মুহাম্মদ মিশকাত

আজকাল ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বিক্রেতার প্রতারণার মনোভাব, ক্রেতার অসতর্কতা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রতারণার হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। অনলাইন শপিংয়ে যেসব সংকট তৈরি হচ্ছে, তার সুন্দর ও যুগোপযোগী সমাধান দিয়েছে ইসলামি শরিয়ত। কোরআন, হাদিস ও ফিকহের মূলনীতিগুলো মেনে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করলে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে এসব সংকট মূলেই বিনষ্ট হবে। ক্রেতা-বিক্রেতার কেউই কোনোভাবে প্রতারিত কিংবা বঞ্চিত হবেন না।
অনলাইনে কেনাকাটার সবচেয়ে বড় সংকট প্রতারণা। ইসলামে প্রতারণা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জঘন্য অপরাধ। একবার রসুল (স.) বাজারে একটি খাদ্যস্তূপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি খাদ্যস্তূপের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিলে ভেতরে ভেজা পেলেন। তখন তিনি বললেন, সমস্যা কী হে পণ্যের মালিক? সে বলল, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে হে আল্লাহর রসুল। রসুল (স.) তাকে বললেন, ‘তাহলে ভেজা অংশ শস্যের ওপরে রাখলে না কেন, যাতে তা দেখেই ক্রেতা ক্রয় করতে পারে? যে আমাদের প্রতারিত করে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১০২)
পণ্যের দোষ-ত্রুটি গোপন করে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তা বিক্রি করা ইসলামে নিষিদ্ধ। দোষ-ত্রুটি থাকলে অবশ্যই ক্রেতাকে তা জানাতে হবে। বিক্রির সময় পণ্যের দুর্বলতা উল্লেখ না করা হারাম। (ইসলামে হালাল-হারামের বিধান, পৃষ্ঠা: ৩৬০)
প্রতারিত না হওয়ার জন্য ইসলাম ক্রেতার এখতিয়ার তথা অধিকারের কথা বলে। রসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন হয়ে না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত চুক্তি ভঙ্গ করার এখতিয়ার থাকবে। যদি তারা উভয়েই সততা অবলম্বন করে এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে, তাহলে তাদের বেচাকেনায় কল্যাণ হবে। আর যদি তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং দোষ-ত্রুটি গোপন করে, তাহলে তাদের বেচাকেনায় বরকত উধাও হয়ে যাবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০৭৯)
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী পণ্য ডেলিভারির পর টাকা পরিশোধ করার আগে প্যাকিং খোলার সুযোগ থাকে না। ফলে, পণ্যের দোষত্রুটি দেখে নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। এই ক্ষেত্রে ইসলাম পণ্যটি দেখে নেওয়ার এখতিয়ার দেয়। ফিকহের পরিভাষায় এটিকে খিয়ারে রুইয়াত বলা হয়। দেখার পর দোষ-ত্রুটি পাওয়া গেলে ফেরত দেওয়ার অধিকার গ্রাহকের রয়েছে।
তাই ঝামেলা এড়াতে অনলাইন শপগুলোতে পণ্যের সুস্পষ্ট বিস্তারিত বিবরণ থাকা চাই। পণ্যের গুণগত মান, উৎপাদনের স্থান, তারিখ, ওয়ারেন্টি-গ্যারান্টি, ওজন-সাইজ ইত্যাদির যথাযথ বর্ণনা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের লুকোচুরি করলে, তা প্রতারণা বলে গণ্য হবে, যার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মন্দ পরিণাম তাদের জন্য, যারা মাপে কম দেয়। যারা মানুষের কাছ থেকে মেপে নেওয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে এবং নিজের বিক্রয়ের জন্য ওজন করার সময় কম দেয়। তারা কি চিন্তা করে না, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে?’ (সুরা মুতাফফিফিন, আয়াত: ১-৫)
ক্যাশ অন ডেলিভারির সুযোগ না রাখায়, অনেক ই-কমার্স সাইটে টাকা আগে পরিশোধ করে গ্রাহক নিরুপায় হয়ে পণ্য গ্রহণ করেন। তাই ক্যাশ অন ডেলিভারি ও পণ্য পছন্দ না হলে ফেরত দেওয়ার নিয়ম থাকতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে বিক্রেতা অবশ্যই ডেলিভারি চার্জ অগ্রিম রাখতে পারেন। এতে করে ক্যাশ অন ডেলিভারির সুযোগ গ্রহণ করে ক্রেতার পক্ষ থেকে কোনো প্রতারণার আশঙ্কা থাকবে না। ফলে বিক্রেতা লোকসান ও সময়ের অপচয় থেকে রেহাই পাবেন।
ক্রয়-বিক্রয়ের আরেকটি মূলনীতি হলো, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে। পণ্যের ডেলিভারির সময় উল্লেখ না করলে বেচাকেনা সহিহ হবে না। আর ডেলিভারির ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহে গড়িমসি করার কোনো সুযোগ নেই।
তা ছাড়া কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত লোকদের মাধ্যমে মিথ্যা রিভিউ দিয়ে গ্রাহকদের প্রতারিত করা যাবে না। মিথ্যার ধ্বংস অনিবার্য। এটি একধরনের দালালি, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। রসুল (স.) বলেছেন, ‘ক্রেতার বলা মূল্যের ওপর মূল্য বৃদ্ধি করে তোমরা মানুষকে ধোঁকা দিয়ো না।’ (রিয়াদুস সালিহিন, হাদিস: ১৫৮১)
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আজকাল ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বিক্রেতার প্রতারণার মনোভাব, ক্রেতার অসতর্কতা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রতারণার হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। অনলাইন শপিংয়ে যেসব সংকট তৈরি হচ্ছে, তার সুন্দর ও যুগোপযোগী সমাধান দিয়েছে ইসলামি শরিয়ত। কোরআন, হাদিস ও ফিকহের মূলনীতিগুলো মেনে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করলে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে এসব সংকট মূলেই বিনষ্ট হবে। ক্রেতা-বিক্রেতার কেউই কোনোভাবে প্রতারিত কিংবা বঞ্চিত হবেন না।
অনলাইনে কেনাকাটার সবচেয়ে বড় সংকট প্রতারণা। ইসলামে প্রতারণা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জঘন্য অপরাধ। একবার রসুল (স.) বাজারে একটি খাদ্যস্তূপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি খাদ্যস্তূপের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিলে ভেতরে ভেজা পেলেন। তখন তিনি বললেন, সমস্যা কী হে পণ্যের মালিক? সে বলল, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে হে আল্লাহর রসুল। রসুল (স.) তাকে বললেন, ‘তাহলে ভেজা অংশ শস্যের ওপরে রাখলে না কেন, যাতে তা দেখেই ক্রেতা ক্রয় করতে পারে? যে আমাদের প্রতারিত করে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১০২)
পণ্যের দোষ-ত্রুটি গোপন করে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তা বিক্রি করা ইসলামে নিষিদ্ধ। দোষ-ত্রুটি থাকলে অবশ্যই ক্রেতাকে তা জানাতে হবে। বিক্রির সময় পণ্যের দুর্বলতা উল্লেখ না করা হারাম। (ইসলামে হালাল-হারামের বিধান, পৃষ্ঠা: ৩৬০)
প্রতারিত না হওয়ার জন্য ইসলাম ক্রেতার এখতিয়ার তথা অধিকারের কথা বলে। রসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন হয়ে না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত চুক্তি ভঙ্গ করার এখতিয়ার থাকবে। যদি তারা উভয়েই সততা অবলম্বন করে এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে, তাহলে তাদের বেচাকেনায় কল্যাণ হবে। আর যদি তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং দোষ-ত্রুটি গোপন করে, তাহলে তাদের বেচাকেনায় বরকত উধাও হয়ে যাবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০৭৯)
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী পণ্য ডেলিভারির পর টাকা পরিশোধ করার আগে প্যাকিং খোলার সুযোগ থাকে না। ফলে, পণ্যের দোষত্রুটি দেখে নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। এই ক্ষেত্রে ইসলাম পণ্যটি দেখে নেওয়ার এখতিয়ার দেয়। ফিকহের পরিভাষায় এটিকে খিয়ারে রুইয়াত বলা হয়। দেখার পর দোষ-ত্রুটি পাওয়া গেলে ফেরত দেওয়ার অধিকার গ্রাহকের রয়েছে।
তাই ঝামেলা এড়াতে অনলাইন শপগুলোতে পণ্যের সুস্পষ্ট বিস্তারিত বিবরণ থাকা চাই। পণ্যের গুণগত মান, উৎপাদনের স্থান, তারিখ, ওয়ারেন্টি-গ্যারান্টি, ওজন-সাইজ ইত্যাদির যথাযথ বর্ণনা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের লুকোচুরি করলে, তা প্রতারণা বলে গণ্য হবে, যার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মন্দ পরিণাম তাদের জন্য, যারা মাপে কম দেয়। যারা মানুষের কাছ থেকে মেপে নেওয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে এবং নিজের বিক্রয়ের জন্য ওজন করার সময় কম দেয়। তারা কি চিন্তা করে না, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে?’ (সুরা মুতাফফিফিন, আয়াত: ১-৫)
ক্যাশ অন ডেলিভারির সুযোগ না রাখায়, অনেক ই-কমার্স সাইটে টাকা আগে পরিশোধ করে গ্রাহক নিরুপায় হয়ে পণ্য গ্রহণ করেন। তাই ক্যাশ অন ডেলিভারি ও পণ্য পছন্দ না হলে ফেরত দেওয়ার নিয়ম থাকতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে বিক্রেতা অবশ্যই ডেলিভারি চার্জ অগ্রিম রাখতে পারেন। এতে করে ক্যাশ অন ডেলিভারির সুযোগ গ্রহণ করে ক্রেতার পক্ষ থেকে কোনো প্রতারণার আশঙ্কা থাকবে না। ফলে বিক্রেতা লোকসান ও সময়ের অপচয় থেকে রেহাই পাবেন।
ক্রয়-বিক্রয়ের আরেকটি মূলনীতি হলো, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে। পণ্যের ডেলিভারির সময় উল্লেখ না করলে বেচাকেনা সহিহ হবে না। আর ডেলিভারির ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহে গড়িমসি করার কোনো সুযোগ নেই।
তা ছাড়া কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত লোকদের মাধ্যমে মিথ্যা রিভিউ দিয়ে গ্রাহকদের প্রতারিত করা যাবে না। মিথ্যার ধ্বংস অনিবার্য। এটি একধরনের দালালি, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। রসুল (স.) বলেছেন, ‘ক্রেতার বলা মূল্যের ওপর মূল্য বৃদ্ধি করে তোমরা মানুষকে ধোঁকা দিয়ো না।’ (রিয়াদুস সালিহিন, হাদিস: ১৫৮১)
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মুহাম্মদ মিশকাত

আজকাল ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বিক্রেতার প্রতারণার মনোভাব, ক্রেতার অসতর্কতা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রতারণার হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। অনলাইন শপিংয়ে যেসব সংকট তৈরি হচ্ছে, তার সুন্দর ও যুগোপযোগী সমাধান দিয়েছে ইসলামি শরিয়ত। কোরআন, হাদিস ও ফিকহের মূলনীতিগুলো মেনে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করলে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে এসব সংকট মূলেই বিনষ্ট হবে। ক্রেতা-বিক্রেতার কেউই কোনোভাবে প্রতারিত কিংবা বঞ্চিত হবেন না।
অনলাইনে কেনাকাটার সবচেয়ে বড় সংকট প্রতারণা। ইসলামে প্রতারণা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জঘন্য অপরাধ। একবার রসুল (স.) বাজারে একটি খাদ্যস্তূপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি খাদ্যস্তূপের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিলে ভেতরে ভেজা পেলেন। তখন তিনি বললেন, সমস্যা কী হে পণ্যের মালিক? সে বলল, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে হে আল্লাহর রসুল। রসুল (স.) তাকে বললেন, ‘তাহলে ভেজা অংশ শস্যের ওপরে রাখলে না কেন, যাতে তা দেখেই ক্রেতা ক্রয় করতে পারে? যে আমাদের প্রতারিত করে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১০২)
পণ্যের দোষ-ত্রুটি গোপন করে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তা বিক্রি করা ইসলামে নিষিদ্ধ। দোষ-ত্রুটি থাকলে অবশ্যই ক্রেতাকে তা জানাতে হবে। বিক্রির সময় পণ্যের দুর্বলতা উল্লেখ না করা হারাম। (ইসলামে হালাল-হারামের বিধান, পৃষ্ঠা: ৩৬০)
প্রতারিত না হওয়ার জন্য ইসলাম ক্রেতার এখতিয়ার তথা অধিকারের কথা বলে। রসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন হয়ে না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত চুক্তি ভঙ্গ করার এখতিয়ার থাকবে। যদি তারা উভয়েই সততা অবলম্বন করে এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে, তাহলে তাদের বেচাকেনায় কল্যাণ হবে। আর যদি তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং দোষ-ত্রুটি গোপন করে, তাহলে তাদের বেচাকেনায় বরকত উধাও হয়ে যাবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০৭৯)
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী পণ্য ডেলিভারির পর টাকা পরিশোধ করার আগে প্যাকিং খোলার সুযোগ থাকে না। ফলে, পণ্যের দোষত্রুটি দেখে নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। এই ক্ষেত্রে ইসলাম পণ্যটি দেখে নেওয়ার এখতিয়ার দেয়। ফিকহের পরিভাষায় এটিকে খিয়ারে রুইয়াত বলা হয়। দেখার পর দোষ-ত্রুটি পাওয়া গেলে ফেরত দেওয়ার অধিকার গ্রাহকের রয়েছে।
তাই ঝামেলা এড়াতে অনলাইন শপগুলোতে পণ্যের সুস্পষ্ট বিস্তারিত বিবরণ থাকা চাই। পণ্যের গুণগত মান, উৎপাদনের স্থান, তারিখ, ওয়ারেন্টি-গ্যারান্টি, ওজন-সাইজ ইত্যাদির যথাযথ বর্ণনা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের লুকোচুরি করলে, তা প্রতারণা বলে গণ্য হবে, যার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মন্দ পরিণাম তাদের জন্য, যারা মাপে কম দেয়। যারা মানুষের কাছ থেকে মেপে নেওয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে এবং নিজের বিক্রয়ের জন্য ওজন করার সময় কম দেয়। তারা কি চিন্তা করে না, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে?’ (সুরা মুতাফফিফিন, আয়াত: ১-৫)
ক্যাশ অন ডেলিভারির সুযোগ না রাখায়, অনেক ই-কমার্স সাইটে টাকা আগে পরিশোধ করে গ্রাহক নিরুপায় হয়ে পণ্য গ্রহণ করেন। তাই ক্যাশ অন ডেলিভারি ও পণ্য পছন্দ না হলে ফেরত দেওয়ার নিয়ম থাকতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে বিক্রেতা অবশ্যই ডেলিভারি চার্জ অগ্রিম রাখতে পারেন। এতে করে ক্যাশ অন ডেলিভারির সুযোগ গ্রহণ করে ক্রেতার পক্ষ থেকে কোনো প্রতারণার আশঙ্কা থাকবে না। ফলে বিক্রেতা লোকসান ও সময়ের অপচয় থেকে রেহাই পাবেন।
ক্রয়-বিক্রয়ের আরেকটি মূলনীতি হলো, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে। পণ্যের ডেলিভারির সময় উল্লেখ না করলে বেচাকেনা সহিহ হবে না। আর ডেলিভারির ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহে গড়িমসি করার কোনো সুযোগ নেই।
তা ছাড়া কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত লোকদের মাধ্যমে মিথ্যা রিভিউ দিয়ে গ্রাহকদের প্রতারিত করা যাবে না। মিথ্যার ধ্বংস অনিবার্য। এটি একধরনের দালালি, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। রসুল (স.) বলেছেন, ‘ক্রেতার বলা মূল্যের ওপর মূল্য বৃদ্ধি করে তোমরা মানুষকে ধোঁকা দিয়ো না।’ (রিয়াদুস সালিহিন, হাদিস: ১৫৮১)
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আজকাল ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বিক্রেতার প্রতারণার মনোভাব, ক্রেতার অসতর্কতা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রতারণার হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। অনলাইন শপিংয়ে যেসব সংকট তৈরি হচ্ছে, তার সুন্দর ও যুগোপযোগী সমাধান দিয়েছে ইসলামি শরিয়ত। কোরআন, হাদিস ও ফিকহের মূলনীতিগুলো মেনে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করলে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে এসব সংকট মূলেই বিনষ্ট হবে। ক্রেতা-বিক্রেতার কেউই কোনোভাবে প্রতারিত কিংবা বঞ্চিত হবেন না।
অনলাইনে কেনাকাটার সবচেয়ে বড় সংকট প্রতারণা। ইসলামে প্রতারণা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জঘন্য অপরাধ। একবার রসুল (স.) বাজারে একটি খাদ্যস্তূপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি খাদ্যস্তূপের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিলে ভেতরে ভেজা পেলেন। তখন তিনি বললেন, সমস্যা কী হে পণ্যের মালিক? সে বলল, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে হে আল্লাহর রসুল। রসুল (স.) তাকে বললেন, ‘তাহলে ভেজা অংশ শস্যের ওপরে রাখলে না কেন, যাতে তা দেখেই ক্রেতা ক্রয় করতে পারে? যে আমাদের প্রতারিত করে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১০২)
পণ্যের দোষ-ত্রুটি গোপন করে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তা বিক্রি করা ইসলামে নিষিদ্ধ। দোষ-ত্রুটি থাকলে অবশ্যই ক্রেতাকে তা জানাতে হবে। বিক্রির সময় পণ্যের দুর্বলতা উল্লেখ না করা হারাম। (ইসলামে হালাল-হারামের বিধান, পৃষ্ঠা: ৩৬০)
প্রতারিত না হওয়ার জন্য ইসলাম ক্রেতার এখতিয়ার তথা অধিকারের কথা বলে। রসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন হয়ে না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত চুক্তি ভঙ্গ করার এখতিয়ার থাকবে। যদি তারা উভয়েই সততা অবলম্বন করে এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে, তাহলে তাদের বেচাকেনায় কল্যাণ হবে। আর যদি তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং দোষ-ত্রুটি গোপন করে, তাহলে তাদের বেচাকেনায় বরকত উধাও হয়ে যাবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০৭৯)
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী পণ্য ডেলিভারির পর টাকা পরিশোধ করার আগে প্যাকিং খোলার সুযোগ থাকে না। ফলে, পণ্যের দোষত্রুটি দেখে নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। এই ক্ষেত্রে ইসলাম পণ্যটি দেখে নেওয়ার এখতিয়ার দেয়। ফিকহের পরিভাষায় এটিকে খিয়ারে রুইয়াত বলা হয়। দেখার পর দোষ-ত্রুটি পাওয়া গেলে ফেরত দেওয়ার অধিকার গ্রাহকের রয়েছে।
তাই ঝামেলা এড়াতে অনলাইন শপগুলোতে পণ্যের সুস্পষ্ট বিস্তারিত বিবরণ থাকা চাই। পণ্যের গুণগত মান, উৎপাদনের স্থান, তারিখ, ওয়ারেন্টি-গ্যারান্টি, ওজন-সাইজ ইত্যাদির যথাযথ বর্ণনা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের লুকোচুরি করলে, তা প্রতারণা বলে গণ্য হবে, যার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মন্দ পরিণাম তাদের জন্য, যারা মাপে কম দেয়। যারা মানুষের কাছ থেকে মেপে নেওয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে এবং নিজের বিক্রয়ের জন্য ওজন করার সময় কম দেয়। তারা কি চিন্তা করে না, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে?’ (সুরা মুতাফফিফিন, আয়াত: ১-৫)
ক্যাশ অন ডেলিভারির সুযোগ না রাখায়, অনেক ই-কমার্স সাইটে টাকা আগে পরিশোধ করে গ্রাহক নিরুপায় হয়ে পণ্য গ্রহণ করেন। তাই ক্যাশ অন ডেলিভারি ও পণ্য পছন্দ না হলে ফেরত দেওয়ার নিয়ম থাকতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে বিক্রেতা অবশ্যই ডেলিভারি চার্জ অগ্রিম রাখতে পারেন। এতে করে ক্যাশ অন ডেলিভারির সুযোগ গ্রহণ করে ক্রেতার পক্ষ থেকে কোনো প্রতারণার আশঙ্কা থাকবে না। ফলে বিক্রেতা লোকসান ও সময়ের অপচয় থেকে রেহাই পাবেন।
ক্রয়-বিক্রয়ের আরেকটি মূলনীতি হলো, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে। পণ্যের ডেলিভারির সময় উল্লেখ না করলে বেচাকেনা সহিহ হবে না। আর ডেলিভারির ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহে গড়িমসি করার কোনো সুযোগ নেই।
তা ছাড়া কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত লোকদের মাধ্যমে মিথ্যা রিভিউ দিয়ে গ্রাহকদের প্রতারিত করা যাবে না। মিথ্যার ধ্বংস অনিবার্য। এটি একধরনের দালালি, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। রসুল (স.) বলেছেন, ‘ক্রেতার বলা মূল্যের ওপর মূল্য বৃদ্ধি করে তোমরা মানুষকে ধোঁকা দিয়ো না।’ (রিয়াদুস সালিহিন, হাদিস: ১৫৮১)
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

তাকওয়া আত্মার পরিশুদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয় হৃদয়ে ধারণ করে তাঁর আদেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করা। অন্তরে আল্লাহর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিফলন এটি। তাকওয়া অর্জন হলে ব্যক্তি সব ধরনের পাপ থেকে দূরে থাকতে চায় এবং তার কাজকর্মে আল্লাহর সন্তুষ্টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।
১৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
২ দিন আগে
সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

তাকওয়া আত্মার পরিশুদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয় হৃদয়ে ধারণ করে তাঁর আদেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করা। অন্তরে আল্লাহর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিফলন এটি। তাকওয়া অর্জন হলে ব্যক্তি সব ধরনের পাপ থেকে দূরে থাকতে চায় এবং তার কাজকর্মে আল্লাহর সন্তুষ্টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করে। আল্লাহ তাআলা তাকওয়া অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে মোত্তাকি বান্দারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় এবং ভালোবাসার পাত্র।’ (সুরা হুজরাত: ১৩)
তাকওয়া অর্জনের সহজ তিনটি উপায় রয়েছে:
এক. ইখলাসের সঙ্গে ইবাদত করলে অন্তরে তাকওয়া আসে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের সেই প্রতিপালকের ইবাদত কর; যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্ববর্তীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা মোত্তাকি হতে পার।’ (সুরা বাকারা: ২১)
দুই. মহান আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ফিকিরের মাধ্যমে হৃদয়ে তাকওয়া সৃষ্টি করা সম্ভব। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রাত ও দিনের আবর্তনে, আর আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর মাঝে আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন তাতে তাকওয়া অবলম্বনকারী সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা ইউনুস: ৬)
তিন. নবীজি (সা.)-এর প্রতি নিরেট ভালোবাসা এবং তাঁর অনুসরণের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া অর্জন করা যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুলের সামনে তাদের আওয়াজ নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তর তাকওয়ার জন্য যাচাই-বাছাই করে নিয়েছেন। তাদের জন্য আছে ক্ষমা আর মহাপুরস্কার।’ (সুরা হুজুরাত: ৩)
যারা তাকওয়া অর্জন করতে পারবে, তাদের জন্য রয়েছে অনন্য সুসংবাদ। পবিত্র কোরআনে এসেছে, যারা ইমান আনে আর তাকওয়া অবলম্বন করে, তাদের জন্য সুসংবাদ দুনিয়ার জীবনে আর আখিরাতেও। আল্লাহর কথার কোনো হেরফের হয় না, এটাই হলো বিরাট সাফল্য। (সুরা ইউনুস: ৬৩-৬৪)
আল্লাহ তাআলা আমাদের তাকওয়া অর্জন করে জীবন পরিচালনার তৌফিক দিন। আমিন।

তাকওয়া আত্মার পরিশুদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয় হৃদয়ে ধারণ করে তাঁর আদেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করা। অন্তরে আল্লাহর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিফলন এটি। তাকওয়া অর্জন হলে ব্যক্তি সব ধরনের পাপ থেকে দূরে থাকতে চায় এবং তার কাজকর্মে আল্লাহর সন্তুষ্টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করে। আল্লাহ তাআলা তাকওয়া অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে মোত্তাকি বান্দারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় এবং ভালোবাসার পাত্র।’ (সুরা হুজরাত: ১৩)
তাকওয়া অর্জনের সহজ তিনটি উপায় রয়েছে:
এক. ইখলাসের সঙ্গে ইবাদত করলে অন্তরে তাকওয়া আসে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের সেই প্রতিপালকের ইবাদত কর; যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্ববর্তীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা মোত্তাকি হতে পার।’ (সুরা বাকারা: ২১)
দুই. মহান আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ফিকিরের মাধ্যমে হৃদয়ে তাকওয়া সৃষ্টি করা সম্ভব। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রাত ও দিনের আবর্তনে, আর আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর মাঝে আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন তাতে তাকওয়া অবলম্বনকারী সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা ইউনুস: ৬)
তিন. নবীজি (সা.)-এর প্রতি নিরেট ভালোবাসা এবং তাঁর অনুসরণের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া অর্জন করা যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুলের সামনে তাদের আওয়াজ নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তর তাকওয়ার জন্য যাচাই-বাছাই করে নিয়েছেন। তাদের জন্য আছে ক্ষমা আর মহাপুরস্কার।’ (সুরা হুজুরাত: ৩)
যারা তাকওয়া অর্জন করতে পারবে, তাদের জন্য রয়েছে অনন্য সুসংবাদ। পবিত্র কোরআনে এসেছে, যারা ইমান আনে আর তাকওয়া অবলম্বন করে, তাদের জন্য সুসংবাদ দুনিয়ার জীবনে আর আখিরাতেও। আল্লাহর কথার কোনো হেরফের হয় না, এটাই হলো বিরাট সাফল্য। (সুরা ইউনুস: ৬৩-৬৪)
আল্লাহ তাআলা আমাদের তাকওয়া অর্জন করে জীবন পরিচালনার তৌফিক দিন। আমিন।

আজকাল ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বিক্রেতার প্রতারণার মনোভাব, ক্রেতার অসতর্কতা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রতারণার হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
২ দিন আগে
সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৬ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০:০০ | ০৪: ৪৬ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৭ মিনিট | ০৬: ০৩ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪২ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৩ মিনিট | ০৫: ১৮ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২০ মিনিট | ০৬: ৩৬ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৬ মিনিট | ০৪: ৪৬ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৬ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০:০০ | ০৪: ৪৬ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৭ মিনিট | ০৬: ০৩ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪২ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৩ মিনিট | ০৫: ১৮ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২০ মিনিট | ০৬: ৩৬ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৬ মিনিট | ০৪: ৪৬ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

আজকাল ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বিক্রেতার প্রতারণার মনোভাব, ক্রেতার অসতর্কতা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রতারণার হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
তাকওয়া আত্মার পরিশুদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয় হৃদয়ে ধারণ করে তাঁর আদেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করা। অন্তরে আল্লাহর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিফলন এটি। তাকওয়া অর্জন হলে ব্যক্তি সব ধরনের পাপ থেকে দূরে থাকতে চায় এবং তার কাজকর্মে আল্লাহর সন্তুষ্টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।
১৫ ঘণ্টা আগে
আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
২ দিন আগে
সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
আলমগীর দেওয়ান, সিলেট
আপনার ২৫ বছরের দাম্পত্যজীবনে সন্তান লাভের আকাঙ্ক্ষা এবং সন্তানহীনতার শূন্যতা পূরণে একটি শিশুকে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত মানবিক ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ইসলাম আপনার এই মহৎ সিদ্ধান্তকে শুধু অনুমোদনই করে না, বরং এতিম, গৃহহীন বা অসহায় শিশুর অভিভাবকত্ব নিয়ে তাকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাকে অত্যন্ত সওয়াবের কাজ হিসেবে উৎসাহিত করে। তবে শরিয়তের কিছু মৌলিক নীতিমালা মেনে এটি করতে হবে, যা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
দত্তক নিলে মানতে হবে যেসব বিধান
ইসলামে অন্য কারও সন্তানকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ, মমতা, অন্ন, বস্ত্র ও শিক্ষা দিয়ে লালন-পালন করাকে কাফালাহ বা অভিভাবকত্ব গ্রহণ বলা হয়। এটি বৈধ, বলা যায় এটি একটি মহৎ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এতিম বা অসহায় শিশুর দায়িত্ব নেওয়াকে বিপুল সওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা করেছেন। (সহিহ বুখারি: ৬০০৫)
তবে সাধারণ অর্থে প্রচলিত দত্তক প্রথা ইসলাম সমর্থন করে না, যেখানে সন্তানের আসল পিতামাতার পরিচয় মুছে ফেলা হয় এবং তাকে জৈবিক সন্তানের মতো সকল আইনি অধিকার (উত্তরাধিকার ও পর্দা) দেওয়া হয়। বরং ইসলাম অনুমোদন করে কাফালাহ, যার মূল শর্ত হলো শিশুর আসল পিতৃপরিচয় বহাল রাখা।
ইসলামে কোনো স্বাধীন মানুষের প্রকৃত পিতৃপরিচয় ছিন্ন করা সম্পূর্ণভাবে হারাম ও কবিরা গুনাহ। দত্তক নেওয়ার কারণে শিশুর আসল মা-বাবা ও বংশের সম্পর্ক কোনোভাবেই বিলুপ্ত হবে না। তাই শিশুর জন্মসনদ, শিক্ষাসনদ, ভোটার আইডি বা অন্য যেকোনো দাপ্তরিক দলিলে তার আসল পিতার নাম উল্লেখ করা আবশ্যক।
দত্তক নেওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো পর্দার বিষয়টি। লালন-পালনকারীর সঙ্গে পালিত সন্তানের রক্তের সম্পর্ক স্থাপিত হয় না। ফলে পালক নেওয়া শিশুটি ছেলে হলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাকে পালক মায়ের সঙ্গে এবং মেয়ে হলে পালক বাবার সঙ্গে শরিয়তের পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। পর্দার এই কঠোরতা এড়ানোর জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো—শিশুটিকে দুগ্ধপোষ্য অবস্থায় (জন্মের পর প্রথম দুই বছরের মধ্যে) পালক নেওয়া মায়ের কোনো বোন বা মেয়ে দ্বারা এমনভাবে দুধ পান করানো, যাতে সে দুগ্ধ-সম্পর্কীয় মাহরাম হয়ে যায়। দুগ্ধ-সম্পর্ক তৈরি হলে তাদের মধ্যে পর্দা আর আবশ্যক থাকবে না। (সহিহ বুখারি: ২৬৪৫)
পালক সন্তান লালন-পালনকারীর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারী (ওয়ারিশ) হিসেবে তাঁর সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ পাবে না। কারণ রক্তের সম্পর্ক না থাকায় সে মিরাসের হকদার হয় না। তবে, লালন-পালনকারী তাঁর জীবদ্দশায় স্নেহবশত পালক সন্তানকে সম্পত্তি দান বা হেবা করতে পারবেন। অথবা, তিনি তাঁর মোট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ থেকে পালক সন্তানের জন্য অসিয়ত (উইল) করে যেতে পারবেন।
পোষ্য সন্তানের তার লালন-পালনকারীকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতাবশত মা-বাবা বলে ডাকা জায়েজ। একইভাবে তাঁরাও সন্তানকে স্নেহ করে ছেলেমেয়ে ডাকতে পারবেন।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
আলমগীর দেওয়ান, সিলেট
আপনার ২৫ বছরের দাম্পত্যজীবনে সন্তান লাভের আকাঙ্ক্ষা এবং সন্তানহীনতার শূন্যতা পূরণে একটি শিশুকে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত মানবিক ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ইসলাম আপনার এই মহৎ সিদ্ধান্তকে শুধু অনুমোদনই করে না, বরং এতিম, গৃহহীন বা অসহায় শিশুর অভিভাবকত্ব নিয়ে তাকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাকে অত্যন্ত সওয়াবের কাজ হিসেবে উৎসাহিত করে। তবে শরিয়তের কিছু মৌলিক নীতিমালা মেনে এটি করতে হবে, যা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
দত্তক নিলে মানতে হবে যেসব বিধান
ইসলামে অন্য কারও সন্তানকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ, মমতা, অন্ন, বস্ত্র ও শিক্ষা দিয়ে লালন-পালন করাকে কাফালাহ বা অভিভাবকত্ব গ্রহণ বলা হয়। এটি বৈধ, বলা যায় এটি একটি মহৎ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এতিম বা অসহায় শিশুর দায়িত্ব নেওয়াকে বিপুল সওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা করেছেন। (সহিহ বুখারি: ৬০০৫)
তবে সাধারণ অর্থে প্রচলিত দত্তক প্রথা ইসলাম সমর্থন করে না, যেখানে সন্তানের আসল পিতামাতার পরিচয় মুছে ফেলা হয় এবং তাকে জৈবিক সন্তানের মতো সকল আইনি অধিকার (উত্তরাধিকার ও পর্দা) দেওয়া হয়। বরং ইসলাম অনুমোদন করে কাফালাহ, যার মূল শর্ত হলো শিশুর আসল পিতৃপরিচয় বহাল রাখা।
ইসলামে কোনো স্বাধীন মানুষের প্রকৃত পিতৃপরিচয় ছিন্ন করা সম্পূর্ণভাবে হারাম ও কবিরা গুনাহ। দত্তক নেওয়ার কারণে শিশুর আসল মা-বাবা ও বংশের সম্পর্ক কোনোভাবেই বিলুপ্ত হবে না। তাই শিশুর জন্মসনদ, শিক্ষাসনদ, ভোটার আইডি বা অন্য যেকোনো দাপ্তরিক দলিলে তার আসল পিতার নাম উল্লেখ করা আবশ্যক।
দত্তক নেওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো পর্দার বিষয়টি। লালন-পালনকারীর সঙ্গে পালিত সন্তানের রক্তের সম্পর্ক স্থাপিত হয় না। ফলে পালক নেওয়া শিশুটি ছেলে হলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাকে পালক মায়ের সঙ্গে এবং মেয়ে হলে পালক বাবার সঙ্গে শরিয়তের পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। পর্দার এই কঠোরতা এড়ানোর জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো—শিশুটিকে দুগ্ধপোষ্য অবস্থায় (জন্মের পর প্রথম দুই বছরের মধ্যে) পালক নেওয়া মায়ের কোনো বোন বা মেয়ে দ্বারা এমনভাবে দুধ পান করানো, যাতে সে দুগ্ধ-সম্পর্কীয় মাহরাম হয়ে যায়। দুগ্ধ-সম্পর্ক তৈরি হলে তাদের মধ্যে পর্দা আর আবশ্যক থাকবে না। (সহিহ বুখারি: ২৬৪৫)
পালক সন্তান লালন-পালনকারীর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারী (ওয়ারিশ) হিসেবে তাঁর সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ পাবে না। কারণ রক্তের সম্পর্ক না থাকায় সে মিরাসের হকদার হয় না। তবে, লালন-পালনকারী তাঁর জীবদ্দশায় স্নেহবশত পালক সন্তানকে সম্পত্তি দান বা হেবা করতে পারবেন। অথবা, তিনি তাঁর মোট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ থেকে পালক সন্তানের জন্য অসিয়ত (উইল) করে যেতে পারবেন।
পোষ্য সন্তানের তার লালন-পালনকারীকে সম্মান ও কৃতজ্ঞতাবশত মা-বাবা বলে ডাকা জায়েজ। একইভাবে তাঁরাও সন্তানকে স্নেহ করে ছেলেমেয়ে ডাকতে পারবেন।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

আজকাল ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বিক্রেতার প্রতারণার মনোভাব, ক্রেতার অসতর্কতা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রতারণার হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
তাকওয়া আত্মার পরিশুদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয় হৃদয়ে ধারণ করে তাঁর আদেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করা। অন্তরে আল্লাহর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিফলন এটি। তাকওয়া অর্জন হলে ব্যক্তি সব ধরনের পাপ থেকে দূরে থাকতে চায় এবং তার কাজকর্মে আল্লাহর সন্তুষ্টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।
১৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস।
২ দিন আগেকাউসার লাবীব

সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস। মুসলিম ঐক্যের ভিত্তি তিনটি মৌলিক উপাদানের ওপর প্রতিষ্ঠিত: এক. আল্লাহ, দুই. রাসুলুল্লাহ ও তিন. কিতাবুল্লাহ। যার অর্থ—এক আল্লাহর প্রতি অবিচল ইমান, তাঁর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসা ও সম্পূর্ণ আনুগত্য এবং আল্লাহর কিতাব পবিত্র কোরআনের পরিপূর্ণ অনুসরণ। এই ভিত্তিই মুসলমানদের জাতি, বর্ণ ও ভাষার ঊর্ধ্বে এক অভিন্ন জাতিসত্তায় পরিণত করে।
মহানবী (সা.) মুমিনের পরিচয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, ‘যারা আমাদের নামাজ মানে, আমাদের কিবলা মানে এবং আমাদের জবাই করা হালাল পশুকে হালাল মনে করে; তারা মুসলিম। তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল জিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর জিম্মাদারি খিয়ানত কোরো না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮৪-৩৮৫)।
ঐক্যবদ্ধ থাকার সুফল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুমিনদের ঐক্য ও সংহতির বিষয়ে বারবার জোর দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে ধারণ করো, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো। যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের অন্তরগুলোয় প্রীতি দিয়েছেন, ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃরূপ লাভ করেছ।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)। এখানে আল্লাহর রজ্জু বলতে ইসলাম ও কোরআনের বিধানকে বোঝানো হয়েছে, যা একাধারে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক এবং মুসলমানদের পরস্পরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যম।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে বলেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং পরস্পর কলহ কোরো না (ঐক্যবদ্ধ থাকো)। অন্যথায় তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব বিলুপ্ত হবে। আর তোমরা ধৈর্য ধরো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনফাল: ৪৬)। এই আয়াত পরিষ্কারভাবে বোঝায় যে অনৈক্য কেবল গুনাহের কাজ নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর শক্তি, প্রতিপত্তি ও সুনাম নষ্টের প্রধান কারণ।
ইসলামে মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় মুমিনেরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায় তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা হুজরাত: ১০)। এই সম্পর্কের নিদর্শন হলো পারস্পরিক সহানুভূতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতা।
মহানবী (সা.) এই সম্পর্কের গভীরতাকে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসী মুমিনগণ সম্প্রীতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতায় যেন এক দেহ এক প্রাণ—যেমন শরীরের একটি অঙ্গে আঘাত পেলে সারা অঙ্গ ব্যথা অনুভব করে, যন্ত্রণায় নির্ঘুম রাত কাটায় ও জ্বরে ঘর্মাক্ত হয়।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)। অর্থাৎ, একজন মুসলিমের বিপদ বা দুঃখকে অপর মুসলিম তার নিজের কষ্ট হিসেবে অনুভব করবে—এটাই ইসলামের শিক্ষা। মহানবী (সা.)-এর ভাষায়, প্রকৃত মুমিন তো সেই ব্যক্তি, যার হাত ও জবান থেকে অন্য মুসলমান শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করে।’ (সহিহ বুখারি)।
বিভেদ ও মতানৈক্য নিরসনের পথ
মুসলমানদের মধ্যে মতপার্থক্য বা দ্বন্দ্ব-বিবাদ থাকা স্বাভাবিক। তবে ইসলামে এই মতানৈক্য বহাল রেখে বিচ্ছিন্ন থাকার কোনো সুযোগ নেই। মতবিরোধের সৃষ্টি হলে এর সমাধানের জন্য কোরআন ও সুন্নাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো, তাহলে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে প্রত্যর্পণ করো, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমান রাখো। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।’ (সুরা নিসা: ৫৯)। এ ছাড়া, বিবাদ দেখা দিলে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনে। বলা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে নেওয়ার কথা।
অনৈক্যের পরিণাম ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ অনৈক্য, বিভেদ-বিসংবাদ ও কলহে জর্জরিত। ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত বিভাজন আজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, সারা বিশ্বে মুসলমানেরা নিপীড়িত-নির্যাতিত এবং তাদের রক্ত ঝরছে। এই বিভেদ জিইয়ে রাখা শয়তানের কাজ, যা উম্মাহর মধ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
ইতিহাস সাক্ষী, ঐক্যই শক্তি। পশ্চিমা শক্তিগুলো যখন তাদের ঐতিহাসিক শত্রুতা ভুলে নিজেদের স্বার্থে একই প্ল্যাটফর্মে সমবেত হয়, তখন মুসলিম দেশগুলো নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ও বিভাজনে ডুবে থাকে। মুসলিম ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ না থাকার কারণেই বহির্বিশ্বে আজ মুসলিমরা তাদের ন্যায্য অধিকার হারাচ্ছে, নিজ ভূখণ্ডে দাসে পরিণত হচ্ছে এবং মজলুমদের কান্না থামছে না।
আখিরাতে মুক্তি ও দুনিয়ায় সফলতার জন্য পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি অপরিহার্য। সকল ভেদাভেদ, বিভেদ-বিভাজন ভুলে এক জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকা মুমিনের ইমানি দায়িত্ব। বিভেদ নয়, বরং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে সহিষ্ণুতা ও কল্যাণকামিতার ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করতে পারলেই আমরা আল্লাহর ভালোবাসার পাত্র হতে পারব এবং বহিঃশত্রুর সামনে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হতে পারব।

সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্য অপরিহার্য। মুসলিম উম্মাহর জন্যও এটি এক মৌলিক ভিত্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঐক্যের মূল সূত্র হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, অর্থাৎ এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস। মুসলিম ঐক্যের ভিত্তি তিনটি মৌলিক উপাদানের ওপর প্রতিষ্ঠিত: এক. আল্লাহ, দুই. রাসুলুল্লাহ ও তিন. কিতাবুল্লাহ। যার অর্থ—এক আল্লাহর প্রতি অবিচল ইমান, তাঁর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসা ও সম্পূর্ণ আনুগত্য এবং আল্লাহর কিতাব পবিত্র কোরআনের পরিপূর্ণ অনুসরণ। এই ভিত্তিই মুসলমানদের জাতি, বর্ণ ও ভাষার ঊর্ধ্বে এক অভিন্ন জাতিসত্তায় পরিণত করে।
মহানবী (সা.) মুমিনের পরিচয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, ‘যারা আমাদের নামাজ মানে, আমাদের কিবলা মানে এবং আমাদের জবাই করা হালাল পশুকে হালাল মনে করে; তারা মুসলিম। তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল জিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর জিম্মাদারি খিয়ানত কোরো না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮৪-৩৮৫)।
ঐক্যবদ্ধ থাকার সুফল
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুমিনদের ঐক্য ও সংহতির বিষয়ে বারবার জোর দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে ধারণ করো, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো। যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের অন্তরগুলোয় প্রীতি দিয়েছেন, ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃরূপ লাভ করেছ।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)। এখানে আল্লাহর রজ্জু বলতে ইসলাম ও কোরআনের বিধানকে বোঝানো হয়েছে, যা একাধারে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক এবং মুসলমানদের পরস্পরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যম।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে বলেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং পরস্পর কলহ কোরো না (ঐক্যবদ্ধ থাকো)। অন্যথায় তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব বিলুপ্ত হবে। আর তোমরা ধৈর্য ধরো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনফাল: ৪৬)। এই আয়াত পরিষ্কারভাবে বোঝায় যে অনৈক্য কেবল গুনাহের কাজ নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর শক্তি, প্রতিপত্তি ও সুনাম নষ্টের প্রধান কারণ।
ইসলামে মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় মুমিনেরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায় তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা হুজরাত: ১০)। এই সম্পর্কের নিদর্শন হলো পারস্পরিক সহানুভূতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতা।
মহানবী (সা.) এই সম্পর্কের গভীরতাকে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসী মুমিনগণ সম্প্রীতি, করুণা ও দয়ার্দ্রতায় যেন এক দেহ এক প্রাণ—যেমন শরীরের একটি অঙ্গে আঘাত পেলে সারা অঙ্গ ব্যথা অনুভব করে, যন্ত্রণায় নির্ঘুম রাত কাটায় ও জ্বরে ঘর্মাক্ত হয়।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)। অর্থাৎ, একজন মুসলিমের বিপদ বা দুঃখকে অপর মুসলিম তার নিজের কষ্ট হিসেবে অনুভব করবে—এটাই ইসলামের শিক্ষা। মহানবী (সা.)-এর ভাষায়, প্রকৃত মুমিন তো সেই ব্যক্তি, যার হাত ও জবান থেকে অন্য মুসলমান শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করে।’ (সহিহ বুখারি)।
বিভেদ ও মতানৈক্য নিরসনের পথ
মুসলমানদের মধ্যে মতপার্থক্য বা দ্বন্দ্ব-বিবাদ থাকা স্বাভাবিক। তবে ইসলামে এই মতানৈক্য বহাল রেখে বিচ্ছিন্ন থাকার কোনো সুযোগ নেই। মতবিরোধের সৃষ্টি হলে এর সমাধানের জন্য কোরআন ও সুন্নাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো, তাহলে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে প্রত্যর্পণ করো, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমান রাখো। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।’ (সুরা নিসা: ৫৯)। এ ছাড়া, বিবাদ দেখা দিলে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনে। বলা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে নেওয়ার কথা।
অনৈক্যের পরিণাম ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ অনৈক্য, বিভেদ-বিসংবাদ ও কলহে জর্জরিত। ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত বিভাজন আজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর ফলস্বরূপ, সারা বিশ্বে মুসলমানেরা নিপীড়িত-নির্যাতিত এবং তাদের রক্ত ঝরছে। এই বিভেদ জিইয়ে রাখা শয়তানের কাজ, যা উম্মাহর মধ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
ইতিহাস সাক্ষী, ঐক্যই শক্তি। পশ্চিমা শক্তিগুলো যখন তাদের ঐতিহাসিক শত্রুতা ভুলে নিজেদের স্বার্থে একই প্ল্যাটফর্মে সমবেত হয়, তখন মুসলিম দেশগুলো নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ও বিভাজনে ডুবে থাকে। মুসলিম ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ না থাকার কারণেই বহির্বিশ্বে আজ মুসলিমরা তাদের ন্যায্য অধিকার হারাচ্ছে, নিজ ভূখণ্ডে দাসে পরিণত হচ্ছে এবং মজলুমদের কান্না থামছে না।
আখিরাতে মুক্তি ও দুনিয়ায় সফলতার জন্য পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি অপরিহার্য। সকল ভেদাভেদ, বিভেদ-বিভাজন ভুলে এক জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকা মুমিনের ইমানি দায়িত্ব। বিভেদ নয়, বরং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে সহিষ্ণুতা ও কল্যাণকামিতার ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করতে পারলেই আমরা আল্লাহর ভালোবাসার পাত্র হতে পারব এবং বহিঃশত্রুর সামনে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো শক্তিশালী জাতিতে রূপান্তরিত হতে পারব।

আজকাল ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বিক্রেতার প্রতারণার মনোভাব, ক্রেতার অসতর্কতা এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় প্রতারণার হারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
২৮ নভেম্বর ২০২১
তাকওয়া আত্মার পরিশুদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয় হৃদয়ে ধারণ করে তাঁর আদেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করা। অন্তরে আল্লাহর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিফলন এটি। তাকওয়া অর্জন হলে ব্যক্তি সব ধরনের পাপ থেকে দূরে থাকতে চায় এবং তার কাজকর্মে আল্লাহর সন্তুষ্টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।
১৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
আমি বিয়ে করেছি প্রায় ২৫ বছর হয়েছে। আল্লাহ আমাকে এখনো কোনো সন্তান দেননি। চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, আমার স্ত্রীর সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি এতিম সন্তান দত্তক নেব। ইসলামে সন্তান দত্তক নেওয়ার সঠিক বিধান জানালে উপকৃত হব।
২ দিন আগে