Ajker Patrika

কোরবানির পশুর যেসব সমস্যা থাকলে কোরবানি হবে না

তানবিরুল হক আবিদ
কোরবানির পশুর হাট। ছবি: সংগৃহীত
কোরবানির পশুর হাট। ছবি: সংগৃহীত

নবী আদম (আ.)-এর যুগ থেকেই কোরবানির বিধান চলে আসছে। সব নবীর যুগেই এই বিধান ছিল বলে ইসলামবিষয়ক গবেষকগণ মত দেন। এই বিধানের ধারাবাহিকতা চলে আসছে কাল-মহাকাল ধরে।

কোরবানির আমলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় পরীক্ষায় পড়েন হজরত ইবরাহিম (আ.)। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে স্বপ্নে আদিষ্ট হন তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি দিতে। উট, মেষ কোরবানে দেওয়ার পরও যখন একই স্বপ্ন বারবার দেখতে থাকেন—আল্লাহর মর্জি তখন তাঁর বুঝতে বাকি থাকে না।

আল্লাহ চান তাঁর কলিজার টুকরা সন্তানের কোরবানি। রবের সন্তুষ্টি চিত্তে সন্তান কোরবানি দেওয়ার সব বন্দোবস্ত করেন নবী ইবরাহিম (আ.)। কিন্তু আল্লাহ চেয়েছিলেন রবের প্রতি তাঁর ত্যাগের পরীক্ষা করতে। ইসমাইল (আ.) এর পরিবর্তে কোরবানি হয় জান্নাতি দুম্বা।

ক্রমান্বয়ে ইসলামের বিধানেও যুক্ত হয় কোরবানি। সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব বা আবশ্যক। তবে যে পশু দিয়ে কোরবানি দেওয়া হবে, তা ইসলামের শর্ত অনুযায়ী কিছু ত্রুটি থেকে মুক্ত হতে হবে।

কোরবানির পশুর বর্ণনা দিতে গিয়ে সাহাবি আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) শিংবিশিষ্ট ও মোটাতাজা একটি মেষ কোরবানি করেছেন। এর চেহারা, পা ও চোখ ছিল মিটমিটে কালো। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৮)

পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি হবে না—

  • ১. দৃষ্টিশক্তি না থাকা।
  • ২. শ্রবণশক্তি না থাকা।
  • ৩. অত্যন্ত দুর্বল ও জীর্ণ-শীর্ণ হওয়া।
  • ৪. এই পরিমাণ ল্যাংড়া যে জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে অক্ষম।
  • ৫. লেজের বেশির ভাগ অংশ কাটা থাকা।
  • ৬. জন্মগতভাবে কান না থাকা।
  • ৭. কানের বেশির ভাগ কাটা থাকা।
  • ৮. গোড়াসহ শিং উপড়ে যাওয়া।
  • ৯. পাগল হওয়ার কারণে ঘাস-পানি ঠিকমতো না খাওয়া।
  • ১০. বেশির ভাগ দাঁত না থাকা।
  • ১১. রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যাওয়া।
  • ১২. ছাগলের দুটি দুধের যেকোনো একটি কাটা থাকা।
  • ১৩. গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোনো দুটি কাটা থাকা।

হজরত আলী (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের কোরবানির পশুর চোখ ও কান সুস্থ হওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখার আদেশ করেছেন। (জামে তিরমিজি: ১৫০৩)

অন্য বর্ণনায় বিষয়টি এসেছে এভাবে, জনৈক ব্যক্তি আলী (রা.)-কে কোরবানির গরু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সাতজন ব্যক্তি পর্যন্ত একটি গরুতে অংশীদার হওয়া যায়। ওই ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, শিং ভাঙা হলে? আলী (রা.) বললেন, সমস্যা নেই।

ওই ব্যক্তি আবার জিজ্ঞেস করলেন, আরজা (খোঁড়া) হলে? তিনি বললেন, জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারলে তা জবাই কর। আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের কোরবানির পশুর চোখ ও কান সুস্থ হওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখার আদেশ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ: ৭৩৪)

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজহারুলের আপিলে তাজুলের প্রসিকিউশন টিম, স্বার্থের সংঘাত দেখছেন ডেভিড বার্গম্যানও

ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় শুধু একটি দল—প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের যে ব্যাখ্যা দিল প্রেস উইং

মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে লড়েছিলেন বলেই কি জামিন পেলেন না অধ্যাপক আনোয়ারা

হঠাৎ ব্যাংকের ভেতরে সবাই অচেতন

সৌদি আরবে পুরুষের ‘অবাধ্য’ হলে নারীর যে পরিণতি হয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত