রায়হান রাশেদ

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৯তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ফুরকানের ২১ থেকে সুরা শুআরা ও সুরা নামলের ১ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের গুণ, অপচয়, সোলায়মান (আ.) ও পিঁপড়ার ঘটনা, হুদহুদ পাখির সংবাদ সংগ্রহ, সাবার রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—
কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীদের ভয়ানক অবস্থা
সুরা ফুরকানের ২১ থেকে ৩৪ নম্বর আয়াতে অবিশ্বাসীদের কিছু আপত্তি ও অনর্থক দাবির জবাব দেওয়া হয়েছে। তারা বলে, ‘আমাদের কাছে ফেরেশতা আসে না কেন কিংবা কেন আমরা আল্লাহকে দেখি না?’ এসব লোকের অন্তরে রয়েছে গুরুতর ব্যাধি এবং এরা অবাধ্যতায় মেতে উঠেছে। জবাবে বলা হয়েছে, মুশরিকেরা মৃত্যুর সময় ফেরেশতাদের দেখতে পাবে। কিয়ামতের দিনটা হবে জালিমদের জন্য ভয়ানক। সেদিন তাদের আফসোস ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। তারা আফসোস করবে আর আঙুল কামড়ে বলবে, ‘হায়, যদি রাসুলের পথে চলতাম! হায়, যদি অমুককে বন্ধু না বানাতাম!’
আল্লাহর বান্দাদের ১৪ গুণ
সুরা ফুরকানের ৬৩ থেকে ৭৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহর বান্দাদের বিশেষ কিছু গুণের কথা বলা হয়েছে। যথা—
১. তাঁরা পৃথিবীতে বিনয়ের সঙ্গে চলাফেরা করে
২. মূর্খদের মার্জনা করে
৩. রাত জেগে ইবাদত করে
৪. জাহান্নামের আজাবের ভয় করে
৫. তাঁরা মিতব্যয়ী
৬. আল্লাহর ইবাদত করে
৭. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে না
৮. ব্যভিচার করে না
৯. পাপ করলে তওবা করে
১০. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না
১১. বেহুদা আমোদ-প্রমোদ এড়িয়ে চলে
১২. আল্লাহর কালাম যথাযথ শোনে
১৩. উত্তম স্ত্রী ও সন্তান লাভে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে
১৪. সঠিক পথের দিশা ও অন্যদের সঠিক পথ দেখানোর তৌফিক কামনা করে
সুরা শুআরা—বিভিন্ন জাতি ধ্বংসের বর্ণনা
সুরা শুআরা মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াতসংখ্যা ২২৭। কোরআনের ২৬তম সুরা এটি। সুরার শুরুতে আল্লাহ তাআলা নবীজি (সা.)কে সান্ত্বনা দিয়েছেন। কাফেররা ইমান না আনার কারণে নবীজির মন খারাপ হতো। আল্লাহ চাইলে পৃথিবীর সবাই ইমানদার হয়ে যেতে বাধ্য। কিন্তু তিনি কাউকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করেন না। মানুষের কাছে উপদেশ ও নিদর্শন পাঠিয়ে গ্রহণ-অগ্রহণের সুযোগ দেন।
এই সুরার ১০ থেকে ১৯১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মুসা-হারুন (আ.) ও ফেরাউনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ, ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পিতার কাহিনি, নুহ (আ.)-এর জাতি ধ্বংসের কারণ, হুদ (আ.) ও আদ জাতির বর্ণনা, সালেহ (আ.) ও সামুদ জাতির ঘটনা, লুত (আ.)-এর জাতি ধ্বংসের কারণ, শোয়াইব (আ.) ও মাদায়েনবাসীর বিবরণ উল্লেখ রয়েছে।
সুরা নামল—পিঁপড়ার গল্পগাথা
সুরা নামল মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াতের সংখ্যা ৯৩। কোরআনের ২৭তম সুরা এটি। নামল অর্থ পিঁপড়া। এ সুরায় সোলায়মান (আ.)-এর সঙ্গে পিঁপড়ার কথোপকথন স্থান পাওয়ায় এটিকে সুরা নামল বলা হয়।
পিঁপড়া যেভাবে স্বজাতিকে রক্ষা করেছিল
সোলায়মান (আ.)কে আল্লাহ তাআলা বিশেষ জ্ঞান ও ক্ষমতা দান করেছিলেন। তিনি বাদশাহ ও অঢেল ধন-সম্পদের অধিকারী ছিলেন। তাঁর কাছে ওই সময়ে মানবসমাজে ব্যবহৃত সব ধরনের বস্তুসামগ্রীসহ বিশাল সেনাবাহিনী ছিল। রাজ্য নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার কাজে তিনি জিন ও পাখিসহ অন্য প্রাণীদের কাজে লাগাতেন। তিনি মানুষের ভাষাসহ অন্যান্য প্রাণীর ভাষা বুঝতেন।
আল্লাহ বলেন, ‘যখন সোলায়মান ও তার বাহিনী পিঁপড়ার উপত্যকায় পৌঁছাল, তখন এক নারী পিঁপড়া বলল, হে পিঁপড়ারা, গর্তে প্রবেশ করো। এমন যেন না হয়, সোলায়মান এবং তার সৈন্যরা তোমাদের পিষে ফেলবে, তোমরা তা টেরও পাবে না। সোলায়মান (আ.) পিঁপড়ার কথায় মৃদু হাসলেন।’ (সুরা নামল: ১৮)
সুরা নামলের উল্লিখিত আয়াত থেকে পিঁপড়ার জীবনযাত্রা সম্পর্কে চারটি ধারণা পাওয়া যায়।
১. পিঁপড়া কথা বলতে পারে। যেমন আয়াতে বর্ণিত পিঁপড়াটি অন্যদের সঙ্গে করেছে।
২. পিঁপড়া নারীশাসিত পতঙ্গ। তাদের একজন রানি থাকে। পুরুষ পিঁপড়া ঘরে, নারী পিঁপড়া বাইরে থাকে। যখন সোলায়মান (আ.) এবং তাঁর বাহিনী এসে পড়ে, রানি সবাইকে নিজ নিজ ঘরে প্রবেশের নির্দেশ দেয়।
৩. পিঁপড়া আলাদা করে মানুষ চিনতে পারে। যেমন সোলায়মান (আ.)-কে চিনেছিল।
৪. পিঁপড়া বিপৎসংকেত বুঝতে পারে। পিঁপড়া সোলায়মানের আগমন এবং বিপৎসংকেত বুঝতে পেরে সবাইকে সতর্ক করেছিল।
আল্লাহর বিস্ময়কর সৃষ্টি পিঁপড়া। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে ২২ হাজার প্রজাতির পিঁপড়া রয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞানীরা ১২ হাজার ৫০০ প্রজাতির পিঁপড়ার শ্রেণিবিন্যাস করতে পেরেছেন। পিঁপড়া-মানবখ্যাত পতঙ্গবিজ্ঞানী ড. উইলসনের মতে, পিঁপড়া বিবেকসম্পন্ন, সামাজিক ও পরিশ্রমী প্রাণী। নিজস্ব বাজার এবং উন্নতমানের যোগাযোগব্যবস্থাও রয়েছে তাদের মধ্যে। তারা খাদ্য সঞ্চয় করে। পিঁপড়ারা মানুষের মতোই তাদের মৃতদেহ কবর দেয়। পোকামাকড়দের মধ্যে সবচেয়ে বড় মস্তিষ্কের অধিকারী হলো পিঁপড়া। অন্য প্রাণীদের তুলনায় এদের মস্তিষ্কে প্রায় আড়াই লাখ কোষ বেশি রয়েছে।
রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণ
সুরা নামলের ২০ থেকে ৩১ নম্বর আয়াতে সোলায়মান (আ.)-এর সংবাদ সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে হুদহুদ পাখির উল্লেখ রয়েছে। সোলায়মান (আ.)-এর রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত হতো হুদহুদ পাখি। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে কী হচ্ছে, কী চিন্তা-ভাবনা চলছে, কোথায় কী ঘটছে, কোন রাজা কোথায় সৈন্য পাঠাচ্ছে, কেন পাঠাচ্ছে ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তিনি এই পাখি ব্যবহার করতেন। নবী একবার পাখিকে খুঁজে পাচ্ছেন না। কোরআনে ঘটনার বর্ণনা এসেছে এভাবে, ‘একদিন সোলায়মান (আ.) পাখিদের খোঁজখবর নিলেন, এরপর বললেন, কী হলো, হুদহুদকে দেখছি না কেন? নাকি সে অনুপস্থিত? আমি অবশ্যই তাকে কঠোর শাস্তি দেব কিংবা হত্যা করব, যদি না সে অনুপস্থিত থাকার যথাযথ কারণ দেখায়। কিছুক্ষণ পর হুদহুদ এসে বলল, আপনি অবগত নন এমন একটি বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। আমি সাবা থেকে নিশ্চিত সংবাদ নিয়ে আগমন করেছি। আমি এক নারীকে সাবাবাসীর ওপর রাজত্ব করতে দেখেছি। তাকে সবকিছুই দেওয়া হয়েছে এবং তার একটা বিরাট সিংহাসন আছে। আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সিজদা করছে। শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যাবলি সুশোভিত করে দিয়েছে। এরপর তাদের সৎপথ থেকে নিবৃত্ত করেছে। অতএব তারা সৎপথ পায় না।’ (সুরা নামল: ২০-২৪)
সোলায়মান (আ.) রানি বিলকিসের কাছে বার্তা পাঠালেন। সব ভেবেচিন্তে তিনি নবীর দরবারে এলেন। রাজপ্রাসাদের স্বচ্ছ কাচের সড়কে ভ্রমে পড়ে গেলেন এবং গোড়ালির কাপড় টেনে ওপরে তুলে ফেললেন। স্বচ্ছ স্ফটিক নির্মিত প্রাসাদ দেখে রানি যারপরনাই বিস্মিত হলেন। এদিকে আবার নিজের সিংসাহন সোলায়মানের কাছে দেখে বিস্ময়ে তাজ্জব বনে গেলেন। পরে সোলায়মান (আ.)-এর ধর্মে দীক্ষিত হন।
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে পূর্ববর্তী নবী ও তাঁদের জাতি, আল্লাহর একাত্ববাদ, কোরআনের নেয়ামত, অবিশ্বাসীদের প্রশ্নের জবাব, আল্লাহর নেয়ামত, অহংকার, ব্যবসায় সঠিক ওজন দেওয়া, মানুষের হক নষ্টের পরিণাম, বিভিন্ন জাতির ধ্বংসের বিবরণ, মুমিন জীবনে পরীক্ষা ও মুমিনদের পুরস্কার ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৯তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ফুরকানের ২১ থেকে সুরা শুআরা ও সুরা নামলের ১ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের গুণ, অপচয়, সোলায়মান (আ.) ও পিঁপড়ার ঘটনা, হুদহুদ পাখির সংবাদ সংগ্রহ, সাবার রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—
কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীদের ভয়ানক অবস্থা
সুরা ফুরকানের ২১ থেকে ৩৪ নম্বর আয়াতে অবিশ্বাসীদের কিছু আপত্তি ও অনর্থক দাবির জবাব দেওয়া হয়েছে। তারা বলে, ‘আমাদের কাছে ফেরেশতা আসে না কেন কিংবা কেন আমরা আল্লাহকে দেখি না?’ এসব লোকের অন্তরে রয়েছে গুরুতর ব্যাধি এবং এরা অবাধ্যতায় মেতে উঠেছে। জবাবে বলা হয়েছে, মুশরিকেরা মৃত্যুর সময় ফেরেশতাদের দেখতে পাবে। কিয়ামতের দিনটা হবে জালিমদের জন্য ভয়ানক। সেদিন তাদের আফসোস ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। তারা আফসোস করবে আর আঙুল কামড়ে বলবে, ‘হায়, যদি রাসুলের পথে চলতাম! হায়, যদি অমুককে বন্ধু না বানাতাম!’
আল্লাহর বান্দাদের ১৪ গুণ
সুরা ফুরকানের ৬৩ থেকে ৭৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহর বান্দাদের বিশেষ কিছু গুণের কথা বলা হয়েছে। যথা—
১. তাঁরা পৃথিবীতে বিনয়ের সঙ্গে চলাফেরা করে
২. মূর্খদের মার্জনা করে
৩. রাত জেগে ইবাদত করে
৪. জাহান্নামের আজাবের ভয় করে
৫. তাঁরা মিতব্যয়ী
৬. আল্লাহর ইবাদত করে
৭. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে না
৮. ব্যভিচার করে না
৯. পাপ করলে তওবা করে
১০. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না
১১. বেহুদা আমোদ-প্রমোদ এড়িয়ে চলে
১২. আল্লাহর কালাম যথাযথ শোনে
১৩. উত্তম স্ত্রী ও সন্তান লাভে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে
১৪. সঠিক পথের দিশা ও অন্যদের সঠিক পথ দেখানোর তৌফিক কামনা করে
সুরা শুআরা—বিভিন্ন জাতি ধ্বংসের বর্ণনা
সুরা শুআরা মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াতসংখ্যা ২২৭। কোরআনের ২৬তম সুরা এটি। সুরার শুরুতে আল্লাহ তাআলা নবীজি (সা.)কে সান্ত্বনা দিয়েছেন। কাফেররা ইমান না আনার কারণে নবীজির মন খারাপ হতো। আল্লাহ চাইলে পৃথিবীর সবাই ইমানদার হয়ে যেতে বাধ্য। কিন্তু তিনি কাউকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করেন না। মানুষের কাছে উপদেশ ও নিদর্শন পাঠিয়ে গ্রহণ-অগ্রহণের সুযোগ দেন।
এই সুরার ১০ থেকে ১৯১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মুসা-হারুন (আ.) ও ফেরাউনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ, ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পিতার কাহিনি, নুহ (আ.)-এর জাতি ধ্বংসের কারণ, হুদ (আ.) ও আদ জাতির বর্ণনা, সালেহ (আ.) ও সামুদ জাতির ঘটনা, লুত (আ.)-এর জাতি ধ্বংসের কারণ, শোয়াইব (আ.) ও মাদায়েনবাসীর বিবরণ উল্লেখ রয়েছে।
সুরা নামল—পিঁপড়ার গল্পগাথা
সুরা নামল মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াতের সংখ্যা ৯৩। কোরআনের ২৭তম সুরা এটি। নামল অর্থ পিঁপড়া। এ সুরায় সোলায়মান (আ.)-এর সঙ্গে পিঁপড়ার কথোপকথন স্থান পাওয়ায় এটিকে সুরা নামল বলা হয়।
পিঁপড়া যেভাবে স্বজাতিকে রক্ষা করেছিল
সোলায়মান (আ.)কে আল্লাহ তাআলা বিশেষ জ্ঞান ও ক্ষমতা দান করেছিলেন। তিনি বাদশাহ ও অঢেল ধন-সম্পদের অধিকারী ছিলেন। তাঁর কাছে ওই সময়ে মানবসমাজে ব্যবহৃত সব ধরনের বস্তুসামগ্রীসহ বিশাল সেনাবাহিনী ছিল। রাজ্য নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার কাজে তিনি জিন ও পাখিসহ অন্য প্রাণীদের কাজে লাগাতেন। তিনি মানুষের ভাষাসহ অন্যান্য প্রাণীর ভাষা বুঝতেন।
আল্লাহ বলেন, ‘যখন সোলায়মান ও তার বাহিনী পিঁপড়ার উপত্যকায় পৌঁছাল, তখন এক নারী পিঁপড়া বলল, হে পিঁপড়ারা, গর্তে প্রবেশ করো। এমন যেন না হয়, সোলায়মান এবং তার সৈন্যরা তোমাদের পিষে ফেলবে, তোমরা তা টেরও পাবে না। সোলায়মান (আ.) পিঁপড়ার কথায় মৃদু হাসলেন।’ (সুরা নামল: ১৮)
সুরা নামলের উল্লিখিত আয়াত থেকে পিঁপড়ার জীবনযাত্রা সম্পর্কে চারটি ধারণা পাওয়া যায়।
১. পিঁপড়া কথা বলতে পারে। যেমন আয়াতে বর্ণিত পিঁপড়াটি অন্যদের সঙ্গে করেছে।
২. পিঁপড়া নারীশাসিত পতঙ্গ। তাদের একজন রানি থাকে। পুরুষ পিঁপড়া ঘরে, নারী পিঁপড়া বাইরে থাকে। যখন সোলায়মান (আ.) এবং তাঁর বাহিনী এসে পড়ে, রানি সবাইকে নিজ নিজ ঘরে প্রবেশের নির্দেশ দেয়।
৩. পিঁপড়া আলাদা করে মানুষ চিনতে পারে। যেমন সোলায়মান (আ.)-কে চিনেছিল।
৪. পিঁপড়া বিপৎসংকেত বুঝতে পারে। পিঁপড়া সোলায়মানের আগমন এবং বিপৎসংকেত বুঝতে পেরে সবাইকে সতর্ক করেছিল।
আল্লাহর বিস্ময়কর সৃষ্টি পিঁপড়া। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে ২২ হাজার প্রজাতির পিঁপড়া রয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞানীরা ১২ হাজার ৫০০ প্রজাতির পিঁপড়ার শ্রেণিবিন্যাস করতে পেরেছেন। পিঁপড়া-মানবখ্যাত পতঙ্গবিজ্ঞানী ড. উইলসনের মতে, পিঁপড়া বিবেকসম্পন্ন, সামাজিক ও পরিশ্রমী প্রাণী। নিজস্ব বাজার এবং উন্নতমানের যোগাযোগব্যবস্থাও রয়েছে তাদের মধ্যে। তারা খাদ্য সঞ্চয় করে। পিঁপড়ারা মানুষের মতোই তাদের মৃতদেহ কবর দেয়। পোকামাকড়দের মধ্যে সবচেয়ে বড় মস্তিষ্কের অধিকারী হলো পিঁপড়া। অন্য প্রাণীদের তুলনায় এদের মস্তিষ্কে প্রায় আড়াই লাখ কোষ বেশি রয়েছে।
রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণ
সুরা নামলের ২০ থেকে ৩১ নম্বর আয়াতে সোলায়মান (আ.)-এর সংবাদ সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে হুদহুদ পাখির উল্লেখ রয়েছে। সোলায়মান (আ.)-এর রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত হতো হুদহুদ পাখি। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে কী হচ্ছে, কী চিন্তা-ভাবনা চলছে, কোথায় কী ঘটছে, কোন রাজা কোথায় সৈন্য পাঠাচ্ছে, কেন পাঠাচ্ছে ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তিনি এই পাখি ব্যবহার করতেন। নবী একবার পাখিকে খুঁজে পাচ্ছেন না। কোরআনে ঘটনার বর্ণনা এসেছে এভাবে, ‘একদিন সোলায়মান (আ.) পাখিদের খোঁজখবর নিলেন, এরপর বললেন, কী হলো, হুদহুদকে দেখছি না কেন? নাকি সে অনুপস্থিত? আমি অবশ্যই তাকে কঠোর শাস্তি দেব কিংবা হত্যা করব, যদি না সে অনুপস্থিত থাকার যথাযথ কারণ দেখায়। কিছুক্ষণ পর হুদহুদ এসে বলল, আপনি অবগত নন এমন একটি বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। আমি সাবা থেকে নিশ্চিত সংবাদ নিয়ে আগমন করেছি। আমি এক নারীকে সাবাবাসীর ওপর রাজত্ব করতে দেখেছি। তাকে সবকিছুই দেওয়া হয়েছে এবং তার একটা বিরাট সিংহাসন আছে। আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সিজদা করছে। শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যাবলি সুশোভিত করে দিয়েছে। এরপর তাদের সৎপথ থেকে নিবৃত্ত করেছে। অতএব তারা সৎপথ পায় না।’ (সুরা নামল: ২০-২৪)
সোলায়মান (আ.) রানি বিলকিসের কাছে বার্তা পাঠালেন। সব ভেবেচিন্তে তিনি নবীর দরবারে এলেন। রাজপ্রাসাদের স্বচ্ছ কাচের সড়কে ভ্রমে পড়ে গেলেন এবং গোড়ালির কাপড় টেনে ওপরে তুলে ফেললেন। স্বচ্ছ স্ফটিক নির্মিত প্রাসাদ দেখে রানি যারপরনাই বিস্মিত হলেন। এদিকে আবার নিজের সিংসাহন সোলায়মানের কাছে দেখে বিস্ময়ে তাজ্জব বনে গেলেন। পরে সোলায়মান (আ.)-এর ধর্মে দীক্ষিত হন।
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে পূর্ববর্তী নবী ও তাঁদের জাতি, আল্লাহর একাত্ববাদ, কোরআনের নেয়ামত, অবিশ্বাসীদের প্রশ্নের জবাব, আল্লাহর নেয়ামত, অহংকার, ব্যবসায় সঠিক ওজন দেওয়া, মানুষের হক নষ্টের পরিণাম, বিভিন্ন জাতির ধ্বংসের বিবরণ, মুমিন জীবনে পরীক্ষা ও মুমিনদের পুরস্কার ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
রায়হান রাশেদ

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৯তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ফুরকানের ২১ থেকে সুরা শুআরা ও সুরা নামলের ১ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের গুণ, অপচয়, সোলায়মান (আ.) ও পিঁপড়ার ঘটনা, হুদহুদ পাখির সংবাদ সংগ্রহ, সাবার রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—
কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীদের ভয়ানক অবস্থা
সুরা ফুরকানের ২১ থেকে ৩৪ নম্বর আয়াতে অবিশ্বাসীদের কিছু আপত্তি ও অনর্থক দাবির জবাব দেওয়া হয়েছে। তারা বলে, ‘আমাদের কাছে ফেরেশতা আসে না কেন কিংবা কেন আমরা আল্লাহকে দেখি না?’ এসব লোকের অন্তরে রয়েছে গুরুতর ব্যাধি এবং এরা অবাধ্যতায় মেতে উঠেছে। জবাবে বলা হয়েছে, মুশরিকেরা মৃত্যুর সময় ফেরেশতাদের দেখতে পাবে। কিয়ামতের দিনটা হবে জালিমদের জন্য ভয়ানক। সেদিন তাদের আফসোস ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। তারা আফসোস করবে আর আঙুল কামড়ে বলবে, ‘হায়, যদি রাসুলের পথে চলতাম! হায়, যদি অমুককে বন্ধু না বানাতাম!’
আল্লাহর বান্দাদের ১৪ গুণ
সুরা ফুরকানের ৬৩ থেকে ৭৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহর বান্দাদের বিশেষ কিছু গুণের কথা বলা হয়েছে। যথা—
১. তাঁরা পৃথিবীতে বিনয়ের সঙ্গে চলাফেরা করে
২. মূর্খদের মার্জনা করে
৩. রাত জেগে ইবাদত করে
৪. জাহান্নামের আজাবের ভয় করে
৫. তাঁরা মিতব্যয়ী
৬. আল্লাহর ইবাদত করে
৭. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে না
৮. ব্যভিচার করে না
৯. পাপ করলে তওবা করে
১০. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না
১১. বেহুদা আমোদ-প্রমোদ এড়িয়ে চলে
১২. আল্লাহর কালাম যথাযথ শোনে
১৩. উত্তম স্ত্রী ও সন্তান লাভে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে
১৪. সঠিক পথের দিশা ও অন্যদের সঠিক পথ দেখানোর তৌফিক কামনা করে
সুরা শুআরা—বিভিন্ন জাতি ধ্বংসের বর্ণনা
সুরা শুআরা মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াতসংখ্যা ২২৭। কোরআনের ২৬তম সুরা এটি। সুরার শুরুতে আল্লাহ তাআলা নবীজি (সা.)কে সান্ত্বনা দিয়েছেন। কাফেররা ইমান না আনার কারণে নবীজির মন খারাপ হতো। আল্লাহ চাইলে পৃথিবীর সবাই ইমানদার হয়ে যেতে বাধ্য। কিন্তু তিনি কাউকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করেন না। মানুষের কাছে উপদেশ ও নিদর্শন পাঠিয়ে গ্রহণ-অগ্রহণের সুযোগ দেন।
এই সুরার ১০ থেকে ১৯১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মুসা-হারুন (আ.) ও ফেরাউনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ, ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পিতার কাহিনি, নুহ (আ.)-এর জাতি ধ্বংসের কারণ, হুদ (আ.) ও আদ জাতির বর্ণনা, সালেহ (আ.) ও সামুদ জাতির ঘটনা, লুত (আ.)-এর জাতি ধ্বংসের কারণ, শোয়াইব (আ.) ও মাদায়েনবাসীর বিবরণ উল্লেখ রয়েছে।
সুরা নামল—পিঁপড়ার গল্পগাথা
সুরা নামল মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াতের সংখ্যা ৯৩। কোরআনের ২৭তম সুরা এটি। নামল অর্থ পিঁপড়া। এ সুরায় সোলায়মান (আ.)-এর সঙ্গে পিঁপড়ার কথোপকথন স্থান পাওয়ায় এটিকে সুরা নামল বলা হয়।
পিঁপড়া যেভাবে স্বজাতিকে রক্ষা করেছিল
সোলায়মান (আ.)কে আল্লাহ তাআলা বিশেষ জ্ঞান ও ক্ষমতা দান করেছিলেন। তিনি বাদশাহ ও অঢেল ধন-সম্পদের অধিকারী ছিলেন। তাঁর কাছে ওই সময়ে মানবসমাজে ব্যবহৃত সব ধরনের বস্তুসামগ্রীসহ বিশাল সেনাবাহিনী ছিল। রাজ্য নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার কাজে তিনি জিন ও পাখিসহ অন্য প্রাণীদের কাজে লাগাতেন। তিনি মানুষের ভাষাসহ অন্যান্য প্রাণীর ভাষা বুঝতেন।
আল্লাহ বলেন, ‘যখন সোলায়মান ও তার বাহিনী পিঁপড়ার উপত্যকায় পৌঁছাল, তখন এক নারী পিঁপড়া বলল, হে পিঁপড়ারা, গর্তে প্রবেশ করো। এমন যেন না হয়, সোলায়মান এবং তার সৈন্যরা তোমাদের পিষে ফেলবে, তোমরা তা টেরও পাবে না। সোলায়মান (আ.) পিঁপড়ার কথায় মৃদু হাসলেন।’ (সুরা নামল: ১৮)
সুরা নামলের উল্লিখিত আয়াত থেকে পিঁপড়ার জীবনযাত্রা সম্পর্কে চারটি ধারণা পাওয়া যায়।
১. পিঁপড়া কথা বলতে পারে। যেমন আয়াতে বর্ণিত পিঁপড়াটি অন্যদের সঙ্গে করেছে।
২. পিঁপড়া নারীশাসিত পতঙ্গ। তাদের একজন রানি থাকে। পুরুষ পিঁপড়া ঘরে, নারী পিঁপড়া বাইরে থাকে। যখন সোলায়মান (আ.) এবং তাঁর বাহিনী এসে পড়ে, রানি সবাইকে নিজ নিজ ঘরে প্রবেশের নির্দেশ দেয়।
৩. পিঁপড়া আলাদা করে মানুষ চিনতে পারে। যেমন সোলায়মান (আ.)-কে চিনেছিল।
৪. পিঁপড়া বিপৎসংকেত বুঝতে পারে। পিঁপড়া সোলায়মানের আগমন এবং বিপৎসংকেত বুঝতে পেরে সবাইকে সতর্ক করেছিল।
আল্লাহর বিস্ময়কর সৃষ্টি পিঁপড়া। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে ২২ হাজার প্রজাতির পিঁপড়া রয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞানীরা ১২ হাজার ৫০০ প্রজাতির পিঁপড়ার শ্রেণিবিন্যাস করতে পেরেছেন। পিঁপড়া-মানবখ্যাত পতঙ্গবিজ্ঞানী ড. উইলসনের মতে, পিঁপড়া বিবেকসম্পন্ন, সামাজিক ও পরিশ্রমী প্রাণী। নিজস্ব বাজার এবং উন্নতমানের যোগাযোগব্যবস্থাও রয়েছে তাদের মধ্যে। তারা খাদ্য সঞ্চয় করে। পিঁপড়ারা মানুষের মতোই তাদের মৃতদেহ কবর দেয়। পোকামাকড়দের মধ্যে সবচেয়ে বড় মস্তিষ্কের অধিকারী হলো পিঁপড়া। অন্য প্রাণীদের তুলনায় এদের মস্তিষ্কে প্রায় আড়াই লাখ কোষ বেশি রয়েছে।
রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণ
সুরা নামলের ২০ থেকে ৩১ নম্বর আয়াতে সোলায়মান (আ.)-এর সংবাদ সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে হুদহুদ পাখির উল্লেখ রয়েছে। সোলায়মান (আ.)-এর রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত হতো হুদহুদ পাখি। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে কী হচ্ছে, কী চিন্তা-ভাবনা চলছে, কোথায় কী ঘটছে, কোন রাজা কোথায় সৈন্য পাঠাচ্ছে, কেন পাঠাচ্ছে ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তিনি এই পাখি ব্যবহার করতেন। নবী একবার পাখিকে খুঁজে পাচ্ছেন না। কোরআনে ঘটনার বর্ণনা এসেছে এভাবে, ‘একদিন সোলায়মান (আ.) পাখিদের খোঁজখবর নিলেন, এরপর বললেন, কী হলো, হুদহুদকে দেখছি না কেন? নাকি সে অনুপস্থিত? আমি অবশ্যই তাকে কঠোর শাস্তি দেব কিংবা হত্যা করব, যদি না সে অনুপস্থিত থাকার যথাযথ কারণ দেখায়। কিছুক্ষণ পর হুদহুদ এসে বলল, আপনি অবগত নন এমন একটি বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। আমি সাবা থেকে নিশ্চিত সংবাদ নিয়ে আগমন করেছি। আমি এক নারীকে সাবাবাসীর ওপর রাজত্ব করতে দেখেছি। তাকে সবকিছুই দেওয়া হয়েছে এবং তার একটা বিরাট সিংহাসন আছে। আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সিজদা করছে। শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যাবলি সুশোভিত করে দিয়েছে। এরপর তাদের সৎপথ থেকে নিবৃত্ত করেছে। অতএব তারা সৎপথ পায় না।’ (সুরা নামল: ২০-২৪)
সোলায়মান (আ.) রানি বিলকিসের কাছে বার্তা পাঠালেন। সব ভেবেচিন্তে তিনি নবীর দরবারে এলেন। রাজপ্রাসাদের স্বচ্ছ কাচের সড়কে ভ্রমে পড়ে গেলেন এবং গোড়ালির কাপড় টেনে ওপরে তুলে ফেললেন। স্বচ্ছ স্ফটিক নির্মিত প্রাসাদ দেখে রানি যারপরনাই বিস্মিত হলেন। এদিকে আবার নিজের সিংসাহন সোলায়মানের কাছে দেখে বিস্ময়ে তাজ্জব বনে গেলেন। পরে সোলায়মান (আ.)-এর ধর্মে দীক্ষিত হন।
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে পূর্ববর্তী নবী ও তাঁদের জাতি, আল্লাহর একাত্ববাদ, কোরআনের নেয়ামত, অবিশ্বাসীদের প্রশ্নের জবাব, আল্লাহর নেয়ামত, অহংকার, ব্যবসায় সঠিক ওজন দেওয়া, মানুষের হক নষ্টের পরিণাম, বিভিন্ন জাতির ধ্বংসের বিবরণ, মুমিন জীবনে পরীক্ষা ও মুমিনদের পুরস্কার ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৯তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ফুরকানের ২১ থেকে সুরা শুআরা ও সুরা নামলের ১ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের গুণ, অপচয়, সোলায়মান (আ.) ও পিঁপড়ার ঘটনা, হুদহুদ পাখির সংবাদ সংগ্রহ, সাবার রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—
কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীদের ভয়ানক অবস্থা
সুরা ফুরকানের ২১ থেকে ৩৪ নম্বর আয়াতে অবিশ্বাসীদের কিছু আপত্তি ও অনর্থক দাবির জবাব দেওয়া হয়েছে। তারা বলে, ‘আমাদের কাছে ফেরেশতা আসে না কেন কিংবা কেন আমরা আল্লাহকে দেখি না?’ এসব লোকের অন্তরে রয়েছে গুরুতর ব্যাধি এবং এরা অবাধ্যতায় মেতে উঠেছে। জবাবে বলা হয়েছে, মুশরিকেরা মৃত্যুর সময় ফেরেশতাদের দেখতে পাবে। কিয়ামতের দিনটা হবে জালিমদের জন্য ভয়ানক। সেদিন তাদের আফসোস ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। তারা আফসোস করবে আর আঙুল কামড়ে বলবে, ‘হায়, যদি রাসুলের পথে চলতাম! হায়, যদি অমুককে বন্ধু না বানাতাম!’
আল্লাহর বান্দাদের ১৪ গুণ
সুরা ফুরকানের ৬৩ থেকে ৭৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহর বান্দাদের বিশেষ কিছু গুণের কথা বলা হয়েছে। যথা—
১. তাঁরা পৃথিবীতে বিনয়ের সঙ্গে চলাফেরা করে
২. মূর্খদের মার্জনা করে
৩. রাত জেগে ইবাদত করে
৪. জাহান্নামের আজাবের ভয় করে
৫. তাঁরা মিতব্যয়ী
৬. আল্লাহর ইবাদত করে
৭. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে না
৮. ব্যভিচার করে না
৯. পাপ করলে তওবা করে
১০. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না
১১. বেহুদা আমোদ-প্রমোদ এড়িয়ে চলে
১২. আল্লাহর কালাম যথাযথ শোনে
১৩. উত্তম স্ত্রী ও সন্তান লাভে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে
১৪. সঠিক পথের দিশা ও অন্যদের সঠিক পথ দেখানোর তৌফিক কামনা করে
সুরা শুআরা—বিভিন্ন জাতি ধ্বংসের বর্ণনা
সুরা শুআরা মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াতসংখ্যা ২২৭। কোরআনের ২৬তম সুরা এটি। সুরার শুরুতে আল্লাহ তাআলা নবীজি (সা.)কে সান্ত্বনা দিয়েছেন। কাফেররা ইমান না আনার কারণে নবীজির মন খারাপ হতো। আল্লাহ চাইলে পৃথিবীর সবাই ইমানদার হয়ে যেতে বাধ্য। কিন্তু তিনি কাউকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করেন না। মানুষের কাছে উপদেশ ও নিদর্শন পাঠিয়ে গ্রহণ-অগ্রহণের সুযোগ দেন।
এই সুরার ১০ থেকে ১৯১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মুসা-হারুন (আ.) ও ফেরাউনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ, ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পিতার কাহিনি, নুহ (আ.)-এর জাতি ধ্বংসের কারণ, হুদ (আ.) ও আদ জাতির বর্ণনা, সালেহ (আ.) ও সামুদ জাতির ঘটনা, লুত (আ.)-এর জাতি ধ্বংসের কারণ, শোয়াইব (আ.) ও মাদায়েনবাসীর বিবরণ উল্লেখ রয়েছে।
সুরা নামল—পিঁপড়ার গল্পগাথা
সুরা নামল মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াতের সংখ্যা ৯৩। কোরআনের ২৭তম সুরা এটি। নামল অর্থ পিঁপড়া। এ সুরায় সোলায়মান (আ.)-এর সঙ্গে পিঁপড়ার কথোপকথন স্থান পাওয়ায় এটিকে সুরা নামল বলা হয়।
পিঁপড়া যেভাবে স্বজাতিকে রক্ষা করেছিল
সোলায়মান (আ.)কে আল্লাহ তাআলা বিশেষ জ্ঞান ও ক্ষমতা দান করেছিলেন। তিনি বাদশাহ ও অঢেল ধন-সম্পদের অধিকারী ছিলেন। তাঁর কাছে ওই সময়ে মানবসমাজে ব্যবহৃত সব ধরনের বস্তুসামগ্রীসহ বিশাল সেনাবাহিনী ছিল। রাজ্য নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার কাজে তিনি জিন ও পাখিসহ অন্য প্রাণীদের কাজে লাগাতেন। তিনি মানুষের ভাষাসহ অন্যান্য প্রাণীর ভাষা বুঝতেন।
আল্লাহ বলেন, ‘যখন সোলায়মান ও তার বাহিনী পিঁপড়ার উপত্যকায় পৌঁছাল, তখন এক নারী পিঁপড়া বলল, হে পিঁপড়ারা, গর্তে প্রবেশ করো। এমন যেন না হয়, সোলায়মান এবং তার সৈন্যরা তোমাদের পিষে ফেলবে, তোমরা তা টেরও পাবে না। সোলায়মান (আ.) পিঁপড়ার কথায় মৃদু হাসলেন।’ (সুরা নামল: ১৮)
সুরা নামলের উল্লিখিত আয়াত থেকে পিঁপড়ার জীবনযাত্রা সম্পর্কে চারটি ধারণা পাওয়া যায়।
১. পিঁপড়া কথা বলতে পারে। যেমন আয়াতে বর্ণিত পিঁপড়াটি অন্যদের সঙ্গে করেছে।
২. পিঁপড়া নারীশাসিত পতঙ্গ। তাদের একজন রানি থাকে। পুরুষ পিঁপড়া ঘরে, নারী পিঁপড়া বাইরে থাকে। যখন সোলায়মান (আ.) এবং তাঁর বাহিনী এসে পড়ে, রানি সবাইকে নিজ নিজ ঘরে প্রবেশের নির্দেশ দেয়।
৩. পিঁপড়া আলাদা করে মানুষ চিনতে পারে। যেমন সোলায়মান (আ.)-কে চিনেছিল।
৪. পিঁপড়া বিপৎসংকেত বুঝতে পারে। পিঁপড়া সোলায়মানের আগমন এবং বিপৎসংকেত বুঝতে পেরে সবাইকে সতর্ক করেছিল।
আল্লাহর বিস্ময়কর সৃষ্টি পিঁপড়া। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে ২২ হাজার প্রজাতির পিঁপড়া রয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞানীরা ১২ হাজার ৫০০ প্রজাতির পিঁপড়ার শ্রেণিবিন্যাস করতে পেরেছেন। পিঁপড়া-মানবখ্যাত পতঙ্গবিজ্ঞানী ড. উইলসনের মতে, পিঁপড়া বিবেকসম্পন্ন, সামাজিক ও পরিশ্রমী প্রাণী। নিজস্ব বাজার এবং উন্নতমানের যোগাযোগব্যবস্থাও রয়েছে তাদের মধ্যে। তারা খাদ্য সঞ্চয় করে। পিঁপড়ারা মানুষের মতোই তাদের মৃতদেহ কবর দেয়। পোকামাকড়দের মধ্যে সবচেয়ে বড় মস্তিষ্কের অধিকারী হলো পিঁপড়া। অন্য প্রাণীদের তুলনায় এদের মস্তিষ্কে প্রায় আড়াই লাখ কোষ বেশি রয়েছে।
রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণ
সুরা নামলের ২০ থেকে ৩১ নম্বর আয়াতে সোলায়মান (আ.)-এর সংবাদ সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে হুদহুদ পাখির উল্লেখ রয়েছে। সোলায়মান (আ.)-এর রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত হতো হুদহুদ পাখি। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে কী হচ্ছে, কী চিন্তা-ভাবনা চলছে, কোথায় কী ঘটছে, কোন রাজা কোথায় সৈন্য পাঠাচ্ছে, কেন পাঠাচ্ছে ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তিনি এই পাখি ব্যবহার করতেন। নবী একবার পাখিকে খুঁজে পাচ্ছেন না। কোরআনে ঘটনার বর্ণনা এসেছে এভাবে, ‘একদিন সোলায়মান (আ.) পাখিদের খোঁজখবর নিলেন, এরপর বললেন, কী হলো, হুদহুদকে দেখছি না কেন? নাকি সে অনুপস্থিত? আমি অবশ্যই তাকে কঠোর শাস্তি দেব কিংবা হত্যা করব, যদি না সে অনুপস্থিত থাকার যথাযথ কারণ দেখায়। কিছুক্ষণ পর হুদহুদ এসে বলল, আপনি অবগত নন এমন একটি বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। আমি সাবা থেকে নিশ্চিত সংবাদ নিয়ে আগমন করেছি। আমি এক নারীকে সাবাবাসীর ওপর রাজত্ব করতে দেখেছি। তাকে সবকিছুই দেওয়া হয়েছে এবং তার একটা বিরাট সিংহাসন আছে। আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সিজদা করছে। শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যাবলি সুশোভিত করে দিয়েছে। এরপর তাদের সৎপথ থেকে নিবৃত্ত করেছে। অতএব তারা সৎপথ পায় না।’ (সুরা নামল: ২০-২৪)
সোলায়মান (আ.) রানি বিলকিসের কাছে বার্তা পাঠালেন। সব ভেবেচিন্তে তিনি নবীর দরবারে এলেন। রাজপ্রাসাদের স্বচ্ছ কাচের সড়কে ভ্রমে পড়ে গেলেন এবং গোড়ালির কাপড় টেনে ওপরে তুলে ফেললেন। স্বচ্ছ স্ফটিক নির্মিত প্রাসাদ দেখে রানি যারপরনাই বিস্মিত হলেন। এদিকে আবার নিজের সিংসাহন সোলায়মানের কাছে দেখে বিস্ময়ে তাজ্জব বনে গেলেন। পরে সোলায়মান (আ.)-এর ধর্মে দীক্ষিত হন।
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে পূর্ববর্তী নবী ও তাঁদের জাতি, আল্লাহর একাত্ববাদ, কোরআনের নেয়ামত, অবিশ্বাসীদের প্রশ্নের জবাব, আল্লাহর নেয়ামত, অহংকার, ব্যবসায় সঠিক ওজন দেওয়া, মানুষের হক নষ্টের পরিণাম, বিভিন্ন জাতির ধ্বংসের বিবরণ, মুমিন জীবনে পরীক্ষা ও মুমিনদের পুরস্কার ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১০ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৪ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৯তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ফুরকানের ২১ থেকে সুরা শুআরা ও সুরা নামলের ১ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের গুণ, অপচয়, সোলায়মান (আ.) ও পিঁপড়ার ঘটনা, হুদহুদ পাখির সংবাদ সংগ্রহ, সাবার রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণসহ নানা বি
০৭ এপ্রিল ২০২৩
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৪ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৯তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ফুরকানের ২১ থেকে সুরা শুআরা ও সুরা নামলের ১ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের গুণ, অপচয়, সোলায়মান (আ.) ও পিঁপড়ার ঘটনা, হুদহুদ পাখির সংবাদ সংগ্রহ, সাবার রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণসহ নানা বি
০৭ এপ্রিল ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৪ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৯তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ফুরকানের ২১ থেকে সুরা শুআরা ও সুরা নামলের ১ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের গুণ, অপচয়, সোলায়মান (আ.) ও পিঁপড়ার ঘটনা, হুদহুদ পাখির সংবাদ সংগ্রহ, সাবার রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণসহ নানা বি
০৭ এপ্রিল ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১০ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১২ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৯তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ফুরকানের ২১ থেকে সুরা শুআরা ও সুরা নামলের ১ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে আল্লাহর কুদরত, আল্লাহর বিশেষ বান্দাদের গুণ, অপচয়, সোলায়মান (আ.) ও পিঁপড়ার ঘটনা, হুদহুদ পাখির সংবাদ সংগ্রহ, সাবার রানি বিলকিসের আত্মসমর্পণসহ নানা বি
০৭ এপ্রিল ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১০ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৪ ঘণ্টা আগে