়াতে গিয়েছি। আবারও সেই নাহিদ ভাইয়াদের বাসা। ওর বাবা তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। নিউমার্কেটে গেলাম সবাই মিলে। দুটো বই কিনলাম। এর একটা রবার্টসনের রুবি। স্পষ্ট মনে আছে, বইটি কেনার সময় বিষাদে ছেয়ে গিয়েছিল মনটা, কারণ সত্যজিৎ ততদিনে দুনিয়া ছেড়ে গিয়েছেন। আমার সঙ্গে অনেক পাঠকই একমত হবেন, বইটি ফেলুদা হিসেবে খুব আহমরি কিছু হয়নি। জানামতে ওটাই ফেলুদার পূর্ণাঙ্গ শেষ উপন্যাস। কেন এই ছন্দপতন, তা আজও আমার কাছে এক রহস্য।
রবার্টসনের রুবি কেনার সময়, কিংবা পরে একটা চিন্তা বারবারই উদয় হয়েছে মনে। আহ্, সত্যজিৎ যদি অন্তত আরও পাঁচটা বছর বাঁচতেন! গোটা আটেক ফেলুদা, দুই-তিনটা শঙ্কু কিংবা একটা তাড়ীনিখুড়োর বই নিঃসন্দেহে পেয়ে যেতাম। বড় স্বার্থপর চিন্তা! কী বলব, বলুন! সত্যজিতের এই অমর সৃষ্টিগুলো যে এখনো মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
ফেলুদাকে নিয়ে হয়ছে বেশ কয়েকটি সিনেমা, হালফিল ওয়েব সিরিজও। এ ব্যাপারে বেশি কিছু লিখতে চাই না। তবে পর্দায় ফেলুদা হিসেবে আমার প্রথম পছন্দ সব্যসাচী চক্রবর্তী। যদিও চেহারাটা শুরুতে মোটেই ফেলুদাকে যেভাবে মনে মনে কল্পনা করেছি, তার সঙ্গে যায়নি। তবে সব্যসাচীর অভিনয়ে মুগ্ধ হই।
প্রথম ফেলুদা হিসেবে দেখেছি কিন্তু সৌমিত্রকেই। ১৯৭৪ সালে, সোনার কেল্লা দিয়ে তাঁর আবির্ভাব। চেহারার কথা বললে কল্পনার ফেলুদার সঙ্গে তাঁর মিলই পেয়েছি বেশি। হবে নাই বা কেন, আমার জানামতে সত্যজিৎ ফেলুদাকে বইয়ে এঁকেছিলেন সৌমিত্রকে মাথায় রেখেই। ফেলুদা হিসেবে সৌমিত্রের অভিনয় ফেলুদার স্রষ্টার কাছে কিন্তু ছিল দশে–দশই। ওপার বাংলার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আমার প্রিয় অভিনেতা হয়ে ওঠার শুরু সেই তোপসে দিয়েই।
শুরুতে যে বইটার কাহিনি দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেটার নামটা বলে দিচ্ছি, যারা জানেন না তাঁদের জন্য, বাক্স রহস্য। ফেলুদার গল্প-উপন্যাস খুব একটা পড়েননি, তাঁদের বলছি ফেলুদা সমগ্র না কিনে আলাদা আলাদা বই কিনলেই পড়ে আনন্দ পাবেন বেশি।
ফেলুদাকে নিয়ে অনেকক্ষণ বক বক করলাম। কিন্তু যে কারণে লেখা, সটোই বলা হয়নি এখনো। ফেলুদার স্রষ্টা সত্যজিৎ রায় মারা গিয়েছিলেন সেই ১৯৯২ সালে। তবে আজকের লেখার উদ্দেশ্য, তাঁর জন্মদিন স্মরণ। ১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে পৃথিবীতে এসেছিলেন। অর্থাৎ বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হতো ১০০। তাঁকে মনে না করে কী উপায় বলুন, তিনি পৃথিবীতে না এলে কি প্রিয় ফেলুদা আসতেন?
আরও পড়ুন:

একটা গির্জার ঘড়ি বেজে উঠল দূর থেকে। সেন্ট পলসের ঘড়ি। সাড়ে এগারোটা বাজল...কাছাকাছি একটা কুকুর ডেকে উঠল। আর ঠিক সেই মুহূর্তে...একটা লোক ডান দিকের পাঁচিল থেকে লাফিয়ে ফেলুদার ওপর পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা। ফেলুদার হাতের বাক্সটা আর হাতে নেই। সে হাত খালি করে এক ঝটকায় ঘাড় থেকে প্রথম লোকটাকে ফেলে তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।....'
বুঝতেই পারছেন আগাগোড়া রহস্য-রোমাঞ্চে ভরপুর ফেলুদার একটি কাহিনির কিছুটা অংশ তুলে দিয়েছি। বইয়ের নামটা কী? জানা না থাকলে, লেখাটা শেষ অবধি অপেক্ষা করুন।
তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। আব্বুর চাকরিসূত্রে থাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ডাক্তার দেখাতে কিংবা ছুটিছাটায় আসা হতো ঢাকায়। বেইলি রোডে খালার বাসা ছিল সাময়িক আস্তানা হিসেবে ভারি প্রিয়। কারণ, দুই খালাতো ভাই নাহিদ ভাইয়া, আর জাহিদ। ওদের সঙ্গে আচ্ছাসে দুষ্টুমির সুযোগ মিলত।
নাহিদ ভাইয়া বইয়রে পোকা। তাঁর বইয়ের আলমারিতে হত্যাপুরী, বাক্স রহস্য, গোরস্তানে সাবধান, দার্জিলিং জমজমাট, গ্যাংটকে গণ্ডোগল বইগুলো দেখতাম। কৌতূহলও জাগত মনে। তবে তখনও গোয়েন্দা বইয়ের দুনিয়া নিতান্ত অপরিচিত। আমার দৌড় রূপকথা আর কমিকস পর্যন্ত।
পরের বছর। ক্লাস ফোরে পড়ি। তিন গোয়েন্দা দিয়ে রহস্য-রোমাঞ্চ জগতে পদার্পণ হয়েছে এরই মধ্যে। একদিন নাহিদ ভাইয়ার আলমারি থেকে কি মনে হতে সাহস করে হত্যাপুরী বইটা নিলাম। পড়তে পড়তে খুন-জখম-সাগর–সৈকতময় এক কেসে ফেলুদার সঙ্গে জড়িয়ে পড়লাম আমিও। ব্যাস, পরের কয়েকটা দিন ফেলুদায় বুঁদ হয়ে রইলাম।
ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকিহিনি, এককথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণ কাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে। এদের বাস্তব অস্তিত্ব নেই—এটা বিশ্বাস করতে মন চাইত না। এখনো মানতে পারি না।
এর পর থেকে ফেলুদা পড়েই যাচ্ছি। নতুন বই কিনেছি ঢাকার নিউমার্কেট থেকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লাইব্রেরি থেকে, কলেজে ওঠার পর নীলক্ষেত থেকে। একই বই কয়েকবারও কিনেছি, পড়েছি।
চেহারাটা ভাসছে লিখতে বসে। সাতাশ বছরের এক তরুণ, বয়স যার আটকে আছে। উচ্চতা ছয় ফুট দুই ইঞ্চি। ঠোঁটে চারমিনার। মার্শাল আর্টে দক্ষ ফেলুদা, সঙ্গের ৩২ কোল্ট রিভলবার ভয়ানক সব অপরাধীদের সঙ্গে লড়াইয়ে বাড়তি সু্বিধা দেয়। তবে তাঁর মূল অস্ত্র ধারালো মগজটা। দুর্দান্ত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা ব্যবহার করে জটিল সব রহস্য সমাধান করে অবলীলায়।
একটা বই পড়ি, নতুন একটা দুয়ার খুলে যায় আমার সামনে। রহস্য-রোমাঞ্চের প্রতি মারাত্মক একটা টান ছিল ছোটবেলায়। ফেলুদা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় সেই মনটাকেও উন্মাতাল করে তুলল।
গ্যাংটকে গন্ডগোল পড়তে পড়তে বরফঢাকাও শহরটিতে না গিয়েও যেন যাওয়া হয়ে গেল আমার। সিকিমের রাজধানীটিতে সশরীরে হাজিরা দিতে পারিনি এখনো, তবে ফেলুদা বা শ্রী প্রদোষচন্দ্র মিত্রর ট্রেইল অনুসরণ করে গিয়েছি অনেক জায়গাতেই।
‘রাজেনবাবুকে রোজ বিকেলে ম্যাল্-এ আসতে দেখি। মাথার চুল সব পাকা, গায়ের রং ফরসা, মুখের ভাব হাসিখুশি। পুরনো নেপালি জিনিস-টিনিসের যে দোকানটা আছে, সেটায় কিছুক্ষণ কাটিয়ে বাইরে এসে বেঞ্চিতে আধঘণ্টার মতো বসে সন্ধে হব-হব হলে জলাপাহাড়ে বাড়ি ফিরে যান।’ ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’র শুরুটা এভাবেই, দার্জিলিংয়ে। ওটাই ছিল ফেলুদার প্রথম গোয়েন্দা কাহিনি। সন্দেশ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। ডিসেম্বর ১৯৬৫ থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ তক। তবে আমার দার্জিলিংকে চেনা শুরু ফেলুদার ‘দার্জিলিং জমজমাট’ বইটি দিয়ে। কারণ ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির আগেই আমার পড়া হয়ে যায় দার্জিলিং জমজমাট।
তেমনি তোপসের মতো আমিও কিউরিও যে পুরোনো দুষ্প্রাপ্য জিনিস, সেটা শিখি ফেলুদার কাছ থেকেই। তাই ২০১৭ সালে প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, সিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নিই।
তবে আমার ফেলুদাকে অনুসরণের শুরু আরও আগে। সালটা ২০১৪, জানুয়ারির ৭ তারিখ রাতে স্ত্রী পুনমসহ মধুচন্দ্রমিায় পৌঁছাই কাঠমাণ্ডু। নেপাল আমাকে টেনেছিল, সেই ক্লাস সেভেনে পড়ায় সময়। তখন ফেলুদার যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডু পড়েই বলা চলে হিমালয়রাজ্যের শহরটা মনে গেঁথে যায়। এক খুনির পিছু নিয়ে তোপসে আর লালমোহন গাঙ্গুলীসমতে প্রাচীন শহরটিতে হাজির হয়েছিলেন ফেলুদা। তারপর চিরশত্রু মগনলাল মেঘরাজের সঙ্গে টক্কর। নেপালের রাজধানী শহরে যাওয়ার বড় সাধ জাগে কিশোর মনে। বহু বছর বাদে সেটা পূরণ হয়।
একইভাবে ২০১৮ সালে ঋষিকেষের রামঝুলা-লছমন ঝুলা দেখতে যাওয়ার পেছনেও ওই ফেলুদাই। লছমন ঝুলার কথা প্রথম জানতে পারি ফেলুদার ‘বাদশাহী আংটি’ পড়ে। পাহাড়-অরণ্যময় জায়গা না হয়েও ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে ভারতের কলকাতার প্রতি আমার টানটা ফেলুদা এবং কলেজ স্ট্রিটের কল্যাণেই।
তবে গতবার কলকাতায় গিয়ে গোরস্তানে সাবধানের সেই পার্ক স্ট্রিট সিমেট্রিতে একবার ঢুঁ মারতে না পারার যন্ত্রণাটা পোড়াচ্ছে এখনো। আশ্চর্য ব্যাপার ফেলুদার ওই বইয়ের স্মৃতি আমার মনে ভেসে ওঠে এখনো কোনো গোরস্তানে গেলে। বিশেষ করে ওয়ারি এবং বান্দুরার খ্রিষ্টান গোরস্তানটায় যখন গিয়েছি, অনুভূতিটা প্রকট হয়ে উঠেছে। আবার গত বছর বরিশাল শহরের গাছগাছালিময় একটি মুসলিম কবরস্তানে গিয়েও কেমন ফেলুদা ফেলুদা মনে হচ্ছিল নিজেকে।
আমার ধারণা রহস্য-রোমাঞ্চ-ইতিহাসের রাজ্যে ঢুঁ মারার পাশাপাশি, ভারতের জঙ্গল-পাহাড়-সৈকত-গ্রাম-কলকাতায় ইচ্ছেমতো চষে বেড়ানোর সুযোগ পাওয়াতেই বেশি করে মজেছি প্রদোষ চন্দ্র মিত্রর বইগুলোতে। আমার ভ্রমণ প্রিয় হয়ে ওঠার পেছনেও তাই ফেলুদা, মায় সত্যজিতের অবদান কম-বেশি আছেই।
প্রদোষচন্দ্র মিত্র একা নয়। আরও কত চরিত্র মিলে আশ্চর্য ও এক আকর্ষণীয় রূপ প্রাপ্তি। তোপসে, অর্থাৎ তপেশরঞ্জন মিত্রর কথা বলতে হবে সবার আগে। একেবারে শুরু থেকেই যে প্রিয় গোয়েন্দার সঙ্গে আছে, তাঁর খুড়তুতো ভাইটি। তাঁর জবানিতেই ফেলুদার কাহিনিগুলো জানতে পারি। তা ছাড়া যখন ফেলুদা পড়া শুরু করি, তোপসের জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেওয়াটা তখন অনেক সহজ ছিল।
সোনার কেল্লায় ওই যে লালমোহন গাঙ্গুলির সঙ্গে পরিচয় হলো, তারপর থেকে ফেলুদার প্রতিটি বইয়ের আশ্চর্য এক চাটনি হয়ে উঠলেন রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যিক জটায়ু। টানটান উত্তেজনায় ভরা রহস্যকাহিনিগুলোয় জটায়ুর অদ্ভুত, হাস্যরসাত্মক কাণ্ড-কীর্তি যেন আনন্দময় রিলিফ। ফেলুদা পড়তে পড়তে আরও কত চরিত্র যে আপন হয়ে গেল আমার! দুর্ধর্ষ মগনলাল মেঘরাজ, জীবন্ত জ্ঞানকোষ সিধু জ্যাঠা, ছিন্নমস্তার অভিশাপের দুর্ধর্ষ কারাণ্ডিকার, ধাঁধাপাগল মহেশ চৌধুরী, বাদশাহী আংটির বনবিহারী বাবু, সোনার কেল্লার মুকুলসহ কত কত চরিত্র লিখতে বসে চোখের সামনে চলে আসছে। সাধারণত কোনো বই পড়তে গেলে চরিত্রগুলোর চেহারা-ছবি নিজের মতো করে তৈরি করে নিই মনে মনে। তবে এ ক্ষেত্রে সত্যজিতের আঁকায় যে সাদাকালো চেহারাগুলো পেয়েছি, সেগুলো প্রভাব বিস্তার করেছে মনের ওপর বড় বেশি।
আশ্চর্য ব্যাপার এই আধবুড়ো বয়সেও ফেলুদা আমাকে টানে। এখনো হাতের কাছে মনের মতো বই না পেলে বুকশেলফের ভেতরের নির্দিষ্ট একটি তাক চাবি দিয়ে খুলে বের করে আনি জয় বাবা ফেলুনাথ কিংবা গ্যাংটকে গণ্ডগোল। তারপর বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে হারিয়ে যাই প্রিয় ফেলুদার সঙ্গে।
প্রত্যেকটি শুরুরই কোনো না কোনো অনুপ্রেরণা থাকে। ফেলুদার জন্মটা যে শার্লক হোমসে অনুপ্রাণিত হয়ে বুঝে নিতে কষ্ট হয় না। সত্যজিৎ ফেলুদার গুরু হিসেবে বারবারই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন হোমসকে। এমনকি ফেলুদাকে ঘুরিয়ে এনেছেন তাঁর গুরু হোমসের বেকার স্ট্রিট থেকে। শুধু তাই নয়, সত্যজিৎ রায় ফেলুদার আস্তানা হিসাবে ২২১ বি বেকার স্ট্রিটের অদলেই হয়তো দেখিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার ২১ রজনী সেন রোডকে। মজার ঘটনা ২২১ বি নামে বাড়ির কোনো অস্তিত্ত্ব যেমন নেই, তেমনি রজনী সেন রোড থাকলেও ২১ নম্বর বাড়ির খোঁজ মেলেনি সেখানে।
এবার ফেলুদা নিয়ে কিছু তথ্য দিয়ে দিচ্ছি ঝটপট। ফেলুদা চরিত্রটির জন্ম যেন অনেকটা হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষুরধার গোয়েন্দাটির স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়ের একটি লাল খেরো খাতা ছিল। ওখানে নিজের গল্পগুলোর খসড়া লিখতেন। খসড়া লেখার জন্য আরও বেশ কয়েকটি খাতাও ছিল। কিন্তু কী আশ্চর্য! ১৯৬৫ সালের আগে কোথাও ফেলুদা চরিত্রটি সম্পর্কে কিছুই ছিল না। ১৯৬৫ সালে লাল খেরো খাতার তৃতীয় পাতায় হঠাৎ করেই এই গোয়েন্দার দেখা মেলে।
তারপর তো ১৯৬৫ সালে সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি দিয়ে আবির্ভাব। তবে ফেলুদার প্রথম উপন্যাস বাদশাহী আংটি, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বই আকারে যেটি বের হয় ১৯৬৯-এ। সত্যজিৎ সম্ভবত নিজেও ভাবেননি এভাবে বাঙালি পাঠকের মন জয় করে নেবে ফেলুদা। সিরিজটির জনপ্রিয়তা এতই তুঙ্গে ছিল যে, বাদশাহী আংটির পর থেকে ফি বছরই বলা চলে গোয়েন্দাটিকে নিয়ে উপন্যাস, না হয় গল্প; কিছু না কিছু লিখেছেন সত্যজিৎ। ১৯৯২ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রবল জনপ্রিয় এই গোয়েন্দাকে নিয়ে সত্যজিৎ লেখেন ৩৫টি সম্পূর্ণ গল্প-উপন্যাস। এ ছাড়া শেষ হয়নি এমন কয়কেটি পাণ্ডুলিপিও ছিল।

সত্যজিৎ রায় মারা যাওয়ার কয়েক বছর পরের ঘটনা। চট্টগ্রামে বেড়াতে গিয়েছি। আবারও সেই নাহিদ ভাইয়াদের বাসা। ওর বাবা তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। নিউমার্কেটে গেলাম সবাই মিলে। দুটো বই কিনলাম। এর একটা রবার্টসনের রুবি। স্পষ্ট মনে আছে, বইটি কেনার সময় বিষাদে ছেয়ে গিয়েছিল মনটা, কারণ সত্যজিৎ ততদিনে দুনিয়া ছেড়ে গিয়েছেন। আমার সঙ্গে অনেক পাঠকই একমত হবেন, বইটি ফেলুদা হিসেবে খুব আহমরি কিছু হয়নি। জানামতে ওটাই ফেলুদার পূর্ণাঙ্গ শেষ উপন্যাস। কেন এই ছন্দপতন, তা আজও আমার কাছে এক রহস্য।
রবার্টসনের রুবি কেনার সময়, কিংবা পরে একটা চিন্তা বারবারই উদয় হয়েছে মনে। আহ্, সত্যজিৎ যদি অন্তত আরও পাঁচটা বছর বাঁচতেন! গোটা আটেক ফেলুদা, দুই-তিনটা শঙ্কু কিংবা একটা তাড়ীনিখুড়োর বই নিঃসন্দেহে পেয়ে যেতাম। বড় স্বার্থপর চিন্তা! কী বলব, বলুন! সত্যজিতের এই অমর সৃষ্টিগুলো যে এখনো মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
ফেলুদাকে নিয়ে হয়ছে বেশ কয়েকটি সিনেমা, হালফিল ওয়েব সিরিজও। এ ব্যাপারে বেশি কিছু লিখতে চাই না। তবে পর্দায় ফেলুদা হিসেবে আমার প্রথম পছন্দ সব্যসাচী চক্রবর্তী। যদিও চেহারাটা শুরুতে মোটেই ফেলুদাকে যেভাবে মনে মনে কল্পনা করেছি, তার সঙ্গে যায়নি। তবে সব্যসাচীর অভিনয়ে মুগ্ধ হই।
প্রথম ফেলুদা হিসেবে দেখেছি কিন্তু সৌমিত্রকেই। ১৯৭৪ সালে, সোনার কেল্লা দিয়ে তাঁর আবির্ভাব। চেহারার কথা বললে কল্পনার ফেলুদার সঙ্গে তাঁর মিলই পেয়েছি বেশি। হবে নাই বা কেন, আমার জানামতে সত্যজিৎ ফেলুদাকে বইয়ে এঁকেছিলেন সৌমিত্রকে মাথায় রেখেই। ফেলুদা হিসেবে সৌমিত্রের অভিনয় ফেলুদার স্রষ্টার কাছে কিন্তু ছিল দশে–দশই। ওপার বাংলার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আমার প্রিয় অভিনেতা হয়ে ওঠার শুরু সেই তোপসে দিয়েই।
শুরুতে যে বইটার কাহিনি দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেটার নামটা বলে দিচ্ছি, যারা জানেন না তাঁদের জন্য, বাক্স রহস্য। ফেলুদার গল্প-উপন্যাস খুব একটা পড়েননি, তাঁদের বলছি ফেলুদা সমগ্র না কিনে আলাদা আলাদা বই কিনলেই পড়ে আনন্দ পাবেন বেশি।
ফেলুদাকে নিয়ে অনেকক্ষণ বক বক করলাম। কিন্তু যে কারণে লেখা, সটোই বলা হয়নি এখনো। ফেলুদার স্রষ্টা সত্যজিৎ রায় মারা গিয়েছিলেন সেই ১৯৯২ সালে। তবে আজকের লেখার উদ্দেশ্য, তাঁর জন্মদিন স্মরণ। ১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে পৃথিবীতে এসেছিলেন। অর্থাৎ বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হতো ১০০। তাঁকে মনে না করে কী উপায় বলুন, তিনি পৃথিবীতে না এলে কি প্রিয় ফেলুদা আসতেন?
আরও পড়ুন:
ইশতিয়াক হাসান

একটা গির্জার ঘড়ি বেজে উঠল দূর থেকে। সেন্ট পলসের ঘড়ি। সাড়ে এগারোটা বাজল...কাছাকাছি একটা কুকুর ডেকে উঠল। আর ঠিক সেই মুহূর্তে...একটা লোক ডান দিকের পাঁচিল থেকে লাফিয়ে ফেলুদার ওপর পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা। ফেলুদার হাতের বাক্সটা আর হাতে নেই। সে হাত খালি করে এক ঝটকায় ঘাড় থেকে প্রথম লোকটাকে ফেলে তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।....'
বুঝতেই পারছেন আগাগোড়া রহস্য-রোমাঞ্চে ভরপুর ফেলুদার একটি কাহিনির কিছুটা অংশ তুলে দিয়েছি। বইয়ের নামটা কী? জানা না থাকলে, লেখাটা শেষ অবধি অপেক্ষা করুন।
তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। আব্বুর চাকরিসূত্রে থাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ডাক্তার দেখাতে কিংবা ছুটিছাটায় আসা হতো ঢাকায়। বেইলি রোডে খালার বাসা ছিল সাময়িক আস্তানা হিসেবে ভারি প্রিয়। কারণ, দুই খালাতো ভাই নাহিদ ভাইয়া, আর জাহিদ। ওদের সঙ্গে আচ্ছাসে দুষ্টুমির সুযোগ মিলত।
নাহিদ ভাইয়া বইয়রে পোকা। তাঁর বইয়ের আলমারিতে হত্যাপুরী, বাক্স রহস্য, গোরস্তানে সাবধান, দার্জিলিং জমজমাট, গ্যাংটকে গণ্ডোগল বইগুলো দেখতাম। কৌতূহলও জাগত মনে। তবে তখনও গোয়েন্দা বইয়ের দুনিয়া নিতান্ত অপরিচিত। আমার দৌড় রূপকথা আর কমিকস পর্যন্ত।
পরের বছর। ক্লাস ফোরে পড়ি। তিন গোয়েন্দা দিয়ে রহস্য-রোমাঞ্চ জগতে পদার্পণ হয়েছে এরই মধ্যে। একদিন নাহিদ ভাইয়ার আলমারি থেকে কি মনে হতে সাহস করে হত্যাপুরী বইটা নিলাম। পড়তে পড়তে খুন-জখম-সাগর–সৈকতময় এক কেসে ফেলুদার সঙ্গে জড়িয়ে পড়লাম আমিও। ব্যাস, পরের কয়েকটা দিন ফেলুদায় বুঁদ হয়ে রইলাম।
ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকিহিনি, এককথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণ কাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে। এদের বাস্তব অস্তিত্ব নেই—এটা বিশ্বাস করতে মন চাইত না। এখনো মানতে পারি না।
এর পর থেকে ফেলুদা পড়েই যাচ্ছি। নতুন বই কিনেছি ঢাকার নিউমার্কেট থেকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লাইব্রেরি থেকে, কলেজে ওঠার পর নীলক্ষেত থেকে। একই বই কয়েকবারও কিনেছি, পড়েছি।
চেহারাটা ভাসছে লিখতে বসে। সাতাশ বছরের এক তরুণ, বয়স যার আটকে আছে। উচ্চতা ছয় ফুট দুই ইঞ্চি। ঠোঁটে চারমিনার। মার্শাল আর্টে দক্ষ ফেলুদা, সঙ্গের ৩২ কোল্ট রিভলবার ভয়ানক সব অপরাধীদের সঙ্গে লড়াইয়ে বাড়তি সু্বিধা দেয়। তবে তাঁর মূল অস্ত্র ধারালো মগজটা। দুর্দান্ত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা ব্যবহার করে জটিল সব রহস্য সমাধান করে অবলীলায়।
একটা বই পড়ি, নতুন একটা দুয়ার খুলে যায় আমার সামনে। রহস্য-রোমাঞ্চের প্রতি মারাত্মক একটা টান ছিল ছোটবেলায়। ফেলুদা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় সেই মনটাকেও উন্মাতাল করে তুলল।
গ্যাংটকে গন্ডগোল পড়তে পড়তে বরফঢাকাও শহরটিতে না গিয়েও যেন যাওয়া হয়ে গেল আমার। সিকিমের রাজধানীটিতে সশরীরে হাজিরা দিতে পারিনি এখনো, তবে ফেলুদা বা শ্রী প্রদোষচন্দ্র মিত্রর ট্রেইল অনুসরণ করে গিয়েছি অনেক জায়গাতেই।
‘রাজেনবাবুকে রোজ বিকেলে ম্যাল্-এ আসতে দেখি। মাথার চুল সব পাকা, গায়ের রং ফরসা, মুখের ভাব হাসিখুশি। পুরনো নেপালি জিনিস-টিনিসের যে দোকানটা আছে, সেটায় কিছুক্ষণ কাটিয়ে বাইরে এসে বেঞ্চিতে আধঘণ্টার মতো বসে সন্ধে হব-হব হলে জলাপাহাড়ে বাড়ি ফিরে যান।’ ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’র শুরুটা এভাবেই, দার্জিলিংয়ে। ওটাই ছিল ফেলুদার প্রথম গোয়েন্দা কাহিনি। সন্দেশ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। ডিসেম্বর ১৯৬৫ থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ তক। তবে আমার দার্জিলিংকে চেনা শুরু ফেলুদার ‘দার্জিলিং জমজমাট’ বইটি দিয়ে। কারণ ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির আগেই আমার পড়া হয়ে যায় দার্জিলিং জমজমাট।
তেমনি তোপসের মতো আমিও কিউরিও যে পুরোনো দুষ্প্রাপ্য জিনিস, সেটা শিখি ফেলুদার কাছ থেকেই। তাই ২০১৭ সালে প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, সিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নিই।
তবে আমার ফেলুদাকে অনুসরণের শুরু আরও আগে। সালটা ২০১৪, জানুয়ারির ৭ তারিখ রাতে স্ত্রী পুনমসহ মধুচন্দ্রমিায় পৌঁছাই কাঠমাণ্ডু। নেপাল আমাকে টেনেছিল, সেই ক্লাস সেভেনে পড়ায় সময়। তখন ফেলুদার যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডু পড়েই বলা চলে হিমালয়রাজ্যের শহরটা মনে গেঁথে যায়। এক খুনির পিছু নিয়ে তোপসে আর লালমোহন গাঙ্গুলীসমতে প্রাচীন শহরটিতে হাজির হয়েছিলেন ফেলুদা। তারপর চিরশত্রু মগনলাল মেঘরাজের সঙ্গে টক্কর। নেপালের রাজধানী শহরে যাওয়ার বড় সাধ জাগে কিশোর মনে। বহু বছর বাদে সেটা পূরণ হয়।
একইভাবে ২০১৮ সালে ঋষিকেষের রামঝুলা-লছমন ঝুলা দেখতে যাওয়ার পেছনেও ওই ফেলুদাই। লছমন ঝুলার কথা প্রথম জানতে পারি ফেলুদার ‘বাদশাহী আংটি’ পড়ে। পাহাড়-অরণ্যময় জায়গা না হয়েও ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে ভারতের কলকাতার প্রতি আমার টানটা ফেলুদা এবং কলেজ স্ট্রিটের কল্যাণেই।
তবে গতবার কলকাতায় গিয়ে গোরস্তানে সাবধানের সেই পার্ক স্ট্রিট সিমেট্রিতে একবার ঢুঁ মারতে না পারার যন্ত্রণাটা পোড়াচ্ছে এখনো। আশ্চর্য ব্যাপার ফেলুদার ওই বইয়ের স্মৃতি আমার মনে ভেসে ওঠে এখনো কোনো গোরস্তানে গেলে। বিশেষ করে ওয়ারি এবং বান্দুরার খ্রিষ্টান গোরস্তানটায় যখন গিয়েছি, অনুভূতিটা প্রকট হয়ে উঠেছে। আবার গত বছর বরিশাল শহরের গাছগাছালিময় একটি মুসলিম কবরস্তানে গিয়েও কেমন ফেলুদা ফেলুদা মনে হচ্ছিল নিজেকে।
আমার ধারণা রহস্য-রোমাঞ্চ-ইতিহাসের রাজ্যে ঢুঁ মারার পাশাপাশি, ভারতের জঙ্গল-পাহাড়-সৈকত-গ্রাম-কলকাতায় ইচ্ছেমতো চষে বেড়ানোর সুযোগ পাওয়াতেই বেশি করে মজেছি প্রদোষ চন্দ্র মিত্রর বইগুলোতে। আমার ভ্রমণ প্রিয় হয়ে ওঠার পেছনেও তাই ফেলুদা, মায় সত্যজিতের অবদান কম-বেশি আছেই।
প্রদোষচন্দ্র মিত্র একা নয়। আরও কত চরিত্র মিলে আশ্চর্য ও এক আকর্ষণীয় রূপ প্রাপ্তি। তোপসে, অর্থাৎ তপেশরঞ্জন মিত্রর কথা বলতে হবে সবার আগে। একেবারে শুরু থেকেই যে প্রিয় গোয়েন্দার সঙ্গে আছে, তাঁর খুড়তুতো ভাইটি। তাঁর জবানিতেই ফেলুদার কাহিনিগুলো জানতে পারি। তা ছাড়া যখন ফেলুদা পড়া শুরু করি, তোপসের জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেওয়াটা তখন অনেক সহজ ছিল।
সোনার কেল্লায় ওই যে লালমোহন গাঙ্গুলির সঙ্গে পরিচয় হলো, তারপর থেকে ফেলুদার প্রতিটি বইয়ের আশ্চর্য এক চাটনি হয়ে উঠলেন রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যিক জটায়ু। টানটান উত্তেজনায় ভরা রহস্যকাহিনিগুলোয় জটায়ুর অদ্ভুত, হাস্যরসাত্মক কাণ্ড-কীর্তি যেন আনন্দময় রিলিফ। ফেলুদা পড়তে পড়তে আরও কত চরিত্র যে আপন হয়ে গেল আমার! দুর্ধর্ষ মগনলাল মেঘরাজ, জীবন্ত জ্ঞানকোষ সিধু জ্যাঠা, ছিন্নমস্তার অভিশাপের দুর্ধর্ষ কারাণ্ডিকার, ধাঁধাপাগল মহেশ চৌধুরী, বাদশাহী আংটির বনবিহারী বাবু, সোনার কেল্লার মুকুলসহ কত কত চরিত্র লিখতে বসে চোখের সামনে চলে আসছে। সাধারণত কোনো বই পড়তে গেলে চরিত্রগুলোর চেহারা-ছবি নিজের মতো করে তৈরি করে নিই মনে মনে। তবে এ ক্ষেত্রে সত্যজিতের আঁকায় যে সাদাকালো চেহারাগুলো পেয়েছি, সেগুলো প্রভাব বিস্তার করেছে মনের ওপর বড় বেশি।
আশ্চর্য ব্যাপার এই আধবুড়ো বয়সেও ফেলুদা আমাকে টানে। এখনো হাতের কাছে মনের মতো বই না পেলে বুকশেলফের ভেতরের নির্দিষ্ট একটি তাক চাবি দিয়ে খুলে বের করে আনি জয় বাবা ফেলুনাথ কিংবা গ্যাংটকে গণ্ডগোল। তারপর বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে হারিয়ে যাই প্রিয় ফেলুদার সঙ্গে।
প্রত্যেকটি শুরুরই কোনো না কোনো অনুপ্রেরণা থাকে। ফেলুদার জন্মটা যে শার্লক হোমসে অনুপ্রাণিত হয়ে বুঝে নিতে কষ্ট হয় না। সত্যজিৎ ফেলুদার গুরু হিসেবে বারবারই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন হোমসকে। এমনকি ফেলুদাকে ঘুরিয়ে এনেছেন তাঁর গুরু হোমসের বেকার স্ট্রিট থেকে। শুধু তাই নয়, সত্যজিৎ রায় ফেলুদার আস্তানা হিসাবে ২২১ বি বেকার স্ট্রিটের অদলেই হয়তো দেখিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার ২১ রজনী সেন রোডকে। মজার ঘটনা ২২১ বি নামে বাড়ির কোনো অস্তিত্ত্ব যেমন নেই, তেমনি রজনী সেন রোড থাকলেও ২১ নম্বর বাড়ির খোঁজ মেলেনি সেখানে।
এবার ফেলুদা নিয়ে কিছু তথ্য দিয়ে দিচ্ছি ঝটপট। ফেলুদা চরিত্রটির জন্ম যেন অনেকটা হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষুরধার গোয়েন্দাটির স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়ের একটি লাল খেরো খাতা ছিল। ওখানে নিজের গল্পগুলোর খসড়া লিখতেন। খসড়া লেখার জন্য আরও বেশ কয়েকটি খাতাও ছিল। কিন্তু কী আশ্চর্য! ১৯৬৫ সালের আগে কোথাও ফেলুদা চরিত্রটি সম্পর্কে কিছুই ছিল না। ১৯৬৫ সালে লাল খেরো খাতার তৃতীয় পাতায় হঠাৎ করেই এই গোয়েন্দার দেখা মেলে।
তারপর তো ১৯৬৫ সালে সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি দিয়ে আবির্ভাব। তবে ফেলুদার প্রথম উপন্যাস বাদশাহী আংটি, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বই আকারে যেটি বের হয় ১৯৬৯-এ। সত্যজিৎ সম্ভবত নিজেও ভাবেননি এভাবে বাঙালি পাঠকের মন জয় করে নেবে ফেলুদা। সিরিজটির জনপ্রিয়তা এতই তুঙ্গে ছিল যে, বাদশাহী আংটির পর থেকে ফি বছরই বলা চলে গোয়েন্দাটিকে নিয়ে উপন্যাস, না হয় গল্প; কিছু না কিছু লিখেছেন সত্যজিৎ। ১৯৯২ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রবল জনপ্রিয় এই গোয়েন্দাকে নিয়ে সত্যজিৎ লেখেন ৩৫টি সম্পূর্ণ গল্প-উপন্যাস। এ ছাড়া শেষ হয়নি এমন কয়কেটি পাণ্ডুলিপিও ছিল।

সত্যজিৎ রায় মারা যাওয়ার কয়েক বছর পরের ঘটনা। চট্টগ্রামে বেড়াতে গিয়েছি। আবারও সেই নাহিদ ভাইয়াদের বাসা। ওর বাবা তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। নিউমার্কেটে গেলাম সবাই মিলে। দুটো বই কিনলাম। এর একটা রবার্টসনের রুবি। স্পষ্ট মনে আছে, বইটি কেনার সময় বিষাদে ছেয়ে গিয়েছিল মনটা, কারণ সত্যজিৎ ততদিনে দুনিয়া ছেড়ে গিয়েছেন। আমার সঙ্গে অনেক পাঠকই একমত হবেন, বইটি ফেলুদা হিসেবে খুব আহমরি কিছু হয়নি। জানামতে ওটাই ফেলুদার পূর্ণাঙ্গ শেষ উপন্যাস। কেন এই ছন্দপতন, তা আজও আমার কাছে এক রহস্য।
রবার্টসনের রুবি কেনার সময়, কিংবা পরে একটা চিন্তা বারবারই উদয় হয়েছে মনে। আহ্, সত্যজিৎ যদি অন্তত আরও পাঁচটা বছর বাঁচতেন! গোটা আটেক ফেলুদা, দুই-তিনটা শঙ্কু কিংবা একটা তাড়ীনিখুড়োর বই নিঃসন্দেহে পেয়ে যেতাম। বড় স্বার্থপর চিন্তা! কী বলব, বলুন! সত্যজিতের এই অমর সৃষ্টিগুলো যে এখনো মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
ফেলুদাকে নিয়ে হয়ছে বেশ কয়েকটি সিনেমা, হালফিল ওয়েব সিরিজও। এ ব্যাপারে বেশি কিছু লিখতে চাই না। তবে পর্দায় ফেলুদা হিসেবে আমার প্রথম পছন্দ সব্যসাচী চক্রবর্তী। যদিও চেহারাটা শুরুতে মোটেই ফেলুদাকে যেভাবে মনে মনে কল্পনা করেছি, তার সঙ্গে যায়নি। তবে সব্যসাচীর অভিনয়ে মুগ্ধ হই।
প্রথম ফেলুদা হিসেবে দেখেছি কিন্তু সৌমিত্রকেই। ১৯৭৪ সালে, সোনার কেল্লা দিয়ে তাঁর আবির্ভাব। চেহারার কথা বললে কল্পনার ফেলুদার সঙ্গে তাঁর মিলই পেয়েছি বেশি। হবে নাই বা কেন, আমার জানামতে সত্যজিৎ ফেলুদাকে বইয়ে এঁকেছিলেন সৌমিত্রকে মাথায় রেখেই। ফেলুদা হিসেবে সৌমিত্রের অভিনয় ফেলুদার স্রষ্টার কাছে কিন্তু ছিল দশে–দশই। ওপার বাংলার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আমার প্রিয় অভিনেতা হয়ে ওঠার শুরু সেই তোপসে দিয়েই।
শুরুতে যে বইটার কাহিনি দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেটার নামটা বলে দিচ্ছি, যারা জানেন না তাঁদের জন্য, বাক্স রহস্য। ফেলুদার গল্প-উপন্যাস খুব একটা পড়েননি, তাঁদের বলছি ফেলুদা সমগ্র না কিনে আলাদা আলাদা বই কিনলেই পড়ে আনন্দ পাবেন বেশি।
ফেলুদাকে নিয়ে অনেকক্ষণ বক বক করলাম। কিন্তু যে কারণে লেখা, সটোই বলা হয়নি এখনো। ফেলুদার স্রষ্টা সত্যজিৎ রায় মারা গিয়েছিলেন সেই ১৯৯২ সালে। তবে আজকের লেখার উদ্দেশ্য, তাঁর জন্মদিন স্মরণ। ১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে পৃথিবীতে এসেছিলেন। অর্থাৎ বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হতো ১০০। তাঁকে মনে না করে কী উপায় বলুন, তিনি পৃথিবীতে না এলে কি প্রিয় ফেলুদা আসতেন?
আরও পড়ুন:

একটা গির্জার ঘড়ি বেজে উঠল দূর থেকে। সেন্ট পলসের ঘড়ি। সাড়ে এগারোটা বাজল...কাছাকাছি একটা কুকুর ডেকে উঠল। আর ঠিক সেই মুহূর্তে...একটা লোক ডান দিকের পাঁচিল থেকে লাফিয়ে ফেলুদার ওপর পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা। ফেলুদার হাতের বাক্সটা আর হাতে নেই। সে হাত খালি করে এক ঝটকায় ঘাড় থেকে প্রথম লোকটাকে ফেলে তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।....'
বুঝতেই পারছেন আগাগোড়া রহস্য-রোমাঞ্চে ভরপুর ফেলুদার একটি কাহিনির কিছুটা অংশ তুলে দিয়েছি। বইয়ের নামটা কী? জানা না থাকলে, লেখাটা শেষ অবধি অপেক্ষা করুন।
তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। আব্বুর চাকরিসূত্রে থাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ডাক্তার দেখাতে কিংবা ছুটিছাটায় আসা হতো ঢাকায়। বেইলি রোডে খালার বাসা ছিল সাময়িক আস্তানা হিসেবে ভারি প্রিয়। কারণ, দুই খালাতো ভাই নাহিদ ভাইয়া, আর জাহিদ। ওদের সঙ্গে আচ্ছাসে দুষ্টুমির সুযোগ মিলত।
নাহিদ ভাইয়া বইয়রে পোকা। তাঁর বইয়ের আলমারিতে হত্যাপুরী, বাক্স রহস্য, গোরস্তানে সাবধান, দার্জিলিং জমজমাট, গ্যাংটকে গণ্ডোগল বইগুলো দেখতাম। কৌতূহলও জাগত মনে। তবে তখনও গোয়েন্দা বইয়ের দুনিয়া নিতান্ত অপরিচিত। আমার দৌড় রূপকথা আর কমিকস পর্যন্ত।
পরের বছর। ক্লাস ফোরে পড়ি। তিন গোয়েন্দা দিয়ে রহস্য-রোমাঞ্চ জগতে পদার্পণ হয়েছে এরই মধ্যে। একদিন নাহিদ ভাইয়ার আলমারি থেকে কি মনে হতে সাহস করে হত্যাপুরী বইটা নিলাম। পড়তে পড়তে খুন-জখম-সাগর–সৈকতময় এক কেসে ফেলুদার সঙ্গে জড়িয়ে পড়লাম আমিও। ব্যাস, পরের কয়েকটা দিন ফেলুদায় বুঁদ হয়ে রইলাম।
ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকিহিনি, এককথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণ কাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে। এদের বাস্তব অস্তিত্ব নেই—এটা বিশ্বাস করতে মন চাইত না। এখনো মানতে পারি না।
এর পর থেকে ফেলুদা পড়েই যাচ্ছি। নতুন বই কিনেছি ঢাকার নিউমার্কেট থেকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লাইব্রেরি থেকে, কলেজে ওঠার পর নীলক্ষেত থেকে। একই বই কয়েকবারও কিনেছি, পড়েছি।
চেহারাটা ভাসছে লিখতে বসে। সাতাশ বছরের এক তরুণ, বয়স যার আটকে আছে। উচ্চতা ছয় ফুট দুই ইঞ্চি। ঠোঁটে চারমিনার। মার্শাল আর্টে দক্ষ ফেলুদা, সঙ্গের ৩২ কোল্ট রিভলবার ভয়ানক সব অপরাধীদের সঙ্গে লড়াইয়ে বাড়তি সু্বিধা দেয়। তবে তাঁর মূল অস্ত্র ধারালো মগজটা। দুর্দান্ত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা ব্যবহার করে জটিল সব রহস্য সমাধান করে অবলীলায়।
একটা বই পড়ি, নতুন একটা দুয়ার খুলে যায় আমার সামনে। রহস্য-রোমাঞ্চের প্রতি মারাত্মক একটা টান ছিল ছোটবেলায়। ফেলুদা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় সেই মনটাকেও উন্মাতাল করে তুলল।
গ্যাংটকে গন্ডগোল পড়তে পড়তে বরফঢাকাও শহরটিতে না গিয়েও যেন যাওয়া হয়ে গেল আমার। সিকিমের রাজধানীটিতে সশরীরে হাজিরা দিতে পারিনি এখনো, তবে ফেলুদা বা শ্রী প্রদোষচন্দ্র মিত্রর ট্রেইল অনুসরণ করে গিয়েছি অনেক জায়গাতেই।
‘রাজেনবাবুকে রোজ বিকেলে ম্যাল্-এ আসতে দেখি। মাথার চুল সব পাকা, গায়ের রং ফরসা, মুখের ভাব হাসিখুশি। পুরনো নেপালি জিনিস-টিনিসের যে দোকানটা আছে, সেটায় কিছুক্ষণ কাটিয়ে বাইরে এসে বেঞ্চিতে আধঘণ্টার মতো বসে সন্ধে হব-হব হলে জলাপাহাড়ে বাড়ি ফিরে যান।’ ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’র শুরুটা এভাবেই, দার্জিলিংয়ে। ওটাই ছিল ফেলুদার প্রথম গোয়েন্দা কাহিনি। সন্দেশ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। ডিসেম্বর ১৯৬৫ থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ তক। তবে আমার দার্জিলিংকে চেনা শুরু ফেলুদার ‘দার্জিলিং জমজমাট’ বইটি দিয়ে। কারণ ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির আগেই আমার পড়া হয়ে যায় দার্জিলিং জমজমাট।
তেমনি তোপসের মতো আমিও কিউরিও যে পুরোনো দুষ্প্রাপ্য জিনিস, সেটা শিখি ফেলুদার কাছ থেকেই। তাই ২০১৭ সালে প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, সিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নিই।
তবে আমার ফেলুদাকে অনুসরণের শুরু আরও আগে। সালটা ২০১৪, জানুয়ারির ৭ তারিখ রাতে স্ত্রী পুনমসহ মধুচন্দ্রমিায় পৌঁছাই কাঠমাণ্ডু। নেপাল আমাকে টেনেছিল, সেই ক্লাস সেভেনে পড়ায় সময়। তখন ফেলুদার যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডু পড়েই বলা চলে হিমালয়রাজ্যের শহরটা মনে গেঁথে যায়। এক খুনির পিছু নিয়ে তোপসে আর লালমোহন গাঙ্গুলীসমতে প্রাচীন শহরটিতে হাজির হয়েছিলেন ফেলুদা। তারপর চিরশত্রু মগনলাল মেঘরাজের সঙ্গে টক্কর। নেপালের রাজধানী শহরে যাওয়ার বড় সাধ জাগে কিশোর মনে। বহু বছর বাদে সেটা পূরণ হয়।
একইভাবে ২০১৮ সালে ঋষিকেষের রামঝুলা-লছমন ঝুলা দেখতে যাওয়ার পেছনেও ওই ফেলুদাই। লছমন ঝুলার কথা প্রথম জানতে পারি ফেলুদার ‘বাদশাহী আংটি’ পড়ে। পাহাড়-অরণ্যময় জায়গা না হয়েও ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে ভারতের কলকাতার প্রতি আমার টানটা ফেলুদা এবং কলেজ স্ট্রিটের কল্যাণেই।
তবে গতবার কলকাতায় গিয়ে গোরস্তানে সাবধানের সেই পার্ক স্ট্রিট সিমেট্রিতে একবার ঢুঁ মারতে না পারার যন্ত্রণাটা পোড়াচ্ছে এখনো। আশ্চর্য ব্যাপার ফেলুদার ওই বইয়ের স্মৃতি আমার মনে ভেসে ওঠে এখনো কোনো গোরস্তানে গেলে। বিশেষ করে ওয়ারি এবং বান্দুরার খ্রিষ্টান গোরস্তানটায় যখন গিয়েছি, অনুভূতিটা প্রকট হয়ে উঠেছে। আবার গত বছর বরিশাল শহরের গাছগাছালিময় একটি মুসলিম কবরস্তানে গিয়েও কেমন ফেলুদা ফেলুদা মনে হচ্ছিল নিজেকে।
আমার ধারণা রহস্য-রোমাঞ্চ-ইতিহাসের রাজ্যে ঢুঁ মারার পাশাপাশি, ভারতের জঙ্গল-পাহাড়-সৈকত-গ্রাম-কলকাতায় ইচ্ছেমতো চষে বেড়ানোর সুযোগ পাওয়াতেই বেশি করে মজেছি প্রদোষ চন্দ্র মিত্রর বইগুলোতে। আমার ভ্রমণ প্রিয় হয়ে ওঠার পেছনেও তাই ফেলুদা, মায় সত্যজিতের অবদান কম-বেশি আছেই।
প্রদোষচন্দ্র মিত্র একা নয়। আরও কত চরিত্র মিলে আশ্চর্য ও এক আকর্ষণীয় রূপ প্রাপ্তি। তোপসে, অর্থাৎ তপেশরঞ্জন মিত্রর কথা বলতে হবে সবার আগে। একেবারে শুরু থেকেই যে প্রিয় গোয়েন্দার সঙ্গে আছে, তাঁর খুড়তুতো ভাইটি। তাঁর জবানিতেই ফেলুদার কাহিনিগুলো জানতে পারি। তা ছাড়া যখন ফেলুদা পড়া শুরু করি, তোপসের জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেওয়াটা তখন অনেক সহজ ছিল।
সোনার কেল্লায় ওই যে লালমোহন গাঙ্গুলির সঙ্গে পরিচয় হলো, তারপর থেকে ফেলুদার প্রতিটি বইয়ের আশ্চর্য এক চাটনি হয়ে উঠলেন রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যিক জটায়ু। টানটান উত্তেজনায় ভরা রহস্যকাহিনিগুলোয় জটায়ুর অদ্ভুত, হাস্যরসাত্মক কাণ্ড-কীর্তি যেন আনন্দময় রিলিফ। ফেলুদা পড়তে পড়তে আরও কত চরিত্র যে আপন হয়ে গেল আমার! দুর্ধর্ষ মগনলাল মেঘরাজ, জীবন্ত জ্ঞানকোষ সিধু জ্যাঠা, ছিন্নমস্তার অভিশাপের দুর্ধর্ষ কারাণ্ডিকার, ধাঁধাপাগল মহেশ চৌধুরী, বাদশাহী আংটির বনবিহারী বাবু, সোনার কেল্লার মুকুলসহ কত কত চরিত্র লিখতে বসে চোখের সামনে চলে আসছে। সাধারণত কোনো বই পড়তে গেলে চরিত্রগুলোর চেহারা-ছবি নিজের মতো করে তৈরি করে নিই মনে মনে। তবে এ ক্ষেত্রে সত্যজিতের আঁকায় যে সাদাকালো চেহারাগুলো পেয়েছি, সেগুলো প্রভাব বিস্তার করেছে মনের ওপর বড় বেশি।
আশ্চর্য ব্যাপার এই আধবুড়ো বয়সেও ফেলুদা আমাকে টানে। এখনো হাতের কাছে মনের মতো বই না পেলে বুকশেলফের ভেতরের নির্দিষ্ট একটি তাক চাবি দিয়ে খুলে বের করে আনি জয় বাবা ফেলুনাথ কিংবা গ্যাংটকে গণ্ডগোল। তারপর বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে হারিয়ে যাই প্রিয় ফেলুদার সঙ্গে।
প্রত্যেকটি শুরুরই কোনো না কোনো অনুপ্রেরণা থাকে। ফেলুদার জন্মটা যে শার্লক হোমসে অনুপ্রাণিত হয়ে বুঝে নিতে কষ্ট হয় না। সত্যজিৎ ফেলুদার গুরু হিসেবে বারবারই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন হোমসকে। এমনকি ফেলুদাকে ঘুরিয়ে এনেছেন তাঁর গুরু হোমসের বেকার স্ট্রিট থেকে। শুধু তাই নয়, সত্যজিৎ রায় ফেলুদার আস্তানা হিসাবে ২২১ বি বেকার স্ট্রিটের অদলেই হয়তো দেখিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার ২১ রজনী সেন রোডকে। মজার ঘটনা ২২১ বি নামে বাড়ির কোনো অস্তিত্ত্ব যেমন নেই, তেমনি রজনী সেন রোড থাকলেও ২১ নম্বর বাড়ির খোঁজ মেলেনি সেখানে।
এবার ফেলুদা নিয়ে কিছু তথ্য দিয়ে দিচ্ছি ঝটপট। ফেলুদা চরিত্রটির জন্ম যেন অনেকটা হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষুরধার গোয়েন্দাটির স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়ের একটি লাল খেরো খাতা ছিল। ওখানে নিজের গল্পগুলোর খসড়া লিখতেন। খসড়া লেখার জন্য আরও বেশ কয়েকটি খাতাও ছিল। কিন্তু কী আশ্চর্য! ১৯৬৫ সালের আগে কোথাও ফেলুদা চরিত্রটি সম্পর্কে কিছুই ছিল না। ১৯৬৫ সালে লাল খেরো খাতার তৃতীয় পাতায় হঠাৎ করেই এই গোয়েন্দার দেখা মেলে।
তারপর তো ১৯৬৫ সালে সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি দিয়ে আবির্ভাব। তবে ফেলুদার প্রথম উপন্যাস বাদশাহী আংটি, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বই আকারে যেটি বের হয় ১৯৬৯-এ। সত্যজিৎ সম্ভবত নিজেও ভাবেননি এভাবে বাঙালি পাঠকের মন জয় করে নেবে ফেলুদা। সিরিজটির জনপ্রিয়তা এতই তুঙ্গে ছিল যে, বাদশাহী আংটির পর থেকে ফি বছরই বলা চলে গোয়েন্দাটিকে নিয়ে উপন্যাস, না হয় গল্প; কিছু না কিছু লিখেছেন সত্যজিৎ। ১৯৯২ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রবল জনপ্রিয় এই গোয়েন্দাকে নিয়ে সত্যজিৎ লেখেন ৩৫টি সম্পূর্ণ গল্প-উপন্যাস। এ ছাড়া শেষ হয়নি এমন কয়কেটি পাণ্ডুলিপিও ছিল।

সত্যজিৎ রায় মারা যাওয়ার কয়েক বছর পরের ঘটনা। চট্টগ্রামে বেড়াতে গিয়েছি। আবারও সেই নাহিদ ভাইয়াদের বাসা। ওর বাবা তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। নিউমার্কেটে গেলাম সবাই মিলে। দুটো বই কিনলাম। এর একটা রবার্টসনের রুবি। স্পষ্ট মনে আছে, বইটি কেনার সময় বিষাদে ছেয়ে গিয়েছিল মনটা, কারণ সত্যজিৎ ততদিনে দুনিয়া ছেড়ে গিয়েছেন। আমার সঙ্গে অনেক পাঠকই একমত হবেন, বইটি ফেলুদা হিসেবে খুব আহমরি কিছু হয়নি। জানামতে ওটাই ফেলুদার পূর্ণাঙ্গ শেষ উপন্যাস। কেন এই ছন্দপতন, তা আজও আমার কাছে এক রহস্য।
রবার্টসনের রুবি কেনার সময়, কিংবা পরে একটা চিন্তা বারবারই উদয় হয়েছে মনে। আহ্, সত্যজিৎ যদি অন্তত আরও পাঁচটা বছর বাঁচতেন! গোটা আটেক ফেলুদা, দুই-তিনটা শঙ্কু কিংবা একটা তাড়ীনিখুড়োর বই নিঃসন্দেহে পেয়ে যেতাম। বড় স্বার্থপর চিন্তা! কী বলব, বলুন! সত্যজিতের এই অমর সৃষ্টিগুলো যে এখনো মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
ফেলুদাকে নিয়ে হয়ছে বেশ কয়েকটি সিনেমা, হালফিল ওয়েব সিরিজও। এ ব্যাপারে বেশি কিছু লিখতে চাই না। তবে পর্দায় ফেলুদা হিসেবে আমার প্রথম পছন্দ সব্যসাচী চক্রবর্তী। যদিও চেহারাটা শুরুতে মোটেই ফেলুদাকে যেভাবে মনে মনে কল্পনা করেছি, তার সঙ্গে যায়নি। তবে সব্যসাচীর অভিনয়ে মুগ্ধ হই।
প্রথম ফেলুদা হিসেবে দেখেছি কিন্তু সৌমিত্রকেই। ১৯৭৪ সালে, সোনার কেল্লা দিয়ে তাঁর আবির্ভাব। চেহারার কথা বললে কল্পনার ফেলুদার সঙ্গে তাঁর মিলই পেয়েছি বেশি। হবে নাই বা কেন, আমার জানামতে সত্যজিৎ ফেলুদাকে বইয়ে এঁকেছিলেন সৌমিত্রকে মাথায় রেখেই। ফেলুদা হিসেবে সৌমিত্রের অভিনয় ফেলুদার স্রষ্টার কাছে কিন্তু ছিল দশে–দশই। ওপার বাংলার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আমার প্রিয় অভিনেতা হয়ে ওঠার শুরু সেই তোপসে দিয়েই।
শুরুতে যে বইটার কাহিনি দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেটার নামটা বলে দিচ্ছি, যারা জানেন না তাঁদের জন্য, বাক্স রহস্য। ফেলুদার গল্প-উপন্যাস খুব একটা পড়েননি, তাঁদের বলছি ফেলুদা সমগ্র না কিনে আলাদা আলাদা বই কিনলেই পড়ে আনন্দ পাবেন বেশি।
ফেলুদাকে নিয়ে অনেকক্ষণ বক বক করলাম। কিন্তু যে কারণে লেখা, সটোই বলা হয়নি এখনো। ফেলুদার স্রষ্টা সত্যজিৎ রায় মারা গিয়েছিলেন সেই ১৯৯২ সালে। তবে আজকের লেখার উদ্দেশ্য, তাঁর জন্মদিন স্মরণ। ১৯২১ সালের এই দিনে, মানে ২ মে পৃথিবীতে এসেছিলেন। অর্থাৎ বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হতো ১০০। তাঁকে মনে না করে কী উপায় বলুন, তিনি পৃথিবীতে না এলে কি প্রিয় ফেলুদা আসতেন?
আরও পড়ুন:

খাবারের জন্য থাইল্যান্ডের অন্যান্য অঞ্চলের সুনাম থাকলেও ফুকেট সবকিছু ছাপিয়ে আলাদা জায়গা দখল করে নিয়েছে বহু বছর আগে। এখানে রয়েছে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারের সমারোহ। এ জন্য শহরটি ইউনেসকো থেকে সিটি অব গ্যাস্ট্রোনমি’র স্বীকৃতি পেয়েছে...
৮ ঘণ্টা আগে
ব্রিটিশরা তাঁতিদের আঙুল কেটে দিত। বাংলাদেশের বহু মানুষ এই তথ্যে বিশ্বাস করে চলেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব আছে বলে কোনো গবেষণায় এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু মানুষ সেই তথ্য বিশ্বাস করে।
১৭ ঘণ্টা আগে
আজ গ্রহরা আপনার জীবনে এক ‘লার্নিং সেশন’-এর আয়োজন করেছে। নতুন কিছু শেখার সুযোগ পাবেন, কিন্তু সাবধানে! আর্থিক লেনদেনে একটু সংযত হোন, না হলে ‘শিক্ষানবিশ ফি’ হিসেবে কিছু টাকা বেরিয়ে যেতে পারে। প্রেমের সম্পর্কে একটা ছোট ‘টক শো’ হতে পারে, যেখানে আপনার...
১৮ ঘণ্টা আগে
সেদ্ধ ডিম ভুনা বা আলু দিয়ে ঝোল করে তো সব সময় রান্না করেন। এবার না-হয় একটু ভিন্নভাবে রাঁধলেন! আপনাদের জন্য আমড়া দিয়ে ডিমের টক ঝোলের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।...
১৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

পুরো থাইল্যান্ড পর্যটকদের জন্য কোনো না কোনোভাবে সেজে থাকে। এই যেমন ফুকেটের কথা বলি। খাবারের জন্য দেশটির অন্যান্য অঞ্চলের সুনাম থাকলেও ফুকেট সবকিছু ছাপিয়ে আলাদা জায়গা দখল করে নিয়েছে বহু বছর আগে। এখানে রয়েছে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারের সমারোহ। এ জন্য শহরটি ইউনেসকো থেকে ‘সিটি অব গ্যাস্ট্রোনমি’র স্বীকৃতি পেয়েছে। চায়নিজ-পেরানাকান, মুসলিম, দক্ষিণ থাই এবং ভারতীয় খাবার পাওয়া যায় এখানে। হক্কিয়েন নুডলস, প্যান্ডান চিকেন কারি, চা-চাক, ডিম সাম ও স্থানীয় স্ট্রিট ফুড—সবই যেন স্বাদে অনন্য।
ফুকেটে সামুদ্রিক খাবার পাওয়া যায়। এর বিশেষত্ব হলো, চাইলে এসব খাবার কম বা বেশি ঝাল দিয়ে নিজের মতো করে খাওয়া যায়।

সকালের স্থানীয় খাবার
ফুকেটের সকালের শুরুটা করতে পারেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মন সম্প্রদায়ের তৈরি নুডলস দিয়ে। এটি সাধারণ নুডলসের মতো নয়। টক-মিষ্টি স্বাদের এই নুডলস থাই পরিবারগুলো সাধারণত বড় টেবিলে বসে একসঙ্গে খায়। নুডলসের সঙ্গে থাকে তরকারি। সবাই নিজের মতো করে তরকারির সঙ্গে নুডলস মিশিয়ে নেয়। কেউ একটু বেশি ঝাল পছন্দ করে, কেউ হালকা। ব্যাংককের লোকেরা এটাকে কানোম জিন নামইয়া বলে ডাকে। এ ছাড়া এই নুডলসের আরও একটি বিশেষ রেসিপি আছে। তাকে বলা হয় কাং ক্রাটি। এটি নারকেলের দুধে তৈরি ক্রিমি তরকারির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। এর সঙ্গে থাকে সবজি, সরিষাপাতার আচার, থাই বেসিল ও শুকনা সারডিন।
ঠান্ডা পানীয়
ফুকেটের জনপ্রিয় ঠান্ডা পানীয় চা-চাক। ভাবতে পারেন, চা আবার ঠান্ডা হয় কীভাবে! সেখানকার শ্রমিকেরা চিনি ছাড়া চা খেতে পারতেন না। তাই চায়ের তেতো স্বাদ কমানোর জন্য গরুর দুধ মিশিয়ে দেওয়া হতো। সেখান থেকে আজকের চা-চাক। এখন এটি হয় ক্রিমি ও মিষ্টি। অনেকটা ক্যারামেলের মতো স্বাদ এর। এতে সাধারণত বরফ দিয়ে পরিবেশন করা হয়। তাই গরমের দিন এটির বেশ চাহিদা থাকে।

হক্কিয়েন নুডলস
ফুকেটের চুই-চুই নুডলস চীনের জনপ্রিয় খাবার। তবে চীনের মূল রেসিপি থেকে ফুকেটের রেসিপিতে পরিবর্তন রয়েছে। এখানকার চায়নিজ সম্প্রদায় এই নুডলস সামুদ্রিক খাবারের সঙ্গে পরিবেশন করে। ছোট ছোট শামুক, ডিমের কুসুম, শুকনা পেঁয়াজ, সবুজ সবজি ও কালো মরিচ দিয়ে এই নুডলস রান্না করা হয়। এর সঙ্গে চুলায় রান্নার কারণে নুডলসে যোগ হয় ধোঁয়াটে স্বাদ। ফলে এই স্মোকি নুডলস হয়ে ওঠে আরও সুস্বাদু।
মিষ্টি ও ডেজার্ট
ভ্রমণে গিয়ে স্থানীয় মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রতি অনেকের আকর্ষণ থাকে। ফুকেটে গেলে ওহ আউ খেয়ে দেখতে পারেন। এটি মূলত ঠান্ডা জেলিজাতীয় মিষ্টি। পাকা কলা, রেড বিন ও সামান্য চিনি মিশিয়ে তৈরি করা হয় এটি। ওপরে দেওয়া হয় বরফের কুচি। এই খাবার ফুকেটের সংস্কৃতির অংশ। সেখানকার বিভিন্ন দোকানে এটি পাওয়া যায় খুব সহজে; বিশেষ করে গরমের সময় এটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
ঝাল ও টক স্বাদের স্যুপ
ফুকেটের বিশেষ স্যুপ তোম সোম প্লা। এটি তৈরি হয় কলাগাছের আঁশসমৃদ্ধ নরম কাণ্ড ব্যবহার করে। এটি স্যুপে যোগ করে হালকা মিষ্টি ও টক স্বাদ। এ স্যুপে থাকে কাজুবাদাম, সুইট গ্রুপার মাছ, বিভিন্ন স্থানীয় সবজি ও তেঁতুল। এটি প্রথম চুমুকে আপনাকে সতেজ করে তুলবে। ফুকেটে সকালের বা মধ্যাহ্নভোজের জন্য এটি জনপ্রিয় ও স্বাস্থ্যকর খাবার।
ভেজিটেরিয়ান ও ভেগান
খাবারের জন্য জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে এখন বাহারি ভেজিটেরিয়ান ও ভেগান খাবারের সমাহার চোখে পড়ে। ফুকেটেও এ ধরনের খাবারের অভাব নেই। অনেক রেস্টুরেন্টে নারকেলের স্যুপ, টফু ও সবজি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায়। হক্কিয়েন নুডলসও ভেজিটেরিয়ানদের জন্য আলাদা করে তৈরি করা হয়।
থাইল্যান্ডে যাঁরা দ্বীপ ভ্রমণে যেতে চান, তাঁদের অন্যতম গন্তব্য এই ফুকেট। পাশাপাশি বাহারি খাবারের জন্যও এটি বেশ জনপ্রিয়। তাই ভোজনরসিক পর্যটকেরা এখানে একের মধ্যে দুই আনন্দ উপভোগ করেন।
সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট

পুরো থাইল্যান্ড পর্যটকদের জন্য কোনো না কোনোভাবে সেজে থাকে। এই যেমন ফুকেটের কথা বলি। খাবারের জন্য দেশটির অন্যান্য অঞ্চলের সুনাম থাকলেও ফুকেট সবকিছু ছাপিয়ে আলাদা জায়গা দখল করে নিয়েছে বহু বছর আগে। এখানে রয়েছে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারের সমারোহ। এ জন্য শহরটি ইউনেসকো থেকে ‘সিটি অব গ্যাস্ট্রোনমি’র স্বীকৃতি পেয়েছে। চায়নিজ-পেরানাকান, মুসলিম, দক্ষিণ থাই এবং ভারতীয় খাবার পাওয়া যায় এখানে। হক্কিয়েন নুডলস, প্যান্ডান চিকেন কারি, চা-চাক, ডিম সাম ও স্থানীয় স্ট্রিট ফুড—সবই যেন স্বাদে অনন্য।
ফুকেটে সামুদ্রিক খাবার পাওয়া যায়। এর বিশেষত্ব হলো, চাইলে এসব খাবার কম বা বেশি ঝাল দিয়ে নিজের মতো করে খাওয়া যায়।

সকালের স্থানীয় খাবার
ফুকেটের সকালের শুরুটা করতে পারেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মন সম্প্রদায়ের তৈরি নুডলস দিয়ে। এটি সাধারণ নুডলসের মতো নয়। টক-মিষ্টি স্বাদের এই নুডলস থাই পরিবারগুলো সাধারণত বড় টেবিলে বসে একসঙ্গে খায়। নুডলসের সঙ্গে থাকে তরকারি। সবাই নিজের মতো করে তরকারির সঙ্গে নুডলস মিশিয়ে নেয়। কেউ একটু বেশি ঝাল পছন্দ করে, কেউ হালকা। ব্যাংককের লোকেরা এটাকে কানোম জিন নামইয়া বলে ডাকে। এ ছাড়া এই নুডলসের আরও একটি বিশেষ রেসিপি আছে। তাকে বলা হয় কাং ক্রাটি। এটি নারকেলের দুধে তৈরি ক্রিমি তরকারির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। এর সঙ্গে থাকে সবজি, সরিষাপাতার আচার, থাই বেসিল ও শুকনা সারডিন।
ঠান্ডা পানীয়
ফুকেটের জনপ্রিয় ঠান্ডা পানীয় চা-চাক। ভাবতে পারেন, চা আবার ঠান্ডা হয় কীভাবে! সেখানকার শ্রমিকেরা চিনি ছাড়া চা খেতে পারতেন না। তাই চায়ের তেতো স্বাদ কমানোর জন্য গরুর দুধ মিশিয়ে দেওয়া হতো। সেখান থেকে আজকের চা-চাক। এখন এটি হয় ক্রিমি ও মিষ্টি। অনেকটা ক্যারামেলের মতো স্বাদ এর। এতে সাধারণত বরফ দিয়ে পরিবেশন করা হয়। তাই গরমের দিন এটির বেশ চাহিদা থাকে।

হক্কিয়েন নুডলস
ফুকেটের চুই-চুই নুডলস চীনের জনপ্রিয় খাবার। তবে চীনের মূল রেসিপি থেকে ফুকেটের রেসিপিতে পরিবর্তন রয়েছে। এখানকার চায়নিজ সম্প্রদায় এই নুডলস সামুদ্রিক খাবারের সঙ্গে পরিবেশন করে। ছোট ছোট শামুক, ডিমের কুসুম, শুকনা পেঁয়াজ, সবুজ সবজি ও কালো মরিচ দিয়ে এই নুডলস রান্না করা হয়। এর সঙ্গে চুলায় রান্নার কারণে নুডলসে যোগ হয় ধোঁয়াটে স্বাদ। ফলে এই স্মোকি নুডলস হয়ে ওঠে আরও সুস্বাদু।
মিষ্টি ও ডেজার্ট
ভ্রমণে গিয়ে স্থানীয় মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রতি অনেকের আকর্ষণ থাকে। ফুকেটে গেলে ওহ আউ খেয়ে দেখতে পারেন। এটি মূলত ঠান্ডা জেলিজাতীয় মিষ্টি। পাকা কলা, রেড বিন ও সামান্য চিনি মিশিয়ে তৈরি করা হয় এটি। ওপরে দেওয়া হয় বরফের কুচি। এই খাবার ফুকেটের সংস্কৃতির অংশ। সেখানকার বিভিন্ন দোকানে এটি পাওয়া যায় খুব সহজে; বিশেষ করে গরমের সময় এটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
ঝাল ও টক স্বাদের স্যুপ
ফুকেটের বিশেষ স্যুপ তোম সোম প্লা। এটি তৈরি হয় কলাগাছের আঁশসমৃদ্ধ নরম কাণ্ড ব্যবহার করে। এটি স্যুপে যোগ করে হালকা মিষ্টি ও টক স্বাদ। এ স্যুপে থাকে কাজুবাদাম, সুইট গ্রুপার মাছ, বিভিন্ন স্থানীয় সবজি ও তেঁতুল। এটি প্রথম চুমুকে আপনাকে সতেজ করে তুলবে। ফুকেটে সকালের বা মধ্যাহ্নভোজের জন্য এটি জনপ্রিয় ও স্বাস্থ্যকর খাবার।
ভেজিটেরিয়ান ও ভেগান
খাবারের জন্য জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে এখন বাহারি ভেজিটেরিয়ান ও ভেগান খাবারের সমাহার চোখে পড়ে। ফুকেটেও এ ধরনের খাবারের অভাব নেই। অনেক রেস্টুরেন্টে নারকেলের স্যুপ, টফু ও সবজি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায়। হক্কিয়েন নুডলসও ভেজিটেরিয়ানদের জন্য আলাদা করে তৈরি করা হয়।
থাইল্যান্ডে যাঁরা দ্বীপ ভ্রমণে যেতে চান, তাঁদের অন্যতম গন্তব্য এই ফুকেট। পাশাপাশি বাহারি খাবারের জন্যও এটি বেশ জনপ্রিয়। তাই ভোজনরসিক পর্যটকেরা এখানে একের মধ্যে দুই আনন্দ উপভোগ করেন।
সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট

ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকিহিনি, এককথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণ কাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে।
০২ মে ২০২১
ব্রিটিশরা তাঁতিদের আঙুল কেটে দিত। বাংলাদেশের বহু মানুষ এই তথ্যে বিশ্বাস করে চলেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব আছে বলে কোনো গবেষণায় এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু মানুষ সেই তথ্য বিশ্বাস করে।
১৭ ঘণ্টা আগে
আজ গ্রহরা আপনার জীবনে এক ‘লার্নিং সেশন’-এর আয়োজন করেছে। নতুন কিছু শেখার সুযোগ পাবেন, কিন্তু সাবধানে! আর্থিক লেনদেনে একটু সংযত হোন, না হলে ‘শিক্ষানবিশ ফি’ হিসেবে কিছু টাকা বেরিয়ে যেতে পারে। প্রেমের সম্পর্কে একটা ছোট ‘টক শো’ হতে পারে, যেখানে আপনার...
১৮ ঘণ্টা আগে
সেদ্ধ ডিম ভুনা বা আলু দিয়ে ঝোল করে তো সব সময় রান্না করেন। এবার না-হয় একটু ভিন্নভাবে রাঁধলেন! আপনাদের জন্য আমড়া দিয়ে ডিমের টক ঝোলের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।...
১৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

ব্রিটিশরা তাঁতিদের আঙুল কেটে দিত। বাংলাদেশের বহু মানুষ এই তথ্যে বিশ্বাস করে চলেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব আছে বলে কোনো গবেষণায় এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু মানুষ সেই তথ্য বিশ্বাস করে। আবার ধরুন, ব্রিটিশ সেনাদের ধরে ধরে অন্ধকার কূপে নিক্ষেপ করেছিলেন সিরাজউদ্দৌলা। এমন বহু তথ্য আমাদের চারদিকে ঘুরে বেড়ায় প্রতিনিয়ত। এসব তথ্য অনেকে ধ্রুব সত্য বলে বিশ্বাসও করেন। কিন্তু সেসব তথ্যের বাস্তবতাই খুব কম।
সে রকমই জনপ্রিয় কিছু ভুল ধারণা এবং সেগুলোর পিঠের সত্য তথ্যগুলো জেনে নিই।
ভুল ধারণা: প্রতিদিন ঠিক আট গ্লাস পানি পান করতে হবে।
সত্য: এটি অপরিহার্যভাবে কোনো নিয়ম নয়। মায়ো ক্লিনিকের তথ্য মতে, কারও প্রতিদিন কতটা পানি প্রয়োজন, তা সামগ্রিক স্বাস্থ্য, কার্যকলাপের স্তর এবং ভৌগোলিকভাবে কোথায় থাকেন ইত্যাদি শর্তের ওপর নির্ভর করে।
ভুল ধারণা: কিছু বিশেষ চা পান করলে শরীর ডিটক্স হয়।
সত্য: চা পান করলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় না। ভক্স ডট কম তাদের একটি লেখায় জানিয়েছে, যদি আপনি কোনো ধরনের নেশাগ্রস্ত না হন বা অ্যালকোহল বিষক্রিয়ার ঝুঁকিতে না থাকেন, তাহলে আপনার ডিটক্সের প্রয়োজন নেই।
ভুল ধারণা: ভেজা চুলে বাইরে গেলে সর্দি-কাশি হয়।
সত্য: মায়ো ক্লিনিক জানিয়েছে, সর্দি-কাশি ভাইরাসের মাধ্যমে হয়। এর মানে হলো, ভেজা চুলে বাইরে গেলেই সর্দি-কাশি হবে না। সর্দি-কাশি ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়, ভেজা চুলের মাধ্যমে নয়।
ভুল ধারণা: মানুষ মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে।
সত্য: স্নায়ুবিজ্ঞানী ব্যারি গর্ডন ‘সায়েন্টিফিক আমেরিকান’কে জানিয়েছেন, মানুষ তাদের মস্তিষ্কের প্রায় প্রতিটি অংশ ব্যবহার করে এবং এটি প্রায় সব সময় সক্রিয় থাকে।
ভুল ধারণা: চিনি শিশুদের বেশি চঞ্চল করে তোলে।
সত্য: যদিও অনেক বাবা-মা তাদের শিশুদের বেশি চঞ্চল হয়ে যাওয়ার ভয়ে চিনি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার দেন না। এটি কেবল একটি গুজব। জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যে চিনি শিশুদের আচরণ প্রভাবিত করে না।
ভুল ধারণা: মাথা ন্যাড়া করলে চুল ঘন হয়ে গজায়।
সত্য: মায়ো ক্লিনিকের তথ্য মতে, চুল শেভ করলে এর রং পরিবর্তন হয় না বা এর বৃদ্ধির হার অথবা ঘনত্বকেও প্রভাবিত করে না। ন্যাড়া করলে যা হয় তা হলো, চুলের প্রান্তটি ভোঁতা হয়ে যায় এবং কারও কারও ক্ষেত্রে এটি গজানোর সময় বেশি মোটা মনে হতে পারে।
ভুল ধারণা: একই জায়গায় দুবার বজ্রপাত হয় না।
সত্য: ২০০৩ সালে, নাসা এই ভুল ধারণা খণ্ডন করে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, একই জায়গায় শুধু একাধিকবার বজ্রপাতই হয় না, বরং সেটি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময়ই ঘটে থাকে।
ভুল ধারণা: আঙুল ফোটালে বাতের ব্যথা হয়।
সত্য: হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল জানিয়েছে, আঙুল ফোটালে বাতের ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে না। আঙুল ফোটানোর শব্দ হয় গ্যাসের বুদ্বুদ ভেঙে যাওয়ার কারণে।
ভুল ধারণা: ব্যাঙ বা টাড থেকে আঁচিল হয়।
সত্য: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের মতে, এই গুজব সম্ভবত এই তথ্য থেকে উদ্ভূত হয়েছে যে ব্যাঙ বা টাডদের নিজেদের চামড়ায় আঁচিলের মতো গোটা থাকে। কিন্তু সেগুলো শুধু গ্রন্থি। সেগুলো এমন কোনো পদার্থ নিঃসরণ করে না, যা মানুষের ত্বকে আঁচিল সৃষ্টি করতে পারে। আঁচিল হয় হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস নামক একটি ভাইরাসের কারণে। সেটি সংক্রামিত মানুষের ত্বক থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ছড়ায়।
ভুল ধারণা: মানুষের তৈরি একমাত্র বস্তু হিসেবে মহাকাশ থেকে চীনের মহাপ্রাচীর দেখা যায়।
সত্য: নাসা এবং চীনা নভোচারী ইয়াং লিউয়েইর মতে, মহাকাশ থেকে আসলে এই কাঠামো দেখা যায় না।
ভুল ধারণা: লাল রং দেখলেই ষাঁড় রেগে যায়।
সত্য: সত্য জেনে আসলে অবাক হবেন! ষাঁড় ও অন্যান্য গবাদিপশু আসলে বর্ণান্ধ। লাইভ সায়েন্সের মতে, ষাঁড়ের লড়াইয়ে ম্যাটাডর যখন কেপ নাড়াচাড়া করে, তখন তার নড়াচড়ায় ষাঁড় সম্ভবত বিরক্ত হয়ে আক্রমণ করে। অন্য সময়ে গবাদিপশু বিরক্ত হলেই কেবল রেগে যায়, রং দেখে নয়।
ভুল ধারণা: আইনস্টাইন গণিতে ফেল করা খারাপ ছাত্র ছিলেন।
সত্য: এই বহুল প্রচলিত গুজব আইনস্টাইন নিজেই ১৯৩৫ সালে খণ্ডন করেছিলেন। তিনি প্রিন্সটনে এক ইহুদি শিক্ষককে বলেছিলেন, ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই তিনি ডিফারেনশিয়াল ও ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাসে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।
ভুল ধারণা: মধ্যযুগের মানুষ বিশ্বাস করত যে পৃথিবী চ্যাপটা।
সত্য: ইতিহাসবিদ জেফ্রি বার্টন রাসেল বলেছেন, অত্যন্ত কম ব্যতিক্রম বাদে, খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী থেকে পশ্চিমি সভ্যতার ইতিহাসে কোনো শিক্ষিত ব্যক্তি পৃথিবী চ্যাপটা বলে বিশ্বাস করতেন না।
ভুল ধারণা: নেপোলিয়ন আকৃতিতে খাটো ছিলেন।
সত্য: নেপোলিয়ন সম্ভবত তাঁর সময়ের গড় উচ্চতার মানুষ ছিলেন। ইতিহাসবিদদের ধারণা, এই বিশেষ গুজব ১৮০০ সালের শুরুতে জেমস গিলরের আঁকা একটি কার্টুন থেকে এসেছে।
ভুল ধারণা: গোল্ডফিশের স্মৃতি কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়।
সত্য: এই ধারণা একদম ভুল। গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, গোল্ডফিশের স্মৃতি পাঁচ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে!
ভুল ধারণা: বাদুড় অন্ধ।
সত্য: বাদুড় আসলে দেখতে পারে। ব্যাট (বাদুড়) কনজারভেশন সংস্থার সাবেক নির্বাহী পরিচালক রব মাইসের মতে, বাদুড় মানুষের চেয়ে তিন গুণ ভালো দেখতে পারে।
ভুল ধারণা: মাছি মাত্র ২৪ ঘণ্টা বাঁচে।
সত্য: প্রজাতি ও পরিবেশভেদে মাছির জীবনচক্র ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। প্রজাতি ও পরিবেশের ওপর নির্ভর করে মাছি কয়েক দিন থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। এমনকি সাধারণ মাছিও এক মাস পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
ভুল ধারণা: মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট বা এমএসজি বিষাক্ত।
সত্য: প্রক্রিয়াজাত খাবারে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট বা এমএসজির ব্যবহার প্রচলিত কিন্তু এটি বিষাক্ত নয়। এটি প্রায়শই এমন খাবারে পাওয়া যায়, যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ‘খারাপ’ বলে মনে করা হয়। কারণ, সেসব খাবারে চর্বি ও সোডিয়াম বেশি থাকে। কিন্তু এমএসজি নিজে থেকে খারাপ নয়।
ভুল ধারণা: পানিতে লবণ দিলে তা দ্রুত ফুটতে থাকে।
সত্য: অধ্যাপক লেসলি-অ্যান গিল্ডিংস ও ‘লাইভসায়েন্স’র মতে, নোনাপানি বিশুদ্ধ পানির চেয়ে দ্রুত গরম হবে, তবু এর ভর বেশি হওয়ায় এটির স্ফুটনাঙ্ক বেশি থাকে। সোজা কথায়, পানিতে লবণ মেশালে তা দ্রুত ফোটে না।
সূত্র: বাজ ফিড, সিলিকন রিপাবলিক ডট কম, বেস্ট লাইফ

ব্রিটিশরা তাঁতিদের আঙুল কেটে দিত। বাংলাদেশের বহু মানুষ এই তথ্যে বিশ্বাস করে চলেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব আছে বলে কোনো গবেষণায় এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু মানুষ সেই তথ্য বিশ্বাস করে। আবার ধরুন, ব্রিটিশ সেনাদের ধরে ধরে অন্ধকার কূপে নিক্ষেপ করেছিলেন সিরাজউদ্দৌলা। এমন বহু তথ্য আমাদের চারদিকে ঘুরে বেড়ায় প্রতিনিয়ত। এসব তথ্য অনেকে ধ্রুব সত্য বলে বিশ্বাসও করেন। কিন্তু সেসব তথ্যের বাস্তবতাই খুব কম।
সে রকমই জনপ্রিয় কিছু ভুল ধারণা এবং সেগুলোর পিঠের সত্য তথ্যগুলো জেনে নিই।
ভুল ধারণা: প্রতিদিন ঠিক আট গ্লাস পানি পান করতে হবে।
সত্য: এটি অপরিহার্যভাবে কোনো নিয়ম নয়। মায়ো ক্লিনিকের তথ্য মতে, কারও প্রতিদিন কতটা পানি প্রয়োজন, তা সামগ্রিক স্বাস্থ্য, কার্যকলাপের স্তর এবং ভৌগোলিকভাবে কোথায় থাকেন ইত্যাদি শর্তের ওপর নির্ভর করে।
ভুল ধারণা: কিছু বিশেষ চা পান করলে শরীর ডিটক্স হয়।
সত্য: চা পান করলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় না। ভক্স ডট কম তাদের একটি লেখায় জানিয়েছে, যদি আপনি কোনো ধরনের নেশাগ্রস্ত না হন বা অ্যালকোহল বিষক্রিয়ার ঝুঁকিতে না থাকেন, তাহলে আপনার ডিটক্সের প্রয়োজন নেই।
ভুল ধারণা: ভেজা চুলে বাইরে গেলে সর্দি-কাশি হয়।
সত্য: মায়ো ক্লিনিক জানিয়েছে, সর্দি-কাশি ভাইরাসের মাধ্যমে হয়। এর মানে হলো, ভেজা চুলে বাইরে গেলেই সর্দি-কাশি হবে না। সর্দি-কাশি ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়, ভেজা চুলের মাধ্যমে নয়।
ভুল ধারণা: মানুষ মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে।
সত্য: স্নায়ুবিজ্ঞানী ব্যারি গর্ডন ‘সায়েন্টিফিক আমেরিকান’কে জানিয়েছেন, মানুষ তাদের মস্তিষ্কের প্রায় প্রতিটি অংশ ব্যবহার করে এবং এটি প্রায় সব সময় সক্রিয় থাকে।
ভুল ধারণা: চিনি শিশুদের বেশি চঞ্চল করে তোলে।
সত্য: যদিও অনেক বাবা-মা তাদের শিশুদের বেশি চঞ্চল হয়ে যাওয়ার ভয়ে চিনি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার দেন না। এটি কেবল একটি গুজব। জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যে চিনি শিশুদের আচরণ প্রভাবিত করে না।
ভুল ধারণা: মাথা ন্যাড়া করলে চুল ঘন হয়ে গজায়।
সত্য: মায়ো ক্লিনিকের তথ্য মতে, চুল শেভ করলে এর রং পরিবর্তন হয় না বা এর বৃদ্ধির হার অথবা ঘনত্বকেও প্রভাবিত করে না। ন্যাড়া করলে যা হয় তা হলো, চুলের প্রান্তটি ভোঁতা হয়ে যায় এবং কারও কারও ক্ষেত্রে এটি গজানোর সময় বেশি মোটা মনে হতে পারে।
ভুল ধারণা: একই জায়গায় দুবার বজ্রপাত হয় না।
সত্য: ২০০৩ সালে, নাসা এই ভুল ধারণা খণ্ডন করে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, একই জায়গায় শুধু একাধিকবার বজ্রপাতই হয় না, বরং সেটি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময়ই ঘটে থাকে।
ভুল ধারণা: আঙুল ফোটালে বাতের ব্যথা হয়।
সত্য: হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল জানিয়েছে, আঙুল ফোটালে বাতের ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে না। আঙুল ফোটানোর শব্দ হয় গ্যাসের বুদ্বুদ ভেঙে যাওয়ার কারণে।
ভুল ধারণা: ব্যাঙ বা টাড থেকে আঁচিল হয়।
সত্য: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের মতে, এই গুজব সম্ভবত এই তথ্য থেকে উদ্ভূত হয়েছে যে ব্যাঙ বা টাডদের নিজেদের চামড়ায় আঁচিলের মতো গোটা থাকে। কিন্তু সেগুলো শুধু গ্রন্থি। সেগুলো এমন কোনো পদার্থ নিঃসরণ করে না, যা মানুষের ত্বকে আঁচিল সৃষ্টি করতে পারে। আঁচিল হয় হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস নামক একটি ভাইরাসের কারণে। সেটি সংক্রামিত মানুষের ত্বক থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ছড়ায়।
ভুল ধারণা: মানুষের তৈরি একমাত্র বস্তু হিসেবে মহাকাশ থেকে চীনের মহাপ্রাচীর দেখা যায়।
সত্য: নাসা এবং চীনা নভোচারী ইয়াং লিউয়েইর মতে, মহাকাশ থেকে আসলে এই কাঠামো দেখা যায় না।
ভুল ধারণা: লাল রং দেখলেই ষাঁড় রেগে যায়।
সত্য: সত্য জেনে আসলে অবাক হবেন! ষাঁড় ও অন্যান্য গবাদিপশু আসলে বর্ণান্ধ। লাইভ সায়েন্সের মতে, ষাঁড়ের লড়াইয়ে ম্যাটাডর যখন কেপ নাড়াচাড়া করে, তখন তার নড়াচড়ায় ষাঁড় সম্ভবত বিরক্ত হয়ে আক্রমণ করে। অন্য সময়ে গবাদিপশু বিরক্ত হলেই কেবল রেগে যায়, রং দেখে নয়।
ভুল ধারণা: আইনস্টাইন গণিতে ফেল করা খারাপ ছাত্র ছিলেন।
সত্য: এই বহুল প্রচলিত গুজব আইনস্টাইন নিজেই ১৯৩৫ সালে খণ্ডন করেছিলেন। তিনি প্রিন্সটনে এক ইহুদি শিক্ষককে বলেছিলেন, ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই তিনি ডিফারেনশিয়াল ও ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাসে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।
ভুল ধারণা: মধ্যযুগের মানুষ বিশ্বাস করত যে পৃথিবী চ্যাপটা।
সত্য: ইতিহাসবিদ জেফ্রি বার্টন রাসেল বলেছেন, অত্যন্ত কম ব্যতিক্রম বাদে, খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী থেকে পশ্চিমি সভ্যতার ইতিহাসে কোনো শিক্ষিত ব্যক্তি পৃথিবী চ্যাপটা বলে বিশ্বাস করতেন না।
ভুল ধারণা: নেপোলিয়ন আকৃতিতে খাটো ছিলেন।
সত্য: নেপোলিয়ন সম্ভবত তাঁর সময়ের গড় উচ্চতার মানুষ ছিলেন। ইতিহাসবিদদের ধারণা, এই বিশেষ গুজব ১৮০০ সালের শুরুতে জেমস গিলরের আঁকা একটি কার্টুন থেকে এসেছে।
ভুল ধারণা: গোল্ডফিশের স্মৃতি কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়।
সত্য: এই ধারণা একদম ভুল। গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, গোল্ডফিশের স্মৃতি পাঁচ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে!
ভুল ধারণা: বাদুড় অন্ধ।
সত্য: বাদুড় আসলে দেখতে পারে। ব্যাট (বাদুড়) কনজারভেশন সংস্থার সাবেক নির্বাহী পরিচালক রব মাইসের মতে, বাদুড় মানুষের চেয়ে তিন গুণ ভালো দেখতে পারে।
ভুল ধারণা: মাছি মাত্র ২৪ ঘণ্টা বাঁচে।
সত্য: প্রজাতি ও পরিবেশভেদে মাছির জীবনচক্র ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। প্রজাতি ও পরিবেশের ওপর নির্ভর করে মাছি কয়েক দিন থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। এমনকি সাধারণ মাছিও এক মাস পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
ভুল ধারণা: মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট বা এমএসজি বিষাক্ত।
সত্য: প্রক্রিয়াজাত খাবারে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট বা এমএসজির ব্যবহার প্রচলিত কিন্তু এটি বিষাক্ত নয়। এটি প্রায়শই এমন খাবারে পাওয়া যায়, যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ‘খারাপ’ বলে মনে করা হয়। কারণ, সেসব খাবারে চর্বি ও সোডিয়াম বেশি থাকে। কিন্তু এমএসজি নিজে থেকে খারাপ নয়।
ভুল ধারণা: পানিতে লবণ দিলে তা দ্রুত ফুটতে থাকে।
সত্য: অধ্যাপক লেসলি-অ্যান গিল্ডিংস ও ‘লাইভসায়েন্স’র মতে, নোনাপানি বিশুদ্ধ পানির চেয়ে দ্রুত গরম হবে, তবু এর ভর বেশি হওয়ায় এটির স্ফুটনাঙ্ক বেশি থাকে। সোজা কথায়, পানিতে লবণ মেশালে তা দ্রুত ফোটে না।
সূত্র: বাজ ফিড, সিলিকন রিপাবলিক ডট কম, বেস্ট লাইফ

ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকিহিনি, এককথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণ কাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে।
০২ মে ২০২১
খাবারের জন্য থাইল্যান্ডের অন্যান্য অঞ্চলের সুনাম থাকলেও ফুকেট সবকিছু ছাপিয়ে আলাদা জায়গা দখল করে নিয়েছে বহু বছর আগে। এখানে রয়েছে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারের সমারোহ। এ জন্য শহরটি ইউনেসকো থেকে সিটি অব গ্যাস্ট্রোনমি’র স্বীকৃতি পেয়েছে...
৮ ঘণ্টা আগে
আজ গ্রহরা আপনার জীবনে এক ‘লার্নিং সেশন’-এর আয়োজন করেছে। নতুন কিছু শেখার সুযোগ পাবেন, কিন্তু সাবধানে! আর্থিক লেনদেনে একটু সংযত হোন, না হলে ‘শিক্ষানবিশ ফি’ হিসেবে কিছু টাকা বেরিয়ে যেতে পারে। প্রেমের সম্পর্কে একটা ছোট ‘টক শো’ হতে পারে, যেখানে আপনার...
১৮ ঘণ্টা আগে
সেদ্ধ ডিম ভুনা বা আলু দিয়ে ঝোল করে তো সব সময় রান্না করেন। এবার না-হয় একটু ভিন্নভাবে রাঁধলেন! আপনাদের জন্য আমড়া দিয়ে ডিমের টক ঝোলের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।...
১৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আজ গ্রহরা আপনার জীবনে এক ‘লার্নিং সেশন’-এর আয়োজন করেছে। নতুন কিছু শেখার সুযোগ পাবেন, কিন্তু সাবধানে! আর্থিক লেনদেনে একটু সংযত হোন, না হলে ‘শিক্ষানবিশ ফি’ হিসেবে কিছু টাকা বেরিয়ে যেতে পারে। প্রেমের সম্পর্কে একটা ছোট ‘টক শো’ হতে পারে, যেখানে আপনার পুরোনো ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা হবে—মানে, হয়তো আপনি আজও ওনার মেসেজের রিপ্লাই দেননি! মেডিটেশন করুন। না হলে এত উত্তেজনা সামাল দিতে পারবেন না। আর গাড়ি চালানোর সময় শুধু সামনের দিকে তাকান, পাশের বাড়ির জানালার দিকে নয়।
বৃষ
আপনার আজকের দিনটা খুব ‘ইতিবাচক’ হবে। আপনি মানুষের সঙ্গে খুব ‘সংযুক্ত’ বোধ করবেন। কিন্তু সমস্যা হলো, এই সংযুক্তির অনুভূতিটা বজায় রাখার জন্য আপনার পকেট থেকে বেশ কিছু টাকা বেরিয়ে যেতে পারে—হয় বন্ধুদের খাওয়াবেন, না হয় অপ্রয়োজনীয় কিছু কিনবেন। পুরোনো পাওনা ফেরত আসতে পারে, কিন্তু সেটা আপনার হাতে আসার আগেই অন্য কোনো খরচের খাত রেডি হয়ে আছে। আজ আপনার দুর্বলতা কারও কাছে প্রকাশ করবেন না। বিশেষ করে, আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টটা যে দুর্বল, সেটা তো ভুলেও নয়!
মিথুন
আপনার যোগাযোগের দক্ষতা আজ তুঙ্গে! আপনি চাইলে আজ সাদা বস্তুকে কালো প্রমাণ করতে পারবেন। তবে সাবধান, এই বাড়তি বাগ্মিতার জন্য ব্লাড প্রেশার বাড়তে পারে। পারিবারিক জীবনে শান্তি বজায় থাকবে। কারণ, সবাই ধরে নিয়েছে, আপনি কথা বলতে শুরু করলেই আর থামবেন না, তাই সবাই চুপ থাকবে। ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ আসছে, তবে আপনার পার্টনারের মাধ্যমে আসতে পারে। একটু কম কথা বলুন। বিশ্বের সমস্যা সমাধান না করে বরং নিজের ডায়েটে মনোযোগ দিন।
কর্কট
কর্মক্ষেত্রে আপনার পদোন্নতি বা আর্থিক লাভের সম্ভাবনা জোরালো! খুবই আনন্দের খবর! কিন্তু সেই আনন্দের মধ্যে মায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ, বাড়ির কোনো আইনি সমস্যা আর সবচেয়ে বড় চাপ—আপনার ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করার সম্ভাবনা। আপনি ধনী হয়েও বন্দী! বিশ্বস্ত কাউকে মনের কথা খুলে বলুন। তবে খুব সাবধানে, সেই বিশ্বস্ত লোক যেন আবার আপনার প্রমোশনের কথাটা নিয়ে বসকে হিংসা না করে। ধৈর্য রাখুন। প্রমোশনের টাকা দিয়ে উকিল আর ডাক্তার সামলাতে হবে।
সিংহ
আপনার আত্মবিশ্বাস আজ আকাশ ছুঁয়েছে, আপনি নিজেকে আজ বনের রাজা মনে করছেন! নতুন প্রকল্প হাতে নিতে পারেন, কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সাবধান, আর্থিক প্রতারণার শিকার হওয়ার সামান্য ঝুঁকিও রয়েছে। প্রেমে উষ্ণতা বাড়বে, যা আপনার বাড়তি আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে। তবে পেটের সমস্যায় ভোগার শঙ্কা আছে। ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আয়নায় নিজের মুখ দেখুন। পেটে মোচড় দিলে অটোমেটিক আত্মবিশ্বাস কমে যাবে।
কন্যা
দিনের বেশির ভাগ সময় মানসিক দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যেই কাটবে। আপনি কী করবেন, কী পরবেন, কাকে ফোন করবেন—এই নিয়েই অর্ধেক দিন শেষ! কিন্তু কাজের জায়গায় আপনার দক্ষতা প্রদর্শনের চেষ্টা সফল হবে। পুরোনো পাওনা আদায়ে বিলম্ব হবে, যা আপনার আজকের ‘ব্যয় বৃদ্ধির’ খাতায় যোগ করবে। আপনার সুমিষ্ট কৌশল বা মিষ্টি কথা দিয়ে জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। আজ মিষ্টি কথা বলার আগে আয়-ব্যয়ের হিসাবটা চট করে একবার মনে করে নিন। দেখবেন, মিষ্টি কথা অটোমেটিক্যালি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
তুলা
আজ আপনার সম্পর্কের উন্নতি হবে, সেটা জীবনসঙ্গী হোক বা আপনার বসের সঙ্গে। কর্মক্ষেত্রে সহযোগিতা পাবেন, যা দিয়ে আপনি অনেক দিনের অসমাপ্ত কাজ শেষ করে ফেলবেন। আয়ের নতুন উৎস খুঁজে পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। নতুন ধারণা এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনা উপকারী হবে। আপনি এতটাই ‘কুল’ থাকবেন যে শত্রুরাও আপনার সঙ্গে সেলফি তুলতে চাইবে। অনুকূল পরিস্থিতির সদ্ব্যবহার করুন। মানে, সুযোগ পেলে আজই নতুন ইনকামের পথটা পাকাপাকি করে ফেলুন!
বৃশ্চিক
আজকের দিনটি আপনার জন্য শক্তি এবং উৎসাহে পরিপূর্ণ! আপনি চাইলে আজ একটা পাহাড়ও টপকাতে পারেন। কিন্তু আপনার পরিকল্পনায় সামান্য পরিবর্তন আসতে পারে। এই বাড়তি শক্তি আপনি হয়তো ব্যয় করবেন ঘরের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গোছানোর কাজে, যা আপনার কাজের থেকে বেশি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মনে হবে। কর্মক্ষেত্রে সুনাম বজায় থাকবে, কিন্তু আপনার দৃঢ়তা দেখলে সহকর্মীরা একটু ভয় পেতে পারে। আপনার এনার্জিটা কাজের দিকে রাখুন। পুরোনো ভুল-বোঝাবুঝি দূর করার জন্য এনার্জি খরচ করবেন না। কারণ, কিছু ভুল-বোঝাবুঝি থাকাই ভালো।
ধনু
ক্যারিয়ার ও পেশাদার জীবনে মনোযোগ দিন, যেকোনো নতুন শুরু সফল হতে পারে। ভ্রমণ ও শিক্ষাসংক্রান্ত কাজ লাভজনক হবে। আপনি হয়তো একটা জরুরি কাজে বাইরে যাবেন, আর সেই ভ্রমণ থেকেই মোটা টাকা উপার্জনের পথ খুলে যাবে। কিন্তু গ্রহরা আপনাকে স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দিতে বলছে—হালকা ব্যায়াম এবং সঠিক ডায়েট! আপনার আজকের দিনের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে—লাভজনক ভ্রমণে গিয়ে হোটেলের ফ্রি ব্রেকফাস্টের মিষ্টি অংশটুকু এড়িয়ে যাওয়া। শুভকামনা!
মকর
আজ আর্থিক বিষয়ে খুব সতর্ক থাকুন। যদিও পুরোনো দায়িত্ব পালন করা উপকারী হবে, তবু চাকরি বা ব্যবসায় হঠাৎ কোনো পরিবর্তন আসতে পারে। শান্ত থাকুন। আপনার এত দিনের স্থিতিশীল জীবনে হঠাৎ একটা ‘ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি’ হতে চলেছে। ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনি খুব কার্যকর হবেন। আত্মীয়দের সঙ্গে আলোচনায় ধৈর্য ধরুন। কারণ, তাদের কথা শুনলে আপনার খরচ আরও বাড়তে পারে। আপনার লক্ষ্য থেকে সরে যাবেন না। বিশেষ করে আপনার বাজেট থেকে তো একদমই না!
কুম্ভ
আজ আপনি সামাজিক ও পেশাদার বিষয়ে বেশ এগিয়ে যাবেন। বন্ধু এবং সহকর্মীরা আপনাকে সাহায্য করবে। আপনি মানসিকভাবে ইতিবাচক থাকবেন এবং নতুন সুযোগের জন্য মন খোলা রাখবেন। আপনি আজ সবার নজরের কেন্দ্রে থাকবেন। তবে জ্যোতিষীরা আপনাকে ‘আবেগ নিয়ন্ত্রণে’ রাখতে বলছে। কারণ, পাবলিক প্লেসে আপনার অতি-উৎসাহ দেখলে অন্যরা আপনাকে ভুল বুঝতে পারে। আপনি আজ বুদ্ধি খাটিয়ে সব সমস্যার সমাধান করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, সব সমস্যার মূলে আপনি নিজেই!
মীন
আজ আপনার দিনটি মসৃণ ও শান্ত হবে। আধ্যাত্মিক কাজে সময় ব্যয় করা উপকারী। আপনি হয়তো মেডিটেশন করছেন বা কোনো ধর্মীয় বই পড়ছেন, আর ঠিক সেই সময় আপনার স্থগিত কোনো কাজ বা আর্থিক দিক থেকে একটা গোপন গতি আসবে। পুরোনো কাজ শেষ করার জন্য এটা সেরা সময়। ক্যারিয়ার আর আর্থিক বিষয়ে একটু ধৈর্য ধরুন—আপনার সাফল্যের খবরটা একটু পরে আসুক। আজ আপনি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করবেন, যার জন্য কেউ আপনাকে তাগাদা দেয়নি। এই রহস্যজনক কর্মদক্ষতা বজায় রাখুন।

মেষ
আজ গ্রহরা আপনার জীবনে এক ‘লার্নিং সেশন’-এর আয়োজন করেছে। নতুন কিছু শেখার সুযোগ পাবেন, কিন্তু সাবধানে! আর্থিক লেনদেনে একটু সংযত হোন, না হলে ‘শিক্ষানবিশ ফি’ হিসেবে কিছু টাকা বেরিয়ে যেতে পারে। প্রেমের সম্পর্কে একটা ছোট ‘টক শো’ হতে পারে, যেখানে আপনার পুরোনো ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা হবে—মানে, হয়তো আপনি আজও ওনার মেসেজের রিপ্লাই দেননি! মেডিটেশন করুন। না হলে এত উত্তেজনা সামাল দিতে পারবেন না। আর গাড়ি চালানোর সময় শুধু সামনের দিকে তাকান, পাশের বাড়ির জানালার দিকে নয়।
বৃষ
আপনার আজকের দিনটা খুব ‘ইতিবাচক’ হবে। আপনি মানুষের সঙ্গে খুব ‘সংযুক্ত’ বোধ করবেন। কিন্তু সমস্যা হলো, এই সংযুক্তির অনুভূতিটা বজায় রাখার জন্য আপনার পকেট থেকে বেশ কিছু টাকা বেরিয়ে যেতে পারে—হয় বন্ধুদের খাওয়াবেন, না হয় অপ্রয়োজনীয় কিছু কিনবেন। পুরোনো পাওনা ফেরত আসতে পারে, কিন্তু সেটা আপনার হাতে আসার আগেই অন্য কোনো খরচের খাত রেডি হয়ে আছে। আজ আপনার দুর্বলতা কারও কাছে প্রকাশ করবেন না। বিশেষ করে, আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টটা যে দুর্বল, সেটা তো ভুলেও নয়!
মিথুন
আপনার যোগাযোগের দক্ষতা আজ তুঙ্গে! আপনি চাইলে আজ সাদা বস্তুকে কালো প্রমাণ করতে পারবেন। তবে সাবধান, এই বাড়তি বাগ্মিতার জন্য ব্লাড প্রেশার বাড়তে পারে। পারিবারিক জীবনে শান্তি বজায় থাকবে। কারণ, সবাই ধরে নিয়েছে, আপনি কথা বলতে শুরু করলেই আর থামবেন না, তাই সবাই চুপ থাকবে। ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ আসছে, তবে আপনার পার্টনারের মাধ্যমে আসতে পারে। একটু কম কথা বলুন। বিশ্বের সমস্যা সমাধান না করে বরং নিজের ডায়েটে মনোযোগ দিন।
কর্কট
কর্মক্ষেত্রে আপনার পদোন্নতি বা আর্থিক লাভের সম্ভাবনা জোরালো! খুবই আনন্দের খবর! কিন্তু সেই আনন্দের মধ্যে মায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ, বাড়ির কোনো আইনি সমস্যা আর সবচেয়ে বড় চাপ—আপনার ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করার সম্ভাবনা। আপনি ধনী হয়েও বন্দী! বিশ্বস্ত কাউকে মনের কথা খুলে বলুন। তবে খুব সাবধানে, সেই বিশ্বস্ত লোক যেন আবার আপনার প্রমোশনের কথাটা নিয়ে বসকে হিংসা না করে। ধৈর্য রাখুন। প্রমোশনের টাকা দিয়ে উকিল আর ডাক্তার সামলাতে হবে।
সিংহ
আপনার আত্মবিশ্বাস আজ আকাশ ছুঁয়েছে, আপনি নিজেকে আজ বনের রাজা মনে করছেন! নতুন প্রকল্প হাতে নিতে পারেন, কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সাবধান, আর্থিক প্রতারণার শিকার হওয়ার সামান্য ঝুঁকিও রয়েছে। প্রেমে উষ্ণতা বাড়বে, যা আপনার বাড়তি আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে। তবে পেটের সমস্যায় ভোগার শঙ্কা আছে। ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আয়নায় নিজের মুখ দেখুন। পেটে মোচড় দিলে অটোমেটিক আত্মবিশ্বাস কমে যাবে।
কন্যা
দিনের বেশির ভাগ সময় মানসিক দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যেই কাটবে। আপনি কী করবেন, কী পরবেন, কাকে ফোন করবেন—এই নিয়েই অর্ধেক দিন শেষ! কিন্তু কাজের জায়গায় আপনার দক্ষতা প্রদর্শনের চেষ্টা সফল হবে। পুরোনো পাওনা আদায়ে বিলম্ব হবে, যা আপনার আজকের ‘ব্যয় বৃদ্ধির’ খাতায় যোগ করবে। আপনার সুমিষ্ট কৌশল বা মিষ্টি কথা দিয়ে জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। আজ মিষ্টি কথা বলার আগে আয়-ব্যয়ের হিসাবটা চট করে একবার মনে করে নিন। দেখবেন, মিষ্টি কথা অটোমেটিক্যালি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
তুলা
আজ আপনার সম্পর্কের উন্নতি হবে, সেটা জীবনসঙ্গী হোক বা আপনার বসের সঙ্গে। কর্মক্ষেত্রে সহযোগিতা পাবেন, যা দিয়ে আপনি অনেক দিনের অসমাপ্ত কাজ শেষ করে ফেলবেন। আয়ের নতুন উৎস খুঁজে পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। নতুন ধারণা এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনা উপকারী হবে। আপনি এতটাই ‘কুল’ থাকবেন যে শত্রুরাও আপনার সঙ্গে সেলফি তুলতে চাইবে। অনুকূল পরিস্থিতির সদ্ব্যবহার করুন। মানে, সুযোগ পেলে আজই নতুন ইনকামের পথটা পাকাপাকি করে ফেলুন!
বৃশ্চিক
আজকের দিনটি আপনার জন্য শক্তি এবং উৎসাহে পরিপূর্ণ! আপনি চাইলে আজ একটা পাহাড়ও টপকাতে পারেন। কিন্তু আপনার পরিকল্পনায় সামান্য পরিবর্তন আসতে পারে। এই বাড়তি শক্তি আপনি হয়তো ব্যয় করবেন ঘরের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গোছানোর কাজে, যা আপনার কাজের থেকে বেশি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মনে হবে। কর্মক্ষেত্রে সুনাম বজায় থাকবে, কিন্তু আপনার দৃঢ়তা দেখলে সহকর্মীরা একটু ভয় পেতে পারে। আপনার এনার্জিটা কাজের দিকে রাখুন। পুরোনো ভুল-বোঝাবুঝি দূর করার জন্য এনার্জি খরচ করবেন না। কারণ, কিছু ভুল-বোঝাবুঝি থাকাই ভালো।
ধনু
ক্যারিয়ার ও পেশাদার জীবনে মনোযোগ দিন, যেকোনো নতুন শুরু সফল হতে পারে। ভ্রমণ ও শিক্ষাসংক্রান্ত কাজ লাভজনক হবে। আপনি হয়তো একটা জরুরি কাজে বাইরে যাবেন, আর সেই ভ্রমণ থেকেই মোটা টাকা উপার্জনের পথ খুলে যাবে। কিন্তু গ্রহরা আপনাকে স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দিতে বলছে—হালকা ব্যায়াম এবং সঠিক ডায়েট! আপনার আজকের দিনের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে—লাভজনক ভ্রমণে গিয়ে হোটেলের ফ্রি ব্রেকফাস্টের মিষ্টি অংশটুকু এড়িয়ে যাওয়া। শুভকামনা!
মকর
আজ আর্থিক বিষয়ে খুব সতর্ক থাকুন। যদিও পুরোনো দায়িত্ব পালন করা উপকারী হবে, তবু চাকরি বা ব্যবসায় হঠাৎ কোনো পরিবর্তন আসতে পারে। শান্ত থাকুন। আপনার এত দিনের স্থিতিশীল জীবনে হঠাৎ একটা ‘ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি’ হতে চলেছে। ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনি খুব কার্যকর হবেন। আত্মীয়দের সঙ্গে আলোচনায় ধৈর্য ধরুন। কারণ, তাদের কথা শুনলে আপনার খরচ আরও বাড়তে পারে। আপনার লক্ষ্য থেকে সরে যাবেন না। বিশেষ করে আপনার বাজেট থেকে তো একদমই না!
কুম্ভ
আজ আপনি সামাজিক ও পেশাদার বিষয়ে বেশ এগিয়ে যাবেন। বন্ধু এবং সহকর্মীরা আপনাকে সাহায্য করবে। আপনি মানসিকভাবে ইতিবাচক থাকবেন এবং নতুন সুযোগের জন্য মন খোলা রাখবেন। আপনি আজ সবার নজরের কেন্দ্রে থাকবেন। তবে জ্যোতিষীরা আপনাকে ‘আবেগ নিয়ন্ত্রণে’ রাখতে বলছে। কারণ, পাবলিক প্লেসে আপনার অতি-উৎসাহ দেখলে অন্যরা আপনাকে ভুল বুঝতে পারে। আপনি আজ বুদ্ধি খাটিয়ে সব সমস্যার সমাধান করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, সব সমস্যার মূলে আপনি নিজেই!
মীন
আজ আপনার দিনটি মসৃণ ও শান্ত হবে। আধ্যাত্মিক কাজে সময় ব্যয় করা উপকারী। আপনি হয়তো মেডিটেশন করছেন বা কোনো ধর্মীয় বই পড়ছেন, আর ঠিক সেই সময় আপনার স্থগিত কোনো কাজ বা আর্থিক দিক থেকে একটা গোপন গতি আসবে। পুরোনো কাজ শেষ করার জন্য এটা সেরা সময়। ক্যারিয়ার আর আর্থিক বিষয়ে একটু ধৈর্য ধরুন—আপনার সাফল্যের খবরটা একটু পরে আসুক। আজ আপনি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করবেন, যার জন্য কেউ আপনাকে তাগাদা দেয়নি। এই রহস্যজনক কর্মদক্ষতা বজায় রাখুন।

ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকিহিনি, এককথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণ কাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে।
০২ মে ২০২১
খাবারের জন্য থাইল্যান্ডের অন্যান্য অঞ্চলের সুনাম থাকলেও ফুকেট সবকিছু ছাপিয়ে আলাদা জায়গা দখল করে নিয়েছে বহু বছর আগে। এখানে রয়েছে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারের সমারোহ। এ জন্য শহরটি ইউনেসকো থেকে সিটি অব গ্যাস্ট্রোনমি’র স্বীকৃতি পেয়েছে...
৮ ঘণ্টা আগে
ব্রিটিশরা তাঁতিদের আঙুল কেটে দিত। বাংলাদেশের বহু মানুষ এই তথ্যে বিশ্বাস করে চলেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব আছে বলে কোনো গবেষণায় এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু মানুষ সেই তথ্য বিশ্বাস করে।
১৭ ঘণ্টা আগে
সেদ্ধ ডিম ভুনা বা আলু দিয়ে ঝোল করে তো সব সময় রান্না করেন। এবার না-হয় একটু ভিন্নভাবে রাঁধলেন! আপনাদের জন্য আমড়া দিয়ে ডিমের টক ঝোলের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।...
১৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

সেদ্ধ ডিম ভুনা বা আলু দিয়ে ঝোল করে তো সব সময় রান্না করেন। এবার না-হয় একটু ভিন্নভাবে রাঁধলেন! আপনাদের জন্য আমড়া দিয়ে ডিমের টক ঝোলের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
উপকরণ
আমড়া ২টি, কচুর মুখি ৩০০ গ্রাম, ডিম ৫টি, বেগুন ২টি, পেঁয়াজকুচি ২ টেবিল চামচ, আদা ও রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ, মরিচ ও ধনেগুঁড়া ১ চা-চামচ করে, জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, সয়াবিন তেল ৪ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ফালি ৫-৬টি, ধনেপাতাকুচি ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি
আস্ত আমড়ার খোসা ছিলে কেটে নিন। কচুর মুখি ও বেগুন লম্বা করে কেটে ধুয়ে রাখুন। কড়াইতে সয়াবিন তেল গরম হলে পেঁয়াজকুচি হালকা ভেজে আদা ও রসুনবাটা, হলুদ, মরিচ, ধনেগুঁড়া লবণ দিয়ে কষিয়ে নিন। পরে কচুর মুখি কষিয়ে আবারও রান্না করুন ৫ থেকে ৭ মিনিট। পরে বেগুন দিয়ে কষিয়ে ঝোলের পানি দিন। ফুটে উঠলে আমড়া দিন। তারপর কাঁচা মরিচ ফালি আর ধনেপাতাকুচি, জিরাগুঁড়া ও সেদ্ধ ডিম দিয়ে রান্না করুন আরও ২-৩ মিনিট। তারপর লবণ দেখে নামিয়ে নিন।

সেদ্ধ ডিম ভুনা বা আলু দিয়ে ঝোল করে তো সব সময় রান্না করেন। এবার না-হয় একটু ভিন্নভাবে রাঁধলেন! আপনাদের জন্য আমড়া দিয়ে ডিমের টক ঝোলের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
উপকরণ
আমড়া ২টি, কচুর মুখি ৩০০ গ্রাম, ডিম ৫টি, বেগুন ২টি, পেঁয়াজকুচি ২ টেবিল চামচ, আদা ও রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ, মরিচ ও ধনেগুঁড়া ১ চা-চামচ করে, জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, সয়াবিন তেল ৪ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ফালি ৫-৬টি, ধনেপাতাকুচি ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি
আস্ত আমড়ার খোসা ছিলে কেটে নিন। কচুর মুখি ও বেগুন লম্বা করে কেটে ধুয়ে রাখুন। কড়াইতে সয়াবিন তেল গরম হলে পেঁয়াজকুচি হালকা ভেজে আদা ও রসুনবাটা, হলুদ, মরিচ, ধনেগুঁড়া লবণ দিয়ে কষিয়ে নিন। পরে কচুর মুখি কষিয়ে আবারও রান্না করুন ৫ থেকে ৭ মিনিট। পরে বেগুন দিয়ে কষিয়ে ঝোলের পানি দিন। ফুটে উঠলে আমড়া দিন। তারপর কাঁচা মরিচ ফালি আর ধনেপাতাকুচি, জিরাগুঁড়া ও সেদ্ধ ডিম দিয়ে রান্না করুন আরও ২-৩ মিনিট। তারপর লবণ দেখে নামিয়ে নিন।

ফেলুদার বই মানেই দুই মলাটের মধ্যে একসঙ্গে অনেক কিছু। রহস্যকিহিনি, এককথায় দুর্দান্ত। অ্যাডভেঞ্চার কিংবা ভ্রমণ কাহিনি, অসাধারণ। এখানেই কি শেষ? ইতিহাস, মঞ্চ-সিনেমা, সার্কাস, শিকার কত কিছুর সঙ্গে যে পরিচয় করিয়ে দিল ফেলুদা। তোপসে, লালমোহন গাঙ্গুলিও জায়গা করে নিল আমার বালক মনে।
০২ মে ২০২১
খাবারের জন্য থাইল্যান্ডের অন্যান্য অঞ্চলের সুনাম থাকলেও ফুকেট সবকিছু ছাপিয়ে আলাদা জায়গা দখল করে নিয়েছে বহু বছর আগে। এখানে রয়েছে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারের সমারোহ। এ জন্য শহরটি ইউনেসকো থেকে সিটি অব গ্যাস্ট্রোনমি’র স্বীকৃতি পেয়েছে...
৮ ঘণ্টা আগে
ব্রিটিশরা তাঁতিদের আঙুল কেটে দিত। বাংলাদেশের বহু মানুষ এই তথ্যে বিশ্বাস করে চলেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব আছে বলে কোনো গবেষণায় এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু মানুষ সেই তথ্য বিশ্বাস করে।
১৭ ঘণ্টা আগে
আজ গ্রহরা আপনার জীবনে এক ‘লার্নিং সেশন’-এর আয়োজন করেছে। নতুন কিছু শেখার সুযোগ পাবেন, কিন্তু সাবধানে! আর্থিক লেনদেনে একটু সংযত হোন, না হলে ‘শিক্ষানবিশ ফি’ হিসেবে কিছু টাকা বেরিয়ে যেতে পারে। প্রেমের সম্পর্কে একটা ছোট ‘টক শো’ হতে পারে, যেখানে আপনার...
১৮ ঘণ্টা আগে