ইজাজুল হক
কারিম জাব্বারির জন্ম ও বেড় ওঠা তিউনিসিয়ায়। বিরোধী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হওয়ায় রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হন জীবনের প্রথম প্রহর থেকেই। কারিমের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ইসলামি জ্ঞানের পণ্ডিত। ফলে উত্তরাধিকার সূত্রেই বাবার কাছ থেকে পান পুরোনো ধর্মীয় পাণ্ডুলিপির এক বিশাল ভান্ডার। ৪০০ বছরের পুরোনো পাণ্ডুলিপিও তাতে ছিল এবং কারিম সেসব শৈশব থেকেই নেড়েচেড়ে দেখতেন। বইগুলো সাধারণত আফ্রিকান অক্ষরশিল্পের প্রাচীন শৈলী মাগরিবি লিপিতেই লেখা ছিল। সেখান থেকেই প্রথম অক্ষর নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা পান কারিম।
ছোটকাল থেকেই বিপ্লব আর শিল্পের মিলন ঘটে কারিমের হৃদয়ে। একদিকে তিউনিসিয়ার স্বৈরশাসকের নির্যাতন, অন্যদিকে মাগরিবি লিপি আয়ত্তের কসরত—দুটোই চলছিল সমানতালে। পরে আমেরিকায় চলে যান এবং ক্যালিগ্রাফি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করেন। আলোক ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে তৈরি করে নেন নিজের স্বতন্ত্র পথচলা। খুব সম্ভবত বিশ্বে তিনিই প্রথম ক্যালিগ্রাফির এই ধারার প্রবর্তন করেছেন।
বর্তমানে কারিম জাব্বারি কানাডা ও আমেরিকায় বসবাস করেন। পুরোদমে এই শিল্পের উৎকর্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্বজুড়ে আরবি অক্ষরের ম্যুরাল, গ্রাফিতি এবং আলোক ক্যালিগ্রাফি করে থাকেন তিনি। এ ছাড়া লাইভ পারফরম্যান্স এবং শিল্পবিচারক হিসেবেও কাজ করেন। আমেরিকার নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নিজের শিল্প নিয়ে বক্তৃতা করেন। দুবাইয়ে আয়োজিত প্রথম ইসলামিক ক্রিয়েটিভিটি অ্যাওয়ার্ডে রানারআপ হন এবং বিশ্বের শীর্ষ শিল্পীদের তালিকাভুক্ত হন। বিশ্বজুড়ে কারিম ক্যালিগ্রাফি কর্মশালাও করেন। দেড় দশক ধরে অনলাইনেও চালাচ্ছেন নিজের কার্যক্রম। এমনকি কারিমের পিএইচডি অভিসন্দর্ভও নিজের উদ্ভাবিত আলোক ক্যালিগ্রাফি শিল্প নিয়েই করা।
আলোক ক্যালিগ্রাফি হলো, তাৎপর্যপূর্ণ স্থানে প্রযুক্তির সাহায্যে শূন্যে ক্যালিগ্রাফি করা এবং তা ক্যামেরায় ধারণ করা। বাস্তবে সেই স্থানে কোনো ক্যালিগ্রাফি থাকবে না, তবে আলোর বিশেষ ডিভাইস ক্যামেরার সামনে ঘুরিয়ে একটি ফর্ম তৈরি করা হয়। আরবিতে যা লেখা হয়, ওই স্থানের সঙ্গে তার একটা নিবিড় সম্পর্ক থাকে। কারিমের মতে, ঐতিহ্যবাহী ধারার আরবি ক্যালিগ্রাফিকে যদি এভাবে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় না আনা হয়, তবে তা তরুণ প্রজন্মের কাছে আবেদন হারিয়ে ফেলবে।
কারিমের ক্যালিগ্রাফিচর্চার দীর্ঘ সময়ে তিনি একটি নিজস্ব শৈলী তৈরির চেষ্টা করে গেছেন। সব সময় এমন নতুন কিছু করতে চেয়েছেন, যা আগামীর পৃথিবী মনে রাখবে এবং আরবি না বুঝেও দর্শনার্থীরা তাঁর শিল্পের বার্তা উপলব্ধি করতে পারবে। আলোক শিল্পে তা সম্ভব। কারণ চারপাশের আবহই শিল্পকর্মের অর্থ বলে দেয়।
কারিমের মতে, শিল্পকলা মানে সংলাপ ও সেতুবন্ধন। ২০১০ সালে করা তাঁর একটি ম্যুরালের নাম—ক্যালিগ্রাফি সভ্যতাগুলোর সেতু। কারণ তিনি মনে করেন, ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করাই তাঁর শিল্পের মূল লক্ষ্য। ২০১৩ সালে তিউনিসিয়ার যে কারাগারে কারিমের বাবা বন্দী ছিলেন, তার দেয়ালে দেশটির দীর্ঘতম ম্যুরাল আঁকেন। ২৪০ মিটার দীর্ঘ সেই ম্যুরাল আঁকতে তাঁর পুরো শিল্প দলের দেড় মাস সময় লেগেছিল। এ ছাড়া আরব বসন্তের সময় তিউনিসিয়ায় ক্যালিগ্রাফির নতুন জোয়ার আসে। তরুণেরা নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণে এই শিল্পমাধ্যমের আশ্রয় নেয়।
কারিম মনে করেন, ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেলেই শিল্প সার্থক হতে পারে। ফলে সেই কাজটিই করার চেষ্টা করছেন তিনি। কারণ শিকড় ভুলে আধুনিকতাসর্বস্ব শিল্পের পথে যাওয়া যেমন প্রাণহীন উদ্দীপনা; তেমনি ঐতিহ্যবাহী শৈলীতে আটকে থাকাও প্রগতি ও বিকাশের অন্তরায়।
বাইত আল-ফন ডটকম অবলম্বনে
কারিম জাব্বারির জন্ম ও বেড় ওঠা তিউনিসিয়ায়। বিরোধী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হওয়ায় রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হন জীবনের প্রথম প্রহর থেকেই। কারিমের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ইসলামি জ্ঞানের পণ্ডিত। ফলে উত্তরাধিকার সূত্রেই বাবার কাছ থেকে পান পুরোনো ধর্মীয় পাণ্ডুলিপির এক বিশাল ভান্ডার। ৪০০ বছরের পুরোনো পাণ্ডুলিপিও তাতে ছিল এবং কারিম সেসব শৈশব থেকেই নেড়েচেড়ে দেখতেন। বইগুলো সাধারণত আফ্রিকান অক্ষরশিল্পের প্রাচীন শৈলী মাগরিবি লিপিতেই লেখা ছিল। সেখান থেকেই প্রথম অক্ষর নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা পান কারিম।
ছোটকাল থেকেই বিপ্লব আর শিল্পের মিলন ঘটে কারিমের হৃদয়ে। একদিকে তিউনিসিয়ার স্বৈরশাসকের নির্যাতন, অন্যদিকে মাগরিবি লিপি আয়ত্তের কসরত—দুটোই চলছিল সমানতালে। পরে আমেরিকায় চলে যান এবং ক্যালিগ্রাফি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করেন। আলোক ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে তৈরি করে নেন নিজের স্বতন্ত্র পথচলা। খুব সম্ভবত বিশ্বে তিনিই প্রথম ক্যালিগ্রাফির এই ধারার প্রবর্তন করেছেন।
বর্তমানে কারিম জাব্বারি কানাডা ও আমেরিকায় বসবাস করেন। পুরোদমে এই শিল্পের উৎকর্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্বজুড়ে আরবি অক্ষরের ম্যুরাল, গ্রাফিতি এবং আলোক ক্যালিগ্রাফি করে থাকেন তিনি। এ ছাড়া লাইভ পারফরম্যান্স এবং শিল্পবিচারক হিসেবেও কাজ করেন। আমেরিকার নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নিজের শিল্প নিয়ে বক্তৃতা করেন। দুবাইয়ে আয়োজিত প্রথম ইসলামিক ক্রিয়েটিভিটি অ্যাওয়ার্ডে রানারআপ হন এবং বিশ্বের শীর্ষ শিল্পীদের তালিকাভুক্ত হন। বিশ্বজুড়ে কারিম ক্যালিগ্রাফি কর্মশালাও করেন। দেড় দশক ধরে অনলাইনেও চালাচ্ছেন নিজের কার্যক্রম। এমনকি কারিমের পিএইচডি অভিসন্দর্ভও নিজের উদ্ভাবিত আলোক ক্যালিগ্রাফি শিল্প নিয়েই করা।
আলোক ক্যালিগ্রাফি হলো, তাৎপর্যপূর্ণ স্থানে প্রযুক্তির সাহায্যে শূন্যে ক্যালিগ্রাফি করা এবং তা ক্যামেরায় ধারণ করা। বাস্তবে সেই স্থানে কোনো ক্যালিগ্রাফি থাকবে না, তবে আলোর বিশেষ ডিভাইস ক্যামেরার সামনে ঘুরিয়ে একটি ফর্ম তৈরি করা হয়। আরবিতে যা লেখা হয়, ওই স্থানের সঙ্গে তার একটা নিবিড় সম্পর্ক থাকে। কারিমের মতে, ঐতিহ্যবাহী ধারার আরবি ক্যালিগ্রাফিকে যদি এভাবে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় না আনা হয়, তবে তা তরুণ প্রজন্মের কাছে আবেদন হারিয়ে ফেলবে।
কারিমের ক্যালিগ্রাফিচর্চার দীর্ঘ সময়ে তিনি একটি নিজস্ব শৈলী তৈরির চেষ্টা করে গেছেন। সব সময় এমন নতুন কিছু করতে চেয়েছেন, যা আগামীর পৃথিবী মনে রাখবে এবং আরবি না বুঝেও দর্শনার্থীরা তাঁর শিল্পের বার্তা উপলব্ধি করতে পারবে। আলোক শিল্পে তা সম্ভব। কারণ চারপাশের আবহই শিল্পকর্মের অর্থ বলে দেয়।
কারিমের মতে, শিল্পকলা মানে সংলাপ ও সেতুবন্ধন। ২০১০ সালে করা তাঁর একটি ম্যুরালের নাম—ক্যালিগ্রাফি সভ্যতাগুলোর সেতু। কারণ তিনি মনে করেন, ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করাই তাঁর শিল্পের মূল লক্ষ্য। ২০১৩ সালে তিউনিসিয়ার যে কারাগারে কারিমের বাবা বন্দী ছিলেন, তার দেয়ালে দেশটির দীর্ঘতম ম্যুরাল আঁকেন। ২৪০ মিটার দীর্ঘ সেই ম্যুরাল আঁকতে তাঁর পুরো শিল্প দলের দেড় মাস সময় লেগেছিল। এ ছাড়া আরব বসন্তের সময় তিউনিসিয়ায় ক্যালিগ্রাফির নতুন জোয়ার আসে। তরুণেরা নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণে এই শিল্পমাধ্যমের আশ্রয় নেয়।
কারিম মনে করেন, ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেলেই শিল্প সার্থক হতে পারে। ফলে সেই কাজটিই করার চেষ্টা করছেন তিনি। কারণ শিকড় ভুলে আধুনিকতাসর্বস্ব শিল্পের পথে যাওয়া যেমন প্রাণহীন উদ্দীপনা; তেমনি ঐতিহ্যবাহী শৈলীতে আটকে থাকাও প্রগতি ও বিকাশের অন্তরায়।
বাইত আল-ফন ডটকম অবলম্বনে
রোজার মৌখিক নিয়ত যেকোনো ভাষায় হতে পারে। একান্ত আরবি ভাষায় হওয়া জরুরি নয়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১ / ৩৭৮)। বরং যারা আরবি বোঝে না, তাদের জন্য আরবিতে নিয়ত না করাই কর্তব্য। কারণ নিয়ত পড়া জরুরি নয়, নিয়ত করাই জরুরি।
১৩ ঘণ্টা আগেরাসুল (সা.) সাহাবিদের তিনজন নেককার ব্যক্তির গল্প শুনিয়েছিলেন। হাদিসের ভাষ্যে স্পষ্টভাবে তাঁদের নাম ও বাসস্থানের কথা উল্লেখ নেই। তবে তাঁরা যে বনি ইসরাইলের লোক ছিলেন, এ কথার উল্লেখ আছে। এ গল্পে আল্লাহর ভয়, মা–বাবার প্রতি সদাচার, দোয়ার শক্তি এবং সৎকর্মের মহত্ত্ব ফুটে উঠেছে।
১৪ ঘণ্টা আগে‘জ্ঞানের তরে শহীদ’ উপাধি পাওয়া এবং বিশ্ববিশ্রুত হাদিস গ্রন্থ ‘সহিহ্ মুসলিম’ রচয়িতা ইমাম মুসলিম বিন হাজ্জাজের খ্যাতি জগতজোড়া। যার অক্লান্ত পরিশ্রমে হাদিস শাস্ত্রে যোগ হয়েছে অসামান্য সব প্রামাণ্য। আজকের অবসরে সংক্ষেপে এ মহান মনীষীর জীবন নিয়ে আলোকপাত করার প্রয়াস পাব।
১৭ ঘণ্টা আগেনিয়মিত খাওয়াদাওয়া করার সময় যেসব আদব অনুসরণ করতে হয়, তা ইফতারের সময়ও অনুসরণ করা চাই। তবে ইফতারের রয়েছে বিশেষ কিছু সুন্নত ও আদব। যথা— এক. সময় হওয়ার পরপরই ইফতার করা: সূর্যাস্তের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে কিংবা মাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার শুরু করে দেওয়া সুন্নত।
২০ ঘণ্টা আগে