ইসলাম ডেস্ক

কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, সান্নিধ্য, নৈকট্য ও তাকওয়া অর্জন। কেননা সামাজিক নিয়ম হলো, যার জন্য উপহার দেওয়া হয়, তিনি সেটা ভোগ করেন। কিন্তু কোরবানি ও আল্লাহর ওয়াস্তে সকল উৎসর্গের ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে যার জন্য উৎসর্গ করা হয় তিনি ছুঁয়েও দেখেন না।
বরং কোরবানিদাতা নিজেই তা খেয়ে থাকেন এবং আত্মীয়-স্বজন ও গরিবদের মাঝে বণ্টন করে থাকেন। আর সে বণ্টনও হয়ে থাকে ইসলামের বিধানমতে। সুতরাং কোরবানির মূল উদ্দেশ্য হলো—আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও নৈকট্য লাভ করা।
তাকওয়া অর্জনের জন্য কায়মনোবাক্যে, একাগ্রতার সঙ্গে, খাঁটি মনে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের জন্য হতে হবে কোরবানি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, কখনোই পৌঁছাবে না আল্লাহর নিকট পশুর গোশত ও রক্ত, তবে পৌঁছাবে, তাকওয়া বা পরহেজগারি। (সুরা হজ: ৩৭)
বর্তমান সমাজে একটি চলমান বিষয় রয়েছে। তা হলো মানুষে কি বলবে, আমাদের সন্তান কোথায় যাবে, লোকজন গোশত খাবে আর আমাদের সন্তানেরা চেয়ে চেয়ে দেখবে—এটা হতে পারে না। এ জন্য অনেকে কোরবানি দিয়ে থাকেন।
বর্তমানে অনুষ্ঠান সর্বস্ব, লৌকিকতা ও প্রদর্শনের ইচ্ছা সমাজের ওপর জেঁকে বসেছে। অথচ ইসলাম এমন লৌকিকতা শিরক বলে ঘোষণা দিয়েছে। যেমন রাসুল (সা.) বলেন, ছোট থেকে ছোট লৌকিকতাও শিরক। তাই লৌকিকতাকে বর্জন করা একান্ত জরুরি।
যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব
কোরবানি ইসলামের বিভিন্ন আহকাম থেকে একটি হুকুম বা আল্লাহর নির্দেশ। যেমন আল্লাহ বলেন, সুতরাং তুমি নিজ প্রতিপালকের (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য নামাজ পড় ও কোরবানি দাও। (সুরা কাউসার: ৩)। নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি না করে, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২৩)
তবে এই কোরবানি সবার ওপর ওয়াজিব নয়। যে ব্যক্তির মাঝে নিম্নলিখিত পাঁচটি শর্ত বা গুণাবলি পাওয়া যাবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে—
কোরবানিদাতার জন্য করণীয়
কোরবানিদাতার জন্য আরও কিছু করণীয় বিষয় রয়েছে। যা তার জন্য সওয়াব ও লাভজনক হবে। আর তা হলো ঈদুল আজহার চাঁদ ওঠার পর থেকে কোরবানির পশু জবেহ করার পূর্ব পর্যন্ত চুল ও নখ কাটা যাবে না।
উম্মে সুলাইম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যার জন্য কোরবানির পশু থাকবে যা সে কোরবানি দেবে—জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর কোরবানির পশু জবেহ করার পূর্ব পর্যন্ত সে যেন চুল ও নখ না কাটে। (সুনানে আবু দাউদ: ২৭৯১)
কোন কোন প্রাণী কোরবানি দেওয়া যায়
আল্লাহর জমিনে অগণিত জলজ ও স্থলজ প্রাণী রয়েছে। এর মাঝে বড় থেকে বড় এবং ছোট থেকে ছোট প্রাণীও বিদ্যমান। এর মধ্যে আল্লাহ তাআলা নিম্নলিখিত ছয় প্রকারের প্রাণী কোরবানির জন্য মনোনীত করেছেন—
উল্লিখিত ছোট তিন জাতের পশু কোরবানি দেওয়া যাবে। তবে শর্ত হলো যে—এদের বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী হলে কোরবানি বৈধ হবে না। তবে ভেড়ার ক্ষেত্রে যদি ছয় মাস বয়সী ভেড়া, এক বছর বয়সী ভেড়ার মতো মোটাতাজা দেখায়—তাহলে তার দ্বারা কোরবানি গ্রহণযোগ্য হবে।
উল্লিখিত মাঝারি দুই জাতের পশু কোরবানি দেওয়া যাবে। তবে শর্ত হলো—এদের বয়স কমপক্ষে দুই বছর পূর্ণ হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী গরু মহিষ দ্বারা কোরবানি বৈধ হবে না।
অগণিত বড় প্রাণীসমূহ থেকে আল্লাহ তায়ালা উটকে কোরবানির জন্য বৈধতা দিয়েছেন। তাই বলে যেকোনো উট কোরবানি দেওয়া যাবে না। যে উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর বা তার চেয়ে বেশি হবে তার দ্বারা কোরবানি দেওয়া যাবে।
শরিকানা কোরবানির বিধান
আল্লাহ তায়ালা ইসলামি বিধিবিধান সহজ করে দিয়েছেন—যাতে করে মানুষ সাধ্যমতো আমল করতে পারে। কোরবানির বিষয়টিও আল্লাহ তেমনি সহজ করে দিয়েছেন। কেউ বড় পশু (উট) কোরবানি দিতে না পারলে মাঝারি পশু (গরু/মহিষ) কোরবানি দেবে। মাঝারি পশু দিতে না পারলে, ছোট পশু (ছাগল/ভেড়া/দুম্বা) কোরবানি দেবে।
কারও যদি মন চায় যে, সে বড় বা মাঝারি পশু কোরবানি দেবে, কিন্তু সাধ অনুযায়ী সাধ্য নেই। তাহলে সাত ব্যক্তি শরিকানা হিসেবে বড় বা মাঝারি একটি পশু কোরবানি দিতে পারবে।
জাবের (রা.) বলেন, আমরা হুদায়বিয়া নামক স্থানে নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে একটি উট সাতজনের পক্ষ থেকে এবং একটি গরু সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছি। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১৩২)
কোরবানি পশুর শারীরিক শর্তাবলি
কোরবানির জন্য নির্বাচিত পশুর মাঝে কিছু গুণাবলি থাকতে হবে এবং কিছু ত্রুটিমুক্ত হতে হবে।
উল্লেখ থাকে যে, কোরবানির পশু পুরুষ বা স্ত্রী—যে কোনোটি হতে পারে। ষাঁড় বা বলদ, পাঁঠা বা খাসি হলে কোনো দোষ নেই।
কোরবানির গোশত বণ্টন
ইসলামি বিধি-বিধান মতে কোরবানির সমুদয় গোশত কোরবানিদাতা খেতে পারবে। আবার ইচ্ছা করলে সমুদয় গোশত দান করেও দিতে পারবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে উত্তম হলো গোশত তিন ভাগে ভাগ করা।
তবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—কোরবানির গোশত বিক্রি করা বৈধ নয়। তবে কেউ যদি বিক্রি করেন তাহলে তার মূল্য ফিতরার মতো অসহায়দের মাঝে বণ্টন করতে হবে। তবে গোশত যাদের মাঝে বিতরণ করা হয় তারা বিক্রি করলে দোষ নেই।
আরও একটি বিষয় হলো—কোরবানির গোশত যেন কোনোভাবেই বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া না হয়। যেমন, যারা কোরবানির গোশত কাটবে তাদের যেন বিনিময়ে গোশত দেওয়া না হয়। যদি দিতেই হয় তাহলে বিনিময়ে টাকা দেবে।
এ ক্ষেত্রে আমরা আরও একটি ভুল করে থাকি তা হলো, আমরা শ্রমিককে অর্থ ও খাবার বিনিময়ে কাজে নিয়ে থাকি। এ ক্ষেত্রে তাকে কোরবানির গোশত খেতে দিলে সঙ্গে অন্য তরকারি কিংবা অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। অন্যথায় শ্রমের বিনিময়ে তাকে গোশত খাওয়ানো হবে যা বৈধ হবে না।
কোরবানির পশুর চামড়ার বিধান
কোরবানির পশুর চামড়া সম্পর্কে ইসলামের বিধান হলো—এ চামড়া দাবাগাত বা প্রক্রিয়াজাত করে পাক করে নিয়ে নিজে ব্যবহার করতে পারবে। উত্তম হলো চামড়া বা তার মূল্য গরিবদের দিয়ে দেওয়া।
আরও উত্তম হলো, যে সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনাথ, এতিম, অসহায় ও গরিব শিক্ষার্থীদের ফ্রি খাওয়ানো হয়—সেখানে দান করা। এতে একদিকে দানের সওয়াব অপরদিকে সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব বা দ্বিগুণ সওয়াব পাওয়া যাবে।
লৌকিকতা বর্জন করে কোরবানি থেকে যেন আমরা প্রকৃত তাকওয়া অর্জন করতে পারি এটাই হোক প্রত্যাশা।
লেখক: মাহমুদুল হাসান
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, সান্নিধ্য, নৈকট্য ও তাকওয়া অর্জন। কেননা সামাজিক নিয়ম হলো, যার জন্য উপহার দেওয়া হয়, তিনি সেটা ভোগ করেন। কিন্তু কোরবানি ও আল্লাহর ওয়াস্তে সকল উৎসর্গের ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে যার জন্য উৎসর্গ করা হয় তিনি ছুঁয়েও দেখেন না।
বরং কোরবানিদাতা নিজেই তা খেয়ে থাকেন এবং আত্মীয়-স্বজন ও গরিবদের মাঝে বণ্টন করে থাকেন। আর সে বণ্টনও হয়ে থাকে ইসলামের বিধানমতে। সুতরাং কোরবানির মূল উদ্দেশ্য হলো—আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও নৈকট্য লাভ করা।
তাকওয়া অর্জনের জন্য কায়মনোবাক্যে, একাগ্রতার সঙ্গে, খাঁটি মনে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের জন্য হতে হবে কোরবানি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, কখনোই পৌঁছাবে না আল্লাহর নিকট পশুর গোশত ও রক্ত, তবে পৌঁছাবে, তাকওয়া বা পরহেজগারি। (সুরা হজ: ৩৭)
বর্তমান সমাজে একটি চলমান বিষয় রয়েছে। তা হলো মানুষে কি বলবে, আমাদের সন্তান কোথায় যাবে, লোকজন গোশত খাবে আর আমাদের সন্তানেরা চেয়ে চেয়ে দেখবে—এটা হতে পারে না। এ জন্য অনেকে কোরবানি দিয়ে থাকেন।
বর্তমানে অনুষ্ঠান সর্বস্ব, লৌকিকতা ও প্রদর্শনের ইচ্ছা সমাজের ওপর জেঁকে বসেছে। অথচ ইসলাম এমন লৌকিকতা শিরক বলে ঘোষণা দিয়েছে। যেমন রাসুল (সা.) বলেন, ছোট থেকে ছোট লৌকিকতাও শিরক। তাই লৌকিকতাকে বর্জন করা একান্ত জরুরি।
যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব
কোরবানি ইসলামের বিভিন্ন আহকাম থেকে একটি হুকুম বা আল্লাহর নির্দেশ। যেমন আল্লাহ বলেন, সুতরাং তুমি নিজ প্রতিপালকের (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য নামাজ পড় ও কোরবানি দাও। (সুরা কাউসার: ৩)। নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি না করে, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২৩)
তবে এই কোরবানি সবার ওপর ওয়াজিব নয়। যে ব্যক্তির মাঝে নিম্নলিখিত পাঁচটি শর্ত বা গুণাবলি পাওয়া যাবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে—
কোরবানিদাতার জন্য করণীয়
কোরবানিদাতার জন্য আরও কিছু করণীয় বিষয় রয়েছে। যা তার জন্য সওয়াব ও লাভজনক হবে। আর তা হলো ঈদুল আজহার চাঁদ ওঠার পর থেকে কোরবানির পশু জবেহ করার পূর্ব পর্যন্ত চুল ও নখ কাটা যাবে না।
উম্মে সুলাইম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যার জন্য কোরবানির পশু থাকবে যা সে কোরবানি দেবে—জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর কোরবানির পশু জবেহ করার পূর্ব পর্যন্ত সে যেন চুল ও নখ না কাটে। (সুনানে আবু দাউদ: ২৭৯১)
কোন কোন প্রাণী কোরবানি দেওয়া যায়
আল্লাহর জমিনে অগণিত জলজ ও স্থলজ প্রাণী রয়েছে। এর মাঝে বড় থেকে বড় এবং ছোট থেকে ছোট প্রাণীও বিদ্যমান। এর মধ্যে আল্লাহ তাআলা নিম্নলিখিত ছয় প্রকারের প্রাণী কোরবানির জন্য মনোনীত করেছেন—
উল্লিখিত ছোট তিন জাতের পশু কোরবানি দেওয়া যাবে। তবে শর্ত হলো যে—এদের বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী হলে কোরবানি বৈধ হবে না। তবে ভেড়ার ক্ষেত্রে যদি ছয় মাস বয়সী ভেড়া, এক বছর বয়সী ভেড়ার মতো মোটাতাজা দেখায়—তাহলে তার দ্বারা কোরবানি গ্রহণযোগ্য হবে।
উল্লিখিত মাঝারি দুই জাতের পশু কোরবানি দেওয়া যাবে। তবে শর্ত হলো—এদের বয়স কমপক্ষে দুই বছর পূর্ণ হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী গরু মহিষ দ্বারা কোরবানি বৈধ হবে না।
অগণিত বড় প্রাণীসমূহ থেকে আল্লাহ তায়ালা উটকে কোরবানির জন্য বৈধতা দিয়েছেন। তাই বলে যেকোনো উট কোরবানি দেওয়া যাবে না। যে উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর বা তার চেয়ে বেশি হবে তার দ্বারা কোরবানি দেওয়া যাবে।
শরিকানা কোরবানির বিধান
আল্লাহ তায়ালা ইসলামি বিধিবিধান সহজ করে দিয়েছেন—যাতে করে মানুষ সাধ্যমতো আমল করতে পারে। কোরবানির বিষয়টিও আল্লাহ তেমনি সহজ করে দিয়েছেন। কেউ বড় পশু (উট) কোরবানি দিতে না পারলে মাঝারি পশু (গরু/মহিষ) কোরবানি দেবে। মাঝারি পশু দিতে না পারলে, ছোট পশু (ছাগল/ভেড়া/দুম্বা) কোরবানি দেবে।
কারও যদি মন চায় যে, সে বড় বা মাঝারি পশু কোরবানি দেবে, কিন্তু সাধ অনুযায়ী সাধ্য নেই। তাহলে সাত ব্যক্তি শরিকানা হিসেবে বড় বা মাঝারি একটি পশু কোরবানি দিতে পারবে।
জাবের (রা.) বলেন, আমরা হুদায়বিয়া নামক স্থানে নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে একটি উট সাতজনের পক্ষ থেকে এবং একটি গরু সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছি। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১৩২)
কোরবানি পশুর শারীরিক শর্তাবলি
কোরবানির জন্য নির্বাচিত পশুর মাঝে কিছু গুণাবলি থাকতে হবে এবং কিছু ত্রুটিমুক্ত হতে হবে।
উল্লেখ থাকে যে, কোরবানির পশু পুরুষ বা স্ত্রী—যে কোনোটি হতে পারে। ষাঁড় বা বলদ, পাঁঠা বা খাসি হলে কোনো দোষ নেই।
কোরবানির গোশত বণ্টন
ইসলামি বিধি-বিধান মতে কোরবানির সমুদয় গোশত কোরবানিদাতা খেতে পারবে। আবার ইচ্ছা করলে সমুদয় গোশত দান করেও দিতে পারবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে উত্তম হলো গোশত তিন ভাগে ভাগ করা।
তবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—কোরবানির গোশত বিক্রি করা বৈধ নয়। তবে কেউ যদি বিক্রি করেন তাহলে তার মূল্য ফিতরার মতো অসহায়দের মাঝে বণ্টন করতে হবে। তবে গোশত যাদের মাঝে বিতরণ করা হয় তারা বিক্রি করলে দোষ নেই।
আরও একটি বিষয় হলো—কোরবানির গোশত যেন কোনোভাবেই বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া না হয়। যেমন, যারা কোরবানির গোশত কাটবে তাদের যেন বিনিময়ে গোশত দেওয়া না হয়। যদি দিতেই হয় তাহলে বিনিময়ে টাকা দেবে।
এ ক্ষেত্রে আমরা আরও একটি ভুল করে থাকি তা হলো, আমরা শ্রমিককে অর্থ ও খাবার বিনিময়ে কাজে নিয়ে থাকি। এ ক্ষেত্রে তাকে কোরবানির গোশত খেতে দিলে সঙ্গে অন্য তরকারি কিংবা অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। অন্যথায় শ্রমের বিনিময়ে তাকে গোশত খাওয়ানো হবে যা বৈধ হবে না।
কোরবানির পশুর চামড়ার বিধান
কোরবানির পশুর চামড়া সম্পর্কে ইসলামের বিধান হলো—এ চামড়া দাবাগাত বা প্রক্রিয়াজাত করে পাক করে নিয়ে নিজে ব্যবহার করতে পারবে। উত্তম হলো চামড়া বা তার মূল্য গরিবদের দিয়ে দেওয়া।
আরও উত্তম হলো, যে সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনাথ, এতিম, অসহায় ও গরিব শিক্ষার্থীদের ফ্রি খাওয়ানো হয়—সেখানে দান করা। এতে একদিকে দানের সওয়াব অপরদিকে সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব বা দ্বিগুণ সওয়াব পাওয়া যাবে।
লৌকিকতা বর্জন করে কোরবানি থেকে যেন আমরা প্রকৃত তাকওয়া অর্জন করতে পারি এটাই হোক প্রত্যাশা।
লেখক: মাহমুদুল হাসান
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
ইসলাম ডেস্ক

কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, সান্নিধ্য, নৈকট্য ও তাকওয়া অর্জন। কেননা সামাজিক নিয়ম হলো, যার জন্য উপহার দেওয়া হয়, তিনি সেটা ভোগ করেন। কিন্তু কোরবানি ও আল্লাহর ওয়াস্তে সকল উৎসর্গের ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে যার জন্য উৎসর্গ করা হয় তিনি ছুঁয়েও দেখেন না।
বরং কোরবানিদাতা নিজেই তা খেয়ে থাকেন এবং আত্মীয়-স্বজন ও গরিবদের মাঝে বণ্টন করে থাকেন। আর সে বণ্টনও হয়ে থাকে ইসলামের বিধানমতে। সুতরাং কোরবানির মূল উদ্দেশ্য হলো—আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও নৈকট্য লাভ করা।
তাকওয়া অর্জনের জন্য কায়মনোবাক্যে, একাগ্রতার সঙ্গে, খাঁটি মনে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের জন্য হতে হবে কোরবানি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, কখনোই পৌঁছাবে না আল্লাহর নিকট পশুর গোশত ও রক্ত, তবে পৌঁছাবে, তাকওয়া বা পরহেজগারি। (সুরা হজ: ৩৭)
বর্তমান সমাজে একটি চলমান বিষয় রয়েছে। তা হলো মানুষে কি বলবে, আমাদের সন্তান কোথায় যাবে, লোকজন গোশত খাবে আর আমাদের সন্তানেরা চেয়ে চেয়ে দেখবে—এটা হতে পারে না। এ জন্য অনেকে কোরবানি দিয়ে থাকেন।
বর্তমানে অনুষ্ঠান সর্বস্ব, লৌকিকতা ও প্রদর্শনের ইচ্ছা সমাজের ওপর জেঁকে বসেছে। অথচ ইসলাম এমন লৌকিকতা শিরক বলে ঘোষণা দিয়েছে। যেমন রাসুল (সা.) বলেন, ছোট থেকে ছোট লৌকিকতাও শিরক। তাই লৌকিকতাকে বর্জন করা একান্ত জরুরি।
যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব
কোরবানি ইসলামের বিভিন্ন আহকাম থেকে একটি হুকুম বা আল্লাহর নির্দেশ। যেমন আল্লাহ বলেন, সুতরাং তুমি নিজ প্রতিপালকের (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য নামাজ পড় ও কোরবানি দাও। (সুরা কাউসার: ৩)। নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি না করে, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২৩)
তবে এই কোরবানি সবার ওপর ওয়াজিব নয়। যে ব্যক্তির মাঝে নিম্নলিখিত পাঁচটি শর্ত বা গুণাবলি পাওয়া যাবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে—
কোরবানিদাতার জন্য করণীয়
কোরবানিদাতার জন্য আরও কিছু করণীয় বিষয় রয়েছে। যা তার জন্য সওয়াব ও লাভজনক হবে। আর তা হলো ঈদুল আজহার চাঁদ ওঠার পর থেকে কোরবানির পশু জবেহ করার পূর্ব পর্যন্ত চুল ও নখ কাটা যাবে না।
উম্মে সুলাইম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যার জন্য কোরবানির পশু থাকবে যা সে কোরবানি দেবে—জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর কোরবানির পশু জবেহ করার পূর্ব পর্যন্ত সে যেন চুল ও নখ না কাটে। (সুনানে আবু দাউদ: ২৭৯১)
কোন কোন প্রাণী কোরবানি দেওয়া যায়
আল্লাহর জমিনে অগণিত জলজ ও স্থলজ প্রাণী রয়েছে। এর মাঝে বড় থেকে বড় এবং ছোট থেকে ছোট প্রাণীও বিদ্যমান। এর মধ্যে আল্লাহ তাআলা নিম্নলিখিত ছয় প্রকারের প্রাণী কোরবানির জন্য মনোনীত করেছেন—
উল্লিখিত ছোট তিন জাতের পশু কোরবানি দেওয়া যাবে। তবে শর্ত হলো যে—এদের বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী হলে কোরবানি বৈধ হবে না। তবে ভেড়ার ক্ষেত্রে যদি ছয় মাস বয়সী ভেড়া, এক বছর বয়সী ভেড়ার মতো মোটাতাজা দেখায়—তাহলে তার দ্বারা কোরবানি গ্রহণযোগ্য হবে।
উল্লিখিত মাঝারি দুই জাতের পশু কোরবানি দেওয়া যাবে। তবে শর্ত হলো—এদের বয়স কমপক্ষে দুই বছর পূর্ণ হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী গরু মহিষ দ্বারা কোরবানি বৈধ হবে না।
অগণিত বড় প্রাণীসমূহ থেকে আল্লাহ তায়ালা উটকে কোরবানির জন্য বৈধতা দিয়েছেন। তাই বলে যেকোনো উট কোরবানি দেওয়া যাবে না। যে উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর বা তার চেয়ে বেশি হবে তার দ্বারা কোরবানি দেওয়া যাবে।
শরিকানা কোরবানির বিধান
আল্লাহ তায়ালা ইসলামি বিধিবিধান সহজ করে দিয়েছেন—যাতে করে মানুষ সাধ্যমতো আমল করতে পারে। কোরবানির বিষয়টিও আল্লাহ তেমনি সহজ করে দিয়েছেন। কেউ বড় পশু (উট) কোরবানি দিতে না পারলে মাঝারি পশু (গরু/মহিষ) কোরবানি দেবে। মাঝারি পশু দিতে না পারলে, ছোট পশু (ছাগল/ভেড়া/দুম্বা) কোরবানি দেবে।
কারও যদি মন চায় যে, সে বড় বা মাঝারি পশু কোরবানি দেবে, কিন্তু সাধ অনুযায়ী সাধ্য নেই। তাহলে সাত ব্যক্তি শরিকানা হিসেবে বড় বা মাঝারি একটি পশু কোরবানি দিতে পারবে।
জাবের (রা.) বলেন, আমরা হুদায়বিয়া নামক স্থানে নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে একটি উট সাতজনের পক্ষ থেকে এবং একটি গরু সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছি। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১৩২)
কোরবানি পশুর শারীরিক শর্তাবলি
কোরবানির জন্য নির্বাচিত পশুর মাঝে কিছু গুণাবলি থাকতে হবে এবং কিছু ত্রুটিমুক্ত হতে হবে।
উল্লেখ থাকে যে, কোরবানির পশু পুরুষ বা স্ত্রী—যে কোনোটি হতে পারে। ষাঁড় বা বলদ, পাঁঠা বা খাসি হলে কোনো দোষ নেই।
কোরবানির গোশত বণ্টন
ইসলামি বিধি-বিধান মতে কোরবানির সমুদয় গোশত কোরবানিদাতা খেতে পারবে। আবার ইচ্ছা করলে সমুদয় গোশত দান করেও দিতে পারবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে উত্তম হলো গোশত তিন ভাগে ভাগ করা।
তবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—কোরবানির গোশত বিক্রি করা বৈধ নয়। তবে কেউ যদি বিক্রি করেন তাহলে তার মূল্য ফিতরার মতো অসহায়দের মাঝে বণ্টন করতে হবে। তবে গোশত যাদের মাঝে বিতরণ করা হয় তারা বিক্রি করলে দোষ নেই।
আরও একটি বিষয় হলো—কোরবানির গোশত যেন কোনোভাবেই বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া না হয়। যেমন, যারা কোরবানির গোশত কাটবে তাদের যেন বিনিময়ে গোশত দেওয়া না হয়। যদি দিতেই হয় তাহলে বিনিময়ে টাকা দেবে।
এ ক্ষেত্রে আমরা আরও একটি ভুল করে থাকি তা হলো, আমরা শ্রমিককে অর্থ ও খাবার বিনিময়ে কাজে নিয়ে থাকি। এ ক্ষেত্রে তাকে কোরবানির গোশত খেতে দিলে সঙ্গে অন্য তরকারি কিংবা অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। অন্যথায় শ্রমের বিনিময়ে তাকে গোশত খাওয়ানো হবে যা বৈধ হবে না।
কোরবানির পশুর চামড়ার বিধান
কোরবানির পশুর চামড়া সম্পর্কে ইসলামের বিধান হলো—এ চামড়া দাবাগাত বা প্রক্রিয়াজাত করে পাক করে নিয়ে নিজে ব্যবহার করতে পারবে। উত্তম হলো চামড়া বা তার মূল্য গরিবদের দিয়ে দেওয়া।
আরও উত্তম হলো, যে সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনাথ, এতিম, অসহায় ও গরিব শিক্ষার্থীদের ফ্রি খাওয়ানো হয়—সেখানে দান করা। এতে একদিকে দানের সওয়াব অপরদিকে সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব বা দ্বিগুণ সওয়াব পাওয়া যাবে।
লৌকিকতা বর্জন করে কোরবানি থেকে যেন আমরা প্রকৃত তাকওয়া অর্জন করতে পারি এটাই হোক প্রত্যাশা।
লেখক: মাহমুদুল হাসান
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, সান্নিধ্য, নৈকট্য ও তাকওয়া অর্জন। কেননা সামাজিক নিয়ম হলো, যার জন্য উপহার দেওয়া হয়, তিনি সেটা ভোগ করেন। কিন্তু কোরবানি ও আল্লাহর ওয়াস্তে সকল উৎসর্গের ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে যার জন্য উৎসর্গ করা হয় তিনি ছুঁয়েও দেখেন না।
বরং কোরবানিদাতা নিজেই তা খেয়ে থাকেন এবং আত্মীয়-স্বজন ও গরিবদের মাঝে বণ্টন করে থাকেন। আর সে বণ্টনও হয়ে থাকে ইসলামের বিধানমতে। সুতরাং কোরবানির মূল উদ্দেশ্য হলো—আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও নৈকট্য লাভ করা।
তাকওয়া অর্জনের জন্য কায়মনোবাক্যে, একাগ্রতার সঙ্গে, খাঁটি মনে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের জন্য হতে হবে কোরবানি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, কখনোই পৌঁছাবে না আল্লাহর নিকট পশুর গোশত ও রক্ত, তবে পৌঁছাবে, তাকওয়া বা পরহেজগারি। (সুরা হজ: ৩৭)
বর্তমান সমাজে একটি চলমান বিষয় রয়েছে। তা হলো মানুষে কি বলবে, আমাদের সন্তান কোথায় যাবে, লোকজন গোশত খাবে আর আমাদের সন্তানেরা চেয়ে চেয়ে দেখবে—এটা হতে পারে না। এ জন্য অনেকে কোরবানি দিয়ে থাকেন।
বর্তমানে অনুষ্ঠান সর্বস্ব, লৌকিকতা ও প্রদর্শনের ইচ্ছা সমাজের ওপর জেঁকে বসেছে। অথচ ইসলাম এমন লৌকিকতা শিরক বলে ঘোষণা দিয়েছে। যেমন রাসুল (সা.) বলেন, ছোট থেকে ছোট লৌকিকতাও শিরক। তাই লৌকিকতাকে বর্জন করা একান্ত জরুরি।
যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব
কোরবানি ইসলামের বিভিন্ন আহকাম থেকে একটি হুকুম বা আল্লাহর নির্দেশ। যেমন আল্লাহ বলেন, সুতরাং তুমি নিজ প্রতিপালকের (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য নামাজ পড় ও কোরবানি দাও। (সুরা কাউসার: ৩)। নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি না করে, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২৩)
তবে এই কোরবানি সবার ওপর ওয়াজিব নয়। যে ব্যক্তির মাঝে নিম্নলিখিত পাঁচটি শর্ত বা গুণাবলি পাওয়া যাবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে—
কোরবানিদাতার জন্য করণীয়
কোরবানিদাতার জন্য আরও কিছু করণীয় বিষয় রয়েছে। যা তার জন্য সওয়াব ও লাভজনক হবে। আর তা হলো ঈদুল আজহার চাঁদ ওঠার পর থেকে কোরবানির পশু জবেহ করার পূর্ব পর্যন্ত চুল ও নখ কাটা যাবে না।
উম্মে সুলাইম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যার জন্য কোরবানির পশু থাকবে যা সে কোরবানি দেবে—জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর কোরবানির পশু জবেহ করার পূর্ব পর্যন্ত সে যেন চুল ও নখ না কাটে। (সুনানে আবু দাউদ: ২৭৯১)
কোন কোন প্রাণী কোরবানি দেওয়া যায়
আল্লাহর জমিনে অগণিত জলজ ও স্থলজ প্রাণী রয়েছে। এর মাঝে বড় থেকে বড় এবং ছোট থেকে ছোট প্রাণীও বিদ্যমান। এর মধ্যে আল্লাহ তাআলা নিম্নলিখিত ছয় প্রকারের প্রাণী কোরবানির জন্য মনোনীত করেছেন—
উল্লিখিত ছোট তিন জাতের পশু কোরবানি দেওয়া যাবে। তবে শর্ত হলো যে—এদের বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী হলে কোরবানি বৈধ হবে না। তবে ভেড়ার ক্ষেত্রে যদি ছয় মাস বয়সী ভেড়া, এক বছর বয়সী ভেড়ার মতো মোটাতাজা দেখায়—তাহলে তার দ্বারা কোরবানি গ্রহণযোগ্য হবে।
উল্লিখিত মাঝারি দুই জাতের পশু কোরবানি দেওয়া যাবে। তবে শর্ত হলো—এদের বয়স কমপক্ষে দুই বছর পূর্ণ হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সী গরু মহিষ দ্বারা কোরবানি বৈধ হবে না।
অগণিত বড় প্রাণীসমূহ থেকে আল্লাহ তায়ালা উটকে কোরবানির জন্য বৈধতা দিয়েছেন। তাই বলে যেকোনো উট কোরবানি দেওয়া যাবে না। যে উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর বা তার চেয়ে বেশি হবে তার দ্বারা কোরবানি দেওয়া যাবে।
শরিকানা কোরবানির বিধান
আল্লাহ তায়ালা ইসলামি বিধিবিধান সহজ করে দিয়েছেন—যাতে করে মানুষ সাধ্যমতো আমল করতে পারে। কোরবানির বিষয়টিও আল্লাহ তেমনি সহজ করে দিয়েছেন। কেউ বড় পশু (উট) কোরবানি দিতে না পারলে মাঝারি পশু (গরু/মহিষ) কোরবানি দেবে। মাঝারি পশু দিতে না পারলে, ছোট পশু (ছাগল/ভেড়া/দুম্বা) কোরবানি দেবে।
কারও যদি মন চায় যে, সে বড় বা মাঝারি পশু কোরবানি দেবে, কিন্তু সাধ অনুযায়ী সাধ্য নেই। তাহলে সাত ব্যক্তি শরিকানা হিসেবে বড় বা মাঝারি একটি পশু কোরবানি দিতে পারবে।
জাবের (রা.) বলেন, আমরা হুদায়বিয়া নামক স্থানে নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে একটি উট সাতজনের পক্ষ থেকে এবং একটি গরু সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছি। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১৩২)
কোরবানি পশুর শারীরিক শর্তাবলি
কোরবানির জন্য নির্বাচিত পশুর মাঝে কিছু গুণাবলি থাকতে হবে এবং কিছু ত্রুটিমুক্ত হতে হবে।
উল্লেখ থাকে যে, কোরবানির পশু পুরুষ বা স্ত্রী—যে কোনোটি হতে পারে। ষাঁড় বা বলদ, পাঁঠা বা খাসি হলে কোনো দোষ নেই।
কোরবানির গোশত বণ্টন
ইসলামি বিধি-বিধান মতে কোরবানির সমুদয় গোশত কোরবানিদাতা খেতে পারবে। আবার ইচ্ছা করলে সমুদয় গোশত দান করেও দিতে পারবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে উত্তম হলো গোশত তিন ভাগে ভাগ করা।
তবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—কোরবানির গোশত বিক্রি করা বৈধ নয়। তবে কেউ যদি বিক্রি করেন তাহলে তার মূল্য ফিতরার মতো অসহায়দের মাঝে বণ্টন করতে হবে। তবে গোশত যাদের মাঝে বিতরণ করা হয় তারা বিক্রি করলে দোষ নেই।
আরও একটি বিষয় হলো—কোরবানির গোশত যেন কোনোভাবেই বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া না হয়। যেমন, যারা কোরবানির গোশত কাটবে তাদের যেন বিনিময়ে গোশত দেওয়া না হয়। যদি দিতেই হয় তাহলে বিনিময়ে টাকা দেবে।
এ ক্ষেত্রে আমরা আরও একটি ভুল করে থাকি তা হলো, আমরা শ্রমিককে অর্থ ও খাবার বিনিময়ে কাজে নিয়ে থাকি। এ ক্ষেত্রে তাকে কোরবানির গোশত খেতে দিলে সঙ্গে অন্য তরকারি কিংবা অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। অন্যথায় শ্রমের বিনিময়ে তাকে গোশত খাওয়ানো হবে যা বৈধ হবে না।
কোরবানির পশুর চামড়ার বিধান
কোরবানির পশুর চামড়া সম্পর্কে ইসলামের বিধান হলো—এ চামড়া দাবাগাত বা প্রক্রিয়াজাত করে পাক করে নিয়ে নিজে ব্যবহার করতে পারবে। উত্তম হলো চামড়া বা তার মূল্য গরিবদের দিয়ে দেওয়া।
আরও উত্তম হলো, যে সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনাথ, এতিম, অসহায় ও গরিব শিক্ষার্থীদের ফ্রি খাওয়ানো হয়—সেখানে দান করা। এতে একদিকে দানের সওয়াব অপরদিকে সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব বা দ্বিগুণ সওয়াব পাওয়া যাবে।
লৌকিকতা বর্জন করে কোরবানি থেকে যেন আমরা প্রকৃত তাকওয়া অর্জন করতে পারি এটাই হোক প্রত্যাশা।
লেখক: মাহমুদুল হাসান
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৩ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, সান্নিধ্য, নৈকট্য ও তাকওয়া অর্জন। কেননা সামাজিক নিয়ম হলো, যার জন্য উপহার দেওয়া হয়, তিনি সেটা ভোগ করেন। কিন্তু কোরবানি ও আল্লাহর ওয়াস্তে সকল উৎসর্গের ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে যার জন্য উৎসর্গ করা হয় তিনি ছুঁয়েও দেখেন না।
০৪ জুন ২০২৫
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৩ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, সান্নিধ্য, নৈকট্য ও তাকওয়া অর্জন। কেননা সামাজিক নিয়ম হলো, যার জন্য উপহার দেওয়া হয়, তিনি সেটা ভোগ করেন। কিন্তু কোরবানি ও আল্লাহর ওয়াস্তে সকল উৎসর্গের ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে যার জন্য উৎসর্গ করা হয় তিনি ছুঁয়েও দেখেন না।
০৪ জুন ২০২৫
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, সান্নিধ্য, নৈকট্য ও তাকওয়া অর্জন। কেননা সামাজিক নিয়ম হলো, যার জন্য উপহার দেওয়া হয়, তিনি সেটা ভোগ করেন। কিন্তু কোরবানি ও আল্লাহর ওয়াস্তে সকল উৎসর্গের ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে যার জন্য উৎসর্গ করা হয় তিনি ছুঁয়েও দেখেন না।
০৪ জুন ২০২৫
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৩ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগেমাহমুদ হাসান ফাহিম

সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
পৃথিবীতে ভালোভাবে জীবনযাপন করার জন্য, উন্নতির জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা থাকা অপরিহার্য। আর শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার পর তা বজায় রাখার জন্য আপস-নিষ্পত্তির মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা, বিচিত্র স্বভাবের মানুষ নিয়েই হয় সমাজ। সব মানুষ এক মেজাজের নয়। তুচ্ছ ও নগণ্য বিষয়েও অনেক সময় পরস্পরে মনোমালিন্য হয়, কথা-কাটাকাটি হয়। একসঙ্গে চলতে গেলে এমনটি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি এভাবেই ছেড়ে দিলে একপর্যায়ে তা ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সংঘর্ষ পর্যন্ত গড়ায়। তাই এই বিচিত্র স্বভাবের মানুষদের নিয়ে সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে নিজেদের মধ্যে রাখতে হবে আপস-নিষ্পত্তির অনন্য গুণ।
ইসলামপূর্ব সময়ে কাবা পুনর্নির্মাণের পর হাজরে আসওয়াদ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন প্রিয় নবী (সা.) চাদরে হাজরে আসওয়াদ রেখে সব গোত্রপ্রধানকে নিয়ে নিজ হাতে তা প্রতিস্থাপন করেন এবং এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিষ্পত্তি করেন।
আপস-নিষ্পত্তি দ্বারা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের বিবাদ দূর হয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে।’ (সুরা শুরা: ৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আপস-নিষ্পত্তিকে নামাজ, রোজা এবং জাকাত থেকেও উত্তম আমল বলেছেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৩৯)
স্বাভাবিক কথায় মীমাংসা করা সম্ভব না হলে, আগে বেড়ে কথা হেরফের করারও অনুমতি আছে। তা মিথ্যা হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা এমন করে হাদিসে তাদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত না করে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। (সহিহ্ বুখারি: ২৫১৩)

সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
পৃথিবীতে ভালোভাবে জীবনযাপন করার জন্য, উন্নতির জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা থাকা অপরিহার্য। আর শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার পর তা বজায় রাখার জন্য আপস-নিষ্পত্তির মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা, বিচিত্র স্বভাবের মানুষ নিয়েই হয় সমাজ। সব মানুষ এক মেজাজের নয়। তুচ্ছ ও নগণ্য বিষয়েও অনেক সময় পরস্পরে মনোমালিন্য হয়, কথা-কাটাকাটি হয়। একসঙ্গে চলতে গেলে এমনটি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি এভাবেই ছেড়ে দিলে একপর্যায়ে তা ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সংঘর্ষ পর্যন্ত গড়ায়। তাই এই বিচিত্র স্বভাবের মানুষদের নিয়ে সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে নিজেদের মধ্যে রাখতে হবে আপস-নিষ্পত্তির অনন্য গুণ।
ইসলামপূর্ব সময়ে কাবা পুনর্নির্মাণের পর হাজরে আসওয়াদ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন প্রিয় নবী (সা.) চাদরে হাজরে আসওয়াদ রেখে সব গোত্রপ্রধানকে নিয়ে নিজ হাতে তা প্রতিস্থাপন করেন এবং এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিষ্পত্তি করেন।
আপস-নিষ্পত্তি দ্বারা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের বিবাদ দূর হয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে।’ (সুরা শুরা: ৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আপস-নিষ্পত্তিকে নামাজ, রোজা এবং জাকাত থেকেও উত্তম আমল বলেছেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৩৯)
স্বাভাবিক কথায় মীমাংসা করা সম্ভব না হলে, আগে বেড়ে কথা হেরফের করারও অনুমতি আছে। তা মিথ্যা হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা এমন করে হাদিসে তাদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত না করে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। (সহিহ্ বুখারি: ২৫১৩)

কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, সান্নিধ্য, নৈকট্য ও তাকওয়া অর্জন। কেননা সামাজিক নিয়ম হলো, যার জন্য উপহার দেওয়া হয়, তিনি সেটা ভোগ করেন। কিন্তু কোরবানি ও আল্লাহর ওয়াস্তে সকল উৎসর্গের ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে যার জন্য উৎসর্গ করা হয় তিনি ছুঁয়েও দেখেন না।
০৪ জুন ২০২৫
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৩ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে