ইজাজুল হক, ঢাকা

পবিত্র মাস রমজান জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সময়। কোরআনের আলোকে জীবন রাঙিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে প্রয়োজন রমজানের শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তা দারুণ সহায়ক হয় এবং রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে পরিপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। নিচে রমজানের আটটি শিষ্টাচারের আলোচনা করা হলো—
এক. আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ
ইসলাম শব্দের অর্থই আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সঁপে দেওয়া। আর রোজা ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিধান। তাই রমজানের ফজিলত পেতে হলে প্রথমেই আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করে তাঁর মনোনীত ধর্ম ইসলামে পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে। প্রবৃত্তির অনুসরণ ও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিজেকে মুক্ত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। ইসলামের সকল আবশ্যকীয় বিধান মান্য করার ব্রত গ্রহণ করতে হবে। নিষিদ্ধ কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২০৮)
দুই. একনিষ্ঠ মনে ইবাদত
কোনো কাজে ইখলাস অবলম্বন বা একনিষ্ঠ হওয়ার অর্থ হলো, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যেই কাজটি সম্পাদন করা। লৌকিকতা বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্য ইবাদত করা ইখলাসের পথে অন্তরায়। অন্য যেকোনো ইবাদতের মতো রোজাও ইখলাস ছাড়া আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। রোজায় একনিষ্ঠ হওয়াকে হাদিসের ভাষায় ‘ইহতিসাব’ বলা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে তাঁর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভের আশায় রোজা রাখবে, তার অতীতের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ২০১৪; মুসলিম, হাদিস: ১৮১৭)
তিন. মহানবী (সা.)-এর অনুসরণ
ইবাদত যতই ইখলাসপূর্ণ হোক না কেন, তা যদি মহানবী (সা.)-এর সুন্নত অনুসারে না হয়, তবে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ, মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমার নির্দেশ নেই এমন বিষয়ে কেউ আমল করলে তা প্রত্যাখ্যাত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪৫৯০) তাই রমজানে আমাদের সকল কার্যক্রম হতে হবে মহানবী (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক। তিনি যেভাবে রোজা রেখেছেন, সাহরি ও ইফতার করেছেন, আমাদেরও সেভাবে তা সম্পাদন করতে হবে। সব ক্ষেত্রে তাঁকে এবং তাঁর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত সাহাবিদের অনুসরণ করতে হবে। তাঁর মতো বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত ও নফল ইবাদত করতে হবে।
চার. অন্যায় থেকে বিরত থাকা
অন্যায় কাজ সব সময় গুনাহের কারণ। তবে পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে তাতে লিপ্ত হওয়া আরও গর্হিত কাজ। তাই রোজা রেখে কোনো ধরনের অযথা কথাবার্তা ও ঝগড়া-বিবাদে জড়ানো যাবে না। মহানবী (সা.) বলেন, ‘শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই রোজা নয়। বরং রোজা হলো অনর্থক-অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা। যদি তোমার সঙ্গে কেউ ঝগড়া-বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায়, অথবা মূর্খ আচরণ করে, তবে তাকে বলে দেবে আমি রোজাদার।’ (মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস: ১৫২০)
অন্য হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা, মিথ্যা কাজ ও মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারে না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বুখারি, হাদিস: ৬০৫৭)
পাঁচ. রোজা নষ্ট হওয়ার কারণ পরিহার
রোজাদারকে এমন সব কাজ পরিহার করতে হবে, যা রোজা নষ্ট করে। বিশেষ করে দিনের বেলায় স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এড়িয়ে চলতে হবে। খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত হয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা নষ্ট হয়—এমন কোনো কাজ করলে অনেক ক্ষেত্রে কাফফারাও আদায় করতে হয়। আর কাফফারা কঠিন এক বিধান। তাই এ বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।
ছয়. কোরআন তিলাওয়াত
রমজান কোরআন নাজিলের মাস। এ কারণেই রমজান মাসের এত মর্যাদা। তাই এ মাসে অন্য সকল সময়ের চেয়ে বেশি করে কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজা ও কোরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে প্রতিপালক, আমি দিনের বেলা তাকে পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। কোরআন বলবে হে প্রতিপালক, আমি তাকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। তিনি বলেন, এর পর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৬৬২৬)
সাত. আর্তমানবতার সেবা
রোজা রাখার মাধ্যমে অসহায়, সম্বলহীন ও অভুক্ত মানুষের দুঃখ-কষ্ট অনুভব করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাই এ দান-প্রতিদানের পবিত্র মাসে তাদের জন্য বেশি করে কল্যাণকর কাজ করা উচিত। ইফতার করানো, সদকাতুল ফিতর, জাকাত আদায় করা ছাড়াও ব্যাপকভাবে দান-সদকা করা যেতে পারে। হাদিসে এসেছে, ‘মহানবী (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তাঁর দানশীলতা আরও বেড়ে যেত।’ (মুসলিম, হাদিস: ৩২০৮) তা ছাড়া রোজাদারকে ইফতার করালে রোজা রাখার সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে ওই রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। এবং রোজাদারের সওয়াবও কমানো হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮০৭)
আট. খাওয়া-ঘুমে ভারসাম্য
রোজা ত্যাগের মাস, সংযমের মাস। এ মাসে খাওয়া-দাওয়া, ঘুমসহ যাবতীয় জৈবিক চাহিদা কমিয়ে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকতে বলা হয়েছে। তাই দিনের বেলা রোজা রেখে রাতের বেলায় অধিক পরিমাণে পানাহার করা শিষ্টাচার পরিপন্থী। সাহরি ও ইফতারে বিলাসী আয়োজন ইসলাম নিরুৎসাহিত করে। বিশেষ করে সাহরি ও ইফতারে অপচয় করা মোটেও অনুমোদিত নয়। তা ছাড়া সারা দিন ঘুমিয়ে অলস সময় যাপন করাও ঠিক নয়। বরং আয়-রোজগার ও স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং ইবাদত অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ খাবার-দাবার, সময়, শক্তি কোনো কিছুই অপচয় করা ইসলাম অনুমোদন করে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা অপচয় করো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই আর শয়তান তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৬-২৭)

পবিত্র মাস রমজান জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সময়। কোরআনের আলোকে জীবন রাঙিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে প্রয়োজন রমজানের শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তা দারুণ সহায়ক হয় এবং রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে পরিপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। নিচে রমজানের আটটি শিষ্টাচারের আলোচনা করা হলো—
এক. আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ
ইসলাম শব্দের অর্থই আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সঁপে দেওয়া। আর রোজা ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিধান। তাই রমজানের ফজিলত পেতে হলে প্রথমেই আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করে তাঁর মনোনীত ধর্ম ইসলামে পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে। প্রবৃত্তির অনুসরণ ও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিজেকে মুক্ত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। ইসলামের সকল আবশ্যকীয় বিধান মান্য করার ব্রত গ্রহণ করতে হবে। নিষিদ্ধ কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২০৮)
দুই. একনিষ্ঠ মনে ইবাদত
কোনো কাজে ইখলাস অবলম্বন বা একনিষ্ঠ হওয়ার অর্থ হলো, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যেই কাজটি সম্পাদন করা। লৌকিকতা বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্য ইবাদত করা ইখলাসের পথে অন্তরায়। অন্য যেকোনো ইবাদতের মতো রোজাও ইখলাস ছাড়া আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। রোজায় একনিষ্ঠ হওয়াকে হাদিসের ভাষায় ‘ইহতিসাব’ বলা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে তাঁর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভের আশায় রোজা রাখবে, তার অতীতের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ২০১৪; মুসলিম, হাদিস: ১৮১৭)
তিন. মহানবী (সা.)-এর অনুসরণ
ইবাদত যতই ইখলাসপূর্ণ হোক না কেন, তা যদি মহানবী (সা.)-এর সুন্নত অনুসারে না হয়, তবে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ, মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমার নির্দেশ নেই এমন বিষয়ে কেউ আমল করলে তা প্রত্যাখ্যাত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪৫৯০) তাই রমজানে আমাদের সকল কার্যক্রম হতে হবে মহানবী (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক। তিনি যেভাবে রোজা রেখেছেন, সাহরি ও ইফতার করেছেন, আমাদেরও সেভাবে তা সম্পাদন করতে হবে। সব ক্ষেত্রে তাঁকে এবং তাঁর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত সাহাবিদের অনুসরণ করতে হবে। তাঁর মতো বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত ও নফল ইবাদত করতে হবে।
চার. অন্যায় থেকে বিরত থাকা
অন্যায় কাজ সব সময় গুনাহের কারণ। তবে পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে তাতে লিপ্ত হওয়া আরও গর্হিত কাজ। তাই রোজা রেখে কোনো ধরনের অযথা কথাবার্তা ও ঝগড়া-বিবাদে জড়ানো যাবে না। মহানবী (সা.) বলেন, ‘শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই রোজা নয়। বরং রোজা হলো অনর্থক-অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা। যদি তোমার সঙ্গে কেউ ঝগড়া-বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায়, অথবা মূর্খ আচরণ করে, তবে তাকে বলে দেবে আমি রোজাদার।’ (মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস: ১৫২০)
অন্য হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা, মিথ্যা কাজ ও মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারে না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বুখারি, হাদিস: ৬০৫৭)
পাঁচ. রোজা নষ্ট হওয়ার কারণ পরিহার
রোজাদারকে এমন সব কাজ পরিহার করতে হবে, যা রোজা নষ্ট করে। বিশেষ করে দিনের বেলায় স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এড়িয়ে চলতে হবে। খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত হয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা নষ্ট হয়—এমন কোনো কাজ করলে অনেক ক্ষেত্রে কাফফারাও আদায় করতে হয়। আর কাফফারা কঠিন এক বিধান। তাই এ বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।
ছয়. কোরআন তিলাওয়াত
রমজান কোরআন নাজিলের মাস। এ কারণেই রমজান মাসের এত মর্যাদা। তাই এ মাসে অন্য সকল সময়ের চেয়ে বেশি করে কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজা ও কোরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে প্রতিপালক, আমি দিনের বেলা তাকে পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। কোরআন বলবে হে প্রতিপালক, আমি তাকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। তিনি বলেন, এর পর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৬৬২৬)
সাত. আর্তমানবতার সেবা
রোজা রাখার মাধ্যমে অসহায়, সম্বলহীন ও অভুক্ত মানুষের দুঃখ-কষ্ট অনুভব করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাই এ দান-প্রতিদানের পবিত্র মাসে তাদের জন্য বেশি করে কল্যাণকর কাজ করা উচিত। ইফতার করানো, সদকাতুল ফিতর, জাকাত আদায় করা ছাড়াও ব্যাপকভাবে দান-সদকা করা যেতে পারে। হাদিসে এসেছে, ‘মহানবী (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তাঁর দানশীলতা আরও বেড়ে যেত।’ (মুসলিম, হাদিস: ৩২০৮) তা ছাড়া রোজাদারকে ইফতার করালে রোজা রাখার সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে ওই রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। এবং রোজাদারের সওয়াবও কমানো হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮০৭)
আট. খাওয়া-ঘুমে ভারসাম্য
রোজা ত্যাগের মাস, সংযমের মাস। এ মাসে খাওয়া-দাওয়া, ঘুমসহ যাবতীয় জৈবিক চাহিদা কমিয়ে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকতে বলা হয়েছে। তাই দিনের বেলা রোজা রেখে রাতের বেলায় অধিক পরিমাণে পানাহার করা শিষ্টাচার পরিপন্থী। সাহরি ও ইফতারে বিলাসী আয়োজন ইসলাম নিরুৎসাহিত করে। বিশেষ করে সাহরি ও ইফতারে অপচয় করা মোটেও অনুমোদিত নয়। তা ছাড়া সারা দিন ঘুমিয়ে অলস সময় যাপন করাও ঠিক নয়। বরং আয়-রোজগার ও স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং ইবাদত অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ খাবার-দাবার, সময়, শক্তি কোনো কিছুই অপচয় করা ইসলাম অনুমোদন করে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা অপচয় করো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই আর শয়তান তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৬-২৭)
ইজাজুল হক, ঢাকা

পবিত্র মাস রমজান জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সময়। কোরআনের আলোকে জীবন রাঙিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে প্রয়োজন রমজানের শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তা দারুণ সহায়ক হয় এবং রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে পরিপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। নিচে রমজানের আটটি শিষ্টাচারের আলোচনা করা হলো—
এক. আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ
ইসলাম শব্দের অর্থই আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সঁপে দেওয়া। আর রোজা ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিধান। তাই রমজানের ফজিলত পেতে হলে প্রথমেই আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করে তাঁর মনোনীত ধর্ম ইসলামে পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে। প্রবৃত্তির অনুসরণ ও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিজেকে মুক্ত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। ইসলামের সকল আবশ্যকীয় বিধান মান্য করার ব্রত গ্রহণ করতে হবে। নিষিদ্ধ কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২০৮)
দুই. একনিষ্ঠ মনে ইবাদত
কোনো কাজে ইখলাস অবলম্বন বা একনিষ্ঠ হওয়ার অর্থ হলো, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যেই কাজটি সম্পাদন করা। লৌকিকতা বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্য ইবাদত করা ইখলাসের পথে অন্তরায়। অন্য যেকোনো ইবাদতের মতো রোজাও ইখলাস ছাড়া আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। রোজায় একনিষ্ঠ হওয়াকে হাদিসের ভাষায় ‘ইহতিসাব’ বলা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে তাঁর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভের আশায় রোজা রাখবে, তার অতীতের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ২০১৪; মুসলিম, হাদিস: ১৮১৭)
তিন. মহানবী (সা.)-এর অনুসরণ
ইবাদত যতই ইখলাসপূর্ণ হোক না কেন, তা যদি মহানবী (সা.)-এর সুন্নত অনুসারে না হয়, তবে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ, মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমার নির্দেশ নেই এমন বিষয়ে কেউ আমল করলে তা প্রত্যাখ্যাত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪৫৯০) তাই রমজানে আমাদের সকল কার্যক্রম হতে হবে মহানবী (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক। তিনি যেভাবে রোজা রেখেছেন, সাহরি ও ইফতার করেছেন, আমাদেরও সেভাবে তা সম্পাদন করতে হবে। সব ক্ষেত্রে তাঁকে এবং তাঁর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত সাহাবিদের অনুসরণ করতে হবে। তাঁর মতো বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত ও নফল ইবাদত করতে হবে।
চার. অন্যায় থেকে বিরত থাকা
অন্যায় কাজ সব সময় গুনাহের কারণ। তবে পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে তাতে লিপ্ত হওয়া আরও গর্হিত কাজ। তাই রোজা রেখে কোনো ধরনের অযথা কথাবার্তা ও ঝগড়া-বিবাদে জড়ানো যাবে না। মহানবী (সা.) বলেন, ‘শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই রোজা নয়। বরং রোজা হলো অনর্থক-অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা। যদি তোমার সঙ্গে কেউ ঝগড়া-বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায়, অথবা মূর্খ আচরণ করে, তবে তাকে বলে দেবে আমি রোজাদার।’ (মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস: ১৫২০)
অন্য হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা, মিথ্যা কাজ ও মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারে না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বুখারি, হাদিস: ৬০৫৭)
পাঁচ. রোজা নষ্ট হওয়ার কারণ পরিহার
রোজাদারকে এমন সব কাজ পরিহার করতে হবে, যা রোজা নষ্ট করে। বিশেষ করে দিনের বেলায় স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এড়িয়ে চলতে হবে। খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত হয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা নষ্ট হয়—এমন কোনো কাজ করলে অনেক ক্ষেত্রে কাফফারাও আদায় করতে হয়। আর কাফফারা কঠিন এক বিধান। তাই এ বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।
ছয়. কোরআন তিলাওয়াত
রমজান কোরআন নাজিলের মাস। এ কারণেই রমজান মাসের এত মর্যাদা। তাই এ মাসে অন্য সকল সময়ের চেয়ে বেশি করে কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজা ও কোরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে প্রতিপালক, আমি দিনের বেলা তাকে পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। কোরআন বলবে হে প্রতিপালক, আমি তাকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। তিনি বলেন, এর পর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৬৬২৬)
সাত. আর্তমানবতার সেবা
রোজা রাখার মাধ্যমে অসহায়, সম্বলহীন ও অভুক্ত মানুষের দুঃখ-কষ্ট অনুভব করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাই এ দান-প্রতিদানের পবিত্র মাসে তাদের জন্য বেশি করে কল্যাণকর কাজ করা উচিত। ইফতার করানো, সদকাতুল ফিতর, জাকাত আদায় করা ছাড়াও ব্যাপকভাবে দান-সদকা করা যেতে পারে। হাদিসে এসেছে, ‘মহানবী (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তাঁর দানশীলতা আরও বেড়ে যেত।’ (মুসলিম, হাদিস: ৩২০৮) তা ছাড়া রোজাদারকে ইফতার করালে রোজা রাখার সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে ওই রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। এবং রোজাদারের সওয়াবও কমানো হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮০৭)
আট. খাওয়া-ঘুমে ভারসাম্য
রোজা ত্যাগের মাস, সংযমের মাস। এ মাসে খাওয়া-দাওয়া, ঘুমসহ যাবতীয় জৈবিক চাহিদা কমিয়ে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকতে বলা হয়েছে। তাই দিনের বেলা রোজা রেখে রাতের বেলায় অধিক পরিমাণে পানাহার করা শিষ্টাচার পরিপন্থী। সাহরি ও ইফতারে বিলাসী আয়োজন ইসলাম নিরুৎসাহিত করে। বিশেষ করে সাহরি ও ইফতারে অপচয় করা মোটেও অনুমোদিত নয়। তা ছাড়া সারা দিন ঘুমিয়ে অলস সময় যাপন করাও ঠিক নয়। বরং আয়-রোজগার ও স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং ইবাদত অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ খাবার-দাবার, সময়, শক্তি কোনো কিছুই অপচয় করা ইসলাম অনুমোদন করে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা অপচয় করো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই আর শয়তান তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৬-২৭)

পবিত্র মাস রমজান জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সময়। কোরআনের আলোকে জীবন রাঙিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে প্রয়োজন রমজানের শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তা দারুণ সহায়ক হয় এবং রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে পরিপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। নিচে রমজানের আটটি শিষ্টাচারের আলোচনা করা হলো—
এক. আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ
ইসলাম শব্দের অর্থই আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সঁপে দেওয়া। আর রোজা ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিধান। তাই রমজানের ফজিলত পেতে হলে প্রথমেই আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করে তাঁর মনোনীত ধর্ম ইসলামে পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে। প্রবৃত্তির অনুসরণ ও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিজেকে মুক্ত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। ইসলামের সকল আবশ্যকীয় বিধান মান্য করার ব্রত গ্রহণ করতে হবে। নিষিদ্ধ কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২০৮)
দুই. একনিষ্ঠ মনে ইবাদত
কোনো কাজে ইখলাস অবলম্বন বা একনিষ্ঠ হওয়ার অর্থ হলো, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যেই কাজটি সম্পাদন করা। লৌকিকতা বা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্য ইবাদত করা ইখলাসের পথে অন্তরায়। অন্য যেকোনো ইবাদতের মতো রোজাও ইখলাস ছাড়া আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। রোজায় একনিষ্ঠ হওয়াকে হাদিসের ভাষায় ‘ইহতিসাব’ বলা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে তাঁর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভের আশায় রোজা রাখবে, তার অতীতের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ২০১৪; মুসলিম, হাদিস: ১৮১৭)
তিন. মহানবী (সা.)-এর অনুসরণ
ইবাদত যতই ইখলাসপূর্ণ হোক না কেন, তা যদি মহানবী (সা.)-এর সুন্নত অনুসারে না হয়, তবে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ, মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমার নির্দেশ নেই এমন বিষয়ে কেউ আমল করলে তা প্রত্যাখ্যাত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪৫৯০) তাই রমজানে আমাদের সকল কার্যক্রম হতে হবে মহানবী (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক। তিনি যেভাবে রোজা রেখেছেন, সাহরি ও ইফতার করেছেন, আমাদেরও সেভাবে তা সম্পাদন করতে হবে। সব ক্ষেত্রে তাঁকে এবং তাঁর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত সাহাবিদের অনুসরণ করতে হবে। তাঁর মতো বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত ও নফল ইবাদত করতে হবে।
চার. অন্যায় থেকে বিরত থাকা
অন্যায় কাজ সব সময় গুনাহের কারণ। তবে পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে তাতে লিপ্ত হওয়া আরও গর্হিত কাজ। তাই রোজা রেখে কোনো ধরনের অযথা কথাবার্তা ও ঝগড়া-বিবাদে জড়ানো যাবে না। মহানবী (সা.) বলেন, ‘শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই রোজা নয়। বরং রোজা হলো অনর্থক-অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা। যদি তোমার সঙ্গে কেউ ঝগড়া-বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায়, অথবা মূর্খ আচরণ করে, তবে তাকে বলে দেবে আমি রোজাদার।’ (মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস: ১৫২০)
অন্য হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা, মিথ্যা কাজ ও মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারে না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বুখারি, হাদিস: ৬০৫৭)
পাঁচ. রোজা নষ্ট হওয়ার কারণ পরিহার
রোজাদারকে এমন সব কাজ পরিহার করতে হবে, যা রোজা নষ্ট করে। বিশেষ করে দিনের বেলায় স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এড়িয়ে চলতে হবে। খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত হয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা নষ্ট হয়—এমন কোনো কাজ করলে অনেক ক্ষেত্রে কাফফারাও আদায় করতে হয়। আর কাফফারা কঠিন এক বিধান। তাই এ বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।
ছয়. কোরআন তিলাওয়াত
রমজান কোরআন নাজিলের মাস। এ কারণেই রমজান মাসের এত মর্যাদা। তাই এ মাসে অন্য সকল সময়ের চেয়ে বেশি করে কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজা ও কোরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে প্রতিপালক, আমি দিনের বেলা তাকে পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। কোরআন বলবে হে প্রতিপালক, আমি তাকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল করো। তিনি বলেন, এর পর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৬৬২৬)
সাত. আর্তমানবতার সেবা
রোজা রাখার মাধ্যমে অসহায়, সম্বলহীন ও অভুক্ত মানুষের দুঃখ-কষ্ট অনুভব করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাই এ দান-প্রতিদানের পবিত্র মাসে তাদের জন্য বেশি করে কল্যাণকর কাজ করা উচিত। ইফতার করানো, সদকাতুল ফিতর, জাকাত আদায় করা ছাড়াও ব্যাপকভাবে দান-সদকা করা যেতে পারে। হাদিসে এসেছে, ‘মহানবী (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তাঁর দানশীলতা আরও বেড়ে যেত।’ (মুসলিম, হাদিস: ৩২০৮) তা ছাড়া রোজাদারকে ইফতার করালে রোজা রাখার সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে ওই রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। এবং রোজাদারের সওয়াবও কমানো হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮০৭)
আট. খাওয়া-ঘুমে ভারসাম্য
রোজা ত্যাগের মাস, সংযমের মাস। এ মাসে খাওয়া-দাওয়া, ঘুমসহ যাবতীয় জৈবিক চাহিদা কমিয়ে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকতে বলা হয়েছে। তাই দিনের বেলা রোজা রেখে রাতের বেলায় অধিক পরিমাণে পানাহার করা শিষ্টাচার পরিপন্থী। সাহরি ও ইফতারে বিলাসী আয়োজন ইসলাম নিরুৎসাহিত করে। বিশেষ করে সাহরি ও ইফতারে অপচয় করা মোটেও অনুমোদিত নয়। তা ছাড়া সারা দিন ঘুমিয়ে অলস সময় যাপন করাও ঠিক নয়। বরং আয়-রোজগার ও স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং ইবাদত অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ খাবার-দাবার, সময়, শক্তি কোনো কিছুই অপচয় করা ইসলাম অনুমোদন করে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা অপচয় করো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই আর শয়তান তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৬-২৭)

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১১ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
১৩ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৫ মিনিট | ০৫: ২০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২২ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৫ মিনিট | ০৫: ২০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২২ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

পবিত্র মাস রমজান জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সময়। কোরআনের আলোকে জীবন রাঙিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে প্রয়োজন রমজানের শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তা দারুণ সহায়ক হয় এবং রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে পরিপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। নিচে রমজানের আটটি শিষ্টাচার
১৩ এপ্রিল ২০২২
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১১ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
১৩ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১ দিন আগেসাকী মাহবুব

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

পবিত্র মাস রমজান জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সময়। কোরআনের আলোকে জীবন রাঙিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে প্রয়োজন রমজানের শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তা দারুণ সহায়ক হয় এবং রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে পরিপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। নিচে রমজানের আটটি শিষ্টাচার
১৩ এপ্রিল ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
১৩ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

পবিত্র মাস রমজান জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সময়। কোরআনের আলোকে জীবন রাঙিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে প্রয়োজন রমজানের শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তা দারুণ সহায়ক হয় এবং রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে পরিপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। নিচে রমজানের আটটি শিষ্টাচার
১৩ এপ্রিল ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১১ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১ দিন আগেমুফতি খালিদ কাসেমি

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)
আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)
দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)
তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)
আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)
দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)
তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

পবিত্র মাস রমজান জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সময়। কোরআনের আলোকে জীবন রাঙিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে প্রয়োজন রমজানের শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তা দারুণ সহায়ক হয় এবং রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে পরিপূর্ণ ফজিলত ও সওয়াব লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। নিচে রমজানের আটটি শিষ্টাচার
১৩ এপ্রিল ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১১ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
১৩ ঘণ্টা আগে