ইজাজুল হক, ঢাকা

পবিত্র কোরআনের সুরা ইউসুফে আল্লাহ তাআলা নবী ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের রোমাঞ্চকর গল্প তুলে ধরেছেন। এই গল্পের অনেক চমৎকার ও উল্লেখযোগ্য দিকের একটি হলো—কঠিন দুর্ভিক্ষের আগমুহূর্তে তিনি মিসরের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সফলভাবে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন। সুরা ইউসুফের আলোকে এ ঘটনার প্রেক্ষাপট এবং দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ইউসুফ (আ.)-এর পদক্ষেপগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
মিসরের বাদশাহর অদ্ভুত স্বপ্ন
হজরত ইউসুফ (আ.) তখন জুলেখার মিথ্যা অভিযোগে মিসরের কারাগারে বন্দী। একদিন মিসরের বাদশাহ এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন। রাজ্যের সভাসদগণকে ডেকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা চেয়ে বললেন, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম, সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভি সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভিকে খেয়ে ফেলছে, (আর দেখলাম) সাতটি সবুজ সতেজ শিষ আর অন্য সাতটি শুকনো। হে সভাসদগণ, আমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দাও, যদি তোমরা ব্যাখ্যা করতে পারো।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৩)
সভাসদগণ বললেন, ‘নিতান্ত কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন। আর আমরা এ ধরনের স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে অভ্যস্ত নই।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৪)
ইউসুফ (আ.)-এর খোঁজ মিলল যেভাবে
কারাগারে একই সেলে ইউসুফ (আ.)-এর দুই সঙ্গী ছিলেন। স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি তাঁদের আস্থা অর্জন করেছিলেন। ইউসুফ (আ.)-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী তাঁদের একজন মৃত্যুদণ্ড পান, অন্যজন জেল থেকে মুক্তি পান এবং বাদশাহর সেবক পদে নিয়োগ পান। দ্বিতীয়জনকে জেল থেকে বের হওয়ার আগে ইউসুফ (আ.) বলেছিলেন, ‘তোমার মনিবের কাছে আমার কথা বলিও।’ (সুরা ইউসুফ: ৪২) মুক্ত হওয়ার পর তিনি সে কথা ভুলে যান। বাদশাহর এই অদ্ভুত স্বপ্নের ব্যাখ্যা চাওয়ার সময়ও ইউসুফ (আ.)-এর কথা মনে পড়েনি তাঁর।
অনেক দিন পর বাদশাহর সেই সেবকের ইউসুফ (আ.)-এর কথা মনে পড়ে এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেওয়ায় তাঁর পারদর্শিতার কথাও মনে পড়ে। তখন তিনি বাদশাহর কাছে স্বপ্নের ব্যাখ্যা এনে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কারাগারের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি চান এবং বলেন, ‘আমি আপনাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দেব, তবে আমাকে কারাগারের ভেতরে পাঠান।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৫)
ইউসুফ (আ.)-এর চমৎকার ব্যাখ্যা
বাদশাহ সেবককে কারাগারের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দিলেন। সেবক গিয়ে ইউসুফ (আ.)-এর কাছে বাদশাহের স্বপ্নের ঘটনা খুলে বললেন এবং ব্যাখ্যা চাইলেন। ইউসুফ (আ.) স্বপ্নের এক চমৎকার ব্যাখ্যা দিলেন। সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভি ও সাতটি সতেজ শিষের ব্যাখ্যা ও করণীয় সম্পর্কে বললেন, ‘তোমরা সাত বছর একাধারে চাষ করবে। এরপর যখন তোমরা ফসল কাটবে, তখন অল্প যা খাবে, বাকি শস্য শিষসমেত সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
এরপর সেই গাভিগুলোকে সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভির খেয়ে ফেলা এবং সাতটি শুকনো শিষের ব্যাখ্যা ও করণীয় সম্পর্কে বললেন, ‘এরপর সাতটি কঠিন বছর আসবে। এ সময়ের জন্য আগে তোমরা যা সঞ্চয় করেছিলে, তা লোকে খাবে। এরপর একটি বছর আসবে, যখন মানুষের কল্যাণে প্রচুর বৃষ্টি হবে এবং মানুষ যথেষ্ট ভোগ-বিলাস করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮-৪৯)
বাদশাহর বিশ্বস্ততা অর্জন
ইউসুফ (আ.)-এর ব্যাখ্যা বাদশাহর পছন্দ হলো। তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো।’ দূত কারাগারে এসে ইউসুফ (আ.)কে সুখবর দিলেন। ইউসুফ (আ.) বললেন, ‘বাদশাহর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করো, যেসব নারী হাত কেটে ফেলেছিল এবং যে মিথ্যা অভিযোগে আমি বন্দী আছি, তা সমাধান না হলে আমি যাব না।’ বাদশাহ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিলেন এবং অভিযোগকারী জুলেখা অপরাধ স্বীকার করে নেন। ফলে ইউসুফ (আ.) নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্ত হলেন। (সুরা ইউসুফের ৫০ থেকে ৫৩ নম্বর আয়াতের সারমর্ম)
এরপর বাদশাহ বললেন, ‘তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো, আমি তাঁকে আমার দরবারে বিশেষভাবে সম্মানিত করব।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৪)
ইউসুফ (আ.) বাদশাহর সঙ্গে বৈঠক করলেন। বাদশাহ তাঁর কথায় দারুণভাবে প্রভাবিত হলেন এবং তাঁকে উপদেষ্টা নিয়োগ দিলেন। বাদশাহ বললেন, ‘আজ আপনি আমাদের কাছে খুবই মর্যাদাশীল ও বিশ্বস্ত হিসেবে পরিগণিত।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৪)
স্বেচ্ছায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ
ইউসুফ (আ.) জানতেন, আসন্ন দুর্ভিক্ষের সময় জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই অদক্ষ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরাতে হবে। যোগ্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। ফলে আল্লাহর আদেশে তিনি বাদশাহর কাছে অর্থ, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদের আবেদন করে বলেন, ‘আপনি আমাকে দেশের ধনভান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত করুন। আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও বিজ্ঞ।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৫)
আসন্ন বিপদ থেকে জনগণকে রক্ষা করতে বাদশাহর কাছেও ইউসুফ (আ.)-এর বিকল্প ছিল না। কারণ তিনি ছিলেন আল্লাহর নবী ও বিশ্বস্ততম ব্যক্তি। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, জাতীয় সংকটকালে গণমানুষের স্বার্থে যোগ্যদের নেতৃত্বের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা দোষের নয়।
সর্বোচ্চ উৎপাদন ও দীর্ঘমেয়াদি মজুত
দায়িত্ব নিয়েই ইউসুফ (আ.) সর্বোচ্চ খাদ্য উৎপাদনে মনোনিবেশ করেন এবং আসন্ন দুর্ভিক্ষের জন্য খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রকল্প হাতে নেন। যেমনটি তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যার সময় বলেছিলেন, ‘তোমরা সাত বছর একাধারে চাষ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
এরপর শস্য মজুত করেন এবং দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন। ইউসুফ (আ.)-এর ভাষায়, ‘এরপর যখন তোমরা ফসল কাটবে, তখন তোমরা অল্প খাবে, বাকি শস্য শিষসমেত সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
অপচয় রোধ এবং সুষম বণ্টন
দায়িত্ব নিয়ে ইউসুফ (আ.) রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়-অপব্যয় বন্ধ করেন এবং শস্যের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করেন। যেমন—কোরআনের আয়াতে ‘তোমরা অল্প যা খাবে, বাকি শস্য মজুত করবে’ বলার মাধ্যমে ইউসুফ (আ.) ভোক্তাদের মধ্যে অপচয়-অপব্যয় কমিয়ে আনার কথা আগেই বলেছেন। উৎপাদন থেকে কম খরচ করে বিপদের সময়ের জন্য সঞ্চয় করতে বলেছেন।
ইউসুফ (আ.)-এর সতর্কতা জারির কারণে মিসরের মানুষ দুর্ভিক্ষের জন্য ফসল সঞ্চয় করে রাখে এবং দুর্ভিক্ষের সময় নিজেদের সঞ্চিত ফসল ভোগ করতে থাকে। যেমন—পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘এরপর সাতটি কঠিন বছর আসবে। এই সময়ের জন্য আগে তোমরা যা সঞ্চয় করেছিলে, তা লোকে খাবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮)
ফলে রাজভান্ডারে সঞ্চিত ফসলগুলো পরিকল্পিতভাবে অভাবীদের মধ্যে বণ্টিত হতে থাকে। এ কারণে মিসরের মানুষের তেমন কোনো দুর্ভোগ ও অভাব ছিল না। বরং পাশের ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য অঞ্চলের মানুষও মিসর থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা খাবার সংগ্রহ করতেই মিসরে এসেছিলেন।
নিজেই শস্য বণ্টন করতেন ইউসুফ (আ.)
ঐতিহাসিকদের মতে, দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ইউসুফ (আ.)-ই প্রথম রেশন কার্ড চালু করেন। ইউসুফ (আ.) নিজেই দুর্ভিক্ষকালীন কর্মকাণ্ডগুলো সরাসরি তদারক করতেন। সুরা ইউসুফের পরের আয়াতগুলোতে দেখা যায়, ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা শস্য সংগ্রহে মিসরে এলে তিনিই সরাসরি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করেন এবং বাবা-মায়ের খোঁজখবরও নেন। আবার তাঁদের আসতে বলেন এবং সহোদর বিনইয়ামিনকেও নিয়ে আসতে বলেন। পরেরবার বিনইয়ামিনকে নিয়ে এলে তাঁকে কৌশলে রেখে দেন ইউসুফ (আ.)।
এসব ঘটনা থেকে এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ইউসুফ (আ.) নিজেই শস্য বণ্টনের কাজ তদারক করতেন এবং সবার আসা-যাওয়া পর্যবেক্ষণ করতেন। ফলে কারও অন্যায় সুবিধা নেওয়ার এবং দুর্নীতি করার সুযোগ সেখানে ছিল না।
দুর্ভিক্ষের পরের জন্য পরিকল্পনা
দুর্ভিক্ষের পরের সময়ের জন্য যথেষ্ট বীজও সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন ইউসুফ (আ.)। স্বপ্নের ব্যাখ্যা থেকেই বিষয়টি বোঝা যায়। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তবে সেই অল্পটুকু বাদে, যা তোমরা (বীজ হিসেবে) সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮)
ফলে দেখা গেছে, দুর্ভিক্ষের পর এতই ভালো ফলন হলো যে মানুষ খুব সুখে জীবনযাপন করতে লাগল। কোরআনের ভাষায়—‘এরপর একটি বছর আসবে, যখন মানুষের কল্যাণে প্রচুর বৃষ্টি হবে এবং মানুষ যথেষ্ট ভোগবিলাস করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৯)
সুরা ইউসুফকে আল্লাহ তাআলা ‘আহসানুল কাসাস’ বা ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ আখ্যা দিয়েছেন। দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার পাশাপাশি এই গল্পের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য এ সুরায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ। আল্লাহ তাআলা আমাদের বোঝার ও অনুধাবন করার তৌফিক দিন।

পবিত্র কোরআনের সুরা ইউসুফে আল্লাহ তাআলা নবী ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের রোমাঞ্চকর গল্প তুলে ধরেছেন। এই গল্পের অনেক চমৎকার ও উল্লেখযোগ্য দিকের একটি হলো—কঠিন দুর্ভিক্ষের আগমুহূর্তে তিনি মিসরের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সফলভাবে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন। সুরা ইউসুফের আলোকে এ ঘটনার প্রেক্ষাপট এবং দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ইউসুফ (আ.)-এর পদক্ষেপগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
মিসরের বাদশাহর অদ্ভুত স্বপ্ন
হজরত ইউসুফ (আ.) তখন জুলেখার মিথ্যা অভিযোগে মিসরের কারাগারে বন্দী। একদিন মিসরের বাদশাহ এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন। রাজ্যের সভাসদগণকে ডেকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা চেয়ে বললেন, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম, সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভি সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভিকে খেয়ে ফেলছে, (আর দেখলাম) সাতটি সবুজ সতেজ শিষ আর অন্য সাতটি শুকনো। হে সভাসদগণ, আমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দাও, যদি তোমরা ব্যাখ্যা করতে পারো।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৩)
সভাসদগণ বললেন, ‘নিতান্ত কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন। আর আমরা এ ধরনের স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে অভ্যস্ত নই।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৪)
ইউসুফ (আ.)-এর খোঁজ মিলল যেভাবে
কারাগারে একই সেলে ইউসুফ (আ.)-এর দুই সঙ্গী ছিলেন। স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি তাঁদের আস্থা অর্জন করেছিলেন। ইউসুফ (আ.)-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী তাঁদের একজন মৃত্যুদণ্ড পান, অন্যজন জেল থেকে মুক্তি পান এবং বাদশাহর সেবক পদে নিয়োগ পান। দ্বিতীয়জনকে জেল থেকে বের হওয়ার আগে ইউসুফ (আ.) বলেছিলেন, ‘তোমার মনিবের কাছে আমার কথা বলিও।’ (সুরা ইউসুফ: ৪২) মুক্ত হওয়ার পর তিনি সে কথা ভুলে যান। বাদশাহর এই অদ্ভুত স্বপ্নের ব্যাখ্যা চাওয়ার সময়ও ইউসুফ (আ.)-এর কথা মনে পড়েনি তাঁর।
অনেক দিন পর বাদশাহর সেই সেবকের ইউসুফ (আ.)-এর কথা মনে পড়ে এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেওয়ায় তাঁর পারদর্শিতার কথাও মনে পড়ে। তখন তিনি বাদশাহর কাছে স্বপ্নের ব্যাখ্যা এনে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কারাগারের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি চান এবং বলেন, ‘আমি আপনাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দেব, তবে আমাকে কারাগারের ভেতরে পাঠান।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৫)
ইউসুফ (আ.)-এর চমৎকার ব্যাখ্যা
বাদশাহ সেবককে কারাগারের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দিলেন। সেবক গিয়ে ইউসুফ (আ.)-এর কাছে বাদশাহের স্বপ্নের ঘটনা খুলে বললেন এবং ব্যাখ্যা চাইলেন। ইউসুফ (আ.) স্বপ্নের এক চমৎকার ব্যাখ্যা দিলেন। সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভি ও সাতটি সতেজ শিষের ব্যাখ্যা ও করণীয় সম্পর্কে বললেন, ‘তোমরা সাত বছর একাধারে চাষ করবে। এরপর যখন তোমরা ফসল কাটবে, তখন অল্প যা খাবে, বাকি শস্য শিষসমেত সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
এরপর সেই গাভিগুলোকে সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভির খেয়ে ফেলা এবং সাতটি শুকনো শিষের ব্যাখ্যা ও করণীয় সম্পর্কে বললেন, ‘এরপর সাতটি কঠিন বছর আসবে। এ সময়ের জন্য আগে তোমরা যা সঞ্চয় করেছিলে, তা লোকে খাবে। এরপর একটি বছর আসবে, যখন মানুষের কল্যাণে প্রচুর বৃষ্টি হবে এবং মানুষ যথেষ্ট ভোগ-বিলাস করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮-৪৯)
বাদশাহর বিশ্বস্ততা অর্জন
ইউসুফ (আ.)-এর ব্যাখ্যা বাদশাহর পছন্দ হলো। তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো।’ দূত কারাগারে এসে ইউসুফ (আ.)কে সুখবর দিলেন। ইউসুফ (আ.) বললেন, ‘বাদশাহর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করো, যেসব নারী হাত কেটে ফেলেছিল এবং যে মিথ্যা অভিযোগে আমি বন্দী আছি, তা সমাধান না হলে আমি যাব না।’ বাদশাহ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিলেন এবং অভিযোগকারী জুলেখা অপরাধ স্বীকার করে নেন। ফলে ইউসুফ (আ.) নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্ত হলেন। (সুরা ইউসুফের ৫০ থেকে ৫৩ নম্বর আয়াতের সারমর্ম)
এরপর বাদশাহ বললেন, ‘তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো, আমি তাঁকে আমার দরবারে বিশেষভাবে সম্মানিত করব।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৪)
ইউসুফ (আ.) বাদশাহর সঙ্গে বৈঠক করলেন। বাদশাহ তাঁর কথায় দারুণভাবে প্রভাবিত হলেন এবং তাঁকে উপদেষ্টা নিয়োগ দিলেন। বাদশাহ বললেন, ‘আজ আপনি আমাদের কাছে খুবই মর্যাদাশীল ও বিশ্বস্ত হিসেবে পরিগণিত।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৪)
স্বেচ্ছায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ
ইউসুফ (আ.) জানতেন, আসন্ন দুর্ভিক্ষের সময় জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই অদক্ষ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরাতে হবে। যোগ্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। ফলে আল্লাহর আদেশে তিনি বাদশাহর কাছে অর্থ, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদের আবেদন করে বলেন, ‘আপনি আমাকে দেশের ধনভান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত করুন। আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও বিজ্ঞ।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৫)
আসন্ন বিপদ থেকে জনগণকে রক্ষা করতে বাদশাহর কাছেও ইউসুফ (আ.)-এর বিকল্প ছিল না। কারণ তিনি ছিলেন আল্লাহর নবী ও বিশ্বস্ততম ব্যক্তি। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, জাতীয় সংকটকালে গণমানুষের স্বার্থে যোগ্যদের নেতৃত্বের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা দোষের নয়।
সর্বোচ্চ উৎপাদন ও দীর্ঘমেয়াদি মজুত
দায়িত্ব নিয়েই ইউসুফ (আ.) সর্বোচ্চ খাদ্য উৎপাদনে মনোনিবেশ করেন এবং আসন্ন দুর্ভিক্ষের জন্য খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রকল্প হাতে নেন। যেমনটি তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যার সময় বলেছিলেন, ‘তোমরা সাত বছর একাধারে চাষ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
এরপর শস্য মজুত করেন এবং দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন। ইউসুফ (আ.)-এর ভাষায়, ‘এরপর যখন তোমরা ফসল কাটবে, তখন তোমরা অল্প খাবে, বাকি শস্য শিষসমেত সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
অপচয় রোধ এবং সুষম বণ্টন
দায়িত্ব নিয়ে ইউসুফ (আ.) রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়-অপব্যয় বন্ধ করেন এবং শস্যের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করেন। যেমন—কোরআনের আয়াতে ‘তোমরা অল্প যা খাবে, বাকি শস্য মজুত করবে’ বলার মাধ্যমে ইউসুফ (আ.) ভোক্তাদের মধ্যে অপচয়-অপব্যয় কমিয়ে আনার কথা আগেই বলেছেন। উৎপাদন থেকে কম খরচ করে বিপদের সময়ের জন্য সঞ্চয় করতে বলেছেন।
ইউসুফ (আ.)-এর সতর্কতা জারির কারণে মিসরের মানুষ দুর্ভিক্ষের জন্য ফসল সঞ্চয় করে রাখে এবং দুর্ভিক্ষের সময় নিজেদের সঞ্চিত ফসল ভোগ করতে থাকে। যেমন—পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘এরপর সাতটি কঠিন বছর আসবে। এই সময়ের জন্য আগে তোমরা যা সঞ্চয় করেছিলে, তা লোকে খাবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮)
ফলে রাজভান্ডারে সঞ্চিত ফসলগুলো পরিকল্পিতভাবে অভাবীদের মধ্যে বণ্টিত হতে থাকে। এ কারণে মিসরের মানুষের তেমন কোনো দুর্ভোগ ও অভাব ছিল না। বরং পাশের ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য অঞ্চলের মানুষও মিসর থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা খাবার সংগ্রহ করতেই মিসরে এসেছিলেন।
নিজেই শস্য বণ্টন করতেন ইউসুফ (আ.)
ঐতিহাসিকদের মতে, দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ইউসুফ (আ.)-ই প্রথম রেশন কার্ড চালু করেন। ইউসুফ (আ.) নিজেই দুর্ভিক্ষকালীন কর্মকাণ্ডগুলো সরাসরি তদারক করতেন। সুরা ইউসুফের পরের আয়াতগুলোতে দেখা যায়, ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা শস্য সংগ্রহে মিসরে এলে তিনিই সরাসরি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করেন এবং বাবা-মায়ের খোঁজখবরও নেন। আবার তাঁদের আসতে বলেন এবং সহোদর বিনইয়ামিনকেও নিয়ে আসতে বলেন। পরেরবার বিনইয়ামিনকে নিয়ে এলে তাঁকে কৌশলে রেখে দেন ইউসুফ (আ.)।
এসব ঘটনা থেকে এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ইউসুফ (আ.) নিজেই শস্য বণ্টনের কাজ তদারক করতেন এবং সবার আসা-যাওয়া পর্যবেক্ষণ করতেন। ফলে কারও অন্যায় সুবিধা নেওয়ার এবং দুর্নীতি করার সুযোগ সেখানে ছিল না।
দুর্ভিক্ষের পরের জন্য পরিকল্পনা
দুর্ভিক্ষের পরের সময়ের জন্য যথেষ্ট বীজও সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন ইউসুফ (আ.)। স্বপ্নের ব্যাখ্যা থেকেই বিষয়টি বোঝা যায়। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তবে সেই অল্পটুকু বাদে, যা তোমরা (বীজ হিসেবে) সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮)
ফলে দেখা গেছে, দুর্ভিক্ষের পর এতই ভালো ফলন হলো যে মানুষ খুব সুখে জীবনযাপন করতে লাগল। কোরআনের ভাষায়—‘এরপর একটি বছর আসবে, যখন মানুষের কল্যাণে প্রচুর বৃষ্টি হবে এবং মানুষ যথেষ্ট ভোগবিলাস করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৯)
সুরা ইউসুফকে আল্লাহ তাআলা ‘আহসানুল কাসাস’ বা ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ আখ্যা দিয়েছেন। দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার পাশাপাশি এই গল্পের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য এ সুরায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ। আল্লাহ তাআলা আমাদের বোঝার ও অনুধাবন করার তৌফিক দিন।
ইজাজুল হক, ঢাকা

পবিত্র কোরআনের সুরা ইউসুফে আল্লাহ তাআলা নবী ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের রোমাঞ্চকর গল্প তুলে ধরেছেন। এই গল্পের অনেক চমৎকার ও উল্লেখযোগ্য দিকের একটি হলো—কঠিন দুর্ভিক্ষের আগমুহূর্তে তিনি মিসরের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সফলভাবে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন। সুরা ইউসুফের আলোকে এ ঘটনার প্রেক্ষাপট এবং দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ইউসুফ (আ.)-এর পদক্ষেপগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
মিসরের বাদশাহর অদ্ভুত স্বপ্ন
হজরত ইউসুফ (আ.) তখন জুলেখার মিথ্যা অভিযোগে মিসরের কারাগারে বন্দী। একদিন মিসরের বাদশাহ এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন। রাজ্যের সভাসদগণকে ডেকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা চেয়ে বললেন, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম, সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভি সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভিকে খেয়ে ফেলছে, (আর দেখলাম) সাতটি সবুজ সতেজ শিষ আর অন্য সাতটি শুকনো। হে সভাসদগণ, আমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দাও, যদি তোমরা ব্যাখ্যা করতে পারো।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৩)
সভাসদগণ বললেন, ‘নিতান্ত কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন। আর আমরা এ ধরনের স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে অভ্যস্ত নই।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৪)
ইউসুফ (আ.)-এর খোঁজ মিলল যেভাবে
কারাগারে একই সেলে ইউসুফ (আ.)-এর দুই সঙ্গী ছিলেন। স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি তাঁদের আস্থা অর্জন করেছিলেন। ইউসুফ (আ.)-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী তাঁদের একজন মৃত্যুদণ্ড পান, অন্যজন জেল থেকে মুক্তি পান এবং বাদশাহর সেবক পদে নিয়োগ পান। দ্বিতীয়জনকে জেল থেকে বের হওয়ার আগে ইউসুফ (আ.) বলেছিলেন, ‘তোমার মনিবের কাছে আমার কথা বলিও।’ (সুরা ইউসুফ: ৪২) মুক্ত হওয়ার পর তিনি সে কথা ভুলে যান। বাদশাহর এই অদ্ভুত স্বপ্নের ব্যাখ্যা চাওয়ার সময়ও ইউসুফ (আ.)-এর কথা মনে পড়েনি তাঁর।
অনেক দিন পর বাদশাহর সেই সেবকের ইউসুফ (আ.)-এর কথা মনে পড়ে এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেওয়ায় তাঁর পারদর্শিতার কথাও মনে পড়ে। তখন তিনি বাদশাহর কাছে স্বপ্নের ব্যাখ্যা এনে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কারাগারের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি চান এবং বলেন, ‘আমি আপনাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দেব, তবে আমাকে কারাগারের ভেতরে পাঠান।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৫)
ইউসুফ (আ.)-এর চমৎকার ব্যাখ্যা
বাদশাহ সেবককে কারাগারের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দিলেন। সেবক গিয়ে ইউসুফ (আ.)-এর কাছে বাদশাহের স্বপ্নের ঘটনা খুলে বললেন এবং ব্যাখ্যা চাইলেন। ইউসুফ (আ.) স্বপ্নের এক চমৎকার ব্যাখ্যা দিলেন। সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভি ও সাতটি সতেজ শিষের ব্যাখ্যা ও করণীয় সম্পর্কে বললেন, ‘তোমরা সাত বছর একাধারে চাষ করবে। এরপর যখন তোমরা ফসল কাটবে, তখন অল্প যা খাবে, বাকি শস্য শিষসমেত সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
এরপর সেই গাভিগুলোকে সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভির খেয়ে ফেলা এবং সাতটি শুকনো শিষের ব্যাখ্যা ও করণীয় সম্পর্কে বললেন, ‘এরপর সাতটি কঠিন বছর আসবে। এ সময়ের জন্য আগে তোমরা যা সঞ্চয় করেছিলে, তা লোকে খাবে। এরপর একটি বছর আসবে, যখন মানুষের কল্যাণে প্রচুর বৃষ্টি হবে এবং মানুষ যথেষ্ট ভোগ-বিলাস করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮-৪৯)
বাদশাহর বিশ্বস্ততা অর্জন
ইউসুফ (আ.)-এর ব্যাখ্যা বাদশাহর পছন্দ হলো। তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো।’ দূত কারাগারে এসে ইউসুফ (আ.)কে সুখবর দিলেন। ইউসুফ (আ.) বললেন, ‘বাদশাহর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করো, যেসব নারী হাত কেটে ফেলেছিল এবং যে মিথ্যা অভিযোগে আমি বন্দী আছি, তা সমাধান না হলে আমি যাব না।’ বাদশাহ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিলেন এবং অভিযোগকারী জুলেখা অপরাধ স্বীকার করে নেন। ফলে ইউসুফ (আ.) নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্ত হলেন। (সুরা ইউসুফের ৫০ থেকে ৫৩ নম্বর আয়াতের সারমর্ম)
এরপর বাদশাহ বললেন, ‘তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো, আমি তাঁকে আমার দরবারে বিশেষভাবে সম্মানিত করব।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৪)
ইউসুফ (আ.) বাদশাহর সঙ্গে বৈঠক করলেন। বাদশাহ তাঁর কথায় দারুণভাবে প্রভাবিত হলেন এবং তাঁকে উপদেষ্টা নিয়োগ দিলেন। বাদশাহ বললেন, ‘আজ আপনি আমাদের কাছে খুবই মর্যাদাশীল ও বিশ্বস্ত হিসেবে পরিগণিত।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৪)
স্বেচ্ছায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ
ইউসুফ (আ.) জানতেন, আসন্ন দুর্ভিক্ষের সময় জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই অদক্ষ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরাতে হবে। যোগ্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। ফলে আল্লাহর আদেশে তিনি বাদশাহর কাছে অর্থ, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদের আবেদন করে বলেন, ‘আপনি আমাকে দেশের ধনভান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত করুন। আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও বিজ্ঞ।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৫)
আসন্ন বিপদ থেকে জনগণকে রক্ষা করতে বাদশাহর কাছেও ইউসুফ (আ.)-এর বিকল্প ছিল না। কারণ তিনি ছিলেন আল্লাহর নবী ও বিশ্বস্ততম ব্যক্তি। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, জাতীয় সংকটকালে গণমানুষের স্বার্থে যোগ্যদের নেতৃত্বের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা দোষের নয়।
সর্বোচ্চ উৎপাদন ও দীর্ঘমেয়াদি মজুত
দায়িত্ব নিয়েই ইউসুফ (আ.) সর্বোচ্চ খাদ্য উৎপাদনে মনোনিবেশ করেন এবং আসন্ন দুর্ভিক্ষের জন্য খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রকল্প হাতে নেন। যেমনটি তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যার সময় বলেছিলেন, ‘তোমরা সাত বছর একাধারে চাষ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
এরপর শস্য মজুত করেন এবং দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন। ইউসুফ (আ.)-এর ভাষায়, ‘এরপর যখন তোমরা ফসল কাটবে, তখন তোমরা অল্প খাবে, বাকি শস্য শিষসমেত সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
অপচয় রোধ এবং সুষম বণ্টন
দায়িত্ব নিয়ে ইউসুফ (আ.) রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়-অপব্যয় বন্ধ করেন এবং শস্যের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করেন। যেমন—কোরআনের আয়াতে ‘তোমরা অল্প যা খাবে, বাকি শস্য মজুত করবে’ বলার মাধ্যমে ইউসুফ (আ.) ভোক্তাদের মধ্যে অপচয়-অপব্যয় কমিয়ে আনার কথা আগেই বলেছেন। উৎপাদন থেকে কম খরচ করে বিপদের সময়ের জন্য সঞ্চয় করতে বলেছেন।
ইউসুফ (আ.)-এর সতর্কতা জারির কারণে মিসরের মানুষ দুর্ভিক্ষের জন্য ফসল সঞ্চয় করে রাখে এবং দুর্ভিক্ষের সময় নিজেদের সঞ্চিত ফসল ভোগ করতে থাকে। যেমন—পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘এরপর সাতটি কঠিন বছর আসবে। এই সময়ের জন্য আগে তোমরা যা সঞ্চয় করেছিলে, তা লোকে খাবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮)
ফলে রাজভান্ডারে সঞ্চিত ফসলগুলো পরিকল্পিতভাবে অভাবীদের মধ্যে বণ্টিত হতে থাকে। এ কারণে মিসরের মানুষের তেমন কোনো দুর্ভোগ ও অভাব ছিল না। বরং পাশের ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য অঞ্চলের মানুষও মিসর থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা খাবার সংগ্রহ করতেই মিসরে এসেছিলেন।
নিজেই শস্য বণ্টন করতেন ইউসুফ (আ.)
ঐতিহাসিকদের মতে, দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ইউসুফ (আ.)-ই প্রথম রেশন কার্ড চালু করেন। ইউসুফ (আ.) নিজেই দুর্ভিক্ষকালীন কর্মকাণ্ডগুলো সরাসরি তদারক করতেন। সুরা ইউসুফের পরের আয়াতগুলোতে দেখা যায়, ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা শস্য সংগ্রহে মিসরে এলে তিনিই সরাসরি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করেন এবং বাবা-মায়ের খোঁজখবরও নেন। আবার তাঁদের আসতে বলেন এবং সহোদর বিনইয়ামিনকেও নিয়ে আসতে বলেন। পরেরবার বিনইয়ামিনকে নিয়ে এলে তাঁকে কৌশলে রেখে দেন ইউসুফ (আ.)।
এসব ঘটনা থেকে এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ইউসুফ (আ.) নিজেই শস্য বণ্টনের কাজ তদারক করতেন এবং সবার আসা-যাওয়া পর্যবেক্ষণ করতেন। ফলে কারও অন্যায় সুবিধা নেওয়ার এবং দুর্নীতি করার সুযোগ সেখানে ছিল না।
দুর্ভিক্ষের পরের জন্য পরিকল্পনা
দুর্ভিক্ষের পরের সময়ের জন্য যথেষ্ট বীজও সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন ইউসুফ (আ.)। স্বপ্নের ব্যাখ্যা থেকেই বিষয়টি বোঝা যায়। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তবে সেই অল্পটুকু বাদে, যা তোমরা (বীজ হিসেবে) সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮)
ফলে দেখা গেছে, দুর্ভিক্ষের পর এতই ভালো ফলন হলো যে মানুষ খুব সুখে জীবনযাপন করতে লাগল। কোরআনের ভাষায়—‘এরপর একটি বছর আসবে, যখন মানুষের কল্যাণে প্রচুর বৃষ্টি হবে এবং মানুষ যথেষ্ট ভোগবিলাস করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৯)
সুরা ইউসুফকে আল্লাহ তাআলা ‘আহসানুল কাসাস’ বা ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ আখ্যা দিয়েছেন। দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার পাশাপাশি এই গল্পের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য এ সুরায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ। আল্লাহ তাআলা আমাদের বোঝার ও অনুধাবন করার তৌফিক দিন।

পবিত্র কোরআনের সুরা ইউসুফে আল্লাহ তাআলা নবী ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের রোমাঞ্চকর গল্প তুলে ধরেছেন। এই গল্পের অনেক চমৎকার ও উল্লেখযোগ্য দিকের একটি হলো—কঠিন দুর্ভিক্ষের আগমুহূর্তে তিনি মিসরের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সফলভাবে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন। সুরা ইউসুফের আলোকে এ ঘটনার প্রেক্ষাপট এবং দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ইউসুফ (আ.)-এর পদক্ষেপগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
মিসরের বাদশাহর অদ্ভুত স্বপ্ন
হজরত ইউসুফ (আ.) তখন জুলেখার মিথ্যা অভিযোগে মিসরের কারাগারে বন্দী। একদিন মিসরের বাদশাহ এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন। রাজ্যের সভাসদগণকে ডেকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা চেয়ে বললেন, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম, সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভি সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভিকে খেয়ে ফেলছে, (আর দেখলাম) সাতটি সবুজ সতেজ শিষ আর অন্য সাতটি শুকনো। হে সভাসদগণ, আমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দাও, যদি তোমরা ব্যাখ্যা করতে পারো।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৩)
সভাসদগণ বললেন, ‘নিতান্ত কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন। আর আমরা এ ধরনের স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে অভ্যস্ত নই।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৪)
ইউসুফ (আ.)-এর খোঁজ মিলল যেভাবে
কারাগারে একই সেলে ইউসুফ (আ.)-এর দুই সঙ্গী ছিলেন। স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি তাঁদের আস্থা অর্জন করেছিলেন। ইউসুফ (আ.)-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী তাঁদের একজন মৃত্যুদণ্ড পান, অন্যজন জেল থেকে মুক্তি পান এবং বাদশাহর সেবক পদে নিয়োগ পান। দ্বিতীয়জনকে জেল থেকে বের হওয়ার আগে ইউসুফ (আ.) বলেছিলেন, ‘তোমার মনিবের কাছে আমার কথা বলিও।’ (সুরা ইউসুফ: ৪২) মুক্ত হওয়ার পর তিনি সে কথা ভুলে যান। বাদশাহর এই অদ্ভুত স্বপ্নের ব্যাখ্যা চাওয়ার সময়ও ইউসুফ (আ.)-এর কথা মনে পড়েনি তাঁর।
অনেক দিন পর বাদশাহর সেই সেবকের ইউসুফ (আ.)-এর কথা মনে পড়ে এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেওয়ায় তাঁর পারদর্শিতার কথাও মনে পড়ে। তখন তিনি বাদশাহর কাছে স্বপ্নের ব্যাখ্যা এনে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কারাগারের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি চান এবং বলেন, ‘আমি আপনাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দেব, তবে আমাকে কারাগারের ভেতরে পাঠান।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৫)
ইউসুফ (আ.)-এর চমৎকার ব্যাখ্যা
বাদশাহ সেবককে কারাগারের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দিলেন। সেবক গিয়ে ইউসুফ (আ.)-এর কাছে বাদশাহের স্বপ্নের ঘটনা খুলে বললেন এবং ব্যাখ্যা চাইলেন। ইউসুফ (আ.) স্বপ্নের এক চমৎকার ব্যাখ্যা দিলেন। সাতটি হৃষ্টপুষ্ট গাভি ও সাতটি সতেজ শিষের ব্যাখ্যা ও করণীয় সম্পর্কে বললেন, ‘তোমরা সাত বছর একাধারে চাষ করবে। এরপর যখন তোমরা ফসল কাটবে, তখন অল্প যা খাবে, বাকি শস্য শিষসমেত সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
এরপর সেই গাভিগুলোকে সাতটি জীর্ণশীর্ণ গাভির খেয়ে ফেলা এবং সাতটি শুকনো শিষের ব্যাখ্যা ও করণীয় সম্পর্কে বললেন, ‘এরপর সাতটি কঠিন বছর আসবে। এ সময়ের জন্য আগে তোমরা যা সঞ্চয় করেছিলে, তা লোকে খাবে। এরপর একটি বছর আসবে, যখন মানুষের কল্যাণে প্রচুর বৃষ্টি হবে এবং মানুষ যথেষ্ট ভোগ-বিলাস করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮-৪৯)
বাদশাহর বিশ্বস্ততা অর্জন
ইউসুফ (আ.)-এর ব্যাখ্যা বাদশাহর পছন্দ হলো। তিনি বললেন, ‘তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো।’ দূত কারাগারে এসে ইউসুফ (আ.)কে সুখবর দিলেন। ইউসুফ (আ.) বললেন, ‘বাদশাহর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করো, যেসব নারী হাত কেটে ফেলেছিল এবং যে মিথ্যা অভিযোগে আমি বন্দী আছি, তা সমাধান না হলে আমি যাব না।’ বাদশাহ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিলেন এবং অভিযোগকারী জুলেখা অপরাধ স্বীকার করে নেন। ফলে ইউসুফ (আ.) নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্ত হলেন। (সুরা ইউসুফের ৫০ থেকে ৫৩ নম্বর আয়াতের সারমর্ম)
এরপর বাদশাহ বললেন, ‘তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো, আমি তাঁকে আমার দরবারে বিশেষভাবে সম্মানিত করব।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৪)
ইউসুফ (আ.) বাদশাহর সঙ্গে বৈঠক করলেন। বাদশাহ তাঁর কথায় দারুণভাবে প্রভাবিত হলেন এবং তাঁকে উপদেষ্টা নিয়োগ দিলেন। বাদশাহ বললেন, ‘আজ আপনি আমাদের কাছে খুবই মর্যাদাশীল ও বিশ্বস্ত হিসেবে পরিগণিত।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৪)
স্বেচ্ছায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ
ইউসুফ (আ.) জানতেন, আসন্ন দুর্ভিক্ষের সময় জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই অদক্ষ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরাতে হবে। যোগ্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। ফলে আল্লাহর আদেশে তিনি বাদশাহর কাছে অর্থ, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদের আবেদন করে বলেন, ‘আপনি আমাকে দেশের ধনভান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত করুন। আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও বিজ্ঞ।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৫)
আসন্ন বিপদ থেকে জনগণকে রক্ষা করতে বাদশাহর কাছেও ইউসুফ (আ.)-এর বিকল্প ছিল না। কারণ তিনি ছিলেন আল্লাহর নবী ও বিশ্বস্ততম ব্যক্তি। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, জাতীয় সংকটকালে গণমানুষের স্বার্থে যোগ্যদের নেতৃত্বের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা দোষের নয়।
সর্বোচ্চ উৎপাদন ও দীর্ঘমেয়াদি মজুত
দায়িত্ব নিয়েই ইউসুফ (আ.) সর্বোচ্চ খাদ্য উৎপাদনে মনোনিবেশ করেন এবং আসন্ন দুর্ভিক্ষের জন্য খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রকল্প হাতে নেন। যেমনটি তিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যার সময় বলেছিলেন, ‘তোমরা সাত বছর একাধারে চাষ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
এরপর শস্য মজুত করেন এবং দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন। ইউসুফ (আ.)-এর ভাষায়, ‘এরপর যখন তোমরা ফসল কাটবে, তখন তোমরা অল্প খাবে, বাকি শস্য শিষসমেত সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৭)
অপচয় রোধ এবং সুষম বণ্টন
দায়িত্ব নিয়ে ইউসুফ (আ.) রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়-অপব্যয় বন্ধ করেন এবং শস্যের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করেন। যেমন—কোরআনের আয়াতে ‘তোমরা অল্প যা খাবে, বাকি শস্য মজুত করবে’ বলার মাধ্যমে ইউসুফ (আ.) ভোক্তাদের মধ্যে অপচয়-অপব্যয় কমিয়ে আনার কথা আগেই বলেছেন। উৎপাদন থেকে কম খরচ করে বিপদের সময়ের জন্য সঞ্চয় করতে বলেছেন।
ইউসুফ (আ.)-এর সতর্কতা জারির কারণে মিসরের মানুষ দুর্ভিক্ষের জন্য ফসল সঞ্চয় করে রাখে এবং দুর্ভিক্ষের সময় নিজেদের সঞ্চিত ফসল ভোগ করতে থাকে। যেমন—পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘এরপর সাতটি কঠিন বছর আসবে। এই সময়ের জন্য আগে তোমরা যা সঞ্চয় করেছিলে, তা লোকে খাবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮)
ফলে রাজভান্ডারে সঞ্চিত ফসলগুলো পরিকল্পিতভাবে অভাবীদের মধ্যে বণ্টিত হতে থাকে। এ কারণে মিসরের মানুষের তেমন কোনো দুর্ভোগ ও অভাব ছিল না। বরং পাশের ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য অঞ্চলের মানুষও মিসর থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা খাবার সংগ্রহ করতেই মিসরে এসেছিলেন।
নিজেই শস্য বণ্টন করতেন ইউসুফ (আ.)
ঐতিহাসিকদের মতে, দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ইউসুফ (আ.)-ই প্রথম রেশন কার্ড চালু করেন। ইউসুফ (আ.) নিজেই দুর্ভিক্ষকালীন কর্মকাণ্ডগুলো সরাসরি তদারক করতেন। সুরা ইউসুফের পরের আয়াতগুলোতে দেখা যায়, ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা শস্য সংগ্রহে মিসরে এলে তিনিই সরাসরি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করেন এবং বাবা-মায়ের খোঁজখবরও নেন। আবার তাঁদের আসতে বলেন এবং সহোদর বিনইয়ামিনকেও নিয়ে আসতে বলেন। পরেরবার বিনইয়ামিনকে নিয়ে এলে তাঁকে কৌশলে রেখে দেন ইউসুফ (আ.)।
এসব ঘটনা থেকে এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ইউসুফ (আ.) নিজেই শস্য বণ্টনের কাজ তদারক করতেন এবং সবার আসা-যাওয়া পর্যবেক্ষণ করতেন। ফলে কারও অন্যায় সুবিধা নেওয়ার এবং দুর্নীতি করার সুযোগ সেখানে ছিল না।
দুর্ভিক্ষের পরের জন্য পরিকল্পনা
দুর্ভিক্ষের পরের সময়ের জন্য যথেষ্ট বীজও সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন ইউসুফ (আ.)। স্বপ্নের ব্যাখ্যা থেকেই বিষয়টি বোঝা যায়। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তবে সেই অল্পটুকু বাদে, যা তোমরা (বীজ হিসেবে) সংরক্ষণ করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৮)
ফলে দেখা গেছে, দুর্ভিক্ষের পর এতই ভালো ফলন হলো যে মানুষ খুব সুখে জীবনযাপন করতে লাগল। কোরআনের ভাষায়—‘এরপর একটি বছর আসবে, যখন মানুষের কল্যাণে প্রচুর বৃষ্টি হবে এবং মানুষ যথেষ্ট ভোগবিলাস করবে।’ (সুরা ইউসুফ: ৪৯)
সুরা ইউসুফকে আল্লাহ তাআলা ‘আহসানুল কাসাস’ বা ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ আখ্যা দিয়েছেন। দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার পাশাপাশি এই গল্পের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য এ সুরায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ। আল্লাহ তাআলা আমাদের বোঝার ও অনুধাবন করার তৌফিক দিন।

‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

পবিত্র কোরআনের সুরা ইউসুফে আল্লাহ তাআলা নবী ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের রোমাঞ্চকর গল্প তুলে ধরেছেন। এই গল্পের অনেক চমৎকার ও উল্লেখযোগ্য দিকের একটি হলো—কঠিন দুর্ভিক্ষের আগমুহূর্তে তিনি মিসরের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সফলভাবে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন।
২৯ নভেম্বর ২০২২
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

পবিত্র কোরআনের সুরা ইউসুফে আল্লাহ তাআলা নবী ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের রোমাঞ্চকর গল্প তুলে ধরেছেন। এই গল্পের অনেক চমৎকার ও উল্লেখযোগ্য দিকের একটি হলো—কঠিন দুর্ভিক্ষের আগমুহূর্তে তিনি মিসরের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সফলভাবে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন।
২৯ নভেম্বর ২০২২
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৬ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

পবিত্র কোরআনের সুরা ইউসুফে আল্লাহ তাআলা নবী ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের রোমাঞ্চকর গল্প তুলে ধরেছেন। এই গল্পের অনেক চমৎকার ও উল্লেখযোগ্য দিকের একটি হলো—কঠিন দুর্ভিক্ষের আগমুহূর্তে তিনি মিসরের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সফলভাবে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন।
২৯ নভেম্বর ২০২২
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৮ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

পবিত্র কোরআনের সুরা ইউসুফে আল্লাহ তাআলা নবী ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের রোমাঞ্চকর গল্প তুলে ধরেছেন। এই গল্পের অনেক চমৎকার ও উল্লেখযোগ্য দিকের একটি হলো—কঠিন দুর্ভিক্ষের আগমুহূর্তে তিনি মিসরের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সফলভাবে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন।
২৯ নভেম্বর ২০২২
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৮ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১০ ঘণ্টা আগে