রায়হান রাশেদ

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৭ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা জারিয়াতের ৩১ থেকে সুরা তুর, সুরা নাজম, সুরা কমার, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া ও সুরা হাদিদ পড়া হবে। এই অংশে মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য, নবীজির দাওয়াত, মেরাজ, উপদেশ, নবীজির হাতের ইশারায় চাঁদ বিদীর্ণ হওয়া ও আল্লাহর পথে জীবন-সম্পদ উৎসর্গসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো।
যে কারণে মানুষ সৃষ্টি
আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি মানুষ। আল্লাহ মানুষকে ভালোবেসে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টির সেরা জীবও মানুষ। আল্লাহ মানুষের কাছে ধনদৌলত চান না। তিনি চান মানুষ তাঁর আনুগত্য করবে। তাঁর দাসত্ব করবে। ইবাদত করবে। তিনি তো মানুষকে সৃষ্টিও করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। তাঁর আদেশ মোতাবেক চলার জন্য। নবীর আদর্শ পালনের জন্য। আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও মানবজাতিকে শুধু আমার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা জারিয়াত: ৫৬)
ইবাদত হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশিত পথ ও মতে জীবন পরিচালনা করা। আল্লাহ যা কিছু নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকবে। নামাজ পড়বে। রোজা রাখবে। সামর্থ্যবান হলে জাকাত আদায় ও হজ করবে। প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের হক আদায় করবে। সঠিকভাবে উত্তরাধিকার বণ্টন করবে। মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। সুদ, ঘুষ, ব্যভিচার, খুন, ধোঁকা, প্রতারণা, জুলুম, নির্যাতন, মিথ্যা ও গিবত ইত্যাদি মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে।
মুত্তাকিরা জান্নাতে যেমন থাকবে
৪৯ আয়াত বিশিষ্ট মক্কায় অবতীর্ণ সুরা তুরে নবীজির দাওয়াতের বিপরীতে কাফেরদের মশকরা, দাওয়াত অব্যাহত রাখার আদেশ, আল্লাহর একত্ববাদ, কাফেরদের ভ্রান্ত চিন্তা খণ্ডন ইত্যাদির পাশাপাশি মুমিন-মুত্তাকিরা জান্নাতে কেমন থাকবে, সে সম্পর্কে বয়ান রয়েছে। জান্নাতিরা কত নেয়ামতের মধ্যে থাকবে, বিভিন্ন সুরায় তার বিশদ বিবরণ রয়েছে। সুরা তুরের ১৭ থেকে ২৮ নম্বর আয়াতে জান্নাতে তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে কয়েকটি নেয়ামতের বর্ণনা রয়েছে। যথা:
১. তাঁরা সুখে ও সম্পদে থাকবেন।
২. তাঁরা সবকিছু আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করবেন।
৩. তাঁরা দোজখ থেকে রক্ষা পাবেন।
৪. তৃপ্তির সঙ্গে খাবেন ও পান করবেন।
৫. সারি সারি সাজানো আসনে হেলান দিয়ে আরামে বসবেন।
৬. সুনয়না সুন্দরী হুর বিয়ে করবেন।
৭. তাঁদের সন্তানেরাও তাঁদের সঙ্গে থাকবেন।
৭. চাহিদা অনুযায়ী ফলমূল ও গোশত পাবেন।
৮. আনন্দ কৌতুকে শরাবের পানপাত্র নিয়ে কাড়াকাড়ি করবেন; তবে শরাব পানে অনর্থক প্রলাপ ও পাপ থাকবে না।
৯. তাঁদের সেবায় নিয়োজিত সুরক্ষিত মণিমুক্তা সদৃশ কিশোরেরা তাঁদের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করবে।
সুরা নাজমের বিষয়বস্তু
মক্কায় অবতীর্ণ ৬২ আয়াত বিশিষ্ট সুরা নাজমে আল্লাহ তাআলা বেশ কিছু বিষয়ের কসম করে মুহাম্মদ (সা.)-এর সত্য নবী হওয়া, তাঁর প্রতি নাজিলকৃত ওহিতে সন্দেহ ও সংশয় না থাকার প্রমাণ, মূর্তি উপাসক ও যারা ফেরেশতাদের আল্লাহর কন্যা সাব্যস্ত করে তাদের নিন্দা, কিয়ামতের বর্ণনা, কারও গুনাহের বোঝা অপরের কাঁধে চাপানো হবে না এবং আল্লাহর কুদরতের বর্ণনা রয়েছে। এ সুরার শেষ আয়াতে সিজদার আদেশ দেওয়া হয়েছে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে আছে, ‘যখন এ আয়াত নাজিল হয়েছিল, রাসুল (সা.), উপস্থিত সাহাবি ও কাফের-মুশরিকেরাও সিজদা করেছিল।’
চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল
সুরা কমার মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৫৫। কোরআনের ৫৪ তম সুরা এটি। সুরার শুরুতে মহানবী (সা.)-এর আঙুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার বয়ান রয়েছে। নবীজি (সা.) তখন মক্কার মুশরিক ও ইহুদিদের একত্ববাদের দাওয়াত দিচ্ছেন। আবু জাহেলের নেতৃত্বে একদল মুশরিক ও ইহুদিরা জানাল, ‘মুহাম্মদকে আল্লাহর রাসুল হিসেবে মেনে নেব, যদি সে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করতে পারে।’
জিলহজ মাসের ১৪ তারিখ। নবীজি আল্লাহর কাছে দোয়া করে আঙুলের ইশারা করলে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। মুশরিকেরা নবীজির মোজেজাকে জাদু বলে আখ্যায়িত করেছিল। ইহুদিরা ইসলাম গ্রহণ করেছিল। কারণ তারা তাওরাতে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ব্যাপারটি জেনেছিল।
চাঁদ এত স্পষ্টভাবে দুই টুকরা হয়েছিল যে ওই দুই টুকরার ব্যবধানের মধ্যে হেরা পর্বত দেখা যাচ্ছিল। আবু জাহেল বলল, এটা জাদু। তাকে মক্কার বাইরে থাকা লোকেরাও চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার সংবাদ দিয়েছিল। সে তখনো বলল, এটা জাদু।
আল্লাহর কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে?
জগতের সব আল্লাহর সৃষ্টি। সবকিছু মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত। সুরা রহমানে আল্লাহ দুনিয়া-আখিরাতের বহু নেয়ামতের উল্লেখ করেছেন। দুনিয়া-আখিরাতের নেয়ামতের বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা মোট ৩১ বার প্রশ্ন করেছেন, ‘অতএব তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে?’
তাফসিরবিদেরা বলেন, ‘এটা এ জন্য যাতে, বিশ্বাসীরা আল্লাহর নেয়ামতকে স্বীকার করে তাঁর প্রশংসা করে।’
মক্কায় অবতীর্ণ ৯৬ আয়াত বিশিষ্ট সুরা ওয়াকিয়া। এ সুরার আরেক নাম গিনা—সমৃদ্ধিশালী। এ সুরা তিলাওয়াতে অভাব দূর হয়। জীবনে সমৃদ্ধি আসে। নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, সে কখনো ক্ষুধায় কষ্ট ভোগ করবে না।’ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর মেয়েদের প্রতিরাতে এ সুরা তিলাওয়াতের আদেশ করতেন। (বায়হাকি, শোয়াবুল ইমান: ২৪৯৮)
কিয়ামতের সময়কার বিভিন্ন বর্ণনা, আল্লাহর অস্তিত্ব, একত্ববাদ, কুদরত ও ক্ষমতার প্রমাণ, পুনরুত্থান ও হিসাব-নিকাশ, কোরআনের মাহাত্ম্য, বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত, সাধারণ জান্নাতি এবং কাফের; কিয়ামত দিবসে এই তিন শ্রেণির মানুষের অবস্থা, মানুষ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ও আল্লাহর আনুগত্যের বর্ণনা রয়েছে এ সুরায়।
লোহা সৃষ্টির বয়ান সুরা হাদিদে
হাদিদ অর্থ লোহা। লোহা সৃষ্টির আলোচনা থাকায় এ সুরার নাম হাদিদ। তাফসিরে ইবনে কাসিরে আছে, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, সুরার তিন নম্বর আয়াতটি অন্যান্য হাজার আয়াত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ এ সুরায় সবকিছু আল্লাহর, তিনি মালিক, সবকিছু তাঁর প্রশংসা করে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান, দীন প্রতিষ্ঠায় জীবন-সম্পদ কোরবানি, দুনিয়ার মোহে ধোঁকায় না পড়া, আল্লাহর ভয়, বিশ্বাসীদের প্রতিদান সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে।
এ ছাড়া পূর্ববর্তী জাতির অবাধ্যতার পরিণতি, আসমান-জমিন সৃষ্টি, কাফেরদের ভ্রান্ত চিন্তার খণ্ডন, তাকদির, আল্লাহর অস্তিত্ব, ইমান, ইমানদারের প্রতিদান ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৭ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা জারিয়াতের ৩১ থেকে সুরা তুর, সুরা নাজম, সুরা কমার, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া ও সুরা হাদিদ পড়া হবে। এই অংশে মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য, নবীজির দাওয়াত, মেরাজ, উপদেশ, নবীজির হাতের ইশারায় চাঁদ বিদীর্ণ হওয়া ও আল্লাহর পথে জীবন-সম্পদ উৎসর্গসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো।
যে কারণে মানুষ সৃষ্টি
আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি মানুষ। আল্লাহ মানুষকে ভালোবেসে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টির সেরা জীবও মানুষ। আল্লাহ মানুষের কাছে ধনদৌলত চান না। তিনি চান মানুষ তাঁর আনুগত্য করবে। তাঁর দাসত্ব করবে। ইবাদত করবে। তিনি তো মানুষকে সৃষ্টিও করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। তাঁর আদেশ মোতাবেক চলার জন্য। নবীর আদর্শ পালনের জন্য। আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও মানবজাতিকে শুধু আমার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা জারিয়াত: ৫৬)
ইবাদত হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশিত পথ ও মতে জীবন পরিচালনা করা। আল্লাহ যা কিছু নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকবে। নামাজ পড়বে। রোজা রাখবে। সামর্থ্যবান হলে জাকাত আদায় ও হজ করবে। প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের হক আদায় করবে। সঠিকভাবে উত্তরাধিকার বণ্টন করবে। মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। সুদ, ঘুষ, ব্যভিচার, খুন, ধোঁকা, প্রতারণা, জুলুম, নির্যাতন, মিথ্যা ও গিবত ইত্যাদি মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে।
মুত্তাকিরা জান্নাতে যেমন থাকবে
৪৯ আয়াত বিশিষ্ট মক্কায় অবতীর্ণ সুরা তুরে নবীজির দাওয়াতের বিপরীতে কাফেরদের মশকরা, দাওয়াত অব্যাহত রাখার আদেশ, আল্লাহর একত্ববাদ, কাফেরদের ভ্রান্ত চিন্তা খণ্ডন ইত্যাদির পাশাপাশি মুমিন-মুত্তাকিরা জান্নাতে কেমন থাকবে, সে সম্পর্কে বয়ান রয়েছে। জান্নাতিরা কত নেয়ামতের মধ্যে থাকবে, বিভিন্ন সুরায় তার বিশদ বিবরণ রয়েছে। সুরা তুরের ১৭ থেকে ২৮ নম্বর আয়াতে জান্নাতে তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে কয়েকটি নেয়ামতের বর্ণনা রয়েছে। যথা:
১. তাঁরা সুখে ও সম্পদে থাকবেন।
২. তাঁরা সবকিছু আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করবেন।
৩. তাঁরা দোজখ থেকে রক্ষা পাবেন।
৪. তৃপ্তির সঙ্গে খাবেন ও পান করবেন।
৫. সারি সারি সাজানো আসনে হেলান দিয়ে আরামে বসবেন।
৬. সুনয়না সুন্দরী হুর বিয়ে করবেন।
৭. তাঁদের সন্তানেরাও তাঁদের সঙ্গে থাকবেন।
৭. চাহিদা অনুযায়ী ফলমূল ও গোশত পাবেন।
৮. আনন্দ কৌতুকে শরাবের পানপাত্র নিয়ে কাড়াকাড়ি করবেন; তবে শরাব পানে অনর্থক প্রলাপ ও পাপ থাকবে না।
৯. তাঁদের সেবায় নিয়োজিত সুরক্ষিত মণিমুক্তা সদৃশ কিশোরেরা তাঁদের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করবে।
সুরা নাজমের বিষয়বস্তু
মক্কায় অবতীর্ণ ৬২ আয়াত বিশিষ্ট সুরা নাজমে আল্লাহ তাআলা বেশ কিছু বিষয়ের কসম করে মুহাম্মদ (সা.)-এর সত্য নবী হওয়া, তাঁর প্রতি নাজিলকৃত ওহিতে সন্দেহ ও সংশয় না থাকার প্রমাণ, মূর্তি উপাসক ও যারা ফেরেশতাদের আল্লাহর কন্যা সাব্যস্ত করে তাদের নিন্দা, কিয়ামতের বর্ণনা, কারও গুনাহের বোঝা অপরের কাঁধে চাপানো হবে না এবং আল্লাহর কুদরতের বর্ণনা রয়েছে। এ সুরার শেষ আয়াতে সিজদার আদেশ দেওয়া হয়েছে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে আছে, ‘যখন এ আয়াত নাজিল হয়েছিল, রাসুল (সা.), উপস্থিত সাহাবি ও কাফের-মুশরিকেরাও সিজদা করেছিল।’
চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল
সুরা কমার মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৫৫। কোরআনের ৫৪ তম সুরা এটি। সুরার শুরুতে মহানবী (সা.)-এর আঙুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার বয়ান রয়েছে। নবীজি (সা.) তখন মক্কার মুশরিক ও ইহুদিদের একত্ববাদের দাওয়াত দিচ্ছেন। আবু জাহেলের নেতৃত্বে একদল মুশরিক ও ইহুদিরা জানাল, ‘মুহাম্মদকে আল্লাহর রাসুল হিসেবে মেনে নেব, যদি সে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করতে পারে।’
জিলহজ মাসের ১৪ তারিখ। নবীজি আল্লাহর কাছে দোয়া করে আঙুলের ইশারা করলে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। মুশরিকেরা নবীজির মোজেজাকে জাদু বলে আখ্যায়িত করেছিল। ইহুদিরা ইসলাম গ্রহণ করেছিল। কারণ তারা তাওরাতে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ব্যাপারটি জেনেছিল।
চাঁদ এত স্পষ্টভাবে দুই টুকরা হয়েছিল যে ওই দুই টুকরার ব্যবধানের মধ্যে হেরা পর্বত দেখা যাচ্ছিল। আবু জাহেল বলল, এটা জাদু। তাকে মক্কার বাইরে থাকা লোকেরাও চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার সংবাদ দিয়েছিল। সে তখনো বলল, এটা জাদু।
আল্লাহর কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে?
জগতের সব আল্লাহর সৃষ্টি। সবকিছু মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত। সুরা রহমানে আল্লাহ দুনিয়া-আখিরাতের বহু নেয়ামতের উল্লেখ করেছেন। দুনিয়া-আখিরাতের নেয়ামতের বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা মোট ৩১ বার প্রশ্ন করেছেন, ‘অতএব তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে?’
তাফসিরবিদেরা বলেন, ‘এটা এ জন্য যাতে, বিশ্বাসীরা আল্লাহর নেয়ামতকে স্বীকার করে তাঁর প্রশংসা করে।’
মক্কায় অবতীর্ণ ৯৬ আয়াত বিশিষ্ট সুরা ওয়াকিয়া। এ সুরার আরেক নাম গিনা—সমৃদ্ধিশালী। এ সুরা তিলাওয়াতে অভাব দূর হয়। জীবনে সমৃদ্ধি আসে। নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, সে কখনো ক্ষুধায় কষ্ট ভোগ করবে না।’ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর মেয়েদের প্রতিরাতে এ সুরা তিলাওয়াতের আদেশ করতেন। (বায়হাকি, শোয়াবুল ইমান: ২৪৯৮)
কিয়ামতের সময়কার বিভিন্ন বর্ণনা, আল্লাহর অস্তিত্ব, একত্ববাদ, কুদরত ও ক্ষমতার প্রমাণ, পুনরুত্থান ও হিসাব-নিকাশ, কোরআনের মাহাত্ম্য, বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত, সাধারণ জান্নাতি এবং কাফের; কিয়ামত দিবসে এই তিন শ্রেণির মানুষের অবস্থা, মানুষ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ও আল্লাহর আনুগত্যের বর্ণনা রয়েছে এ সুরায়।
লোহা সৃষ্টির বয়ান সুরা হাদিদে
হাদিদ অর্থ লোহা। লোহা সৃষ্টির আলোচনা থাকায় এ সুরার নাম হাদিদ। তাফসিরে ইবনে কাসিরে আছে, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, সুরার তিন নম্বর আয়াতটি অন্যান্য হাজার আয়াত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ এ সুরায় সবকিছু আল্লাহর, তিনি মালিক, সবকিছু তাঁর প্রশংসা করে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান, দীন প্রতিষ্ঠায় জীবন-সম্পদ কোরবানি, দুনিয়ার মোহে ধোঁকায় না পড়া, আল্লাহর ভয়, বিশ্বাসীদের প্রতিদান সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে।
এ ছাড়া পূর্ববর্তী জাতির অবাধ্যতার পরিণতি, আসমান-জমিন সৃষ্টি, কাফেরদের ভ্রান্ত চিন্তার খণ্ডন, তাকদির, আল্লাহর অস্তিত্ব, ইমান, ইমানদারের প্রতিদান ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।
রায়হান রাশেদ

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৭ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা জারিয়াতের ৩১ থেকে সুরা তুর, সুরা নাজম, সুরা কমার, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া ও সুরা হাদিদ পড়া হবে। এই অংশে মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য, নবীজির দাওয়াত, মেরাজ, উপদেশ, নবীজির হাতের ইশারায় চাঁদ বিদীর্ণ হওয়া ও আল্লাহর পথে জীবন-সম্পদ উৎসর্গসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো।
যে কারণে মানুষ সৃষ্টি
আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি মানুষ। আল্লাহ মানুষকে ভালোবেসে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টির সেরা জীবও মানুষ। আল্লাহ মানুষের কাছে ধনদৌলত চান না। তিনি চান মানুষ তাঁর আনুগত্য করবে। তাঁর দাসত্ব করবে। ইবাদত করবে। তিনি তো মানুষকে সৃষ্টিও করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। তাঁর আদেশ মোতাবেক চলার জন্য। নবীর আদর্শ পালনের জন্য। আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও মানবজাতিকে শুধু আমার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা জারিয়াত: ৫৬)
ইবাদত হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশিত পথ ও মতে জীবন পরিচালনা করা। আল্লাহ যা কিছু নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকবে। নামাজ পড়বে। রোজা রাখবে। সামর্থ্যবান হলে জাকাত আদায় ও হজ করবে। প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের হক আদায় করবে। সঠিকভাবে উত্তরাধিকার বণ্টন করবে। মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। সুদ, ঘুষ, ব্যভিচার, খুন, ধোঁকা, প্রতারণা, জুলুম, নির্যাতন, মিথ্যা ও গিবত ইত্যাদি মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে।
মুত্তাকিরা জান্নাতে যেমন থাকবে
৪৯ আয়াত বিশিষ্ট মক্কায় অবতীর্ণ সুরা তুরে নবীজির দাওয়াতের বিপরীতে কাফেরদের মশকরা, দাওয়াত অব্যাহত রাখার আদেশ, আল্লাহর একত্ববাদ, কাফেরদের ভ্রান্ত চিন্তা খণ্ডন ইত্যাদির পাশাপাশি মুমিন-মুত্তাকিরা জান্নাতে কেমন থাকবে, সে সম্পর্কে বয়ান রয়েছে। জান্নাতিরা কত নেয়ামতের মধ্যে থাকবে, বিভিন্ন সুরায় তার বিশদ বিবরণ রয়েছে। সুরা তুরের ১৭ থেকে ২৮ নম্বর আয়াতে জান্নাতে তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে কয়েকটি নেয়ামতের বর্ণনা রয়েছে। যথা:
১. তাঁরা সুখে ও সম্পদে থাকবেন।
২. তাঁরা সবকিছু আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করবেন।
৩. তাঁরা দোজখ থেকে রক্ষা পাবেন।
৪. তৃপ্তির সঙ্গে খাবেন ও পান করবেন।
৫. সারি সারি সাজানো আসনে হেলান দিয়ে আরামে বসবেন।
৬. সুনয়না সুন্দরী হুর বিয়ে করবেন।
৭. তাঁদের সন্তানেরাও তাঁদের সঙ্গে থাকবেন।
৭. চাহিদা অনুযায়ী ফলমূল ও গোশত পাবেন।
৮. আনন্দ কৌতুকে শরাবের পানপাত্র নিয়ে কাড়াকাড়ি করবেন; তবে শরাব পানে অনর্থক প্রলাপ ও পাপ থাকবে না।
৯. তাঁদের সেবায় নিয়োজিত সুরক্ষিত মণিমুক্তা সদৃশ কিশোরেরা তাঁদের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করবে।
সুরা নাজমের বিষয়বস্তু
মক্কায় অবতীর্ণ ৬২ আয়াত বিশিষ্ট সুরা নাজমে আল্লাহ তাআলা বেশ কিছু বিষয়ের কসম করে মুহাম্মদ (সা.)-এর সত্য নবী হওয়া, তাঁর প্রতি নাজিলকৃত ওহিতে সন্দেহ ও সংশয় না থাকার প্রমাণ, মূর্তি উপাসক ও যারা ফেরেশতাদের আল্লাহর কন্যা সাব্যস্ত করে তাদের নিন্দা, কিয়ামতের বর্ণনা, কারও গুনাহের বোঝা অপরের কাঁধে চাপানো হবে না এবং আল্লাহর কুদরতের বর্ণনা রয়েছে। এ সুরার শেষ আয়াতে সিজদার আদেশ দেওয়া হয়েছে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে আছে, ‘যখন এ আয়াত নাজিল হয়েছিল, রাসুল (সা.), উপস্থিত সাহাবি ও কাফের-মুশরিকেরাও সিজদা করেছিল।’
চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল
সুরা কমার মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৫৫। কোরআনের ৫৪ তম সুরা এটি। সুরার শুরুতে মহানবী (সা.)-এর আঙুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার বয়ান রয়েছে। নবীজি (সা.) তখন মক্কার মুশরিক ও ইহুদিদের একত্ববাদের দাওয়াত দিচ্ছেন। আবু জাহেলের নেতৃত্বে একদল মুশরিক ও ইহুদিরা জানাল, ‘মুহাম্মদকে আল্লাহর রাসুল হিসেবে মেনে নেব, যদি সে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করতে পারে।’
জিলহজ মাসের ১৪ তারিখ। নবীজি আল্লাহর কাছে দোয়া করে আঙুলের ইশারা করলে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। মুশরিকেরা নবীজির মোজেজাকে জাদু বলে আখ্যায়িত করেছিল। ইহুদিরা ইসলাম গ্রহণ করেছিল। কারণ তারা তাওরাতে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ব্যাপারটি জেনেছিল।
চাঁদ এত স্পষ্টভাবে দুই টুকরা হয়েছিল যে ওই দুই টুকরার ব্যবধানের মধ্যে হেরা পর্বত দেখা যাচ্ছিল। আবু জাহেল বলল, এটা জাদু। তাকে মক্কার বাইরে থাকা লোকেরাও চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার সংবাদ দিয়েছিল। সে তখনো বলল, এটা জাদু।
আল্লাহর কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে?
জগতের সব আল্লাহর সৃষ্টি। সবকিছু মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত। সুরা রহমানে আল্লাহ দুনিয়া-আখিরাতের বহু নেয়ামতের উল্লেখ করেছেন। দুনিয়া-আখিরাতের নেয়ামতের বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা মোট ৩১ বার প্রশ্ন করেছেন, ‘অতএব তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে?’
তাফসিরবিদেরা বলেন, ‘এটা এ জন্য যাতে, বিশ্বাসীরা আল্লাহর নেয়ামতকে স্বীকার করে তাঁর প্রশংসা করে।’
মক্কায় অবতীর্ণ ৯৬ আয়াত বিশিষ্ট সুরা ওয়াকিয়া। এ সুরার আরেক নাম গিনা—সমৃদ্ধিশালী। এ সুরা তিলাওয়াতে অভাব দূর হয়। জীবনে সমৃদ্ধি আসে। নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, সে কখনো ক্ষুধায় কষ্ট ভোগ করবে না।’ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর মেয়েদের প্রতিরাতে এ সুরা তিলাওয়াতের আদেশ করতেন। (বায়হাকি, শোয়াবুল ইমান: ২৪৯৮)
কিয়ামতের সময়কার বিভিন্ন বর্ণনা, আল্লাহর অস্তিত্ব, একত্ববাদ, কুদরত ও ক্ষমতার প্রমাণ, পুনরুত্থান ও হিসাব-নিকাশ, কোরআনের মাহাত্ম্য, বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত, সাধারণ জান্নাতি এবং কাফের; কিয়ামত দিবসে এই তিন শ্রেণির মানুষের অবস্থা, মানুষ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ও আল্লাহর আনুগত্যের বর্ণনা রয়েছে এ সুরায়।
লোহা সৃষ্টির বয়ান সুরা হাদিদে
হাদিদ অর্থ লোহা। লোহা সৃষ্টির আলোচনা থাকায় এ সুরার নাম হাদিদ। তাফসিরে ইবনে কাসিরে আছে, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, সুরার তিন নম্বর আয়াতটি অন্যান্য হাজার আয়াত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ এ সুরায় সবকিছু আল্লাহর, তিনি মালিক, সবকিছু তাঁর প্রশংসা করে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান, দীন প্রতিষ্ঠায় জীবন-সম্পদ কোরবানি, দুনিয়ার মোহে ধোঁকায় না পড়া, আল্লাহর ভয়, বিশ্বাসীদের প্রতিদান সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে।
এ ছাড়া পূর্ববর্তী জাতির অবাধ্যতার পরিণতি, আসমান-জমিন সৃষ্টি, কাফেরদের ভ্রান্ত চিন্তার খণ্ডন, তাকদির, আল্লাহর অস্তিত্ব, ইমান, ইমানদারের প্রতিদান ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৭ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা জারিয়াতের ৩১ থেকে সুরা তুর, সুরা নাজম, সুরা কমার, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া ও সুরা হাদিদ পড়া হবে। এই অংশে মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য, নবীজির দাওয়াত, মেরাজ, উপদেশ, নবীজির হাতের ইশারায় চাঁদ বিদীর্ণ হওয়া ও আল্লাহর পথে জীবন-সম্পদ উৎসর্গসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো।
যে কারণে মানুষ সৃষ্টি
আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি মানুষ। আল্লাহ মানুষকে ভালোবেসে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টির সেরা জীবও মানুষ। আল্লাহ মানুষের কাছে ধনদৌলত চান না। তিনি চান মানুষ তাঁর আনুগত্য করবে। তাঁর দাসত্ব করবে। ইবাদত করবে। তিনি তো মানুষকে সৃষ্টিও করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। তাঁর আদেশ মোতাবেক চলার জন্য। নবীর আদর্শ পালনের জন্য। আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও মানবজাতিকে শুধু আমার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা জারিয়াত: ৫৬)
ইবাদত হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশিত পথ ও মতে জীবন পরিচালনা করা। আল্লাহ যা কিছু নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকবে। নামাজ পড়বে। রোজা রাখবে। সামর্থ্যবান হলে জাকাত আদায় ও হজ করবে। প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের হক আদায় করবে। সঠিকভাবে উত্তরাধিকার বণ্টন করবে। মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। সুদ, ঘুষ, ব্যভিচার, খুন, ধোঁকা, প্রতারণা, জুলুম, নির্যাতন, মিথ্যা ও গিবত ইত্যাদি মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে।
মুত্তাকিরা জান্নাতে যেমন থাকবে
৪৯ আয়াত বিশিষ্ট মক্কায় অবতীর্ণ সুরা তুরে নবীজির দাওয়াতের বিপরীতে কাফেরদের মশকরা, দাওয়াত অব্যাহত রাখার আদেশ, আল্লাহর একত্ববাদ, কাফেরদের ভ্রান্ত চিন্তা খণ্ডন ইত্যাদির পাশাপাশি মুমিন-মুত্তাকিরা জান্নাতে কেমন থাকবে, সে সম্পর্কে বয়ান রয়েছে। জান্নাতিরা কত নেয়ামতের মধ্যে থাকবে, বিভিন্ন সুরায় তার বিশদ বিবরণ রয়েছে। সুরা তুরের ১৭ থেকে ২৮ নম্বর আয়াতে জান্নাতে তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে কয়েকটি নেয়ামতের বর্ণনা রয়েছে। যথা:
১. তাঁরা সুখে ও সম্পদে থাকবেন।
২. তাঁরা সবকিছু আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করবেন।
৩. তাঁরা দোজখ থেকে রক্ষা পাবেন।
৪. তৃপ্তির সঙ্গে খাবেন ও পান করবেন।
৫. সারি সারি সাজানো আসনে হেলান দিয়ে আরামে বসবেন।
৬. সুনয়না সুন্দরী হুর বিয়ে করবেন।
৭. তাঁদের সন্তানেরাও তাঁদের সঙ্গে থাকবেন।
৭. চাহিদা অনুযায়ী ফলমূল ও গোশত পাবেন।
৮. আনন্দ কৌতুকে শরাবের পানপাত্র নিয়ে কাড়াকাড়ি করবেন; তবে শরাব পানে অনর্থক প্রলাপ ও পাপ থাকবে না।
৯. তাঁদের সেবায় নিয়োজিত সুরক্ষিত মণিমুক্তা সদৃশ কিশোরেরা তাঁদের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করবে।
সুরা নাজমের বিষয়বস্তু
মক্কায় অবতীর্ণ ৬২ আয়াত বিশিষ্ট সুরা নাজমে আল্লাহ তাআলা বেশ কিছু বিষয়ের কসম করে মুহাম্মদ (সা.)-এর সত্য নবী হওয়া, তাঁর প্রতি নাজিলকৃত ওহিতে সন্দেহ ও সংশয় না থাকার প্রমাণ, মূর্তি উপাসক ও যারা ফেরেশতাদের আল্লাহর কন্যা সাব্যস্ত করে তাদের নিন্দা, কিয়ামতের বর্ণনা, কারও গুনাহের বোঝা অপরের কাঁধে চাপানো হবে না এবং আল্লাহর কুদরতের বর্ণনা রয়েছে। এ সুরার শেষ আয়াতে সিজদার আদেশ দেওয়া হয়েছে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে আছে, ‘যখন এ আয়াত নাজিল হয়েছিল, রাসুল (সা.), উপস্থিত সাহাবি ও কাফের-মুশরিকেরাও সিজদা করেছিল।’
চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল
সুরা কমার মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৫৫। কোরআনের ৫৪ তম সুরা এটি। সুরার শুরুতে মহানবী (সা.)-এর আঙুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার বয়ান রয়েছে। নবীজি (সা.) তখন মক্কার মুশরিক ও ইহুদিদের একত্ববাদের দাওয়াত দিচ্ছেন। আবু জাহেলের নেতৃত্বে একদল মুশরিক ও ইহুদিরা জানাল, ‘মুহাম্মদকে আল্লাহর রাসুল হিসেবে মেনে নেব, যদি সে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করতে পারে।’
জিলহজ মাসের ১৪ তারিখ। নবীজি আল্লাহর কাছে দোয়া করে আঙুলের ইশারা করলে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। মুশরিকেরা নবীজির মোজেজাকে জাদু বলে আখ্যায়িত করেছিল। ইহুদিরা ইসলাম গ্রহণ করেছিল। কারণ তারা তাওরাতে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ব্যাপারটি জেনেছিল।
চাঁদ এত স্পষ্টভাবে দুই টুকরা হয়েছিল যে ওই দুই টুকরার ব্যবধানের মধ্যে হেরা পর্বত দেখা যাচ্ছিল। আবু জাহেল বলল, এটা জাদু। তাকে মক্কার বাইরে থাকা লোকেরাও চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার সংবাদ দিয়েছিল। সে তখনো বলল, এটা জাদু।
আল্লাহর কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে?
জগতের সব আল্লাহর সৃষ্টি। সবকিছু মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত। সুরা রহমানে আল্লাহ দুনিয়া-আখিরাতের বহু নেয়ামতের উল্লেখ করেছেন। দুনিয়া-আখিরাতের নেয়ামতের বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা মোট ৩১ বার প্রশ্ন করেছেন, ‘অতএব তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নেয়ামত অস্বীকার করবে?’
তাফসিরবিদেরা বলেন, ‘এটা এ জন্য যাতে, বিশ্বাসীরা আল্লাহর নেয়ামতকে স্বীকার করে তাঁর প্রশংসা করে।’
মক্কায় অবতীর্ণ ৯৬ আয়াত বিশিষ্ট সুরা ওয়াকিয়া। এ সুরার আরেক নাম গিনা—সমৃদ্ধিশালী। এ সুরা তিলাওয়াতে অভাব দূর হয়। জীবনে সমৃদ্ধি আসে। নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, সে কখনো ক্ষুধায় কষ্ট ভোগ করবে না।’ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর মেয়েদের প্রতিরাতে এ সুরা তিলাওয়াতের আদেশ করতেন। (বায়হাকি, শোয়াবুল ইমান: ২৪৯৮)
কিয়ামতের সময়কার বিভিন্ন বর্ণনা, আল্লাহর অস্তিত্ব, একত্ববাদ, কুদরত ও ক্ষমতার প্রমাণ, পুনরুত্থান ও হিসাব-নিকাশ, কোরআনের মাহাত্ম্য, বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত, সাধারণ জান্নাতি এবং কাফের; কিয়ামত দিবসে এই তিন শ্রেণির মানুষের অবস্থা, মানুষ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ও আল্লাহর আনুগত্যের বর্ণনা রয়েছে এ সুরায়।
লোহা সৃষ্টির বয়ান সুরা হাদিদে
হাদিদ অর্থ লোহা। লোহা সৃষ্টির আলোচনা থাকায় এ সুরার নাম হাদিদ। তাফসিরে ইবনে কাসিরে আছে, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, সুরার তিন নম্বর আয়াতটি অন্যান্য হাজার আয়াত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ এ সুরায় সবকিছু আল্লাহর, তিনি মালিক, সবকিছু তাঁর প্রশংসা করে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান, দীন প্রতিষ্ঠায় জীবন-সম্পদ কোরবানি, দুনিয়ার মোহে ধোঁকায় না পড়া, আল্লাহর ভয়, বিশ্বাসীদের প্রতিদান সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে।
এ ছাড়া পূর্ববর্তী জাতির অবাধ্যতার পরিণতি, আসমান-জমিন সৃষ্টি, কাফেরদের ভ্রান্ত চিন্তার খণ্ডন, তাকদির, আল্লাহর অস্তিত্ব, ইমান, ইমানদারের প্রতিদান ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
১ ঘণ্টা আগে
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৬ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৭ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা জারিয়াতের ৩১ থেকে সুরা তুর, সুরা নাজম, সুরা কমার, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া ও সুরা হাদিদ পড়া হবে। এই অংশে মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য, নবীজির দাওয়াত, মেরাজ, উপদেশ, নবীজির হাতের ইশারায় চাঁদ বিদীর্ণ হওয়া ও আল্লাহর পথে জীবন-সম্পদ...
১৫ এপ্রিল ২০২৩
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৬ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।
সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)
মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।
দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)
অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।
সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)
মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।
দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)
অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৭ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা জারিয়াতের ৩১ থেকে সুরা তুর, সুরা নাজম, সুরা কমার, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া ও সুরা হাদিদ পড়া হবে। এই অংশে মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য, নবীজির দাওয়াত, মেরাজ, উপদেশ, নবীজির হাতের ইশারায় চাঁদ বিদীর্ণ হওয়া ও আল্লাহর পথে জীবন-সম্পদ...
১৫ এপ্রিল ২০২৩
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৬ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১১ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১২ মিনিট | ০৬: ৩১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৪ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১১ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১২ মিনিট | ০৬: ৩১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৪ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৭ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা জারিয়াতের ৩১ থেকে সুরা তুর, সুরা নাজম, সুরা কমার, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া ও সুরা হাদিদ পড়া হবে। এই অংশে মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য, নবীজির দাওয়াত, মেরাজ, উপদেশ, নবীজির হাতের ইশারায় চাঁদ বিদীর্ণ হওয়া ও আল্লাহর পথে জীবন-সম্পদ...
১৫ এপ্রিল ২০২৩
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
১ ঘণ্টা আগে
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
১০ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।
ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।
মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।
রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।
ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।
মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।
রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৭ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা জারিয়াতের ৩১ থেকে সুরা তুর, সুরা নাজম, সুরা কমার, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া ও সুরা হাদিদ পড়া হবে। এই অংশে মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য, নবীজির দাওয়াত, মেরাজ, উপদেশ, নবীজির হাতের ইশারায় চাঁদ বিদীর্ণ হওয়া ও আল্লাহর পথে জীবন-সম্পদ...
১৫ এপ্রিল ২০২৩
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
১ ঘণ্টা আগে
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৬ ঘণ্টা আগে