Ajker Patrika

সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল

সাব্বির হোসেন
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩: ২৩
Thumbnail image

সময়ের সঠিক ব্যবহার জীবনের সফলতার অন্যতম প্রধান চাবিকাঠি। সফল ব্যক্তিদের জীবনে একটি বিষয়ে লক্ষ করলে বোঝা যায়, তাঁরা সময় ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে বেশি সচেতন থাকেন। চাইলে যে কেউ এমন সচেতন গুণাবলি রপ্ত করতে পারেন। এ জন্য প্রয়োজন কিছু পদ্ধতির অনুসরণ, যা নিয়মিত চর্চা করলে সময়ের ওপর সহজে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব। এমনই কিছু জনপ্রিয় পদ্ধতি তুলে ধরা হলো।

পোমোডোরো টেকনিক
ইতালিয়ান উদ্ভাবক ফ্রান্সিসকো সিরিল্লোর পোমোডোরো টেকনিক হলো, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করা এবং তারপর বিরতি নেওয়ার পদ্ধতি। এই টেকনিকের মূলমন্ত্র হলো: 
ক. একটি কাজ নির্ধারণ করা। 
খ. ২৫ মিনিটের জন্য সময় নির্ধারণ করা। 
গ. সময় শেষ হলে ৫ মিনিট বিরতি নেওয়া। 
ঘ. চারটি সেশন সম্পন্ন করার পর ১৫ -৩০ মিনিটের দীর্ঘ বিরতি নিতে হবে। 

৩–৩–৩ পদ্ধতি
ওলিভার বার্কম্যানের প্রস্তাবিত ৩–৩–৩ পদ্ধতি হলো: 
ক. ৩ ঘণ্টা গভীর কাজ। 
খ. ৩টি ছোট কাজ। 
গ. ৩টি রক্ষণাবেক্ষণ কাজ। 

আইজেনহাওয়ার ম্যাট্রিকস
প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ারের নামে নামকরণ করা এই পদ্ধতি কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। কাজগুলোকে গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়: 
ক. জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ: তাৎক্ষণিকভাবে করা উচিত। 
খ. জরুরি নয়, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ: পরিকল্পনা করে করতে হবে। 
গ. জরুরি, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নয়: অন্যদের কাছে হস্তান্তর করা। 
ঘ. জরুরি নয়, গুরুত্বপূর্ণও নয়: 
বাদ দিতে হবে। 

দুই মিনিট নিয়ম
এই নিয়ম ডেভিড অ্যালেনের আবিষ্কার। নিয়মটি বলে, যদি কোনো কাজ দুই মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন করা যায়, তাহলে সেটি সঙ্গে সঙ্গেই করা উচিত। তবে দুই মিনিটের বেশি সময় লাগলে তা বাদ দেওয়া উচিত। 

এবিসিডিই পদ্ধতি
এবিসিডিই পদ্ধতি হলো কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করার একটি সহজ পদ্ধতি: A: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। B: কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। 
C: করতে ইচ্ছা হয় এমন কাজ। 
D: অন্যকে করতে দেওয়া যায় 
এমন কাজ। 
E: বাদ দেওয়া যায় এমন কাজ।

৮০/২০ নীতি
পারেটো নীতির ওপর ভিত্তি করে এই পদ্ধতি বলে, কোনো একজন মানুষের কাজের ২০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ ফল আসে। তাই কাজের প্রধান ২০ শতাংশের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আর বাকি ৮০ শতাংশকে কম গুরুত্ব দেওয়া উচিত। 

ফ্রগ খাওয়ার পদ্ধতি
ব্রায়ান ট্রেসির এই পদ্ধতি অনুযায়ী, প্রতিদিনের সবচেয়ে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ কাজটি দিনের প্রথমেই করা উচিত। কঠিন কাজগুলোকে প্রথমে শেষ করলে পরে কাজ করা সহজ হয়ে যায়।

টাইম ব্লকিংক্যাল নিউপোর্টের টাইম ব্লকিং পদ্ধতিতে প্রতিদিনের সময়কে নির্দিষ্ট ব্লকে ভাগ করে দেওয়া হয়। এতে দিনের কাজগুলোকে সহজে সম্পন্ন করা যায়। উদাহরণস্বরূপ: সকাল ৮-১১টা পর্যন্ত গভীর কাজের জন্য। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ছোট ছোট কাজের জন্য। বেলা ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এবং অন্যান্য কাজের জন্য। 

কানবান বোর্ড
তাইচি ওহনোর এই পদ্ধতি হলো কাজগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা।

ক. টুডু: করার জন্য কাজ। 
খ. ইন প্রগ্রেস: চলমান কাজ। 
গ. ডান: সম্পন্ন করা কাজ। এই বোর্ড কাজের দৃশ্যমানতা এবং অপটিমাইজ করতে সাহায্য করে। 

ওয়ারেন বাফেটের ৫/২৫ নিয়ম
ওয়ারেন বাফেটের এই নিয়ম বলে, প্রথমে আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২৫টি কাজ নির্ধারণ করুন। এরপর সেই ২৫টির মধ্যে ৫টি কাজ বেছে নিন এবং শুধু সেই ৫টির ওপর ফোকাস করুন। বাকি ২০টি কাজ এড়িয়ে চলুন।

এমএসসিডব্লিউ পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে কাজগুলোকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়: M: অবশ্যই করতে হবে। S: করা উচিত। C: করা ভালো হবে। W: পরে করা যাবে। 

গেটিং থিংস ডান পদ্ধতি
ডেভিড অ্যালেনের এই পদ্ধতিতে কাজগুলোকে আটকে না রেখে ফ্লোয়ের মাধ্যমে শেষ করার চেষ্টা করা হয়। প্রথমে কাজগুলোর তালিকা তৈরি করতে হবে। এরপর তাদের অর্থ বুঝতে হবে এবং অবশেষে তাদের সংগঠিত করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত