কীভাবে একজন সিইও হয়ে উঠবেন

ইন্দ্রা নুই করপোরেট জগতের আলোচিত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। ২০১৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৪ বছর পেপসিকোতে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৭ সালে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় ১১তম স্থানে উঠে আসে তাঁর নাম। ২০০৭ সালে তিনি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক মর্যাদা ‘পদ্মভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত হন।

বর্তমানে তিনি আমাজন, রয়্যাল ফিলিপস, এমআইটি করপোরেশনসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের বোর্ড মেম্বার হিসেবে কর্মরত। লিংকডইন লার্নিংয়কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি অনেক খুশি হই, যখন আমার কাছে এসে কেউ জিজ্ঞেস করে, “আমি একজন সিইও হতে চাই, সেই পর্যন্ত যেতে আমার কী কী করতে হবে”? কারণ, এর অর্থ হলো, মানুষের মনে আশা ও স্বপ্ন আছে যে তারা একদিন সে পর্যন্ত যেতে পারবে।’ ইন্দ্রা নুইয়ের মতে, একজন সিইও হতে হলে এই তিন পদক্ষেপ অবশ্যই মেনে চলতে হবে। যেই কাজটা এখন করছেন, সেটা এমনভাবে করুন, যা আগে কেউ কখনো করেননি।

যদি আপনার বর্তমান কাজটি ভালোভাবে না করেন, তবে একটি সংস্থার এগিয়ে যাওয়া এবং অন্যদের সমর্থন অর্জন করা প্রায় অসম্ভব। আর আপনি যদি কেবল সিইও হওয়ার দিকে খুব বেশি মনোযোগ দেন, তবে আপনার বর্তমান পদটিও হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। তাই এখন যা করছেন, সেটাই মন দিয়ে করুন। আর এমনভাবে করুন, যা আপনার চেয়ে ভালোভাবে কেউ আগে করে দেখাতে পারেননি।

কোনো এক দক্ষতায় বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠুন

নুইয়ের মতে, একজন সিইও হতে হলে যে গুণ থাকা আবশ্যক, সেটি হলো জটিল কাজকে সহজ করার ক্ষমতা। তিনি বলেন, ‘যদি আমি আমার পুরো ক্যারিয়ারে ফিরে যাই, তাহলে দেখতে পাই, সবাই খুব জটিল বিষয়গুলো আমার কাছে নিয়ে আসত। কারণ, তারা জানত যে আমার এই দক্ষতাটা আছে।’ তাই চেষ্টা করুন এমন এক দক্ষতা গড়ে তুলতে, যাতে মানুষ বলে, এই কাজ সম্পর্কে আপনার চেয়ে ভালো কেউ পারে না। কারণ, আপনি যদি নিজ প্রতিষ্ঠানের ভেতর গুরুত্বপূর্ণ হন, তার মানে, প্রতিষ্ঠানের বাইরে আপনার গুরুত্ব আরও বেশি।

আপনি যদি একজন সিইও হতে চান, কিন্তু আপনি কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে না পারেন, তাহলে সিইও হওয়ার কথা ভুলে যান

মনে সাহস রাখুন

নুই বলেন, ‘আমার মতে, এ সময় সাহসের অভাবই সবচেয়ে প্রকট। আপনি যদি কাউকে কোনো বিষয়ে পরামর্শ দিতে যান, তাহলে জোর গলায় সেটা বলুন।’ একজন সিইও কখনোই সত্যি কথা বলতে ভয় পান না; বরং দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজের ভাবনা বা মূল্যবোধের কথা বলতে পারেন।

যোগাযোগের দক্ষতা

জীবন, কাজ এবং সম্পর্কের সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি হলো যোগাযোগ-দক্ষতা। নেটওয়ার্কিংয়ে দক্ষ হলে জীবনের সব বাধা পেরিয়ে সফলতার চূড়া স্পর্শ করতে বেশি সময় লাগে না। নুই বলেন, ‘আপনি যদি একজন সিইও হতে চান, কিন্তু আপনি কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে না পারেন, তাহলে সিইও হওয়ার কথা ভুলে যান।’

ডিজিটাল বিশ্বে মানুষ মনে করে, খুদে বার্তা বা ই-মেইল পাঠানো, টুইট করতে পারাই যথেষ্ট। এটা একটা ভুল ধারণা। আপনাকে কর্মীদের সামনে দাঁড়াতে হবে। এমন সব জায়গায় তাঁদের পাঠাতে হবে, যেখানে যাওয়ার কথা তাঁরা কখনো ভাবেননি।

ইন্দ্রা নুই আরও বলেন, ‘আপনি যত এসব বিষয়ের দিকে লক্ষ রাখবেন, সিইওর দায়িত্ব তত আপনার কাছে চলে আসবে। তবে ভুলেও ওখানে পৌঁছাতে তাড়াহুড়ো করবেন না, রাজনীতির খেলা খেলবেন না, বরং প্রতিষ্ঠানের রাজনীতি থেকে দূরে থাকবেন।’

সূত্র: লিংকডইন