মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছেন শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না, আমি আমার নিজের বাস্তবতা আঁকি।’
১৯০৭ সালের ৬ জুলাই জন্ম ফ্রিদার। তাঁর শৈশব কেটেছে মেক্সিকো শহরে, এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন জার্মান-হাঙ্গেরিয়ান। আর মা স্প্যানিশ ও তেহুয়ানা আদিবাসী মিশ্র রক্তের মানুষ। তাই জন্মের পর থেকেই এক মিশ্র সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠেন ফ্রিদা কাহলো।
ছয় বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে ফ্রিদার ডান পা আকারে ছোট ও নিস্তেজ হয়ে পড়তে শুরু করে। এ কারণে সহপাঠীদের কাছে কম হাসি-ঠাট্টার পাত্রী হতে হয়নি ছোট্ট ফ্রিদাকে। তিনি যে বড় ঝুলের জামা পরতেন, এর মূল কারণ ছিল শরীরের খুঁত ঢাকার চেষ্টা। দুই পা যেন মোটামুটি সমান দেখায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য ডান পায়ে কয়েক স্তরবিশিষ্ট মোজা পরতে শুরু করেন তিনি। ১৮ বছর বয়সে বাস দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদণ্ডের দিকের প্রায় ২০টি হাড় ভেঙে যায়। প্রায় দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর ১৯২৭ সালে কিছুটা সুস্থ হন।
বাস দুর্ঘটনার পর মোট ৩০টি অপারেশন করতে হয়েছিল। একটু সেরে ওঠার পর ফ্রিদা পেইন্টিং করতে শুরু করেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি মেক্সিকান কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেন। ১৯২৮ সালে কাহলোর সঙ্গে দিয়েগো রিভেরার পরিচয় হয়। ১৯২৯ সালে কাহলো রিভেরাকে বিয়ে করেন। তবে বিবাহিত জীবন যে খুব সুখে কেটেছে, তা-ও নয়। ফলে কাহলোর আত্মপ্রতিকৃতিতে খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর জীবনের ট্র্যাজেডি, ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহ এবং নারীত্বকে। তাঁর নামকরা চিত্রকর্মগুলোয় জীবনের দুটি বড় ঘটনা ঘুরেফিরে এসেছে। দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং তরুণ বয়সে মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা—ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন।
ফ্রিদা চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছবি আঁকবেন। তাঁর ভাষ্য ছিল, ‘যত দিন ছবি আঁকতে পারছি, তত দিন বেঁচে থাকলে আমি খুশি।’ ফ্রিদা কাহলোর সেরা কয়েকটি আত্মপ্রতিকৃতির কথাই হচ্ছে এখন—
সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড, ১৯৪০
একটু আগেই তো বলা হলো, ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন। এর মধ্য়ে ‘সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড’ উল্লেখযোগ্য।
কত মানুষ যে মোহিত হয়ে এই আত্মপ্রতিকৃতি দেখেছে, তার হিসাব নেই। ১৯৪০ সালে মেক্সিকান ম্যুরালিস্ট দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের এক বছর পরে এই চিত্রকর্ম শেষ করেন কাহলো। মনে করা হয়, বিবাহবিচ্ছেদের কারণে কাহলো যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন, এই আত্মপ্রতিকৃতি তারই প্রতিচ্ছবি।
ছবিতে কাহলোর এক পাশে কালো চিতা, অন্য পাশে কালো বানর। এখানে বলে নেওয়া ভালো, কাহলো আর রিভেরা অনেক বানর পুষতেন। সেখান থেকেই এই বানরের প্রতিকৃতি নেওয়া হয়েছে। কাহলোর গলায় নেকলেসের মতো জড়িয়ে রয়েছে কাঁটাযুক্ত গাছের শাখা। যার মধ্যস্থলে ডানা মেলে রয়েছে হামিংবার্ড। কাঁটার আঘাতে গলার এখান-সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। কিন্তু কাহলোর মুখে নির্লিপ্ত অভিব্যক্তিহীন ভাব। ব্যথিত হয়েও এই শান্ত দৃষ্টি ধরে রাখাই যেন কাহলোর আদর্শ। বিবাহবিচ্ছেদে বিধ্বস্ত হলেও কাহলো বলেছিলেন, ‘দিন শেষে আমরা যতটুকু ভাবতে পারি, তার চেয়ে অনেক বেশি সহ্য করতে পারি।’
দ্য টু ফ্রিদাস, ১৯৩৯
রিভেরার সঙ্গে ছাড়াছাড়ির প্রতিক্রিয়ায় ‘দ্য টু ফ্রিদাস’ এঁকেছিলেন কাহলো। এই ছবিতে কাহলো নিজের দুটি দিক সন্ধান করেন। বাঁ দিকের প্রতিকৃতিতে তিনি নিজের ভঙ্গুর রূপ দেখিয়েছেন। নিজেকে ঐতিহ্যবাহী ইউরোপীয় গাউন পরিহিত একটি ভাঙা হৃদয় বয়ে বেড়ানো নারী হিসেবে এঁকেছেন।
ডান দিকে নিজেকে আধুনিক মেক্সিকান পোশাক পরিয়েছেন। রিভেরার সঙ্গে বিয়ের সময় তিনি এমন পোশাক পরেছিলেন। দুটি প্রতিকৃতিই বসে রয়েছে একটি বেঞ্চে। দুজনেই বসে আছে হাত ধরাধরি করে। দুজনের হৃদয় থেকে একটি শিরা অঙ্কুরিত হয়ে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে। তাদের বাহুতেও জড়িয়ে যায় সেই শিরা। বাঁ দিকে যে ফ্রিদা বসে রয়েছে, সে সার্জিক্যাল কাঁচি দিয়ে শিরা কেটে দেয়, যার ফলে রক্তক্ষরণ হয়। ডান দিকে বসে থাকা কাহলোর শিরা রিভেরার একটি ছোট্ট প্রতিকৃতিতে নিয়ে যায়। এই প্রতিকৃতি তার হাতেই ছিল।
এই অনন্য আত্মপ্রতিকৃতি সম্ভবত বিবাহবিচ্ছেদের কারণে আত্ম অনুসন্ধানের যে সংগ্রাম করছিলেন কাহলো, তারই প্রতিনিধিত্ব করে। বিষয়বস্তুতে পরাবাস্তব হওয়া সত্ত্বেও কাহলো জোর দিয়েছিলেন, এজাতীয় চিত্রাবলি বাস্তব জীবনে মূল এবং তাই তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রত্যক্ষ প্রতিচ্ছবি। ফ্রিদা কাহলো ব্যাখ্যা করেন, ‘আমি কখনো স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না। আমি আমার নিজস্ব বাস্তবতা আঁকি।’
দ্য উন্ডেড ডিয়ার, ১৯৪৬
‘দ্য উন্ডেড ডিয়ার’ আরেকটি আত্মপ্রতিকৃতি, যা কাহলোর শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণাকে প্রতীকীভাবে সমন্বয় করেছে। ছবিতে কাহলো নিজেকে হরিণ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। কাহলোর পোষা হরিণ গ্রানিজো। গ্রানিজোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ছবিটি এঁকেছেন। তিরের আঘাতে কাহলোর মুখশ্রী ধারণ করা এই হরিণ যে মৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে, তা ছবিতে স্পষ্ট। এই ছবি আঁকার সময় কাহলোর শরীর ভেঙে পড়েছিল। শরীরে ব্যর্থ কাটাছেঁড়া, দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত শারীরিক ব্যথা ছাড়াও তিনি গ্যাংগ্রিন এবং অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সেই যন্ত্রণার প্রকাশ রয়েছে ছবিটিতে।
সূত্র: মাই মডার্ন মেট ডট কম
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছেন শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না, আমি আমার নিজের বাস্তবতা আঁকি।’
১৯০৭ সালের ৬ জুলাই জন্ম ফ্রিদার। তাঁর শৈশব কেটেছে মেক্সিকো শহরে, এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন জার্মান-হাঙ্গেরিয়ান। আর মা স্প্যানিশ ও তেহুয়ানা আদিবাসী মিশ্র রক্তের মানুষ। তাই জন্মের পর থেকেই এক মিশ্র সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠেন ফ্রিদা কাহলো।
ছয় বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে ফ্রিদার ডান পা আকারে ছোট ও নিস্তেজ হয়ে পড়তে শুরু করে। এ কারণে সহপাঠীদের কাছে কম হাসি-ঠাট্টার পাত্রী হতে হয়নি ছোট্ট ফ্রিদাকে। তিনি যে বড় ঝুলের জামা পরতেন, এর মূল কারণ ছিল শরীরের খুঁত ঢাকার চেষ্টা। দুই পা যেন মোটামুটি সমান দেখায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য ডান পায়ে কয়েক স্তরবিশিষ্ট মোজা পরতে শুরু করেন তিনি। ১৮ বছর বয়সে বাস দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদণ্ডের দিকের প্রায় ২০টি হাড় ভেঙে যায়। প্রায় দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর ১৯২৭ সালে কিছুটা সুস্থ হন।
বাস দুর্ঘটনার পর মোট ৩০টি অপারেশন করতে হয়েছিল। একটু সেরে ওঠার পর ফ্রিদা পেইন্টিং করতে শুরু করেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি মেক্সিকান কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেন। ১৯২৮ সালে কাহলোর সঙ্গে দিয়েগো রিভেরার পরিচয় হয়। ১৯২৯ সালে কাহলো রিভেরাকে বিয়ে করেন। তবে বিবাহিত জীবন যে খুব সুখে কেটেছে, তা-ও নয়। ফলে কাহলোর আত্মপ্রতিকৃতিতে খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর জীবনের ট্র্যাজেডি, ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহ এবং নারীত্বকে। তাঁর নামকরা চিত্রকর্মগুলোয় জীবনের দুটি বড় ঘটনা ঘুরেফিরে এসেছে। দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং তরুণ বয়সে মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা—ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন।
ফ্রিদা চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছবি আঁকবেন। তাঁর ভাষ্য ছিল, ‘যত দিন ছবি আঁকতে পারছি, তত দিন বেঁচে থাকলে আমি খুশি।’ ফ্রিদা কাহলোর সেরা কয়েকটি আত্মপ্রতিকৃতির কথাই হচ্ছে এখন—
সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড, ১৯৪০
একটু আগেই তো বলা হলো, ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন। এর মধ্য়ে ‘সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড’ উল্লেখযোগ্য।
কত মানুষ যে মোহিত হয়ে এই আত্মপ্রতিকৃতি দেখেছে, তার হিসাব নেই। ১৯৪০ সালে মেক্সিকান ম্যুরালিস্ট দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের এক বছর পরে এই চিত্রকর্ম শেষ করেন কাহলো। মনে করা হয়, বিবাহবিচ্ছেদের কারণে কাহলো যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন, এই আত্মপ্রতিকৃতি তারই প্রতিচ্ছবি।
ছবিতে কাহলোর এক পাশে কালো চিতা, অন্য পাশে কালো বানর। এখানে বলে নেওয়া ভালো, কাহলো আর রিভেরা অনেক বানর পুষতেন। সেখান থেকেই এই বানরের প্রতিকৃতি নেওয়া হয়েছে। কাহলোর গলায় নেকলেসের মতো জড়িয়ে রয়েছে কাঁটাযুক্ত গাছের শাখা। যার মধ্যস্থলে ডানা মেলে রয়েছে হামিংবার্ড। কাঁটার আঘাতে গলার এখান-সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। কিন্তু কাহলোর মুখে নির্লিপ্ত অভিব্যক্তিহীন ভাব। ব্যথিত হয়েও এই শান্ত দৃষ্টি ধরে রাখাই যেন কাহলোর আদর্শ। বিবাহবিচ্ছেদে বিধ্বস্ত হলেও কাহলো বলেছিলেন, ‘দিন শেষে আমরা যতটুকু ভাবতে পারি, তার চেয়ে অনেক বেশি সহ্য করতে পারি।’
দ্য টু ফ্রিদাস, ১৯৩৯
রিভেরার সঙ্গে ছাড়াছাড়ির প্রতিক্রিয়ায় ‘দ্য টু ফ্রিদাস’ এঁকেছিলেন কাহলো। এই ছবিতে কাহলো নিজের দুটি দিক সন্ধান করেন। বাঁ দিকের প্রতিকৃতিতে তিনি নিজের ভঙ্গুর রূপ দেখিয়েছেন। নিজেকে ঐতিহ্যবাহী ইউরোপীয় গাউন পরিহিত একটি ভাঙা হৃদয় বয়ে বেড়ানো নারী হিসেবে এঁকেছেন।
ডান দিকে নিজেকে আধুনিক মেক্সিকান পোশাক পরিয়েছেন। রিভেরার সঙ্গে বিয়ের সময় তিনি এমন পোশাক পরেছিলেন। দুটি প্রতিকৃতিই বসে রয়েছে একটি বেঞ্চে। দুজনেই বসে আছে হাত ধরাধরি করে। দুজনের হৃদয় থেকে একটি শিরা অঙ্কুরিত হয়ে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে। তাদের বাহুতেও জড়িয়ে যায় সেই শিরা। বাঁ দিকে যে ফ্রিদা বসে রয়েছে, সে সার্জিক্যাল কাঁচি দিয়ে শিরা কেটে দেয়, যার ফলে রক্তক্ষরণ হয়। ডান দিকে বসে থাকা কাহলোর শিরা রিভেরার একটি ছোট্ট প্রতিকৃতিতে নিয়ে যায়। এই প্রতিকৃতি তার হাতেই ছিল।
এই অনন্য আত্মপ্রতিকৃতি সম্ভবত বিবাহবিচ্ছেদের কারণে আত্ম অনুসন্ধানের যে সংগ্রাম করছিলেন কাহলো, তারই প্রতিনিধিত্ব করে। বিষয়বস্তুতে পরাবাস্তব হওয়া সত্ত্বেও কাহলো জোর দিয়েছিলেন, এজাতীয় চিত্রাবলি বাস্তব জীবনে মূল এবং তাই তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রত্যক্ষ প্রতিচ্ছবি। ফ্রিদা কাহলো ব্যাখ্যা করেন, ‘আমি কখনো স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না। আমি আমার নিজস্ব বাস্তবতা আঁকি।’
দ্য উন্ডেড ডিয়ার, ১৯৪৬
‘দ্য উন্ডেড ডিয়ার’ আরেকটি আত্মপ্রতিকৃতি, যা কাহলোর শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণাকে প্রতীকীভাবে সমন্বয় করেছে। ছবিতে কাহলো নিজেকে হরিণ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। কাহলোর পোষা হরিণ গ্রানিজো। গ্রানিজোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ছবিটি এঁকেছেন। তিরের আঘাতে কাহলোর মুখশ্রী ধারণ করা এই হরিণ যে মৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে, তা ছবিতে স্পষ্ট। এই ছবি আঁকার সময় কাহলোর শরীর ভেঙে পড়েছিল। শরীরে ব্যর্থ কাটাছেঁড়া, দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত শারীরিক ব্যথা ছাড়াও তিনি গ্যাংগ্রিন এবং অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সেই যন্ত্রণার প্রকাশ রয়েছে ছবিটিতে।
সূত্র: মাই মডার্ন মেট ডট কম
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছেন শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না, আমি আমার নিজের বাস্তবতা আঁকি।’
১৯০৭ সালের ৬ জুলাই জন্ম ফ্রিদার। তাঁর শৈশব কেটেছে মেক্সিকো শহরে, এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন জার্মান-হাঙ্গেরিয়ান। আর মা স্প্যানিশ ও তেহুয়ানা আদিবাসী মিশ্র রক্তের মানুষ। তাই জন্মের পর থেকেই এক মিশ্র সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠেন ফ্রিদা কাহলো।
ছয় বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে ফ্রিদার ডান পা আকারে ছোট ও নিস্তেজ হয়ে পড়তে শুরু করে। এ কারণে সহপাঠীদের কাছে কম হাসি-ঠাট্টার পাত্রী হতে হয়নি ছোট্ট ফ্রিদাকে। তিনি যে বড় ঝুলের জামা পরতেন, এর মূল কারণ ছিল শরীরের খুঁত ঢাকার চেষ্টা। দুই পা যেন মোটামুটি সমান দেখায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য ডান পায়ে কয়েক স্তরবিশিষ্ট মোজা পরতে শুরু করেন তিনি। ১৮ বছর বয়সে বাস দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদণ্ডের দিকের প্রায় ২০টি হাড় ভেঙে যায়। প্রায় দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর ১৯২৭ সালে কিছুটা সুস্থ হন।
বাস দুর্ঘটনার পর মোট ৩০টি অপারেশন করতে হয়েছিল। একটু সেরে ওঠার পর ফ্রিদা পেইন্টিং করতে শুরু করেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি মেক্সিকান কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেন। ১৯২৮ সালে কাহলোর সঙ্গে দিয়েগো রিভেরার পরিচয় হয়। ১৯২৯ সালে কাহলো রিভেরাকে বিয়ে করেন। তবে বিবাহিত জীবন যে খুব সুখে কেটেছে, তা-ও নয়। ফলে কাহলোর আত্মপ্রতিকৃতিতে খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর জীবনের ট্র্যাজেডি, ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহ এবং নারীত্বকে। তাঁর নামকরা চিত্রকর্মগুলোয় জীবনের দুটি বড় ঘটনা ঘুরেফিরে এসেছে। দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং তরুণ বয়সে মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা—ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন।
ফ্রিদা চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছবি আঁকবেন। তাঁর ভাষ্য ছিল, ‘যত দিন ছবি আঁকতে পারছি, তত দিন বেঁচে থাকলে আমি খুশি।’ ফ্রিদা কাহলোর সেরা কয়েকটি আত্মপ্রতিকৃতির কথাই হচ্ছে এখন—
সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড, ১৯৪০
একটু আগেই তো বলা হলো, ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন। এর মধ্য়ে ‘সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড’ উল্লেখযোগ্য।
কত মানুষ যে মোহিত হয়ে এই আত্মপ্রতিকৃতি দেখেছে, তার হিসাব নেই। ১৯৪০ সালে মেক্সিকান ম্যুরালিস্ট দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের এক বছর পরে এই চিত্রকর্ম শেষ করেন কাহলো। মনে করা হয়, বিবাহবিচ্ছেদের কারণে কাহলো যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন, এই আত্মপ্রতিকৃতি তারই প্রতিচ্ছবি।
ছবিতে কাহলোর এক পাশে কালো চিতা, অন্য পাশে কালো বানর। এখানে বলে নেওয়া ভালো, কাহলো আর রিভেরা অনেক বানর পুষতেন। সেখান থেকেই এই বানরের প্রতিকৃতি নেওয়া হয়েছে। কাহলোর গলায় নেকলেসের মতো জড়িয়ে রয়েছে কাঁটাযুক্ত গাছের শাখা। যার মধ্যস্থলে ডানা মেলে রয়েছে হামিংবার্ড। কাঁটার আঘাতে গলার এখান-সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। কিন্তু কাহলোর মুখে নির্লিপ্ত অভিব্যক্তিহীন ভাব। ব্যথিত হয়েও এই শান্ত দৃষ্টি ধরে রাখাই যেন কাহলোর আদর্শ। বিবাহবিচ্ছেদে বিধ্বস্ত হলেও কাহলো বলেছিলেন, ‘দিন শেষে আমরা যতটুকু ভাবতে পারি, তার চেয়ে অনেক বেশি সহ্য করতে পারি।’
দ্য টু ফ্রিদাস, ১৯৩৯
রিভেরার সঙ্গে ছাড়াছাড়ির প্রতিক্রিয়ায় ‘দ্য টু ফ্রিদাস’ এঁকেছিলেন কাহলো। এই ছবিতে কাহলো নিজের দুটি দিক সন্ধান করেন। বাঁ দিকের প্রতিকৃতিতে তিনি নিজের ভঙ্গুর রূপ দেখিয়েছেন। নিজেকে ঐতিহ্যবাহী ইউরোপীয় গাউন পরিহিত একটি ভাঙা হৃদয় বয়ে বেড়ানো নারী হিসেবে এঁকেছেন।
ডান দিকে নিজেকে আধুনিক মেক্সিকান পোশাক পরিয়েছেন। রিভেরার সঙ্গে বিয়ের সময় তিনি এমন পোশাক পরেছিলেন। দুটি প্রতিকৃতিই বসে রয়েছে একটি বেঞ্চে। দুজনেই বসে আছে হাত ধরাধরি করে। দুজনের হৃদয় থেকে একটি শিরা অঙ্কুরিত হয়ে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে। তাদের বাহুতেও জড়িয়ে যায় সেই শিরা। বাঁ দিকে যে ফ্রিদা বসে রয়েছে, সে সার্জিক্যাল কাঁচি দিয়ে শিরা কেটে দেয়, যার ফলে রক্তক্ষরণ হয়। ডান দিকে বসে থাকা কাহলোর শিরা রিভেরার একটি ছোট্ট প্রতিকৃতিতে নিয়ে যায়। এই প্রতিকৃতি তার হাতেই ছিল।
এই অনন্য আত্মপ্রতিকৃতি সম্ভবত বিবাহবিচ্ছেদের কারণে আত্ম অনুসন্ধানের যে সংগ্রাম করছিলেন কাহলো, তারই প্রতিনিধিত্ব করে। বিষয়বস্তুতে পরাবাস্তব হওয়া সত্ত্বেও কাহলো জোর দিয়েছিলেন, এজাতীয় চিত্রাবলি বাস্তব জীবনে মূল এবং তাই তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রত্যক্ষ প্রতিচ্ছবি। ফ্রিদা কাহলো ব্যাখ্যা করেন, ‘আমি কখনো স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না। আমি আমার নিজস্ব বাস্তবতা আঁকি।’
দ্য উন্ডেড ডিয়ার, ১৯৪৬
‘দ্য উন্ডেড ডিয়ার’ আরেকটি আত্মপ্রতিকৃতি, যা কাহলোর শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণাকে প্রতীকীভাবে সমন্বয় করেছে। ছবিতে কাহলো নিজেকে হরিণ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। কাহলোর পোষা হরিণ গ্রানিজো। গ্রানিজোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ছবিটি এঁকেছেন। তিরের আঘাতে কাহলোর মুখশ্রী ধারণ করা এই হরিণ যে মৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে, তা ছবিতে স্পষ্ট। এই ছবি আঁকার সময় কাহলোর শরীর ভেঙে পড়েছিল। শরীরে ব্যর্থ কাটাছেঁড়া, দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত শারীরিক ব্যথা ছাড়াও তিনি গ্যাংগ্রিন এবং অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সেই যন্ত্রণার প্রকাশ রয়েছে ছবিটিতে।
সূত্র: মাই মডার্ন মেট ডট কম
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছেন শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না, আমি আমার নিজের বাস্তবতা আঁকি।’
১৯০৭ সালের ৬ জুলাই জন্ম ফ্রিদার। তাঁর শৈশব কেটেছে মেক্সিকো শহরে, এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন জার্মান-হাঙ্গেরিয়ান। আর মা স্প্যানিশ ও তেহুয়ানা আদিবাসী মিশ্র রক্তের মানুষ। তাই জন্মের পর থেকেই এক মিশ্র সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠেন ফ্রিদা কাহলো।
ছয় বছর বয়সে পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে ফ্রিদার ডান পা আকারে ছোট ও নিস্তেজ হয়ে পড়তে শুরু করে। এ কারণে সহপাঠীদের কাছে কম হাসি-ঠাট্টার পাত্রী হতে হয়নি ছোট্ট ফ্রিদাকে। তিনি যে বড় ঝুলের জামা পরতেন, এর মূল কারণ ছিল শরীরের খুঁত ঢাকার চেষ্টা। দুই পা যেন মোটামুটি সমান দেখায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য ডান পায়ে কয়েক স্তরবিশিষ্ট মোজা পরতে শুরু করেন তিনি। ১৮ বছর বয়সে বাস দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদণ্ডের দিকের প্রায় ২০টি হাড় ভেঙে যায়। প্রায় দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর ১৯২৭ সালে কিছুটা সুস্থ হন।
বাস দুর্ঘটনার পর মোট ৩০টি অপারেশন করতে হয়েছিল। একটু সেরে ওঠার পর ফ্রিদা পেইন্টিং করতে শুরু করেন। সুস্থ হওয়ার পর তিনি মেক্সিকান কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেন। ১৯২৮ সালে কাহলোর সঙ্গে দিয়েগো রিভেরার পরিচয় হয়। ১৯২৯ সালে কাহলো রিভেরাকে বিয়ে করেন। তবে বিবাহিত জীবন যে খুব সুখে কেটেছে, তা-ও নয়। ফলে কাহলোর আত্মপ্রতিকৃতিতে খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর জীবনের ট্র্যাজেডি, ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহ এবং নারীত্বকে। তাঁর নামকরা চিত্রকর্মগুলোয় জীবনের দুটি বড় ঘটনা ঘুরেফিরে এসেছে। দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং তরুণ বয়সে মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা—ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন।
ফ্রিদা চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছবি আঁকবেন। তাঁর ভাষ্য ছিল, ‘যত দিন ছবি আঁকতে পারছি, তত দিন বেঁচে থাকলে আমি খুশি।’ ফ্রিদা কাহলোর সেরা কয়েকটি আত্মপ্রতিকৃতির কথাই হচ্ছে এখন—
সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড, ১৯৪০
একটু আগেই তো বলা হলো, ক্যারিয়ারের পুরো সময়ে কাহলো ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছেন। এর মধ্য়ে ‘সেলফ পোর্ট্রেট উইথ থর্ন নেকলেস অ্যান্ড হামিংবার্ড’ উল্লেখযোগ্য।
কত মানুষ যে মোহিত হয়ে এই আত্মপ্রতিকৃতি দেখেছে, তার হিসাব নেই। ১৯৪০ সালে মেক্সিকান ম্যুরালিস্ট দিয়েগো রিভেরার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের এক বছর পরে এই চিত্রকর্ম শেষ করেন কাহলো। মনে করা হয়, বিবাহবিচ্ছেদের কারণে কাহলো যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন, এই আত্মপ্রতিকৃতি তারই প্রতিচ্ছবি।
ছবিতে কাহলোর এক পাশে কালো চিতা, অন্য পাশে কালো বানর। এখানে বলে নেওয়া ভালো, কাহলো আর রিভেরা অনেক বানর পুষতেন। সেখান থেকেই এই বানরের প্রতিকৃতি নেওয়া হয়েছে। কাহলোর গলায় নেকলেসের মতো জড়িয়ে রয়েছে কাঁটাযুক্ত গাছের শাখা। যার মধ্যস্থলে ডানা মেলে রয়েছে হামিংবার্ড। কাঁটার আঘাতে গলার এখান-সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। কিন্তু কাহলোর মুখে নির্লিপ্ত অভিব্যক্তিহীন ভাব। ব্যথিত হয়েও এই শান্ত দৃষ্টি ধরে রাখাই যেন কাহলোর আদর্শ। বিবাহবিচ্ছেদে বিধ্বস্ত হলেও কাহলো বলেছিলেন, ‘দিন শেষে আমরা যতটুকু ভাবতে পারি, তার চেয়ে অনেক বেশি সহ্য করতে পারি।’
দ্য টু ফ্রিদাস, ১৯৩৯
রিভেরার সঙ্গে ছাড়াছাড়ির প্রতিক্রিয়ায় ‘দ্য টু ফ্রিদাস’ এঁকেছিলেন কাহলো। এই ছবিতে কাহলো নিজের দুটি দিক সন্ধান করেন। বাঁ দিকের প্রতিকৃতিতে তিনি নিজের ভঙ্গুর রূপ দেখিয়েছেন। নিজেকে ঐতিহ্যবাহী ইউরোপীয় গাউন পরিহিত একটি ভাঙা হৃদয় বয়ে বেড়ানো নারী হিসেবে এঁকেছেন।
ডান দিকে নিজেকে আধুনিক মেক্সিকান পোশাক পরিয়েছেন। রিভেরার সঙ্গে বিয়ের সময় তিনি এমন পোশাক পরেছিলেন। দুটি প্রতিকৃতিই বসে রয়েছে একটি বেঞ্চে। দুজনেই বসে আছে হাত ধরাধরি করে। দুজনের হৃদয় থেকে একটি শিরা অঙ্কুরিত হয়ে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে। তাদের বাহুতেও জড়িয়ে যায় সেই শিরা। বাঁ দিকে যে ফ্রিদা বসে রয়েছে, সে সার্জিক্যাল কাঁচি দিয়ে শিরা কেটে দেয়, যার ফলে রক্তক্ষরণ হয়। ডান দিকে বসে থাকা কাহলোর শিরা রিভেরার একটি ছোট্ট প্রতিকৃতিতে নিয়ে যায়। এই প্রতিকৃতি তার হাতেই ছিল।
এই অনন্য আত্মপ্রতিকৃতি সম্ভবত বিবাহবিচ্ছেদের কারণে আত্ম অনুসন্ধানের যে সংগ্রাম করছিলেন কাহলো, তারই প্রতিনিধিত্ব করে। বিষয়বস্তুতে পরাবাস্তব হওয়া সত্ত্বেও কাহলো জোর দিয়েছিলেন, এজাতীয় চিত্রাবলি বাস্তব জীবনে মূল এবং তাই তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রত্যক্ষ প্রতিচ্ছবি। ফ্রিদা কাহলো ব্যাখ্যা করেন, ‘আমি কখনো স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন আঁকি না। আমি আমার নিজস্ব বাস্তবতা আঁকি।’
দ্য উন্ডেড ডিয়ার, ১৯৪৬
‘দ্য উন্ডেড ডিয়ার’ আরেকটি আত্মপ্রতিকৃতি, যা কাহলোর শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণাকে প্রতীকীভাবে সমন্বয় করেছে। ছবিতে কাহলো নিজেকে হরিণ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। কাহলোর পোষা হরিণ গ্রানিজো। গ্রানিজোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ছবিটি এঁকেছেন। তিরের আঘাতে কাহলোর মুখশ্রী ধারণ করা এই হরিণ যে মৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে, তা ছবিতে স্পষ্ট। এই ছবি আঁকার সময় কাহলোর শরীর ভেঙে পড়েছিল। শরীরে ব্যর্থ কাটাছেঁড়া, দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত শারীরিক ব্যথা ছাড়াও তিনি গ্যাংগ্রিন এবং অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সেই যন্ত্রণার প্রকাশ রয়েছে ছবিটিতে।
সূত্র: মাই মডার্ন মেট ডট কম
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১৫ ঘণ্টা আগেগত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১৫ ঘণ্টা আগেজাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভি
১৬ ঘণ্টা আগেসবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ...
১৭ ঘণ্টা আগেমুহাম্মদ জাভেদ হাকিম
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
বান্দরবানের গহিনে থাকা তুক-অ-দামতুয়া ইদানীং সাধারণ পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকায় উঠে এসেছে। সে কারণেই একদিন বন্ধুরা মিলে হাঁড়ি-পাতিল আর বোঁচকা নিয়ে রাতের গাড়িতে উঠে খুব ভোরে গিয়ে নামলাম চকরিয়া। তারপর চান্দের গাড়িতে আলীকদম উপজেলার সতেরো কিলো নামক জায়গায়। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে নাজেম নামের চালকটি হেলিকপ্টারের গতিতেই নিয়ে গেলেন আমাদের! আড়াই ঘণ্টার পথ চলতে কখনো কখনো মনে হয়েছে, এই বুঝি চান্দের গাড়ি উড়াল দিল আকাশে।
দশ কিলো থ্যিঙ্কু পাড়া এসে কষে ব্রেক করে দাঁড়াল আমাদের গাড়ি। আর্মি চেকপোস্ট। নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ করে অনুমতি নেওয়া হলো। তারপর আবার ছুট। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম সতেরো কিলো। গাইড আগেই উপস্থিত ছিলেন সেখানে। পরিচয় পর্ব শেষে তাঁর পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করলাম আমরা। যাচ্ছি আদু পাড়ার দিকে। পাড়ায় গিয়ে তাঁর ঘরে বাড়তি মালপত্র রেখে, পাহাড়ের পরম বন্ধু নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের বাঁশ নিয়ে সবাই ছুটলাম দামতুয়ার দিকে।
কথা সেই একটিই, দেখতে হলে হাঁটতে হবে। রীতিমতো মন ও দেহের সঙ্গে লড়াই করে হাঁটতে হচ্ছে। মাথার ওপর প্রখর রোদ। চোখের সামনে শুধুই উঁচু উঁচু পাহাড়। হাঁটছি, উঠছি, নামছি! মাঝেমধ্যে ঝিরির পানি চোখে-মুখে ছিটিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছি।
দূর পাহাড়ের নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য মনের শক্তি বাড়িয়েছিল বহুগুণ। প্রায় তিন ঘণ্টা ট্রেকিং করার পর কানে ভেসে এল ঝরনার পানির শব্দ! কিন্তু চোখের সামনে বাঁশবন আর নানান গাছে ঘেরা খাড়া পিচ্ছিল পথ। নামতে হবে নিচের দিকে। একটু এদিক-সেদিক হলেই সুচালো বাঁশ দেহের কোথায় গিয়ে গেঁথে যাবে, কেউ জানে না। তবু পেতে হবে দামতুয়ার কোমল পরশ।
বহু কষ্টে নিচে নেমে চক্ষু একেবারে ছানাবড়া! বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম বিশালা ঝরনার দিকে, একেবারে হাঁ করে। দুপাশ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। একেবারে বুনো পরিবেশে দামতুয়া চোখের সামনে! নির্বাক হয়ে যাওয়ার আগে এর উচ্চতা মাপি মনে মনে।
নব্বই থেকে এক শ ফুট উঁচু না হয়েই যায় না দামতুয়া।
বর্ষা শেষে শরৎ পেরিয়ে হেমন্ত।
তুক-অ-দামতুয়ার উচ্ছলতা এখনো কমেনি। গাইড জানালেন, সারা বছর এ ঝরনায় পানির প্রবাহ থাকে। বেশ উচ্চতা আর অনেকখানি জায়গাজুড়ে প্রচণ্ড বেগে পানি নেমে আসে এখানে।
এই কারণে ঝরনার সামনে বিশাল জলাশয় তৈরি হয়েছে। সেই প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে সাঁতার না কাটলে চলে! বান্দরবানের অন্যান্য ঝরনার চেয়ে দামতুয়ার ভৌগোলিক আকৃতি ভিন্ন রকম। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়েছে। মুরং ভাষা থেকে আসা ‘তুক-অ-দামতুয়া’ শব্দের অর্থটাও বেশ চমৎকার। তুক অর্থ ব্যাঙ, অ অর্থ ঝিরি আর দামতুয়া মানে খাড়া। অর্থাৎ এই খাড়া ঝিরির উজান ঠেলে ব্যাঙ বা মাছ ওপরের দিকে উঠতে পারে না বলে এই ঝরনার এমন নাম। আমাদের গাইড ছিলের মুরং সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনিই জানালেন এসব।
ঝরনার উৎস দেখার পালা এবার। চরাই-উতরাই পেরিয়ে দেখা গেল এক সবুজে ঘেরা ঝিরি। বড় বড় কিছু পাথর পেরিয়ে একেবারে তার কাছে চলে গেলাম। বেশ চমৎকার একটা জায়গা। এই ঝিরির পানি দামতুয়া হয়ে ঝরে পড়ে নিচের প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে।
এই ঝিরির নাম ব্যাঙ ঝিরি। সাধারণত ঝিরির নাম অনুসারে ঝরনাগুলোর নামকরণ হয়।
ব্যাঙ ঝিরির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সময়জ্ঞান প্রায় ভুলতে বসেছিলাম সবাই। গাইডের ডাকে আবার শুরু হলো ট্রেকিং। এই পাহাড়-জঙ্গলের গহিনে গাইডই তখন ক্যাপ্টেন। তাঁর নির্দেশ অমান্য করার উপায় নেই। আমরা আদুপাড়ার পথ ধরি। গাইড জানালেন, আবারও প্রায় নয় মাইল চড়াই-উতরাই পেরোতে হবে!
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। এমনিতেই পাহাড়ে সন্ধ্যা আসে ঝুপ করে। দুপুরে শুকনো দুই-চার পিস বিস্কুট ছাড়া তেমন কিছুই পড়েনি পেটে। তাই খিচুড়ির এন্তেজাম হবে রাতে। হাঁটছি ধীরে ধীরে, একেবারে উদ্দেশ্যপূর্ণ কারণে। আজ পূর্ণিমা। পাহাড়ের নির্জনতায় ভরা জোছনার আলো সঙ্গী করে হাঁটব। পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আমি মনে মনে কিছুটা উদ্দীপিত। এ রকম সুযোগ সব সময় মেলে না।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। আকাশছোঁয়া পাহাড় টপকে গোলাকার চাঁদ উঁকি দিল আকাশে। নিঝুম অন্ধকার পাহাড়ের চারপাশ আলোকিত হয়ে পড়ল। গাছের পাতাগুলো সবুজের মাঝে সোনালি বর্ণ ধারণ করল। অসাধারণ এক অনুভূতি। সবার মনে বিস্ময়ের দোলা। এখন আর কারও ফেরার তাড়া নেই। তবু ফিরতে হচ্ছে এই অলৌকিক রাতে।
যাবেন যেভাবে
ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবানের আলীকদমে বাস যায়। সেখান থেকে মোটরবাইক কিংবা চান্দের গাড়িতে যেতে হবে সতেরো কিলো এলাকায়। সেখানকার চা-দোকানিদের সহায়তা নিয়ে পেয়ে যাবেন গাইড। তাঁকে ছাড়া পাহাড়ে যাওয়া ঠিক হবে না।
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
বান্দরবানের গহিনে থাকা তুক-অ-দামতুয়া ইদানীং সাধারণ পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকায় উঠে এসেছে। সে কারণেই একদিন বন্ধুরা মিলে হাঁড়ি-পাতিল আর বোঁচকা নিয়ে রাতের গাড়িতে উঠে খুব ভোরে গিয়ে নামলাম চকরিয়া। তারপর চান্দের গাড়িতে আলীকদম উপজেলার সতেরো কিলো নামক জায়গায়। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে নাজেম নামের চালকটি হেলিকপ্টারের গতিতেই নিয়ে গেলেন আমাদের! আড়াই ঘণ্টার পথ চলতে কখনো কখনো মনে হয়েছে, এই বুঝি চান্দের গাড়ি উড়াল দিল আকাশে।
দশ কিলো থ্যিঙ্কু পাড়া এসে কষে ব্রেক করে দাঁড়াল আমাদের গাড়ি। আর্মি চেকপোস্ট। নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ করে অনুমতি নেওয়া হলো। তারপর আবার ছুট। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম সতেরো কিলো। গাইড আগেই উপস্থিত ছিলেন সেখানে। পরিচয় পর্ব শেষে তাঁর পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করলাম আমরা। যাচ্ছি আদু পাড়ার দিকে। পাড়ায় গিয়ে তাঁর ঘরে বাড়তি মালপত্র রেখে, পাহাড়ের পরম বন্ধু নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের বাঁশ নিয়ে সবাই ছুটলাম দামতুয়ার দিকে।
কথা সেই একটিই, দেখতে হলে হাঁটতে হবে। রীতিমতো মন ও দেহের সঙ্গে লড়াই করে হাঁটতে হচ্ছে। মাথার ওপর প্রখর রোদ। চোখের সামনে শুধুই উঁচু উঁচু পাহাড়। হাঁটছি, উঠছি, নামছি! মাঝেমধ্যে ঝিরির পানি চোখে-মুখে ছিটিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছি।
দূর পাহাড়ের নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য মনের শক্তি বাড়িয়েছিল বহুগুণ। প্রায় তিন ঘণ্টা ট্রেকিং করার পর কানে ভেসে এল ঝরনার পানির শব্দ! কিন্তু চোখের সামনে বাঁশবন আর নানান গাছে ঘেরা খাড়া পিচ্ছিল পথ। নামতে হবে নিচের দিকে। একটু এদিক-সেদিক হলেই সুচালো বাঁশ দেহের কোথায় গিয়ে গেঁথে যাবে, কেউ জানে না। তবু পেতে হবে দামতুয়ার কোমল পরশ।
বহু কষ্টে নিচে নেমে চক্ষু একেবারে ছানাবড়া! বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম বিশালা ঝরনার দিকে, একেবারে হাঁ করে। দুপাশ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। একেবারে বুনো পরিবেশে দামতুয়া চোখের সামনে! নির্বাক হয়ে যাওয়ার আগে এর উচ্চতা মাপি মনে মনে।
নব্বই থেকে এক শ ফুট উঁচু না হয়েই যায় না দামতুয়া।
বর্ষা শেষে শরৎ পেরিয়ে হেমন্ত।
তুক-অ-দামতুয়ার উচ্ছলতা এখনো কমেনি। গাইড জানালেন, সারা বছর এ ঝরনায় পানির প্রবাহ থাকে। বেশ উচ্চতা আর অনেকখানি জায়গাজুড়ে প্রচণ্ড বেগে পানি নেমে আসে এখানে।
এই কারণে ঝরনার সামনে বিশাল জলাশয় তৈরি হয়েছে। সেই প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে সাঁতার না কাটলে চলে! বান্দরবানের অন্যান্য ঝরনার চেয়ে দামতুয়ার ভৌগোলিক আকৃতি ভিন্ন রকম। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়েছে। মুরং ভাষা থেকে আসা ‘তুক-অ-দামতুয়া’ শব্দের অর্থটাও বেশ চমৎকার। তুক অর্থ ব্যাঙ, অ অর্থ ঝিরি আর দামতুয়া মানে খাড়া। অর্থাৎ এই খাড়া ঝিরির উজান ঠেলে ব্যাঙ বা মাছ ওপরের দিকে উঠতে পারে না বলে এই ঝরনার এমন নাম। আমাদের গাইড ছিলের মুরং সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনিই জানালেন এসব।
ঝরনার উৎস দেখার পালা এবার। চরাই-উতরাই পেরিয়ে দেখা গেল এক সবুজে ঘেরা ঝিরি। বড় বড় কিছু পাথর পেরিয়ে একেবারে তার কাছে চলে গেলাম। বেশ চমৎকার একটা জায়গা। এই ঝিরির পানি দামতুয়া হয়ে ঝরে পড়ে নিচের প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে।
এই ঝিরির নাম ব্যাঙ ঝিরি। সাধারণত ঝিরির নাম অনুসারে ঝরনাগুলোর নামকরণ হয়।
ব্যাঙ ঝিরির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সময়জ্ঞান প্রায় ভুলতে বসেছিলাম সবাই। গাইডের ডাকে আবার শুরু হলো ট্রেকিং। এই পাহাড়-জঙ্গলের গহিনে গাইডই তখন ক্যাপ্টেন। তাঁর নির্দেশ অমান্য করার উপায় নেই। আমরা আদুপাড়ার পথ ধরি। গাইড জানালেন, আবারও প্রায় নয় মাইল চড়াই-উতরাই পেরোতে হবে!
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। এমনিতেই পাহাড়ে সন্ধ্যা আসে ঝুপ করে। দুপুরে শুকনো দুই-চার পিস বিস্কুট ছাড়া তেমন কিছুই পড়েনি পেটে। তাই খিচুড়ির এন্তেজাম হবে রাতে। হাঁটছি ধীরে ধীরে, একেবারে উদ্দেশ্যপূর্ণ কারণে। আজ পূর্ণিমা। পাহাড়ের নির্জনতায় ভরা জোছনার আলো সঙ্গী করে হাঁটব। পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আমি মনে মনে কিছুটা উদ্দীপিত। এ রকম সুযোগ সব সময় মেলে না।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। আকাশছোঁয়া পাহাড় টপকে গোলাকার চাঁদ উঁকি দিল আকাশে। নিঝুম অন্ধকার পাহাড়ের চারপাশ আলোকিত হয়ে পড়ল। গাছের পাতাগুলো সবুজের মাঝে সোনালি বর্ণ ধারণ করল। অসাধারণ এক অনুভূতি। সবার মনে বিস্ময়ের দোলা। এখন আর কারও ফেরার তাড়া নেই। তবু ফিরতে হচ্ছে এই অলৌকিক রাতে।
যাবেন যেভাবে
ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবানের আলীকদমে বাস যায়। সেখান থেকে মোটরবাইক কিংবা চান্দের গাড়িতে যেতে হবে সতেরো কিলো এলাকায়। সেখানকার চা-দোকানিদের সহায়তা নিয়ে পেয়ে যাবেন গাইড। তাঁকে ছাড়া পাহাড়ে যাওয়া ঠিক হবে না।
মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছে রসিক শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি
২৩ এপ্রিল ২০২৩গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১৫ ঘণ্টা আগেজাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভি
১৬ ঘণ্টা আগেসবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ...
১৭ ঘণ্টা আগেমইনুল হাসান, ফ্রান্স
গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। অফিস পাড়ায় ভিড় নেই। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। সকালের ঠান্ডা এ সময়ে তীব্র নয়। পুব আকাশে তখনো সূর্য অনেকটাই রক্তিম। নগরজীবনের প্রাণচাঞ্চল্য প্রকৃতির উষ্ণতায় আচ্ছাদিত। চারদিকে সুনসান। সবেমাত্র ঐতিহাসিক লুভর জাদুঘরের প্রধান ফটক দর্শনার্থীর জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে কৌতূহলী দর্শনার্থীরা অতীত ইতিহাসের বর্ণাঢ্য জগতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে নানান ভাষাভাষী দর্শনার্থীর ভিড় জমতে শুরু করেছে কাচ আর ইস্পাতে ঘেরা অনুপম পিরামিডের চৌদিকে, নেপোলিয়ন চত্বরে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরার চোখ সর্বত্র। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র।
বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের এই লুভর। বলা যায় জাদুঘরের এক উজ্জ্বল আইকন। অনেক কিংবদন্তি আছে এই বিস্ময়কর রহস্যময় স্থাপত্য সৌকর্যের অনুপম দৃষ্টান্ত এই রাজপ্রাসাদ নিয়ে। ১৫৪৬ সালে ফরাসি রাজা প্রথম ফ্রঁসোয়া এই ভবন ফরাসি রাজাদের মূল বাসভবনে রূপান্তর করেন। এরপর বহুবার ভবনটি সম্প্রসারণ করা হলে বর্তমান রূপ পায়। ১৬৮২ সালে ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুই তাঁর বাসভবন ভার্সাই প্রাসাদে স্থানান্তর করেন। তখন এই প্রাসাদ রাজকীয় সংগ্রহশালার চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্যের প্রদর্শনী কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো।
ফরাসি বিপ্লবের চার বছর পর, ১৭৯৩ সালে ৫৩৭টি শিল্পকর্ম নিয়ে লুভর প্রাসাদটি ‘কেন্দ্রীয় শিল্পকলা জাদুঘর’ নামে উদ্বোধন করা হয়। সেই থেকে বর্তমান জাদুঘরের যাত্রা শুরু। এখানে রক্ষিত আছে মোট ৪ লাখ ৬০ হাজার বস্তু-প্রদর্শনী। এর মধ্যে হাজার পঁয়ত্রিশেক বস্তু দর্শনার্থীর প্রদর্শনের জন্য রাখা আছে। একনাগাড়ে এর প্রতিটি বস্তু দেখতে ১০ সেকেন্ড করে ব্যয় করলেও শেষ করতে সময় লাগবে তিন থেকে চার দিন। লুভর প্রাসাদে কক্ষ আছে ৪০৩টি, মেঝের আয়তন ২৬ লাখ বর্গফুটের বেশি। সব কটি করিডর ঘুরে এলে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ হাঁটা হবে। সিঁড়িতে আছে ১০ হাজার ধাপ এবং ৭০টির মতো লিফট। এই জাদুঘর পরিচালনায় আছেন প্রায় ২ হাজার কর্মচারী। তাঁদের মধ্যে শুধু নিরাপত্তাপ্রহরীর সংখ্যাই হচ্ছে ১ হাজার ৩৬৬ জন। এটি বর্তমান সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর হিসেবে বিখ্যাত। গত বছর প্রায় ৯০ লাখ দর্শনার্থী প্রবেশ করেছিল এই জাদুর জাদুঘরে।
তবে ১৯ অক্টোবর এই জাদুঘরে ঢুকেছিলেন দুজন বিশেষ ব্যক্তি। তাঁরা দর্শনার্থী ছিলেন না, ছিলেন না কোনো সাধারণ চোর। অনেকে বলেন, রাজরত্ন চুরি করতে সবার চোখে ধুলো দিয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করেছিলেন ‘চোরের রাজা’ কিংবা ‘জাদুকর চোর’। ঘড়ির কাঁটা যখন সকাল ৯টার ঘরে, তখন সেন নদীর ডান তীরের রাস্তা ধরে ধীরে ধীরে বিশ্বের সেরা জাদুঘর লুভর প্রাসাদের দিকে এগিয়েছেন দুটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকে করে দুজন চালক। আর তাঁদের পেছনে ধাতব মইবাহী একটি লরি। তাতে সাধারণ শ্রমিকের পোশাকে আরও দুজন ব্যক্তি। মই বহনকারী লরিটি রাস্তার পাশে, লুভর জাদুঘরের এক কোণ ঘেঁষে থামল। লরি থেকে মুখ ঢাকা দুজন ব্যক্তি নেমে এলেন। একজনের পরনে উজ্জ্বল হলুদ এবং অন্যজন গায়ে চড়িয়েছেন উজ্জ্বল কমলা রঙের পোশাক। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এমন পোশাক পরা, কাজে ব্যস্ত শ্রমিকদের দেখতে সবাই অভ্যস্ত। তাই তাঁদের দেখে কেউ তেমন সন্দেহ করেনি। তখন ঠিক ৯টা ৩০ মিনিট।
দুজন তস্কর কাচ ও ইস্পাত কাটার যন্ত্র হাতে, মই দিয়ে তরতর করে উঠে গেলেন প্রথম তলায়। একটি জানালার কাচ আর গ্রিল কেটে ঢুকে গেলেন অ্যাপোলো গ্যালারিতে। সে সময়ে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন জনা দশেক দর্শনার্থী। তখন ৯টা ৩৪ মিনিট। প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতায় দুটি কাচের প্রদর্শনী বাক্স কেটে হাতিয়ে নেওয়া হলো ফরাসি রাজপরিবারের বহু পুরোনো বহুরত্নখচিত ৮টি অমূল্য অলংকার—নীলকান্তমণি, পান্না আর হীরার বহুপ্রাচীন সব গয়না। মোট ৮ হাজার হীরা ছিল তাতে! রানি মেরি-অ্যামেলির নেকলেসে ছিল ৮টি নীলকান্তমণি আর ৬৩১টি হীরা। তৃতীয় নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির মুকুটে খচিত ছিল ২ হাজার হীরা। এর মধ্যে সব থেকে বড় হীরা ১৪০ ক্যারেটের।
ইতিমধ্যে, জাদুঘরের বাইরে অপেক্ষমাণ ডিউটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকের দুই স্মার্ট চালক অস্থির হয়ে উঠলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই, রাজরত্ন চুরি করে অতি নিপুণ, দুর্ধর্ষ চারজন তস্কর মোটরবাইকে করে লাপাত্তা হয়ে গেলেন। তীব্র শব্দে বেজে উঠল সতর্কসংকেত। সেই সংকেত সরাসরি পৌঁছে গেল ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। নগরীর শান্ত প্রভাতের নীরবতায় ছেদ ঘটিয়ে চারদিকে পুলিশের সাইরেন। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে ঘটল শতাব্দীর সেরা চুরি!
ফরাসি জাতির ইতিহাসের অংশ অমূল্য ধন, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির এমন চুরির খবর আলোর গতিতে ছড়িয়ে পড়ল পৃথিবীর সব প্রান্তে। চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলো সংবাদমাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব হলো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিরমি খেলেন। রোববারে একটু আলস্য করবেন বলে ঠিক করেছিলেন সদা ব্যস্ত সংস্কৃতিমন্ত্রী। তা না করে ছুটে গেলেন ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে দেখতে। বাঘা বাঘা বিশেষজ্ঞ চুরি যাওয়া রত্ন ও অলংকারের অর্থমূল্য নির্ধারণ না করতে পেরে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘অমূল্য’—অর্থ দিয়ে কেনা যায় না ইতিহাস। সাংবাদিকদের প্রশ্নের বিষমাখা তির বিদ্ধ হয়ে কাতরাতে কাতরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশেষে স্বীকার করলেন, ‘সুবিশাল এই প্রাসাদের ৮ হাজার দরজা, জানালা পাহারা দেওয়া সত্যিই কঠিন কাজ’। তিনি আরও জানিয়েছেন, এর আগে যে চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল, তা সেই ১৯৯৮ সালে, আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্যামিল কোরোতের একটি তেলচিত্র চুরি হয়েছিল। আজও তা উদ্ধার হয়নি।
দুর্ধর্ষ এই চুরির ঘটনা দেশটির রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। বিরোধীরা এই ঘটনাকে ‘জাতির মুখে কালিমা লেপন’ বলে অভিহিত করে বর্তমান সরকারের পরনের কাপড় নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অচিরেই তাঁর দক্ষ গোয়েন্দারা তস্করদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে এবং জড়িত সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ছাড়বেন। সরকার মোট ৬০ জন বাছাই করা তদন্তকারী গোয়েন্দাকে দায়িত্ব দিল চোরাই মালপত্রসহ চোরদের পাকড়াও করার। এসব গোয়েন্দার আছে সারমেয় নাসিকা আর তাঁদের হাতে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ইতিমধ্যে তাঁদের হাতে অনেক আলামত জমা হয়েছে।
যাঁরা অপরাধজগতের খবর রাখেন, তাঁরা এমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উচ্চারণে আস্থা রাখতে পারছেন না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যাঁরা চুরি করেছেন, তাঁরা কোনো সাধারণ চোর বা ডাকাত নন। অত্যন্ত ঝানু এবং বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তস্কর। অঢেল সম্পদশালী কোনো সংগ্রাহক মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাঁদের ঐতিহাসিক অলংকার চুরি করার কাজে লাগিয়েছে। কিংবা বিদেশি কোনো রাষ্ট্র তাদের দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। হতে পারে, অলংকার থেকে হীরা, জহরত আলাদা করে, খুচরা বিক্রির জন্য চুরি করা হয়েছে। তাই যতই সময় গড়াবে, ততই এই রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসবে।
এদিকে এমন দুর্ধর্ষ চুরির কাহিনি নিয়ে বলিউড চলচিত্র নির্মাণ শুরু করলে, তাতে বিস্মিত হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না। সে ছায়াছবির শিরোনাম হতে পারে, ‘সাত মিনিটে চুরি হলো সাত রাজার ধন’।
গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। অফিস পাড়ায় ভিড় নেই। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। সকালের ঠান্ডা এ সময়ে তীব্র নয়। পুব আকাশে তখনো সূর্য অনেকটাই রক্তিম। নগরজীবনের প্রাণচাঞ্চল্য প্রকৃতির উষ্ণতায় আচ্ছাদিত। চারদিকে সুনসান। সবেমাত্র ঐতিহাসিক লুভর জাদুঘরের প্রধান ফটক দর্শনার্থীর জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে কৌতূহলী দর্শনার্থীরা অতীত ইতিহাসের বর্ণাঢ্য জগতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে নানান ভাষাভাষী দর্শনার্থীর ভিড় জমতে শুরু করেছে কাচ আর ইস্পাতে ঘেরা অনুপম পিরামিডের চৌদিকে, নেপোলিয়ন চত্বরে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরার চোখ সর্বত্র। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র।
বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের এই লুভর। বলা যায় জাদুঘরের এক উজ্জ্বল আইকন। অনেক কিংবদন্তি আছে এই বিস্ময়কর রহস্যময় স্থাপত্য সৌকর্যের অনুপম দৃষ্টান্ত এই রাজপ্রাসাদ নিয়ে। ১৫৪৬ সালে ফরাসি রাজা প্রথম ফ্রঁসোয়া এই ভবন ফরাসি রাজাদের মূল বাসভবনে রূপান্তর করেন। এরপর বহুবার ভবনটি সম্প্রসারণ করা হলে বর্তমান রূপ পায়। ১৬৮২ সালে ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুই তাঁর বাসভবন ভার্সাই প্রাসাদে স্থানান্তর করেন। তখন এই প্রাসাদ রাজকীয় সংগ্রহশালার চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্যের প্রদর্শনী কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো।
ফরাসি বিপ্লবের চার বছর পর, ১৭৯৩ সালে ৫৩৭টি শিল্পকর্ম নিয়ে লুভর প্রাসাদটি ‘কেন্দ্রীয় শিল্পকলা জাদুঘর’ নামে উদ্বোধন করা হয়। সেই থেকে বর্তমান জাদুঘরের যাত্রা শুরু। এখানে রক্ষিত আছে মোট ৪ লাখ ৬০ হাজার বস্তু-প্রদর্শনী। এর মধ্যে হাজার পঁয়ত্রিশেক বস্তু দর্শনার্থীর প্রদর্শনের জন্য রাখা আছে। একনাগাড়ে এর প্রতিটি বস্তু দেখতে ১০ সেকেন্ড করে ব্যয় করলেও শেষ করতে সময় লাগবে তিন থেকে চার দিন। লুভর প্রাসাদে কক্ষ আছে ৪০৩টি, মেঝের আয়তন ২৬ লাখ বর্গফুটের বেশি। সব কটি করিডর ঘুরে এলে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ হাঁটা হবে। সিঁড়িতে আছে ১০ হাজার ধাপ এবং ৭০টির মতো লিফট। এই জাদুঘর পরিচালনায় আছেন প্রায় ২ হাজার কর্মচারী। তাঁদের মধ্যে শুধু নিরাপত্তাপ্রহরীর সংখ্যাই হচ্ছে ১ হাজার ৩৬৬ জন। এটি বর্তমান সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর হিসেবে বিখ্যাত। গত বছর প্রায় ৯০ লাখ দর্শনার্থী প্রবেশ করেছিল এই জাদুর জাদুঘরে।
তবে ১৯ অক্টোবর এই জাদুঘরে ঢুকেছিলেন দুজন বিশেষ ব্যক্তি। তাঁরা দর্শনার্থী ছিলেন না, ছিলেন না কোনো সাধারণ চোর। অনেকে বলেন, রাজরত্ন চুরি করতে সবার চোখে ধুলো দিয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করেছিলেন ‘চোরের রাজা’ কিংবা ‘জাদুকর চোর’। ঘড়ির কাঁটা যখন সকাল ৯টার ঘরে, তখন সেন নদীর ডান তীরের রাস্তা ধরে ধীরে ধীরে বিশ্বের সেরা জাদুঘর লুভর প্রাসাদের দিকে এগিয়েছেন দুটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকে করে দুজন চালক। আর তাঁদের পেছনে ধাতব মইবাহী একটি লরি। তাতে সাধারণ শ্রমিকের পোশাকে আরও দুজন ব্যক্তি। মই বহনকারী লরিটি রাস্তার পাশে, লুভর জাদুঘরের এক কোণ ঘেঁষে থামল। লরি থেকে মুখ ঢাকা দুজন ব্যক্তি নেমে এলেন। একজনের পরনে উজ্জ্বল হলুদ এবং অন্যজন গায়ে চড়িয়েছেন উজ্জ্বল কমলা রঙের পোশাক। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এমন পোশাক পরা, কাজে ব্যস্ত শ্রমিকদের দেখতে সবাই অভ্যস্ত। তাই তাঁদের দেখে কেউ তেমন সন্দেহ করেনি। তখন ঠিক ৯টা ৩০ মিনিট।
দুজন তস্কর কাচ ও ইস্পাত কাটার যন্ত্র হাতে, মই দিয়ে তরতর করে উঠে গেলেন প্রথম তলায়। একটি জানালার কাচ আর গ্রিল কেটে ঢুকে গেলেন অ্যাপোলো গ্যালারিতে। সে সময়ে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন জনা দশেক দর্শনার্থী। তখন ৯টা ৩৪ মিনিট। প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতায় দুটি কাচের প্রদর্শনী বাক্স কেটে হাতিয়ে নেওয়া হলো ফরাসি রাজপরিবারের বহু পুরোনো বহুরত্নখচিত ৮টি অমূল্য অলংকার—নীলকান্তমণি, পান্না আর হীরার বহুপ্রাচীন সব গয়না। মোট ৮ হাজার হীরা ছিল তাতে! রানি মেরি-অ্যামেলির নেকলেসে ছিল ৮টি নীলকান্তমণি আর ৬৩১টি হীরা। তৃতীয় নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির মুকুটে খচিত ছিল ২ হাজার হীরা। এর মধ্যে সব থেকে বড় হীরা ১৪০ ক্যারেটের।
ইতিমধ্যে, জাদুঘরের বাইরে অপেক্ষমাণ ডিউটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকের দুই স্মার্ট চালক অস্থির হয়ে উঠলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই, রাজরত্ন চুরি করে অতি নিপুণ, দুর্ধর্ষ চারজন তস্কর মোটরবাইকে করে লাপাত্তা হয়ে গেলেন। তীব্র শব্দে বেজে উঠল সতর্কসংকেত। সেই সংকেত সরাসরি পৌঁছে গেল ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। নগরীর শান্ত প্রভাতের নীরবতায় ছেদ ঘটিয়ে চারদিকে পুলিশের সাইরেন। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে ঘটল শতাব্দীর সেরা চুরি!
ফরাসি জাতির ইতিহাসের অংশ অমূল্য ধন, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির এমন চুরির খবর আলোর গতিতে ছড়িয়ে পড়ল পৃথিবীর সব প্রান্তে। চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলো সংবাদমাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব হলো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিরমি খেলেন। রোববারে একটু আলস্য করবেন বলে ঠিক করেছিলেন সদা ব্যস্ত সংস্কৃতিমন্ত্রী। তা না করে ছুটে গেলেন ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে দেখতে। বাঘা বাঘা বিশেষজ্ঞ চুরি যাওয়া রত্ন ও অলংকারের অর্থমূল্য নির্ধারণ না করতে পেরে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘অমূল্য’—অর্থ দিয়ে কেনা যায় না ইতিহাস। সাংবাদিকদের প্রশ্নের বিষমাখা তির বিদ্ধ হয়ে কাতরাতে কাতরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশেষে স্বীকার করলেন, ‘সুবিশাল এই প্রাসাদের ৮ হাজার দরজা, জানালা পাহারা দেওয়া সত্যিই কঠিন কাজ’। তিনি আরও জানিয়েছেন, এর আগে যে চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল, তা সেই ১৯৯৮ সালে, আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্যামিল কোরোতের একটি তেলচিত্র চুরি হয়েছিল। আজও তা উদ্ধার হয়নি।
দুর্ধর্ষ এই চুরির ঘটনা দেশটির রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। বিরোধীরা এই ঘটনাকে ‘জাতির মুখে কালিমা লেপন’ বলে অভিহিত করে বর্তমান সরকারের পরনের কাপড় নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অচিরেই তাঁর দক্ষ গোয়েন্দারা তস্করদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে এবং জড়িত সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ছাড়বেন। সরকার মোট ৬০ জন বাছাই করা তদন্তকারী গোয়েন্দাকে দায়িত্ব দিল চোরাই মালপত্রসহ চোরদের পাকড়াও করার। এসব গোয়েন্দার আছে সারমেয় নাসিকা আর তাঁদের হাতে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ইতিমধ্যে তাঁদের হাতে অনেক আলামত জমা হয়েছে।
যাঁরা অপরাধজগতের খবর রাখেন, তাঁরা এমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উচ্চারণে আস্থা রাখতে পারছেন না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যাঁরা চুরি করেছেন, তাঁরা কোনো সাধারণ চোর বা ডাকাত নন। অত্যন্ত ঝানু এবং বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তস্কর। অঢেল সম্পদশালী কোনো সংগ্রাহক মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাঁদের ঐতিহাসিক অলংকার চুরি করার কাজে লাগিয়েছে। কিংবা বিদেশি কোনো রাষ্ট্র তাদের দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। হতে পারে, অলংকার থেকে হীরা, জহরত আলাদা করে, খুচরা বিক্রির জন্য চুরি করা হয়েছে। তাই যতই সময় গড়াবে, ততই এই রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসবে।
এদিকে এমন দুর্ধর্ষ চুরির কাহিনি নিয়ে বলিউড চলচিত্র নির্মাণ শুরু করলে, তাতে বিস্মিত হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না। সে ছায়াছবির শিরোনাম হতে পারে, ‘সাত মিনিটে চুরি হলো সাত রাজার ধন’।
মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছে রসিক শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি
২৩ এপ্রিল ২০২৩তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১৫ ঘণ্টা আগেজাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভি
১৬ ঘণ্টা আগেসবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ...
১৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক
জাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভিসা ফি এবং বর্তমান পরিস্থিতিও তাঁরা বিবেচনায় রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বর্তমানে জাপানের ভিসা ফি অনেক কম।
এখন জাপানের একক এন্ট্রি ভিসার
ফি বাংলাদেশি টাকায় মাত্র ১ হাজার ৭০০ টাকা। মাল্টিপল ভিসা ফি প্রায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অধিকাংশ দেশের ভিসা ফির তুলনায় অনেক কম। জি-সেভেন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার গড় ভিসা চার্জের তুলনায় জাপানের ফি এখনো অনেক নিচে।
চলতি সময়ে জাপানে পর্যটকের ভিড় বেড়েছে ব্যাপক। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩১ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক জাপান ভ্রমণ করেছে। এটি ২০২৪ সালের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এ বছরের শেষ নাগাদ দেশটিতে পর্যটকের সংখ্যা ৪০ মিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছাবে।
ভিসা ফি বাড়ানোর পাশাপাশি জাপান ‘ডিপারচার ট্যাক্স’ বা আন্তর্জাতিক পর্যটক
ফি বাড়ানোর বিষয় নিয়েও ভাবছে। বর্তমানে এর পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০৫ টাকা। জাপানি নাগরিক ও বিদেশি পর্যটক উভয়কেই এই ফি দিতে হয়। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে জাপানে ভ্রমণ তুলনামূলক ব্যয়বহুল হতে পারে। কারণ, প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে বিদেশি পর্যটকদের জাপানে প্রবেশ করতে এখনকার চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন দেশের পর্যটনশিল্পকে দুর্বল করবে না। জাপানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ইতিহাস ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কারণে পর্যটকেরা সব সময় দেশটি ভ্রমণে আগ্রহী থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জাপানের বিশ্বমানের পর্যটন অভিজ্ঞতা ও নিরাপদ পরিবেশের কারণে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে। এর পাশাপাশি, পর্যটন থেকে পাওয়া রাজস্বও বাড়বে, যা দেশটির জাতীয় অর্থনীতি ও পরিষেবা খাতকে আরও বড় করবে। ফলে জাপান অন্য অনেক দেশের মতো ব্যয়বহুল হলেও পর্যটকদের ভ্রমণ আনন্দে ঘাটতি পড়বে না।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
জাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভিসা ফি এবং বর্তমান পরিস্থিতিও তাঁরা বিবেচনায় রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বর্তমানে জাপানের ভিসা ফি অনেক কম।
এখন জাপানের একক এন্ট্রি ভিসার
ফি বাংলাদেশি টাকায় মাত্র ১ হাজার ৭০০ টাকা। মাল্টিপল ভিসা ফি প্রায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অধিকাংশ দেশের ভিসা ফির তুলনায় অনেক কম। জি-সেভেন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার গড় ভিসা চার্জের তুলনায় জাপানের ফি এখনো অনেক নিচে।
চলতি সময়ে জাপানে পর্যটকের ভিড় বেড়েছে ব্যাপক। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩১ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক জাপান ভ্রমণ করেছে। এটি ২০২৪ সালের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এ বছরের শেষ নাগাদ দেশটিতে পর্যটকের সংখ্যা ৪০ মিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছাবে।
ভিসা ফি বাড়ানোর পাশাপাশি জাপান ‘ডিপারচার ট্যাক্স’ বা আন্তর্জাতিক পর্যটক
ফি বাড়ানোর বিষয় নিয়েও ভাবছে। বর্তমানে এর পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০৫ টাকা। জাপানি নাগরিক ও বিদেশি পর্যটক উভয়কেই এই ফি দিতে হয়। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে জাপানে ভ্রমণ তুলনামূলক ব্যয়বহুল হতে পারে। কারণ, প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে বিদেশি পর্যটকদের জাপানে প্রবেশ করতে এখনকার চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন দেশের পর্যটনশিল্পকে দুর্বল করবে না। জাপানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ইতিহাস ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কারণে পর্যটকেরা সব সময় দেশটি ভ্রমণে আগ্রহী থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জাপানের বিশ্বমানের পর্যটন অভিজ্ঞতা ও নিরাপদ পরিবেশের কারণে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে। এর পাশাপাশি, পর্যটন থেকে পাওয়া রাজস্বও বাড়বে, যা দেশটির জাতীয় অর্থনীতি ও পরিষেবা খাতকে আরও বড় করবে। ফলে জাপান অন্য অনেক দেশের মতো ব্যয়বহুল হলেও পর্যটকদের ভ্রমণ আনন্দে ঘাটতি পড়বে না।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছে রসিক শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি
২৩ এপ্রিল ২০২৩তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১৫ ঘণ্টা আগেগত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১৫ ঘণ্টা আগেসবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ...
১৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক
সবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ অনেক আকর্ষণীয় গন্তব্য থাকায় দেশটির ঠিক কোথা থেকে দেখা শুরু করবেন, তা ভাবতেই সময় চলে যাবে। আপনার বাজেট যা-ই হোক, জেনে নিন শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণের জন্য বিশেষ ৫টি জায়গার কথা।
কলম্বো
খাবার, সংস্কৃতি ও শহুরে জীবনের অভিজ্ঞতার জন্য শ্রীলঙ্কার আদর্শ শহর এটি। দেশটির সাংস্কৃতিক রাজধানী কলম্বো ভ্রমণ ছাড়া শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। শহরটিতে আছে ঔপনিবেশিক যুগের ঐতিহাসিক ভবন। এর মধ্যে রয়েছে ১৬০০ সালে প্রতিষ্ঠিত টেরাকোটা-ছাদযুক্ত ডাচ হাসপাতাল।
কলম্বোর জনপ্রিয় সমুদ্র উপকূলীয় ওয়াকিংওয়ে গ্যাল ফেস গ্রিনে কিছু সময় কাটাতে ভুলবেন না। এটি দেশটির স্থানীয় খাবার ও সূর্যাস্ত দেখার অনন্য জায়গা। অবেলায় পানিতে নামতে না চাইলে তীরে বসে পাশের রেস্তোরাঁয় ডুবো তেলে ভাজা চিংড়ি, মসুর ডাল ভাজা, মসলাদার সম্বর দিয়ে সাজানো থালি অর্ডার করুন।
ত্রিঙ্কোমালি
স্থাপত্য, স্মৃতিস্তম্ভ ইত্যাদি মিলিয়ে সলো ট্রাভেলারদের জন্য ত্রিঙ্কোমালি বিশেষ আকর্ষণের জায়গা। এখানকার পানি স্নোরকেলিংয়ের জন্য উপযুক্ত। মাইলের পর মাইল প্রবালপ্রাচীর আর সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবন দেখার সুযোগ মিলবে এখানে। তবে জেনে রাখা ভালো, এখানকার সৈকতে লাইফগার্ড নেই; তাই সাঁতার কাটার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
আরুগাম উপসাগর
এককথায় সার্ফারদের প্রিয় গন্তব্য় এটি। শ্রীলঙ্কার পূর্ব উপকূলের এই উপসাগর সুন্দরতম সৈকত ও সার্ফিংয়ের জন্য পুরো বিশ্বে পরিচিত। অভিজ্ঞ সার্ফারদের জন্য আরুগাম উপসাগরের চেয়ে মনোরম আর বন্য জায়গা খুব কমই আছে। সার্ফিংয়ের বাইরে সূর্যাস্ত উপভোগ, বালুতে শুয়ে রৌদ্রস্নানসহ বিভিন্ন অ্যাকটিভিটি করার দুর্দান্ত জায়গা এটি। এখানে রয়েছে সার্ফ স্কুল, অসংখ্য রেস্তোরাঁ ও বিশ্রামাগার। এখানে ভ্রমণের সেরা সময় এপ্রিল থেকে অক্টোবর।
মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান
হাতিপ্রেমীদের জন্য এটি স্বর্গের সমান! মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান শ্রীলঙ্কার উত্তর-মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। নৈসর্গিক মিনেরিয়া হ্রদকে কেন্দ্র করে এ-জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৯ হাজার হেক্টর
বন ও তৃণভূমিজুড়ে ঘুরে বেড়ায় বন্য হাতির দল। শুষ্ক মৌসুমে পার্কের প্রায় ৩০০ হাতি হ্রদের তীরে জড়ো হয়, যা বিশ্বের এশিয়ান হাতির বৃহত্তম সমাবেশ হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনা এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে ঘটে। ফলে যেতে চাইলে এই সময়ের মধ্য়েই সাফারি প্রি-বুক করতে হবে।
অনুরাধাপুর
প্রাচীন বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখার জন্য সেরা এই ঐতিহাসিক শহর। অনুরাধাপুরে আছে ঘড়ির টাওয়ার, পুরোনো রেলস্টেশন ইত্যাদি। এই শহরের উপকণ্ঠে আছে প্রাচীন শ্রীলঙ্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ। আছে প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির, সুউচ্চ দাগোবা বা স্তূপ এবং পবিত্র মহা বোধি গাছ। ভারতের বোধগয়াতে
বুদ্ধ যে গাছের নিচে নির্বাণ লাভ করেছিলেন, তার অংশ থেকে এটি জন্মানো বলে বিশ্বাস করা হয়। এসবের বাইরে আশপাশের জঙ্গল ও গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আরও নানা ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক বিস্ময়।
সবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ অনেক আকর্ষণীয় গন্তব্য থাকায় দেশটির ঠিক কোথা থেকে দেখা শুরু করবেন, তা ভাবতেই সময় চলে যাবে। আপনার বাজেট যা-ই হোক, জেনে নিন শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণের জন্য বিশেষ ৫টি জায়গার কথা।
কলম্বো
খাবার, সংস্কৃতি ও শহুরে জীবনের অভিজ্ঞতার জন্য শ্রীলঙ্কার আদর্শ শহর এটি। দেশটির সাংস্কৃতিক রাজধানী কলম্বো ভ্রমণ ছাড়া শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। শহরটিতে আছে ঔপনিবেশিক যুগের ঐতিহাসিক ভবন। এর মধ্যে রয়েছে ১৬০০ সালে প্রতিষ্ঠিত টেরাকোটা-ছাদযুক্ত ডাচ হাসপাতাল।
কলম্বোর জনপ্রিয় সমুদ্র উপকূলীয় ওয়াকিংওয়ে গ্যাল ফেস গ্রিনে কিছু সময় কাটাতে ভুলবেন না। এটি দেশটির স্থানীয় খাবার ও সূর্যাস্ত দেখার অনন্য জায়গা। অবেলায় পানিতে নামতে না চাইলে তীরে বসে পাশের রেস্তোরাঁয় ডুবো তেলে ভাজা চিংড়ি, মসুর ডাল ভাজা, মসলাদার সম্বর দিয়ে সাজানো থালি অর্ডার করুন।
ত্রিঙ্কোমালি
স্থাপত্য, স্মৃতিস্তম্ভ ইত্যাদি মিলিয়ে সলো ট্রাভেলারদের জন্য ত্রিঙ্কোমালি বিশেষ আকর্ষণের জায়গা। এখানকার পানি স্নোরকেলিংয়ের জন্য উপযুক্ত। মাইলের পর মাইল প্রবালপ্রাচীর আর সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবন দেখার সুযোগ মিলবে এখানে। তবে জেনে রাখা ভালো, এখানকার সৈকতে লাইফগার্ড নেই; তাই সাঁতার কাটার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
আরুগাম উপসাগর
এককথায় সার্ফারদের প্রিয় গন্তব্য় এটি। শ্রীলঙ্কার পূর্ব উপকূলের এই উপসাগর সুন্দরতম সৈকত ও সার্ফিংয়ের জন্য পুরো বিশ্বে পরিচিত। অভিজ্ঞ সার্ফারদের জন্য আরুগাম উপসাগরের চেয়ে মনোরম আর বন্য জায়গা খুব কমই আছে। সার্ফিংয়ের বাইরে সূর্যাস্ত উপভোগ, বালুতে শুয়ে রৌদ্রস্নানসহ বিভিন্ন অ্যাকটিভিটি করার দুর্দান্ত জায়গা এটি। এখানে রয়েছে সার্ফ স্কুল, অসংখ্য রেস্তোরাঁ ও বিশ্রামাগার। এখানে ভ্রমণের সেরা সময় এপ্রিল থেকে অক্টোবর।
মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান
হাতিপ্রেমীদের জন্য এটি স্বর্গের সমান! মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান শ্রীলঙ্কার উত্তর-মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। নৈসর্গিক মিনেরিয়া হ্রদকে কেন্দ্র করে এ-জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৯ হাজার হেক্টর
বন ও তৃণভূমিজুড়ে ঘুরে বেড়ায় বন্য হাতির দল। শুষ্ক মৌসুমে পার্কের প্রায় ৩০০ হাতি হ্রদের তীরে জড়ো হয়, যা বিশ্বের এশিয়ান হাতির বৃহত্তম সমাবেশ হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনা এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে ঘটে। ফলে যেতে চাইলে এই সময়ের মধ্য়েই সাফারি প্রি-বুক করতে হবে।
অনুরাধাপুর
প্রাচীন বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখার জন্য সেরা এই ঐতিহাসিক শহর। অনুরাধাপুরে আছে ঘড়ির টাওয়ার, পুরোনো রেলস্টেশন ইত্যাদি। এই শহরের উপকণ্ঠে আছে প্রাচীন শ্রীলঙ্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ। আছে প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির, সুউচ্চ দাগোবা বা স্তূপ এবং পবিত্র মহা বোধি গাছ। ভারতের বোধগয়াতে
বুদ্ধ যে গাছের নিচে নির্বাণ লাভ করেছিলেন, তার অংশ থেকে এটি জন্মানো বলে বিশ্বাস করা হয়। এসবের বাইরে আশপাশের জঙ্গল ও গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আরও নানা ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক বিস্ময়।
মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো তাঁর আত্মপ্রতিকৃতির জন্যই মূলত দৃষ্টি কেড়েছে রসিক শিল্পবোদ্ধাদের। তাঁর আঁকা ছবিগুলো একান্তই তাঁর জীবন ও ভাবনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আত্মপ্রতিকৃতিগুলোর দিকে তাকালে সবটা বোঝা যায় না। ব্যাখ্যা করাও যায় না পুরোটা, অস্পষ্ট মনে হয়; মনে হয় রহস্য়ে ঘেরা। ফ্রিদা বলেছেন, ‘আমি
২৩ এপ্রিল ২০২৩তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১৫ ঘণ্টা আগেগত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১৫ ঘণ্টা আগেজাপান শিগগির বিদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। কারণ, প্রায় ৪৮ বছর পর দেশটির সরকার ভিসা ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়া জানিয়েছেন, বিস্তারিত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভিসা ফি বাড়ালে পর্যটনে কী প্রভাব পড়তে পারে, কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখছে। অন্যান্য দেশের ভি
১৬ ঘণ্টা আগে