ইসলাম ডেস্ক
সন্তান দত্তক নেওয়া দুই ধরনের হতে পারে। এক. আসল বাবা-মায়ের পরিচয় গোপন করে শিশুকে নিজের সন্তান হিসেবে পালন করা এবং নিজের সন্তানের মতোই বিয়ে, পর্দা, মিরাস (সম্পত্তির অধিকার) ইত্যাদির বিধান মেনে চলা। দুই. এতিম-অভাবী শিশুর লালনপালনের দায়িত্ব নেওয়া বা পিতৃপরিচয়হীন শিশুর অভিভাবকত্ব গ্রহণ করা।
দত্তক নেওয়ার প্রথম ধরনটি ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ হলেও দ্বিতীয় ধরনটি অনুমোদিত। এখানে কোরআন-হাদিসের আলোকে দত্তক নেওয়া ও সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান আলোকপাত করা হলো।
রক্তের পরিচয়ই আসল পরিচয়
জাহিলি যুগে আরবে পালিত সন্তানকে ঔরসজাত সন্তানের মতোই মনে করা হতো। বিয়ে, মিরাসসহ সব ক্ষেত্রেই নিজের সন্তানের বিধান প্রয়োগ করা হতো। তবে ইসলাম নিজের বাবা–মায়ের পরিচয় মুছে ফেলে অন্য কারও সন্তান হিসেবে পরিচিত হওয়ার অনুমতি দেয়নি। ইসলাম বাবার ঔরস ও মায়ের গর্ভকেই সন্তানের পরিচয়ের মাপকাঠি নির্ণয় করেছে। বাবা-মায়ের পরিচয়েই পরিচিত হওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। জাহিলি যুগের দত্তক প্রথাকে রহিত করা হয়েছে।
মহানবী (সা.) সাহাবি জাইদ ইবনে হারিসা (রা.)-এর লালনপালনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এক সময় সাহাবায়ে কেরাম তাঁকে জাইদ ইবনে মুহাম্মদ (মুহাম্মদের ছেলে জাইদ) নামে ডাকতে শুরু করেন। পরে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করেন এবং জাইদকে বাবা হারিসার দিকে সম্পর্কিত করে সম্বোধন করার আদেশ দেন। তখন সাহাবিরা তা-ই করেন। (বুখারি ও মুসলিম)
রাসুল (সা.) তাঁর পালক সন্তান জাইদের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী জয়নব বিনতে জাহাশকে বিয়ে করেছিলেন। সুরা আহজাবের ৩৭ নম্বর আয়াতে এ বিষয়ে বিধান দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং পালিত ছেলে যাদের তোমরা ছেলে বলো, আল্লাহ তাদের তোমাদের ছেলে বানাননি। এসব তোমাদের মুখের কথা। …. ওদের বাবার পরিচয়ে ডাকো; আল্লাহর দৃষ্টিতে এটিই ন্যায়সংগত। যদি তোমরা ওদের বাবার পরিচয় না জানো, তবে ওদের ধর্মীয় ভাই এবং বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করো।’ (সুরা আহজাব: ৪-৫)
রক্তের পরিচয় মুছে ফেলা নাজায়েজ
দত্তক নেওয়ার পর শিশুর আসল পরিচয় মুছে ফেলা হারাম। এমন শর্তে চুক্তি করে দত্তক নেওয়া বা টাকার বিনিময়ে দত্তক নেওয়া ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। তাই এমন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে গেলেও বাস্তবায়ন করা জরুরি নয়। হাদিসে কুদসিতে রয়েছে, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির প্রতিপক্ষ হব—এক. যে ব্যক্তি কোনো কাজে আমার নামে কসম করার পর তা ভঙ্গ করেছে। দুই. যে ব্যক্তি কোনো স্বাধীন মানুষ বিক্রি করে সম্পদ অর্জন করেছে। তিন. আর যে ব্যক্তি কোনো লোক দিয়ে কাজ করিয়ে তার বিনিময় দেয়নি।’ (বুখারি)
তাই নিজের বাবা-মাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে বাবা-মা বলে স্বীকৃতি দেওয়া নাজায়েজ। এই কাজকে হাদিসে ‘কুফরি’ বলা হয়েছে। নবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের বাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বীকার করা থেকে বিমুখ হইও না। যে তার বাবা থেকে বিমুখ হয়, সে কুফরি করে।’ (মুসলিম) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে নিজের বাবা ছাড়া অন্য কারও সন্তান বলে দাবি করে, অথচ সে জানে ওই ব্যক্তি তার বাবা নন, তার জন্য জান্নাত হারাম।’ (বুখারি ও মুসলিম)
পালক পিতা–মাতাকে বাবা-মা না ডাকাই উত্তম
পালিত সন্তানেরা তাঁদের লালনকারীদের সম্মান করে বাবা-মা ডাকতে পারবেন। একইভাবে তাঁরাও স্নেহ করে পালিত সন্তানদের ছেলে-মেয়ে ডাকতে পারবেন। তবে শর্ত হলো, সন্তানের আসল বাবা-মাকেই আসল বাবা-মা মনে করতে হবে এবং তাঁদের সঙ্গে সন্তানের স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। আসল বাবা-মায়ের ওপর পালনকারী বাবা-মাকে প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। (ইবনে কাসির)
মুফতি শফি (রহ.) বলেন, ‘লালন-পালনকারীকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মা-বাবা ডাকা বৈধ হলেও অনুত্তম ও অনুচিত। কেননা এতে জাহেলিয়াতের কুপ্রথার সঙ্গে সাদৃশ্য হয়ে যায়। ইসলাম এ ধরনের সাদৃশ্য পছন্দ করে না।’ (আহকামুল কোরআন)
পালিত সন্তান ওয়ারিশ হবেন না
পালনকারীর মৃত্যুর পর পালিত সন্তান মিরাস হিসেবে তাঁর সম্পদ থেকে কোনো অংশ পাবে না। একইভাবে পালিত সন্তান মারা গেলে পালনকারীও তাঁর সম্পদের ওয়ারিশ হবেন না। তবে পালনকারী বেঁচে থাকতে পালিত সন্তানকে সম্পদের কিছু অংশ দান করতে পারবেন অথবা মৃত্যুর পর তাঁকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ দেওয়ার অসিয়ত করে যেতে পারবেন। অসিয়তের ক্ষেত্রে তা কেবল মৃতের মোট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকেই কার্যকর হবে। পক্ষান্তরে পালিত সন্তানের আসল বাবা-মার সম্পত্তি থেকে তিনি স্বাভাবিকভাবেই তাঁর অংশ পাবেন। দত্তক দেওয়ার কারণে তাঁর ওয়ারিশ হওয়া বাতিল হবে না। (তাকমিলাতু ফাতহিল কাদির)
বিয়ে ও পর্দা সম্পর্কিত বিধান
পালিত সন্তানকে যেহেতু ইসলাম আসল সন্তানের স্বীকৃতি দেয় না, তাই তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত সব বিধানের ক্ষেত্রেই বিষয়টি কার্যকর হবে। অর্থাৎ, পালিত সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর পালনকারীর বাড়ির সবাইকে তাঁর সঙ্গে পর্দা করতে হবে। তাঁর সঙ্গে পালনকারীর বিয়ে-শাদি করতে কোনো বাধা নেই। পালিত সন্তান ছেলে হলে সাবালক হওয়ার পর পালনকারী মায়ের সঙ্গে এবং মেয়ে হলে পালনকারী বাবার সঙ্গে পর্দা রক্ষা করতে হবে। (তুহফাতুল ফুকাহা)
তবে পালিত সন্তান যেহেতু সাধারণত পালনকারীর বাড়িতেই থাকেন, তাই পর্দার বিধান সহজ করার জন্য দুই বছর (মতান্তরে আড়াই বছর) বয়স পর্যন্ত পালিত সন্তানকে দুধ পান করানোর কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। মহানবী (সা.)-এর যুগেই এমন ঘটনা ঘটেছে। সাহাবি আবু হুজাইফা (রা.) সালেমকে দত্তক নিয়েছিলেন। পর্দার প্রশ্নে তখন নবী (সা.) আবু হুজাইফার স্ত্রীকে বললেন, ‘তুমি তাঁকে দুধ পান করিয়ে দুধ ছেলে বানিয়ে নাও। এতে তুমি তাঁর মাহরাম হয়ে যাবে।’ তিনি তাই করলেন। (বুখারি ও মুসলিম)
নাম-পরিচয় মুছে দিয়ে দত্তক নেওয়ার প্রথা ইসলামে স্বীকৃত না হলেও অভাবী, এতিম ও অসহায় শিশুদের লালনপালনে নিরুৎসাহিত করা হয়নি। বরং এমন শিশুর দায়িত্ব নেওয়ার অসংখ্য ফজিলত বিবৃত হয়েছে। এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ জান্নাতের ওয়াদা করেছেন। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এতিমের ভরণপোষণ ও লালনপালনের দায়িত্ব নেবে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাত দান করবেন।’ (তিরমিজি)
সন্তান দত্তক নেওয়া দুই ধরনের হতে পারে। এক. আসল বাবা-মায়ের পরিচয় গোপন করে শিশুকে নিজের সন্তান হিসেবে পালন করা এবং নিজের সন্তানের মতোই বিয়ে, পর্দা, মিরাস (সম্পত্তির অধিকার) ইত্যাদির বিধান মেনে চলা। দুই. এতিম-অভাবী শিশুর লালনপালনের দায়িত্ব নেওয়া বা পিতৃপরিচয়হীন শিশুর অভিভাবকত্ব গ্রহণ করা।
দত্তক নেওয়ার প্রথম ধরনটি ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ হলেও দ্বিতীয় ধরনটি অনুমোদিত। এখানে কোরআন-হাদিসের আলোকে দত্তক নেওয়া ও সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান আলোকপাত করা হলো।
রক্তের পরিচয়ই আসল পরিচয়
জাহিলি যুগে আরবে পালিত সন্তানকে ঔরসজাত সন্তানের মতোই মনে করা হতো। বিয়ে, মিরাসসহ সব ক্ষেত্রেই নিজের সন্তানের বিধান প্রয়োগ করা হতো। তবে ইসলাম নিজের বাবা–মায়ের পরিচয় মুছে ফেলে অন্য কারও সন্তান হিসেবে পরিচিত হওয়ার অনুমতি দেয়নি। ইসলাম বাবার ঔরস ও মায়ের গর্ভকেই সন্তানের পরিচয়ের মাপকাঠি নির্ণয় করেছে। বাবা-মায়ের পরিচয়েই পরিচিত হওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। জাহিলি যুগের দত্তক প্রথাকে রহিত করা হয়েছে।
মহানবী (সা.) সাহাবি জাইদ ইবনে হারিসা (রা.)-এর লালনপালনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এক সময় সাহাবায়ে কেরাম তাঁকে জাইদ ইবনে মুহাম্মদ (মুহাম্মদের ছেলে জাইদ) নামে ডাকতে শুরু করেন। পরে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করেন এবং জাইদকে বাবা হারিসার দিকে সম্পর্কিত করে সম্বোধন করার আদেশ দেন। তখন সাহাবিরা তা-ই করেন। (বুখারি ও মুসলিম)
রাসুল (সা.) তাঁর পালক সন্তান জাইদের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী জয়নব বিনতে জাহাশকে বিয়ে করেছিলেন। সুরা আহজাবের ৩৭ নম্বর আয়াতে এ বিষয়ে বিধান দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং পালিত ছেলে যাদের তোমরা ছেলে বলো, আল্লাহ তাদের তোমাদের ছেলে বানাননি। এসব তোমাদের মুখের কথা। …. ওদের বাবার পরিচয়ে ডাকো; আল্লাহর দৃষ্টিতে এটিই ন্যায়সংগত। যদি তোমরা ওদের বাবার পরিচয় না জানো, তবে ওদের ধর্মীয় ভাই এবং বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করো।’ (সুরা আহজাব: ৪-৫)
রক্তের পরিচয় মুছে ফেলা নাজায়েজ
দত্তক নেওয়ার পর শিশুর আসল পরিচয় মুছে ফেলা হারাম। এমন শর্তে চুক্তি করে দত্তক নেওয়া বা টাকার বিনিময়ে দত্তক নেওয়া ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। তাই এমন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে গেলেও বাস্তবায়ন করা জরুরি নয়। হাদিসে কুদসিতে রয়েছে, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির প্রতিপক্ষ হব—এক. যে ব্যক্তি কোনো কাজে আমার নামে কসম করার পর তা ভঙ্গ করেছে। দুই. যে ব্যক্তি কোনো স্বাধীন মানুষ বিক্রি করে সম্পদ অর্জন করেছে। তিন. আর যে ব্যক্তি কোনো লোক দিয়ে কাজ করিয়ে তার বিনিময় দেয়নি।’ (বুখারি)
তাই নিজের বাবা-মাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে বাবা-মা বলে স্বীকৃতি দেওয়া নাজায়েজ। এই কাজকে হাদিসে ‘কুফরি’ বলা হয়েছে। নবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের বাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বীকার করা থেকে বিমুখ হইও না। যে তার বাবা থেকে বিমুখ হয়, সে কুফরি করে।’ (মুসলিম) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে নিজের বাবা ছাড়া অন্য কারও সন্তান বলে দাবি করে, অথচ সে জানে ওই ব্যক্তি তার বাবা নন, তার জন্য জান্নাত হারাম।’ (বুখারি ও মুসলিম)
পালক পিতা–মাতাকে বাবা-মা না ডাকাই উত্তম
পালিত সন্তানেরা তাঁদের লালনকারীদের সম্মান করে বাবা-মা ডাকতে পারবেন। একইভাবে তাঁরাও স্নেহ করে পালিত সন্তানদের ছেলে-মেয়ে ডাকতে পারবেন। তবে শর্ত হলো, সন্তানের আসল বাবা-মাকেই আসল বাবা-মা মনে করতে হবে এবং তাঁদের সঙ্গে সন্তানের স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। আসল বাবা-মায়ের ওপর পালনকারী বাবা-মাকে প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। (ইবনে কাসির)
মুফতি শফি (রহ.) বলেন, ‘লালন-পালনকারীকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মা-বাবা ডাকা বৈধ হলেও অনুত্তম ও অনুচিত। কেননা এতে জাহেলিয়াতের কুপ্রথার সঙ্গে সাদৃশ্য হয়ে যায়। ইসলাম এ ধরনের সাদৃশ্য পছন্দ করে না।’ (আহকামুল কোরআন)
পালিত সন্তান ওয়ারিশ হবেন না
পালনকারীর মৃত্যুর পর পালিত সন্তান মিরাস হিসেবে তাঁর সম্পদ থেকে কোনো অংশ পাবে না। একইভাবে পালিত সন্তান মারা গেলে পালনকারীও তাঁর সম্পদের ওয়ারিশ হবেন না। তবে পালনকারী বেঁচে থাকতে পালিত সন্তানকে সম্পদের কিছু অংশ দান করতে পারবেন অথবা মৃত্যুর পর তাঁকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ দেওয়ার অসিয়ত করে যেতে পারবেন। অসিয়তের ক্ষেত্রে তা কেবল মৃতের মোট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকেই কার্যকর হবে। পক্ষান্তরে পালিত সন্তানের আসল বাবা-মার সম্পত্তি থেকে তিনি স্বাভাবিকভাবেই তাঁর অংশ পাবেন। দত্তক দেওয়ার কারণে তাঁর ওয়ারিশ হওয়া বাতিল হবে না। (তাকমিলাতু ফাতহিল কাদির)
বিয়ে ও পর্দা সম্পর্কিত বিধান
পালিত সন্তানকে যেহেতু ইসলাম আসল সন্তানের স্বীকৃতি দেয় না, তাই তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত সব বিধানের ক্ষেত্রেই বিষয়টি কার্যকর হবে। অর্থাৎ, পালিত সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর পালনকারীর বাড়ির সবাইকে তাঁর সঙ্গে পর্দা করতে হবে। তাঁর সঙ্গে পালনকারীর বিয়ে-শাদি করতে কোনো বাধা নেই। পালিত সন্তান ছেলে হলে সাবালক হওয়ার পর পালনকারী মায়ের সঙ্গে এবং মেয়ে হলে পালনকারী বাবার সঙ্গে পর্দা রক্ষা করতে হবে। (তুহফাতুল ফুকাহা)
তবে পালিত সন্তান যেহেতু সাধারণত পালনকারীর বাড়িতেই থাকেন, তাই পর্দার বিধান সহজ করার জন্য দুই বছর (মতান্তরে আড়াই বছর) বয়স পর্যন্ত পালিত সন্তানকে দুধ পান করানোর কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। মহানবী (সা.)-এর যুগেই এমন ঘটনা ঘটেছে। সাহাবি আবু হুজাইফা (রা.) সালেমকে দত্তক নিয়েছিলেন। পর্দার প্রশ্নে তখন নবী (সা.) আবু হুজাইফার স্ত্রীকে বললেন, ‘তুমি তাঁকে দুধ পান করিয়ে দুধ ছেলে বানিয়ে নাও। এতে তুমি তাঁর মাহরাম হয়ে যাবে।’ তিনি তাই করলেন। (বুখারি ও মুসলিম)
নাম-পরিচয় মুছে দিয়ে দত্তক নেওয়ার প্রথা ইসলামে স্বীকৃত না হলেও অভাবী, এতিম ও অসহায় শিশুদের লালনপালনে নিরুৎসাহিত করা হয়নি। বরং এমন শিশুর দায়িত্ব নেওয়ার অসংখ্য ফজিলত বিবৃত হয়েছে। এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ জান্নাতের ওয়াদা করেছেন। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এতিমের ভরণপোষণ ও লালনপালনের দায়িত্ব নেবে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাত দান করবেন।’ (তিরমিজি)
বিয়ের বর-কনে নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসলামের বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, বিয়েতে কারও পছন্দের ব্যাপারে মানুষ চারটি বিষয় দেখে। যথা—সম্পদ, আভিজাত্য, সৌন্দর্য এবং খোদাভীতি। এর মধ্যে ভাগ্যবান এবং শ্রেষ্ঠ সে, যে একজন ধার্মিক মেয়েকে বিয়ে করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) মানুষকে আরও সতর্ক করে দেন...
৬ ঘণ্টা আগেবাংলা অঞ্চলের হাজার বছরের ইতিহাসে ধর্ম, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের যে সমন্বয় ঘটেছে, তার মধ্যে ইসলামি স্থাপত্য এক মহিমান্বিত অধ্যায়। কালের গহ্বরে কিছু নিদর্শন হারিয়ে গেলেও, আজও দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদের গম্বুজ, মাদ্রাসার মিনার কিংবা মাজারের কারুকাজ ইসলামের প্রসার ও সৃজনশীলতার এক অনুপম সাক্ষ্য বহন করে।
১ দিন আগেপৃথিবীতে আমরা কেউই চাপমুক্ত নই; দুশ্চিন্তা ও হতাশা সবারই থাকে। তবে এটি অস্বাভাবিক মাত্রায় হলে তা মানসিক রোগে রূপ নেয়, যা অনেক শারীরিক রোগেরও কারণ। তাই প্রতিটি মানুষের দুশ্চিন্তা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। চিন্তামুক্ত থাকার জন্য কোরআন-হাদিসে বেশ কিছু আমলের কথা এসেছে। এখানে ৪টি আমলের কথা আলোচনা করছি।
১ দিন আগেহিজরি সনের অষ্টম মাস শাবান। ইসলামে এ মাসের ফজিলত ও মর্যাদা অনেক। মহানবী (সা.) রজব মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি শুরু করতেন। শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রেখে রমজানের জন্য মানসিকভাবে তৈরি হতেন। এ মাসের মধ্যভাগে রয়েছে ফজিলতের রাত শবে বরাত।
১ দিন আগে