বাদশাহ আলমগীর
আবদুল আযীয কাসেমি
বাদশাহ আওরঙ্গজেব আলমগীর ছিলেন উপমহাদেশের মোগল আমলের শ্রেষ্ঠতম সম্রাট। ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য ও শাসনদক্ষতার সমন্বয়ে তিনি অন্য মোগল সম্রাটদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। শিক্ষা-দীক্ষা, বিদ্যানুরাগ, বিচক্ষণতা, সাহসিকতা, সমরকুশলতা, উদারতা, দানশীলতা, দুনিয়াবিমুখতা, ইবাদত-বন্দেগি ও নিয়মানুবর্তিতার মতো বিরল সব গুণের সমাবেশ ঘটেছিল তাঁর সত্তায়। তাঁর শাসনামল ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের স্বর্ণযুগ। মহাকবি আল্লামা ইকবালের ভাষায়, তিনি ছিলেন ‘ভারতীয় মুসলমানদের তূণীরের শেষ তির’।
প্রাথমিক জীবন
পূর্ণ নাম মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব আলমগীর ইবনে শাহজাহান ইবনে জাহাঙ্গীর। উপনাম আবুল মুজাফফার। উপাধি মহিউদ্দিন। ১০২৮ হিজরির (১৬১৮ খ্রিষ্টাব্দ) জিলকদ মাসের ১৫ তারিখ রোববার দিবাগত রাতে বর্তমান মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়ন জেলার মালুহ নামক শহরের দোহাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাদশাহ শাহজাহানের তৃতীয় সন্তান।
মাওলানা আবদুল লতিফ সুলতানপুরি, মাওলানা হাশিম গিলানি, শায়খ মুহিউদ্দিন ইবনে আবদুল্লাহ বিহারি প্রমুখের কাছে বিভিন্ন শাস্ত্রের পাঠ গ্রহণ করেন আওরঙ্গজেব। এ ছাড়া মীর সাইয়েদ মুহাম্মাদ কিন্নাওজির কাছে সাহিত্য ও গণিতের পাঠ গ্রহণ করেন। মোল্লা জিওয়ানও ছিলেন তাঁর শিক্ষক, যিনি বিচিত্র সব শাস্ত্রের পণ্ডিত ছিলেন।
শাসনামল
১৬৫৮ সালে আওরঙ্গজেব দিল্লির মসনদে আসীন হন। সুদূর গজনি থেকে চট্টগ্রাম এবং কাশ্মীর থেকে কর্ণাটক পর্যন্ত—এ বিশাল ভূমির একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন আলমগীর। এত বিশাল ভূমির শাসক হওয়ার পরও রাজ্যের ছোট-বড় সবকিছু তিনি গোয়েন্দা মারফত খোঁজখবর রাখতেন। সরকারি কর্মচারীরা সব সময় তটস্থ থাকতেন। তাঁর রাজ্যে কেউ যেন জুলুমের শিকার না হয়, সে জন্য তিনি সজাগ দৃষ্টি রাখতেন। ন্যায়পরায়ণতা ছিল তাঁর রাজ্যের অলংকার।
ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত খোদাভীরু। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করতেন। শায়খ মাসুম ইবনে মুজাদ্দিদে আলফে সানি ছিল তাঁর আধ্যাত্মিক রাহবার। প্রচণ্ড ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় কাজের ব্যস্ততায় তিনি হজে যেতে পারেননি। তবে বিপুল মানুষকে তিনি নিজের অর্থে হজে পাঠিয়েছেন। অবাক করা ব্যাপার হলো, তিনি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর কোরআন হিফজ করেছিলেন। হাদিস সম্পর্কেও তাঁর জানাশোনা ছিল।
ফতোয়ায়ে আলমগীরি সংকলন
বাদশাহ আলমগীরের জীবনের অমর কীর্তি ফতোয়ায়ে আলমগীরি। এ গ্রন্থের রচনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে গবেষক সদরুল হাসান নদবি বলেন, ‘মূলত বাদশাহ আলমগীর ছিলেন হানাফি ফিকহের মজবুত অনুসারী। সে যুগের ফিকহের গ্রন্থগুলোতে সব রকম মতামত থাকায় সেখান থেকে উপকৃত হওয়া সাধারণের জন্য কঠিন ব্যাপার ছিল। তাই তিনি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও আমলযোগ্য মতামতের আলোকে একটি সুবিন্যস্ত গ্রন্থ রচনার প্রয়োজন অনুভব করেন। সে লক্ষ্যে মোল্লা নিজামুদ্দিন বুরহানপুরির নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জনের মতো একদল গবেষক এ ফতোয়াগ্রন্থটি রচনার কাজ সম্পাদন করেন। এ কাজটি ১০ বছরে সমাপ্ত হয়। এ জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিপুল অর্থও ব্যয় করা হয়। আলমগীর নিজে এর তত্ত্বাবধান করেন।’
মৃত্যু
মোগল সাম্রাজ্যের এ মহান সুলতান আওরঙ্গাবাদ শহরে ১১১০ হিজরি (১৭০০ খ্রি.) জিলকদ মাসে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মোট রাজত্বকাল ছিল ৫০ বছর। খুলদাবাদ মহল্লায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।
বাদশাহ আওরঙ্গজেব আলমগীর ছিলেন উপমহাদেশের মোগল আমলের শ্রেষ্ঠতম সম্রাট। ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য ও শাসনদক্ষতার সমন্বয়ে তিনি অন্য মোগল সম্রাটদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। শিক্ষা-দীক্ষা, বিদ্যানুরাগ, বিচক্ষণতা, সাহসিকতা, সমরকুশলতা, উদারতা, দানশীলতা, দুনিয়াবিমুখতা, ইবাদত-বন্দেগি ও নিয়মানুবর্তিতার মতো বিরল সব গুণের সমাবেশ ঘটেছিল তাঁর সত্তায়। তাঁর শাসনামল ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের স্বর্ণযুগ। মহাকবি আল্লামা ইকবালের ভাষায়, তিনি ছিলেন ‘ভারতীয় মুসলমানদের তূণীরের শেষ তির’।
প্রাথমিক জীবন
পূর্ণ নাম মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব আলমগীর ইবনে শাহজাহান ইবনে জাহাঙ্গীর। উপনাম আবুল মুজাফফার। উপাধি মহিউদ্দিন। ১০২৮ হিজরির (১৬১৮ খ্রিষ্টাব্দ) জিলকদ মাসের ১৫ তারিখ রোববার দিবাগত রাতে বর্তমান মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়ন জেলার মালুহ নামক শহরের দোহাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাদশাহ শাহজাহানের তৃতীয় সন্তান।
মাওলানা আবদুল লতিফ সুলতানপুরি, মাওলানা হাশিম গিলানি, শায়খ মুহিউদ্দিন ইবনে আবদুল্লাহ বিহারি প্রমুখের কাছে বিভিন্ন শাস্ত্রের পাঠ গ্রহণ করেন আওরঙ্গজেব। এ ছাড়া মীর সাইয়েদ মুহাম্মাদ কিন্নাওজির কাছে সাহিত্য ও গণিতের পাঠ গ্রহণ করেন। মোল্লা জিওয়ানও ছিলেন তাঁর শিক্ষক, যিনি বিচিত্র সব শাস্ত্রের পণ্ডিত ছিলেন।
শাসনামল
১৬৫৮ সালে আওরঙ্গজেব দিল্লির মসনদে আসীন হন। সুদূর গজনি থেকে চট্টগ্রাম এবং কাশ্মীর থেকে কর্ণাটক পর্যন্ত—এ বিশাল ভূমির একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন আলমগীর। এত বিশাল ভূমির শাসক হওয়ার পরও রাজ্যের ছোট-বড় সবকিছু তিনি গোয়েন্দা মারফত খোঁজখবর রাখতেন। সরকারি কর্মচারীরা সব সময় তটস্থ থাকতেন। তাঁর রাজ্যে কেউ যেন জুলুমের শিকার না হয়, সে জন্য তিনি সজাগ দৃষ্টি রাখতেন। ন্যায়পরায়ণতা ছিল তাঁর রাজ্যের অলংকার।
ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত খোদাভীরু। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করতেন। শায়খ মাসুম ইবনে মুজাদ্দিদে আলফে সানি ছিল তাঁর আধ্যাত্মিক রাহবার। প্রচণ্ড ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় কাজের ব্যস্ততায় তিনি হজে যেতে পারেননি। তবে বিপুল মানুষকে তিনি নিজের অর্থে হজে পাঠিয়েছেন। অবাক করা ব্যাপার হলো, তিনি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর কোরআন হিফজ করেছিলেন। হাদিস সম্পর্কেও তাঁর জানাশোনা ছিল।
ফতোয়ায়ে আলমগীরি সংকলন
বাদশাহ আলমগীরের জীবনের অমর কীর্তি ফতোয়ায়ে আলমগীরি। এ গ্রন্থের রচনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে গবেষক সদরুল হাসান নদবি বলেন, ‘মূলত বাদশাহ আলমগীর ছিলেন হানাফি ফিকহের মজবুত অনুসারী। সে যুগের ফিকহের গ্রন্থগুলোতে সব রকম মতামত থাকায় সেখান থেকে উপকৃত হওয়া সাধারণের জন্য কঠিন ব্যাপার ছিল। তাই তিনি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও আমলযোগ্য মতামতের আলোকে একটি সুবিন্যস্ত গ্রন্থ রচনার প্রয়োজন অনুভব করেন। সে লক্ষ্যে মোল্লা নিজামুদ্দিন বুরহানপুরির নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জনের মতো একদল গবেষক এ ফতোয়াগ্রন্থটি রচনার কাজ সম্পাদন করেন। এ কাজটি ১০ বছরে সমাপ্ত হয়। এ জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিপুল অর্থও ব্যয় করা হয়। আলমগীর নিজে এর তত্ত্বাবধান করেন।’
মৃত্যু
মোগল সাম্রাজ্যের এ মহান সুলতান আওরঙ্গাবাদ শহরে ১১১০ হিজরি (১৭০০ খ্রি.) জিলকদ মাসে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মোট রাজত্বকাল ছিল ৫০ বছর। খুলদাবাদ মহল্লায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।
গোটা পৃথিবীটাই এখন হাতের মুঠোয়। হজ ব্যবস্থাপনায়ও প্রযুক্তি আর উদ্ভাবনীর সন্নিবেশ ঘটেছে। হজের নিবন্ধন, তাঁবু বরাদ্দ, হোটেল ভাড়া ও অন্যান্য সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি, ভিসা প্রক্রিয়াকরণ প্রভৃতিই সম্পন্ন হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে।
৩৭ মিনিট আগেআজ থেকে এক যুগেরও আগে লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে ‘হজ: জার্নি টু দ্য হার্ট অব ইসলাম’ নামে বিশ্বের প্রথম হজ-বিষয়ক প্রদর্শনীর আয়োজন হয়। প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক যুগের হজযাত্রা, বরকতময় এ যাত্রার প্রস্তুতি, মক্কার প্রাণজুড়ানো প্রকৃতি, কাবার নয়নাভিরাম দৃশ্য, হৃদয় শীতল করা জমজম, হাজিদের স্মৃতিচারণাসহ নানা
৯ ঘণ্টা আগেইসলাম একটি সহজতর ও বাস্তবসম্মত জীবনব্যবস্থা। তাই কোনো ব্যক্তি যদি হজ ফরজ হওয়ার পর স্থায়ীভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কোনোভাবেই নিজে গিয়ে হজ আদায় করতে না পারেন, তাহলে শরিয়ত তাঁকে বিকল্প ব্যবস্থা দিয়েছে। এ বিকল্প ব্যবস্থার নাম ‘বদলি হজ।’
৯ ঘণ্টা আগেআরবি বর্ষপঞ্জির ১১তম মাস ‘জিলকদ।’ ইসলামের পূর্বে জাহিলিয়ার যুগে আরবের লোকজন এ মাসে যুদ্ধবিগ্রহ হারাম মনে করত। কেউ কাউকে হত্যা করত না, প্রতিশোধও নিত না। যেহেতু তারা এই মাসে হত্যা বা প্রতিশোধ নেওয়া থেকে বিরত ও বসে থাকত, তাই এ মাসের নাম দেওয়া হয় ‘জুলকদাহ’ বা জিলকদ, অর্থাৎ বসে থাকার মাস।
১০ ঘণ্টা আগে