ইজাজুল হক, ঢাকা

দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না। বরং তারা আল্লাহর নির্দেশিত পথে তাঁরই ইবাদত করে। এখানে কেবলা পরিবর্তনের ঘটনাটি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
হজরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেওয়ার আগেই ফেরেশতাদের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কাবাঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। আদম (আ.) ও তাঁর সন্তানদের জন্য কাবাঘরকেই প্রথম কেবলা সাব্যস্ত করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর বানানো হয়, তা মক্কায় অবস্থিত এবং এ ঘর বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়ত ও বরকতের উৎস।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬)
আদম (আ.) থেকে নুহ (আ.) পর্যন্ত সব নবীর কেবলাও ছিল পবিত্র কাবাঘর। নুহ (আ.)-এর আমলে সংঘটিত মহাপ্লাবনের সময় পবিত্র কাবাঘরের দেয়াল ধসে পড়ে। এরপর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.) আল্লাহর নির্দেশে কাবাঘর ফের নির্মাণ করেন। কাবাঘরই ছিল তাঁদের ও তাঁদের উম্মতের কেবলা। এরপর বনি ইসরাইলের নবী-রাসুলদের জন্য বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা নির্ধারণ করা হয়। মুফাসসির ইমাম কুরতুবি হাদিস বর্ণনাকারী (রাভি) আবুল আলিয়ার সূত্রে বলেন, আগের নবীগণ বায়তুল মোকাদ্দাসে নামাজ পড়ার সময় এমনভাবে দাঁড়াতেন, যাতে বায়তুল মোকাদ্দাসের সখরা (হলুদ গম্বুজ) ও কাবাঘর দুটোই সামনে থাকে। (কুরতুবি)
নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কেবলা
মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে মিরাজের রাতে আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দেন। তখন মুসলমানদের কেবলা কাবাঘরই ছিল। অধিকাংশ সাহাবি ও তাবিয়িগণ এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তাঁদের মত অনুযায়ী, মক্কার কিছু মানুষ ইবরাহিম (আ.)-এর ধর্মের অনুসারী ছিলেন। আর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা কাবাঘরই ছিল। সুতরাং ইসলামে নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কাবাঘরই কেবলা ছিল। মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে কাবাঘরের দিকে মুখ করেই নামাজ পড়তেন। হিজরতের আগ পর্যন্ত কাবাঘরের দিকেই মুখ করে নামাজ আদায় করেছেন। (কুরতুবি, ইবনে কাসির ও মাআরিফুল কোরআন)
তবে ইবনে আব্বাস (রা.)–এর বর্ণনা অনুযায়ী, শুরু থেকেই কেবলা ছিল বায়তুল মোকাদ্দাস। হিজরতের পরও ষোলো-সতেরো মাস পর্যন্ত বায়তুল মোকাদ্দাসই কেবলা ছিল। এরপর পবিত্র কাবাঘরকে কেবলা করার নির্দেশ আসে। তবে মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানির মাঝখানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তেন, যাতে কাবাঘর ও বায়তুল মোকাদ্দাস দুটোই সামনে থাকে। মদিনায় পৌঁছার পর এমনটি করা সম্ভব ছিল না। তাই তাঁর মনে কেবলা পরিবর্তনের বাসনা দানা বাঁধতে থাকে। (ইবনে কাসির)
তবে ইমাম কুরতুবি (রহ.) প্রথম মতটিকেই অধিক শুদ্ধ বলেছেন। কারণ মহানবী (সা.)-এর মদিনায় আগমনের পর যখন ইহুদিদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু হয়, তখন তাদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহর নির্দেশে তিনি তাদের কেবলাকেই কেবলা হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু যখন পরে অভিজ্ঞতায় দেখা গেল, ইহুদিরা হঠকারী মনোভাব ত্যাগ করবে না, তখন মহানবী (সা.)-কে আগের কেবলার দিকে মুখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পবিত্র কাবাঘর তাঁর পূর্বপুরুষ হজরত ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা হওয়ার কারণে তিনি স্বভাবতই সেদিকে নামাজ পড়তে পছন্দ করতেন। (মাআরিফুল কোরআন)
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা
ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, হিজরতের পর ষোলো-সতেরো মাস মহানবী (সা.) বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা মেনে নামাজ আদায় করেছেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁকে কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ পড়ার আদেশ দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি যেখান থেকেই বের হও না কেন, মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরাও এবং যেখানেই থাক না কেন, সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে তাদের মধ্যে সীমালঙ্ঘনকারীরা ছাড়া অন্য কোনো লোক তোমাদের সঙ্গে বিতর্ক করতে না পারে। সুতরাং তাদের ভয় পেয়ো না; বরং একমাত্র আমাকেই ভয় করো, যাতে আমি আমার অনুগ্রহ তোমাদের পুরোপুরি দিতে পারি এবং যাতে তোমরা সৎ পথ পেতে পার।’ (সুরা বাকারা: ১৫০)
কেবলা পরিবর্তনের এ নির্দেশ দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে নাজিল হয়। হাদিস বর্ণনাকারী ইবনে সাআদ বলেন, রাসুল (সা.) উম্মে বিশর ইবনে বারা ইবনে মারুর ঘরে দাওয়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে জোহরের সময় হলে লোকজন নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। দুই রাকাত নামাজ শেষে তৃতীয় রাকাত আদায়কালে অহির মাধ্যমে এই আয়াত নাজিল হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্যদের নিয়ে বায়তুল মোকাদ্দাসের দিক থেকে কাবাঘরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেন। (তাবাকাতে ইবনে সাআদ: ১ / ২৪২)
মহানবী (সা.)-এর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন
মহানবী (সা.) মদিনায় যাওয়ার পর থেকেই কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ আদায়ের ইচ্ছা পোষণ করতেন। তিনি অনুভব করছিলেন, বনি ইসরাইলের নবীদের যুগ শেষ হয়ে গেছে এবং বায়তুল মোকাদ্দাসের কেন্দ্রীয় মর্যাদার অবসান ঘটেছে। এখন ইবরাহিম (আ.)-এর কেবলার দিকে মুখ ফেরানোর সময় হয়ে গেছে। কাবা মুসলিমদের কেবলা সাব্যস্ত হোক—এটাই ছিল তাঁর আন্তরিক বাসনা। এ জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দোয়াও করছিলেন। বারবার আকাশের দিকে চাইতেন—কখন ফেরেশতা কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ নিয়ে আসবেন। (তাফসিরে যাকারিয়া)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আকাশের দিকে তোমার বারবার মুখ ফেরানোকে আমি প্রায় লক্ষ্য করি। সুতরাং আমি তোমাকে সেই কেবলার দিকে অবশ্যই ফিরিয়ে দেব, যা তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি মসজিদে হারামের দিকে মুখ ফেরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন, সেই দিকে মুখ ফেরাও। আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তারা (আগের আসমানি কিতাবের মাধ্যমে) নিশ্চিতভাবে জানে যে, এ তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আসা সত্য। তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন।’ (সুরা বাকারা: ১৪৪)
ইহুদি, মুশরিক ও মুনাফিকদের প্রতিক্রিয়া
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা জানার পর মক্কার মুশরিকেরা বলতে শুরু করল, মুহাম্মদ যেভাবে আমাদের কেবলার দিকে ফেরত এসেছেন, তেমনি অচিরেই আমাদের ধর্মেও ফেরত আসবেন। আমাদের কেবলা সত্য মনে করেই তিনি ফিরে এসেছেন। ইহুদিরা বলতে লাগল, মুহাম্মদ তাঁর আগের নবীদের কেবলার বিরোধিতা করেছেন। মুনাফিকেরা বলতে লাগল, জানি না, তিনি কোন দিকে যাচ্ছেন? প্রথম কেবলা সঠিক হয়ে থাকলে তিনি সত্য বর্জন করেছেন। আর দ্বিতীয়টি সঠিক হয়ে থাকলে প্রথমটির ব্যাপারে তিনি ভ্রষ্ট ছিলেন। (তাফসিরে জাকারিয়া)
এসবের জবাব দিতেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘বোকারা অচিরেই বলবে, তারা এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করে আসছিল, তা থেকে কীসে তাদের ফিরিয়ে দিল? বলো—পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন। তুমি এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করছিলে, তা এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, যাতে আমি জানতে পারি—কে রাসুলের অনুসরণ করে এবং কে ফিরে যায়? আল্লাহ যাদের সৎ পথে পরিচালিত করেছেন, তারা ছাড়া অন্যের কাছে এ (পরিবর্তন) নিশ্চয়ই কঠিন ব্যাপার। … আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তুমি যদি তাদের কাছে সব প্রমাণ নিয়ে আসো, তবু তারা তোমার কেবলার অনুসরণ করবে না; এবং তুমিও তাদের কেবলার অনুসারী নও। …’ (সুরা বাকারা: ১৪২-১৪৫)

দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না। বরং তারা আল্লাহর নির্দেশিত পথে তাঁরই ইবাদত করে। এখানে কেবলা পরিবর্তনের ঘটনাটি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
হজরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেওয়ার আগেই ফেরেশতাদের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কাবাঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। আদম (আ.) ও তাঁর সন্তানদের জন্য কাবাঘরকেই প্রথম কেবলা সাব্যস্ত করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর বানানো হয়, তা মক্কায় অবস্থিত এবং এ ঘর বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়ত ও বরকতের উৎস।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬)
আদম (আ.) থেকে নুহ (আ.) পর্যন্ত সব নবীর কেবলাও ছিল পবিত্র কাবাঘর। নুহ (আ.)-এর আমলে সংঘটিত মহাপ্লাবনের সময় পবিত্র কাবাঘরের দেয়াল ধসে পড়ে। এরপর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.) আল্লাহর নির্দেশে কাবাঘর ফের নির্মাণ করেন। কাবাঘরই ছিল তাঁদের ও তাঁদের উম্মতের কেবলা। এরপর বনি ইসরাইলের নবী-রাসুলদের জন্য বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা নির্ধারণ করা হয়। মুফাসসির ইমাম কুরতুবি হাদিস বর্ণনাকারী (রাভি) আবুল আলিয়ার সূত্রে বলেন, আগের নবীগণ বায়তুল মোকাদ্দাসে নামাজ পড়ার সময় এমনভাবে দাঁড়াতেন, যাতে বায়তুল মোকাদ্দাসের সখরা (হলুদ গম্বুজ) ও কাবাঘর দুটোই সামনে থাকে। (কুরতুবি)
নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কেবলা
মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে মিরাজের রাতে আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দেন। তখন মুসলমানদের কেবলা কাবাঘরই ছিল। অধিকাংশ সাহাবি ও তাবিয়িগণ এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তাঁদের মত অনুযায়ী, মক্কার কিছু মানুষ ইবরাহিম (আ.)-এর ধর্মের অনুসারী ছিলেন। আর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা কাবাঘরই ছিল। সুতরাং ইসলামে নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কাবাঘরই কেবলা ছিল। মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে কাবাঘরের দিকে মুখ করেই নামাজ পড়তেন। হিজরতের আগ পর্যন্ত কাবাঘরের দিকেই মুখ করে নামাজ আদায় করেছেন। (কুরতুবি, ইবনে কাসির ও মাআরিফুল কোরআন)
তবে ইবনে আব্বাস (রা.)–এর বর্ণনা অনুযায়ী, শুরু থেকেই কেবলা ছিল বায়তুল মোকাদ্দাস। হিজরতের পরও ষোলো-সতেরো মাস পর্যন্ত বায়তুল মোকাদ্দাসই কেবলা ছিল। এরপর পবিত্র কাবাঘরকে কেবলা করার নির্দেশ আসে। তবে মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানির মাঝখানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তেন, যাতে কাবাঘর ও বায়তুল মোকাদ্দাস দুটোই সামনে থাকে। মদিনায় পৌঁছার পর এমনটি করা সম্ভব ছিল না। তাই তাঁর মনে কেবলা পরিবর্তনের বাসনা দানা বাঁধতে থাকে। (ইবনে কাসির)
তবে ইমাম কুরতুবি (রহ.) প্রথম মতটিকেই অধিক শুদ্ধ বলেছেন। কারণ মহানবী (সা.)-এর মদিনায় আগমনের পর যখন ইহুদিদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু হয়, তখন তাদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহর নির্দেশে তিনি তাদের কেবলাকেই কেবলা হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু যখন পরে অভিজ্ঞতায় দেখা গেল, ইহুদিরা হঠকারী মনোভাব ত্যাগ করবে না, তখন মহানবী (সা.)-কে আগের কেবলার দিকে মুখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পবিত্র কাবাঘর তাঁর পূর্বপুরুষ হজরত ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা হওয়ার কারণে তিনি স্বভাবতই সেদিকে নামাজ পড়তে পছন্দ করতেন। (মাআরিফুল কোরআন)
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা
ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, হিজরতের পর ষোলো-সতেরো মাস মহানবী (সা.) বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা মেনে নামাজ আদায় করেছেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁকে কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ পড়ার আদেশ দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি যেখান থেকেই বের হও না কেন, মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরাও এবং যেখানেই থাক না কেন, সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে তাদের মধ্যে সীমালঙ্ঘনকারীরা ছাড়া অন্য কোনো লোক তোমাদের সঙ্গে বিতর্ক করতে না পারে। সুতরাং তাদের ভয় পেয়ো না; বরং একমাত্র আমাকেই ভয় করো, যাতে আমি আমার অনুগ্রহ তোমাদের পুরোপুরি দিতে পারি এবং যাতে তোমরা সৎ পথ পেতে পার।’ (সুরা বাকারা: ১৫০)
কেবলা পরিবর্তনের এ নির্দেশ দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে নাজিল হয়। হাদিস বর্ণনাকারী ইবনে সাআদ বলেন, রাসুল (সা.) উম্মে বিশর ইবনে বারা ইবনে মারুর ঘরে দাওয়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে জোহরের সময় হলে লোকজন নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। দুই রাকাত নামাজ শেষে তৃতীয় রাকাত আদায়কালে অহির মাধ্যমে এই আয়াত নাজিল হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্যদের নিয়ে বায়তুল মোকাদ্দাসের দিক থেকে কাবাঘরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেন। (তাবাকাতে ইবনে সাআদ: ১ / ২৪২)
মহানবী (সা.)-এর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন
মহানবী (সা.) মদিনায় যাওয়ার পর থেকেই কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ আদায়ের ইচ্ছা পোষণ করতেন। তিনি অনুভব করছিলেন, বনি ইসরাইলের নবীদের যুগ শেষ হয়ে গেছে এবং বায়তুল মোকাদ্দাসের কেন্দ্রীয় মর্যাদার অবসান ঘটেছে। এখন ইবরাহিম (আ.)-এর কেবলার দিকে মুখ ফেরানোর সময় হয়ে গেছে। কাবা মুসলিমদের কেবলা সাব্যস্ত হোক—এটাই ছিল তাঁর আন্তরিক বাসনা। এ জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দোয়াও করছিলেন। বারবার আকাশের দিকে চাইতেন—কখন ফেরেশতা কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ নিয়ে আসবেন। (তাফসিরে যাকারিয়া)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আকাশের দিকে তোমার বারবার মুখ ফেরানোকে আমি প্রায় লক্ষ্য করি। সুতরাং আমি তোমাকে সেই কেবলার দিকে অবশ্যই ফিরিয়ে দেব, যা তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি মসজিদে হারামের দিকে মুখ ফেরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন, সেই দিকে মুখ ফেরাও। আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তারা (আগের আসমানি কিতাবের মাধ্যমে) নিশ্চিতভাবে জানে যে, এ তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আসা সত্য। তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন।’ (সুরা বাকারা: ১৪৪)
ইহুদি, মুশরিক ও মুনাফিকদের প্রতিক্রিয়া
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা জানার পর মক্কার মুশরিকেরা বলতে শুরু করল, মুহাম্মদ যেভাবে আমাদের কেবলার দিকে ফেরত এসেছেন, তেমনি অচিরেই আমাদের ধর্মেও ফেরত আসবেন। আমাদের কেবলা সত্য মনে করেই তিনি ফিরে এসেছেন। ইহুদিরা বলতে লাগল, মুহাম্মদ তাঁর আগের নবীদের কেবলার বিরোধিতা করেছেন। মুনাফিকেরা বলতে লাগল, জানি না, তিনি কোন দিকে যাচ্ছেন? প্রথম কেবলা সঠিক হয়ে থাকলে তিনি সত্য বর্জন করেছেন। আর দ্বিতীয়টি সঠিক হয়ে থাকলে প্রথমটির ব্যাপারে তিনি ভ্রষ্ট ছিলেন। (তাফসিরে জাকারিয়া)
এসবের জবাব দিতেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘বোকারা অচিরেই বলবে, তারা এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করে আসছিল, তা থেকে কীসে তাদের ফিরিয়ে দিল? বলো—পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন। তুমি এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করছিলে, তা এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, যাতে আমি জানতে পারি—কে রাসুলের অনুসরণ করে এবং কে ফিরে যায়? আল্লাহ যাদের সৎ পথে পরিচালিত করেছেন, তারা ছাড়া অন্যের কাছে এ (পরিবর্তন) নিশ্চয়ই কঠিন ব্যাপার। … আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তুমি যদি তাদের কাছে সব প্রমাণ নিয়ে আসো, তবু তারা তোমার কেবলার অনুসরণ করবে না; এবং তুমিও তাদের কেবলার অনুসারী নও। …’ (সুরা বাকারা: ১৪২-১৪৫)

সন্তান আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান উপহার, এক টুকরা অস্তিত্ব, হৃদয়ের স্পন্দন। সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার সম্পর্ক ভালোবাসা ও দয়ার এক স্বর্গীয় বন্ধন। এই ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব হৃদয়ে প্রবাহিত এক অলৌকিক অনুভব। এই সম্পর্কের গভীরতা ও গুরুত্ব বোঝাতে কোরআন ও হাদিসে এসেছে দৃষ্টান্ত...
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগে
জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।
১ দিন আগে
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
১ দিন আগেকাউসার লাবীব

সন্তান আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান উপহার, এক টুকরা অস্তিত্ব, হৃদয়ের স্পন্দন। সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার সম্পর্ক ভালোবাসা ও দয়ার এক স্বর্গীয় বন্ধন। এই ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব হৃদয়ে প্রবাহিত এক অলৌকিক অনুভব। এই সম্পর্কের গভীরতা ও গুরুত্ব বোঝাতে কোরআন ও হাদিসে এসেছে দৃষ্টান্ত, যা শুধু ভালোবাসার নয়; বরং দয়া, অনুগ্রহ ও রহমতের নিদর্শন।
সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘আল্লাহ তাঁর রহমতকে ১০০ ভাগে বিভক্ত করেছেন। তার মধ্যে ৯৯ ভাগ তিনি নিজের কাছে সংরক্ষিত রেখেছেন। আর পৃথিবীতে ১ ভাগ পাঠিয়েছেন। ওই ১ ভাগ পেয়ে সৃষ্টিজগৎ পরস্পরের প্রতি দয়া করে। এমনকি ঘোড়া তার বাচ্চার ওপর থেকে পা উঠিয়ে নেয় এই আশঙ্কায় যে সে ব্যথা পাবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৬০০০)
আল্লাহর দেওয়া সেই ভালোবাসা থেকেই মানুষ সন্তানকে কোলে-পিঠে নিয়ে মানুষ করে, আদর করে চুমু খায়, স্নেহ মেখে দেয়। বলা যায়, এ সবই আল্লাহর রহমতের একটি প্রতিফলন। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ক্ষেত্রে নিজের জীবনে ভালোবাসা, স্নেহ ও দয়ার এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা যুগে যুগে অভিভাবকদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবে।
একবার নবী করিম (সা.) প্রিয় নাতি হাসানকে চুমু খান। সে সময় তাঁর কাছে আকরা তামিমি (রা.) বসা ছিলেন। তিনি নবীজিকে বললেন, ‘আমার ১০ ছেলে। আমি তাদের কাউকেই কোনো দিন চুমু দিইনি।’ দয়ার নবী (সা.) তার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘যে দয়া করে না, সে দয়া পায় না।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৯৭)
আরেক হাদিসে এসেছে, ‘এক বেদুইন এসে নবী (সা.)-কে বললেন, আপনারা শিশুদের চুমু দেন, কিন্তু আমরা ওদের চুমু দিই না। প্রিয় নবীজি (সা.) তখন বললেন, আল্লাহ যদি তোমার হৃদয় থেকে দয়ামায়া উঠিয়ে নেন, তাহলে তোমার ওপর আমার কি কোনো অধিকার আছে!’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৯৮)
সন্তানকে স্নেহ করা, চুমু খাওয়া, কোলে নেওয়া—এসব শুধু আবেগ নয়; বরং একেকটি ইবাদত ও সুন্নাহ।

সন্তান আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান উপহার, এক টুকরা অস্তিত্ব, হৃদয়ের স্পন্দন। সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার সম্পর্ক ভালোবাসা ও দয়ার এক স্বর্গীয় বন্ধন। এই ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব হৃদয়ে প্রবাহিত এক অলৌকিক অনুভব। এই সম্পর্কের গভীরতা ও গুরুত্ব বোঝাতে কোরআন ও হাদিসে এসেছে দৃষ্টান্ত, যা শুধু ভালোবাসার নয়; বরং দয়া, অনুগ্রহ ও রহমতের নিদর্শন।
সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘আল্লাহ তাঁর রহমতকে ১০০ ভাগে বিভক্ত করেছেন। তার মধ্যে ৯৯ ভাগ তিনি নিজের কাছে সংরক্ষিত রেখেছেন। আর পৃথিবীতে ১ ভাগ পাঠিয়েছেন। ওই ১ ভাগ পেয়ে সৃষ্টিজগৎ পরস্পরের প্রতি দয়া করে। এমনকি ঘোড়া তার বাচ্চার ওপর থেকে পা উঠিয়ে নেয় এই আশঙ্কায় যে সে ব্যথা পাবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৬০০০)
আল্লাহর দেওয়া সেই ভালোবাসা থেকেই মানুষ সন্তানকে কোলে-পিঠে নিয়ে মানুষ করে, আদর করে চুমু খায়, স্নেহ মেখে দেয়। বলা যায়, এ সবই আল্লাহর রহমতের একটি প্রতিফলন। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ক্ষেত্রে নিজের জীবনে ভালোবাসা, স্নেহ ও দয়ার এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা যুগে যুগে অভিভাবকদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবে।
একবার নবী করিম (সা.) প্রিয় নাতি হাসানকে চুমু খান। সে সময় তাঁর কাছে আকরা তামিমি (রা.) বসা ছিলেন। তিনি নবীজিকে বললেন, ‘আমার ১০ ছেলে। আমি তাদের কাউকেই কোনো দিন চুমু দিইনি।’ দয়ার নবী (সা.) তার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘যে দয়া করে না, সে দয়া পায় না।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৯৭)
আরেক হাদিসে এসেছে, ‘এক বেদুইন এসে নবী (সা.)-কে বললেন, আপনারা শিশুদের চুমু দেন, কিন্তু আমরা ওদের চুমু দিই না। প্রিয় নবীজি (সা.) তখন বললেন, আল্লাহ যদি তোমার হৃদয় থেকে দয়ামায়া উঠিয়ে নেন, তাহলে তোমার ওপর আমার কি কোনো অধিকার আছে!’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৯৮)
সন্তানকে স্নেহ করা, চুমু খাওয়া, কোলে নেওয়া—এসব শুধু আবেগ নয়; বরং একেকটি ইবাদত ও সুন্নাহ।

তৃতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না।
০৫ মার্চ ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগে
জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।
১ দিন আগে
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ০৬ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ০৭ মিনিট | ০৬: ২৬ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫০ মিনিট | ০৩: ৩৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৫ মিনিট | ০৫: ১০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১২ মিনিট | ০৬: ৩১ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩২ মিনিট | ০৫: ০৬ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ০৬ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ০৭ মিনিট | ০৬: ২৬ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫০ মিনিট | ০৩: ৩৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৫ মিনিট | ০৫: ১০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১২ মিনিট | ০৬: ৩১ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩২ মিনিট | ০৫: ০৬ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

তৃতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না।
০৫ মার্চ ২০২৩
সন্তান আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান উপহার, এক টুকরা অস্তিত্ব, হৃদয়ের স্পন্দন। সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার সম্পর্ক ভালোবাসা ও দয়ার এক স্বর্গীয় বন্ধন। এই ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব হৃদয়ে প্রবাহিত এক অলৌকিক অনুভব। এই সম্পর্কের গভীরতা ও গুরুত্ব বোঝাতে কোরআন ও হাদিসে এসেছে দৃষ্টান্ত...
১১ ঘণ্টা আগে
জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।
১ দিন আগে
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
১ দিন আগেডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।’ (সুরা জুমা: ৯)
এই আয়াতটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে জুমা শুধু ফরজ নামাজের জন্য নয়, বরং আত্মপর্যালোচনা এবং নেক আমল বৃদ্ধির এক মহান সময়। বিশেষ করে জমাদিউস সানি মাসের এই দ্বিতীয় জুমা মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুসলিমদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের সুযোগ এনে দেয়।
অতএব, মাসের এই বরকতময় জুমাবারে নামাজ, দোয়া, কোরআন তিলাওয়াত ও সদকা আল্লাহর নৈকট্য লাভের বিশেষ সুযোগ তৈরি করে দেয়।
জুমার দিনে করণীয় আমলসমূহ
জুমার দিনটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মূল্যবান। এই দিনে বিশেষভাবে কিছু আমল করা উচিত। যেমন—
জমাদিউস সানির দ্বিতীয় জুমা আল্লাহর নৈকট্য লাভ, আত্মশুদ্ধি, নেক আমল বৃদ্ধি এবং সমাজে সদকা ও দান করার এক অনন্য সুযোগ। আল্লাহ আমাদের সকলের নেক আমল গ্রহণ করুন এবং জীবনকে শান্তিতে ভরিয়ে দিন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।’ (সুরা জুমা: ৯)
এই আয়াতটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে জুমা শুধু ফরজ নামাজের জন্য নয়, বরং আত্মপর্যালোচনা এবং নেক আমল বৃদ্ধির এক মহান সময়। বিশেষ করে জমাদিউস সানি মাসের এই দ্বিতীয় জুমা মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুসলিমদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের সুযোগ এনে দেয়।
অতএব, মাসের এই বরকতময় জুমাবারে নামাজ, দোয়া, কোরআন তিলাওয়াত ও সদকা আল্লাহর নৈকট্য লাভের বিশেষ সুযোগ তৈরি করে দেয়।
জুমার দিনে করণীয় আমলসমূহ
জুমার দিনটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মূল্যবান। এই দিনে বিশেষভাবে কিছু আমল করা উচিত। যেমন—
জমাদিউস সানির দ্বিতীয় জুমা আল্লাহর নৈকট্য লাভ, আত্মশুদ্ধি, নেক আমল বৃদ্ধি এবং সমাজে সদকা ও দান করার এক অনন্য সুযোগ। আল্লাহ আমাদের সকলের নেক আমল গ্রহণ করুন এবং জীবনকে শান্তিতে ভরিয়ে দিন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

তৃতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না।
০৫ মার্চ ২০২৩
সন্তান আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান উপহার, এক টুকরা অস্তিত্ব, হৃদয়ের স্পন্দন। সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার সম্পর্ক ভালোবাসা ও দয়ার এক স্বর্গীয় বন্ধন। এই ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব হৃদয়ে প্রবাহিত এক অলৌকিক অনুভব। এই সম্পর্কের গভীরতা ও গুরুত্ব বোঝাতে কোরআন ও হাদিসে এসেছে দৃষ্টান্ত...
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগে
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
১ দিন আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন। নবীজির মুখনিঃসৃত মূল্যবান নসিহত থেকে নিজেদের জীবনের পাথেয় সংগ্রহ করতেন।
ইবাদত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি মসজিদ ছিল আলোকিত প্রজন্ম গঠনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণস্থল। নবী করিম (সা.)-এর যুগে শিশুরা মসজিদে আসত, ঘুরে বেড়াত, ইবাদত শিখত এবং সাহাবিদের পাশে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করত। মসজিদ ছিল কচিকাঁচাদের ভালোবাসার জায়গা। কোনো ভয় বা নিষেধাজ্ঞার প্রতিবন্ধকতা ছিল না তাদের।
কিন্তু আজকের বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। শিশুরা মসজিদে এলে অনেকেই তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন, সামান্য দুষ্টুমিতেই ধমক দেন, এমনকি কখনো তাড়িয়েও দেন। এতে করে অনেক অভিভাবকই নিজের সন্তানদের সহজে মসজিদে আনতে চান না। ফলে ধীরে ধীরে মসজিদের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের দূরত্ব তৈরি হয়। অথচ ভবিষ্যতে এই প্রজন্মই উম্মতের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তাই তাদের মসজিদমুখী করা এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
নবীজির যুগে শিশুদের মসজিদে গমন
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে মসজিদে শিশুদের স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল। নবীজি (সা.)-এর চারপাশে সাহাবিদের সঙ্গে ছোট বাচ্চাদেরও দেখা যেত। নবীজি (সা.) কখনো তাদের ধমক দিতেন না, তাড়িয়ে দিতেন না। তিনি শিশুদের উপস্থিতিকে স্বাগত জানাতেন। তাদের প্রতি অসীম মমতা দেখাতেন। নামাজ চলাকালেও নবীজি (সা.) শিশুদের প্রতি বিশেষ কোমলতা প্রদর্শন করতেন। তাঁর নাতি হাসান বা হুসাইন (রা.) কখনো তাঁর পিঠে চড়ে বসত। তিনি তাড়াহুড়ো না করে বরং তাদের ভালোবাসার খাতিরে সিজদা দীর্ঘ করতেন।
একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের সিজদায় গেলে হজরত হাসান কিংবা হোসাইন (রা.) তাঁর পিঠে চড়ে বসে। এ কারণে নবীজি (সা.) খুব দীর্ঘ সময় সিজদায় থাকেন। নামাজ শেষে সাহাবিরা এর কারণ জানতে চাইলে নবীজি (সা.) বলেন, ‘আমার এই নাতি আমাকে বাহন বানিয়ে নিয়েছিল, তাই তাকে নামিয়ে দিতে আমি তাড়াহুড়ো করতে চাইনি, যতক্ষণ না সে স্বাভাবিকভাবে নেমে আসে।’ (সুনানে নাসায়ি: ১১৪১)। মেয়েশিশুরাও নবীজির স্নেহ থেকে বঞ্চিত হতো না। তারাও মসজিদে আসত। হজরত কাতাদা (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) তাঁর কন্যা জাইনাবের মেয়ে উমামাকে কাঁধে নিয়ে নামাজ পড়তেন। সিজদায় গেলে তাকে নামিয়ে দিতেন এবং দাঁড়ালে আবার কাঁধে তুলে নিতেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৯১৭)
আমাদের দেশের বেদনাদায়ক বাস্তবতা
দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে ‘নামাজের প্রতি শ্রদ্ধা’ দেখানোর লেভেল লাগিয়ে অনেকেই শিশুদের প্রতি রূঢ় আচরণকে বৈধ মনে করেন। তাদের ধমক দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেন। কোনো কোনো মসজিদ কমিটি ‘বাচ্চাদের মসজিদে আনা নিষিদ্ধ’ লেখা সাইনবোর্ডও টাঙিয়ে রাখেন মসজিদের সামনে। এসব আচরণ শিশুদের কোমল হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে। পরিণতিতে সে মসজিদকে ভয় পেতে শুরু করে। যে রাসুল (সা.) শিশুদের মাথায় মমতার পরশ বুলিয়ে দিতেন, তাঁর উম্মতের কেউ কেউ আজ শিশুদের বকাঝকা করে মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে, এটা বড় লজ্জার বিষয়।
শিশুদের শিক্ষাদানের পদ্ধতি হোক নম্রতা
শিশুরা দেহ-মন উভয় দিক থেকে কোমল। তারা কঠোরতা সহ্য করতে পারে না। নবীজি (সা.) বাচ্চাদের প্রতি খুবই কোমল ছিলেন। আল্লাহ তাআলাও কোমলতা পছন্দ করেন। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কোমল আচরণকারী, তিনি সর্বক্ষেত্রে কোমলতা ভালোবাসেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬০২৪)। অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৯০)। আমাদেরও উচিত বাচ্চাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করা। তাদের কিছু শেখাতে হলেও আদুরে গলায় শিশুসুলভ ভঙ্গিতে শেখানো। বাচ্চাদের জন্য এটি কঠোরতা থেকেও বেশি ফলপ্রসূ।
শিশুরা হোক মসজিদমুখী
শিশুদের মসজিদমুখী করতে হলে নম্রতা, কোমলতা ও ভালোবাসা দিয়ে কাছে টানতে হবে। তাদের জন্য শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মসজিদের আঙিনায় শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার হতে পারে। সেখানে তাদের উপযোগী রঙিন বই, কোরআন শেখার বিভিন্ন মজাদার উপকরণ থাকতে পারে। এতে তারা ধীরে ধীরে মসজিদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। পাশাপাশি মসজিদ কমিটি ও ইমাম সাহেবগণ নানা ধরনের উৎসাহমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। হতে পারে শিশুদের জন্য সাপ্তাহিক বিশেষ ক্লাস। যেখানে শিশুসুলভ ভঙ্গিতে তাদের ইসলামের মৌলিক জ্ঞান শেখানো হবে। যারা এতে নিয়মিত উপস্থিত হবে, তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ কার্যক্রমও থাকতে পারে।
মসজিদে আসার পর শিশুদের একটু শব্দে কেউ যদি রেগে যায়, বিনয়ের সঙ্গে তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন ‘নবীজির মসজিদেও তো শিশুদের বিচরণ ছিল। আমরা তাদের প্রতি কোমল হই। কঠোর আচরণ পরিত্যাগ করি।’ এভাবে ধীরে ধীরে সমাজের পরিবেশ বদলে যাবে।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমরা যদি চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো, সচ্চরিত্রবান, নামাজি ও ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন হোক—তাহলে তাদের জন্য মসজিদ উন্মুক্ত করে দিতে হবে। উৎসাহ, অভয়, ভালোবাসা দিয়ে ও নানা পরিকল্পনা করে তাদের মসজিদমুখী করতে হবে। তাহলেই গড়ে উঠবে আলোকিত প্রজন্ম।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন। নবীজির মুখনিঃসৃত মূল্যবান নসিহত থেকে নিজেদের জীবনের পাথেয় সংগ্রহ করতেন।
ইবাদত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি মসজিদ ছিল আলোকিত প্রজন্ম গঠনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণস্থল। নবী করিম (সা.)-এর যুগে শিশুরা মসজিদে আসত, ঘুরে বেড়াত, ইবাদত শিখত এবং সাহাবিদের পাশে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করত। মসজিদ ছিল কচিকাঁচাদের ভালোবাসার জায়গা। কোনো ভয় বা নিষেধাজ্ঞার প্রতিবন্ধকতা ছিল না তাদের।
কিন্তু আজকের বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। শিশুরা মসজিদে এলে অনেকেই তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন, সামান্য দুষ্টুমিতেই ধমক দেন, এমনকি কখনো তাড়িয়েও দেন। এতে করে অনেক অভিভাবকই নিজের সন্তানদের সহজে মসজিদে আনতে চান না। ফলে ধীরে ধীরে মসজিদের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের দূরত্ব তৈরি হয়। অথচ ভবিষ্যতে এই প্রজন্মই উম্মতের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তাই তাদের মসজিদমুখী করা এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
নবীজির যুগে শিশুদের মসজিদে গমন
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে মসজিদে শিশুদের স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল। নবীজি (সা.)-এর চারপাশে সাহাবিদের সঙ্গে ছোট বাচ্চাদেরও দেখা যেত। নবীজি (সা.) কখনো তাদের ধমক দিতেন না, তাড়িয়ে দিতেন না। তিনি শিশুদের উপস্থিতিকে স্বাগত জানাতেন। তাদের প্রতি অসীম মমতা দেখাতেন। নামাজ চলাকালেও নবীজি (সা.) শিশুদের প্রতি বিশেষ কোমলতা প্রদর্শন করতেন। তাঁর নাতি হাসান বা হুসাইন (রা.) কখনো তাঁর পিঠে চড়ে বসত। তিনি তাড়াহুড়ো না করে বরং তাদের ভালোবাসার খাতিরে সিজদা দীর্ঘ করতেন।
একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের সিজদায় গেলে হজরত হাসান কিংবা হোসাইন (রা.) তাঁর পিঠে চড়ে বসে। এ কারণে নবীজি (সা.) খুব দীর্ঘ সময় সিজদায় থাকেন। নামাজ শেষে সাহাবিরা এর কারণ জানতে চাইলে নবীজি (সা.) বলেন, ‘আমার এই নাতি আমাকে বাহন বানিয়ে নিয়েছিল, তাই তাকে নামিয়ে দিতে আমি তাড়াহুড়ো করতে চাইনি, যতক্ষণ না সে স্বাভাবিকভাবে নেমে আসে।’ (সুনানে নাসায়ি: ১১৪১)। মেয়েশিশুরাও নবীজির স্নেহ থেকে বঞ্চিত হতো না। তারাও মসজিদে আসত। হজরত কাতাদা (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) তাঁর কন্যা জাইনাবের মেয়ে উমামাকে কাঁধে নিয়ে নামাজ পড়তেন। সিজদায় গেলে তাকে নামিয়ে দিতেন এবং দাঁড়ালে আবার কাঁধে তুলে নিতেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৯১৭)
আমাদের দেশের বেদনাদায়ক বাস্তবতা
দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে ‘নামাজের প্রতি শ্রদ্ধা’ দেখানোর লেভেল লাগিয়ে অনেকেই শিশুদের প্রতি রূঢ় আচরণকে বৈধ মনে করেন। তাদের ধমক দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেন। কোনো কোনো মসজিদ কমিটি ‘বাচ্চাদের মসজিদে আনা নিষিদ্ধ’ লেখা সাইনবোর্ডও টাঙিয়ে রাখেন মসজিদের সামনে। এসব আচরণ শিশুদের কোমল হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে। পরিণতিতে সে মসজিদকে ভয় পেতে শুরু করে। যে রাসুল (সা.) শিশুদের মাথায় মমতার পরশ বুলিয়ে দিতেন, তাঁর উম্মতের কেউ কেউ আজ শিশুদের বকাঝকা করে মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে, এটা বড় লজ্জার বিষয়।
শিশুদের শিক্ষাদানের পদ্ধতি হোক নম্রতা
শিশুরা দেহ-মন উভয় দিক থেকে কোমল। তারা কঠোরতা সহ্য করতে পারে না। নবীজি (সা.) বাচ্চাদের প্রতি খুবই কোমল ছিলেন। আল্লাহ তাআলাও কোমলতা পছন্দ করেন। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কোমল আচরণকারী, তিনি সর্বক্ষেত্রে কোমলতা ভালোবাসেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬০২৪)। অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৯০)। আমাদেরও উচিত বাচ্চাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করা। তাদের কিছু শেখাতে হলেও আদুরে গলায় শিশুসুলভ ভঙ্গিতে শেখানো। বাচ্চাদের জন্য এটি কঠোরতা থেকেও বেশি ফলপ্রসূ।
শিশুরা হোক মসজিদমুখী
শিশুদের মসজিদমুখী করতে হলে নম্রতা, কোমলতা ও ভালোবাসা দিয়ে কাছে টানতে হবে। তাদের জন্য শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মসজিদের আঙিনায় শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার হতে পারে। সেখানে তাদের উপযোগী রঙিন বই, কোরআন শেখার বিভিন্ন মজাদার উপকরণ থাকতে পারে। এতে তারা ধীরে ধীরে মসজিদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। পাশাপাশি মসজিদ কমিটি ও ইমাম সাহেবগণ নানা ধরনের উৎসাহমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। হতে পারে শিশুদের জন্য সাপ্তাহিক বিশেষ ক্লাস। যেখানে শিশুসুলভ ভঙ্গিতে তাদের ইসলামের মৌলিক জ্ঞান শেখানো হবে। যারা এতে নিয়মিত উপস্থিত হবে, তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ কার্যক্রমও থাকতে পারে।
মসজিদে আসার পর শিশুদের একটু শব্দে কেউ যদি রেগে যায়, বিনয়ের সঙ্গে তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন ‘নবীজির মসজিদেও তো শিশুদের বিচরণ ছিল। আমরা তাদের প্রতি কোমল হই। কঠোর আচরণ পরিত্যাগ করি।’ এভাবে ধীরে ধীরে সমাজের পরিবেশ বদলে যাবে।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমরা যদি চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো, সচ্চরিত্রবান, নামাজি ও ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন হোক—তাহলে তাদের জন্য মসজিদ উন্মুক্ত করে দিতে হবে। উৎসাহ, অভয়, ভালোবাসা দিয়ে ও নানা পরিকল্পনা করে তাদের মসজিদমুখী করতে হবে। তাহলেই গড়ে উঠবে আলোকিত প্রজন্ম।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

তৃতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না।
০৫ মার্চ ২০২৩
সন্তান আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান উপহার, এক টুকরা অস্তিত্ব, হৃদয়ের স্পন্দন। সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার সম্পর্ক ভালোবাসা ও দয়ার এক স্বর্গীয় বন্ধন। এই ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব হৃদয়ে প্রবাহিত এক অলৌকিক অনুভব। এই সম্পর্কের গভীরতা ও গুরুত্ব বোঝাতে কোরআন ও হাদিসে এসেছে দৃষ্টান্ত...
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগে
জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।
১ দিন আগে