মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

প্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি না। অথচ প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান নিয়ে গভীর ভাবনা একজন মুমিনের ইমানকে দৃঢ় করে এবং আল্লাহভীতিকে আরও জোরালো করে।
মানুষকে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে তাঁর ‘খলিফা’ বা প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছেন। এই প্রতিনিধিত্বের মূল দায়িত্ব হলো আল্লাহর দেওয়া আমানত, অর্থাৎ এই পৃথিবীকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা। এটি কেবল একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি ইবাদতেরও অংশ। আধুনিক বিশ্বে যখন পরিবেশদূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্যের সংকট মানবজাতির জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন ইসলামপ্রদত্ত পরিবেশ সুরক্ষার বিধানগুলো আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
উদ্ভিদ ও বৃক্ষরোপণের ফজিলত
ইসলামে বৃক্ষরোপণকে এক মহৎ কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.) উম্মতকে গাছ লাগাতে উৎসাহিত করেছেন। আজ থেকে প্রায় পনেরো শ বছর আগে তিনি পরিবেশ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় যে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, তার গুরুত্ব আজও আমাদের কাছে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
হাদিসে এসেছে, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে কিয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি লাগাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৫৫০)। কিয়ামতের মতো ভয়াবহ দিনেও একটি গাছের চারা রোপণের এই নির্দেশনা পরিবেশের প্রতি ইসলামের গভীর অঙ্গীকারের প্রমাণ।
আরও এক হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান যদি একটি বৃক্ষের চারা রোপণ করে অথবা খেতখামার করে, অতঃপর তা থেকে মানুষ, পাখি বা কোনো জন্তু ভক্ষণ করে, তবে তা তার জন্য সদকার সওয়াব হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৫৫৩২)। এই হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে পরিবেশ সুরক্ষায় প্রতিটি ক্ষুদ্র কাজও আল্লাহর কাছে কত মূল্যবান। এমনকি যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতেও তিনি সৈন্যদের বিনা কারণে গাছ কাটতে নিষেধ করতেন, যা আধুনিক পরিবেশবাদী যুদ্ধনীতিতেও স্থান পায়নি।
প্রাণিজগতের প্রতি সংবেদনশীলতা
পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো প্রাণিজগৎ। এদের প্রতি অহেতুক নিষ্ঠুরতা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে।’ (সহিহ বুখারি: ৫১৯৫)। তিনি অহেতুক কোনো প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকেও নিষেধ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহেতুক কোনো চড়ুই পাখি মেরে ফেলল, কিয়ামতের দিন পাখিটি আল্লাহর কাছে এই বলে নালিশ করবে—হে আল্লাহ, অমুক ব্যক্তি আমাকে অহেতুক হত্যা করেছে।’ (সুনানে নাসায়ি, ইবনে হিব্বান)।
ইসলামে পশুপাখির প্রতি দয়া ও সহানুভূতির প্রতিও জোর দেওয়া হয়েছে। হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি তৃষ্ণার্ত কুকুরকে পানি পান করিয়ে জান্নাতে স্থান পেয়েছিল। অপর দিকে, এক নারী একটি বিড়ালকে আটকে রেখে খাবার না দেওয়ায় জাহান্নামের শাস্তি পেয়েছিল। এমন উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, প্রাণিজগতের প্রতি আল্লাহর দৃষ্টি কতটা সংবেদনশীল।
একবার সাহাবিরা মৌমাছির বাসা জ্বালিয়ে দিলে তিনি বললেন, ‘আগুনের স্রষ্টা ছাড়া কারও জন্য আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়া শোভা পায় না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৬৭৫)। যেসব প্রাণী প্রতিপালন করা হয়, সেগুলোর সুস্থতা ও খাবারদাবারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করাকে ইসলামে ওয়াজিব করা হয়েছে।
পানির অপচয় নয়, সুরক্ষাই কর্তব্য
জীবন ধারণের জন্য পানি অপরিহার্য। পানির প্রাচুর্য থাকলেও এর অপচয় ইসলাম কোনোভাবেই অনুমোদন করে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার হজরত সাদ (রা.)-কে অজু করার সময় অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে দেখে বলেন, ‘এই অপচয়ের কারণ কী?’ সাদ (রা.) তখন জিজ্ঞেস করেন, ‘অজুর মধ্যেও কি অপচয় আছে?’ নবীজি (সা.) উত্তরে বলেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যদি একটি প্রবহমান নদীর তীরেও থাকো, তবু পানির যথেচ্ছ ব্যবহার করা যাবে না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)
এ ছাড়া, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট হয় এমন তিনটি কাজ পরিহার করো: পানির উৎস, চলাচলের রাস্তা ও গাছের ছায়ায় মলত্যাগ কোরো না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)। এই নির্দেশনাগুলো আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করে।
নৈতিকতার পথে প্রকৃতির সুরক্ষা
নবী করিম (সা.)-এর এই নির্দেশনাগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, পরিবেশের প্রতিটি উপাদান সুরক্ষায় ইসলামে পরিষ্কার বিধান রয়েছে। দুঃখজনকভাবে, আমরা অনেকেই আজ এসব নির্দেশনা ভুলে গেছি। পরিবেশদূষণ ও প্রাণী হত্যা করে কখনোই একটি বাসযোগ্য পৃথিবী আশা করা যায় না। বরং নবী (সা.) নির্দেশিত পরিবেশ বিধিবিধান মেনে চললে এই পৃথিবী আমাদের জন্য সুন্দর ও বাসযোগ্য হবে। পরিবেশ সংরক্ষণকে ইমানের অংশ মনে করে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই আল্লাহর দেওয়া এই আমানত আমরা রক্ষা করতে পারব এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হতে পারব।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

প্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি না। অথচ প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান নিয়ে গভীর ভাবনা একজন মুমিনের ইমানকে দৃঢ় করে এবং আল্লাহভীতিকে আরও জোরালো করে।
মানুষকে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে তাঁর ‘খলিফা’ বা প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছেন। এই প্রতিনিধিত্বের মূল দায়িত্ব হলো আল্লাহর দেওয়া আমানত, অর্থাৎ এই পৃথিবীকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা। এটি কেবল একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি ইবাদতেরও অংশ। আধুনিক বিশ্বে যখন পরিবেশদূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্যের সংকট মানবজাতির জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন ইসলামপ্রদত্ত পরিবেশ সুরক্ষার বিধানগুলো আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
উদ্ভিদ ও বৃক্ষরোপণের ফজিলত
ইসলামে বৃক্ষরোপণকে এক মহৎ কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.) উম্মতকে গাছ লাগাতে উৎসাহিত করেছেন। আজ থেকে প্রায় পনেরো শ বছর আগে তিনি পরিবেশ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় যে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, তার গুরুত্ব আজও আমাদের কাছে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
হাদিসে এসেছে, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে কিয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি লাগাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৫৫০)। কিয়ামতের মতো ভয়াবহ দিনেও একটি গাছের চারা রোপণের এই নির্দেশনা পরিবেশের প্রতি ইসলামের গভীর অঙ্গীকারের প্রমাণ।
আরও এক হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান যদি একটি বৃক্ষের চারা রোপণ করে অথবা খেতখামার করে, অতঃপর তা থেকে মানুষ, পাখি বা কোনো জন্তু ভক্ষণ করে, তবে তা তার জন্য সদকার সওয়াব হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৫৫৩২)। এই হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে পরিবেশ সুরক্ষায় প্রতিটি ক্ষুদ্র কাজও আল্লাহর কাছে কত মূল্যবান। এমনকি যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতেও তিনি সৈন্যদের বিনা কারণে গাছ কাটতে নিষেধ করতেন, যা আধুনিক পরিবেশবাদী যুদ্ধনীতিতেও স্থান পায়নি।
প্রাণিজগতের প্রতি সংবেদনশীলতা
পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো প্রাণিজগৎ। এদের প্রতি অহেতুক নিষ্ঠুরতা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে।’ (সহিহ বুখারি: ৫১৯৫)। তিনি অহেতুক কোনো প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকেও নিষেধ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহেতুক কোনো চড়ুই পাখি মেরে ফেলল, কিয়ামতের দিন পাখিটি আল্লাহর কাছে এই বলে নালিশ করবে—হে আল্লাহ, অমুক ব্যক্তি আমাকে অহেতুক হত্যা করেছে।’ (সুনানে নাসায়ি, ইবনে হিব্বান)।
ইসলামে পশুপাখির প্রতি দয়া ও সহানুভূতির প্রতিও জোর দেওয়া হয়েছে। হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি তৃষ্ণার্ত কুকুরকে পানি পান করিয়ে জান্নাতে স্থান পেয়েছিল। অপর দিকে, এক নারী একটি বিড়ালকে আটকে রেখে খাবার না দেওয়ায় জাহান্নামের শাস্তি পেয়েছিল। এমন উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, প্রাণিজগতের প্রতি আল্লাহর দৃষ্টি কতটা সংবেদনশীল।
একবার সাহাবিরা মৌমাছির বাসা জ্বালিয়ে দিলে তিনি বললেন, ‘আগুনের স্রষ্টা ছাড়া কারও জন্য আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়া শোভা পায় না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৬৭৫)। যেসব প্রাণী প্রতিপালন করা হয়, সেগুলোর সুস্থতা ও খাবারদাবারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করাকে ইসলামে ওয়াজিব করা হয়েছে।
পানির অপচয় নয়, সুরক্ষাই কর্তব্য
জীবন ধারণের জন্য পানি অপরিহার্য। পানির প্রাচুর্য থাকলেও এর অপচয় ইসলাম কোনোভাবেই অনুমোদন করে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার হজরত সাদ (রা.)-কে অজু করার সময় অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে দেখে বলেন, ‘এই অপচয়ের কারণ কী?’ সাদ (রা.) তখন জিজ্ঞেস করেন, ‘অজুর মধ্যেও কি অপচয় আছে?’ নবীজি (সা.) উত্তরে বলেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যদি একটি প্রবহমান নদীর তীরেও থাকো, তবু পানির যথেচ্ছ ব্যবহার করা যাবে না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)
এ ছাড়া, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট হয় এমন তিনটি কাজ পরিহার করো: পানির উৎস, চলাচলের রাস্তা ও গাছের ছায়ায় মলত্যাগ কোরো না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)। এই নির্দেশনাগুলো আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করে।
নৈতিকতার পথে প্রকৃতির সুরক্ষা
নবী করিম (সা.)-এর এই নির্দেশনাগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, পরিবেশের প্রতিটি উপাদান সুরক্ষায় ইসলামে পরিষ্কার বিধান রয়েছে। দুঃখজনকভাবে, আমরা অনেকেই আজ এসব নির্দেশনা ভুলে গেছি। পরিবেশদূষণ ও প্রাণী হত্যা করে কখনোই একটি বাসযোগ্য পৃথিবী আশা করা যায় না। বরং নবী (সা.) নির্দেশিত পরিবেশ বিধিবিধান মেনে চললে এই পৃথিবী আমাদের জন্য সুন্দর ও বাসযোগ্য হবে। পরিবেশ সংরক্ষণকে ইমানের অংশ মনে করে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই আল্লাহর দেওয়া এই আমানত আমরা রক্ষা করতে পারব এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হতে পারব।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

প্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি না। অথচ প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান নিয়ে গভীর ভাবনা একজন মুমিনের ইমানকে দৃঢ় করে এবং আল্লাহভীতিকে আরও জোরালো করে।
মানুষকে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে তাঁর ‘খলিফা’ বা প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছেন। এই প্রতিনিধিত্বের মূল দায়িত্ব হলো আল্লাহর দেওয়া আমানত, অর্থাৎ এই পৃথিবীকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা। এটি কেবল একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি ইবাদতেরও অংশ। আধুনিক বিশ্বে যখন পরিবেশদূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্যের সংকট মানবজাতির জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন ইসলামপ্রদত্ত পরিবেশ সুরক্ষার বিধানগুলো আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
উদ্ভিদ ও বৃক্ষরোপণের ফজিলত
ইসলামে বৃক্ষরোপণকে এক মহৎ কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.) উম্মতকে গাছ লাগাতে উৎসাহিত করেছেন। আজ থেকে প্রায় পনেরো শ বছর আগে তিনি পরিবেশ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় যে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, তার গুরুত্ব আজও আমাদের কাছে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
হাদিসে এসেছে, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে কিয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি লাগাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৫৫০)। কিয়ামতের মতো ভয়াবহ দিনেও একটি গাছের চারা রোপণের এই নির্দেশনা পরিবেশের প্রতি ইসলামের গভীর অঙ্গীকারের প্রমাণ।
আরও এক হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান যদি একটি বৃক্ষের চারা রোপণ করে অথবা খেতখামার করে, অতঃপর তা থেকে মানুষ, পাখি বা কোনো জন্তু ভক্ষণ করে, তবে তা তার জন্য সদকার সওয়াব হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৫৫৩২)। এই হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে পরিবেশ সুরক্ষায় প্রতিটি ক্ষুদ্র কাজও আল্লাহর কাছে কত মূল্যবান। এমনকি যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতেও তিনি সৈন্যদের বিনা কারণে গাছ কাটতে নিষেধ করতেন, যা আধুনিক পরিবেশবাদী যুদ্ধনীতিতেও স্থান পায়নি।
প্রাণিজগতের প্রতি সংবেদনশীলতা
পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো প্রাণিজগৎ। এদের প্রতি অহেতুক নিষ্ঠুরতা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে।’ (সহিহ বুখারি: ৫১৯৫)। তিনি অহেতুক কোনো প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকেও নিষেধ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহেতুক কোনো চড়ুই পাখি মেরে ফেলল, কিয়ামতের দিন পাখিটি আল্লাহর কাছে এই বলে নালিশ করবে—হে আল্লাহ, অমুক ব্যক্তি আমাকে অহেতুক হত্যা করেছে।’ (সুনানে নাসায়ি, ইবনে হিব্বান)।
ইসলামে পশুপাখির প্রতি দয়া ও সহানুভূতির প্রতিও জোর দেওয়া হয়েছে। হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি তৃষ্ণার্ত কুকুরকে পানি পান করিয়ে জান্নাতে স্থান পেয়েছিল। অপর দিকে, এক নারী একটি বিড়ালকে আটকে রেখে খাবার না দেওয়ায় জাহান্নামের শাস্তি পেয়েছিল। এমন উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, প্রাণিজগতের প্রতি আল্লাহর দৃষ্টি কতটা সংবেদনশীল।
একবার সাহাবিরা মৌমাছির বাসা জ্বালিয়ে দিলে তিনি বললেন, ‘আগুনের স্রষ্টা ছাড়া কারও জন্য আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়া শোভা পায় না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৬৭৫)। যেসব প্রাণী প্রতিপালন করা হয়, সেগুলোর সুস্থতা ও খাবারদাবারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করাকে ইসলামে ওয়াজিব করা হয়েছে।
পানির অপচয় নয়, সুরক্ষাই কর্তব্য
জীবন ধারণের জন্য পানি অপরিহার্য। পানির প্রাচুর্য থাকলেও এর অপচয় ইসলাম কোনোভাবেই অনুমোদন করে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার হজরত সাদ (রা.)-কে অজু করার সময় অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে দেখে বলেন, ‘এই অপচয়ের কারণ কী?’ সাদ (রা.) তখন জিজ্ঞেস করেন, ‘অজুর মধ্যেও কি অপচয় আছে?’ নবীজি (সা.) উত্তরে বলেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যদি একটি প্রবহমান নদীর তীরেও থাকো, তবু পানির যথেচ্ছ ব্যবহার করা যাবে না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)
এ ছাড়া, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট হয় এমন তিনটি কাজ পরিহার করো: পানির উৎস, চলাচলের রাস্তা ও গাছের ছায়ায় মলত্যাগ কোরো না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)। এই নির্দেশনাগুলো আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করে।
নৈতিকতার পথে প্রকৃতির সুরক্ষা
নবী করিম (সা.)-এর এই নির্দেশনাগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, পরিবেশের প্রতিটি উপাদান সুরক্ষায় ইসলামে পরিষ্কার বিধান রয়েছে। দুঃখজনকভাবে, আমরা অনেকেই আজ এসব নির্দেশনা ভুলে গেছি। পরিবেশদূষণ ও প্রাণী হত্যা করে কখনোই একটি বাসযোগ্য পৃথিবী আশা করা যায় না। বরং নবী (সা.) নির্দেশিত পরিবেশ বিধিবিধান মেনে চললে এই পৃথিবী আমাদের জন্য সুন্দর ও বাসযোগ্য হবে। পরিবেশ সংরক্ষণকে ইমানের অংশ মনে করে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই আল্লাহর দেওয়া এই আমানত আমরা রক্ষা করতে পারব এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হতে পারব।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

প্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি না। অথচ প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান নিয়ে গভীর ভাবনা একজন মুমিনের ইমানকে দৃঢ় করে এবং আল্লাহভীতিকে আরও জোরালো করে।
মানুষকে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে তাঁর ‘খলিফা’ বা প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছেন। এই প্রতিনিধিত্বের মূল দায়িত্ব হলো আল্লাহর দেওয়া আমানত, অর্থাৎ এই পৃথিবীকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা। এটি কেবল একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি ইবাদতেরও অংশ। আধুনিক বিশ্বে যখন পরিবেশদূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্যের সংকট মানবজাতির জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন ইসলামপ্রদত্ত পরিবেশ সুরক্ষার বিধানগুলো আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
উদ্ভিদ ও বৃক্ষরোপণের ফজিলত
ইসলামে বৃক্ষরোপণকে এক মহৎ কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.) উম্মতকে গাছ লাগাতে উৎসাহিত করেছেন। আজ থেকে প্রায় পনেরো শ বছর আগে তিনি পরিবেশ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় যে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, তার গুরুত্ব আজও আমাদের কাছে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
হাদিসে এসেছে, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে কিয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি লাগাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৫৫০)। কিয়ামতের মতো ভয়াবহ দিনেও একটি গাছের চারা রোপণের এই নির্দেশনা পরিবেশের প্রতি ইসলামের গভীর অঙ্গীকারের প্রমাণ।
আরও এক হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান যদি একটি বৃক্ষের চারা রোপণ করে অথবা খেতখামার করে, অতঃপর তা থেকে মানুষ, পাখি বা কোনো জন্তু ভক্ষণ করে, তবে তা তার জন্য সদকার সওয়াব হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৫৫৩২)। এই হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে পরিবেশ সুরক্ষায় প্রতিটি ক্ষুদ্র কাজও আল্লাহর কাছে কত মূল্যবান। এমনকি যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতেও তিনি সৈন্যদের বিনা কারণে গাছ কাটতে নিষেধ করতেন, যা আধুনিক পরিবেশবাদী যুদ্ধনীতিতেও স্থান পায়নি।
প্রাণিজগতের প্রতি সংবেদনশীলতা
পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো প্রাণিজগৎ। এদের প্রতি অহেতুক নিষ্ঠুরতা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে।’ (সহিহ বুখারি: ৫১৯৫)। তিনি অহেতুক কোনো প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকেও নিষেধ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহেতুক কোনো চড়ুই পাখি মেরে ফেলল, কিয়ামতের দিন পাখিটি আল্লাহর কাছে এই বলে নালিশ করবে—হে আল্লাহ, অমুক ব্যক্তি আমাকে অহেতুক হত্যা করেছে।’ (সুনানে নাসায়ি, ইবনে হিব্বান)।
ইসলামে পশুপাখির প্রতি দয়া ও সহানুভূতির প্রতিও জোর দেওয়া হয়েছে। হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি তৃষ্ণার্ত কুকুরকে পানি পান করিয়ে জান্নাতে স্থান পেয়েছিল। অপর দিকে, এক নারী একটি বিড়ালকে আটকে রেখে খাবার না দেওয়ায় জাহান্নামের শাস্তি পেয়েছিল। এমন উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, প্রাণিজগতের প্রতি আল্লাহর দৃষ্টি কতটা সংবেদনশীল।
একবার সাহাবিরা মৌমাছির বাসা জ্বালিয়ে দিলে তিনি বললেন, ‘আগুনের স্রষ্টা ছাড়া কারও জন্য আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়া শোভা পায় না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৬৭৫)। যেসব প্রাণী প্রতিপালন করা হয়, সেগুলোর সুস্থতা ও খাবারদাবারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করাকে ইসলামে ওয়াজিব করা হয়েছে।
পানির অপচয় নয়, সুরক্ষাই কর্তব্য
জীবন ধারণের জন্য পানি অপরিহার্য। পানির প্রাচুর্য থাকলেও এর অপচয় ইসলাম কোনোভাবেই অনুমোদন করে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার হজরত সাদ (রা.)-কে অজু করার সময় অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে দেখে বলেন, ‘এই অপচয়ের কারণ কী?’ সাদ (রা.) তখন জিজ্ঞেস করেন, ‘অজুর মধ্যেও কি অপচয় আছে?’ নবীজি (সা.) উত্তরে বলেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যদি একটি প্রবহমান নদীর তীরেও থাকো, তবু পানির যথেচ্ছ ব্যবহার করা যাবে না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)
এ ছাড়া, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট হয় এমন তিনটি কাজ পরিহার করো: পানির উৎস, চলাচলের রাস্তা ও গাছের ছায়ায় মলত্যাগ কোরো না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)। এই নির্দেশনাগুলো আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি করে।
নৈতিকতার পথে প্রকৃতির সুরক্ষা
নবী করিম (সা.)-এর এই নির্দেশনাগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, পরিবেশের প্রতিটি উপাদান সুরক্ষায় ইসলামে পরিষ্কার বিধান রয়েছে। দুঃখজনকভাবে, আমরা অনেকেই আজ এসব নির্দেশনা ভুলে গেছি। পরিবেশদূষণ ও প্রাণী হত্যা করে কখনোই একটি বাসযোগ্য পৃথিবী আশা করা যায় না। বরং নবী (সা.) নির্দেশিত পরিবেশ বিধিবিধান মেনে চললে এই পৃথিবী আমাদের জন্য সুন্দর ও বাসযোগ্য হবে। পরিবেশ সংরক্ষণকে ইমানের অংশ মনে করে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই আল্লাহর দেওয়া এই আমানত আমরা রক্ষা করতে পারব এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হতে পারব।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

প্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি ন
২২ আগস্ট ২০২৫
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ দিন আগেমাহমুদ হাসান ফাহিম

সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
পৃথিবীতে ভালোভাবে জীবনযাপন করার জন্য, উন্নতির জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা থাকা অপরিহার্য। আর শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার পর তা বজায় রাখার জন্য আপস-নিষ্পত্তির মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা, বিচিত্র স্বভাবের মানুষ নিয়েই হয় সমাজ। সব মানুষ এক মেজাজের নয়। তুচ্ছ ও নগণ্য বিষয়েও অনেক সময় পরস্পরে মনোমালিন্য হয়, কথা-কাটাকাটি হয়। একসঙ্গে চলতে গেলে এমনটি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি এভাবেই ছেড়ে দিলে একপর্যায়ে তা ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সংঘর্ষ পর্যন্ত গড়ায়। তাই এই বিচিত্র স্বভাবের মানুষদের নিয়ে সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে নিজেদের মধ্যে রাখতে হবে আপস-নিষ্পত্তির অনন্য গুণ।
ইসলামপূর্ব সময়ে কাবা পুনর্নির্মাণের পর হাজরে আসওয়াদ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন প্রিয় নবী (সা.) চাদরে হাজরে আসওয়াদ রেখে সব গোত্রপ্রধানকে নিয়ে নিজ হাতে তা প্রতিস্থাপন করেন এবং এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিষ্পত্তি করেন।
আপস-নিষ্পত্তি দ্বারা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের বিবাদ দূর হয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে।’ (সুরা শুরা: ৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আপস-নিষ্পত্তিকে নামাজ, রোজা এবং জাকাত থেকেও উত্তম আমল বলেছেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৩৯)
স্বাভাবিক কথায় মীমাংসা করা সম্ভব না হলে, আগে বেড়ে কথা হেরফের করারও অনুমতি আছে। তা মিথ্যা হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা এমন করে হাদিসে তাদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত না করে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। (সহিহ্ বুখারি: ২৫১৩)

সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
পৃথিবীতে ভালোভাবে জীবনযাপন করার জন্য, উন্নতির জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা থাকা অপরিহার্য। আর শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার পর তা বজায় রাখার জন্য আপস-নিষ্পত্তির মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা, বিচিত্র স্বভাবের মানুষ নিয়েই হয় সমাজ। সব মানুষ এক মেজাজের নয়। তুচ্ছ ও নগণ্য বিষয়েও অনেক সময় পরস্পরে মনোমালিন্য হয়, কথা-কাটাকাটি হয়। একসঙ্গে চলতে গেলে এমনটি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি এভাবেই ছেড়ে দিলে একপর্যায়ে তা ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সংঘর্ষ পর্যন্ত গড়ায়। তাই এই বিচিত্র স্বভাবের মানুষদের নিয়ে সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে নিজেদের মধ্যে রাখতে হবে আপস-নিষ্পত্তির অনন্য গুণ।
ইসলামপূর্ব সময়ে কাবা পুনর্নির্মাণের পর হাজরে আসওয়াদ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন প্রিয় নবী (সা.) চাদরে হাজরে আসওয়াদ রেখে সব গোত্রপ্রধানকে নিয়ে নিজ হাতে তা প্রতিস্থাপন করেন এবং এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিষ্পত্তি করেন।
আপস-নিষ্পত্তি দ্বারা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের বিবাদ দূর হয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে।’ (সুরা শুরা: ৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আপস-নিষ্পত্তিকে নামাজ, রোজা এবং জাকাত থেকেও উত্তম আমল বলেছেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৩৯)
স্বাভাবিক কথায় মীমাংসা করা সম্ভব না হলে, আগে বেড়ে কথা হেরফের করারও অনুমতি আছে। তা মিথ্যা হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা এমন করে হাদিসে তাদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত না করে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। (সহিহ্ বুখারি: ২৫১৩)

প্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি ন
২২ আগস্ট ২০২৫
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৪ মিনিট | ০৫: ৫৯ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৮ মিনিট | ০৫: ২৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৫ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৪ মিনিট | ০৫: ৫৯ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৮ মিনিট | ০৫: ২৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৫ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

প্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি ন
২২ আগস্ট ২০২৫
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

আরবি শব্দ তহারাত-এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। আর শরয়ি দৃষ্টিতে তহারাত হলো বিশেষ পদ্ধতিতে অপবিত্রতা থেকে শুদ্ধ হওয়া।
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
পবিত্রতা মানুষকে করে তোলে ফেরেশতার অনুরূপ। তার হৃদয় হয়ে ওঠে নির্মল। আত্মা হয় প্রেরণার আধার। অন্যদিকে, অপবিত্রতা মানুষকে ঠেলে দেয় শয়তানের কুমন্ত্রণার দরজায়।
যে ব্যক্তি সর্বদা পবিত্রতায় যত্নবান, তার অন্তরে জন্ম নেয় আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার যোগ্যতা। সে দেখে সততা ও আলোয় ভরা স্বপ্ন। তার চরিত্রে ফুটে ওঠে অভূতপূর্ব আত্মিক সৌন্দর্য।
পবিত্রতা শুধু শরীরের পরিচ্ছন্নতা নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধতার প্রতীক। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্রতা রক্ষা করার একটি মহৎ উপায়। তাই পবিত্রতার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ ও পরিপূর্ণ রাখা প্রতিটি মুসলিমের নৈতিক দায়িত্ব এবং সফল জীবনের মূল চাবিকাঠি।
লেখক: মুফতি আবু রায়হান আল মাহমুদ, প্রিন্সিপাল, গাঙ্গাটিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা বাখরাবাদ, কুমিল্লা।

আরবি শব্দ তহারাত-এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। আর শরয়ি দৃষ্টিতে তহারাত হলো বিশেষ পদ্ধতিতে অপবিত্রতা থেকে শুদ্ধ হওয়া।
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
পবিত্রতা মানুষকে করে তোলে ফেরেশতার অনুরূপ। তার হৃদয় হয়ে ওঠে নির্মল। আত্মা হয় প্রেরণার আধার। অন্যদিকে, অপবিত্রতা মানুষকে ঠেলে দেয় শয়তানের কুমন্ত্রণার দরজায়।
যে ব্যক্তি সর্বদা পবিত্রতায় যত্নবান, তার অন্তরে জন্ম নেয় আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার যোগ্যতা। সে দেখে সততা ও আলোয় ভরা স্বপ্ন। তার চরিত্রে ফুটে ওঠে অভূতপূর্ব আত্মিক সৌন্দর্য।
পবিত্রতা শুধু শরীরের পরিচ্ছন্নতা নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধতার প্রতীক। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্রতা রক্ষা করার একটি মহৎ উপায়। তাই পবিত্রতার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ ও পরিপূর্ণ রাখা প্রতিটি মুসলিমের নৈতিক দায়িত্ব এবং সফল জীবনের মূল চাবিকাঠি।
লেখক: মুফতি আবু রায়হান আল মাহমুদ, প্রিন্সিপাল, গাঙ্গাটিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা বাখরাবাদ, কুমিল্লা।

প্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি ন
২২ আগস্ট ২০২৫
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে