ফয়জুল্লাহ রিয়াদ

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা। জীবন্ত মেয়েকে পুঁতে ফেলতে একটুও বিচলিত হয় না পাষণ্ড বাবার হৃদয়। মানুষের তৈরি প্রতিমা প্রভুত্বের আসনে সমাসীন। পায়ে তার মাথা ঠুকছে সবাই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। সময়ের আবর্তে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সংঘাত চলে বছরের পর বছর। যুগটাকে বলা হয়—আইয়ামে জাহেলিয়া—মূর্খতা ও বর্বরতার যুগ।
এহেন পরিস্থিতিতে ধরায় এলেন এক মহামানব। মা আমেনার কোল আলোকিত করে। শান্তির পতাকা হাতে। সুখের বার্তা নিয়ে। হৃদয়টা তাঁর মানবতায় পরিপূর্ণ। সবার সুখে হাসেন। সবার দুঃখে পাশেও থাকেন। দুঃখ-সুখে সবার সমান অংশীদার তিনি। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন অকুণ্ঠ। দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান। সদা সত্য কথা বলেন। আমানতের খেয়ানত করেন না। অঙ্গীকার পূরণ করেন। লোকজন তাঁকে একনামে চেনে। ‘আল আমিন’ খেতাবে ভূষিত করে। পবিত্র কোরআন তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ উপাধিতে আখ্যায়িত করেছে। (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) নবী করিম (সা.)-এর জীবনের ধাপে ধাপে, প্রতিটি পদক্ষেপে, পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শান্তির বার্তা। সুখময় সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা। বিশ্বমানবতার অনুপম আদর্শ তিনি শান্তির আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সফলতম অভিযান—এ শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত নবী-জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল শান্তির জন্য। মানবজাতির কল্যাণে। তিনি যা করেছেন, যা বলেছেন, তার সব কর্মকাণ্ডেই বিশ্বমানবতার মঙ্গল নিহিত।
হিলফুল ফুজুল শান্তি সংঘের সূচনা
৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। মক্কাবাসীর বার্ষিক আনন্দ উৎসব উকাজ মেলা চলছে। মেলাকে কেন্দ্র করেই দুই গোত্রের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাস তাকে ‘হারবুল ফুজ্জার’ (অন্যায় সমর) নামে অভিহিত করেছে। নবীজি (সা.) তখন বালক। চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়স। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে এই সংঘাত রোধ করা যায়! চলমান এ বিশৃঙ্খলার সমাধান বের করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ভেবেচিন্তে তিনি গ্রহণ করলেন যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। মক্কার যুবকদের একত্র করলেন। গঠন করলেন পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সংগঠন—হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠনের বিশেষ কয়েকটি নীতিমালা ছিল এমন—এক. দেশজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। দুই. চলমান এই যুদ্ধ (হারবুল ফুজ্জার) বন্ধ করা। তিন. সমাজের অন্যায় অবিচার রোধ করা। চার. অসহায়, দুর্বল ও এতিমদের সাহায্য করা। পাঁচ. বণিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ছয়. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় অবিচার রোধ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো।
নবীজি (সা.) পরিকল্পনায় পরিপূর্ণ সফল হয়েছিলেন। বন্ধ হয়েছিল হারবুল ফুজ্জার নামক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বিশেষ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত হলেও এ শান্তি সংঘের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৫০ বছর।
মদিনা সনদ এক আদর্শ রাষ্ট্রীয় সংবিধান
নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরতের পর সেখানকার বিবদমান দুই গোত্র, আউস ও খাজরাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। ৪৭ ধারার এই সনদে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এর উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো ছিল: সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, মদিনার ওপর যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ সবাই মিলে প্রতিহত করবে এবং ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য কোনো গোত্রকে দায়ী করা হবে না। এই সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান, যা ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।
হুদাইবিয়ার সন্ধি আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিজয়
হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবীজি (সা.)-এর দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ। ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানরা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার কাছে গেলে কুরাইশরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অসম কিছু শর্ত মেনে নিয়ে একটি সন্ধিচুক্তি করেন। সাহাবিরা এই সন্ধি নিয়ে শঙ্কিত হলেও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকে, যা ইসলাম প্রচারের পথ খুলে দেয়। পবিত্র কোরআনে এই আপাত পরাজয়কে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই সন্ধিই মক্কা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।
মক্কা বিজয় প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গের ফলে নবীজি ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। দীর্ঘদিনের শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রক্তপাতহীন বিজয়ের পথ বেছে নেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সেখানকার সকল বাসিন্দার জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেন। যে লোকজন তাঁকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিল, তাদের প্রতি এমন মহানুভবতা ও ক্ষমা ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই শান্তিপূর্ণ বিজয় প্রমাণ করে, নবী করিম (সা.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এই পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ও শান্তির অগ্রদূত ছিলেন। বর্তমান বিশ্বের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা গেলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ্ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা। জীবন্ত মেয়েকে পুঁতে ফেলতে একটুও বিচলিত হয় না পাষণ্ড বাবার হৃদয়। মানুষের তৈরি প্রতিমা প্রভুত্বের আসনে সমাসীন। পায়ে তার মাথা ঠুকছে সবাই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। সময়ের আবর্তে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সংঘাত চলে বছরের পর বছর। যুগটাকে বলা হয়—আইয়ামে জাহেলিয়া—মূর্খতা ও বর্বরতার যুগ।
এহেন পরিস্থিতিতে ধরায় এলেন এক মহামানব। মা আমেনার কোল আলোকিত করে। শান্তির পতাকা হাতে। সুখের বার্তা নিয়ে। হৃদয়টা তাঁর মানবতায় পরিপূর্ণ। সবার সুখে হাসেন। সবার দুঃখে পাশেও থাকেন। দুঃখ-সুখে সবার সমান অংশীদার তিনি। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন অকুণ্ঠ। দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান। সদা সত্য কথা বলেন। আমানতের খেয়ানত করেন না। অঙ্গীকার পূরণ করেন। লোকজন তাঁকে একনামে চেনে। ‘আল আমিন’ খেতাবে ভূষিত করে। পবিত্র কোরআন তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ উপাধিতে আখ্যায়িত করেছে। (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) নবী করিম (সা.)-এর জীবনের ধাপে ধাপে, প্রতিটি পদক্ষেপে, পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শান্তির বার্তা। সুখময় সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা। বিশ্বমানবতার অনুপম আদর্শ তিনি শান্তির আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সফলতম অভিযান—এ শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত নবী-জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল শান্তির জন্য। মানবজাতির কল্যাণে। তিনি যা করেছেন, যা বলেছেন, তার সব কর্মকাণ্ডেই বিশ্বমানবতার মঙ্গল নিহিত।
হিলফুল ফুজুল শান্তি সংঘের সূচনা
৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। মক্কাবাসীর বার্ষিক আনন্দ উৎসব উকাজ মেলা চলছে। মেলাকে কেন্দ্র করেই দুই গোত্রের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাস তাকে ‘হারবুল ফুজ্জার’ (অন্যায় সমর) নামে অভিহিত করেছে। নবীজি (সা.) তখন বালক। চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়স। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে এই সংঘাত রোধ করা যায়! চলমান এ বিশৃঙ্খলার সমাধান বের করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ভেবেচিন্তে তিনি গ্রহণ করলেন যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। মক্কার যুবকদের একত্র করলেন। গঠন করলেন পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সংগঠন—হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠনের বিশেষ কয়েকটি নীতিমালা ছিল এমন—এক. দেশজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। দুই. চলমান এই যুদ্ধ (হারবুল ফুজ্জার) বন্ধ করা। তিন. সমাজের অন্যায় অবিচার রোধ করা। চার. অসহায়, দুর্বল ও এতিমদের সাহায্য করা। পাঁচ. বণিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ছয়. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় অবিচার রোধ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো।
নবীজি (সা.) পরিকল্পনায় পরিপূর্ণ সফল হয়েছিলেন। বন্ধ হয়েছিল হারবুল ফুজ্জার নামক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বিশেষ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত হলেও এ শান্তি সংঘের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৫০ বছর।
মদিনা সনদ এক আদর্শ রাষ্ট্রীয় সংবিধান
নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরতের পর সেখানকার বিবদমান দুই গোত্র, আউস ও খাজরাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। ৪৭ ধারার এই সনদে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এর উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো ছিল: সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, মদিনার ওপর যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ সবাই মিলে প্রতিহত করবে এবং ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য কোনো গোত্রকে দায়ী করা হবে না। এই সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান, যা ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।
হুদাইবিয়ার সন্ধি আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিজয়
হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবীজি (সা.)-এর দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ। ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানরা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার কাছে গেলে কুরাইশরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অসম কিছু শর্ত মেনে নিয়ে একটি সন্ধিচুক্তি করেন। সাহাবিরা এই সন্ধি নিয়ে শঙ্কিত হলেও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকে, যা ইসলাম প্রচারের পথ খুলে দেয়। পবিত্র কোরআনে এই আপাত পরাজয়কে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই সন্ধিই মক্কা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।
মক্কা বিজয় প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গের ফলে নবীজি ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। দীর্ঘদিনের শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রক্তপাতহীন বিজয়ের পথ বেছে নেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সেখানকার সকল বাসিন্দার জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেন। যে লোকজন তাঁকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিল, তাদের প্রতি এমন মহানুভবতা ও ক্ষমা ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই শান্তিপূর্ণ বিজয় প্রমাণ করে, নবী করিম (সা.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এই পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ও শান্তির অগ্রদূত ছিলেন। বর্তমান বিশ্বের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা গেলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ্ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
ফয়জুল্লাহ রিয়াদ

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা। জীবন্ত মেয়েকে পুঁতে ফেলতে একটুও বিচলিত হয় না পাষণ্ড বাবার হৃদয়। মানুষের তৈরি প্রতিমা প্রভুত্বের আসনে সমাসীন। পায়ে তার মাথা ঠুকছে সবাই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। সময়ের আবর্তে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সংঘাত চলে বছরের পর বছর। যুগটাকে বলা হয়—আইয়ামে জাহেলিয়া—মূর্খতা ও বর্বরতার যুগ।
এহেন পরিস্থিতিতে ধরায় এলেন এক মহামানব। মা আমেনার কোল আলোকিত করে। শান্তির পতাকা হাতে। সুখের বার্তা নিয়ে। হৃদয়টা তাঁর মানবতায় পরিপূর্ণ। সবার সুখে হাসেন। সবার দুঃখে পাশেও থাকেন। দুঃখ-সুখে সবার সমান অংশীদার তিনি। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন অকুণ্ঠ। দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান। সদা সত্য কথা বলেন। আমানতের খেয়ানত করেন না। অঙ্গীকার পূরণ করেন। লোকজন তাঁকে একনামে চেনে। ‘আল আমিন’ খেতাবে ভূষিত করে। পবিত্র কোরআন তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ উপাধিতে আখ্যায়িত করেছে। (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) নবী করিম (সা.)-এর জীবনের ধাপে ধাপে, প্রতিটি পদক্ষেপে, পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শান্তির বার্তা। সুখময় সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা। বিশ্বমানবতার অনুপম আদর্শ তিনি শান্তির আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সফলতম অভিযান—এ শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত নবী-জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল শান্তির জন্য। মানবজাতির কল্যাণে। তিনি যা করেছেন, যা বলেছেন, তার সব কর্মকাণ্ডেই বিশ্বমানবতার মঙ্গল নিহিত।
হিলফুল ফুজুল শান্তি সংঘের সূচনা
৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। মক্কাবাসীর বার্ষিক আনন্দ উৎসব উকাজ মেলা চলছে। মেলাকে কেন্দ্র করেই দুই গোত্রের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাস তাকে ‘হারবুল ফুজ্জার’ (অন্যায় সমর) নামে অভিহিত করেছে। নবীজি (সা.) তখন বালক। চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়স। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে এই সংঘাত রোধ করা যায়! চলমান এ বিশৃঙ্খলার সমাধান বের করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ভেবেচিন্তে তিনি গ্রহণ করলেন যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। মক্কার যুবকদের একত্র করলেন। গঠন করলেন পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সংগঠন—হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠনের বিশেষ কয়েকটি নীতিমালা ছিল এমন—এক. দেশজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। দুই. চলমান এই যুদ্ধ (হারবুল ফুজ্জার) বন্ধ করা। তিন. সমাজের অন্যায় অবিচার রোধ করা। চার. অসহায়, দুর্বল ও এতিমদের সাহায্য করা। পাঁচ. বণিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ছয়. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় অবিচার রোধ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো।
নবীজি (সা.) পরিকল্পনায় পরিপূর্ণ সফল হয়েছিলেন। বন্ধ হয়েছিল হারবুল ফুজ্জার নামক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বিশেষ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত হলেও এ শান্তি সংঘের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৫০ বছর।
মদিনা সনদ এক আদর্শ রাষ্ট্রীয় সংবিধান
নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরতের পর সেখানকার বিবদমান দুই গোত্র, আউস ও খাজরাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। ৪৭ ধারার এই সনদে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এর উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো ছিল: সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, মদিনার ওপর যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ সবাই মিলে প্রতিহত করবে এবং ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য কোনো গোত্রকে দায়ী করা হবে না। এই সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান, যা ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।
হুদাইবিয়ার সন্ধি আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিজয়
হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবীজি (সা.)-এর দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ। ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানরা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার কাছে গেলে কুরাইশরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অসম কিছু শর্ত মেনে নিয়ে একটি সন্ধিচুক্তি করেন। সাহাবিরা এই সন্ধি নিয়ে শঙ্কিত হলেও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকে, যা ইসলাম প্রচারের পথ খুলে দেয়। পবিত্র কোরআনে এই আপাত পরাজয়কে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই সন্ধিই মক্কা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।
মক্কা বিজয় প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গের ফলে নবীজি ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। দীর্ঘদিনের শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রক্তপাতহীন বিজয়ের পথ বেছে নেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সেখানকার সকল বাসিন্দার জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেন। যে লোকজন তাঁকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিল, তাদের প্রতি এমন মহানুভবতা ও ক্ষমা ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই শান্তিপূর্ণ বিজয় প্রমাণ করে, নবী করিম (সা.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এই পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ও শান্তির অগ্রদূত ছিলেন। বর্তমান বিশ্বের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা গেলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ্ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা। জীবন্ত মেয়েকে পুঁতে ফেলতে একটুও বিচলিত হয় না পাষণ্ড বাবার হৃদয়। মানুষের তৈরি প্রতিমা প্রভুত্বের আসনে সমাসীন। পায়ে তার মাথা ঠুকছে সবাই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। সময়ের আবর্তে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সংঘাত চলে বছরের পর বছর। যুগটাকে বলা হয়—আইয়ামে জাহেলিয়া—মূর্খতা ও বর্বরতার যুগ।
এহেন পরিস্থিতিতে ধরায় এলেন এক মহামানব। মা আমেনার কোল আলোকিত করে। শান্তির পতাকা হাতে। সুখের বার্তা নিয়ে। হৃদয়টা তাঁর মানবতায় পরিপূর্ণ। সবার সুখে হাসেন। সবার দুঃখে পাশেও থাকেন। দুঃখ-সুখে সবার সমান অংশীদার তিনি। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন অকুণ্ঠ। দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান। সদা সত্য কথা বলেন। আমানতের খেয়ানত করেন না। অঙ্গীকার পূরণ করেন। লোকজন তাঁকে একনামে চেনে। ‘আল আমিন’ খেতাবে ভূষিত করে। পবিত্র কোরআন তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ উপাধিতে আখ্যায়িত করেছে। (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) নবী করিম (সা.)-এর জীবনের ধাপে ধাপে, প্রতিটি পদক্ষেপে, পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শান্তির বার্তা। সুখময় সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা। বিশ্বমানবতার অনুপম আদর্শ তিনি শান্তির আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সফলতম অভিযান—এ শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত নবী-জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল শান্তির জন্য। মানবজাতির কল্যাণে। তিনি যা করেছেন, যা বলেছেন, তার সব কর্মকাণ্ডেই বিশ্বমানবতার মঙ্গল নিহিত।
হিলফুল ফুজুল শান্তি সংঘের সূচনা
৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। মক্কাবাসীর বার্ষিক আনন্দ উৎসব উকাজ মেলা চলছে। মেলাকে কেন্দ্র করেই দুই গোত্রের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাস তাকে ‘হারবুল ফুজ্জার’ (অন্যায় সমর) নামে অভিহিত করেছে। নবীজি (সা.) তখন বালক। চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়স। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে এই সংঘাত রোধ করা যায়! চলমান এ বিশৃঙ্খলার সমাধান বের করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ভেবেচিন্তে তিনি গ্রহণ করলেন যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। মক্কার যুবকদের একত্র করলেন। গঠন করলেন পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সংগঠন—হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠনের বিশেষ কয়েকটি নীতিমালা ছিল এমন—এক. দেশজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। দুই. চলমান এই যুদ্ধ (হারবুল ফুজ্জার) বন্ধ করা। তিন. সমাজের অন্যায় অবিচার রোধ করা। চার. অসহায়, দুর্বল ও এতিমদের সাহায্য করা। পাঁচ. বণিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ছয়. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় অবিচার রোধ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো।
নবীজি (সা.) পরিকল্পনায় পরিপূর্ণ সফল হয়েছিলেন। বন্ধ হয়েছিল হারবুল ফুজ্জার নামক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বিশেষ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত হলেও এ শান্তি সংঘের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৫০ বছর।
মদিনা সনদ এক আদর্শ রাষ্ট্রীয় সংবিধান
নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরতের পর সেখানকার বিবদমান দুই গোত্র, আউস ও খাজরাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। ৪৭ ধারার এই সনদে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এর উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো ছিল: সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, মদিনার ওপর যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ সবাই মিলে প্রতিহত করবে এবং ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য কোনো গোত্রকে দায়ী করা হবে না। এই সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান, যা ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।
হুদাইবিয়ার সন্ধি আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিজয়
হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবীজি (সা.)-এর দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ। ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানরা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার কাছে গেলে কুরাইশরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অসম কিছু শর্ত মেনে নিয়ে একটি সন্ধিচুক্তি করেন। সাহাবিরা এই সন্ধি নিয়ে শঙ্কিত হলেও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকে, যা ইসলাম প্রচারের পথ খুলে দেয়। পবিত্র কোরআনে এই আপাত পরাজয়কে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই সন্ধিই মক্কা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।
মক্কা বিজয় প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গের ফলে নবীজি ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। দীর্ঘদিনের শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রক্তপাতহীন বিজয়ের পথ বেছে নেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সেখানকার সকল বাসিন্দার জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেন। যে লোকজন তাঁকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিল, তাদের প্রতি এমন মহানুভবতা ও ক্ষমা ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই শান্তিপূর্ণ বিজয় প্রমাণ করে, নবী করিম (সা.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এই পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ও শান্তির অগ্রদূত ছিলেন। বর্তমান বিশ্বের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা গেলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ্ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা।
২৯ আগস্ট ২০২৫
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ দিন আগেমাহমুদ হাসান ফাহিম

সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
পৃথিবীতে ভালোভাবে জীবনযাপন করার জন্য, উন্নতির জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা থাকা অপরিহার্য। আর শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার পর তা বজায় রাখার জন্য আপস-নিষ্পত্তির মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা, বিচিত্র স্বভাবের মানুষ নিয়েই হয় সমাজ। সব মানুষ এক মেজাজের নয়। তুচ্ছ ও নগণ্য বিষয়েও অনেক সময় পরস্পরে মনোমালিন্য হয়, কথা-কাটাকাটি হয়। একসঙ্গে চলতে গেলে এমনটি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি এভাবেই ছেড়ে দিলে একপর্যায়ে তা ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সংঘর্ষ পর্যন্ত গড়ায়। তাই এই বিচিত্র স্বভাবের মানুষদের নিয়ে সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে নিজেদের মধ্যে রাখতে হবে আপস-নিষ্পত্তির অনন্য গুণ।
ইসলামপূর্ব সময়ে কাবা পুনর্নির্মাণের পর হাজরে আসওয়াদ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন প্রিয় নবী (সা.) চাদরে হাজরে আসওয়াদ রেখে সব গোত্রপ্রধানকে নিয়ে নিজ হাতে তা প্রতিস্থাপন করেন এবং এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিষ্পত্তি করেন।
আপস-নিষ্পত্তি দ্বারা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের বিবাদ দূর হয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে।’ (সুরা শুরা: ৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আপস-নিষ্পত্তিকে নামাজ, রোজা এবং জাকাত থেকেও উত্তম আমল বলেছেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৩৯)
স্বাভাবিক কথায় মীমাংসা করা সম্ভব না হলে, আগে বেড়ে কথা হেরফের করারও অনুমতি আছে। তা মিথ্যা হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা এমন করে হাদিসে তাদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত না করে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। (সহিহ্ বুখারি: ২৫১৩)

সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
পৃথিবীতে ভালোভাবে জীবনযাপন করার জন্য, উন্নতির জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা থাকা অপরিহার্য। আর শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার পর তা বজায় রাখার জন্য আপস-নিষ্পত্তির মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা, বিচিত্র স্বভাবের মানুষ নিয়েই হয় সমাজ। সব মানুষ এক মেজাজের নয়। তুচ্ছ ও নগণ্য বিষয়েও অনেক সময় পরস্পরে মনোমালিন্য হয়, কথা-কাটাকাটি হয়। একসঙ্গে চলতে গেলে এমনটি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি এভাবেই ছেড়ে দিলে একপর্যায়ে তা ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সংঘর্ষ পর্যন্ত গড়ায়। তাই এই বিচিত্র স্বভাবের মানুষদের নিয়ে সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে নিজেদের মধ্যে রাখতে হবে আপস-নিষ্পত্তির অনন্য গুণ।
ইসলামপূর্ব সময়ে কাবা পুনর্নির্মাণের পর হাজরে আসওয়াদ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন প্রিয় নবী (সা.) চাদরে হাজরে আসওয়াদ রেখে সব গোত্রপ্রধানকে নিয়ে নিজ হাতে তা প্রতিস্থাপন করেন এবং এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিষ্পত্তি করেন।
আপস-নিষ্পত্তি দ্বারা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের বিবাদ দূর হয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে।’ (সুরা শুরা: ৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আপস-নিষ্পত্তিকে নামাজ, রোজা এবং জাকাত থেকেও উত্তম আমল বলেছেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৩৯)
স্বাভাবিক কথায় মীমাংসা করা সম্ভব না হলে, আগে বেড়ে কথা হেরফের করারও অনুমতি আছে। তা মিথ্যা হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা এমন করে হাদিসে তাদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত না করে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। (সহিহ্ বুখারি: ২৫১৩)

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা।
২৯ আগস্ট ২০২৫
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৪ মিনিট | ০৫: ৫৯ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৮ মিনিট | ০৫: ২৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৫ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৪ মিনিট | ০৫: ৫৯ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৮ মিনিট | ০৫: ২৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৫ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা।
২৯ আগস্ট ২০২৫
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

আরবি শব্দ তহারাত-এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। আর শরয়ি দৃষ্টিতে তহারাত হলো বিশেষ পদ্ধতিতে অপবিত্রতা থেকে শুদ্ধ হওয়া।
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
পবিত্রতা মানুষকে করে তোলে ফেরেশতার অনুরূপ। তার হৃদয় হয়ে ওঠে নির্মল। আত্মা হয় প্রেরণার আধার। অন্যদিকে, অপবিত্রতা মানুষকে ঠেলে দেয় শয়তানের কুমন্ত্রণার দরজায়।
যে ব্যক্তি সর্বদা পবিত্রতায় যত্নবান, তার অন্তরে জন্ম নেয় আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার যোগ্যতা। সে দেখে সততা ও আলোয় ভরা স্বপ্ন। তার চরিত্রে ফুটে ওঠে অভূতপূর্ব আত্মিক সৌন্দর্য।
পবিত্রতা শুধু শরীরের পরিচ্ছন্নতা নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধতার প্রতীক। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্রতা রক্ষা করার একটি মহৎ উপায়। তাই পবিত্রতার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ ও পরিপূর্ণ রাখা প্রতিটি মুসলিমের নৈতিক দায়িত্ব এবং সফল জীবনের মূল চাবিকাঠি।
লেখক: মুফতি আবু রায়হান আল মাহমুদ, প্রিন্সিপাল, গাঙ্গাটিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা বাখরাবাদ, কুমিল্লা।

আরবি শব্দ তহারাত-এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। আর শরয়ি দৃষ্টিতে তহারাত হলো বিশেষ পদ্ধতিতে অপবিত্রতা থেকে শুদ্ধ হওয়া।
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
পবিত্রতা মানুষকে করে তোলে ফেরেশতার অনুরূপ। তার হৃদয় হয়ে ওঠে নির্মল। আত্মা হয় প্রেরণার আধার। অন্যদিকে, অপবিত্রতা মানুষকে ঠেলে দেয় শয়তানের কুমন্ত্রণার দরজায়।
যে ব্যক্তি সর্বদা পবিত্রতায় যত্নবান, তার অন্তরে জন্ম নেয় আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার যোগ্যতা। সে দেখে সততা ও আলোয় ভরা স্বপ্ন। তার চরিত্রে ফুটে ওঠে অভূতপূর্ব আত্মিক সৌন্দর্য।
পবিত্রতা শুধু শরীরের পরিচ্ছন্নতা নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধতার প্রতীক। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্রতা রক্ষা করার একটি মহৎ উপায়। তাই পবিত্রতার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ ও পরিপূর্ণ রাখা প্রতিটি মুসলিমের নৈতিক দায়িত্ব এবং সফল জীবনের মূল চাবিকাঠি।
লেখক: মুফতি আবু রায়হান আল মাহমুদ, প্রিন্সিপাল, গাঙ্গাটিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা বাখরাবাদ, কুমিল্লা।

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা।
২৯ আগস্ট ২০২৫
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে