Ajker Patrika

হজরত উমর ফারুক: ন্যায়ের প্রতীক ও অনন্য ব্যক্তিত্ব

ইসলাম ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মানবসভ্যতার ইতিহাসে যুগে যুগে বহু ক্ষণজন্মা মনীষীর আগমন ঘটেছে, যাঁরা তাঁদের কর্ম ও প্রজ্ঞা দিয়ে ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছেন। তাঁরা জাতির ভাগ্য রচনা করে নিজেদের অমর করে রেখেছেন।

তবে এ সকল মহান ব্যক্তিত্বের মধ্যে খোলাফায়ে রাশেদিন (রা.)-এর মর্যাদা যেমন অতীত ইতিহাসে বিরল, তেমনি ভবিষ্যতেও তা অতুলনীয় হয়ে থাকবে। তাঁরা কেবল ইসলামের রাজনৈতিক নেতৃত্বই দেননি, বরং নববী আদর্শের খাঁটি প্রতিচ্ছবি হিসেবে মানবজাতির সামনে এক অনন্য জীবনদর্শন রেখে গেছেন।

এই চার খলিফার মধ্যে বিশেষভাবে দ্বিতীয় খলিফা, আমিরুল মুমিনিন ফারুকে আজম হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর ব্যক্তিত্ব ও কীর্তি এক অসাধারণ উচ্চতা স্পর্শ করেছে। তাঁর মতো মর্যাদা সিদ্দিকে আকবর হজরত আবু বকর (রা.)-এর পর আর কারও পক্ষে অর্জন করা সম্ভব হয়নি। তাঁর দক্ষ নেতৃত্ব, ন্যায়বিচারের প্রতি অনমনীয় অঙ্গীকার এবং ইসলামি শাসনব্যবস্থাকে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করার মহিমা চিরকাল ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।

নবীজি (সা.)-এর প্রশংসাপূর্ণ বাণী ও আল-ফারুক উপাধি

হজরত উমর (রা.) সেই সৌভাগ্যবানদের একজন, যাদের রাসুলুল্লাহ (সা.) দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। তাঁর বহুমুখী গুণাবলির সাক্ষ্য স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্নভাবে দিয়েছেন। এই গুণাবলির কারণেই রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর ইসলাম গ্রহণের জন্য আল্লাহর কাছে বিশেষ দোয়া করেছিলেন, যা আল্লাহ কবুলও করেছিলেন। ফলস্বরূপ, তাঁর ইসলাম গ্রহণের পর থেকেই ইসলামের প্রসার ও বিজয় আরও সুদৃঢ় হতে থাকে।

নবুওয়াতের দরবার থেকে তিনি ‘আল-ফারুক’ উপাধি লাভ করেন, যা উম্মতের আর কারও ভাগ্যে জোটেনি। এর অর্থ—‘সত্য-মিথ্যার মাঝে স্পষ্ট সীমারেখা নির্ধারণকারী’। এই উপাধি হজরত উমর (রা.)-এর সত্যপ্রেম ও সত্যের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার গুণ প্রকাশ করে। সত্যের ব্যাপারে তিনি কারও মর্যাদা বা প্রভাবের পরোয়া করতেন না। এমনকি নিজের প্রাণ বা সম্পদের ক্ষতিরও ভয় করতেন না। কোনো বিষয় পুরোপুরি অনুধাবন না হওয়া পর্যন্ত তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে বারবার প্রশ্ন করতেন।

তাঁর মহামানবীয় সত্তা ছিল সরলতার প্রতীক। আর তাঁর জীবন ছিল সত্য ও নিষ্কলুষতার জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তিনি ছিলেন রাসুলের (সা.) সত্যিকারের প্রেমিক, ইসলাম ও মুসলমানদের একনিষ্ঠ সেবক। মুনাফিক ও আল্লাহর শত্রুরা ছিল তাঁর জাতশত্রু। যারা সত্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করত এবং অবাধ্যতায় লিপ্ত হতো, তাদের জন্য তিনি ছিলেন খোলা তলোয়ার। সুপরিকল্পনা, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, সাহস ও উদারতা, মর্যাদা, ন্যায়বিচার, আল্লাহর ভয়, পরকালীন জীবনের ভাবনা এবং মুসলমানদের অধিকার রক্ষার পূর্ণ দায়িত্বশীলতার গুণে তিনি ভূষিত ছিলেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সর্বাঙ্গীণ ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে বলেছেন—‘যদি আমার পরেও নবুওয়াতের ধারা চলমান থাকত, তাহলে আমার পর উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) নবী হতেন।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৬৮৬)। যদি হজরত উমর (রা.)-এর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়ে আর কোনো হাদিস না-ও থাকত, তাহলে এই একটি হাদিসই তাঁর মর্যাদা প্রকাশের জন্য যথেষ্ট ছিল। অথচ হাদিস ভান্ডারে তাঁর মর্যাদা সংক্রান্ত বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

এই হাদিসের আলোকে হজরত উমর (রা.)-এর ব্যক্তিত্ব বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে, নবী ও রাসুলগণ মানবতার সর্বোচ্চ শিখরে সমাসীন থাকেন। সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে তাঁরাই সর্বশ্রেষ্ঠ। প্রতিজন নবীর মধ্যে তাঁর মর্যাদার উপযুক্ত সব গুণাবলি পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান থাকে। তিনি বংশ-মর্যাদার দিক থেকে সর্বোচ্চ এবং ব্যক্তিগত গুণাবলির ক্ষেত্রেও সবার ওপরে থাকেন। এই হাদিস থেকে জানা যায় যে, নবীদের মধ্যে যে গুণাবলি থাকে, আল্লাহ তাআলা হজরত উমর (রা.)-কেও সেই সব গুণাবলি দ্বারা বিভূষিত করেছিলেন।

জীবন এবং আদর্শ

ফারুকে আজম (রা.)-এর জীবনকে তিনটি সময়ে ভাগ করা যায়:

  • ১. কুফরের সময়কাল—যা প্রায় ২৩ বছরের বেশি, অর্থাৎ শৈশব ও যৌবনের প্রারম্ভিক সময়।
  • ২. ইসলাম গ্রহণের পর থেকে খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ পর্যন্ত—যা প্রায় ২২ বছরের কাছাকাছি সময়।
  • ৩. শাসনকাল থেকে শাহাদাত পর্যন্ত—যা প্রায় ১০ বছরের সময়কাল।

এই তিন সময়ের প্রতিটি পর্যায়েই তাঁর ব্যক্তিত্বে এমন সব গুণাবলি বিদ্যমান ছিল, যার কারণে তিনি সমসাময়িকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদায় অগ্রগণ্য ছিলেন। কুফরের যুগে, তার শৈশব আরবদের রীতিনীতির মতো উট চরানোর মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়। অতঃপর তিনি সেই সময়ের মানদণ্ড অনুযায়ী পড়াশোনা ও উৎকৃষ্ট বিদ্যা-বুদ্ধি অর্জনে মনোযোগ দেন।

এর পাশাপাশি কুস্তি, শারীরিক শক্তি, ঘোড়সওয়ারি, যুদ্ধবিদ্যা ও সামরিক কৌশল, প্রভাবশালী বক্তব্য, বাগ্মিতা, সঠিক ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, সঠিক সময়ে সঠিক পরিকল্পনা, সাহসিকতা ও নির্ভীকতা এবং মানুষ চেনার অসাধারণ ক্ষমতার মতো বহু গুণাবলি তাঁর মাঝে প্রকাশিত হয়।

এসব গুণের কারণে কুরাইশ গোত্র তাঁকে সম্মানিত নেতাদের মধ্যে গণ্য করে এবং কূটনৈতিক দায়িত্বের মতো সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেয়। বিভিন্ন গোত্র এমনকি কিছু রাষ্ট্রের সঙ্গেও তিনি কুরাইশদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

তাঁর দ্বিতীয় উজ্জ্বল সময়কাল ছিল ইসলামের যুগ। ইসলামের আলো এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্যের বরকতে তাঁর গুণাবলি ও চরিত্র আরও উজ্জ্বল ও পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাঁর এমন অবস্থা হয়েছিল যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা করেন—‘আল্লাহ তাআলা উমরের অন্তর ও জিহ্বায় সত্য প্রবাহিত করে দিয়েছেন।’ অর্থাৎ, তাঁর অন্তরে যা উদয় হবে তা-ই সত্য হবে এবং তাঁর জিহ্বা থেকে যা উচ্চারিত হবে তা সত্য বৈ কিছু হতে পারে না।

বহুবার এমন ঘটেছে যে, হজরত উমর (রা.)-এর মতের সঙ্গে মিল রেখে রাসুলুল্লাহর (সা.) ওপর ওহি নাজিল হয়েছে। যেমন—বদরের যুদ্ধে বন্দীদের বিষয়ে এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর স্ত্রীদের পর্দার বিধান সংক্রান্ত বিষয়ে।

তাঁর মতামত এতটাই সঠিক ও সুচিন্তিত হতো যে, তিনি নিজেই বলেছেন—‘আমি যখনই কারও বিষয়ে কোনো মতামত দিয়েছি, সেটি যথাযথ ও ফলপ্রসূ প্রমাণিত হয়েছে।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর পরামর্শের ওপর এতটাই আস্থা রাখতেন যে তিনি বলেছেন—‘দুনিয়াতে প্রত্যেক নবীর দুজন করে উজির থাকে। আর আমার উজির হলেন আবু বকর ও উমর।’ কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা হালকা পরামর্শযোগ্য বিষয়েও রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া চূড়ান্ত করতেন না।

খিলাফতের স্বর্ণযুগ

তাঁর জীবনের তৃতীয় সময়কাল, যা ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ ও গৌরবময় ছিল, তা হলো তাঁর খিলাফত ও শাসনকাল। এ সময়ে তাঁর ব্যক্তিত্ব থেকে অসাধারণ কৃতিত্ব প্রকাশ পায়। একজন সফল ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের জন্য যেসব গুণ ও যোগ্যতা প্রয়োজন, তা তাঁর মধ্যে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান ছিল।

অথচ তাঁর পরিবারে এর আগে কখনো কেউ রাজা হয়নি, যাতে শাসন কুশলতা সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা তৈরি হতে পারে। শৈশবে যখন তিনি উট চরাতেন, তখন শাসনকাজ শেখার প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া আরবের হিজাজ অঞ্চলে বহু শতাব্দী ধরে কোনো রাজ্য-রাজার ব্যবস্থাও বিদ্যমান ছিল না।

তাঁর জীবনে শাসন কুশলতা শেখার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও তিনি এমন সব শাসননীতির ভিত্তি স্থাপন করেন, যা কিয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তনীয় থাকবে। তিনি এমন শাসনপদ্ধতি গ্রহণ করেন যা একটি সফল সরকারের জন্য অপরিহার্য; রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সুপরিকল্পনা ও প্রজ্ঞা, ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও সমতা, শাসন মর্যাদার গাম্ভীর্য, অশান্তি দমন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা, যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের উৎসাহ প্রদান, আত্মীয়প্রীতি থেকে বিরত থাকা এবং পর্যাপ্ত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও নিজের জন্য অত্যন্ত সাদামাটা, বরং দরিদ্রসুলভ ও সংযমী জীবনযাপন—এসবই ছিল তাঁর গুণাবলি।

ন্যায়বিচারে তিনি এমন উচ্চ মানদণ্ড স্থাপন করেন যে, ন্যায়বিচারের প্রতীক বলে পরিচিত নওশেরওয়াহ-এর যুগেও ইতিহাসে কিছু অবিচারের ঘটনা পাওয়া যায়; কিন্তু ফারুকি যুগের ইতিহাস এমন একটি ঘটনাও পেশ করতে পারেনি যাতে অবিচারের সামান্য ছিটেফোঁটাও পাওয়া যায়। ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে তিনি নিজের, আত্মীয়স্বজনের এমনকি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও কোনো প্রকার ছাড় দিতেন না। ন্যায়ের ক্ষেত্রে তাঁর কাছে সবাই সমান ছিল।

একবার এক সাহাবির সঙ্গে তাঁর বিরোধ মীমাংসার জন্য মামলা আদালতে ওঠে। তিনি মদিনার কাজির আদালতে হাজির হন। কাজি শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁর জন্য আসন খালি করে দেন, কিন্তু তিনি সঙ্গে সঙ্গেই বলেন—‘তুমি তো এই মামলায় প্রথমেই অবিচার করে ফেলেছ।’ তারপর তিনি নিজেই উঠে গিয়ে অপর পক্ষের পাশে বসেন।

তাঁর শাসনামলে তাঁর জীবনযাপন এতটাই সহজ ছিল যে, তিনি যে খলিফা এটা বোঝার বাহ্যিক কোনো লক্ষণ ছিল না। তিনি সাধারণ খাবার খেতেন। প্রায়শই যবের রুটি জায়তুন তেল দিয়ে খেতেন। খসখসে মোটা তালি দেওয়া কাপড় পড়তেন। একবার তাঁর জামায় বারোটি তালি পাওয়া গিয়েছিল।

রাতের বেলায় তিনি নিঃশব্দে শহরে ঘুরে বেড়াতেন, মানুষের অভিযোগ খোলা মনে শুনতেন এবং সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁদের সাহায্য করতেন। মুসলমানদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করতেন এবং অমুসলিমদের সঙ্গেও সদ্ব্যবহার করতেন।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭০টি দেশকে হারিয়ে বাংলাদেশি হাফেজ আনাসের বিশ্বজয়

ইসলাম ডেস্ক 
কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২ তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ আনাস। ছবি: সংগৃহীত
কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২ তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ আনাস। ছবি: সংগৃহীত

তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করলেন বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করা হাফেজ আনাস বিন আতিক। এবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন তিনি।

গতকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

হাফেজ আনাসের ওস্তাদ শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কায়রোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম হয়েছেন আমাদের ছাত্র হাফেজ আনাস বিন আতিক।’

ওস্তাদ নেছার আহমদ আন নাছিরীর সঙ্গে হাফেজ আনাস। ছবি: সংগৃহীত
ওস্তাদ নেছার আহমদ আন নাছিরীর সঙ্গে হাফেজ আনাস। ছবি: সংগৃহীত

হাফেজ আনাস বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জাতীয় বাছাইপর্বে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করেন।

তিনি রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে।

উল্লেখ্য, এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নবীজি (সা.)-এর আদর্শে জীবন গড়ার উপায়

ইসলাম ডেস্ক 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

যেকোনো নির্মাণের জন্য একটি নিখুঁত মডেল বা নকশা অপরিহার্য। এটি যেমন বস্তুগত নির্মাণের ক্ষেত্রে সত্য, তেমনি মানুষের জীবন গড়ার মতো সূক্ষ্ম ও গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্যও তা আরও বেশি জরুরি। জীবনের পথে সঠিক দিশা পেতে এবং নিজেকে একজন সুশীল ও উৎকর্ষমণ্ডিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে একটি পূর্ণাঙ্গ মডেলের অনুসরণ অপরিহার্য।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন সেই সর্বাঙ্গসুন্দর ও নিখুঁত মডেল, যাঁকে আল্লাহ তাআলা মানবজাতির জন্য প্রেরণা ও আদর্শ হিসেবে পাঠিয়েছেন। তাঁর জীবনচরিত শুধু ধর্মীয় বিষয় নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বাহ্যিক সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে অন্তর্জগতের পরিশুদ্ধি পর্যন্ত; সবকিছুতে তাঁর আদর্শ অনুসরণীয়। তাঁর জীবনী পাঠ করলে আমরা দেখতে পাই, কীভাবে একজন মানুষ সর্বোচ্চ পর্যায়ের সত্যবাদিতা, সাহস, কোমলতা, ন্যায়পরায়ণতা ও সহনশীলতার অধিকারী হতে পারেন। সমাজে আমরা প্রায়ই আচার-আচরণে অশিষ্টতা ও ভারসাম্যহীনতা দেখতে পাই। এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে নবীজির সিরাত আমাদের পথ দেখায়। তাঁর কথায় ছিল স্পষ্টতা ও মধুরতা, আর ব্যবহারে ছিল শিষ্টাচার ও মর্যাদা। তিনি মানুষকে শেখান, কীভাবে একজন আদর্শ পেশাজীবী হতে হয় এবং কীভাবে জীবনের সব দায়িত্ব সচেতনভাবে পালন করতে হয়।

জীবনে যখন দুঃখ, কষ্ট ও প্রতিকূলতা আসে, তখন তাঁর জীবনচরিত থেকে আমরা পাই অটুট মনোবল ও আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থার শিক্ষা। তাঁর জীবনেও অসংখ্য বিপদ এসেছিল, কিন্তু তিনি ধৈর্য ও দৃঢ়তার সঙ্গে সব মোকাবিলা করেছেন। তাঁর আদর্শ থেকে আমরা শিখি, কীভাবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রেখে এগিয়ে যেতে হয়।

মহানবী (সা.)-এর সিরাত শুধু একটি ইতিহাস নয়, বরং একটি জীবন্ত আদর্শ। তাঁর শিক্ষা অনুসরণের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে আলোকিত করতে পারে। কারণ, কোরআনের ভাষায়, ‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকাল ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসুলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ সুতরাং, নিজেদের জীবনকে পরিপূর্ণ করতে হলে সিরাত পাঠের কোনো বিকল্প নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ০৯ মিনিট
ফজর০৫: ১০ মিনিট০৬: ২৯ মিনিট
জোহর১১: ৫৩ মিনিট০৩: ৩৬ মিনিট
আসর০৩: ৩৭ মিনিট০৫: ১১ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৩ মিনিট০৬: ৩২ মিনিট
এশা০৬: ৩৩ মিনিট০৫: ০৯ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মক্কা-মদিনায় ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা, যা জানা গেল

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসন্ন হজ মৌসুম চলাকালে মসজিদুল হারাম (মক্কা) এবং মসজিদে নববীর (মদিনা) ভেতরে ছবি তোলার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার যে সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে, তা মিথ্যা বলে জানিয়েছে দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন।

এ বিষয়ে কোনো সৌদি আরবের সরকারি নীতি পরিবর্তন ঘোষণা করা হয়নি বলে জানায় এই সংবাদমাধ্যম।

৮ ডিসেম্বর (সোমবার) সংবাদমাধ্যমটির ফ্যাক্টচেক থেকে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদনগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, যেখানে দাবি করা হয়েছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ ২০২৬ সালের হজ মৌসুমে মসজিদুল হারাম এবং মসজিদে নববীর ভেতরে ছবি তোলার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো সরকারি সংস্থা থেকে এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়নি।

দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ধরনের মিথ্যা দাবি মাঝেমধ্যে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে হজ বা ওমরাহর মৌসুমে এমন গুজব বেশি বিস্তার লাভ করে। এসব তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়াই কাম্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত