Ajker Patrika

সিরাতের সৌরভে মুখরিত রবিউল আউয়াল

আব্দুল্লাহ আলমামুন আশরাফী
সিরাতের সৌরভে মুখরিত রবিউল আউয়াল

পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এই মাসেই পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন মানবজাতির শ্রেষ্ঠ আদর্শ, হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর পবিত্র জীবনবৃত্তান্ত, যা সিরাত নামে পরিচিত, চর্চা ও প্রসারের জন্য এই মাসে নানা ধরনের আয়োজন চোখে পড়ে। সিরাতের সৌরভ ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন সিরাত প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে।

বাংলাদেশ সিরাত অলিম্পিয়াড: সিরাতচর্চাকে জনপ্রিয় করতে বাংলাদেশ সিরাত অলিম্পিয়াড আয়োজন করেছে দেশের সবচেয়ে বড় সিরাত প্রতিযোগিতা। এতে বিজয়ীদের জন্য ওমরাহ, ল্যাপটপসহ মোট ৮ লাখ টাকার পুরস্কার রয়েছে। ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করা যাবে, যার ফি মাত্র ২০০ টাকা। রেজিস্ট্রেশন করলেই সম্পূর্ণ সিলেবাসের বই বিনা মূল্যে পাওয়া যাবে। প্রতিযোগিতাটি তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে: সিলেকশন রাউন্ড (অনলাইন এমসিকিউ), নকআউট কোয়ালিফায়ার্স (অনলাইন ভাইভা) এবং গ্র্যান্ড ফাইনাল (সিরাত প্রেজেন্টেশন)।

মাসিক নকীবের সিরাত প্রতিযোগিতা: জনপ্রিয় সাময়িকী মাসিক নকীবের উদ্যোগে আয়োজিত হচ্ছে সিরাত প্রতিযোগিতা। প্রবন্ধ, কিশোর উপযোগী গল্প, ছড়া, কবিতা ও কুইজ—চারটি ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিতে পারবে। লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ১৫ অক্টোবর ২০২৫।

সৃজনঘর টুয়েলভ মিনিট সিরাত: কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সৃজনঘর আয়োজন করেছে ‘লতিফ ট্রাভেলস টুয়েলভ মিনিট সিরাত ২০২৫’। এই ভিজ্যুয়াল প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রথম তিনজন পাবেন যথাক্রমে ওমরাহ প্যাকেজ, ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ কম্পিউটার। সেরা ৯ জনও পাবেন আকর্ষণীয় পুরস্কার।

তানযীমুল আইম্মাহ ওয়াল উলামার সিরাত প্রতিযোগিতা: গাজীপুর মহানগরের ইমাম ও আলেমদের সংগঠন তানযীমুল আইম্মাহ ওয়াল উলামা সাধারণ শিক্ষিতদের মাঝে সিরাতের আলো ছড়িয়ে দিতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। দুই পর্বে অনুষ্ঠিতব্য এই প্রতিযোগিতার প্রথম পর্ব শুরু হবে ৫ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী প্রথম ১০ জনকে ক্রেস্ট, সম্মাননা ও বই পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রথম তিনজনের জন্য থাকছে অর্থ পুরস্কারও।

দি অনলাইন ইসলামিক স্কুলের সিরাত ফেস্ট: অনলাইন ইসলামিক স্কুল আয়োজিত ‘সিরাত ফেস্ট ২০২৫’ একটি বিশাল অনলাইন প্রতিযোগিতা। এতে চ্যাম্পিয়নকে ৩০ হাজার টাকা এবং রানারআপকে ১৫ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। এ ছাড়া, সেরা ৫০ জনের মাঝে ২ লক্ষাধিক টাকার পুরস্কার বিতরণ করা হবে।

ময়মনসিংহে সিরাত প্রতিযোগিতা: ময়মনসিংহের মুসলিম ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে কিরাত, নাতে রাসুল, বক্তৃতা ও রচনা—চারটি বিষয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাপনার এই আয়োজনটি দুটি ভিন্ন দিনে অনুষ্ঠিত হবে। ১২ সেপ্টেম্বর মেয়েদের এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ছেলেদের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিজয়ীদের মাঝে ১৪ সেপ্টেম্বর পুরস্কার বিতরণ করা হবে।

সুনামগঞ্জে সিরাত প্রতিযোগিতা: লিখনী সাহিত্য সংসদ (লিসাস) সুনামগঞ্জের উদ্যোগে কুইজ, ছড়া-কবিতা ও প্রবন্ধ—এই তিন ক্যাটাগরিতে সিরাত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কুইজ প্রতিযোগিতা অনলাইনে গুগল ফরমের মাধ্যমে এবং অফলাইনে নেওয়া হবে। প্রবন্ধের বিষয় ‘ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মুহাম্মদ (সা.)-এর ভূমিকা’। প্রতি ক্যাটাগরির প্রথম তিনজনকে ৫ হাজার, ৩ হাজার ও ২ হাজার টাকার সমমূল্যের সিরাত গ্রন্থ পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনায় ইসলামের নির্দেশনা

শাব্বির আহমদ
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।

নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলাকে নবী (সা.) ইমানের শাখা বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে...। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (সহিহ বুখারি)।

এমনকি রাস্তা থেকে কাঁটা, ময়লা বা প্রতিবন্ধকতা সরানোকে ইসলামে সদকা বা দান হিসেবে গণ্য করা হয়েছে; যা পরকালে একজন মুমিনের ক্ষমা ও জান্নাত পাওয়ার অসিলা হতে পারে। এ ছাড়া সড়ক দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা এবং যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা ইসলামে সুস্পষ্ট জুলুম ও গুনাহের কাজ।

ইসলাম ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু যান চলাচল নিশ্চিত করাকে বিশেষ সওয়াব লাভের উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাই নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে ট্রাফিক পুলিশ, চালক ও সাধারণ নাগরিক—সবারই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

চালকদের একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে—বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা বা অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটানো গুরুতর অপরাধ। আর ইচ্ছাকৃত বা স্বেচ্ছায় হত্যাকাণ্ডের পরিণাম যেমন জাহান্নাম, তেমনি অসতর্কতাবশত কাউকে হত্যা করলে সে জন্যও কঠিন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে ইসলামে।

সাধারণ নাগরিকদের কর্তব্য হলো চলাচলের সময় রাস্তার প্রধান হকগুলো মেনে চলা। যেমন, দৃষ্টি সংযত রাখা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, নিজে সালাম দেওয়া, কেউ সালাম দিলে তার উত্তর দেওয়া, অন্ধ, বৃদ্ধ, শিশু বা বিপদে পড়া ব্যক্তিকে সাহায্য করা।

আর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের উচিত সড়ক নিরাপদ রাখতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা, অযথা কাউকে হয়রানি না করা, অসদুপায় গ্রহণের সুযোগ কাউকে না দেওয়া, নিজেও গ্রহণ না করা, আইনের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করা।

বিষয়:

সড়কইসলাম
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২২ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৬ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৪২ মিনিট
ফজর০৪: ৪৩ মিনিট০৫: ৫৮ মিনিট
জোহর১১: ৪৪ মিনিট০৩: ৪৯ মিনিট
আসর০৩: ৫০ মিনিট০৫: ২৫ মিনিট
মাগরিব০৫: ২৭ মিনিট০৬: ৪১ মিনিট
এশা০৬: ৪২ মিনিট০৪: ৪২ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ধার্মিকতাই সুখী দাম্পত্যের মূল চাবিকাঠি

ইসলাম ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বিয়ে মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি কেবল দুটি মানুষের মিলন নয়, বরং দুটি পরিবার, দুটি আত্মা ও দুটি হৃদয়ের পবিত্র বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবনে গড়ে ওঠে পারস্পরিক ভালোবাসা, শান্তি ও মধুর সম্পর্ক।

তাই ইসলাম এই সম্পর্ককে শুধু সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখেনি, বরং একে করেছে ইবাদতের অংশ। এ কারণেই নবীজি (সা.) পুরুষদের স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘নারীকে চারটি কারণে বিয়ে করা হয়। ১. তার সম্পদ, ২. তার বংশমর্যাদা, ৩. তার সৌন্দর্য, ৪. তার দ্বীনদার। অতএব তুমি দ্বীনদারকেই প্রাধান্য দাও। না হলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)

এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।

কারণ, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, সম্পদ পরিবর্তনশীল, বংশমর্যাদা বাহ্যিক মর্যাদা মাত্র; কিন্তু দ্বীনদার হলো এমন এক গুণ, যা জীবনকে আখিরাতের সফলতার পথে নিয়ে যায় এবং দাম্পত্যসম্পর্ককে প্রকৃত অর্থে স্থায়ী সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা দেয়।

নবীজি (সা.)-এর এ নির্দেশনার মূল কথা হলো, যখনই দ্বীনদার কোনো নারী পাওয়া যাবে, তখন তাকেই সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো গুণসম্পন্নাকে প্রাধান্য দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।

কারণ দ্বীনদার ছাড়া অন্য সব গুণ একসময় ম্লান হয়ে যায়, কিন্তু দ্বীনদারের আলো দাম্পত্যজীবনকে চিরভালোবাসা, আস্থা ও সন্তুষ্টিতে ভরিয়ে রাখে।

অতএব, একজন মুসলিম যুবকের জন্য স্ত্রী নির্বাচনকালে সর্বোত্তম নির্দেশনা হলো, এমন নারীকে বেছে নেওয়া, যিনি দ্বীনদার, আল্লাহভীরু ও ইসলামি আদর্শে জীবন পরিচালনা করতে অভ্যস্ত। এর মাধ্যমে সংসার হবে শান্তিময়, জীবন হবে কল্যাণময় এবং আখিরাত হবে সফল।

লেখক: ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদ্রাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লজ্জাহীনতা—নৈতিক পতনের প্রথম ধাপ

শাব্বির আহমদ
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

চরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ। কেউ যখন লজ্জাবোধ হারায়, তার তখন নৈতিক পতনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কেননা কোনো পাপকাজে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লজ্জাহীন ব্যক্তির আর কোনো দ্বিধা থাকে না।

নবী করিম (সা.) স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ‘লজ্জা ইমানের একটি বিশেষ শাখা।’ (সহিহ্ বুখারি)। আর এ লজ্জাবোধ মানুষকে ইমান ও স্বচ্ছতার পথে চলতে সহযোগিতা করে। বলা যায়, লজ্জা হলো একটি অভ্যন্তরীণ জবাবদিহির কাঠগড়া, যা মানুষকে পাপ ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। যার মধ্যে লাজুকতা যতটুকু থাকে, সে পাপ ও অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে ততটাই সংকোচবোধ করে।

লজ্জাহীনতা কেন নৈতিক পতনের প্রথম ধাপ? কারণ, যখন লজ্জা চলে যায়, তখন আর কোনো কিছুই নৈতিক মানদণ্ড হিসেবে অবশিষ্ট থাকে না। নবীজি (সা.) চরম লজ্জাহীনতার পরিণতি বোঝাতে গিয়ে বলেন, ‘যখন তুমি নির্লজ্জ হয়ে পড়বে, তখন যা ইচ্ছা তা-ই করো।’ (সহিহ্ বুখারি)। তাঁর এ কথাটি মূলত একটি হুঁশিয়ারি। লজ্জাহীনতা মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজের দিকে ঠেলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত তাকে ইসলামের পথ থেকে বিচ্যুত করে। পক্ষান্তরে লজ্জাশীলতা মানুষকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়। হাদিসের ভাষায়, ‘লজ্জা ইমানের অঙ্গ, আর ইমানদারের স্থান জান্নাত। লজ্জাহীনতা দুশ্চরিত্রের অঙ্গ, আর দুশ্চরিত্রের স্থান জাহান্নাম।’ (জামে তিরমিজি)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত