Ajker Patrika

আজকের তারাবি-১৯: নারীর প্রতি ৯ উপদেশ ও সাবাবাসীর অকৃতজ্ঞতার পরিণাম

রায়হান রাশেদ
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২: ৫৬
আজকের তারাবি-১৯: নারীর প্রতি ৯ উপদেশ ও সাবাবাসীর অকৃতজ্ঞতার পরিণাম

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২২ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আহজাবের ৩১ থেকে সুরা সাবা, সুরা ফাতির ও সুরা ইয়াসিনের ১ থেকে ২১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত। এই অংশে নবীপত্মী ও অন্য নারীদের উপদেশ, মহানবী (সা.) শেষ নবী, নবীজির বহুবিবাহ, সামাজিক শিষ্টাচার, নবীজির প্রতি দরুদ পাঠ, আল্লাহর অনুগ্রহসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—

নারীর প্রতি কোরআনের উপদেশ
সুরা আহজাবের ৩২ থেকে ৩৪ নম্বর আয়াতে নবী পরিবার ও তাঁদের মাধ্যমে নারীদের কিছু উপদেশ দেওয়া হয়েছে। উপদেশগুলো হলো—
 ১. (প্রয়োজনে) পরপুরুষের সঙ্গে কোমলকণ্ঠে বাক্যালাপ করবে না
 ২. ঘরে অবস্থান করবে
 ৩. অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে না
 ৪. জাহিলি যুগের নারীদের মতো সৌন্দর্য প্রকাশ করে বেড়াবে না
 ৫. নামাজ কায়েম করবে
 ৬. জাকাত দেবে
 ৭. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে
 ৮. কোরআন তিলাওয়াত করবে
 ৯. নবীজির আনুগত্য করবে 

ক্ষমা লাভের ১০ গুণ
সুরা আহজাবের ৩৫ নম্বর আয়াতে ১০টি গুণের বর্ণনা রয়েছে। যাদের মধ্যে এই গুণ থাকবে, তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও বিশেষ পুরস্কার পাবে। যথা—১. ইসলাম, ২. ইমান, ৩. আল্লাহর আনুগত্য, ৪. সততা ও সত্যবাদিতা, ৫. ধৈর্য, ৬. বিনয়, ৭. দান, ৮. রোজা, ৯. লজ্জাস্থানের হেফাজত ও ১০. বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণ। 

হজরত মুহাম্মদ (সা.) শেষ নবী
আদম (আ.) পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী। তাঁর মাধ্যমে পৃথিবীতে নবুওয়তের ধারা চালু হয়েছে। এই ধারা শেষ ও পূর্ণ হয়েছে রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে। তিনিই শেষ নবী। তাঁর পরে আর কেউ নবী হবেন না, আর কারও ওপর অহিও নাজিল হবে না। প্রত্যেক মুসলমানের এ বিশ্বাস রাখা ফরজ। নামাজ, হজ, জাকাত, কোরআন, ইত্যাদির অস্বীকারকারী যেমন স্পষ্ট কাফের, তেমনি খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারী এবং অবিশ্বাসী কাফের। মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল—এ বিশ্বাস যেমন অকাট্য, তেমনি তিনি শেষ নবী—এ বিশ্বাসও অকাট্য। আল্লাহ বলেন, ‘মুহাম্মদ তোমাদের কারও পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসুল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।’ (সুরা আহজাব: ৪০) 

রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি এবং আমার আগের নবীদের উদাহরণ হলো, এক ব্যক্তি একটি ভবন নির্মাণ করল এবং সেটিকে সুশোভিত ও সুসজ্জিত করল, কিন্তু এক কোণে একটি ইটের জায়গা খালি রয়ে গেল; এরপর লোকজন চারপাশে ঘুরে ঘুরে বিস্ময়ের সঙ্গে বলতে লাগল, ওই শূন্যস্থানের ইটটি লাগানো হলো না কেন? নবী (সা.) বলেন, ‘আমিই সেই ইট। আর আমিই শেষ নবী।’ (বুখারি: ৩২৭১) 

নবীজির প্রতি দরুদ পাঠ
মুহাম্মদ (সা.) জগতের শ্রেষ্ঠ মানুষ। তিনি চির প্রশংসিত। আকাশে আল্লাহ আর দুনিয়াতে সব সৃষ্টি তাঁর প্রশংসা করে। তাঁর পবিত্র নামে দরুদ পড়ে। তাঁর নামে দরুদ পড়া ইমানের অংশ। তাঁর প্রতি সালাম জানানো ইবাদত। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত-দরুদ পেশ করেন। হে মুমিনেরা, তোমরাও তাঁর প্রতি সালাত পেশ করো এবং তাঁকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।’ (সুরা আহজাব: ৫৬) 

নবীজির প্রতি দরুদ পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার ওপর দশবার দরুদ পাঠ করবেন।’ (মুসলিম: ৩৮৪) আরেক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার প্রতি দরুদ পেশ কর। কারণ, তোমরা যেখানেই থাক, তোমাদের পেশকৃত দরুদ আমার কাছে পৌঁছে যায়।’ (আবু দাউদ: ২০৪২) 

সাবাবাসীর গল্পগাথা—সুরা সাবা
 ৫৪ আয়াত বিশিষ্ট মক্কায় অবতীর্ণ সুরা সাবাতে আখেরাত ও পুনরুত্থান, দাউদ ও সুলাইমান (আ.) এবং সাবাবাসীকে প্রদত্ত আল্লাহর নেয়ামত, নবীদের কৃতজ্ঞতা আর কওমে সাবার অকৃতজ্ঞতা, তাদের পরিণাম, মুশরিকদের কিছু ভ্রান্ত বিশ্বাসের খণ্ডন, রিজিকের মালিক আল্লাহ, কিয়ামতের দিন কাফেরদের অসহায়ত্বের বর্ণনা রয়েছে। 

সাবাবাসীর অকৃতজ্ঞতার গল্প
ইয়েমেনের সানা থেকে কিছু দূরে অবস্থিত প্রাচীন নগরী মাআরিবে সাবা জাতির বসবাস ছিল। আল্লাহর নেয়ামতে ভরপুর ছিল সেই জনপদ। নবীদের মাধ্যমে আল্লাহ তাদের কৃতজ্ঞতা আদায়ের আদেশ দিলেন। কিন্তু তারা অবাধ্য হলো। ফলে বন্যা দিয়ে আল্লাহ তাদের সুন্দর বাগান ধ্বংস করে দিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশ্যই সাবাবাসীর জন্য তাদের বাসভূমিতে ছিল এক নিদর্শন। দুটি উদ্যান, একটি ডান দিকে, অন্যটি বাম দিকে। বলা হয়েছিল, তোমরা তোমাদের রবের দেওয়া রিজিক ভোগ করো এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। এ শহর উত্তম এবং তোমাদের রব ক্ষমাশীল। এরপর তারা অবাধ্য হলো। ফলে আমরা তাদের ওপর প্রবাহিত করলাম আরিম বাঁধের বন্যা এবং তাদের উদ্যান দুটিকে পরিবর্তন করে দিলাম এমন দুটি উদ্যানে, যাতে উৎপন্ন হয় বিস্বাদ ফলমূল, ঝাউ গাছ এবং সামান্য কিছু কুল গাছ। এটি ছিল অকৃতজ্ঞতাভরে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করার কারণে তাদের প্রতি আমার শাস্তি। আমি অকৃতজ্ঞ ছাড়া কাউকে শাস্তি দেই না।’ (সুরা সাবা: ১৫-১৭) 

আল্লাহর কুদরতের বয়ান—সুরা ফাতির
মক্কায় অবতীর্ণ ৪৫ আয়াত বিশিষ্ট সুরা ফাতিরে আল্লাহর একত্ববাদ, সঠিক দীনের ওপর থাকার তাগিদ, আল্লাহর অমুখাপেক্ষিতা, আল্লাহর নেয়ামত, তাঁর কুদরতের বয়ান, কুদরতের নিদর্শন, এগুলোর সুস্পষ্ট দলিল, কোরআন পাঠের ফজিলত, মানুষের শ্রেণিবিন্যাস, জান্নাতবাসী, আল্লাহ গুনাহগারদের তাৎক্ষণিক সাজা দেন না ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।

কোরআনের হৃদয়—সুরা ইয়াসিন
সুরা ইয়াসিন মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৮৩। কোরআনের ৩৬ তম সুরা এটি। নবীজি এ সুরাকে কোরআনুল কারিমের কলব বা হৃদয় বলেছেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘প্রতিটি বস্তুর একটি হৃদয় রয়েছে, আর কোরআনে হৃদয় হচ্ছে ইয়াসিন। যে ইয়াসিন পড়বে আল্লাহ তার আমলনামায় দশবার পূর্ণ কোরআন পড়ার নেকি দান করবেন।’ (তিরমিজি: ২৮৮৭) 

তাফসিরে রুহুল মাআনিতে আছে, ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেন, ‘সুরা ইয়াসিনকে কোরআনের হৃদয় এ কারণে বলা হয়েছে যে, এ সুরায় কিয়ামত ও হাশর বিষয়ে ব্যাখ্যা অলঙ্কারপূর্ণ ভাষায় বর্ণিত হয়েছে। পরকালে বিশ্বাস ইমানের এমন একটি মূলনীতি, যার ওপর মানুষের সব আমল ও আচরণের শুদ্ধতা নির্ভরশীল। আমরা জানি, পরকালভীতি মানুষকে সৎকর্মে উদ্বুদ্ধ করে এবং অবৈধ কামনা-বাসনা ও হারাম কাজ থেকে বিরত রাখে।’ 
 
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে পালকপুত্রের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে, আল্লাহর প্রশংসা, রিজিক, দীনের ওপর অবিচল, ইমান ও কুফরের পার্থক্য, উম্মতে মুহাম্মদির প্রশংসা, গুনাহের কঠোর শাস্তি ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে। 

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

মাহমুদ হাসান ফাহিম 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।

১. ‘আল্লাহুম্মা রাহমাতাকা আরজু, ফালা তাকিলনি ইলা নাফসি তারফাতা আইন, ওয়া আসলিহ লি শানি কুল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লাহ আনতা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে রহমত (মনের প্রশান্তি) চাই। আপনি এক মুহূর্তও আমাকে নফসের ওপর ছেড়ে দিয়েন না। বরং আপনিই আমার সমস্ত বিষয় ঠিক করে দিন। আপনি ছাড়া (মনের অস্থিরতা ও বিপদ থেকে রক্ষাকারী) কোনো ইলাহ নেই।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫০০২)

২. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।’ অর্থ: ‘মহান, সহনশীল আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আরশের অধিপতি, মহান আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আসমান ও জমিনের রব এবং সম্মানিত আরশের রব আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। (সহিহ্ মুসলিম: ৬৬৭২)

৩. ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজান, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসাল, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবন, ওয়া জিলাইদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি দুশ্চিন্তা ও পেরেশান থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণভার ও লোকজনের প্রাধান্য থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৯৪)

৪. ‘আল্লাহু, আল্লাহু রাব্বি; লা উশরিকু বিহি শাইআ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রভু, আল্লাহ। আমি আপনার সঙ্গে কাউকে শরিক করি না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫২৫)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোনো কারণে মনে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে উল্লিখিত দোয়াগুলো পড়া। এতে মনের অস্থিরতা ও পেরেশান দূর হবে ইনশা আল্লাহ।

লেখক: মাদ্রাসাশিক্ষক, টঙ্গী, গাজীপুর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৭ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৪৪ মিনিট
ফজর০৪: ৪৫ মিনিট০৬: ০০ মিনিট
জোহর১১: ৪৩ মিনিট০৩: ৪৫ মিনিট
আসর০৩: ৪৬ মিনিট০৫: ২২ মিনিট
মাগরিব০৫: ২৪ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৪: ৪৪ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—

চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট

সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—

খুলনা: ০৩ মিনিট

রাজশাহী: ০৭ মিনিট

রংপুর: ০৮ মিনিট

বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আল্লাহর সঙ্গে লাভজনক ব্যবসা, মুনাফা যেখানে জান্নাত

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)

পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:

এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।

দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।

মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।

কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’

অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:

এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।

দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)

তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।

যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’

মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’

ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।

লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিশুদের নৈতিক বিকাশে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব

ইসলাম ডেস্ক 
দাদা ও নাতি। ছবি: সংগৃহীত
দাদা ও নাতি। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।

শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।

এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।

বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।

একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

মালিকানা না, শুধু লাইসেন্সিং অপারেটর নিয়োগ: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

ট্রাম্প-সি বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত

৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বামপন্থীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত