ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা বা ‘হিফজ’ করা ইসলামি সভ্যতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এটি কেবল একটি শিক্ষাপদ্ধতি নয়, বরং আল্লাহর নিজ হাতে তাঁর বাণী সংরক্ষণের এক অলৌকিক ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ মানবজাতিকে পৃথিবীতে প্রেরণের শুরু থেকেই তাঁর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলো—যেমন তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল—মানুষের অসতর্কতা ও বিকৃতির কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু কোরআনুল কারিমের বেলায় আল্লাহ নিজেই সংরক্ষণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমিই কোরআন নাজিল করেছি এবং আমিই এর সংরক্ষক।’ (সুরা হিজর: ৯)। এই ঐশ্বরিক প্রতিশ্রুতির বাস্তব রূপ হলো কোরআন হিফজের ধারাবাহিক ইতিহাস।
নববী যুগ থেকে শুরু
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগেই কোরআন হিফজের যাত্রা শুরু হয়। যখন তিনি সাহাবিদের কাছে কোরআন তিলাওয়াত করতেন, তখন সাহাবায়ে কেরাম তাৎক্ষণিকভাবে তা মুখস্থ করতেন। হজরত আবু বকর (রা.), হজরত উসমান (রা.), হজরত আলী (রা.)-এর মতো বহু সাহাবি পূর্ণ কোরআন হিফজ করেছিলেন। রাসুল (সা.) কোরআন শিক্ষা ও হিফজের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে কোরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়।’ (সহিহ বুখারি: ৫০২৭)। নবীজি (সা.)-এর জীবদ্দশায় কোরআন মুখস্থকারীদের ‘হাফেজ’ উপাধি দেওয়া হয়। এই ধারাকে আরও সুসংহত করতে রাসুল (সা.) আসহাবে সুফফার সঙ্গীদের কোরআন শিক্ষা দিতেন, যা মূলত প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক কোরআন শিক্ষাকেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করে।
খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগ ও সম্প্রসারণ
হজরত আবু বকর (রা.)-এর শাসনামলে ইয়ামামার যুদ্ধে অসংখ্য হাফেজ সাহাবি শহীদ হলে কোরআনের লিখিত রূপ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। হজরত ওমর (রা.)-এর পরামর্শে লিখিত কোরআন সংকলনের কাজ শুরু হয়, যা প্রমাণ করে যে কোরআনের মূল সংরক্ষণের ভিত্তি ছিল হিফজ। পরবর্তী সময়ে হজরত উসমান (রা.) পবিত্র কোরআনের মুসহাফ প্রণয়ন করে তা সব অঞ্চলে পাঠান, কিন্তু মুখস্থবিদ্যার গুরুত্ব তাতে একবিন্দুও কমেনি।
ইসলামের প্রসার ঘটলে মুসলিম সাম্রাজ্যের প্রতিটি শহরে হিফজ মাদ্রাসার বিস্তার ঘটে। বাগদাদ, দামেস্ক, কায়রো, ইস্তাম্বুলের মতো জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রগুলোতে হিফজ মাদ্রাসার প্রসার ঘটে। এর মধ্যে ৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় আজও হিফজ ও কিরাত শিক্ষার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশেও মুসলিম শাসনামলে ওলামায়ে কেরাম কোরআন হিফজ শিক্ষাকে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে দেন। আজও প্রতিটি মুসলিম সমাজে মক্তব ও হিফজখানা তার অস্তিত্ব বহন করছে।
আধুনিক যুগে হিফজ মাদ্রাসার গুরুত্ব
আজ পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশে লাখ লাখ শিশু-কিশোর কোরআন হিফজ করছে। হিফজ মাদ্রাসা কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং ইসলামের বাণীকে মানুষের হৃদয়ে জীবন্ত রাখার এক অনন্য মাধ্যম। রাসুল (সা.) হাফেজদের মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন হিফজ করেছে, কিয়ামতের দিন তাকে বলা হবে—কোরআন তিলাওয়াত করো এবং মর্যাদা লাভ করো।’ (জামে তিরমিজি: ২৯১৪)
হিফজ মাদ্রাসা কোরআনের অলৌকিক সংরক্ষণব্যবস্থার এক জীবন্ত প্রমাণ। ইসলামের ইতিহাসের শুরু থেকে চলে আসা আল্লাহর কিতাব সংরক্ষণের এই ধারাবাহিকতা কিয়ামত পর্যন্ত বজায় থাকবে, ইনশা আল্লাহ।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।
পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা বা ‘হিফজ’ করা ইসলামি সভ্যতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এটি কেবল একটি শিক্ষাপদ্ধতি নয়, বরং আল্লাহর নিজ হাতে তাঁর বাণী সংরক্ষণের এক অলৌকিক ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ মানবজাতিকে পৃথিবীতে প্রেরণের শুরু থেকেই তাঁর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলো—যেমন তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল—মানুষের অসতর্কতা ও বিকৃতির কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু কোরআনুল কারিমের বেলায় আল্লাহ নিজেই সংরক্ষণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমিই কোরআন নাজিল করেছি এবং আমিই এর সংরক্ষক।’ (সুরা হিজর: ৯)। এই ঐশ্বরিক প্রতিশ্রুতির বাস্তব রূপ হলো কোরআন হিফজের ধারাবাহিক ইতিহাস।
নববী যুগ থেকে শুরু
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগেই কোরআন হিফজের যাত্রা শুরু হয়। যখন তিনি সাহাবিদের কাছে কোরআন তিলাওয়াত করতেন, তখন সাহাবায়ে কেরাম তাৎক্ষণিকভাবে তা মুখস্থ করতেন। হজরত আবু বকর (রা.), হজরত উসমান (রা.), হজরত আলী (রা.)-এর মতো বহু সাহাবি পূর্ণ কোরআন হিফজ করেছিলেন। রাসুল (সা.) কোরআন শিক্ষা ও হিফজের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে কোরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়।’ (সহিহ বুখারি: ৫০২৭)। নবীজি (সা.)-এর জীবদ্দশায় কোরআন মুখস্থকারীদের ‘হাফেজ’ উপাধি দেওয়া হয়। এই ধারাকে আরও সুসংহত করতে রাসুল (সা.) আসহাবে সুফফার সঙ্গীদের কোরআন শিক্ষা দিতেন, যা মূলত প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক কোরআন শিক্ষাকেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করে।
খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগ ও সম্প্রসারণ
হজরত আবু বকর (রা.)-এর শাসনামলে ইয়ামামার যুদ্ধে অসংখ্য হাফেজ সাহাবি শহীদ হলে কোরআনের লিখিত রূপ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। হজরত ওমর (রা.)-এর পরামর্শে লিখিত কোরআন সংকলনের কাজ শুরু হয়, যা প্রমাণ করে যে কোরআনের মূল সংরক্ষণের ভিত্তি ছিল হিফজ। পরবর্তী সময়ে হজরত উসমান (রা.) পবিত্র কোরআনের মুসহাফ প্রণয়ন করে তা সব অঞ্চলে পাঠান, কিন্তু মুখস্থবিদ্যার গুরুত্ব তাতে একবিন্দুও কমেনি।
ইসলামের প্রসার ঘটলে মুসলিম সাম্রাজ্যের প্রতিটি শহরে হিফজ মাদ্রাসার বিস্তার ঘটে। বাগদাদ, দামেস্ক, কায়রো, ইস্তাম্বুলের মতো জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রগুলোতে হিফজ মাদ্রাসার প্রসার ঘটে। এর মধ্যে ৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় আজও হিফজ ও কিরাত শিক্ষার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশেও মুসলিম শাসনামলে ওলামায়ে কেরাম কোরআন হিফজ শিক্ষাকে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে দেন। আজও প্রতিটি মুসলিম সমাজে মক্তব ও হিফজখানা তার অস্তিত্ব বহন করছে।
আধুনিক যুগে হিফজ মাদ্রাসার গুরুত্ব
আজ পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশে লাখ লাখ শিশু-কিশোর কোরআন হিফজ করছে। হিফজ মাদ্রাসা কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং ইসলামের বাণীকে মানুষের হৃদয়ে জীবন্ত রাখার এক অনন্য মাধ্যম। রাসুল (সা.) হাফেজদের মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন হিফজ করেছে, কিয়ামতের দিন তাকে বলা হবে—কোরআন তিলাওয়াত করো এবং মর্যাদা লাভ করো।’ (জামে তিরমিজি: ২৯১৪)
হিফজ মাদ্রাসা কোরআনের অলৌকিক সংরক্ষণব্যবস্থার এক জীবন্ত প্রমাণ। ইসলামের ইতিহাসের শুরু থেকে চলে আসা আল্লাহর কিতাব সংরক্ষণের এই ধারাবাহিকতা কিয়ামত পর্যন্ত বজায় থাকবে, ইনশা আল্লাহ।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা বা ‘হিফজ’ করা ইসলামি সভ্যতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এটি কেবল একটি শিক্ষাপদ্ধতি নয়, বরং আল্লাহর নিজ হাতে তাঁর বাণী সংরক্ষণের এক অলৌকিক ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ মানবজাতিকে পৃথিবীতে প্রেরণের শুরু থেকেই তাঁর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলো—যেমন তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল—মানুষের অসতর্কতা ও বিকৃতির কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু কোরআনুল কারিমের বেলায় আল্লাহ নিজেই সংরক্ষণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমিই কোরআন নাজিল করেছি এবং আমিই এর সংরক্ষক।’ (সুরা হিজর: ৯)। এই ঐশ্বরিক প্রতিশ্রুতির বাস্তব রূপ হলো কোরআন হিফজের ধারাবাহিক ইতিহাস।
নববী যুগ থেকে শুরু
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগেই কোরআন হিফজের যাত্রা শুরু হয়। যখন তিনি সাহাবিদের কাছে কোরআন তিলাওয়াত করতেন, তখন সাহাবায়ে কেরাম তাৎক্ষণিকভাবে তা মুখস্থ করতেন। হজরত আবু বকর (রা.), হজরত উসমান (রা.), হজরত আলী (রা.)-এর মতো বহু সাহাবি পূর্ণ কোরআন হিফজ করেছিলেন। রাসুল (সা.) কোরআন শিক্ষা ও হিফজের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে কোরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়।’ (সহিহ বুখারি: ৫০২৭)। নবীজি (সা.)-এর জীবদ্দশায় কোরআন মুখস্থকারীদের ‘হাফেজ’ উপাধি দেওয়া হয়। এই ধারাকে আরও সুসংহত করতে রাসুল (সা.) আসহাবে সুফফার সঙ্গীদের কোরআন শিক্ষা দিতেন, যা মূলত প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক কোরআন শিক্ষাকেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করে।
খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগ ও সম্প্রসারণ
হজরত আবু বকর (রা.)-এর শাসনামলে ইয়ামামার যুদ্ধে অসংখ্য হাফেজ সাহাবি শহীদ হলে কোরআনের লিখিত রূপ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। হজরত ওমর (রা.)-এর পরামর্শে লিখিত কোরআন সংকলনের কাজ শুরু হয়, যা প্রমাণ করে যে কোরআনের মূল সংরক্ষণের ভিত্তি ছিল হিফজ। পরবর্তী সময়ে হজরত উসমান (রা.) পবিত্র কোরআনের মুসহাফ প্রণয়ন করে তা সব অঞ্চলে পাঠান, কিন্তু মুখস্থবিদ্যার গুরুত্ব তাতে একবিন্দুও কমেনি।
ইসলামের প্রসার ঘটলে মুসলিম সাম্রাজ্যের প্রতিটি শহরে হিফজ মাদ্রাসার বিস্তার ঘটে। বাগদাদ, দামেস্ক, কায়রো, ইস্তাম্বুলের মতো জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রগুলোতে হিফজ মাদ্রাসার প্রসার ঘটে। এর মধ্যে ৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় আজও হিফজ ও কিরাত শিক্ষার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশেও মুসলিম শাসনামলে ওলামায়ে কেরাম কোরআন হিফজ শিক্ষাকে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে দেন। আজও প্রতিটি মুসলিম সমাজে মক্তব ও হিফজখানা তার অস্তিত্ব বহন করছে।
আধুনিক যুগে হিফজ মাদ্রাসার গুরুত্ব
আজ পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশে লাখ লাখ শিশু-কিশোর কোরআন হিফজ করছে। হিফজ মাদ্রাসা কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং ইসলামের বাণীকে মানুষের হৃদয়ে জীবন্ত রাখার এক অনন্য মাধ্যম। রাসুল (সা.) হাফেজদের মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন হিফজ করেছে, কিয়ামতের দিন তাকে বলা হবে—কোরআন তিলাওয়াত করো এবং মর্যাদা লাভ করো।’ (জামে তিরমিজি: ২৯১৪)
হিফজ মাদ্রাসা কোরআনের অলৌকিক সংরক্ষণব্যবস্থার এক জীবন্ত প্রমাণ। ইসলামের ইতিহাসের শুরু থেকে চলে আসা আল্লাহর কিতাব সংরক্ষণের এই ধারাবাহিকতা কিয়ামত পর্যন্ত বজায় থাকবে, ইনশা আল্লাহ।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।
পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা বা ‘হিফজ’ করা ইসলামি সভ্যতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এটি কেবল একটি শিক্ষাপদ্ধতি নয়, বরং আল্লাহর নিজ হাতে তাঁর বাণী সংরক্ষণের এক অলৌকিক ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ মানবজাতিকে পৃথিবীতে প্রেরণের শুরু থেকেই তাঁর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলো—যেমন তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল—মানুষের অসতর্কতা ও বিকৃতির কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু কোরআনুল কারিমের বেলায় আল্লাহ নিজেই সংরক্ষণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমিই কোরআন নাজিল করেছি এবং আমিই এর সংরক্ষক।’ (সুরা হিজর: ৯)। এই ঐশ্বরিক প্রতিশ্রুতির বাস্তব রূপ হলো কোরআন হিফজের ধারাবাহিক ইতিহাস।
নববী যুগ থেকে শুরু
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগেই কোরআন হিফজের যাত্রা শুরু হয়। যখন তিনি সাহাবিদের কাছে কোরআন তিলাওয়াত করতেন, তখন সাহাবায়ে কেরাম তাৎক্ষণিকভাবে তা মুখস্থ করতেন। হজরত আবু বকর (রা.), হজরত উসমান (রা.), হজরত আলী (রা.)-এর মতো বহু সাহাবি পূর্ণ কোরআন হিফজ করেছিলেন। রাসুল (সা.) কোরআন শিক্ষা ও হিফজের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে কোরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়।’ (সহিহ বুখারি: ৫০২৭)। নবীজি (সা.)-এর জীবদ্দশায় কোরআন মুখস্থকারীদের ‘হাফেজ’ উপাধি দেওয়া হয়। এই ধারাকে আরও সুসংহত করতে রাসুল (সা.) আসহাবে সুফফার সঙ্গীদের কোরআন শিক্ষা দিতেন, যা মূলত প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক কোরআন শিক্ষাকেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করে।
খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগ ও সম্প্রসারণ
হজরত আবু বকর (রা.)-এর শাসনামলে ইয়ামামার যুদ্ধে অসংখ্য হাফেজ সাহাবি শহীদ হলে কোরআনের লিখিত রূপ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। হজরত ওমর (রা.)-এর পরামর্শে লিখিত কোরআন সংকলনের কাজ শুরু হয়, যা প্রমাণ করে যে কোরআনের মূল সংরক্ষণের ভিত্তি ছিল হিফজ। পরবর্তী সময়ে হজরত উসমান (রা.) পবিত্র কোরআনের মুসহাফ প্রণয়ন করে তা সব অঞ্চলে পাঠান, কিন্তু মুখস্থবিদ্যার গুরুত্ব তাতে একবিন্দুও কমেনি।
ইসলামের প্রসার ঘটলে মুসলিম সাম্রাজ্যের প্রতিটি শহরে হিফজ মাদ্রাসার বিস্তার ঘটে। বাগদাদ, দামেস্ক, কায়রো, ইস্তাম্বুলের মতো জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রগুলোতে হিফজ মাদ্রাসার প্রসার ঘটে। এর মধ্যে ৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় আজও হিফজ ও কিরাত শিক্ষার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশেও মুসলিম শাসনামলে ওলামায়ে কেরাম কোরআন হিফজ শিক্ষাকে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে দেন। আজও প্রতিটি মুসলিম সমাজে মক্তব ও হিফজখানা তার অস্তিত্ব বহন করছে।
আধুনিক যুগে হিফজ মাদ্রাসার গুরুত্ব
আজ পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশে লাখ লাখ শিশু-কিশোর কোরআন হিফজ করছে। হিফজ মাদ্রাসা কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং ইসলামের বাণীকে মানুষের হৃদয়ে জীবন্ত রাখার এক অনন্য মাধ্যম। রাসুল (সা.) হাফেজদের মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন হিফজ করেছে, কিয়ামতের দিন তাকে বলা হবে—কোরআন তিলাওয়াত করো এবং মর্যাদা লাভ করো।’ (জামে তিরমিজি: ২৯১৪)
হিফজ মাদ্রাসা কোরআনের অলৌকিক সংরক্ষণব্যবস্থার এক জীবন্ত প্রমাণ। ইসলামের ইতিহাসের শুরু থেকে চলে আসা আল্লাহর কিতাব সংরক্ষণের এই ধারাবাহিকতা কিয়ামত পর্যন্ত বজায় থাকবে, ইনশা আল্লাহ।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।
এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
২ ঘণ্টা আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১৩ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
বিয়ে মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি কেবল দুটি মানুষের মিলন নয়, বরং দুটি পরিবার, দুটি আত্মা ও দুটি হৃদয়ের পবিত্র বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবনে গড়ে ওঠে পারস্পরিক ভালোবাসা, শান্তি ও মধুর সম্পর্ক।
তাই ইসলাম এই সম্পর্ককে শুধু সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখেনি, বরং একে করেছে ইবাদতের অংশ। এ কারণেই নবীজি (সা.) পুরুষদের স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘নারীকে চারটি কারণে বিয়ে করা হয়। ১. তার সম্পদ, ২. তার বংশমর্যাদা, ৩. তার সৌন্দর্য, ৪. তার দ্বীনদার। অতএব তুমি দ্বীনদারকেই প্রাধান্য দাও। না হলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)
এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
কারণ, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, সম্পদ পরিবর্তনশীল, বংশমর্যাদা বাহ্যিক মর্যাদা মাত্র; কিন্তু দ্বীনদার হলো এমন এক গুণ, যা জীবনকে আখিরাতের সফলতার পথে নিয়ে যায় এবং দাম্পত্যসম্পর্ককে প্রকৃত অর্থে স্থায়ী সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা দেয়।
নবীজি (সা.)-এর এ নির্দেশনার মূল কথা হলো, যখনই দ্বীনদার কোনো নারী পাওয়া যাবে, তখন তাকেই সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো গুণসম্পন্নাকে প্রাধান্য দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।
কারণ দ্বীনদার ছাড়া অন্য সব গুণ একসময় ম্লান হয়ে যায়, কিন্তু দ্বীনদারের আলো দাম্পত্যজীবনকে চিরভালোবাসা, আস্থা ও সন্তুষ্টিতে ভরিয়ে রাখে।
অতএব, একজন মুসলিম যুবকের জন্য স্ত্রী নির্বাচনকালে সর্বোত্তম নির্দেশনা হলো, এমন নারীকে বেছে নেওয়া, যিনি দ্বীনদার, আল্লাহভীরু ও ইসলামি আদর্শে জীবন পরিচালনা করতে অভ্যস্ত। এর মাধ্যমে সংসার হবে শান্তিময়, জীবন হবে কল্যাণময় এবং আখিরাত হবে সফল।
লেখক: ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদ্রাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও ঢাকা
বিয়ে মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি কেবল দুটি মানুষের মিলন নয়, বরং দুটি পরিবার, দুটি আত্মা ও দুটি হৃদয়ের পবিত্র বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবনে গড়ে ওঠে পারস্পরিক ভালোবাসা, শান্তি ও মধুর সম্পর্ক।
তাই ইসলাম এই সম্পর্ককে শুধু সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখেনি, বরং একে করেছে ইবাদতের অংশ। এ কারণেই নবীজি (সা.) পুরুষদের স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘নারীকে চারটি কারণে বিয়ে করা হয়। ১. তার সম্পদ, ২. তার বংশমর্যাদা, ৩. তার সৌন্দর্য, ৪. তার দ্বীনদার। অতএব তুমি দ্বীনদারকেই প্রাধান্য দাও। না হলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)
এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
কারণ, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, সম্পদ পরিবর্তনশীল, বংশমর্যাদা বাহ্যিক মর্যাদা মাত্র; কিন্তু দ্বীনদার হলো এমন এক গুণ, যা জীবনকে আখিরাতের সফলতার পথে নিয়ে যায় এবং দাম্পত্যসম্পর্ককে প্রকৃত অর্থে স্থায়ী সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা দেয়।
নবীজি (সা.)-এর এ নির্দেশনার মূল কথা হলো, যখনই দ্বীনদার কোনো নারী পাওয়া যাবে, তখন তাকেই সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো গুণসম্পন্নাকে প্রাধান্য দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।
কারণ দ্বীনদার ছাড়া অন্য সব গুণ একসময় ম্লান হয়ে যায়, কিন্তু দ্বীনদারের আলো দাম্পত্যজীবনকে চিরভালোবাসা, আস্থা ও সন্তুষ্টিতে ভরিয়ে রাখে।
অতএব, একজন মুসলিম যুবকের জন্য স্ত্রী নির্বাচনকালে সর্বোত্তম নির্দেশনা হলো, এমন নারীকে বেছে নেওয়া, যিনি দ্বীনদার, আল্লাহভীরু ও ইসলামি আদর্শে জীবন পরিচালনা করতে অভ্যস্ত। এর মাধ্যমে সংসার হবে শান্তিময়, জীবন হবে কল্যাণময় এবং আখিরাত হবে সফল।
লেখক: ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদ্রাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও ঢাকা
পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা বা ‘হিফজ’ করা ইসলামি সভ্যতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এটি কেবল একটি শিক্ষাপদ্ধতি নয়, বরং আল্লাহর নিজ হাতে তাঁর বাণী সংরক্ষণের এক অলৌকিক ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ মানবজাতিকে পৃথিবীতে প্রেরণের শুরু থেকেই তাঁর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন।
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫চরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১৩ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১ দিন আগেশাব্বির আহমদ
চরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ। কেউ যখন লজ্জাবোধ হারায়, তার তখন নৈতিক পতনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কেননা কোনো পাপকাজে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লজ্জাহীন ব্যক্তির আর কোনো দ্বিধা থাকে না।
নবী করিম (সা.) স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ‘লজ্জা ইমানের একটি বিশেষ শাখা।’ (সহিহ্ বুখারি)। আর এ লজ্জাবোধ মানুষকে ইমান ও স্বচ্ছতার পথে চলতে সহযোগিতা করে। বলা যায়, লজ্জা হলো একটি অভ্যন্তরীণ জবাবদিহির কাঠগড়া, যা মানুষকে পাপ ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। যার মধ্যে লাজুকতা যতটুকু থাকে, সে পাপ ও অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে ততটাই সংকোচবোধ করে।
লজ্জাহীনতা কেন নৈতিক পতনের প্রথম ধাপ? কারণ, যখন লজ্জা চলে যায়, তখন আর কোনো কিছুই নৈতিক মানদণ্ড হিসেবে অবশিষ্ট থাকে না। নবীজি (সা.) চরম লজ্জাহীনতার পরিণতি বোঝাতে গিয়ে বলেন, ‘যখন তুমি নির্লজ্জ হয়ে পড়বে, তখন যা ইচ্ছা তা-ই করো।’ (সহিহ্ বুখারি)। তাঁর এ কথাটি মূলত একটি হুঁশিয়ারি। লজ্জাহীনতা মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজের দিকে ঠেলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত তাকে ইসলামের পথ থেকে বিচ্যুত করে। পক্ষান্তরে লজ্জাশীলতা মানুষকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়। হাদিসের ভাষায়, ‘লজ্জা ইমানের অঙ্গ, আর ইমানদারের স্থান জান্নাত। লজ্জাহীনতা দুশ্চরিত্রের অঙ্গ, আর দুশ্চরিত্রের স্থান জাহান্নাম।’ (জামে তিরমিজি)
চরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ। কেউ যখন লজ্জাবোধ হারায়, তার তখন নৈতিক পতনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কেননা কোনো পাপকাজে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লজ্জাহীন ব্যক্তির আর কোনো দ্বিধা থাকে না।
নবী করিম (সা.) স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ‘লজ্জা ইমানের একটি বিশেষ শাখা।’ (সহিহ্ বুখারি)। আর এ লজ্জাবোধ মানুষকে ইমান ও স্বচ্ছতার পথে চলতে সহযোগিতা করে। বলা যায়, লজ্জা হলো একটি অভ্যন্তরীণ জবাবদিহির কাঠগড়া, যা মানুষকে পাপ ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। যার মধ্যে লাজুকতা যতটুকু থাকে, সে পাপ ও অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে ততটাই সংকোচবোধ করে।
লজ্জাহীনতা কেন নৈতিক পতনের প্রথম ধাপ? কারণ, যখন লজ্জা চলে যায়, তখন আর কোনো কিছুই নৈতিক মানদণ্ড হিসেবে অবশিষ্ট থাকে না। নবীজি (সা.) চরম লজ্জাহীনতার পরিণতি বোঝাতে গিয়ে বলেন, ‘যখন তুমি নির্লজ্জ হয়ে পড়বে, তখন যা ইচ্ছা তা-ই করো।’ (সহিহ্ বুখারি)। তাঁর এ কথাটি মূলত একটি হুঁশিয়ারি। লজ্জাহীনতা মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজের দিকে ঠেলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত তাকে ইসলামের পথ থেকে বিচ্যুত করে। পক্ষান্তরে লজ্জাশীলতা মানুষকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়। হাদিসের ভাষায়, ‘লজ্জা ইমানের অঙ্গ, আর ইমানদারের স্থান জান্নাত। লজ্জাহীনতা দুশ্চরিত্রের অঙ্গ, আর দুশ্চরিত্রের স্থান জাহান্নাম।’ (জামে তিরমিজি)
পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা বা ‘হিফজ’ করা ইসলামি সভ্যতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এটি কেবল একটি শিক্ষাপদ্ধতি নয়, বরং আল্লাহর নিজ হাতে তাঁর বাণী সংরক্ষণের এক অলৌকিক ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ মানবজাতিকে পৃথিবীতে প্রেরণের শুরু থেকেই তাঁর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন।
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
২ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা বা ‘হিফজ’ করা ইসলামি সভ্যতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এটি কেবল একটি শিক্ষাপদ্ধতি নয়, বরং আল্লাহর নিজ হাতে তাঁর বাণী সংরক্ষণের এক অলৌকিক ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ মানবজাতিকে পৃথিবীতে প্রেরণের শুরু থেকেই তাঁর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন।
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
২ ঘণ্টা আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১৩ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১ দিন আগেরায়হান আল ইমরান
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা বা ‘হিফজ’ করা ইসলামি সভ্যতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এটি কেবল একটি শিক্ষাপদ্ধতি নয়, বরং আল্লাহর নিজ হাতে তাঁর বাণী সংরক্ষণের এক অলৌকিক ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ মানবজাতিকে পৃথিবীতে প্রেরণের শুরু থেকেই তাঁর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন।
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
২ ঘণ্টা আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১৩ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগে