মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
জুয়ার পরিচয়
জুয়া এমন এক খেলা, যা লাভ-লোকসানের মধ্যে ঝুলন্ত থাকে। জুয়া খেলায় মূলত নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বা বস্তু (যা পুরস্কার হিসেবে ধার্য করা হয়) নির্ধারণ করা হয়। এরপর কোনো একটি বিষয়ে দুই পক্ষ চুক্তি করে হার-জিত নির্ধারণ করে। যে পক্ষ হেরে যায়, সে পক্ষ অপর পক্ষকে পূর্বনির্ধারিত অর্থ বা বস্তু প্রদান করে। জুয়া খেলায় তিনটি উপাদান থাকা প্রয়োজন—বিবেচনা (বাজির পরিমাণ), ঝুঁকি (সুযোগ) ও পুরস্কার।
জুয়ার আরবি প্রতিশব্দ মাইসির ও কিমার। মাইসির মানে সহজলভ্যতা। জুয়ার মাধ্যমে খুব সহজে অন্যের সম্পদ গ্রাস করা যায় বলে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে। কিমার মানে হার-জিতের খেলা, বাজি ধরা, ঝুঁকি নেওয়া। কিমার মূলত কমর ধাতু থেকে উদগত, যার অর্থ চাঁদ। জুয়া খেলায় সম্পদ চাঁদের মতো বাড়ে-কমে বলে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে। (আল বাহরুর রায়েক)
ইসলামে এমন প্রতিটি বিষয়কে জুয়া বলা হয়, যার ফলাফল হয়তো লাভ নয়তো ক্ষতি। (জাওয়াহিরুল ফিকহ) অর্থাৎ প্রতিটি এমন প্রতিযোগিতা বা খেলা, যেখানে ফলাফল নিজের পক্ষে এলে অংশগ্রহণকারী লাভবান হবে, আর বিপক্ষে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা জুয়া হবে। যদি এমন হয় যে ফলাফল নিজের পক্ষে এলে লাভবান হবে, কিন্তু বিপক্ষে গেলে কোনো ক্ষতি হবে না, সেটা জুয়া নয়। (আল কিমার ওয়া সোয়ারুহুল মুহাররামাহ)
জুয়ার শরিয়া বিধান
ইসলামে জুয়া এবং তা থেকে অর্জিত টাকাপয়সা সম্পূর্ণরূপে হারাম। পবিত্র কোরআনে একে শয়তানি কাজ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমার বেদি ও জুয়ার তিরসমূহ অপবিত্র, শয়তানি কাজ। সুতরাং এসব পরিহার করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা মায়িদা: ৯০)
জুয়ায় অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রহণ করা হয়, যা সম্পূর্ণ হারাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না।’ (সুরা নিসা: ২৯)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি কাউকে বলে, এসো জুয়া খেলি, তখন তার ওপর সদকা করা আবশ্যক।’ (বুখারি) শুধু খেলার আমন্ত্রণ জানালেই যেখানে কাফফারা দিতে হচ্ছে, সেখানে খেললে কী পরিমাণ গুনাহ হবে, তা সহজেই অনুমেয়।
জুয়া কেন হারাম
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা জুয়া হারাম হওয়ার দুটি হিকমত উল্লেখ করেছেন। এক. জুয়া মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ ও শত্রুতা সৃষ্টি করে। দুই. আল্লাহর জিকির ও নামাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শয়তান তো মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষের বীজ বপন করতে চায় এবং তোমাদের আল্লাহর জিকির ও নামাজ থেকে বিরত রাখতে চায়। সুতরাং তোমরা কি এসব থেকে নিবৃত্ত হবে?’ (সুরা মায়িদা: ৯১)
এ ছাড়া আলিমগণ জুয়া হারাম হওয়ার পেছনে আরও কিছু যুক্তি তুলে ধরেছেন। যেমন—
একালে জুয়ার ধরন
ক্যাসিনো: ক্যাসিনো হলো আধুনিক কালে বিভিন্ন ধরনের জুয়ার একটি নির্দিষ্ট স্থান, যাকে বাংলায় জুয়ার আসর বলা যায়। তবে সেটা হয় বিশাল পরিসরে। সাধারণত ক্যাসিনো এমনভাবে বানানো হয়, যেখানে পাশাপাশি হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিং মল, আনন্দভ্রমণ জাহাজ এবং অন্যান্য পর্যটন আকর্ষণ থাকে। কিছু কিছু ক্যাসিনোয় সরাসরি বিনোদন দেওয়া হয়। যেমন স্ট্যান্ডআপ কমেডি, কনসার্ট, খেলাধুলা ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকে। খরিদ্দারেরা ক্যাসিনো গেমস দ্বারা জুয়া খেলে থাকে। স্লট মেশিন বা ভিডিও লটারি মেশিন ক্যাসিনোর জনপ্রিয় জুয়া খেলা।
লটারি: কোনো কোম্পানি বা ব্যক্তি মোটা অঙ্কের পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে ব্যাপক আকারে নির্ধারিত মূল্যে কুপন বিক্রি করে। এরপর কুপন বিক্রির টাকা দিয়ে লটারির মাধ্যমে কয়েকজনকে নগদ টাকা কিংবা মূল্যবান সামগ্রী প্রদান করে। বাকিরা কিছুই পায় না। গ্রামে-গঞ্জে বিভিন্ন উৎসবের সময় ছোট পরিসরে এভাবে লটারির নামে জুয়া খেলা চলে।
বাজি ধরা: ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলার ফলাফলের ওপর অনলাইনে-অফলাইনে বাজি ধরা হয়। এমনকি নির্দিষ্ট খেলোয়াড় গোল করবে কি না, কত রান করবে, কত উইকেট পাবে—এসব নিয়েও জুয়াড়িরা বাজি ধরে।
জুয়ার অ্যাপস: আজকাল কিছু অ্যাপস বের হয়েছে, যেখানে নির্দিষ্ট টাকা বিনিয়োগ করে জুয়া খেলা যায়।
কিছু অ্যাপে কেবল স্পিন করে খেলা যায়, আর কিছু অ্যাপে লুডু, ঘর মেলানো ইত্যাদি বিভিন্ন গেম খেলে জুয়া খেলা হয়।
ইসলামের মূলনীতি অনুসারে উল্লিখিত প্রতিটি বিষয় স্পষ্ট জুয়া ও হারাম। (আল কিমার ওয়া সোয়ারুহুল মুহাররামাহ)
জুয়ার পরিচয়
জুয়া এমন এক খেলা, যা লাভ-লোকসানের মধ্যে ঝুলন্ত থাকে। জুয়া খেলায় মূলত নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বা বস্তু (যা পুরস্কার হিসেবে ধার্য করা হয়) নির্ধারণ করা হয়। এরপর কোনো একটি বিষয়ে দুই পক্ষ চুক্তি করে হার-জিত নির্ধারণ করে। যে পক্ষ হেরে যায়, সে পক্ষ অপর পক্ষকে পূর্বনির্ধারিত অর্থ বা বস্তু প্রদান করে। জুয়া খেলায় তিনটি উপাদান থাকা প্রয়োজন—বিবেচনা (বাজির পরিমাণ), ঝুঁকি (সুযোগ) ও পুরস্কার।
জুয়ার আরবি প্রতিশব্দ মাইসির ও কিমার। মাইসির মানে সহজলভ্যতা। জুয়ার মাধ্যমে খুব সহজে অন্যের সম্পদ গ্রাস করা যায় বলে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে। কিমার মানে হার-জিতের খেলা, বাজি ধরা, ঝুঁকি নেওয়া। কিমার মূলত কমর ধাতু থেকে উদগত, যার অর্থ চাঁদ। জুয়া খেলায় সম্পদ চাঁদের মতো বাড়ে-কমে বলে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে। (আল বাহরুর রায়েক)
ইসলামে এমন প্রতিটি বিষয়কে জুয়া বলা হয়, যার ফলাফল হয়তো লাভ নয়তো ক্ষতি। (জাওয়াহিরুল ফিকহ) অর্থাৎ প্রতিটি এমন প্রতিযোগিতা বা খেলা, যেখানে ফলাফল নিজের পক্ষে এলে অংশগ্রহণকারী লাভবান হবে, আর বিপক্ষে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা জুয়া হবে। যদি এমন হয় যে ফলাফল নিজের পক্ষে এলে লাভবান হবে, কিন্তু বিপক্ষে গেলে কোনো ক্ষতি হবে না, সেটা জুয়া নয়। (আল কিমার ওয়া সোয়ারুহুল মুহাররামাহ)
জুয়ার শরিয়া বিধান
ইসলামে জুয়া এবং তা থেকে অর্জিত টাকাপয়সা সম্পূর্ণরূপে হারাম। পবিত্র কোরআনে একে শয়তানি কাজ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমার বেদি ও জুয়ার তিরসমূহ অপবিত্র, শয়তানি কাজ। সুতরাং এসব পরিহার করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা মায়িদা: ৯০)
জুয়ায় অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রহণ করা হয়, যা সম্পূর্ণ হারাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না।’ (সুরা নিসা: ২৯)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি কাউকে বলে, এসো জুয়া খেলি, তখন তার ওপর সদকা করা আবশ্যক।’ (বুখারি) শুধু খেলার আমন্ত্রণ জানালেই যেখানে কাফফারা দিতে হচ্ছে, সেখানে খেললে কী পরিমাণ গুনাহ হবে, তা সহজেই অনুমেয়।
জুয়া কেন হারাম
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা জুয়া হারাম হওয়ার দুটি হিকমত উল্লেখ করেছেন। এক. জুয়া মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ ও শত্রুতা সৃষ্টি করে। দুই. আল্লাহর জিকির ও নামাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শয়তান তো মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষের বীজ বপন করতে চায় এবং তোমাদের আল্লাহর জিকির ও নামাজ থেকে বিরত রাখতে চায়। সুতরাং তোমরা কি এসব থেকে নিবৃত্ত হবে?’ (সুরা মায়িদা: ৯১)
এ ছাড়া আলিমগণ জুয়া হারাম হওয়ার পেছনে আরও কিছু যুক্তি তুলে ধরেছেন। যেমন—
একালে জুয়ার ধরন
ক্যাসিনো: ক্যাসিনো হলো আধুনিক কালে বিভিন্ন ধরনের জুয়ার একটি নির্দিষ্ট স্থান, যাকে বাংলায় জুয়ার আসর বলা যায়। তবে সেটা হয় বিশাল পরিসরে। সাধারণত ক্যাসিনো এমনভাবে বানানো হয়, যেখানে পাশাপাশি হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিং মল, আনন্দভ্রমণ জাহাজ এবং অন্যান্য পর্যটন আকর্ষণ থাকে। কিছু কিছু ক্যাসিনোয় সরাসরি বিনোদন দেওয়া হয়। যেমন স্ট্যান্ডআপ কমেডি, কনসার্ট, খেলাধুলা ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকে। খরিদ্দারেরা ক্যাসিনো গেমস দ্বারা জুয়া খেলে থাকে। স্লট মেশিন বা ভিডিও লটারি মেশিন ক্যাসিনোর জনপ্রিয় জুয়া খেলা।
লটারি: কোনো কোম্পানি বা ব্যক্তি মোটা অঙ্কের পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে ব্যাপক আকারে নির্ধারিত মূল্যে কুপন বিক্রি করে। এরপর কুপন বিক্রির টাকা দিয়ে লটারির মাধ্যমে কয়েকজনকে নগদ টাকা কিংবা মূল্যবান সামগ্রী প্রদান করে। বাকিরা কিছুই পায় না। গ্রামে-গঞ্জে বিভিন্ন উৎসবের সময় ছোট পরিসরে এভাবে লটারির নামে জুয়া খেলা চলে।
বাজি ধরা: ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলার ফলাফলের ওপর অনলাইনে-অফলাইনে বাজি ধরা হয়। এমনকি নির্দিষ্ট খেলোয়াড় গোল করবে কি না, কত রান করবে, কত উইকেট পাবে—এসব নিয়েও জুয়াড়িরা বাজি ধরে।
জুয়ার অ্যাপস: আজকাল কিছু অ্যাপস বের হয়েছে, যেখানে নির্দিষ্ট টাকা বিনিয়োগ করে জুয়া খেলা যায়।
কিছু অ্যাপে কেবল স্পিন করে খেলা যায়, আর কিছু অ্যাপে লুডু, ঘর মেলানো ইত্যাদি বিভিন্ন গেম খেলে জুয়া খেলা হয়।
ইসলামের মূলনীতি অনুসারে উল্লিখিত প্রতিটি বিষয় স্পষ্ট জুয়া ও হারাম। (আল কিমার ওয়া সোয়ারুহুল মুহাররামাহ)
পৃথিবীর সব মানুষের প্রথম ভাষা কান্না। কান্নার ভাষা সর্বজনীন। সব জায়গা ও সব ভাষার মানুষ কাঁদে। মানুষের কান্নার ভাষা পৃথিবীর সব ভাষাভাষী বোঝে। একজন নবজাতকও দুনিয়াতে নিজের আগমন ও অস্তিত্বের জানান এই কান্নার ভাষায় দিয়ে থাকে। এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক নবজাতককে জন্মের সময় শয়তান...
৪ ঘণ্টা আগেআত্মীয়তা রক্ষার ব্যাপারে ইসলাম কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের শৈথিল্যের সুযোগ ইসলামে নেই। কোরআন ও হাদিসের অসংখ্য জায়গায় বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বর্ণিত হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এ বিষয়ে আমরা অধিকাংশ মানুষই শিথিলতা কিংবা অবহেলা করে থাকি। আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা যে ইমানের...
৫ ঘণ্টা আগেআজান ইসলামের মৌলিক আহ্বান। আজান শুনে মানুষ নামাজের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। শয়তান দূরে পালায়। আজানের সময় আজান শোনা এবং তার জবাব দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। প্রত্যেক আজানের জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমরা আজান শুনতে পাও...
৬ ঘণ্টা আগেমানুষ মানুষের জন্য। একজনের বিপদে আরেকজন এগিয়ে আসা মানবতার পরিচয়। অসুস্থতা, দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে মানুষের রক্তের প্রয়োজন হয়। প্রয়োজনের সময় রক্তের কোনো বিকল্প নেই—তাই অন্য কারও কাছ থেকে রক্ত নিতে হয়।
১৪ ঘণ্টা আগে