Ajker Patrika

সামাজিক অস্থিরতা রোধে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কালজয়ী পদক্ষেপ

ফয়জুল্লাহ রিয়াদ
সামাজিক অস্থিরতা রোধে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কালজয়ী পদক্ষেপ

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা। জীবন্ত মেয়েকে পুঁতে ফেলতে একটুও বিচলিত হয় না পাষণ্ড বাবার হৃদয়। মানুষের তৈরি প্রতিমা প্রভুত্বের আসনে সমাসীন। পায়ে তার মাথা ঠুকছে সবাই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে শুরু হয় বাগ্‌বিতণ্ডা। সময়ের আবর্তে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সংঘাত চলে বছরের পর বছর। যুগটাকে বলা হয়—আইয়ামে জাহেলিয়া—মূর্খতা ও বর্বরতার যুগ।

এহেন পরিস্থিতিতে ধরায় এলেন এক মহামানব। মা আমেনার কোল আলোকিত করে। শান্তির পতাকা হাতে। সুখের বার্তা নিয়ে। হৃদয়টা তাঁর মানবতায় পরিপূর্ণ। সবার সুখে হাসেন। সবার দুঃখে পাশেও থাকেন। দুঃখ-সুখে সবার সমান অংশীদার তিনি। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন অকুণ্ঠ। দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান। সদা সত্য কথা বলেন। আমানতের খেয়ানত করেন না। অঙ্গীকার পূরণ করেন। লোকজন তাঁকে একনামে চেনে। ‘আল আমিন’ খেতাবে ভূষিত করে। পবিত্র কোরআন তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ উপাধিতে আখ্যায়িত করেছে। (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) নবী করিম (সা.)-এর জীবনের ধাপে ধাপে, প্রতিটি পদক্ষেপে, পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শান্তির বার্তা। সুখময় সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা। বিশ্বমানবতার অনুপম আদর্শ তিনি শান্তির আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সফলতম অভিযান—এ শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত নবী-জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল শান্তির জন্য। মানবজাতির কল্যাণে। তিনি যা করেছেন, যা বলেছেন, তার সব কর্মকাণ্ডেই বিশ্বমানবতার মঙ্গল নিহিত।

হিলফুল ফুজুল শান্তি সংঘের সূচনা

৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। মক্কাবাসীর বার্ষিক আনন্দ উৎসব উকাজ মেলা চলছে। মেলাকে কেন্দ্র করেই দুই গোত্রের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাস তাকে ‘হারবুল ফুজ্জার’ (অন্যায় সমর) নামে অভিহিত করেছে। নবীজি (সা.) তখন বালক। চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়স। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে এই সংঘাত রোধ করা যায়! চলমান এ বিশৃঙ্খলার সমাধান বের করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ভেবেচিন্তে তিনি গ্রহণ করলেন যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। মক্কার যুবকদের একত্র করলেন। গঠন করলেন পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সংগঠন—হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠনের বিশেষ কয়েকটি নীতিমালা ছিল এমন—এক. দেশজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। দুই. চলমান এই যুদ্ধ (হারবুল ফুজ্জার) বন্ধ করা। তিন. সমাজের অন্যায় অবিচার রোধ করা। চার. অসহায়, দুর্বল ও এতিমদের সাহায্য করা। পাঁচ. বণিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ছয়. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় অবিচার রোধ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো।

নবীজি (সা.) পরিকল্পনায় পরিপূর্ণ সফল হয়েছিলেন। বন্ধ হয়েছিল হারবুল ফুজ্জার নামক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বিশেষ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত হলেও এ শান্তি সংঘের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৫০ বছর।

মদিনা সনদ এক আদর্শ রাষ্ট্রীয় সংবিধান

নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরতের পর সেখানকার বিবদমান দুই গোত্র, আউস ও খাজরাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। ৪৭ ধারার এই সনদে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এর উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো ছিল: সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, মদিনার ওপর যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ সবাই মিলে প্রতিহত করবে এবং ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য কোনো গোত্রকে দায়ী করা হবে না। এই সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান, যা ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।

হুদাইবিয়ার সন্ধি আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিজয়

হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবীজি (সা.)-এর দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ। ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানরা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার কাছে গেলে কুরাইশরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অসম কিছু শর্ত মেনে নিয়ে একটি সন্ধিচুক্তি করেন। সাহাবিরা এই সন্ধি নিয়ে শঙ্কিত হলেও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকে, যা ইসলাম প্রচারের পথ খুলে দেয়। পবিত্র কোরআনে এই আপাত পরাজয়কে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই সন্ধিই মক্কা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।

মক্কা বিজয় প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা

৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গের ফলে নবীজি ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। দীর্ঘদিনের শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রক্তপাতহীন বিজয়ের পথ বেছে নেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সেখানকার সকল বাসিন্দার জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেন। যে লোকজন তাঁকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিল, তাদের প্রতি এমন মহানুভবতা ও ক্ষমা ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই শান্তিপূর্ণ বিজয় প্রমাণ করে, নবী করিম (সা.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এই পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ও শান্তির অগ্রদূত ছিলেন। বর্তমান বিশ্বের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা গেলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।

লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ্ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মক্কা-মদিনায় ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা, যা জানা গেল

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসন্ন হজ মৌসুম চলাকালে মসজিদুল হারাম (মক্কা) এবং মসজিদে নববীর (মদিনা) ভেতরে ছবি তোলার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার যে সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে, তা মিথ্যা বলে জানিয়েছে দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন।

এ বিষয়ে কোনো সৌদি আরবের সরকারি নীতি পরিবর্তন ঘোষণা করা হয়নি বলে জানায় এই সংবাদমাধ্যম।

৮ ডিসেম্বর (সোমবার) সংবাদমাধ্যমটির ফ্যাক্টচেক থেকে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদনগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, যেখানে দাবি করা হয়েছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ ২০২৬ সালের হজ মৌসুমে মসজিদুল হারাম এবং মসজিদে নববীর ভেতরে ছবি তোলার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো সরকারি সংস্থা থেকে এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়নি।

দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ধরনের মিথ্যা দাবি মাঝেমধ্যে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে হজ বা ওমরাহর মৌসুমে এমন গুজব বেশি বিস্তার লাভ করে। এসব তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়াই কাম্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যে বন্ধুত্ব টিকে থাকে দুনিয়া ও আখিরাতে

তাসনিফ আবীদ
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মানুষ সামাজিক জীব। একা চলা তার স্বভাব নয়। জীবনে চলার পথে তাই একজন প্রকৃত বন্ধুর প্রয়োজন হয়—যে পাশে থাকবে বিপদে-আপদে, সুখে-দুঃখে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সবাই কি বন্ধুত্বের যোগ্য? ইসলাম এ বিষয়ে দিয়েছে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা।

কেবল সম্পর্ক নয়, বরং বন্ধুত্ব হতে হবে পরিশুদ্ধ, নীতিনির্ভর ও পরকালমুখী। চলার পথে আমরা সবাই বন্ধুত্ব করি—কখনো প্রয়োজনে, কখনো স্বার্থে, কখনো পরিস্থিতিতে। কিন্তু প্রকৃত বন্ধু কে? যে আমাদের চিন্তা, কর্ম ও দৃষ্টিভঙ্গিকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। ইসলাম তাই কেবল বন্ধুত্ব গড়ে তোলার আহ্বানই দেয়নি, দিয়েছে সচেতনতার দিকনির্দেশনাও।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘ইমানদার পুরুষ এবং ইমানদার নারীরা একে অপরের বন্ধু। তারা সৎ কাজের আদেশ করে, অসৎ কাজে নিষেধ করে, নামাজ কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদেশ মান্য করে চলে। তাদের প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হবে।’ (সুরা তাওবা: ৭১)

আল্লাহর জন্য ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্যই বিরাগ—এটাই মুসলমানের সম্পর্কের মূলনীতি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে কাউকে ভালোবাসে আল্লাহর জন্য, কাউকে কিছু দেয় আল্লাহর জন্য, কারও সঙ্গে রাগ করে আল্লাহর জন্য—সে তার ইমান পূর্ণ করল।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ্)। এমন বন্ধুত্ব টিকে থাকে দুনিয়া ও আখিরাতে। অন্যদিকে স্বার্থ, দম্ভ, আভিজাত্য বা জৌলুশের ওপর নির্মিত বন্ধুত্ব টেকে না।

ইসলামের দৃষ্টিতে ভালো বন্ধুর কিছু গুণাবলি হলো—সে সৎ পরামর্শদাতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণে অভ্যস্ত। নিজে সৎ জীবনযাপন করে এবং অন্যকেও অনৈতিকতা থেকে দূরে রাখে। গোপন কথা গোপন রাখে, বিশ্বাস ভঙ্গ করে না। বিপদে-আপদে পাশে থাকে, অসুস্থতায় খোঁজ নেয়, দাওয়াতে সাড়া দেয়। এক কথায়, ভালো বন্ধু আপনার আখিরাতকেও সুন্দর করে। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্কই পরকালের পাথেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ০৮ মিনিট
ফজর০৫: ০৯ মিনিট০৬: ২৯ মিনিট
জোহর১১: ৫২ মিনিট০৩: ৩৫ মিনিট
আসর০৩: ৩৬ মিনিট০৫: ১১ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৩ মিনিট০৬: ৩২ মিনিট
এশা০৬: ৩৩ মিনিট০৫: ০৮ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাউকে কাফের বলার বিষয়ে নবীজির সতর্কবার্তা

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কোনো মুসলমানকে সামান্য কোনো কারণে কাফের বলা ইসলামে বৈধ নয়। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘একজন যেন অন্যজনকে ফাসিক বলে গালি না দেয় এবং একজন যেন অন্যজনকে কাফের বলে অপবাদ না দেয়। কেননা, অপরজন যদি তা না হয়, তবে সে অপবাদ তার নিজের ওপর আপতিত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৬০৪৫)

এ বিষয়ে আল্লাহর রাসুল (সা.) অন্য এক হাদিসে বলেছেন, ‘কেউ তার ভাইকে কাফের বলে সম্বোধন করলে উভয়ের মধ্যে যেকোনো একজনের ওপর তা ফিরে আসবে। যাকে কাফের বলা হয়েছে, সে কাফের হলে তো হলোই; নতুবা কথাটি বক্তার ওপর ফিরে আসবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৬৪০৪)

ইসলামের বিধান হলো, কারও থেকে কুফরি কোনো কাজ বা কথা প্রকাশ পেলেও তাকে সরাসরি তাকফির করা বা কাফের ঘোষণা দেওয়া সাধারণ মানুষের কাজ নয়। ইসলামবিষয়ক গবেষকেরা ওই ব্যক্তির সার্বিক অবস্থা যাচাই-বাছাই করে ইসলামের মূলনীতি সামনে রেখে ফতোয়া দেবেন।

তবে সতর্কতার বিষয় হলো, শরিয়তের দৃষ্টিতে অমুসলিমরা স্পষ্টতই কাফের। তাদের কুফরকে কেউ কুফর না মানা অথবা তাদের কুফরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া যাবে না। (আশ শিফা: ২/২৮১)

ইমাম আবুল মাআলি (রহ.) বলেন, ‘কোনো কাফেরকে মুসলমান বলে চালিয়ে দেওয়া এবং কোনো মুসলমানকে দ্বীন থেকে বের করে দেওয়া, দুটোই জঘন্য।’ (ইকফারুল মুলহিদিন: ২৭)

মোটকথা হলো, কাউকে তাকফির করা তথা কাফের ঘোষণা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। একইভাবে অতিমাত্রায় ছাড়াছাড়ি করে কাফের বা মুরতাদকে মুসলিম আখ্যা দেওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের মূলনীতির অনুসরণ করতে হবে। (শরহে আকিদাতুত তাহাবি: পৃষ্ঠা-৯১)

নবী করিম (সা.) উম্মতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘কোনো মুমিনকে কুফরের অপবাদ দেওয়া তাকে হত্যা করার মতোই।’ (সহিহ্ বুখারি: ৬১০৫)। সুতরাং এ ব্যাপারে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত