মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

ইসলামের ইতিহাসে যাঁরা জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিকতার আলো ছড়িয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইমাম গাজ্জালি এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি ছিলেন একাধারে দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, আইনজ্ঞ, সুফি সাধক এবং মহান শিক্ষক। তাঁর রচনাবলি ইসলামি দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
ইমাম গাজ্জালি ১০৫৮ বা ১০৫৯ খ্রিষ্টাব্দে (৪৫০ হিজরি) ইরানের খোরাসান প্রদেশের তুস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুহাম্মদ আল-গাজ্জালি। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, তাঁদের উপাধি ‘গাজ্জালি’ আসতে পারে ‘গাজাল’ নামক স্থান থেকে। আবার অনেকে মনে করেন, এটি ‘গজ্জাল’ (সুতা ব্যবসায়ী) শব্দ থেকে এসেছে। শৈশবেই তিনি পিতৃহীন হন। ফলে তাঁর ও তাঁর ভাই আহমদ গাজ্জালির শিক্ষার দায়িত্ব এক সুফি আলেম গ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই ইমাম গাজ্জালি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও জ্ঞানপিপাসু।
শিক্ষা ও জ্ঞানার্জন
প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি প্রথমে জুরজানে (গুরগান) অধ্যয়ন করেন। পরে নিশাপুরে এসে বিখ্যাত আলেম ইমামুল হারামাইন আল-জুয়াইনির তত্ত্বাবধানে কোরআন, হাদিস, ফিকহ, কালাম, যুক্তিবিদ্যা ও দর্শনে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। তাঁর অসাধারণ মেধা দেখে শিক্ষক তাঁকে ‘বাহরুল মুগরিক’ (প্রগাঢ় জ্ঞানের সমুদ্র) উপাধি দেন।
বাগদাদে আগমন ও খ্যাতি
৪৮৪ হিজরিতে (১০৯১ খ্রিস্টাব্দ) ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বাগদাদের বিখ্যাত নিজামিয়া মাদ্রাসার প্রধান অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। তৎকালীন খলিফা আল-মুস্তাজির বিল্লাহ তাঁকে এ সম্মানজনক পদে নিয়োগ করেন। তিনি দ্রুতই খ্যাতি অর্জন করেন এবং মুসলিম বিশ্বে ‘হুজ্জাতুল ইসলাম’ উপাধিতে ভূষিত হন।
সুফিবাদের প্রতি আকর্ষণ
বাগদাদে অবস্থানকালে ইমাম গাজ্জালি গভীর আত্মিক সংকটে পড়েন এবং হঠাৎ ভাষাগত সমস্যায় (স্পিচ ডিসঅর্ডার) আক্রান্ত হন। তিনি উপলব্ধি করেন. শুধুমাত্র বাহ্যিক জ্ঞান মানুষের আত্মার প্রশান্তি আনতে পারে না। তাই তিনি নিজামিয়া মাদ্রাসার অধ্যাপনার দায়িত্ব ত্যাগ করেন এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও আত্মশুদ্ধির জন্য সিরিয়া, জেরুজালেম, মক্কা ও মদিনাসহ বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ প্রায় দশ বছর আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করেন। পরে নিশাপুরে ফিরে এসে আত্মশুদ্ধি ও প্রকৃত ইসলামি জ্ঞান প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন।
রচনাবলি
ইমাম গাজ্জালির রচনাবলি ইসলামের জ্ঞান-বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছে এবং যুগে যুগে মুসলিম চিন্তাবিদদের অনুপ্রাণিত করেছে। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে—
ইহইয়া উলুম আদ-দীন: এটি তাঁর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ, যেখানে ইবাদত, সামাজিকতা, আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেছেন।
তাহাফুত আল-ফালাসিফা: এতে তিনি গ্রিক দর্শনের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরে ইসলামের দর্শনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন।
আল-মুনকিয মিন আদ-দালাল: এটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ, যেখানে তাঁর জ্ঞান-অভিযাত্রা ও আধ্যাত্মিক পরিবর্তনের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
মিশকাতুল আনওয়ার: এটি আধ্যাত্মিকতা ও সুফিবাদের ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা।
কিমিয়া-ই সাআদাত: ফারসি ভাষায় লেখা এই গ্রন্থে আত্মশুদ্ধি ও নৈতিকতার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এটি ‘ইহইয়া উলুম আদ-দীন’-এর সংক্ষিপ্ত সংস্করণ হিসেবে পরিচিত হলেও এতে পারস্য সংস্কৃতির কিছু প্রসঙ্গও যুক্ত রয়েছে।
ইমাম গাজ্জালির চিন্তাধারা
ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বিশ্বাস করতেন যে জ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতা একে অপরের পরিপূরক। তাঁর দর্শনের প্রধান দিকগুলো হলো—
বাহ্যিক ও আত্মিক জ্ঞানের সমন্বয়: তিনি বলেন, বাহ্যিক জ্ঞান মানুষকে প্রকৃত সফলতা দিতে পারে না, বরং আত্মশুদ্ধি ও তাসাউফের মাধ্যমে তা পরিপূর্ণ হয়।
ফিকহ ও সুফিবাদের সংযোগ: তিনি ফিকহ ও সুফিবাদের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করেন এবং ইসলামি আইন ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয় সাধন করেন।
যুক্তিবিদ্যা ও দর্শনের সমালোচনা: তিনি গ্রিক দর্শনের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে প্রমাণ করেন যে ইসলামের জ্ঞান-বিজ্ঞানই সর্বোত্তম।
ইমাম গাজ্জালি ইসলামের এক অনন্য মনীষী, যিনি তাঁর জ্ঞান, গবেষণা ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বে অমর হয়ে আছেন। তাঁর চিন্তাধারা ও রচনাবলি যুগে যুগে মুসলিম চিন্তাবিদদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং ইসলামের মূল দর্শনকে আরও সুসংহত করেছে। তিনি আমাদের শেখান যে বাহ্যিক জ্ঞানের পাশাপাশি আত্মিক শুদ্ধিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর জীবন ও রচনাবলি মুসলিম উম্মাহর জন্য চিরকাল শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে।
তথ্যসূত্র
১. ইহইয়া উলুম আদ-দিন, ইমাম গাজ্জালি (রহ.)
২. তাহাফুত আল-ফালাসিফা, ইমাম গাজ্জালি (রহ.)
৩. আল-মুনকিয মিন আদ-দালাল. ইমাম গাজ্জালি (রহ.)
৪. ইসলামিক বিশ্বকোষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
৫. অন্যান্য

ইসলামের ইতিহাসে যাঁরা জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিকতার আলো ছড়িয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইমাম গাজ্জালি এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি ছিলেন একাধারে দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, আইনজ্ঞ, সুফি সাধক এবং মহান শিক্ষক। তাঁর রচনাবলি ইসলামি দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
ইমাম গাজ্জালি ১০৫৮ বা ১০৫৯ খ্রিষ্টাব্দে (৪৫০ হিজরি) ইরানের খোরাসান প্রদেশের তুস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুহাম্মদ আল-গাজ্জালি। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, তাঁদের উপাধি ‘গাজ্জালি’ আসতে পারে ‘গাজাল’ নামক স্থান থেকে। আবার অনেকে মনে করেন, এটি ‘গজ্জাল’ (সুতা ব্যবসায়ী) শব্দ থেকে এসেছে। শৈশবেই তিনি পিতৃহীন হন। ফলে তাঁর ও তাঁর ভাই আহমদ গাজ্জালির শিক্ষার দায়িত্ব এক সুফি আলেম গ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই ইমাম গাজ্জালি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও জ্ঞানপিপাসু।
শিক্ষা ও জ্ঞানার্জন
প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি প্রথমে জুরজানে (গুরগান) অধ্যয়ন করেন। পরে নিশাপুরে এসে বিখ্যাত আলেম ইমামুল হারামাইন আল-জুয়াইনির তত্ত্বাবধানে কোরআন, হাদিস, ফিকহ, কালাম, যুক্তিবিদ্যা ও দর্শনে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। তাঁর অসাধারণ মেধা দেখে শিক্ষক তাঁকে ‘বাহরুল মুগরিক’ (প্রগাঢ় জ্ঞানের সমুদ্র) উপাধি দেন।
বাগদাদে আগমন ও খ্যাতি
৪৮৪ হিজরিতে (১০৯১ খ্রিস্টাব্দ) ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বাগদাদের বিখ্যাত নিজামিয়া মাদ্রাসার প্রধান অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। তৎকালীন খলিফা আল-মুস্তাজির বিল্লাহ তাঁকে এ সম্মানজনক পদে নিয়োগ করেন। তিনি দ্রুতই খ্যাতি অর্জন করেন এবং মুসলিম বিশ্বে ‘হুজ্জাতুল ইসলাম’ উপাধিতে ভূষিত হন।
সুফিবাদের প্রতি আকর্ষণ
বাগদাদে অবস্থানকালে ইমাম গাজ্জালি গভীর আত্মিক সংকটে পড়েন এবং হঠাৎ ভাষাগত সমস্যায় (স্পিচ ডিসঅর্ডার) আক্রান্ত হন। তিনি উপলব্ধি করেন. শুধুমাত্র বাহ্যিক জ্ঞান মানুষের আত্মার প্রশান্তি আনতে পারে না। তাই তিনি নিজামিয়া মাদ্রাসার অধ্যাপনার দায়িত্ব ত্যাগ করেন এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও আত্মশুদ্ধির জন্য সিরিয়া, জেরুজালেম, মক্কা ও মদিনাসহ বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ প্রায় দশ বছর আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করেন। পরে নিশাপুরে ফিরে এসে আত্মশুদ্ধি ও প্রকৃত ইসলামি জ্ঞান প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন।
রচনাবলি
ইমাম গাজ্জালির রচনাবলি ইসলামের জ্ঞান-বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছে এবং যুগে যুগে মুসলিম চিন্তাবিদদের অনুপ্রাণিত করেছে। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে—
ইহইয়া উলুম আদ-দীন: এটি তাঁর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ, যেখানে ইবাদত, সামাজিকতা, আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেছেন।
তাহাফুত আল-ফালাসিফা: এতে তিনি গ্রিক দর্শনের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরে ইসলামের দর্শনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন।
আল-মুনকিয মিন আদ-দালাল: এটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ, যেখানে তাঁর জ্ঞান-অভিযাত্রা ও আধ্যাত্মিক পরিবর্তনের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
মিশকাতুল আনওয়ার: এটি আধ্যাত্মিকতা ও সুফিবাদের ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা।
কিমিয়া-ই সাআদাত: ফারসি ভাষায় লেখা এই গ্রন্থে আত্মশুদ্ধি ও নৈতিকতার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এটি ‘ইহইয়া উলুম আদ-দীন’-এর সংক্ষিপ্ত সংস্করণ হিসেবে পরিচিত হলেও এতে পারস্য সংস্কৃতির কিছু প্রসঙ্গও যুক্ত রয়েছে।
ইমাম গাজ্জালির চিন্তাধারা
ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বিশ্বাস করতেন যে জ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতা একে অপরের পরিপূরক। তাঁর দর্শনের প্রধান দিকগুলো হলো—
বাহ্যিক ও আত্মিক জ্ঞানের সমন্বয়: তিনি বলেন, বাহ্যিক জ্ঞান মানুষকে প্রকৃত সফলতা দিতে পারে না, বরং আত্মশুদ্ধি ও তাসাউফের মাধ্যমে তা পরিপূর্ণ হয়।
ফিকহ ও সুফিবাদের সংযোগ: তিনি ফিকহ ও সুফিবাদের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করেন এবং ইসলামি আইন ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয় সাধন করেন।
যুক্তিবিদ্যা ও দর্শনের সমালোচনা: তিনি গ্রিক দর্শনের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে প্রমাণ করেন যে ইসলামের জ্ঞান-বিজ্ঞানই সর্বোত্তম।
ইমাম গাজ্জালি ইসলামের এক অনন্য মনীষী, যিনি তাঁর জ্ঞান, গবেষণা ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বে অমর হয়ে আছেন। তাঁর চিন্তাধারা ও রচনাবলি যুগে যুগে মুসলিম চিন্তাবিদদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং ইসলামের মূল দর্শনকে আরও সুসংহত করেছে। তিনি আমাদের শেখান যে বাহ্যিক জ্ঞানের পাশাপাশি আত্মিক শুদ্ধিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর জীবন ও রচনাবলি মুসলিম উম্মাহর জন্য চিরকাল শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে।
তথ্যসূত্র
১. ইহইয়া উলুম আদ-দিন, ইমাম গাজ্জালি (রহ.)
২. তাহাফুত আল-ফালাসিফা, ইমাম গাজ্জালি (রহ.)
৩. আল-মুনকিয মিন আদ-দালাল. ইমাম গাজ্জালি (রহ.)
৪. ইসলামিক বিশ্বকোষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
৫. অন্যান্য

হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
৩ ঘণ্টা আগে
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার...
৬ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগে
বিজয় মানুষের চিরন্তন স্বপ্ন। এই শব্দের মধ্যে আছে পরিশ্রমের দীপ্তি, ত্যাগের চিহ্ন ও আনন্দের সূর্যোদয়। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, বিজয় মানে আত্মতৃপ্তি নয়, বরং বিনয়; উল্লাস নয়, কৃতজ্ঞতা; প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা। বিজয় ইসলামে একধরনের আত্মশুদ্ধি, যেখানে মানুষ আল্লাহর...
৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাস বিন আতিককে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রথমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর তাঁকে ছাদখোলা বাসে ঢাকার রাজপথে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এ সময় বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা যে দেশের ক্বারীদের তিলাওয়াত শুনে কেরাত শিখি, সে দেশের প্রতিযোগিতায় আমার এই অর্জন সত্যিই অনেক আনন্দের। কেরাতের রাজধানীখ্যাত মিসরে গিয়ে এ বিজয় অর্জন বেশ কঠিন ছিল। তবে আমার ওস্তাদ, মা-বাবা এবং দেশের মানুষের দোয়ায় তা সম্ভব হয়েছে।’
হাফেজ আনাসের ওস্তাদ শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করেছে আমার প্রিয় ছাত্র হাফেজ আনাস। সে বারবার বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। এবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে সে আবারও সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।’

শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী জানান, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কায়রোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম হয় বাংলাদেশ।
নেছার আহমদ আরও জানান, হাফেজ আনাস বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জাতীয় বাছাইপর্বে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করেন।
প্রসঙ্গত, হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।

মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাস বিন আতিককে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রথমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর তাঁকে ছাদখোলা বাসে ঢাকার রাজপথে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এ সময় বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা যে দেশের ক্বারীদের তিলাওয়াত শুনে কেরাত শিখি, সে দেশের প্রতিযোগিতায় আমার এই অর্জন সত্যিই অনেক আনন্দের। কেরাতের রাজধানীখ্যাত মিসরে গিয়ে এ বিজয় অর্জন বেশ কঠিন ছিল। তবে আমার ওস্তাদ, মা-বাবা এবং দেশের মানুষের দোয়ায় তা সম্ভব হয়েছে।’
হাফেজ আনাসের ওস্তাদ শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করেছে আমার প্রিয় ছাত্র হাফেজ আনাস। সে বারবার বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। এবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে সে আবারও সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।’

শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী জানান, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কায়রোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম হয় বাংলাদেশ।
নেছার আহমদ আরও জানান, হাফেজ আনাস বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জাতীয় বাছাইপর্বে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করেন।
প্রসঙ্গত, হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।

ইসলামের ইতিহাসে যাঁরা জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিকতার আলো ছড়িয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইমাম গাজ্জালি এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি ছিলেন একাধারে দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, আইনজ্ঞ, সুফি সাধক এবং মহান শিক্ষক। তাঁর রচনাবলি ইসলামি দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
১৬ মার্চ ২০২৫
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার...
৬ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগে
বিজয় মানুষের চিরন্তন স্বপ্ন। এই শব্দের মধ্যে আছে পরিশ্রমের দীপ্তি, ত্যাগের চিহ্ন ও আনন্দের সূর্যোদয়। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, বিজয় মানে আত্মতৃপ্তি নয়, বরং বিনয়; উল্লাস নয়, কৃতজ্ঞতা; প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা। বিজয় ইসলামে একধরনের আত্মশুদ্ধি, যেখানে মানুষ আল্লাহর...
৮ ঘণ্টা আগেশরিফ আহমাদ

জুমার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। জুমার নামাজ প্রসঙ্গে কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, জুমার দিন যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ত্যাগ করো। এটিই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পারো।’ (সুরা জুমুআ: ৯) তাই আল্লাহর আদেশ মেনে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর এই আদেশ অমান্য করে, জুমার নামাজ ত্যাগ করে, তার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তাঁরা রাসুল (সা.)-কে মিম্বরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন, ‘মানুষ যেন জুমার নামাজ ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকে। অন্যথায় আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেবেন। এরপর তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৬৫)
মুনাফিক ব্যক্তি ছাড়া কোনো মুসলমান ফরজ নামাজ ত্যাগ করতে পারে না। নামাজ আদায়ে বিলম্ব হলে প্রকৃত মুমিনের হৃদয়ে অপরাধপ্রবণতা কাজ করে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিশেষ অপারগতা ছাড়া জুমার নামাজ তরক করে, তার নামে মুনাফিক উপাধি লেখা হয় এমন কিতাবে, যার লেখা মোছা যায় না এবং পরিবর্তনও করা যায় না।’ (কিতাবুল উম্ম: ১/২৩৯)
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার সদকা করে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১০৫৩)

জুমার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। জুমার নামাজ প্রসঙ্গে কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, জুমার দিন যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ত্যাগ করো। এটিই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পারো।’ (সুরা জুমুআ: ৯) তাই আল্লাহর আদেশ মেনে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর এই আদেশ অমান্য করে, জুমার নামাজ ত্যাগ করে, তার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তাঁরা রাসুল (সা.)-কে মিম্বরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন, ‘মানুষ যেন জুমার নামাজ ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকে। অন্যথায় আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেবেন। এরপর তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৬৫)
মুনাফিক ব্যক্তি ছাড়া কোনো মুসলমান ফরজ নামাজ ত্যাগ করতে পারে না। নামাজ আদায়ে বিলম্ব হলে প্রকৃত মুমিনের হৃদয়ে অপরাধপ্রবণতা কাজ করে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিশেষ অপারগতা ছাড়া জুমার নামাজ তরক করে, তার নামে মুনাফিক উপাধি লেখা হয় এমন কিতাবে, যার লেখা মোছা যায় না এবং পরিবর্তনও করা যায় না।’ (কিতাবুল উম্ম: ১/২৩৯)
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার সদকা করে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১০৫৩)

ইসলামের ইতিহাসে যাঁরা জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিকতার আলো ছড়িয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইমাম গাজ্জালি এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি ছিলেন একাধারে দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, আইনজ্ঞ, সুফি সাধক এবং মহান শিক্ষক। তাঁর রচনাবলি ইসলামি দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
১৬ মার্চ ২০২৫
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগে
বিজয় মানুষের চিরন্তন স্বপ্ন। এই শব্দের মধ্যে আছে পরিশ্রমের দীপ্তি, ত্যাগের চিহ্ন ও আনন্দের সূর্যোদয়। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, বিজয় মানে আত্মতৃপ্তি নয়, বরং বিনয়; উল্লাস নয়, কৃতজ্ঞতা; প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা। বিজয় ইসলামে একধরনের আত্মশুদ্ধি, যেখানে মানুষ আল্লাহর...
৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১০ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১১ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| জুমা | ১১: ৫৩ মিনিট | ০৩: ৩৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩২ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৩ মিনিট | ০৫: ১০ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১০ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১১ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| জুমা | ১১: ৫৩ মিনিট | ০৩: ৩৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩২ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৩ মিনিট | ০৫: ১০ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

ইসলামের ইতিহাসে যাঁরা জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিকতার আলো ছড়িয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইমাম গাজ্জালি এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি ছিলেন একাধারে দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, আইনজ্ঞ, সুফি সাধক এবং মহান শিক্ষক। তাঁর রচনাবলি ইসলামি দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
১৬ মার্চ ২০২৫
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
৩ ঘণ্টা আগে
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার...
৬ ঘণ্টা আগে
বিজয় মানুষের চিরন্তন স্বপ্ন। এই শব্দের মধ্যে আছে পরিশ্রমের দীপ্তি, ত্যাগের চিহ্ন ও আনন্দের সূর্যোদয়। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, বিজয় মানে আত্মতৃপ্তি নয়, বরং বিনয়; উল্লাস নয়, কৃতজ্ঞতা; প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা। বিজয় ইসলামে একধরনের আত্মশুদ্ধি, যেখানে মানুষ আল্লাহর...
৮ ঘণ্টা আগেমুনীরুল ইসলাম

বিজয় মানুষের চিরন্তন স্বপ্ন। এই শব্দের মধ্যে আছে পরিশ্রমের দীপ্তি, ত্যাগের চিহ্ন ও আনন্দের সূর্যোদয়। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, বিজয় মানে আত্মতৃপ্তি নয়, বরং বিনয়; উল্লাস নয়, কৃতজ্ঞতা; প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা। বিজয় ইসলামে একধরনের আত্মশুদ্ধি, যেখানে মানুষ আল্লাহর সামনে নত হয়ে বলে, ‘আলহামদুলিল্লাহ—সকল প্রশংসা আল্লাহর।’
ইসলামে বিজয়ের ধারণা
মানবসমাজে বিজয়ের অর্থ সাধারণত ক্ষমতা, প্রভাব, জয় বা আধিপত্য। কিন্তু ইসলামে বিজয় হলো আল্লাহর সাহায্যের প্রকাশ। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বিজয় তো শুধু আল্লাহর পক্ষ থেকেই।’ (সুরা আনফাল: ১০)। অর্থাৎ মুসলমান বিশ্বাস করে, যখন সে জয়লাভ করে, তখন তা নিজের বীরত্বের নয়, বরং আল্লাহর ইচ্ছা ও রহমতের ফল। সুতরাং ইসলামে বিজয় কখনো অহংকারে শেষ হয় না; বরং শুরু হয় কৃতজ্ঞতায়।
বিজয়ের প্রকৃত অর্থ ইসলামে দুটি স্তরে প্রকাশিত—১. বাহ্যিক বিজয়; যেমন যুদ্ধক্ষেত্র, ন্যায় প্রতিষ্ঠা, অন্যায়ের পরাজয়। ২. অভ্যন্তরীণ বিজয়; যেমন আত্মসংযম, নফসের ওপর জয়, পাপ থেকে বিরত থাকা। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমরা ছোট জিহাদ থেকে ফিরে এলাম, এখন বড় জিহাদ শুরু হলো নিজের নফসের বিরুদ্ধে।’ অর্থাৎ সত্যিকারের বিজয় হলো, নিজের ভেতরের অন্ধকারকে পরাজিত করা।
মহানবী (সা.)-এর বিজয় উদ্যাপনের রীতি
ইসলামে বিজয় উদ্যাপনের সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে প্রতিফলিত হয়েছে। ইতিহাসে একাধিক যুদ্ধ ও শান্তিচুক্তির মাধ্যমে তিনি আল্লাহর সাহায্যে বিজয় অর্জন করেছেন। কিন্তু প্রতিবারই তাঁর আচরণ ছিল অনন্য।
ক. ফাতহে মক্কা—বিনয়ের মহাগাথা: হিজরি অষ্টম সনে মক্কা বিজয়ের মুহূর্তে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) যখন শহরে প্রবেশ করলেন, তাঁর মাথা উটের কুঁজে নত ছিল। তিনি কোনো সোনার আসনে বসে প্রবেশ করেননি, বরং বলেছিলেন, ‘আজ প্রতিশোধের দিন নয়; আজ ক্ষমার দিন।’ এই বাক্য ইতিহাসে মানবিকতার এক অমর দলিল হয়ে আছে। শত্রুরা যারা তাঁকে তাড়িয়ে দিয়েছিল, তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল, আজ তারা সবাই তাঁর করুণার কারণে মুক্ত। মহানবী (সা.) ঘোষণা করলেন, ‘তোমরা সবাই মুক্ত।’ বিজয়ের এই দিন ছিল না রক্তের উল্লাসে ভরা; বরং ছিল ক্ষমা, কৃতজ্ঞতা ও আল্লাহর প্রশংসায় পূর্ণ।
খ. বদর ও হুনাইন যুদ্ধের শিক্ষা: বদর ছিল ইসলামের প্রথম সামরিক বিজয়। মহানবী (সা.) সেদিন সারা রাত আল্লাহর দরবারে দোয়া করেছেন, কেঁদেছেন, নামাজে দীর্ঘ কিয়াম করেছেন। তিনি জানতেন, এই বিজয় তাঁর নয়, এটি আল্লাহর অনুগ্রহ।
হুনাইন যুদ্ধে মুসলমানেরা সংখ্যায় বেশি ছিল, কিন্তু কিছু সময়ের জন্য তারা আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে পড়েছিল। কোরআনে আল্লাহ সতর্ক করলেন, ‘যখন তোমরা নিজেদের সংখ্যায় গর্ব করেছিলে, তখন তা তোমাদের কোনো উপকারে আসেনি।’ (সুরা তওবা: ২৫)। এই আয়াত মুসলমানদের মনে করিয়ে দেয়, অহংকার বিজয়কে পরাজয়ে রূপ দিতে পারে।
ইসলামের ইতিহাসে বিজয় উদ্যাপনের উদাহরণ
ক. সালাহউদ্দিন আইয়ুবির জেরুজালেম জয়: ক্রুসেডারদের থেকে জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের পর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি শহরে প্রবেশ করলেন; সেখানে ছিল না কোনো যুদ্ধডঙ্কা, ছিল না কোনো প্রতিহিংসা। তিনি গির্জাগুলো রক্ষা করলেন, খ্রিষ্টানদের নিরাপত্তা দিলেন এবং প্রথমেই মসজিদুল আকসায় প্রবেশ করে নফল নামাজ আদায় করলেন। তাঁর মুখে ছিল একটিই কথা, ‘এই বিজয় আমাদের নয়, আল্লাহর।’
খ. তারিক বিন জিয়াদের স্পেন বিজয়: স্পেনে প্রবেশের আগে তারিক বিন জিয়াদ তাঁর সৈন্যদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘পেছনে সমুদ্র, সামনে শত্রু। আমরা একমাত্র আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল।’ বিজয়ের পর তিনি মসজিদ নির্মাণ করেন, শিক্ষার প্রসার ঘটান, দাস মুক্ত করেন। কোনো রাজকীয় উৎসব নয়, বরং ছিল ইবাদতের উৎসব।
গ. সুলতান মাহমুদ গজনবির হিন্দুস্তান জয়: সুলতান মাহমুদ গজনবি প্রতিবার বিজয়ের পর নিজেকে ‘আল্লাহর এক দাস’ বলতেন, কখনো ‘সম্রাট’ উপাধি নেননি। যুদ্ধলব্ধ সম্পদ তিনি মসজিদ, মাদ্রাসা ও দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন করতেন।
বিজয়ের পর সমাজের দায়িত্ব
ইসলামে বিজয়ের পর সমাজে ন্যায়, শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিজয় তখনই অর্থবহ, যখন তা দুর্বলদের মুক্তি দেয়, নির্যাতিতদের আশ্রয় দেয়। বিজয় যদি অন্যায় টিকিয়ে রাখে, অত্যাচার বাঁচিয়ে রাখে, তবে তা বিজয় নয়। ইসলামে বিজয় মানে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা, অন্যায়ের অবসান।
আজকের যুগে বিজয় মানে মিডিয়া কভারেজ, আতশবাজি, মিছিল, গান-বাদ্য ও নৃত্যের আসর। অনেক মুসলমানও পশ্চিমা ধাঁচে উৎসব পালন করে। কিন্তু এসব আচরণ ইসলামি সংস্কৃতির পরিপন্থী। ইসলাম শিক্ষা দেয়, বিজয়ের পর যত বড় আনন্দ, তত বড় দায়িত্ব। বিজয়ের পর যদি কেউ গরিবদের খাওয়ায়, নামাজে দীর্ঘ সিজদায় যায়, কোরআন পাঠ করে, দোয়া করে; তবেই সে ইসলামি বিজয় উদ্যাপন করেছে। আজ মুসলমানদের বিজয় শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে নয়; তা হতে পারে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে, শিক্ষায়, বিজ্ঞানে, নৈতিকতায়, মানবসেবায়।
ইসলামে বিজয় মানে উৎসব নয়, আত্মসমর্পণ। এটি এক আধ্যাত্মিক উপলব্ধি, যেখানে মানুষ নিজের সীমাবদ্ধতা স্বীকার করে, আল্লাহর অনুগ্রহে মাথা নত করে। যে মুহূর্তে মহানবী (সা.) মক্কা জয় করলেন, তখন তাঁর চারপাশে ছিল হাজারো সৈন্য, তবু তাঁর চোখে ছিল অশ্রু, ঠোঁটে ছিল কৃতজ্ঞতার তাসবিহ। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিজয় সেদিন উদ্যাপিত হয়েছিল এক নীরব সিজদায়। আজও যে মুসলমান বিজয়ের পর সিজদায় পড়ে যায়, গরিবকে খাওয়ায়, ক্ষমা করে, অহংকার ত্যাগ করে; সেই মানুষই সত্যিকারের বিজয়ী।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম; পরিচালক, সম্পাদনা কেন্দ্র

বিজয় মানুষের চিরন্তন স্বপ্ন। এই শব্দের মধ্যে আছে পরিশ্রমের দীপ্তি, ত্যাগের চিহ্ন ও আনন্দের সূর্যোদয়। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, বিজয় মানে আত্মতৃপ্তি নয়, বরং বিনয়; উল্লাস নয়, কৃতজ্ঞতা; প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা। বিজয় ইসলামে একধরনের আত্মশুদ্ধি, যেখানে মানুষ আল্লাহর সামনে নত হয়ে বলে, ‘আলহামদুলিল্লাহ—সকল প্রশংসা আল্লাহর।’
ইসলামে বিজয়ের ধারণা
মানবসমাজে বিজয়ের অর্থ সাধারণত ক্ষমতা, প্রভাব, জয় বা আধিপত্য। কিন্তু ইসলামে বিজয় হলো আল্লাহর সাহায্যের প্রকাশ। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বিজয় তো শুধু আল্লাহর পক্ষ থেকেই।’ (সুরা আনফাল: ১০)। অর্থাৎ মুসলমান বিশ্বাস করে, যখন সে জয়লাভ করে, তখন তা নিজের বীরত্বের নয়, বরং আল্লাহর ইচ্ছা ও রহমতের ফল। সুতরাং ইসলামে বিজয় কখনো অহংকারে শেষ হয় না; বরং শুরু হয় কৃতজ্ঞতায়।
বিজয়ের প্রকৃত অর্থ ইসলামে দুটি স্তরে প্রকাশিত—১. বাহ্যিক বিজয়; যেমন যুদ্ধক্ষেত্র, ন্যায় প্রতিষ্ঠা, অন্যায়ের পরাজয়। ২. অভ্যন্তরীণ বিজয়; যেমন আত্মসংযম, নফসের ওপর জয়, পাপ থেকে বিরত থাকা। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমরা ছোট জিহাদ থেকে ফিরে এলাম, এখন বড় জিহাদ শুরু হলো নিজের নফসের বিরুদ্ধে।’ অর্থাৎ সত্যিকারের বিজয় হলো, নিজের ভেতরের অন্ধকারকে পরাজিত করা।
মহানবী (সা.)-এর বিজয় উদ্যাপনের রীতি
ইসলামে বিজয় উদ্যাপনের সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে প্রতিফলিত হয়েছে। ইতিহাসে একাধিক যুদ্ধ ও শান্তিচুক্তির মাধ্যমে তিনি আল্লাহর সাহায্যে বিজয় অর্জন করেছেন। কিন্তু প্রতিবারই তাঁর আচরণ ছিল অনন্য।
ক. ফাতহে মক্কা—বিনয়ের মহাগাথা: হিজরি অষ্টম সনে মক্কা বিজয়ের মুহূর্তে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) যখন শহরে প্রবেশ করলেন, তাঁর মাথা উটের কুঁজে নত ছিল। তিনি কোনো সোনার আসনে বসে প্রবেশ করেননি, বরং বলেছিলেন, ‘আজ প্রতিশোধের দিন নয়; আজ ক্ষমার দিন।’ এই বাক্য ইতিহাসে মানবিকতার এক অমর দলিল হয়ে আছে। শত্রুরা যারা তাঁকে তাড়িয়ে দিয়েছিল, তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল, আজ তারা সবাই তাঁর করুণার কারণে মুক্ত। মহানবী (সা.) ঘোষণা করলেন, ‘তোমরা সবাই মুক্ত।’ বিজয়ের এই দিন ছিল না রক্তের উল্লাসে ভরা; বরং ছিল ক্ষমা, কৃতজ্ঞতা ও আল্লাহর প্রশংসায় পূর্ণ।
খ. বদর ও হুনাইন যুদ্ধের শিক্ষা: বদর ছিল ইসলামের প্রথম সামরিক বিজয়। মহানবী (সা.) সেদিন সারা রাত আল্লাহর দরবারে দোয়া করেছেন, কেঁদেছেন, নামাজে দীর্ঘ কিয়াম করেছেন। তিনি জানতেন, এই বিজয় তাঁর নয়, এটি আল্লাহর অনুগ্রহ।
হুনাইন যুদ্ধে মুসলমানেরা সংখ্যায় বেশি ছিল, কিন্তু কিছু সময়ের জন্য তারা আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে পড়েছিল। কোরআনে আল্লাহ সতর্ক করলেন, ‘যখন তোমরা নিজেদের সংখ্যায় গর্ব করেছিলে, তখন তা তোমাদের কোনো উপকারে আসেনি।’ (সুরা তওবা: ২৫)। এই আয়াত মুসলমানদের মনে করিয়ে দেয়, অহংকার বিজয়কে পরাজয়ে রূপ দিতে পারে।
ইসলামের ইতিহাসে বিজয় উদ্যাপনের উদাহরণ
ক. সালাহউদ্দিন আইয়ুবির জেরুজালেম জয়: ক্রুসেডারদের থেকে জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের পর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি শহরে প্রবেশ করলেন; সেখানে ছিল না কোনো যুদ্ধডঙ্কা, ছিল না কোনো প্রতিহিংসা। তিনি গির্জাগুলো রক্ষা করলেন, খ্রিষ্টানদের নিরাপত্তা দিলেন এবং প্রথমেই মসজিদুল আকসায় প্রবেশ করে নফল নামাজ আদায় করলেন। তাঁর মুখে ছিল একটিই কথা, ‘এই বিজয় আমাদের নয়, আল্লাহর।’
খ. তারিক বিন জিয়াদের স্পেন বিজয়: স্পেনে প্রবেশের আগে তারিক বিন জিয়াদ তাঁর সৈন্যদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘পেছনে সমুদ্র, সামনে শত্রু। আমরা একমাত্র আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল।’ বিজয়ের পর তিনি মসজিদ নির্মাণ করেন, শিক্ষার প্রসার ঘটান, দাস মুক্ত করেন। কোনো রাজকীয় উৎসব নয়, বরং ছিল ইবাদতের উৎসব।
গ. সুলতান মাহমুদ গজনবির হিন্দুস্তান জয়: সুলতান মাহমুদ গজনবি প্রতিবার বিজয়ের পর নিজেকে ‘আল্লাহর এক দাস’ বলতেন, কখনো ‘সম্রাট’ উপাধি নেননি। যুদ্ধলব্ধ সম্পদ তিনি মসজিদ, মাদ্রাসা ও দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন করতেন।
বিজয়ের পর সমাজের দায়িত্ব
ইসলামে বিজয়ের পর সমাজে ন্যায়, শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিজয় তখনই অর্থবহ, যখন তা দুর্বলদের মুক্তি দেয়, নির্যাতিতদের আশ্রয় দেয়। বিজয় যদি অন্যায় টিকিয়ে রাখে, অত্যাচার বাঁচিয়ে রাখে, তবে তা বিজয় নয়। ইসলামে বিজয় মানে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা, অন্যায়ের অবসান।
আজকের যুগে বিজয় মানে মিডিয়া কভারেজ, আতশবাজি, মিছিল, গান-বাদ্য ও নৃত্যের আসর। অনেক মুসলমানও পশ্চিমা ধাঁচে উৎসব পালন করে। কিন্তু এসব আচরণ ইসলামি সংস্কৃতির পরিপন্থী। ইসলাম শিক্ষা দেয়, বিজয়ের পর যত বড় আনন্দ, তত বড় দায়িত্ব। বিজয়ের পর যদি কেউ গরিবদের খাওয়ায়, নামাজে দীর্ঘ সিজদায় যায়, কোরআন পাঠ করে, দোয়া করে; তবেই সে ইসলামি বিজয় উদ্যাপন করেছে। আজ মুসলমানদের বিজয় শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে নয়; তা হতে পারে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে, শিক্ষায়, বিজ্ঞানে, নৈতিকতায়, মানবসেবায়।
ইসলামে বিজয় মানে উৎসব নয়, আত্মসমর্পণ। এটি এক আধ্যাত্মিক উপলব্ধি, যেখানে মানুষ নিজের সীমাবদ্ধতা স্বীকার করে, আল্লাহর অনুগ্রহে মাথা নত করে। যে মুহূর্তে মহানবী (সা.) মক্কা জয় করলেন, তখন তাঁর চারপাশে ছিল হাজারো সৈন্য, তবু তাঁর চোখে ছিল অশ্রু, ঠোঁটে ছিল কৃতজ্ঞতার তাসবিহ। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিজয় সেদিন উদ্যাপিত হয়েছিল এক নীরব সিজদায়। আজও যে মুসলমান বিজয়ের পর সিজদায় পড়ে যায়, গরিবকে খাওয়ায়, ক্ষমা করে, অহংকার ত্যাগ করে; সেই মানুষই সত্যিকারের বিজয়ী।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম; পরিচালক, সম্পাদনা কেন্দ্র

ইসলামের ইতিহাসে যাঁরা জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিকতার আলো ছড়িয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইমাম গাজ্জালি এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি ছিলেন একাধারে দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, আইনজ্ঞ, সুফি সাধক এবং মহান শিক্ষক। তাঁর রচনাবলি ইসলামি দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
১৬ মার্চ ২০২৫
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
৩ ঘণ্টা আগে
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার...
৬ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগে