মাহমুদ হাসান ফাহিম
মানুষের রিজিক নির্ধারিত। সৃষ্টির বহু আগ থেকেই তা লিপিবদ্ধ। কিছু আমলের মাধ্যমে এটি বাড়ানো সম্ভব, আবার কিছু কাজের কারণে তা ক্ষতিগ্রস্তও হয়—কমে যায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বলো, নিশ্চয় আমার রব যাকে ইচ্ছা তার রিজিক সম্প্রসারিত করে দেন, আর যাকে ইচ্ছা তার রিজিক সংকুচিত করে দেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।’ (সুরা সাবা: ৩৬)
পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে জানা যায়—বেশ কিছু কাজে মানুষের রিজিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রিজিকের বরকত কমে যায়। কাজগুলো হলো—
১. পাপাচার
২. অকৃতজ্ঞতা
৩. মিথ্যা কসম ও ধোঁকা
৪. সুদি কারবার
৫. জাকাত না দেওয়া
৬. হারাম উপার্জন
পাপাচার
যেসব কাজে মানুষের রিজিক সংকুচিত হয়; তার অন্যতম হলো গুনাহ বা পাপাচার। হজরত সাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সৎকর্ম মানুষের আয়ুষ্কাল বাড়ায় এবং দোয়া মানুষের তকদির পরিবর্তন করে। আর পাপ কাজের কারণে মানুষ তার প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪০২২)
অকৃতজ্ঞতা
নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নেয়ামত ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানবজীবন, কমে যায় রিজিক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে মনে রেখো, আমার শাস্তি বড়ই কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
মিথ্যা কসম ও ধোঁকা
মিথ্যা কসম এবং ধোঁকা এ দুটো আয়-উপার্জনের বরকত নষ্ট করে ফেলে। আর বরকত চলে যাওয়া মানেই রিজিকে সংকীর্ণতা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বেচাকেনা করার সময় তোমরা অধিক কসম করা থেকে সাবধান থাকবে। কারণ, মিথ্যা কসম করলে বিক্রি বেশি হবে, কিন্তু বরকত হবে না।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৬০৭)
তিনি আরও বলেছেন, ‘ক্রেতা ও বিক্রেতা চুক্তির মজলিশ থেকে বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করা কিংবা বাতিল করার সুযোগ রয়েছে। যদি তারা সত্য বলে এবং পণ্যের প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ করে, তাহলে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে। আর যদি মিথ্যা বলে এবং পণ্যের দোষ গোপন করে, তাহলে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত ধ্বংস হয়ে যাবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ২০৭৯)
সুদি কারবার
আপাতদৃষ্টে মনে হয় সুদের কারবারের দ্বারা ব্যবসায় উন্নতি হচ্ছে। বস্তুত এতে ব্যবসার বরকত নষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করে দেন এবং সদকা বর্ধিত করেন।’ (সুরা বাকারা: ২৭৬)
জাকাত না দেওয়া
সম্পদের পরিশুদ্ধি লাভের মৌলিক ইসলামি বিধান জাকাত। এর মাধ্যমে ধনী-দরিদ্রের ভারসাম্য ঠিক রেখেছে ইসলাম। সঠিকভাবে জাকাত আদায় না করলে রিজিকের বরকত উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং এতে রিজিক সংকুচিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো জাতি জাকাত আদায় করা বন্ধ করে দেয়; আসমান থেকে তখন বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পৃথিবীর বুকে যদি চতুষ্পদ জন্তু জানোয়ার না থাকত, তাহলে আর কখনো বৃষ্টি হতো না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪০১৯)
হারাম উপার্জন
আল্লাহ তাআলা মানুষকে রিজিক হিসেবে হালাল ও উত্তম জিনিস দেন এবং হারাম থেকে বেঁচে থাকার কথা বলেন। কেননা, হারাম উপার্জনের কারণে রিজিকের বরকত কমে আসে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মানবজাতি, তোমরা পৃথিবী থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করো।’ (সুরা বাকারা: ১৬৮)
তার এই নির্দেশ অমান্য করে হারাম পথে উপার্জন করলে রিজিকে বরকত কমে যায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হালাল ও বৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন করে, তাকে বরকত দান করা হয়। আর যে ব্যক্তি হারাম ও অবৈধ পন্থায় সম্পদ অর্জন করে—সে এমন ব্যক্তির মতো, যে আহার করেও তৃপ্ত হয় না। সে যতই ভক্ষণ করুক তার ক্ষুধা নিবারণ হয় না।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১০৫২)
লেখক: শিক্ষক, বাইতুল আকরাম মসজিদ ও মাদরাসা কমপ্লেক্স টঙ্গী, গাজীপুর
মানুষের রিজিক নির্ধারিত। সৃষ্টির বহু আগ থেকেই তা লিপিবদ্ধ। কিছু আমলের মাধ্যমে এটি বাড়ানো সম্ভব, আবার কিছু কাজের কারণে তা ক্ষতিগ্রস্তও হয়—কমে যায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বলো, নিশ্চয় আমার রব যাকে ইচ্ছা তার রিজিক সম্প্রসারিত করে দেন, আর যাকে ইচ্ছা তার রিজিক সংকুচিত করে দেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।’ (সুরা সাবা: ৩৬)
পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে জানা যায়—বেশ কিছু কাজে মানুষের রিজিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রিজিকের বরকত কমে যায়। কাজগুলো হলো—
১. পাপাচার
২. অকৃতজ্ঞতা
৩. মিথ্যা কসম ও ধোঁকা
৪. সুদি কারবার
৫. জাকাত না দেওয়া
৬. হারাম উপার্জন
পাপাচার
যেসব কাজে মানুষের রিজিক সংকুচিত হয়; তার অন্যতম হলো গুনাহ বা পাপাচার। হজরত সাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সৎকর্ম মানুষের আয়ুষ্কাল বাড়ায় এবং দোয়া মানুষের তকদির পরিবর্তন করে। আর পাপ কাজের কারণে মানুষ তার প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪০২২)
অকৃতজ্ঞতা
নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নেয়ামত ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানবজীবন, কমে যায় রিজিক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে মনে রেখো, আমার শাস্তি বড়ই কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
মিথ্যা কসম ও ধোঁকা
মিথ্যা কসম এবং ধোঁকা এ দুটো আয়-উপার্জনের বরকত নষ্ট করে ফেলে। আর বরকত চলে যাওয়া মানেই রিজিকে সংকীর্ণতা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বেচাকেনা করার সময় তোমরা অধিক কসম করা থেকে সাবধান থাকবে। কারণ, মিথ্যা কসম করলে বিক্রি বেশি হবে, কিন্তু বরকত হবে না।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৬০৭)
তিনি আরও বলেছেন, ‘ক্রেতা ও বিক্রেতা চুক্তির মজলিশ থেকে বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করা কিংবা বাতিল করার সুযোগ রয়েছে। যদি তারা সত্য বলে এবং পণ্যের প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ করে, তাহলে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে। আর যদি মিথ্যা বলে এবং পণ্যের দোষ গোপন করে, তাহলে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত ধ্বংস হয়ে যাবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ২০৭৯)
সুদি কারবার
আপাতদৃষ্টে মনে হয় সুদের কারবারের দ্বারা ব্যবসায় উন্নতি হচ্ছে। বস্তুত এতে ব্যবসার বরকত নষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করে দেন এবং সদকা বর্ধিত করেন।’ (সুরা বাকারা: ২৭৬)
জাকাত না দেওয়া
সম্পদের পরিশুদ্ধি লাভের মৌলিক ইসলামি বিধান জাকাত। এর মাধ্যমে ধনী-দরিদ্রের ভারসাম্য ঠিক রেখেছে ইসলাম। সঠিকভাবে জাকাত আদায় না করলে রিজিকের বরকত উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং এতে রিজিক সংকুচিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো জাতি জাকাত আদায় করা বন্ধ করে দেয়; আসমান থেকে তখন বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পৃথিবীর বুকে যদি চতুষ্পদ জন্তু জানোয়ার না থাকত, তাহলে আর কখনো বৃষ্টি হতো না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪০১৯)
হারাম উপার্জন
আল্লাহ তাআলা মানুষকে রিজিক হিসেবে হালাল ও উত্তম জিনিস দেন এবং হারাম থেকে বেঁচে থাকার কথা বলেন। কেননা, হারাম উপার্জনের কারণে রিজিকের বরকত কমে আসে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মানবজাতি, তোমরা পৃথিবী থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করো।’ (সুরা বাকারা: ১৬৮)
তার এই নির্দেশ অমান্য করে হারাম পথে উপার্জন করলে রিজিকে বরকত কমে যায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হালাল ও বৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন করে, তাকে বরকত দান করা হয়। আর যে ব্যক্তি হারাম ও অবৈধ পন্থায় সম্পদ অর্জন করে—সে এমন ব্যক্তির মতো, যে আহার করেও তৃপ্ত হয় না। সে যতই ভক্ষণ করুক তার ক্ষুধা নিবারণ হয় না।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১০৫২)
লেখক: শিক্ষক, বাইতুল আকরাম মসজিদ ও মাদরাসা কমপ্লেক্স টঙ্গী, গাজীপুর
হজ আল্লাহর প্রতি বান্দার অকৃত্রিম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই হজ করলে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতোই নিষ্পাপ হওয়া যায়। (সহিহ্ বুখারি: ১৫২১)। আর কবুল হজের প্রতিদান একমাত্র জান্নাত। (সহিহ্ বুখারি: ১৬৫৮)
৮ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের নানা প্রান্তে এখনো অনেক প্রাচীন স্থাপনা সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে—সেসবের মধ্যে মসজিদের সংখ্যাই বেশি। দুর্ভাগ্য এবং হতাশার কথা হলো, সেসব মসজিদের ইতিহাস আমরা অধিকাংশই জানি না। জানার মতো তেমন আর্কাইভ কিংবা তথ্যসমৃদ্ধ পুস্তকাদিও দুর্লভ।
১২ ঘণ্টা আগেআমাদের সমাজে অনেকেই বছরের নানা সময়ে নফল রোজা রেখে থাকেন। কিন্তু ইসলামের বিধান অনুযায়ী—বছরের বেশ কিছু দিন রয়েছে, যে দিনগুলোতে রোজা রাখা যায় না। যেমন, ঈদুল আজহা কিংবা ঈদুল ফিতর রোজা রাখা নিষিদ্ধ।
১ দিন আগেমহানবী (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করা এবং সরাসরি তাঁকে সালাম জানানো নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। তবে এর জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু শিষ্টাচার ও আদব। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
১ দিন আগে