ইজাজুল হক, ঢাকা

বনি ইসরাইলের একদল লোককে আল্লাহ তাআলা বানর ও শূকরের পরিণত করে শাস্তি দিয়েছিলেন। শনিবারে তাদের মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা কৌশলে অমান্য করতে থাকে। ফলে আল্লাহর আজাব অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। পবিত্র কোরআনের একাধিক সুরার একাধিক আয়াতে এই গল্পের কথা এসেছে। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক আলোচনা এখানে তুলে ধরা হলো।
ঘটনাটি কখন, কোথায় ঘটেছিল
ঘটনাটি কোথায় ঘটেছিল—এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পবিত্র কোরআনে বর্ণিত নেই। তবে এটুকু বলা হয়েছে, ঘটনা সাগর উপকূলের এবং সেখানকার বাসিন্দারা মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মুফাসসিররা এ ব্যাপারে একাধিক জায়গার কথা বলেছেন। তবে প্রসিদ্ধ মত হলো—জায়গাটির নাম আয়লা। লোহিত সাগরের তীরেই এটির অবস্থান। সিনাই থেকে মিসর কিংবা মিসর থেকে মক্কা যাওয়ার পথ থেকে বসতিটি দেখা যেত। (ইবনে কাসির, ফাতহুল বারি)
ঘটনার সময়কাল সম্পর্কেও কোরআনে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই। সময়টি খ্রিষ্টপূর্ব ১১০০ সাল বলে ধারণা করা হয়। প্রসিদ্ধি আছে, ঘটনাটি দাউদ (আ.)-এর যুগের। তবে এ মত সঠিক বলে মনে করেন না অধিকাংশ মুফাসসির। ইবনে কাসির, তাবারি, ইবনে হাইয়ান ও রাজির মতো মুফাসসিররা এই মতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, ঘটনার সময় আয়লা জনপদে কোনো নবী ছিলেন না। বরং ঘটনাটি ঘটেছিল মুসা (আ.) ও দাউদ (আ.)-এর যুগের মাঝামাঝি সময়ে। কোরআনের বর্ণনাশৈলী থেকেই এই মতের পক্ষে প্রমাণ মেলে। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
অবাধ্যতায় যেভাবে জড়িয়েছিল তারা
ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে আসহাবুস সাবতের গল্প নামে পরিচিত। আরবি ‘সাবত’ শব্দের অর্থ শনিবার। আসহাবুস সাবত বলতে তাদের বোঝানো হয়, শনিবারে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করার কারণে যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। মুসা (আ.)-এর আমলে বনি ইসরাইলের সাপ্তাহিক ইবাদতের দিন শনিবার নির্ধারণ করা হয়েছিল। এদিনে তাদের ওপর বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এদিনে তাদের জন্য সাগর থেকে মাছ ধরাও নিষেধ ছিল। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের আরও বলেছিলাম, শনিবারে সীমা লঙ্ঘন করো না এবং তাদের থেকে দৃঢ় ওয়াদা নিয়েছিলাম।’ (সুরা নিসা: ১৫৪)
সাগর উপকূলের জনপদ আয়লার প্রায় সব মানুষই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আল্লাহর বিধান হিসেবে তাঁরা সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে মাছ ধরলেও শনিবারে আল্লাহর ইবাদত করতেন। একসময় আল্লাহ তাঁদের পরীক্ষায় ফেললেন। শনিবারে মাছ শিকার না করার কারণে দেখা গেল, বিপুল পরিমাণ মাছ সমুদ্রের তীরে এসে জড়ো হতে থাকে। ফলে কিছু অবাধ্য মানুষের পক্ষে লোভ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে এবং তারা মাছ ধরতে কৌশলের আশ্রয় নেয়। শুক্রবারে জাল ফেলে বা গর্ত করে রাখত তারা। শনিবারে মাছ এসে সেই জালে বা গর্তে আটকে গেলে রোববারে এসে তারা তা শিকার করে নিত। পরে দেখা গেল, অনেকে শনিবারেই প্রকাশ্যে মাছ ধরতে লাগল। এটি ছিল সরাসরি আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তাদের (মদিনার ইহুদিদের) সাগরতীরের লোকজনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করো, যখন তারা শনিবারে সীমা লঙ্ঘন করত; যখন শনিবার পালনের দিন মাছ তাদের সামনে এসে পানিতে ভাসত। তবে যেদিন তারা শনিবার পালন করত না, সেদিন তা তাদের কাছে আসত না। এভাবেই আমরা তাদের পরীক্ষা করলাম, কারণ তারা অবাধ্যতায় লিপ্ত ছিল। (সুরা আরাফ: ১৬৩)
আল্লাহর আজাব এল যেভাবে
এ সময় আয়লায় তিন ধরনের লোক ছিল। এক. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত। দুই. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং অবাধ্যদের নিষেধও করত না; বরং নিষেধকারীদের বাধা দিত। তিন. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং অবাধ্যদের নিষেধ করত।
এই তিন দলের কথা তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর স্মরণ করো, যখন তাদের একদল বলেছিল, আল্লাহ যাদের ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদের সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের প্রতিপালকের কাছে দায়মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এ জন্য।’ (সুরা আরাফ: ১৬৪)
সমাজের ভালো মানুষগুলোর কথাও যখন অবাধ্যরা শুনল না, তখন আল্লাহ তাদের প্রতি ভীষণ ক্রুদ্ধ হলেন এবং কঠিন সাজা দিলেন। তাদের বানর ও শূকরে পরিণত করলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা শনিবার সম্পর্কে সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাদের তোমরা অবশ্যই চেন, আমি তাদের বলেছিলাম—তোমরা ঘৃণিত বানরে পরিণত হও।’ (সুরা বাকারা: ৬৫) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘বলো, ‘আমি কি তোমাদের এর চেয়ে নিকৃষ্ট পরিণামের সংবাদ দেব, যা আল্লাহর কাছে আছে? যাকে আল্লাহ লানত করেছেন এবং যার প্রতি ক্রোধান্বিত হয়েছেন আর যাদের কাউকে তিনি বানর ও কাউকে শূকর বানিয়েছেন… ।’ (সুরা মায়েদা: ৬০)
কিছু আয়াতে শুধু বানর বানানোর কথা এলেও একটি আয়াতে শূকর বানিয়ে দেওয়ার কথাও এসেছে। কাতাদা বলেছেন, ‘তাদের যুবকদের বানরে এবং বৃদ্ধদের শূকরে পরিণত করা হয়েছিল।’ আর শাস্তি পাওয়ার পরও তারা নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে চিনত এবং তাদের কাছে এসে অঝোরে অশ্রু ঝরাত। (তাফসিরে জাকারিয়া)
কোরআনের আয়াত থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, যারা অবাধ্যদের উপদেশ দিয়েছিলেন, আল্লাহ তাঁদের রক্ষা করেছিলেন। আর যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত ছিল, আল্লাহ তাদের সাজা দিয়েছিলেন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর যে উপদেশ তাদের দেওয়া হয়েছিল, তারা যখন তা ভুলে গেল, তখন যারা অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করত, তাদের আমি উদ্ধার করি। আর যারা অবাধ্য হয়েছিল, তাদের আমি কঠোর শাস্তি দেই।... ’ (আরাফ: ১৬৫)
তবে যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত হননি, আবার নিষেধও করেননি—তাদের পরিণতি কী হয়েছিল, তা সরাসরি কোরআনের আয়াত থেকে জানা যায় না। মুফাসসিরদের কেউ কেউ তাদেরও শাস্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তবে অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে, আল্লাহ তাদের রক্ষা করেছিলেন। (কাসাসুল কোরআন)
একালের বানর-শূকর কি ইহুদিদের বংশধর
অনেকে মনে করেন, একালের বানর-শূকর বনি ইসরাইলের সেই শাস্তিপ্রাপ্ত লোকজনের বংশধর। এ ধারণা সঠিক নয়। কারণ, শাস্তি পাওয়ার তৃতীয় দিনেই তাদের সবার মৃত্যু হয়েছিল এবং তারা পৃথিবীতে বংশবিস্তার করেনি। (কাসাসুল কোরআন)
এক সাহাবি মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, একালের বানর-শূকরগুলো কি সেই রূপান্তরিত ইহুদিদের বংশধর?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন কোনো জাতিকে ধ্বংস করেন বা আজাব দেন, তখন তাদের বংশ পৃথিবীতে বাকি রাখেন না। মূলত বানর-শূকর তাদের আগে থেকেই ছিল।’ (মুসলিম: ২৬৬৩)
কেয়ামতের আগে মানুষ কি বানর-শূকরে পরিণত হবে
বুখারি শরিফের এক হাদিসে কিয়ামতের আগে কিছু মানুষকে বানর ও শূকরে পরিণত করার হুঁশিয়ারি এসেছে। এটিকে হাদিস বিশারদরা কিয়ামতের অন্যতম আলামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু দল সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশমি কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্র হালাল মনে করবে। একইভাবে এমন কিছু দল থাকবে, যারা পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করবে, বিকেল বেলায় যখন তারা পশুর পাল নিয়ে ফিরবে, তখন তাদের কাছে কোনো অভাবী ভিক্ষুক এলে বলবে, আগামীকাল সকালে এসো। এদিকে রাতের আঁধারেই আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দেবেন। পাহাড় ধসিয়ে দেবেন। আর বাকিদের কেয়ামত পর্যন্ত বানর ও শূকর বানিয়ে রাখবেন।’ (বুখারি: ৫৫৯০)
গল্প থেকে শিক্ষা
আসহাবুস সাবতের গল্প থেকে আমাদের জন্য শেখার অনেক উপাদান রয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. সৎ কাজের আদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজে নিষেধ করা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সমাজে কেউ অন্যায় করলে তাকে নিবৃত্ত করার সাধ্যমতো চেষ্টা করার নির্দেশ দেয় ইসলাম। এই মহান দায়িত্ব পালন না করলে সমাজের সবাইকে আল্লাহর শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
দুই. আল্লাহ যা আদেশ করেছেন, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা জরুরি। কোনো প্রকারের কৌশল, বাহানা বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা নিষেধ। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইহুদিরা যে গুনাহগুলো করেছিল, তোমরা তা করিও না। এতে তোমরা তাদের মতো হারাম বিষয় কৌশল করে হালাল করে ফেলবে।’ (ইবনে কাসির)
তিন. বিকৃতির শাস্তি আল্লাহ বিকৃতির মাধ্যমেই দেন। তারা মহান আল্লাহর বিধান বিকৃত করেছিল, আল্লাহ তাদের আকৃতি বিকৃত করে বানর বানিয়ে দেন।
চার. আল্লাহ কোনো বিধান আবশ্যক করে দিলে সেই বিধানের পেছনের কারণ না খুঁজে তা পালন করাই বান্দার প্রধান কর্তব্য।

বনি ইসরাইলের একদল লোককে আল্লাহ তাআলা বানর ও শূকরের পরিণত করে শাস্তি দিয়েছিলেন। শনিবারে তাদের মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা কৌশলে অমান্য করতে থাকে। ফলে আল্লাহর আজাব অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। পবিত্র কোরআনের একাধিক সুরার একাধিক আয়াতে এই গল্পের কথা এসেছে। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক আলোচনা এখানে তুলে ধরা হলো।
ঘটনাটি কখন, কোথায় ঘটেছিল
ঘটনাটি কোথায় ঘটেছিল—এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পবিত্র কোরআনে বর্ণিত নেই। তবে এটুকু বলা হয়েছে, ঘটনা সাগর উপকূলের এবং সেখানকার বাসিন্দারা মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মুফাসসিররা এ ব্যাপারে একাধিক জায়গার কথা বলেছেন। তবে প্রসিদ্ধ মত হলো—জায়গাটির নাম আয়লা। লোহিত সাগরের তীরেই এটির অবস্থান। সিনাই থেকে মিসর কিংবা মিসর থেকে মক্কা যাওয়ার পথ থেকে বসতিটি দেখা যেত। (ইবনে কাসির, ফাতহুল বারি)
ঘটনার সময়কাল সম্পর্কেও কোরআনে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই। সময়টি খ্রিষ্টপূর্ব ১১০০ সাল বলে ধারণা করা হয়। প্রসিদ্ধি আছে, ঘটনাটি দাউদ (আ.)-এর যুগের। তবে এ মত সঠিক বলে মনে করেন না অধিকাংশ মুফাসসির। ইবনে কাসির, তাবারি, ইবনে হাইয়ান ও রাজির মতো মুফাসসিররা এই মতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, ঘটনার সময় আয়লা জনপদে কোনো নবী ছিলেন না। বরং ঘটনাটি ঘটেছিল মুসা (আ.) ও দাউদ (আ.)-এর যুগের মাঝামাঝি সময়ে। কোরআনের বর্ণনাশৈলী থেকেই এই মতের পক্ষে প্রমাণ মেলে। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
অবাধ্যতায় যেভাবে জড়িয়েছিল তারা
ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে আসহাবুস সাবতের গল্প নামে পরিচিত। আরবি ‘সাবত’ শব্দের অর্থ শনিবার। আসহাবুস সাবত বলতে তাদের বোঝানো হয়, শনিবারে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করার কারণে যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। মুসা (আ.)-এর আমলে বনি ইসরাইলের সাপ্তাহিক ইবাদতের দিন শনিবার নির্ধারণ করা হয়েছিল। এদিনে তাদের ওপর বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এদিনে তাদের জন্য সাগর থেকে মাছ ধরাও নিষেধ ছিল। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের আরও বলেছিলাম, শনিবারে সীমা লঙ্ঘন করো না এবং তাদের থেকে দৃঢ় ওয়াদা নিয়েছিলাম।’ (সুরা নিসা: ১৫৪)
সাগর উপকূলের জনপদ আয়লার প্রায় সব মানুষই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আল্লাহর বিধান হিসেবে তাঁরা সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে মাছ ধরলেও শনিবারে আল্লাহর ইবাদত করতেন। একসময় আল্লাহ তাঁদের পরীক্ষায় ফেললেন। শনিবারে মাছ শিকার না করার কারণে দেখা গেল, বিপুল পরিমাণ মাছ সমুদ্রের তীরে এসে জড়ো হতে থাকে। ফলে কিছু অবাধ্য মানুষের পক্ষে লোভ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে এবং তারা মাছ ধরতে কৌশলের আশ্রয় নেয়। শুক্রবারে জাল ফেলে বা গর্ত করে রাখত তারা। শনিবারে মাছ এসে সেই জালে বা গর্তে আটকে গেলে রোববারে এসে তারা তা শিকার করে নিত। পরে দেখা গেল, অনেকে শনিবারেই প্রকাশ্যে মাছ ধরতে লাগল। এটি ছিল সরাসরি আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তাদের (মদিনার ইহুদিদের) সাগরতীরের লোকজনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করো, যখন তারা শনিবারে সীমা লঙ্ঘন করত; যখন শনিবার পালনের দিন মাছ তাদের সামনে এসে পানিতে ভাসত। তবে যেদিন তারা শনিবার পালন করত না, সেদিন তা তাদের কাছে আসত না। এভাবেই আমরা তাদের পরীক্ষা করলাম, কারণ তারা অবাধ্যতায় লিপ্ত ছিল। (সুরা আরাফ: ১৬৩)
আল্লাহর আজাব এল যেভাবে
এ সময় আয়লায় তিন ধরনের লোক ছিল। এক. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত। দুই. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং অবাধ্যদের নিষেধও করত না; বরং নিষেধকারীদের বাধা দিত। তিন. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং অবাধ্যদের নিষেধ করত।
এই তিন দলের কথা তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর স্মরণ করো, যখন তাদের একদল বলেছিল, আল্লাহ যাদের ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদের সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের প্রতিপালকের কাছে দায়মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এ জন্য।’ (সুরা আরাফ: ১৬৪)
সমাজের ভালো মানুষগুলোর কথাও যখন অবাধ্যরা শুনল না, তখন আল্লাহ তাদের প্রতি ভীষণ ক্রুদ্ধ হলেন এবং কঠিন সাজা দিলেন। তাদের বানর ও শূকরে পরিণত করলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা শনিবার সম্পর্কে সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাদের তোমরা অবশ্যই চেন, আমি তাদের বলেছিলাম—তোমরা ঘৃণিত বানরে পরিণত হও।’ (সুরা বাকারা: ৬৫) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘বলো, ‘আমি কি তোমাদের এর চেয়ে নিকৃষ্ট পরিণামের সংবাদ দেব, যা আল্লাহর কাছে আছে? যাকে আল্লাহ লানত করেছেন এবং যার প্রতি ক্রোধান্বিত হয়েছেন আর যাদের কাউকে তিনি বানর ও কাউকে শূকর বানিয়েছেন… ।’ (সুরা মায়েদা: ৬০)
কিছু আয়াতে শুধু বানর বানানোর কথা এলেও একটি আয়াতে শূকর বানিয়ে দেওয়ার কথাও এসেছে। কাতাদা বলেছেন, ‘তাদের যুবকদের বানরে এবং বৃদ্ধদের শূকরে পরিণত করা হয়েছিল।’ আর শাস্তি পাওয়ার পরও তারা নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে চিনত এবং তাদের কাছে এসে অঝোরে অশ্রু ঝরাত। (তাফসিরে জাকারিয়া)
কোরআনের আয়াত থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, যারা অবাধ্যদের উপদেশ দিয়েছিলেন, আল্লাহ তাঁদের রক্ষা করেছিলেন। আর যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত ছিল, আল্লাহ তাদের সাজা দিয়েছিলেন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর যে উপদেশ তাদের দেওয়া হয়েছিল, তারা যখন তা ভুলে গেল, তখন যারা অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করত, তাদের আমি উদ্ধার করি। আর যারা অবাধ্য হয়েছিল, তাদের আমি কঠোর শাস্তি দেই।... ’ (আরাফ: ১৬৫)
তবে যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত হননি, আবার নিষেধও করেননি—তাদের পরিণতি কী হয়েছিল, তা সরাসরি কোরআনের আয়াত থেকে জানা যায় না। মুফাসসিরদের কেউ কেউ তাদেরও শাস্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তবে অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে, আল্লাহ তাদের রক্ষা করেছিলেন। (কাসাসুল কোরআন)
একালের বানর-শূকর কি ইহুদিদের বংশধর
অনেকে মনে করেন, একালের বানর-শূকর বনি ইসরাইলের সেই শাস্তিপ্রাপ্ত লোকজনের বংশধর। এ ধারণা সঠিক নয়। কারণ, শাস্তি পাওয়ার তৃতীয় দিনেই তাদের সবার মৃত্যু হয়েছিল এবং তারা পৃথিবীতে বংশবিস্তার করেনি। (কাসাসুল কোরআন)
এক সাহাবি মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, একালের বানর-শূকরগুলো কি সেই রূপান্তরিত ইহুদিদের বংশধর?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন কোনো জাতিকে ধ্বংস করেন বা আজাব দেন, তখন তাদের বংশ পৃথিবীতে বাকি রাখেন না। মূলত বানর-শূকর তাদের আগে থেকেই ছিল।’ (মুসলিম: ২৬৬৩)
কেয়ামতের আগে মানুষ কি বানর-শূকরে পরিণত হবে
বুখারি শরিফের এক হাদিসে কিয়ামতের আগে কিছু মানুষকে বানর ও শূকরে পরিণত করার হুঁশিয়ারি এসেছে। এটিকে হাদিস বিশারদরা কিয়ামতের অন্যতম আলামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু দল সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশমি কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্র হালাল মনে করবে। একইভাবে এমন কিছু দল থাকবে, যারা পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করবে, বিকেল বেলায় যখন তারা পশুর পাল নিয়ে ফিরবে, তখন তাদের কাছে কোনো অভাবী ভিক্ষুক এলে বলবে, আগামীকাল সকালে এসো। এদিকে রাতের আঁধারেই আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দেবেন। পাহাড় ধসিয়ে দেবেন। আর বাকিদের কেয়ামত পর্যন্ত বানর ও শূকর বানিয়ে রাখবেন।’ (বুখারি: ৫৫৯০)
গল্প থেকে শিক্ষা
আসহাবুস সাবতের গল্প থেকে আমাদের জন্য শেখার অনেক উপাদান রয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. সৎ কাজের আদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজে নিষেধ করা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সমাজে কেউ অন্যায় করলে তাকে নিবৃত্ত করার সাধ্যমতো চেষ্টা করার নির্দেশ দেয় ইসলাম। এই মহান দায়িত্ব পালন না করলে সমাজের সবাইকে আল্লাহর শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
দুই. আল্লাহ যা আদেশ করেছেন, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা জরুরি। কোনো প্রকারের কৌশল, বাহানা বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা নিষেধ। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইহুদিরা যে গুনাহগুলো করেছিল, তোমরা তা করিও না। এতে তোমরা তাদের মতো হারাম বিষয় কৌশল করে হালাল করে ফেলবে।’ (ইবনে কাসির)
তিন. বিকৃতির শাস্তি আল্লাহ বিকৃতির মাধ্যমেই দেন। তারা মহান আল্লাহর বিধান বিকৃত করেছিল, আল্লাহ তাদের আকৃতি বিকৃত করে বানর বানিয়ে দেন।
চার. আল্লাহ কোনো বিধান আবশ্যক করে দিলে সেই বিধানের পেছনের কারণ না খুঁজে তা পালন করাই বান্দার প্রধান কর্তব্য।
ইজাজুল হক, ঢাকা

বনি ইসরাইলের একদল লোককে আল্লাহ তাআলা বানর ও শূকরের পরিণত করে শাস্তি দিয়েছিলেন। শনিবারে তাদের মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা কৌশলে অমান্য করতে থাকে। ফলে আল্লাহর আজাব অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। পবিত্র কোরআনের একাধিক সুরার একাধিক আয়াতে এই গল্পের কথা এসেছে। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক আলোচনা এখানে তুলে ধরা হলো।
ঘটনাটি কখন, কোথায় ঘটেছিল
ঘটনাটি কোথায় ঘটেছিল—এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পবিত্র কোরআনে বর্ণিত নেই। তবে এটুকু বলা হয়েছে, ঘটনা সাগর উপকূলের এবং সেখানকার বাসিন্দারা মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মুফাসসিররা এ ব্যাপারে একাধিক জায়গার কথা বলেছেন। তবে প্রসিদ্ধ মত হলো—জায়গাটির নাম আয়লা। লোহিত সাগরের তীরেই এটির অবস্থান। সিনাই থেকে মিসর কিংবা মিসর থেকে মক্কা যাওয়ার পথ থেকে বসতিটি দেখা যেত। (ইবনে কাসির, ফাতহুল বারি)
ঘটনার সময়কাল সম্পর্কেও কোরআনে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই। সময়টি খ্রিষ্টপূর্ব ১১০০ সাল বলে ধারণা করা হয়। প্রসিদ্ধি আছে, ঘটনাটি দাউদ (আ.)-এর যুগের। তবে এ মত সঠিক বলে মনে করেন না অধিকাংশ মুফাসসির। ইবনে কাসির, তাবারি, ইবনে হাইয়ান ও রাজির মতো মুফাসসিররা এই মতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, ঘটনার সময় আয়লা জনপদে কোনো নবী ছিলেন না। বরং ঘটনাটি ঘটেছিল মুসা (আ.) ও দাউদ (আ.)-এর যুগের মাঝামাঝি সময়ে। কোরআনের বর্ণনাশৈলী থেকেই এই মতের পক্ষে প্রমাণ মেলে। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
অবাধ্যতায় যেভাবে জড়িয়েছিল তারা
ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে আসহাবুস সাবতের গল্প নামে পরিচিত। আরবি ‘সাবত’ শব্দের অর্থ শনিবার। আসহাবুস সাবত বলতে তাদের বোঝানো হয়, শনিবারে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করার কারণে যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। মুসা (আ.)-এর আমলে বনি ইসরাইলের সাপ্তাহিক ইবাদতের দিন শনিবার নির্ধারণ করা হয়েছিল। এদিনে তাদের ওপর বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এদিনে তাদের জন্য সাগর থেকে মাছ ধরাও নিষেধ ছিল। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের আরও বলেছিলাম, শনিবারে সীমা লঙ্ঘন করো না এবং তাদের থেকে দৃঢ় ওয়াদা নিয়েছিলাম।’ (সুরা নিসা: ১৫৪)
সাগর উপকূলের জনপদ আয়লার প্রায় সব মানুষই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আল্লাহর বিধান হিসেবে তাঁরা সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে মাছ ধরলেও শনিবারে আল্লাহর ইবাদত করতেন। একসময় আল্লাহ তাঁদের পরীক্ষায় ফেললেন। শনিবারে মাছ শিকার না করার কারণে দেখা গেল, বিপুল পরিমাণ মাছ সমুদ্রের তীরে এসে জড়ো হতে থাকে। ফলে কিছু অবাধ্য মানুষের পক্ষে লোভ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে এবং তারা মাছ ধরতে কৌশলের আশ্রয় নেয়। শুক্রবারে জাল ফেলে বা গর্ত করে রাখত তারা। শনিবারে মাছ এসে সেই জালে বা গর্তে আটকে গেলে রোববারে এসে তারা তা শিকার করে নিত। পরে দেখা গেল, অনেকে শনিবারেই প্রকাশ্যে মাছ ধরতে লাগল। এটি ছিল সরাসরি আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তাদের (মদিনার ইহুদিদের) সাগরতীরের লোকজনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করো, যখন তারা শনিবারে সীমা লঙ্ঘন করত; যখন শনিবার পালনের দিন মাছ তাদের সামনে এসে পানিতে ভাসত। তবে যেদিন তারা শনিবার পালন করত না, সেদিন তা তাদের কাছে আসত না। এভাবেই আমরা তাদের পরীক্ষা করলাম, কারণ তারা অবাধ্যতায় লিপ্ত ছিল। (সুরা আরাফ: ১৬৩)
আল্লাহর আজাব এল যেভাবে
এ সময় আয়লায় তিন ধরনের লোক ছিল। এক. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত। দুই. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং অবাধ্যদের নিষেধও করত না; বরং নিষেধকারীদের বাধা দিত। তিন. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং অবাধ্যদের নিষেধ করত।
এই তিন দলের কথা তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর স্মরণ করো, যখন তাদের একদল বলেছিল, আল্লাহ যাদের ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদের সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের প্রতিপালকের কাছে দায়মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এ জন্য।’ (সুরা আরাফ: ১৬৪)
সমাজের ভালো মানুষগুলোর কথাও যখন অবাধ্যরা শুনল না, তখন আল্লাহ তাদের প্রতি ভীষণ ক্রুদ্ধ হলেন এবং কঠিন সাজা দিলেন। তাদের বানর ও শূকরে পরিণত করলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা শনিবার সম্পর্কে সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাদের তোমরা অবশ্যই চেন, আমি তাদের বলেছিলাম—তোমরা ঘৃণিত বানরে পরিণত হও।’ (সুরা বাকারা: ৬৫) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘বলো, ‘আমি কি তোমাদের এর চেয়ে নিকৃষ্ট পরিণামের সংবাদ দেব, যা আল্লাহর কাছে আছে? যাকে আল্লাহ লানত করেছেন এবং যার প্রতি ক্রোধান্বিত হয়েছেন আর যাদের কাউকে তিনি বানর ও কাউকে শূকর বানিয়েছেন… ।’ (সুরা মায়েদা: ৬০)
কিছু আয়াতে শুধু বানর বানানোর কথা এলেও একটি আয়াতে শূকর বানিয়ে দেওয়ার কথাও এসেছে। কাতাদা বলেছেন, ‘তাদের যুবকদের বানরে এবং বৃদ্ধদের শূকরে পরিণত করা হয়েছিল।’ আর শাস্তি পাওয়ার পরও তারা নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে চিনত এবং তাদের কাছে এসে অঝোরে অশ্রু ঝরাত। (তাফসিরে জাকারিয়া)
কোরআনের আয়াত থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, যারা অবাধ্যদের উপদেশ দিয়েছিলেন, আল্লাহ তাঁদের রক্ষা করেছিলেন। আর যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত ছিল, আল্লাহ তাদের সাজা দিয়েছিলেন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর যে উপদেশ তাদের দেওয়া হয়েছিল, তারা যখন তা ভুলে গেল, তখন যারা অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করত, তাদের আমি উদ্ধার করি। আর যারা অবাধ্য হয়েছিল, তাদের আমি কঠোর শাস্তি দেই।... ’ (আরাফ: ১৬৫)
তবে যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত হননি, আবার নিষেধও করেননি—তাদের পরিণতি কী হয়েছিল, তা সরাসরি কোরআনের আয়াত থেকে জানা যায় না। মুফাসসিরদের কেউ কেউ তাদেরও শাস্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তবে অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে, আল্লাহ তাদের রক্ষা করেছিলেন। (কাসাসুল কোরআন)
একালের বানর-শূকর কি ইহুদিদের বংশধর
অনেকে মনে করেন, একালের বানর-শূকর বনি ইসরাইলের সেই শাস্তিপ্রাপ্ত লোকজনের বংশধর। এ ধারণা সঠিক নয়। কারণ, শাস্তি পাওয়ার তৃতীয় দিনেই তাদের সবার মৃত্যু হয়েছিল এবং তারা পৃথিবীতে বংশবিস্তার করেনি। (কাসাসুল কোরআন)
এক সাহাবি মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, একালের বানর-শূকরগুলো কি সেই রূপান্তরিত ইহুদিদের বংশধর?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন কোনো জাতিকে ধ্বংস করেন বা আজাব দেন, তখন তাদের বংশ পৃথিবীতে বাকি রাখেন না। মূলত বানর-শূকর তাদের আগে থেকেই ছিল।’ (মুসলিম: ২৬৬৩)
কেয়ামতের আগে মানুষ কি বানর-শূকরে পরিণত হবে
বুখারি শরিফের এক হাদিসে কিয়ামতের আগে কিছু মানুষকে বানর ও শূকরে পরিণত করার হুঁশিয়ারি এসেছে। এটিকে হাদিস বিশারদরা কিয়ামতের অন্যতম আলামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু দল সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশমি কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্র হালাল মনে করবে। একইভাবে এমন কিছু দল থাকবে, যারা পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করবে, বিকেল বেলায় যখন তারা পশুর পাল নিয়ে ফিরবে, তখন তাদের কাছে কোনো অভাবী ভিক্ষুক এলে বলবে, আগামীকাল সকালে এসো। এদিকে রাতের আঁধারেই আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দেবেন। পাহাড় ধসিয়ে দেবেন। আর বাকিদের কেয়ামত পর্যন্ত বানর ও শূকর বানিয়ে রাখবেন।’ (বুখারি: ৫৫৯০)
গল্প থেকে শিক্ষা
আসহাবুস সাবতের গল্প থেকে আমাদের জন্য শেখার অনেক উপাদান রয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. সৎ কাজের আদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজে নিষেধ করা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সমাজে কেউ অন্যায় করলে তাকে নিবৃত্ত করার সাধ্যমতো চেষ্টা করার নির্দেশ দেয় ইসলাম। এই মহান দায়িত্ব পালন না করলে সমাজের সবাইকে আল্লাহর শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
দুই. আল্লাহ যা আদেশ করেছেন, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা জরুরি। কোনো প্রকারের কৌশল, বাহানা বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা নিষেধ। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইহুদিরা যে গুনাহগুলো করেছিল, তোমরা তা করিও না। এতে তোমরা তাদের মতো হারাম বিষয় কৌশল করে হালাল করে ফেলবে।’ (ইবনে কাসির)
তিন. বিকৃতির শাস্তি আল্লাহ বিকৃতির মাধ্যমেই দেন। তারা মহান আল্লাহর বিধান বিকৃত করেছিল, আল্লাহ তাদের আকৃতি বিকৃত করে বানর বানিয়ে দেন।
চার. আল্লাহ কোনো বিধান আবশ্যক করে দিলে সেই বিধানের পেছনের কারণ না খুঁজে তা পালন করাই বান্দার প্রধান কর্তব্য।

বনি ইসরাইলের একদল লোককে আল্লাহ তাআলা বানর ও শূকরের পরিণত করে শাস্তি দিয়েছিলেন। শনিবারে তাদের মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা কৌশলে অমান্য করতে থাকে। ফলে আল্লাহর আজাব অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। পবিত্র কোরআনের একাধিক সুরার একাধিক আয়াতে এই গল্পের কথা এসেছে। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক আলোচনা এখানে তুলে ধরা হলো।
ঘটনাটি কখন, কোথায় ঘটেছিল
ঘটনাটি কোথায় ঘটেছিল—এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পবিত্র কোরআনে বর্ণিত নেই। তবে এটুকু বলা হয়েছে, ঘটনা সাগর উপকূলের এবং সেখানকার বাসিন্দারা মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মুফাসসিররা এ ব্যাপারে একাধিক জায়গার কথা বলেছেন। তবে প্রসিদ্ধ মত হলো—জায়গাটির নাম আয়লা। লোহিত সাগরের তীরেই এটির অবস্থান। সিনাই থেকে মিসর কিংবা মিসর থেকে মক্কা যাওয়ার পথ থেকে বসতিটি দেখা যেত। (ইবনে কাসির, ফাতহুল বারি)
ঘটনার সময়কাল সম্পর্কেও কোরআনে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই। সময়টি খ্রিষ্টপূর্ব ১১০০ সাল বলে ধারণা করা হয়। প্রসিদ্ধি আছে, ঘটনাটি দাউদ (আ.)-এর যুগের। তবে এ মত সঠিক বলে মনে করেন না অধিকাংশ মুফাসসির। ইবনে কাসির, তাবারি, ইবনে হাইয়ান ও রাজির মতো মুফাসসিররা এই মতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, ঘটনার সময় আয়লা জনপদে কোনো নবী ছিলেন না। বরং ঘটনাটি ঘটেছিল মুসা (আ.) ও দাউদ (আ.)-এর যুগের মাঝামাঝি সময়ে। কোরআনের বর্ণনাশৈলী থেকেই এই মতের পক্ষে প্রমাণ মেলে। (ইবনে কাসির, কাসাসুল কোরআন)
অবাধ্যতায় যেভাবে জড়িয়েছিল তারা
ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে আসহাবুস সাবতের গল্প নামে পরিচিত। আরবি ‘সাবত’ শব্দের অর্থ শনিবার। আসহাবুস সাবত বলতে তাদের বোঝানো হয়, শনিবারে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করার কারণে যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। মুসা (আ.)-এর আমলে বনি ইসরাইলের সাপ্তাহিক ইবাদতের দিন শনিবার নির্ধারণ করা হয়েছিল। এদিনে তাদের ওপর বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এদিনে তাদের জন্য সাগর থেকে মাছ ধরাও নিষেধ ছিল। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের আরও বলেছিলাম, শনিবারে সীমা লঙ্ঘন করো না এবং তাদের থেকে দৃঢ় ওয়াদা নিয়েছিলাম।’ (সুরা নিসা: ১৫৪)
সাগর উপকূলের জনপদ আয়লার প্রায় সব মানুষই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আল্লাহর বিধান হিসেবে তাঁরা সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে মাছ ধরলেও শনিবারে আল্লাহর ইবাদত করতেন। একসময় আল্লাহ তাঁদের পরীক্ষায় ফেললেন। শনিবারে মাছ শিকার না করার কারণে দেখা গেল, বিপুল পরিমাণ মাছ সমুদ্রের তীরে এসে জড়ো হতে থাকে। ফলে কিছু অবাধ্য মানুষের পক্ষে লোভ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে এবং তারা মাছ ধরতে কৌশলের আশ্রয় নেয়। শুক্রবারে জাল ফেলে বা গর্ত করে রাখত তারা। শনিবারে মাছ এসে সেই জালে বা গর্তে আটকে গেলে রোববারে এসে তারা তা শিকার করে নিত। পরে দেখা গেল, অনেকে শনিবারেই প্রকাশ্যে মাছ ধরতে লাগল। এটি ছিল সরাসরি আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তাদের (মদিনার ইহুদিদের) সাগরতীরের লোকজনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করো, যখন তারা শনিবারে সীমা লঙ্ঘন করত; যখন শনিবার পালনের দিন মাছ তাদের সামনে এসে পানিতে ভাসত। তবে যেদিন তারা শনিবার পালন করত না, সেদিন তা তাদের কাছে আসত না। এভাবেই আমরা তাদের পরীক্ষা করলাম, কারণ তারা অবাধ্যতায় লিপ্ত ছিল। (সুরা আরাফ: ১৬৩)
আল্লাহর আজাব এল যেভাবে
এ সময় আয়লায় তিন ধরনের লোক ছিল। এক. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত। দুই. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং অবাধ্যদের নিষেধও করত না; বরং নিষেধকারীদের বাধা দিত। তিন. অবাধ্যতার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং অবাধ্যদের নিষেধ করত।
এই তিন দলের কথা তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর স্মরণ করো, যখন তাদের একদল বলেছিল, আল্লাহ যাদের ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদের সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের প্রতিপালকের কাছে দায়মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এ জন্য।’ (সুরা আরাফ: ১৬৪)
সমাজের ভালো মানুষগুলোর কথাও যখন অবাধ্যরা শুনল না, তখন আল্লাহ তাদের প্রতি ভীষণ ক্রুদ্ধ হলেন এবং কঠিন সাজা দিলেন। তাদের বানর ও শূকরে পরিণত করলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা শনিবার সম্পর্কে সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাদের তোমরা অবশ্যই চেন, আমি তাদের বলেছিলাম—তোমরা ঘৃণিত বানরে পরিণত হও।’ (সুরা বাকারা: ৬৫) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘বলো, ‘আমি কি তোমাদের এর চেয়ে নিকৃষ্ট পরিণামের সংবাদ দেব, যা আল্লাহর কাছে আছে? যাকে আল্লাহ লানত করেছেন এবং যার প্রতি ক্রোধান্বিত হয়েছেন আর যাদের কাউকে তিনি বানর ও কাউকে শূকর বানিয়েছেন… ।’ (সুরা মায়েদা: ৬০)
কিছু আয়াতে শুধু বানর বানানোর কথা এলেও একটি আয়াতে শূকর বানিয়ে দেওয়ার কথাও এসেছে। কাতাদা বলেছেন, ‘তাদের যুবকদের বানরে এবং বৃদ্ধদের শূকরে পরিণত করা হয়েছিল।’ আর শাস্তি পাওয়ার পরও তারা নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে চিনত এবং তাদের কাছে এসে অঝোরে অশ্রু ঝরাত। (তাফসিরে জাকারিয়া)
কোরআনের আয়াত থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, যারা অবাধ্যদের উপদেশ দিয়েছিলেন, আল্লাহ তাঁদের রক্ষা করেছিলেন। আর যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত ছিল, আল্লাহ তাদের সাজা দিয়েছিলেন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর যে উপদেশ তাদের দেওয়া হয়েছিল, তারা যখন তা ভুলে গেল, তখন যারা অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করত, তাদের আমি উদ্ধার করি। আর যারা অবাধ্য হয়েছিল, তাদের আমি কঠোর শাস্তি দেই।... ’ (আরাফ: ১৬৫)
তবে যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত হননি, আবার নিষেধও করেননি—তাদের পরিণতি কী হয়েছিল, তা সরাসরি কোরআনের আয়াত থেকে জানা যায় না। মুফাসসিরদের কেউ কেউ তাদেরও শাস্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তবে অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে, আল্লাহ তাদের রক্ষা করেছিলেন। (কাসাসুল কোরআন)
একালের বানর-শূকর কি ইহুদিদের বংশধর
অনেকে মনে করেন, একালের বানর-শূকর বনি ইসরাইলের সেই শাস্তিপ্রাপ্ত লোকজনের বংশধর। এ ধারণা সঠিক নয়। কারণ, শাস্তি পাওয়ার তৃতীয় দিনেই তাদের সবার মৃত্যু হয়েছিল এবং তারা পৃথিবীতে বংশবিস্তার করেনি। (কাসাসুল কোরআন)
এক সাহাবি মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, একালের বানর-শূকরগুলো কি সেই রূপান্তরিত ইহুদিদের বংশধর?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন কোনো জাতিকে ধ্বংস করেন বা আজাব দেন, তখন তাদের বংশ পৃথিবীতে বাকি রাখেন না। মূলত বানর-শূকর তাদের আগে থেকেই ছিল।’ (মুসলিম: ২৬৬৩)
কেয়ামতের আগে মানুষ কি বানর-শূকরে পরিণত হবে
বুখারি শরিফের এক হাদিসে কিয়ামতের আগে কিছু মানুষকে বানর ও শূকরে পরিণত করার হুঁশিয়ারি এসেছে। এটিকে হাদিস বিশারদরা কিয়ামতের অন্যতম আলামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু দল সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশমি কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্র হালাল মনে করবে। একইভাবে এমন কিছু দল থাকবে, যারা পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করবে, বিকেল বেলায় যখন তারা পশুর পাল নিয়ে ফিরবে, তখন তাদের কাছে কোনো অভাবী ভিক্ষুক এলে বলবে, আগামীকাল সকালে এসো। এদিকে রাতের আঁধারেই আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দেবেন। পাহাড় ধসিয়ে দেবেন। আর বাকিদের কেয়ামত পর্যন্ত বানর ও শূকর বানিয়ে রাখবেন।’ (বুখারি: ৫৫৯০)
গল্প থেকে শিক্ষা
আসহাবুস সাবতের গল্প থেকে আমাদের জন্য শেখার অনেক উপাদান রয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. সৎ কাজের আদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজে নিষেধ করা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সমাজে কেউ অন্যায় করলে তাকে নিবৃত্ত করার সাধ্যমতো চেষ্টা করার নির্দেশ দেয় ইসলাম। এই মহান দায়িত্ব পালন না করলে সমাজের সবাইকে আল্লাহর শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
দুই. আল্লাহ যা আদেশ করেছেন, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা জরুরি। কোনো প্রকারের কৌশল, বাহানা বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা নিষেধ। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘ইহুদিরা যে গুনাহগুলো করেছিল, তোমরা তা করিও না। এতে তোমরা তাদের মতো হারাম বিষয় কৌশল করে হালাল করে ফেলবে।’ (ইবনে কাসির)
তিন. বিকৃতির শাস্তি আল্লাহ বিকৃতির মাধ্যমেই দেন। তারা মহান আল্লাহর বিধান বিকৃত করেছিল, আল্লাহ তাদের আকৃতি বিকৃত করে বানর বানিয়ে দেন।
চার. আল্লাহ কোনো বিধান আবশ্যক করে দিলে সেই বিধানের পেছনের কারণ না খুঁজে তা পালন করাই বান্দার প্রধান কর্তব্য।

মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
২০ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ দিন আগেমাহমুদ হাসান ফাহিম

মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১. ‘আল্লাহুম্মা রাহমাতাকা আরজু, ফালা তাকিলনি ইলা নাফসি তারফাতা আইন, ওয়া আসলিহ লি শানি কুল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লাহ আনতা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে রহমত (মনের প্রশান্তি) চাই। আপনি এক মুহূর্তও আমাকে নফসের ওপর ছেড়ে দিয়েন না। বরং আপনিই আমার সমস্ত বিষয় ঠিক করে দিন। আপনি ছাড়া (মনের অস্থিরতা ও বিপদ থেকে রক্ষাকারী) কোনো ইলাহ নেই।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫০০২)
২. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।’ অর্থ: ‘মহান, সহনশীল আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আরশের অধিপতি, মহান আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আসমান ও জমিনের রব এবং সম্মানিত আরশের রব আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। (সহিহ্ মুসলিম: ৬৬৭২)
৩. ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজান, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসাল, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবন, ওয়া জিলাইদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি দুশ্চিন্তা ও পেরেশান থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণভার ও লোকজনের প্রাধান্য থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৯৪)
৪. ‘আল্লাহু, আল্লাহু রাব্বি; লা উশরিকু বিহি শাইআ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রভু, আল্লাহ। আমি আপনার সঙ্গে কাউকে শরিক করি না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫২৫)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোনো কারণে মনে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে উল্লিখিত দোয়াগুলো পড়া। এতে মনের অস্থিরতা ও পেরেশান দূর হবে ইনশা আল্লাহ।
লেখক: মাদ্রাসাশিক্ষক, টঙ্গী, গাজীপুর

মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১. ‘আল্লাহুম্মা রাহমাতাকা আরজু, ফালা তাকিলনি ইলা নাফসি তারফাতা আইন, ওয়া আসলিহ লি শানি কুল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লাহ আনতা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে রহমত (মনের প্রশান্তি) চাই। আপনি এক মুহূর্তও আমাকে নফসের ওপর ছেড়ে দিয়েন না। বরং আপনিই আমার সমস্ত বিষয় ঠিক করে দিন। আপনি ছাড়া (মনের অস্থিরতা ও বিপদ থেকে রক্ষাকারী) কোনো ইলাহ নেই।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫০০২)
২. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।’ অর্থ: ‘মহান, সহনশীল আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আরশের অধিপতি, মহান আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আসমান ও জমিনের রব এবং সম্মানিত আরশের রব আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। (সহিহ্ মুসলিম: ৬৬৭২)
৩. ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজান, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসাল, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবন, ওয়া জিলাইদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি দুশ্চিন্তা ও পেরেশান থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণভার ও লোকজনের প্রাধান্য থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৯৪)
৪. ‘আল্লাহু, আল্লাহু রাব্বি; লা উশরিকু বিহি শাইআ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রভু, আল্লাহ। আমি আপনার সঙ্গে কাউকে শরিক করি না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫২৫)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোনো কারণে মনে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে উল্লিখিত দোয়াগুলো পড়া। এতে মনের অস্থিরতা ও পেরেশান দূর হবে ইনশা আল্লাহ।
লেখক: মাদ্রাসাশিক্ষক, টঙ্গী, গাজীপুর

বনি ইসরাইলের একদল লোককে আল্লাহ তাআলা বানর ও শূকরের পরিণত করে শাস্তি দিয়েছিলেন। শনিবারে তাদের মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা কৌশলে অমান্য করতে থাকে। ফলে আল্লাহর আজাব অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। পবিত্র কোরআনের একাধিক সুরার একাধিক আয়াতে এই গল্পের কথা এসেছে। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক আলোচ
৩০ জানুয়ারি ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
২০ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৯ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৯ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

বনি ইসরাইলের একদল লোককে আল্লাহ তাআলা বানর ও শূকরের পরিণত করে শাস্তি দিয়েছিলেন। শনিবারে তাদের মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা কৌশলে অমান্য করতে থাকে। ফলে আল্লাহর আজাব অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। পবিত্র কোরআনের একাধিক সুরার একাধিক আয়াতে এই গল্পের কথা এসেছে। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক আলোচ
৩০ জানুয়ারি ২০২৩
মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
২০ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

বনি ইসরাইলের একদল লোককে আল্লাহ তাআলা বানর ও শূকরের পরিণত করে শাস্তি দিয়েছিলেন। শনিবারে তাদের মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা কৌশলে অমান্য করতে থাকে। ফলে আল্লাহর আজাব অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। পবিত্র কোরআনের একাধিক সুরার একাধিক আয়াতে এই গল্পের কথা এসেছে। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক আলোচ
৩০ জানুয়ারি ২০২৩
মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বনি ইসরাইলের একদল লোককে আল্লাহ তাআলা বানর ও শূকরের পরিণত করে শাস্তি দিয়েছিলেন। শনিবারে তাদের মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা কৌশলে অমান্য করতে থাকে। ফলে আল্লাহর আজাব অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। পবিত্র কোরআনের একাধিক সুরার একাধিক আয়াতে এই গল্পের কথা এসেছে। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক আলোচ
৩০ জানুয়ারি ২০২৩
মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
২০ ঘণ্টা আগে