Ajker Patrika

মুমিনের জীবনে আল্লাহভীতির প্রভাব ও সুফল

ইসলাম ডেস্ক 
কোরআন শরিফ। ছবি: সংগৃহীত
কোরআন শরিফ। ছবি: সংগৃহীত

মুমিনের জীবনের একটি অমূল্য সম্পদ তাকওয়া। শব্দটির উৎপত্তি আরবি, অর্থ হচ্ছে আল্লাহভীতি। আর আল্লাহভীতির সারকথা হচ্ছে আল্লাহ ও বান্দার হক বা অধিকার যথাযথ আদায় করা। আল্লাহর হক নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি। বান্দার হক সেবা, সম্পদের পাওনা আদায় ইত্যাদি।

মুমিনের জীবনে আল্লাহভীতির গুরুত্ব

মুমিনের হৃদয়ে আল্লাহভীতির উপস্থিতি খুবই জরুরি। কারণ, এটি মুমিনকে কলুষতা, পাপ-পঙ্কিলতা, অন্যায়, অশ্লীলতা থেকে বাঁচায়। আর এর অনুপস্থিতি বহু পাপের জন্ম দেয়। এ জন্যই কোরআন-হাদিসের অসংখ্য জায়গায় মুমিনকে বহু মূল্য তাকওয়ার রঙে রঙিন হতে বলা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ তাআলাকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো।’ (সুরা আহজাব: ৭০)

তাকওয়ার মাহাত্ম্য

তাকওয়া মুমিনের সদ্‌গুণ। তাকওয়া হৃদয়ে ইবাদতের স্বাদ বাড়ায়। একনিষ্ঠতার সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণের সুযোগ করে দেয়। তা ছাড়া দুনিয়া ও আখিরাতে মুমিনকে বহুবিধ সফলতা দান করে।

দুনিয়ার সফলতা হলো–

১. মুমিনের কাজ সুলভ করে দেয়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলাকে ভয় (অর্থাৎ তাকওয়া অবলম্বন) করবে আল্লাহ তার কাজকে সহজ করে দেবেন।’ (সুরা তালাক: ৪)

২. মুমিনকে শয়তানের কুমন্ত্রণা ও অনিষ্ট থেকে বাঁচিয়ে রাখে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, নিশ্চয়ই মুত্তাকিগণকে শয়তান স্পর্শ করলে (কুমন্ত্রণা দিলে) তারা আল্লাহকে স্মরণ করেন। তাদের দৃষ্টি তখনই খুলে যায়। (সুরা আরাফ: ২০১)

৩. মুমিনের জীবনে সচ্ছলতা এনে দেয়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলাকে ভয় করবে, আল্লাহ তার জন্য রিজিকের পন্থা (কর্মসংস্থান) বের করে দেবেন এবং তাকে অপ্রত্যাশিত নিয়ামত দান করবেন।’ (সুরা তালাক: ২ ও ৩)

৪. তাকওয়ার সজ্জায় সজ্জিত মুমিন আল্লাহর অলি (পরম বন্ধু) হয়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘একমাত্র মুত্তাকিগণই আল্লাহ তাআলার অলি।’ (সুরা আনফাল: ৩৪)

৫. জ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যম হতে পারে এ তাকওয়া। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, আল্লাহ তোমাদের জ্ঞান দান করবেন।’ (সুরা বাকারা: ১৮২)

৬. আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ অর্জন সুগম করে তুলে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আমার অনুকম্পা সবকিছুকেই বেষ্টন করে আছে। সুতরাং অচিরেই আমি তা মুত্তাকি, জাকাত আদায়কারী ও আমার নিদর্শনে বিশ্বাসীদের জন্য লেখে দেব।’ (সুরা আরাফ: ১৫৬)

৭. মহান আল্লাহর বরকত খুবই নিকটে নিয়ে আসে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যদি গ্রামবাসী আল্লাহ তাআলার প্রতি ইমান আনত ও তাকওয়া অর্জন করত—আমি তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতদ্বার খুলে দিতাম।’ (সুরা আরাফ: ৯৬)

আখিরাতের সফলতা হলো–

১. তাকওয়া মুমিনকে মহান আল্লাহর একজন প্রিয় ও খাঁটি বান্দা হিসেবে গড়ে তোলে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তোমাদের মধ্যে অধিক সম্মানিত সে, যে আল্লাহকে অধিক ভয় করে।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)

২. পরকালে সফলতা অর্জনের উত্তম একটি মাধ্যম হয় এ তাকওয়া। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যারা আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য ও আল্লাহকে ভয় করবে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা নুর: ৫২)

৩. মুমিনকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচিয়ে রাখে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘জাহান্নামে সকলেই পতিত হবে, এটা প্রভুর সুদৃঢ় সিদ্ধান্ত; অতঃপর আমি মুত্তাকিদের মুক্তি দান করব ও স্বৈরাচারদের নতজানু অবস্থায় জাহান্নামে ছেড়ে দেব।’ (সুরা মারইয়াম: ৭১-৭২)

৪. তাকওয়ার উপস্থিতি আমলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘কেবল মুত্তাকিদের পক্ষ থেকেই আল্লাহ (আমল) গ্রহণ করে নেন।’ (সুরা মায়িদা: ২৭)

৫. মুমিনের চূড়ান্ত সফলতা বয়ে আনে; আর সেটি হলো জান্নাতপ্রাপ্তি। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আমি এই জান্নাতের উত্তরাধিকার মুত্তাকিদের বানাব।’ (সুরা মারইয়াম: ৬৩)

লেখক: রায়হান আল ইমরান, ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

‘মুসলমানদের মতো হইয়ো না’ বলা জাভেদ আখতারকে একহাত নিলেন লাকি আলী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ