যে ৫টি ভাষা শিখলে আপনি এগিয়ে থাকবেন

বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তনশীল অর্থনীতির যুগে একাধিক ভাষা জানা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্ট ও কর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে হলে ভাষাজ্ঞান অপরিহার্য। শুধু তা-ই নয়, ভাষা জানলে নিজেকে আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে পারবেন। আজ আমরা এমন পাঁচটি ভাষার কথা বলব, এগুলো শিখে রাখলে আপনার পেশাগত জীবনে অনেক সুবিধা হবে।

১. ইংরেজি

ইংরেজির গুরুত্ব নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। এটি বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে প্রচলিত এবং আধুনিক যোগাযোগ, শিক্ষা, ব্যবসা ও চাকরির অন্যতম প্রধান মাধ্যম। বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে ইংরেজিতে দক্ষদের বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি কিংবা বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চাইলে ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকা আবশ্যক। ফ্রিল্যান্সিং বা রিমোট কাজের ক্ষেত্রেও ইংরেজি জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হলে TOEFL, IELTS বা অন্য কোনো ইংরেজি দক্ষতা পরীক্ষায় ভালো স্কোর প্রয়োজন হয়।

২. মান্দারিন (চায়নিজ)

চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রভাবের কারণে মান্দারিন এখন গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাষা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যদি চীন বা তাইওয়ানে পড়াশোনা বা চাকরির কথা ভাবেন, তাহলে মান্দারিন শিখে রাখা বাধ্যতামূলক। চীনারা সাধারণত নিজেদের ভাষায় যোগাযোগ পছন্দ করে। তাই এ ভাষায় দক্ষতা থাকলে আপনি আন্তর্জাতিক ব্যবসা, অনুবাদ, দোভাষী বা করপোরেট সেক্টরে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন। যেহেতু চীন ভবিষ্যতের বৈশ্বিক ঘটনাবলিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে, তাই মান্দারিন শেখা দীর্ঘ মেয়াদে অনেক কাজে লাগতে পারে।

৩. জার্মান

জার্মানি ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ এবং প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও গবেষণায় বিশ্বনেতা। যদি ইউরোপে পড়তে বা কাজ করতে চান, তাহলে জার্মান ভাষার ওপর দক্ষতা আপনার ক্যারিয়ারে উল্লেখযোগ্য সুবিধা এনে দেবে। জার্মান ভাষা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশের সরকারি ভাষা। অনেক উচ্চমানের জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে জার্মান জানা আবশ্যক। ফেলোশিপ বা স্কলারশিপের ক্ষেত্রে এই ভাষা বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয়।

৪. ফ্রেঞ্চ

ফ্রেঞ্চ একটি বিশ্বজনীন ভাষা এবং এটি জাতিসংঘসহ অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক ভাষা। ফ্রান্স, কানাডা, সুইজারল্যান্ড ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ফ্রেঞ্চ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

যদি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চান কিংবা কানাডা বা ইউরোপে পড়াশোনার কথা ভাবেন, তাহলে ফ্রেঞ্চ শেখা অত্যন্ত কার্যকর হবে। অটোমোবাইল, ফ্যাশন, লাক্সারি পণ্য ও পর্যটনশিল্পে ফ্রেঞ্চভাষী পেশাজীবীদের চাহিদা রয়েছে।

৫. স্প্যানিশ

স্প্যানিশ বিশ্বের অন্যতম বহুল ব্যবহৃত ভাষা। এটি স্পেন, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়াসহ দক্ষিণ আমেরিকার বেশির ভাগ দেশে প্রধান ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে স্প্যানিশভাষী জনগোষ্ঠী দ্রুত বাড়ছে। স্প্যানিশ জানলে ইউরোপ-আমেরিকাভিত্তিক বিভিন্ন চাকরি ও ব্যবসার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাবেন। তুলনামূলক এটি শেখা সহজ। কারণ, এর গ্রামার ও শব্দভান্ডার ইংরেজির সঙ্গে মিল রয়েছে। সব ভাষা শেখা সম্ভব নয়; তবে নিজের লক্ষ্য ও আগ্রহ অনুযায়ী অন্তত দুটি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করলে পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।