হেদায়াতুল্লাহ বিন হাবিব, ঢাকা

মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র গড়ার কারিগর। ইলম ও আমলের একজন অপূর্ব সমন্বয়ক। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার প্রায় তিন যুগের অধ্যাপনা। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র, সজ্জন ও সম্ভ্রান্ত। সবার মন জয় করে চলার চমৎকার এক গুণ ছিল তাঁর মাঝে। চলতি বছরের গত ১৮ মে (রবিবার) তিনি দুনিয়ার সফর শেষ করে পরপারে পাড়ি জমান।
৫৮ বছর হায়াত পেয়েছিলেন মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। অল্প সময়ের বর্ণাঢ্য এক জীবনের অধিকারী ছিলেন তিনি। প্রধানত শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা করেছেন সৌদি আরব, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের প্রসিদ্ধ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। বিস্তৃত কর্মজীবনের সুবাদে দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য ছাত্র-শিষ্য, ভক্ত ও অনুরাগী ছড়িয়ে আছে। শায়খের ইন্তেকালে সকলের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। কর্মজীবনের ব্যস্ততা ও দূরত্ব-সহ নানাবিধ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জানাজায় শরিক হতে পারেননি অনেকে। দূর থেকেই প্রিয় শিক্ষকের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেছেন
জন্ম: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) ১৯৬৭ সনের ২৭ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার হিয়ালা গ্রামের স্বনামধন্য চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মাওলানা হারুনুর রশীদ চৌধুরী। পারিবারিকভাবে তাঁরা খুবই সম্ভ্রান্ত, ভদ্র ও সুশিক্ষিত ছিলেন।
শিক্ষাদীক্ষা: তিনি প্রথম জীবনে কিছুদিন কিশোরগঞ্জে তাঁর বাবার কাছে থেকে পড়াশোনা করেন। এরপরে হবিগঞ্জ সদরের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রায়ধর মাদ্রাসায় মক্তব বিভাগে ভর্তি হন। তৎকালীন বাংলাদেশে, বিশেষত সিলেট অঞ্চলে এই মাদ্রাসার খুব সুনাম-সুখ্যাতি ছিল। বড় বড় মনীষী আলেম এখানে পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাওলানা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, মুফতি তাজুল ইসলাম (আরজাবাদ), মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী প্রমুখ। মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) একাধারে শরহে জামি পর্যন্ত সুনাম ও কৃতিত্বের সঙ্গে এখানে পড়াশোনা করেন। এরপর মেশকাত জামাত পর্যন্ত পড়েন বাহুবল কাসিমুল উলুম মাদ্রাসায়। এখান থেকে ১৯৮৮ সনে মেশকাতের পরীক্ষায় ‘দ্বীনি শিক্ষা বোর্ড হবিগঞ্জ’-এ প্রথম স্থান অধিকার করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। সর্বশেষ দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস পড়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি ঘটান।
কর্মজীবন: ১৯৮৯ সনে ছাত্র জীবন শেষ হলে ওই বছরই কর্মের ময়দানে নেমে পড়েন। তাঁর কৃতিত্বের কারণে ছাত্র জীবনের ২য় প্রতিষ্ঠান কাসিমুল উলুম বাহুবল মাদ্রাসা থেকে ডাক আসে। উস্তাদদের পরামর্শে এখানে চলে আসেন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত টানা ১১ বছর মুহাদ্দিস হিসেবে সেখানে কর্মরত থাকেন। এরপরে আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী (রহ.) পরিচালিত জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া উমেদনগর মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। সেখানে দুই বছর অধ্যাপনা করে সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে ‘হাইয়া আমর বিল মারুফ একাডেমিতে’ ইসলাম প্রচারক ও শিক্ষক হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দেশে ফিরে পুনরায় উমেদনগর মাদ্রাসায় পূর্বের পদে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী দারুল আরকাম মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে যুক্ত হোন। পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহিলা মাদ্রাসায়ও হাদিসের পাঠদান করেন।
২০০৭ সালের শুরুতে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার নাজেমে তালিমাত বা শিক্ষাসচিব পদ শূন্য হলে একজন চতুর্মুখী জ্ঞান ও গুণের অধিকারী সুযোগ্য লোকের প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন তাঁর বাল্যবন্ধু এবং দীর্ঘদিনের সহপাঠী, জামেউল উলুম মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আবদুল আজিজ কাসেমী তাঁকে ঢাকায় আসার পরামর্শ দেন। এবং জামেউল উলুম কর্তৃপক্ষ উক্ত পদের জন্য তাঁকে উপযুক্ত মনে করে নিয়োগ কনফার্ম করে। ভাইস প্রিন্সিপাল ও নাজেমে তালিমাত হিসেবে রাজধানীতে তাঁর নতুন কর্মজীবনের সূচনা হয়। সেখানে তিনি সহিহ্ বুখারি, সহিহ্ মুসলিম ও হেদায়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিতাবসমূহ পাঠদান করেন।
পারিবারিক জীবন: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। বড় ছেলে আদনান ইতালিপ্রবাসী। ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। দুই মেয়ের স্বামীরা যোগ্য আলেম এবং কর্মজীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত।
গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম: তিনি মূলত একজন শিক্ষাবিদ আলেম ছিলেন। শিক্ষা কেন্দ্রিক তাঁর অনেক গবেষণা ও কর্ম রয়েছে। হবিগঞ্জ দ্বীনি শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন দুই বছর। তাঁর উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর প্রতিষ্ঠিত আল-ফারুক ইসলামি গবেষণা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘদিন। গবেষণার সুবিধার্থে বাড়িতে স্বতন্ত্র পাঠাগার গড়ে তোলেন বড় পরিসরে। এ ছাড়া কর্মস্থল ঢাকাতেও বইপত্রের বিশাল সমাহার ছিল তাঁর।
সামাজিক অবদান: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) জীবনভর শিক্ষকতা করেছেন দেশ-বিদেশে। ফলে নিজ এলাকায় থাকা হয়েছে খুব কম সময়। তবু শেকড়ের টানে গ্রামের মানুষদের জন্য কিছু করার চিন্তা সব সময় তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াত। সে থেকেই তিনি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হোন। নিজ গ্রামের ‘হিয়ালা তাফসীরুল কোরআন ও ইসলামি সমাজকল্যাণ পরিষদ’র সভাপতি ছিলেন এক যুগেরও অধিক সময়।
রচনাবলি: অধ্যাপনা ও গবেষণার পাশাপাশি মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) বেশ কিছু কিতাব রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য–
১. دراسة المكرم على مقدمة مسلم
২. تقليد المذاهب الأربعة
৩. تعريف اثبت الكلام في القرائة خلف الإمام
৪. খোলাসাতুন্নাহু
৫. স্বপ্ন ব্যাখ্যার মূলনীতি
অসুস্থতা: নিভৃতচারী এ শিক্ষাবিদ দ্বীনের খেদমত করে যাচ্ছিলেন নিরবচ্ছিন্ন। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ২০১৯-২০ সালের দিকে হঠাৎ তাঁর শরীরে এক রোগ দেখা দেয়। রোগের ধরন অনেকটা বিরল–মস্তিষ্কের রগগুলো শুকিয়ে রক্তশূন্য হতে থাকে ক্রমেই। এর প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। আগের মতো সবকিছু মনে রাখতে পারেন না। কথা বলতে কষ্ট হয়। শরীরে কাঁপুনি আসে। ধীরে ধীরে হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে যায়। এমনকি শরীরে প্যারালাইসিসের প্রভাবও দেখা দেয়। অনেক ধরনের চিকিৎসা নেওয়া হয়, ডাক্তার দেখানো হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয় না। এই মরণব্যাধি মাত্র দুই-তিন বছরে একদম অচলাবস্থায় নিয়ে যায় তাঁকে। অনেক সময় হুইল চেয়ারেও চলতে হতো। বিশাল এক কর্মবীরকে চোখের সামনে এভাবেই স্থবির হতে দেখে সবাই।
প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) সর্বদা তাঁর দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। এই সব রোগ-ব্যাধির মাঝেও সকল দায়িত্ব যথাসময়ে পালনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেন। যখন থেকে দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি অনুভব করছিলেন, তখন থেকেই মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি নিতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাঁর প্রতি সদয় হয়ে দরস ও দায়িত্ব কমিয়ে প্রতিবারই অব্যাহতির অনুরোধ নাকচ করে দিচ্ছিল। শায়খের খেদমতের সুবিধার্থে তাঁর স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু মাদ্রাসার বেতন ভোগ করে আগের মতো দায়িত্ব পালন করতে না পারায় তাঁর ভেতরে এক ধরনের পীড়া কাজ করত। তাই সর্বশেষ ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত অব্যাহতি নিয়ে গ্রামে চলে যান।
গ্রামীণ আলো-বাতাস ও প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছুদিন থাকার পরে আগের তুলনায় কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। কিছুটা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এই সময়ে নিজ উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর আগ্রহে তাঁর প্রতিষ্ঠিত নূরে মদীনা মাদ্রাসায় কিছুদিন দরস দেন। কিন্তু কিছুদিন পরে ফের শরীর খারাপ করলে এখান থেকেও অব্যাহতি নিয়ে চলে আসেন। এরপর আমৃত্যু বাড়িতেই কাটান তিনি।
ইন্তেকাল: গত ১২ মে তিনি হার্ট অ্যাটাক করলে তাঁকে সিলেট মাউন্ট এডোরা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালেই রাখা হয়। সেখানেই প্রায় ৬ দিন পরে ১৮ মে সকাল ৭.৪৫ মিনিটে তিনি ইহকালের সফর সমাপ্ত করে পরকালের যাত্রা শুরু করেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শায়খের চিরসজীব হাস্যোজ্জ্বল চেহারা দেখে কবির এই পংক্তিটিই বারবার মনে পড়ছিল–
‘এমন জীবন তুমি করিও গঠন,
মরিলে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন!’
জানাজা: ওই দিনই বাদ আসর জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়। জানাজায় দূর-দুরান্ত থেকে তাঁর ছাত্র, ভক্ত, গুণমুগ্ধরা অংশ নেন। তাঁর সর্বশেষ কর্মস্থল ঢাকা থেকে শতাধিক ছাত্রের এক কাফেলা অংশগ্রহণ করে। কর্মস্থলসমূহের সহকর্মীরাও তাঁকে বিদায় জানাতে আসেন। জানাজার ইমামতি করেন মরহুমের ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান চৌধুরী। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পিতার পাশেই দাফন করা হয়।

মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র গড়ার কারিগর। ইলম ও আমলের একজন অপূর্ব সমন্বয়ক। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার প্রায় তিন যুগের অধ্যাপনা। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র, সজ্জন ও সম্ভ্রান্ত। সবার মন জয় করে চলার চমৎকার এক গুণ ছিল তাঁর মাঝে। চলতি বছরের গত ১৮ মে (রবিবার) তিনি দুনিয়ার সফর শেষ করে পরপারে পাড়ি জমান।
৫৮ বছর হায়াত পেয়েছিলেন মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। অল্প সময়ের বর্ণাঢ্য এক জীবনের অধিকারী ছিলেন তিনি। প্রধানত শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা করেছেন সৌদি আরব, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের প্রসিদ্ধ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। বিস্তৃত কর্মজীবনের সুবাদে দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য ছাত্র-শিষ্য, ভক্ত ও অনুরাগী ছড়িয়ে আছে। শায়খের ইন্তেকালে সকলের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। কর্মজীবনের ব্যস্ততা ও দূরত্ব-সহ নানাবিধ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জানাজায় শরিক হতে পারেননি অনেকে। দূর থেকেই প্রিয় শিক্ষকের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেছেন
জন্ম: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) ১৯৬৭ সনের ২৭ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার হিয়ালা গ্রামের স্বনামধন্য চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মাওলানা হারুনুর রশীদ চৌধুরী। পারিবারিকভাবে তাঁরা খুবই সম্ভ্রান্ত, ভদ্র ও সুশিক্ষিত ছিলেন।
শিক্ষাদীক্ষা: তিনি প্রথম জীবনে কিছুদিন কিশোরগঞ্জে তাঁর বাবার কাছে থেকে পড়াশোনা করেন। এরপরে হবিগঞ্জ সদরের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রায়ধর মাদ্রাসায় মক্তব বিভাগে ভর্তি হন। তৎকালীন বাংলাদেশে, বিশেষত সিলেট অঞ্চলে এই মাদ্রাসার খুব সুনাম-সুখ্যাতি ছিল। বড় বড় মনীষী আলেম এখানে পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাওলানা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, মুফতি তাজুল ইসলাম (আরজাবাদ), মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী প্রমুখ। মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) একাধারে শরহে জামি পর্যন্ত সুনাম ও কৃতিত্বের সঙ্গে এখানে পড়াশোনা করেন। এরপর মেশকাত জামাত পর্যন্ত পড়েন বাহুবল কাসিমুল উলুম মাদ্রাসায়। এখান থেকে ১৯৮৮ সনে মেশকাতের পরীক্ষায় ‘দ্বীনি শিক্ষা বোর্ড হবিগঞ্জ’-এ প্রথম স্থান অধিকার করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। সর্বশেষ দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস পড়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি ঘটান।
কর্মজীবন: ১৯৮৯ সনে ছাত্র জীবন শেষ হলে ওই বছরই কর্মের ময়দানে নেমে পড়েন। তাঁর কৃতিত্বের কারণে ছাত্র জীবনের ২য় প্রতিষ্ঠান কাসিমুল উলুম বাহুবল মাদ্রাসা থেকে ডাক আসে। উস্তাদদের পরামর্শে এখানে চলে আসেন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত টানা ১১ বছর মুহাদ্দিস হিসেবে সেখানে কর্মরত থাকেন। এরপরে আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী (রহ.) পরিচালিত জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া উমেদনগর মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। সেখানে দুই বছর অধ্যাপনা করে সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে ‘হাইয়া আমর বিল মারুফ একাডেমিতে’ ইসলাম প্রচারক ও শিক্ষক হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দেশে ফিরে পুনরায় উমেদনগর মাদ্রাসায় পূর্বের পদে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী দারুল আরকাম মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে যুক্ত হোন। পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহিলা মাদ্রাসায়ও হাদিসের পাঠদান করেন।
২০০৭ সালের শুরুতে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার নাজেমে তালিমাত বা শিক্ষাসচিব পদ শূন্য হলে একজন চতুর্মুখী জ্ঞান ও গুণের অধিকারী সুযোগ্য লোকের প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন তাঁর বাল্যবন্ধু এবং দীর্ঘদিনের সহপাঠী, জামেউল উলুম মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আবদুল আজিজ কাসেমী তাঁকে ঢাকায় আসার পরামর্শ দেন। এবং জামেউল উলুম কর্তৃপক্ষ উক্ত পদের জন্য তাঁকে উপযুক্ত মনে করে নিয়োগ কনফার্ম করে। ভাইস প্রিন্সিপাল ও নাজেমে তালিমাত হিসেবে রাজধানীতে তাঁর নতুন কর্মজীবনের সূচনা হয়। সেখানে তিনি সহিহ্ বুখারি, সহিহ্ মুসলিম ও হেদায়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিতাবসমূহ পাঠদান করেন।
পারিবারিক জীবন: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। বড় ছেলে আদনান ইতালিপ্রবাসী। ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। দুই মেয়ের স্বামীরা যোগ্য আলেম এবং কর্মজীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত।
গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম: তিনি মূলত একজন শিক্ষাবিদ আলেম ছিলেন। শিক্ষা কেন্দ্রিক তাঁর অনেক গবেষণা ও কর্ম রয়েছে। হবিগঞ্জ দ্বীনি শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন দুই বছর। তাঁর উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর প্রতিষ্ঠিত আল-ফারুক ইসলামি গবেষণা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘদিন। গবেষণার সুবিধার্থে বাড়িতে স্বতন্ত্র পাঠাগার গড়ে তোলেন বড় পরিসরে। এ ছাড়া কর্মস্থল ঢাকাতেও বইপত্রের বিশাল সমাহার ছিল তাঁর।
সামাজিক অবদান: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) জীবনভর শিক্ষকতা করেছেন দেশ-বিদেশে। ফলে নিজ এলাকায় থাকা হয়েছে খুব কম সময়। তবু শেকড়ের টানে গ্রামের মানুষদের জন্য কিছু করার চিন্তা সব সময় তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াত। সে থেকেই তিনি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হোন। নিজ গ্রামের ‘হিয়ালা তাফসীরুল কোরআন ও ইসলামি সমাজকল্যাণ পরিষদ’র সভাপতি ছিলেন এক যুগেরও অধিক সময়।
রচনাবলি: অধ্যাপনা ও গবেষণার পাশাপাশি মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) বেশ কিছু কিতাব রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য–
১. دراسة المكرم على مقدمة مسلم
২. تقليد المذاهب الأربعة
৩. تعريف اثبت الكلام في القرائة خلف الإمام
৪. খোলাসাতুন্নাহু
৫. স্বপ্ন ব্যাখ্যার মূলনীতি
অসুস্থতা: নিভৃতচারী এ শিক্ষাবিদ দ্বীনের খেদমত করে যাচ্ছিলেন নিরবচ্ছিন্ন। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ২০১৯-২০ সালের দিকে হঠাৎ তাঁর শরীরে এক রোগ দেখা দেয়। রোগের ধরন অনেকটা বিরল–মস্তিষ্কের রগগুলো শুকিয়ে রক্তশূন্য হতে থাকে ক্রমেই। এর প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। আগের মতো সবকিছু মনে রাখতে পারেন না। কথা বলতে কষ্ট হয়। শরীরে কাঁপুনি আসে। ধীরে ধীরে হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে যায়। এমনকি শরীরে প্যারালাইসিসের প্রভাবও দেখা দেয়। অনেক ধরনের চিকিৎসা নেওয়া হয়, ডাক্তার দেখানো হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয় না। এই মরণব্যাধি মাত্র দুই-তিন বছরে একদম অচলাবস্থায় নিয়ে যায় তাঁকে। অনেক সময় হুইল চেয়ারেও চলতে হতো। বিশাল এক কর্মবীরকে চোখের সামনে এভাবেই স্থবির হতে দেখে সবাই।
প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) সর্বদা তাঁর দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। এই সব রোগ-ব্যাধির মাঝেও সকল দায়িত্ব যথাসময়ে পালনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেন। যখন থেকে দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি অনুভব করছিলেন, তখন থেকেই মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি নিতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাঁর প্রতি সদয় হয়ে দরস ও দায়িত্ব কমিয়ে প্রতিবারই অব্যাহতির অনুরোধ নাকচ করে দিচ্ছিল। শায়খের খেদমতের সুবিধার্থে তাঁর স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু মাদ্রাসার বেতন ভোগ করে আগের মতো দায়িত্ব পালন করতে না পারায় তাঁর ভেতরে এক ধরনের পীড়া কাজ করত। তাই সর্বশেষ ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত অব্যাহতি নিয়ে গ্রামে চলে যান।
গ্রামীণ আলো-বাতাস ও প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছুদিন থাকার পরে আগের তুলনায় কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। কিছুটা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এই সময়ে নিজ উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর আগ্রহে তাঁর প্রতিষ্ঠিত নূরে মদীনা মাদ্রাসায় কিছুদিন দরস দেন। কিন্তু কিছুদিন পরে ফের শরীর খারাপ করলে এখান থেকেও অব্যাহতি নিয়ে চলে আসেন। এরপর আমৃত্যু বাড়িতেই কাটান তিনি।
ইন্তেকাল: গত ১২ মে তিনি হার্ট অ্যাটাক করলে তাঁকে সিলেট মাউন্ট এডোরা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালেই রাখা হয়। সেখানেই প্রায় ৬ দিন পরে ১৮ মে সকাল ৭.৪৫ মিনিটে তিনি ইহকালের সফর সমাপ্ত করে পরকালের যাত্রা শুরু করেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শায়খের চিরসজীব হাস্যোজ্জ্বল চেহারা দেখে কবির এই পংক্তিটিই বারবার মনে পড়ছিল–
‘এমন জীবন তুমি করিও গঠন,
মরিলে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন!’
জানাজা: ওই দিনই বাদ আসর জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়। জানাজায় দূর-দুরান্ত থেকে তাঁর ছাত্র, ভক্ত, গুণমুগ্ধরা অংশ নেন। তাঁর সর্বশেষ কর্মস্থল ঢাকা থেকে শতাধিক ছাত্রের এক কাফেলা অংশগ্রহণ করে। কর্মস্থলসমূহের সহকর্মীরাও তাঁকে বিদায় জানাতে আসেন। জানাজার ইমামতি করেন মরহুমের ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান চৌধুরী। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পিতার পাশেই দাফন করা হয়।
হেদায়াতুল্লাহ বিন হাবিব, ঢাকা

মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র গড়ার কারিগর। ইলম ও আমলের একজন অপূর্ব সমন্বয়ক। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার প্রায় তিন যুগের অধ্যাপনা। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র, সজ্জন ও সম্ভ্রান্ত। সবার মন জয় করে চলার চমৎকার এক গুণ ছিল তাঁর মাঝে। চলতি বছরের গত ১৮ মে (রবিবার) তিনি দুনিয়ার সফর শেষ করে পরপারে পাড়ি জমান।
৫৮ বছর হায়াত পেয়েছিলেন মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। অল্প সময়ের বর্ণাঢ্য এক জীবনের অধিকারী ছিলেন তিনি। প্রধানত শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা করেছেন সৌদি আরব, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের প্রসিদ্ধ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। বিস্তৃত কর্মজীবনের সুবাদে দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য ছাত্র-শিষ্য, ভক্ত ও অনুরাগী ছড়িয়ে আছে। শায়খের ইন্তেকালে সকলের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। কর্মজীবনের ব্যস্ততা ও দূরত্ব-সহ নানাবিধ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জানাজায় শরিক হতে পারেননি অনেকে। দূর থেকেই প্রিয় শিক্ষকের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেছেন
জন্ম: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) ১৯৬৭ সনের ২৭ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার হিয়ালা গ্রামের স্বনামধন্য চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মাওলানা হারুনুর রশীদ চৌধুরী। পারিবারিকভাবে তাঁরা খুবই সম্ভ্রান্ত, ভদ্র ও সুশিক্ষিত ছিলেন।
শিক্ষাদীক্ষা: তিনি প্রথম জীবনে কিছুদিন কিশোরগঞ্জে তাঁর বাবার কাছে থেকে পড়াশোনা করেন। এরপরে হবিগঞ্জ সদরের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রায়ধর মাদ্রাসায় মক্তব বিভাগে ভর্তি হন। তৎকালীন বাংলাদেশে, বিশেষত সিলেট অঞ্চলে এই মাদ্রাসার খুব সুনাম-সুখ্যাতি ছিল। বড় বড় মনীষী আলেম এখানে পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাওলানা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, মুফতি তাজুল ইসলাম (আরজাবাদ), মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী প্রমুখ। মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) একাধারে শরহে জামি পর্যন্ত সুনাম ও কৃতিত্বের সঙ্গে এখানে পড়াশোনা করেন। এরপর মেশকাত জামাত পর্যন্ত পড়েন বাহুবল কাসিমুল উলুম মাদ্রাসায়। এখান থেকে ১৯৮৮ সনে মেশকাতের পরীক্ষায় ‘দ্বীনি শিক্ষা বোর্ড হবিগঞ্জ’-এ প্রথম স্থান অধিকার করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। সর্বশেষ দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস পড়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি ঘটান।
কর্মজীবন: ১৯৮৯ সনে ছাত্র জীবন শেষ হলে ওই বছরই কর্মের ময়দানে নেমে পড়েন। তাঁর কৃতিত্বের কারণে ছাত্র জীবনের ২য় প্রতিষ্ঠান কাসিমুল উলুম বাহুবল মাদ্রাসা থেকে ডাক আসে। উস্তাদদের পরামর্শে এখানে চলে আসেন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত টানা ১১ বছর মুহাদ্দিস হিসেবে সেখানে কর্মরত থাকেন। এরপরে আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী (রহ.) পরিচালিত জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া উমেদনগর মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। সেখানে দুই বছর অধ্যাপনা করে সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে ‘হাইয়া আমর বিল মারুফ একাডেমিতে’ ইসলাম প্রচারক ও শিক্ষক হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দেশে ফিরে পুনরায় উমেদনগর মাদ্রাসায় পূর্বের পদে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী দারুল আরকাম মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে যুক্ত হোন। পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহিলা মাদ্রাসায়ও হাদিসের পাঠদান করেন।
২০০৭ সালের শুরুতে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার নাজেমে তালিমাত বা শিক্ষাসচিব পদ শূন্য হলে একজন চতুর্মুখী জ্ঞান ও গুণের অধিকারী সুযোগ্য লোকের প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন তাঁর বাল্যবন্ধু এবং দীর্ঘদিনের সহপাঠী, জামেউল উলুম মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আবদুল আজিজ কাসেমী তাঁকে ঢাকায় আসার পরামর্শ দেন। এবং জামেউল উলুম কর্তৃপক্ষ উক্ত পদের জন্য তাঁকে উপযুক্ত মনে করে নিয়োগ কনফার্ম করে। ভাইস প্রিন্সিপাল ও নাজেমে তালিমাত হিসেবে রাজধানীতে তাঁর নতুন কর্মজীবনের সূচনা হয়। সেখানে তিনি সহিহ্ বুখারি, সহিহ্ মুসলিম ও হেদায়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিতাবসমূহ পাঠদান করেন।
পারিবারিক জীবন: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। বড় ছেলে আদনান ইতালিপ্রবাসী। ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। দুই মেয়ের স্বামীরা যোগ্য আলেম এবং কর্মজীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত।
গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম: তিনি মূলত একজন শিক্ষাবিদ আলেম ছিলেন। শিক্ষা কেন্দ্রিক তাঁর অনেক গবেষণা ও কর্ম রয়েছে। হবিগঞ্জ দ্বীনি শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন দুই বছর। তাঁর উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর প্রতিষ্ঠিত আল-ফারুক ইসলামি গবেষণা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘদিন। গবেষণার সুবিধার্থে বাড়িতে স্বতন্ত্র পাঠাগার গড়ে তোলেন বড় পরিসরে। এ ছাড়া কর্মস্থল ঢাকাতেও বইপত্রের বিশাল সমাহার ছিল তাঁর।
সামাজিক অবদান: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) জীবনভর শিক্ষকতা করেছেন দেশ-বিদেশে। ফলে নিজ এলাকায় থাকা হয়েছে খুব কম সময়। তবু শেকড়ের টানে গ্রামের মানুষদের জন্য কিছু করার চিন্তা সব সময় তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াত। সে থেকেই তিনি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হোন। নিজ গ্রামের ‘হিয়ালা তাফসীরুল কোরআন ও ইসলামি সমাজকল্যাণ পরিষদ’র সভাপতি ছিলেন এক যুগেরও অধিক সময়।
রচনাবলি: অধ্যাপনা ও গবেষণার পাশাপাশি মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) বেশ কিছু কিতাব রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য–
১. دراسة المكرم على مقدمة مسلم
২. تقليد المذاهب الأربعة
৩. تعريف اثبت الكلام في القرائة خلف الإمام
৪. খোলাসাতুন্নাহু
৫. স্বপ্ন ব্যাখ্যার মূলনীতি
অসুস্থতা: নিভৃতচারী এ শিক্ষাবিদ দ্বীনের খেদমত করে যাচ্ছিলেন নিরবচ্ছিন্ন। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ২০১৯-২০ সালের দিকে হঠাৎ তাঁর শরীরে এক রোগ দেখা দেয়। রোগের ধরন অনেকটা বিরল–মস্তিষ্কের রগগুলো শুকিয়ে রক্তশূন্য হতে থাকে ক্রমেই। এর প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। আগের মতো সবকিছু মনে রাখতে পারেন না। কথা বলতে কষ্ট হয়। শরীরে কাঁপুনি আসে। ধীরে ধীরে হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে যায়। এমনকি শরীরে প্যারালাইসিসের প্রভাবও দেখা দেয়। অনেক ধরনের চিকিৎসা নেওয়া হয়, ডাক্তার দেখানো হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয় না। এই মরণব্যাধি মাত্র দুই-তিন বছরে একদম অচলাবস্থায় নিয়ে যায় তাঁকে। অনেক সময় হুইল চেয়ারেও চলতে হতো। বিশাল এক কর্মবীরকে চোখের সামনে এভাবেই স্থবির হতে দেখে সবাই।
প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) সর্বদা তাঁর দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। এই সব রোগ-ব্যাধির মাঝেও সকল দায়িত্ব যথাসময়ে পালনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেন। যখন থেকে দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি অনুভব করছিলেন, তখন থেকেই মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি নিতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাঁর প্রতি সদয় হয়ে দরস ও দায়িত্ব কমিয়ে প্রতিবারই অব্যাহতির অনুরোধ নাকচ করে দিচ্ছিল। শায়খের খেদমতের সুবিধার্থে তাঁর স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু মাদ্রাসার বেতন ভোগ করে আগের মতো দায়িত্ব পালন করতে না পারায় তাঁর ভেতরে এক ধরনের পীড়া কাজ করত। তাই সর্বশেষ ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত অব্যাহতি নিয়ে গ্রামে চলে যান।
গ্রামীণ আলো-বাতাস ও প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছুদিন থাকার পরে আগের তুলনায় কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। কিছুটা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এই সময়ে নিজ উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর আগ্রহে তাঁর প্রতিষ্ঠিত নূরে মদীনা মাদ্রাসায় কিছুদিন দরস দেন। কিন্তু কিছুদিন পরে ফের শরীর খারাপ করলে এখান থেকেও অব্যাহতি নিয়ে চলে আসেন। এরপর আমৃত্যু বাড়িতেই কাটান তিনি।
ইন্তেকাল: গত ১২ মে তিনি হার্ট অ্যাটাক করলে তাঁকে সিলেট মাউন্ট এডোরা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালেই রাখা হয়। সেখানেই প্রায় ৬ দিন পরে ১৮ মে সকাল ৭.৪৫ মিনিটে তিনি ইহকালের সফর সমাপ্ত করে পরকালের যাত্রা শুরু করেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শায়খের চিরসজীব হাস্যোজ্জ্বল চেহারা দেখে কবির এই পংক্তিটিই বারবার মনে পড়ছিল–
‘এমন জীবন তুমি করিও গঠন,
মরিলে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন!’
জানাজা: ওই দিনই বাদ আসর জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়। জানাজায় দূর-দুরান্ত থেকে তাঁর ছাত্র, ভক্ত, গুণমুগ্ধরা অংশ নেন। তাঁর সর্বশেষ কর্মস্থল ঢাকা থেকে শতাধিক ছাত্রের এক কাফেলা অংশগ্রহণ করে। কর্মস্থলসমূহের সহকর্মীরাও তাঁকে বিদায় জানাতে আসেন। জানাজার ইমামতি করেন মরহুমের ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান চৌধুরী। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পিতার পাশেই দাফন করা হয়।

মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র গড়ার কারিগর। ইলম ও আমলের একজন অপূর্ব সমন্বয়ক। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার প্রায় তিন যুগের অধ্যাপনা। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র, সজ্জন ও সম্ভ্রান্ত। সবার মন জয় করে চলার চমৎকার এক গুণ ছিল তাঁর মাঝে। চলতি বছরের গত ১৮ মে (রবিবার) তিনি দুনিয়ার সফর শেষ করে পরপারে পাড়ি জমান।
৫৮ বছর হায়াত পেয়েছিলেন মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। অল্প সময়ের বর্ণাঢ্য এক জীবনের অধিকারী ছিলেন তিনি। প্রধানত শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা করেছেন সৌদি আরব, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের প্রসিদ্ধ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। বিস্তৃত কর্মজীবনের সুবাদে দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য ছাত্র-শিষ্য, ভক্ত ও অনুরাগী ছড়িয়ে আছে। শায়খের ইন্তেকালে সকলের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। কর্মজীবনের ব্যস্ততা ও দূরত্ব-সহ নানাবিধ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জানাজায় শরিক হতে পারেননি অনেকে। দূর থেকেই প্রিয় শিক্ষকের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেছেন
জন্ম: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) ১৯৬৭ সনের ২৭ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার হিয়ালা গ্রামের স্বনামধন্য চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মাওলানা হারুনুর রশীদ চৌধুরী। পারিবারিকভাবে তাঁরা খুবই সম্ভ্রান্ত, ভদ্র ও সুশিক্ষিত ছিলেন।
শিক্ষাদীক্ষা: তিনি প্রথম জীবনে কিছুদিন কিশোরগঞ্জে তাঁর বাবার কাছে থেকে পড়াশোনা করেন। এরপরে হবিগঞ্জ সদরের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রায়ধর মাদ্রাসায় মক্তব বিভাগে ভর্তি হন। তৎকালীন বাংলাদেশে, বিশেষত সিলেট অঞ্চলে এই মাদ্রাসার খুব সুনাম-সুখ্যাতি ছিল। বড় বড় মনীষী আলেম এখানে পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাওলানা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, মুফতি তাজুল ইসলাম (আরজাবাদ), মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী প্রমুখ। মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) একাধারে শরহে জামি পর্যন্ত সুনাম ও কৃতিত্বের সঙ্গে এখানে পড়াশোনা করেন। এরপর মেশকাত জামাত পর্যন্ত পড়েন বাহুবল কাসিমুল উলুম মাদ্রাসায়। এখান থেকে ১৯৮৮ সনে মেশকাতের পরীক্ষায় ‘দ্বীনি শিক্ষা বোর্ড হবিগঞ্জ’-এ প্রথম স্থান অধিকার করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। সর্বশেষ দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস পড়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি ঘটান।
কর্মজীবন: ১৯৮৯ সনে ছাত্র জীবন শেষ হলে ওই বছরই কর্মের ময়দানে নেমে পড়েন। তাঁর কৃতিত্বের কারণে ছাত্র জীবনের ২য় প্রতিষ্ঠান কাসিমুল উলুম বাহুবল মাদ্রাসা থেকে ডাক আসে। উস্তাদদের পরামর্শে এখানে চলে আসেন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত টানা ১১ বছর মুহাদ্দিস হিসেবে সেখানে কর্মরত থাকেন। এরপরে আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী (রহ.) পরিচালিত জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া উমেদনগর মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। সেখানে দুই বছর অধ্যাপনা করে সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে ‘হাইয়া আমর বিল মারুফ একাডেমিতে’ ইসলাম প্রচারক ও শিক্ষক হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দেশে ফিরে পুনরায় উমেদনগর মাদ্রাসায় পূর্বের পদে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী দারুল আরকাম মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে যুক্ত হোন। পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহিলা মাদ্রাসায়ও হাদিসের পাঠদান করেন।
২০০৭ সালের শুরুতে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার নাজেমে তালিমাত বা শিক্ষাসচিব পদ শূন্য হলে একজন চতুর্মুখী জ্ঞান ও গুণের অধিকারী সুযোগ্য লোকের প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন তাঁর বাল্যবন্ধু এবং দীর্ঘদিনের সহপাঠী, জামেউল উলুম মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আবদুল আজিজ কাসেমী তাঁকে ঢাকায় আসার পরামর্শ দেন। এবং জামেউল উলুম কর্তৃপক্ষ উক্ত পদের জন্য তাঁকে উপযুক্ত মনে করে নিয়োগ কনফার্ম করে। ভাইস প্রিন্সিপাল ও নাজেমে তালিমাত হিসেবে রাজধানীতে তাঁর নতুন কর্মজীবনের সূচনা হয়। সেখানে তিনি সহিহ্ বুখারি, সহিহ্ মুসলিম ও হেদায়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিতাবসমূহ পাঠদান করেন।
পারিবারিক জীবন: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। বড় ছেলে আদনান ইতালিপ্রবাসী। ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। দুই মেয়ের স্বামীরা যোগ্য আলেম এবং কর্মজীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত।
গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম: তিনি মূলত একজন শিক্ষাবিদ আলেম ছিলেন। শিক্ষা কেন্দ্রিক তাঁর অনেক গবেষণা ও কর্ম রয়েছে। হবিগঞ্জ দ্বীনি শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন দুই বছর। তাঁর উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর প্রতিষ্ঠিত আল-ফারুক ইসলামি গবেষণা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘদিন। গবেষণার সুবিধার্থে বাড়িতে স্বতন্ত্র পাঠাগার গড়ে তোলেন বড় পরিসরে। এ ছাড়া কর্মস্থল ঢাকাতেও বইপত্রের বিশাল সমাহার ছিল তাঁর।
সামাজিক অবদান: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) জীবনভর শিক্ষকতা করেছেন দেশ-বিদেশে। ফলে নিজ এলাকায় থাকা হয়েছে খুব কম সময়। তবু শেকড়ের টানে গ্রামের মানুষদের জন্য কিছু করার চিন্তা সব সময় তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াত। সে থেকেই তিনি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হোন। নিজ গ্রামের ‘হিয়ালা তাফসীরুল কোরআন ও ইসলামি সমাজকল্যাণ পরিষদ’র সভাপতি ছিলেন এক যুগেরও অধিক সময়।
রচনাবলি: অধ্যাপনা ও গবেষণার পাশাপাশি মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) বেশ কিছু কিতাব রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য–
১. دراسة المكرم على مقدمة مسلم
২. تقليد المذاهب الأربعة
৩. تعريف اثبت الكلام في القرائة خلف الإمام
৪. খোলাসাতুন্নাহু
৫. স্বপ্ন ব্যাখ্যার মূলনীতি
অসুস্থতা: নিভৃতচারী এ শিক্ষাবিদ দ্বীনের খেদমত করে যাচ্ছিলেন নিরবচ্ছিন্ন। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ২০১৯-২০ সালের দিকে হঠাৎ তাঁর শরীরে এক রোগ দেখা দেয়। রোগের ধরন অনেকটা বিরল–মস্তিষ্কের রগগুলো শুকিয়ে রক্তশূন্য হতে থাকে ক্রমেই। এর প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। আগের মতো সবকিছু মনে রাখতে পারেন না। কথা বলতে কষ্ট হয়। শরীরে কাঁপুনি আসে। ধীরে ধীরে হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে যায়। এমনকি শরীরে প্যারালাইসিসের প্রভাবও দেখা দেয়। অনেক ধরনের চিকিৎসা নেওয়া হয়, ডাক্তার দেখানো হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয় না। এই মরণব্যাধি মাত্র দুই-তিন বছরে একদম অচলাবস্থায় নিয়ে যায় তাঁকে। অনেক সময় হুইল চেয়ারেও চলতে হতো। বিশাল এক কর্মবীরকে চোখের সামনে এভাবেই স্থবির হতে দেখে সবাই।
প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) সর্বদা তাঁর দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। এই সব রোগ-ব্যাধির মাঝেও সকল দায়িত্ব যথাসময়ে পালনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেন। যখন থেকে দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি অনুভব করছিলেন, তখন থেকেই মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি নিতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাঁর প্রতি সদয় হয়ে দরস ও দায়িত্ব কমিয়ে প্রতিবারই অব্যাহতির অনুরোধ নাকচ করে দিচ্ছিল। শায়খের খেদমতের সুবিধার্থে তাঁর স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু মাদ্রাসার বেতন ভোগ করে আগের মতো দায়িত্ব পালন করতে না পারায় তাঁর ভেতরে এক ধরনের পীড়া কাজ করত। তাই সর্বশেষ ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত অব্যাহতি নিয়ে গ্রামে চলে যান।
গ্রামীণ আলো-বাতাস ও প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছুদিন থাকার পরে আগের তুলনায় কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। কিছুটা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এই সময়ে নিজ উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর আগ্রহে তাঁর প্রতিষ্ঠিত নূরে মদীনা মাদ্রাসায় কিছুদিন দরস দেন। কিন্তু কিছুদিন পরে ফের শরীর খারাপ করলে এখান থেকেও অব্যাহতি নিয়ে চলে আসেন। এরপর আমৃত্যু বাড়িতেই কাটান তিনি।
ইন্তেকাল: গত ১২ মে তিনি হার্ট অ্যাটাক করলে তাঁকে সিলেট মাউন্ট এডোরা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালেই রাখা হয়। সেখানেই প্রায় ৬ দিন পরে ১৮ মে সকাল ৭.৪৫ মিনিটে তিনি ইহকালের সফর সমাপ্ত করে পরকালের যাত্রা শুরু করেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শায়খের চিরসজীব হাস্যোজ্জ্বল চেহারা দেখে কবির এই পংক্তিটিই বারবার মনে পড়ছিল–
‘এমন জীবন তুমি করিও গঠন,
মরিলে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন!’
জানাজা: ওই দিনই বাদ আসর জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়। জানাজায় দূর-দুরান্ত থেকে তাঁর ছাত্র, ভক্ত, গুণমুগ্ধরা অংশ নেন। তাঁর সর্বশেষ কর্মস্থল ঢাকা থেকে শতাধিক ছাত্রের এক কাফেলা অংশগ্রহণ করে। কর্মস্থলসমূহের সহকর্মীরাও তাঁকে বিদায় জানাতে আসেন। জানাজার ইমামতি করেন মরহুমের ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান চৌধুরী। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পিতার পাশেই দাফন করা হয়।

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৩ ঘণ্টা আগে
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
১ দিন আগে
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার...
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।
ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।
মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।
রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।
ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।
মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।
রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র গড়ার কারিগর। ইলম ও আমলের একজন অপূর্ব সমন্বয়ক। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার প্রায় তিন যুগের অধ্যাপনা। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত...
২৬ জুন ২০২৫
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৩ ঘণ্টা আগে
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
১ দিন আগে
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার...
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১০ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১১ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৩ মিনিট | ০৩: ৩৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১০ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১০ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১১ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৩ মিনিট | ০৩: ৩৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১০ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র গড়ার কারিগর। ইলম ও আমলের একজন অপূর্ব সমন্বয়ক। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার প্রায় তিন যুগের অধ্যাপনা। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত...
২৬ জুন ২০২৫
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
১ দিন আগে
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার...
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাস বিন আতিককে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রথমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর তাঁকে ছাদখোলা বাসে ঢাকার রাজপথে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এ সময় বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা যে দেশের ক্বারীদের তিলাওয়াত শুনে কেরাত শিখি, সে দেশের প্রতিযোগিতায় আমার এই অর্জন সত্যিই অনেক আনন্দের। কেরাতের রাজধানীখ্যাত মিসরে গিয়ে এ বিজয় অর্জন বেশ কঠিন ছিল। তবে আমার ওস্তাদ, মা-বাবা এবং দেশের মানুষের দোয়ায় তা সম্ভব হয়েছে।’
হাফেজ আনাসের ওস্তাদ শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করেছে আমার প্রিয় ছাত্র হাফেজ আনাস। সে বারবার বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। এবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে সে আবারও সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।’

শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী জানান, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কায়রোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম হয় বাংলাদেশ।
নেছার আহমদ আরও জানান, হাফেজ আনাস বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জাতীয় বাছাইপর্বে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করেন।
প্রসঙ্গত, হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।

মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাস বিন আতিককে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রথমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর তাঁকে ছাদখোলা বাসে ঢাকার রাজপথে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এ সময় বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা যে দেশের ক্বারীদের তিলাওয়াত শুনে কেরাত শিখি, সে দেশের প্রতিযোগিতায় আমার এই অর্জন সত্যিই অনেক আনন্দের। কেরাতের রাজধানীখ্যাত মিসরে গিয়ে এ বিজয় অর্জন বেশ কঠিন ছিল। তবে আমার ওস্তাদ, মা-বাবা এবং দেশের মানুষের দোয়ায় তা সম্ভব হয়েছে।’
হাফেজ আনাসের ওস্তাদ শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করেছে আমার প্রিয় ছাত্র হাফেজ আনাস। সে বারবার বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। এবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে সে আবারও সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।’

শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী জানান, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কায়রোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম হয় বাংলাদেশ।
নেছার আহমদ আরও জানান, হাফেজ আনাস বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জাতীয় বাছাইপর্বে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করেন।
প্রসঙ্গত, হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।

মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র গড়ার কারিগর। ইলম ও আমলের একজন অপূর্ব সমন্বয়ক। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার প্রায় তিন যুগের অধ্যাপনা। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত...
২৬ জুন ২০২৫
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৩ ঘণ্টা আগে
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার...
১ দিন আগেশরিফ আহমাদ

জুমার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। জুমার নামাজ প্রসঙ্গে কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, জুমার দিন যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ত্যাগ করো। এটিই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পারো।’ (সুরা জুমুআ: ৯) তাই আল্লাহর আদেশ মেনে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর এই আদেশ অমান্য করে, জুমার নামাজ ত্যাগ করে, তার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তাঁরা রাসুল (সা.)-কে মিম্বরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন, ‘মানুষ যেন জুমার নামাজ ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকে। অন্যথায় আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেবেন। এরপর তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৬৫)
মুনাফিক ব্যক্তি ছাড়া কোনো মুসলমান ফরজ নামাজ ত্যাগ করতে পারে না। নামাজ আদায়ে বিলম্ব হলে প্রকৃত মুমিনের হৃদয়ে অপরাধপ্রবণতা কাজ করে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিশেষ অপারগতা ছাড়া জুমার নামাজ তরক করে, তার নামে মুনাফিক উপাধি লেখা হয় এমন কিতাবে, যার লেখা মোছা যায় না এবং পরিবর্তনও করা যায় না।’ (কিতাবুল উম্ম: ১/২৩৯)
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার সদকা করে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১০৫৩)

জুমার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। জুমার নামাজ প্রসঙ্গে কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, জুমার দিন যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ত্যাগ করো। এটিই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পারো।’ (সুরা জুমুআ: ৯) তাই আল্লাহর আদেশ মেনে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর এই আদেশ অমান্য করে, জুমার নামাজ ত্যাগ করে, তার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তাঁরা রাসুল (সা.)-কে মিম্বরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন, ‘মানুষ যেন জুমার নামাজ ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকে। অন্যথায় আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেবেন। এরপর তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৬৫)
মুনাফিক ব্যক্তি ছাড়া কোনো মুসলমান ফরজ নামাজ ত্যাগ করতে পারে না। নামাজ আদায়ে বিলম্ব হলে প্রকৃত মুমিনের হৃদয়ে অপরাধপ্রবণতা কাজ করে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিশেষ অপারগতা ছাড়া জুমার নামাজ তরক করে, তার নামে মুনাফিক উপাধি লেখা হয় এমন কিতাবে, যার লেখা মোছা যায় না এবং পরিবর্তনও করা যায় না।’ (কিতাবুল উম্ম: ১/২৩৯)
শুক্রবার জুমার নামাজ ছুটে গেলে সেদিনের জোহরের নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের কাফফারা দিতে হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা ওজরে জুমার নামাজ ত্যাগ করে, সে যেন এক দিনার সদকা করে। যদি তার পক্ষে এক দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) সদকা করা সম্ভব না হয়, তবে যেন অর্ধ দিনার সদকা করে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১০৫৩)

মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র গড়ার কারিগর। ইলম ও আমলের একজন অপূর্ব সমন্বয়ক। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার প্রায় তিন যুগের অধ্যাপনা। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত...
২৬ জুন ২০২৫
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৩ ঘণ্টা আগে
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
১ দিন আগে