মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইসলামি স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং রসায়নবিদ। আল-রাজি ‘রহেসাস’ নামেও পরিচিত। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহ পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসাশাস্ত্রে বিপুল প্রভাব ফেলেছিল। চিকিৎসা, রসায়ন, দর্শন এবং যুক্তিবাদী চিন্তাধারায় তিনি অসাধারণ অবদান রেখেছেন।
জন্ম ও শিক্ষা
আল-রাজি ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পারস্যের রে শহরে (বর্তমান ইরানের তেহরানের নিকটবর্তী) জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি জ্ঞানার্জনের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাজীবনে গণিত, সংগীত এবং দর্শন অধ্যয়ন করেন। পরে চিকিৎসা ও রসায়নের প্রতি আকৃষ্ট হন। বাগদাদের বিখ্যাত জ্ঞানকেন্দ্র বায়তুল হিকমা বা হাউস অব উইজডমে অধ্যয়নের মাধ্যমে তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে পারদর্শী হয়ে ওঠেন।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান
আল-রাজি ছিলেন একাধারে গবেষক ও চিকিৎসক। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মধ্যে রয়েছে:
গুটিবসন্ত ও হাম রোগের পার্থক্য নির্ধারণ: আল-রাজিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি গুটিবসন্ত (Smallpox) এবং হাম (Measles) রোগের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করেন। তাঁর লেখা ‘কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা’ গ্রন্থে এই রোগগুলোর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এই আবিষ্কার পরবর্তী চিকিৎসাশাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
‘কিতাব আল-হাওয়ি’ (The Comprehensive Book on Medicine): আল-রাজির সবচেয়ে বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক গ্রন্থ ‘কিতাব আল-হাওয়ি’, যা চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি বিশাল বিশ্বকোষ হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি সংকলিত হয়েছে। পরবর্তীতে এটি লাতিন ভাষায় অনূদিত হয়ে ইউরোপে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা: আল-রাজি আধুনিক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা উন্নত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি রোগীদের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করেন এবং হাসপাতালের পরিবেশ ও সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন নতুন পদ্ধতি চালু করেন।
রসায়নে অবদান
আল-রাজি রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন। তিনি রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করেন এবং আধুনিক পরীক্ষাগারের ধারণা বিকাশ করেন। তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হলো—
অ্যাসিড ও ক্ষারের গবেষণা: সালফিউরিক অ্যাসিড ও অন্যান্য রাসায়নিক যৌগ নিয়ে গবেষণা করেন।
ল্যাবরেটরি পদ্ধতির উন্নয়ন: রাসায়নিক দ্রব্য বিশ্লেষণের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।
মেডিকেল রসায়ন: অষুধ প্রস্তুতে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।
সামাজিক ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি
আল-রাজি মানবসেবাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, চিকিৎসাশাস্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবকল্যাণ। তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি সমান মনোযোগী।
একটি বিখ্যাত ঘটনা অনুযায়ী, তিনি যখন একটি হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্ব পান, তখন তিনি বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মাংস ঝুলিয়ে রাখেন এবং পরীক্ষা করেন কোথায় মাংস সবচেয়ে ধীরে পচে। সেই স্থানকেই তিনি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নির্বাচিত করেন। এটি আধুনিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ধারণার একটি প্রাথমিক রূপ বলে বিবেচিত হয়।
উত্তরাধিকার
আল-রাজি ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর গবেষণা এবং দর্শন ইউরোপীয় রেনেসাঁ ও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছিল। তাঁর লেখা বহু গ্রন্থ লাতিন, গ্রিক এবং অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়ে পশ্চিমা চিকিৎসাবিদ্যার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাঁর অন্যতম বিখ্যাত গ্রন্থসমূহ:
কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব (The Comprehensive Book on Medicine)
কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা (On Smallpox and Measles)
ফি আল-নবুওয়াত (On Prophethood)
কিতাব আল-মানসুরি (The Mansuri Book of Medicine)
উপসংহার
আবু বকর আল-রাজি ছিলেন সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও দার্শনিক। তিনি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান, রসায়ন ও দর্শনের ক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছেন। তাঁর গবেষণা ও চিন্তাধারা পরবর্তী যুগের চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে আছে। তাঁর কর্ম ও চিন্তাভাবনা শুধু ইসলামি বিশ্বেই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে অনন্য ভূমিকা পালন করেছে।
তথ্যসূত্র:
ইবনে আবি উসাইবিয়া, উয়ুন আল-আনবা ফি তাবাকাত আল-আত্তিবা।
আল-রাজি, কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব।
আল-রাজি, কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা।
ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা।
Nasr, Seyyed Hossein. Science and Civilization in Islam.

আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইসলামি স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং রসায়নবিদ। আল-রাজি ‘রহেসাস’ নামেও পরিচিত। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহ পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসাশাস্ত্রে বিপুল প্রভাব ফেলেছিল। চিকিৎসা, রসায়ন, দর্শন এবং যুক্তিবাদী চিন্তাধারায় তিনি অসাধারণ অবদান রেখেছেন।
জন্ম ও শিক্ষা
আল-রাজি ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পারস্যের রে শহরে (বর্তমান ইরানের তেহরানের নিকটবর্তী) জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি জ্ঞানার্জনের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাজীবনে গণিত, সংগীত এবং দর্শন অধ্যয়ন করেন। পরে চিকিৎসা ও রসায়নের প্রতি আকৃষ্ট হন। বাগদাদের বিখ্যাত জ্ঞানকেন্দ্র বায়তুল হিকমা বা হাউস অব উইজডমে অধ্যয়নের মাধ্যমে তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে পারদর্শী হয়ে ওঠেন।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান
আল-রাজি ছিলেন একাধারে গবেষক ও চিকিৎসক। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মধ্যে রয়েছে:
গুটিবসন্ত ও হাম রোগের পার্থক্য নির্ধারণ: আল-রাজিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি গুটিবসন্ত (Smallpox) এবং হাম (Measles) রোগের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করেন। তাঁর লেখা ‘কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা’ গ্রন্থে এই রোগগুলোর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এই আবিষ্কার পরবর্তী চিকিৎসাশাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
‘কিতাব আল-হাওয়ি’ (The Comprehensive Book on Medicine): আল-রাজির সবচেয়ে বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক গ্রন্থ ‘কিতাব আল-হাওয়ি’, যা চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি বিশাল বিশ্বকোষ হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি সংকলিত হয়েছে। পরবর্তীতে এটি লাতিন ভাষায় অনূদিত হয়ে ইউরোপে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা: আল-রাজি আধুনিক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা উন্নত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি রোগীদের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করেন এবং হাসপাতালের পরিবেশ ও সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন নতুন পদ্ধতি চালু করেন।
রসায়নে অবদান
আল-রাজি রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন। তিনি রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করেন এবং আধুনিক পরীক্ষাগারের ধারণা বিকাশ করেন। তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হলো—
অ্যাসিড ও ক্ষারের গবেষণা: সালফিউরিক অ্যাসিড ও অন্যান্য রাসায়নিক যৌগ নিয়ে গবেষণা করেন।
ল্যাবরেটরি পদ্ধতির উন্নয়ন: রাসায়নিক দ্রব্য বিশ্লেষণের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।
মেডিকেল রসায়ন: অষুধ প্রস্তুতে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।
সামাজিক ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি
আল-রাজি মানবসেবাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, চিকিৎসাশাস্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবকল্যাণ। তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি সমান মনোযোগী।
একটি বিখ্যাত ঘটনা অনুযায়ী, তিনি যখন একটি হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্ব পান, তখন তিনি বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মাংস ঝুলিয়ে রাখেন এবং পরীক্ষা করেন কোথায় মাংস সবচেয়ে ধীরে পচে। সেই স্থানকেই তিনি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নির্বাচিত করেন। এটি আধুনিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ধারণার একটি প্রাথমিক রূপ বলে বিবেচিত হয়।
উত্তরাধিকার
আল-রাজি ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর গবেষণা এবং দর্শন ইউরোপীয় রেনেসাঁ ও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছিল। তাঁর লেখা বহু গ্রন্থ লাতিন, গ্রিক এবং অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়ে পশ্চিমা চিকিৎসাবিদ্যার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাঁর অন্যতম বিখ্যাত গ্রন্থসমূহ:
কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব (The Comprehensive Book on Medicine)
কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা (On Smallpox and Measles)
ফি আল-নবুওয়াত (On Prophethood)
কিতাব আল-মানসুরি (The Mansuri Book of Medicine)
উপসংহার
আবু বকর আল-রাজি ছিলেন সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও দার্শনিক। তিনি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান, রসায়ন ও দর্শনের ক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছেন। তাঁর গবেষণা ও চিন্তাধারা পরবর্তী যুগের চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে আছে। তাঁর কর্ম ও চিন্তাভাবনা শুধু ইসলামি বিশ্বেই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে অনন্য ভূমিকা পালন করেছে।
তথ্যসূত্র:
ইবনে আবি উসাইবিয়া, উয়ুন আল-আনবা ফি তাবাকাত আল-আত্তিবা।
আল-রাজি, কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব।
আল-রাজি, কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা।
ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা।
Nasr, Seyyed Hossein. Science and Civilization in Islam.
মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইসলামি স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং রসায়নবিদ। আল-রাজি ‘রহেসাস’ নামেও পরিচিত। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহ পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসাশাস্ত্রে বিপুল প্রভাব ফেলেছিল। চিকিৎসা, রসায়ন, দর্শন এবং যুক্তিবাদী চিন্তাধারায় তিনি অসাধারণ অবদান রেখেছেন।
জন্ম ও শিক্ষা
আল-রাজি ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পারস্যের রে শহরে (বর্তমান ইরানের তেহরানের নিকটবর্তী) জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি জ্ঞানার্জনের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাজীবনে গণিত, সংগীত এবং দর্শন অধ্যয়ন করেন। পরে চিকিৎসা ও রসায়নের প্রতি আকৃষ্ট হন। বাগদাদের বিখ্যাত জ্ঞানকেন্দ্র বায়তুল হিকমা বা হাউস অব উইজডমে অধ্যয়নের মাধ্যমে তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে পারদর্শী হয়ে ওঠেন।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান
আল-রাজি ছিলেন একাধারে গবেষক ও চিকিৎসক। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মধ্যে রয়েছে:
গুটিবসন্ত ও হাম রোগের পার্থক্য নির্ধারণ: আল-রাজিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি গুটিবসন্ত (Smallpox) এবং হাম (Measles) রোগের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করেন। তাঁর লেখা ‘কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা’ গ্রন্থে এই রোগগুলোর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এই আবিষ্কার পরবর্তী চিকিৎসাশাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
‘কিতাব আল-হাওয়ি’ (The Comprehensive Book on Medicine): আল-রাজির সবচেয়ে বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক গ্রন্থ ‘কিতাব আল-হাওয়ি’, যা চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি বিশাল বিশ্বকোষ হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি সংকলিত হয়েছে। পরবর্তীতে এটি লাতিন ভাষায় অনূদিত হয়ে ইউরোপে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা: আল-রাজি আধুনিক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা উন্নত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি রোগীদের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করেন এবং হাসপাতালের পরিবেশ ও সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন নতুন পদ্ধতি চালু করেন।
রসায়নে অবদান
আল-রাজি রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন। তিনি রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করেন এবং আধুনিক পরীক্ষাগারের ধারণা বিকাশ করেন। তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হলো—
অ্যাসিড ও ক্ষারের গবেষণা: সালফিউরিক অ্যাসিড ও অন্যান্য রাসায়নিক যৌগ নিয়ে গবেষণা করেন।
ল্যাবরেটরি পদ্ধতির উন্নয়ন: রাসায়নিক দ্রব্য বিশ্লেষণের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।
মেডিকেল রসায়ন: অষুধ প্রস্তুতে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।
সামাজিক ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি
আল-রাজি মানবসেবাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, চিকিৎসাশাস্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবকল্যাণ। তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি সমান মনোযোগী।
একটি বিখ্যাত ঘটনা অনুযায়ী, তিনি যখন একটি হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্ব পান, তখন তিনি বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মাংস ঝুলিয়ে রাখেন এবং পরীক্ষা করেন কোথায় মাংস সবচেয়ে ধীরে পচে। সেই স্থানকেই তিনি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নির্বাচিত করেন। এটি আধুনিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ধারণার একটি প্রাথমিক রূপ বলে বিবেচিত হয়।
উত্তরাধিকার
আল-রাজি ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর গবেষণা এবং দর্শন ইউরোপীয় রেনেসাঁ ও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছিল। তাঁর লেখা বহু গ্রন্থ লাতিন, গ্রিক এবং অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়ে পশ্চিমা চিকিৎসাবিদ্যার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাঁর অন্যতম বিখ্যাত গ্রন্থসমূহ:
কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব (The Comprehensive Book on Medicine)
কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা (On Smallpox and Measles)
ফি আল-নবুওয়াত (On Prophethood)
কিতাব আল-মানসুরি (The Mansuri Book of Medicine)
উপসংহার
আবু বকর আল-রাজি ছিলেন সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও দার্শনিক। তিনি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান, রসায়ন ও দর্শনের ক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছেন। তাঁর গবেষণা ও চিন্তাধারা পরবর্তী যুগের চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে আছে। তাঁর কর্ম ও চিন্তাভাবনা শুধু ইসলামি বিশ্বেই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে অনন্য ভূমিকা পালন করেছে।
তথ্যসূত্র:
ইবনে আবি উসাইবিয়া, উয়ুন আল-আনবা ফি তাবাকাত আল-আত্তিবা।
আল-রাজি, কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব।
আল-রাজি, কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা।
ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা।
Nasr, Seyyed Hossein. Science and Civilization in Islam.

আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইসলামি স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং রসায়নবিদ। আল-রাজি ‘রহেসাস’ নামেও পরিচিত। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহ পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসাশাস্ত্রে বিপুল প্রভাব ফেলেছিল। চিকিৎসা, রসায়ন, দর্শন এবং যুক্তিবাদী চিন্তাধারায় তিনি অসাধারণ অবদান রেখেছেন।
জন্ম ও শিক্ষা
আল-রাজি ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পারস্যের রে শহরে (বর্তমান ইরানের তেহরানের নিকটবর্তী) জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি জ্ঞানার্জনের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাজীবনে গণিত, সংগীত এবং দর্শন অধ্যয়ন করেন। পরে চিকিৎসা ও রসায়নের প্রতি আকৃষ্ট হন। বাগদাদের বিখ্যাত জ্ঞানকেন্দ্র বায়তুল হিকমা বা হাউস অব উইজডমে অধ্যয়নের মাধ্যমে তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানে পারদর্শী হয়ে ওঠেন।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান
আল-রাজি ছিলেন একাধারে গবেষক ও চিকিৎসক। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মধ্যে রয়েছে:
গুটিবসন্ত ও হাম রোগের পার্থক্য নির্ধারণ: আল-রাজিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি গুটিবসন্ত (Smallpox) এবং হাম (Measles) রোগের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করেন। তাঁর লেখা ‘কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা’ গ্রন্থে এই রোগগুলোর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এই আবিষ্কার পরবর্তী চিকিৎসাশাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
‘কিতাব আল-হাওয়ি’ (The Comprehensive Book on Medicine): আল-রাজির সবচেয়ে বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক গ্রন্থ ‘কিতাব আল-হাওয়ি’, যা চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি বিশাল বিশ্বকোষ হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি সংকলিত হয়েছে। পরবর্তীতে এটি লাতিন ভাষায় অনূদিত হয়ে ইউরোপে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা: আল-রাজি আধুনিক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা উন্নত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি রোগীদের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করেন এবং হাসপাতালের পরিবেশ ও সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন নতুন পদ্ধতি চালু করেন।
রসায়নে অবদান
আল-রাজি রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন। তিনি রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করেন এবং আধুনিক পরীক্ষাগারের ধারণা বিকাশ করেন। তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হলো—
অ্যাসিড ও ক্ষারের গবেষণা: সালফিউরিক অ্যাসিড ও অন্যান্য রাসায়নিক যৌগ নিয়ে গবেষণা করেন।
ল্যাবরেটরি পদ্ধতির উন্নয়ন: রাসায়নিক দ্রব্য বিশ্লেষণের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।
মেডিকেল রসায়ন: অষুধ প্রস্তুতে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেন।
সামাজিক ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি
আল-রাজি মানবসেবাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, চিকিৎসাশাস্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবকল্যাণ। তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি সমান মনোযোগী।
একটি বিখ্যাত ঘটনা অনুযায়ী, তিনি যখন একটি হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্ব পান, তখন তিনি বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মাংস ঝুলিয়ে রাখেন এবং পরীক্ষা করেন কোথায় মাংস সবচেয়ে ধীরে পচে। সেই স্থানকেই তিনি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নির্বাচিত করেন। এটি আধুনিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ধারণার একটি প্রাথমিক রূপ বলে বিবেচিত হয়।
উত্তরাধিকার
আল-রাজি ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর গবেষণা এবং দর্শন ইউরোপীয় রেনেসাঁ ও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছিল। তাঁর লেখা বহু গ্রন্থ লাতিন, গ্রিক এবং অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়ে পশ্চিমা চিকিৎসাবিদ্যার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাঁর অন্যতম বিখ্যাত গ্রন্থসমূহ:
কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব (The Comprehensive Book on Medicine)
কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা (On Smallpox and Measles)
ফি আল-নবুওয়াত (On Prophethood)
কিতাব আল-মানসুরি (The Mansuri Book of Medicine)
উপসংহার
আবু বকর আল-রাজি ছিলেন সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও দার্শনিক। তিনি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান, রসায়ন ও দর্শনের ক্ষেত্রে অমূল্য অবদান রেখেছেন। তাঁর গবেষণা ও চিন্তাধারা পরবর্তী যুগের চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে আছে। তাঁর কর্ম ও চিন্তাভাবনা শুধু ইসলামি বিশ্বেই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে অনন্য ভূমিকা পালন করেছে।
তথ্যসূত্র:
ইবনে আবি উসাইবিয়া, উয়ুন আল-আনবা ফি তাবাকাত আল-আত্তিবা।
আল-রাজি, কিতাব আল-হাওয়ি ফি আল-তিব্ব।
আল-রাজি, কিতাব আল-জুদরি ওয়াল-হাসবা।
ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা।
Nasr, Seyyed Hossein. Science and Civilization in Islam.

নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেসাকী মাহবুব

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইসলামি স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং রসায়নবিদ। আল-রাজি ‘রহেসাস’ নামেও পরিচিত। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহ...
১০ মার্চ ২০২৫
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইসলামি স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং রসায়নবিদ। আল-রাজি ‘রহেসাস’ নামেও পরিচিত। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহ...
১০ মার্চ ২০২৫
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেমুফতি খালিদ কাসেমি

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)
আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)
দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)
তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)
আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)
দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)
তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইসলামি স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং রসায়নবিদ। আল-রাজি ‘রহেসাস’ নামেও পরিচিত। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহ...
১০ মার্চ ২০২৫
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২১ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৩ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২১ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৩ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইসলামি স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং রসায়নবিদ। আল-রাজি ‘রহেসাস’ নামেও পরিচিত। তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত আবিষ্কারসমূহ...
১০ মার্চ ২০২৫
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে