Ajker Patrika

দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে ইসলামের শিক্ষা

ড. মো. আবদুল কাদির
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৪, ১৭: ২৮
দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে ইসলামের শিক্ষা

দুর্নীতি একটি নেতিবাচক শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ নীতিবিরুদ্ধ আচরণ, অসদাচরণ, নীতিহীনতা ইত্যাদি। সাধারণভাবে যা নীতিসিদ্ধ নয়, তা-ই দুর্নীতি। অর্থাৎ যে কাজ পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও ধর্মে স্বীকৃত নয়, তা-ই দুর্নীতি। রাজনৈতিক ও সরকারি প্রশাসনে দুর্নীতি বলতে সাধারণত ঘুষ, বলপ্রয়োগ বা ভীতি প্রদর্শন, প্রভাব বিস্তার বা ব্যক্তিবিশেষকে সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে অফিস-আদালতকে ব্যক্তিগত লাভের জন্য ব্যবহার করাকে বোঝায়। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ব্যক্তিগত লাভের জন্য জনপ্রশাসনের অপব্যবহারই দুর্নীতি।

দুর্নীতি মানবসভ্যতার জন্য অভিশাপ। সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য সর্বোচ্চ প্রতিবন্ধক। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়া বিষাক্ত দুর্নীতি রাষ্ট্রের আইনে যেমন সম্পূর্ণ অবৈধ এবং জঘন্য অপরাধ, তেমনি ইসলামের দৃষ্টিতেও তা মারাত্মক গুনাহের কাজ এবং পরকালীন শাস্তির কারণ। দুর্নীতির সর্বপ্লাবী আচরণ রুখতে ইসলাম কঠোর কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। দুর্নীতির বীজ অঙ্কুরেই বিনষ্ট করতে নিয়েছে বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। পাশাপাশি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের বাস্তব শিক্ষা দিয়েছে এবং দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে।

এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান হওয়ার কারণে ধর্মীয় মূল্যবোধের ব্যাপক প্রচার দুর্নীতি রুখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) দুর্নীতিবিরোধী যেসব নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন, তা বাস্তবায়ন করা গেলে হয়তো এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ইসলামের দৃষ্টিতে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে কয়েকটি করণীয় এখানে তুলে ধরা হলো—

হালাল-হারামের বাছবিচার
হালাল-হারামে বাছবিচার করার মূল্যবোধ দুর্নীতি বন্ধে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা মানুষকে হালাল উপার্জনের আদেশ এবং হারাম উপার্জনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘হে মানবজাতি, পৃথিবীতে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু রয়েছে, তা থেকে খাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা: ১৬৮)

মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘হারাম দ্বারা বর্ধিত দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। জাহান্নামই তার উপযুক্ত স্থান।’ (মুসনাদে আহমাদ)

উপযুক্ত পারিশ্রমিক প্রদান
প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প বেতন দুর্নীতির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। তাই ইসলাম প্রত্যেককে এমন মজুরি দিতে বলে, যাতে সে তার ন্যায়ানুগ ও স্বাভাবিক প্রয়োজন মেটাতে পারে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। কারও ভাই তার অধীন থাকলে তার উচিত নিজে যা খাবে, তাকেও তা-ই খাওয়াবে। নিজে যা পরবে, তাকেও তা-ই পরতে দেবে এবং তাকে দিয়ে এমন কাজ করাবে না, যা তার সাধ্যাতীত। কোনোভাবে তার ওপর আরোপিত বোঝা বেশি হয়ে গেলে নিজেও সে কাজে তাকে সাহায্য করবে।’ (বুখারি)

নিয়োগদানে স্বচ্ছতা
দুর্নীতির অন্যতম কারণ হলো, ঘুষ নেওয়ার মাধ্যমে অদক্ষ, অনভিজ্ঞ ও অসৎ কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া। অথচ মহান আল্লাহ দক্ষ, অভিজ্ঞ, সৎ ও বিশ্বস্ত কর্মচারী নিয়োগের তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তোমার জন্য সর্বোত্তম কর্মচারী হতে পারে সেই ব্যক্তি, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত।’ (সুরা কাসাস: ২৬)

মহানবী (সা.) বলেন, ‘যখন অযোগ্য ও অদক্ষ ব্যক্তিদের কোনো কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তখন তোমরা কেয়ামতের প্রতীক্ষায় থেকো।’ (বুখারি)

কঠোর শাস্তি প্রদান
বিচার বিভাগকে সরকারের যাবতীয় হস্তক্ষেপ, প্রভাব ও চাপ থেকে মুক্ত করতে হবে, যাতে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রকৃত আইন মোতাবেক নির্ভয়ে ও নিঃশঙ্ক চিত্তে রায় দেওয়া যায়। মহানবী (সা.)-এর যুগে মাখজুম গোত্রের এক মহিলা চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হলে মহানবী (সা.) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। শুধু তা-ই নয়, মহানবী (সা.) কসম করে বলেন, ‘আজ যদি আমার মেয়ে ফাতেমাও চুরি করত, আমি মুহাম্মদ (সা.) তারও হাত কাটার নির্দেশ দিতাম।’ (বুখারি)

মহানবী (সা.)-এর ইন্তেকালের পর খোলাফায়ে রাশেদার সময়ও বিচার বিভাগ প্রশাসন থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিল। এখানে সাধারণ নাগরিকও সরকারের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার অধিকারী খলিফাকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অধিকার লাভ করত।

জবাবদিহি
দুর্নীতিমুক্ত সুষম-সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের জন্য জবাবদিহির কোনো বিকল্প নেই। মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ক হজরত ওমর (রা.) মসজিদে জুমার খুতবা দিতে উঠলে একজন বেদুইন তাঁকে এ বলে থামিয়ে দেন যে, ‘গতকাল আপনার পক্ষ থেকে আমাদের মধ্যে যে কাপড় বিতরণ করা হয়েছিল, তা দিয়ে তো এত লম্বা জামা তৈরি করা সম্ভব নয়, আপনি এত বড় জামা পেলেন কোথায়?’ ওমর কোনো প্রতিবাদ না করে তাঁর ছেলে আবদুল্লাহর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি দাঁড়িয়ে বলেন, ‘মদিনার সবার মতো আমি ও আমার বাবা দুজনেই দুই খণ্ড কাপড় পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাবা লম্বা হওয়ায় তাঁর প্রাপ্ত কাপড় দিয়ে জামা তৈরি সম্ভব হচ্ছিল না। তাই আমি আমার কাপড়টি বাবাকে দিয়ে দিয়েছি।’ (ইবনে কাসির)

একজন সাধারণ প্রজার কাছে একজন রাষ্ট্রনায়কের জবাবদিহির এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টি
দুর্নীতির পিচ্ছিল পথে প্রকৃত মুসলমান পা বাড়াতে পারে না। কারণ, পার্থিব জগতের ক্ষণস্থায়ী জীবনের পর রয়েছে এক অনন্ত জীবন। যে জীবনের শুরু আছে, শেষ নেই। সে জীবনের তুলনায় এ নশ্বর জীবন নিতান্তই তুচ্ছ ও নগণ্য। মহানবী (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে একটি মৃত কানকাটা বকরির বাচ্চা দেখিয়ে বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এটি এক দিরহামে ক্রয় করবে?’ সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘আমরা তো তা কোনো কিছুর বিনিময়েই ক্রয় করব না।’ মহানবী (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর কসম, এটা তোমাদের কাছে যতটুকু নিকৃষ্ট, আল্লাহর কাছে দুনিয়া এর চেয়েও নিকৃষ্ট।’ (মুসলিম)
এসব কাজ তখনই ফলপ্রসূ হবে, যখন দেশের প্রত্যেক নাগরিকের অন্তরে দেশের প্রতি ভালোবাসা জাগরূক থাকবে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকবে এবং গণমানুষের মনে সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। আর তা তখনই সম্ভব, যখন মানুষের অন্তরে আল্লাহর ভয় ও তাঁর কাছে জবাবদিহির মানসিকতা থাকবে।

লেখক: অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৩ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৭ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ৩০ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৪২ মিনিট
ফজর০৪: ৪৩ মিনিট০৫: ৫৮ মিনিট
জোহর১১: ৪৪ মিনিট০৩: ৪৮ মিনিট
আসর০৩: ৪৯ মিনিট০৫: ২৫ মিনিট
মাগরিব০৫: ২৭ মিনিট০৬: ৪১ মিনিট
এশা০৬: ৪২ মিনিট০৪: ৪২ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনায় ইসলামের নির্দেশনা

শাব্বির আহমদ
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।

নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলাকে নবী (সা.) ইমানের শাখা বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে...। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (সহিহ বুখারি)।

এমনকি রাস্তা থেকে কাঁটা, ময়লা বা প্রতিবন্ধকতা সরানোকে ইসলামে সদকা বা দান হিসেবে গণ্য করা হয়েছে; যা পরকালে একজন মুমিনের ক্ষমা ও জান্নাত পাওয়ার অসিলা হতে পারে। এ ছাড়া সড়ক দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা এবং যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা ইসলামে সুস্পষ্ট জুলুম ও গুনাহের কাজ।

ইসলাম ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু যান চলাচল নিশ্চিত করাকে বিশেষ সওয়াব লাভের উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাই নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে ট্রাফিক পুলিশ, চালক ও সাধারণ নাগরিক—সবারই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

চালকদের একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে—বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা বা অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটানো গুরুতর অপরাধ। আর ইচ্ছাকৃত বা স্বেচ্ছায় হত্যাকাণ্ডের পরিণাম যেমন জাহান্নাম, তেমনি অসতর্কতাবশত কাউকে হত্যা করলে সে জন্যও কঠিন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে ইসলামে।

সাধারণ নাগরিকদের কর্তব্য হলো চলাচলের সময় রাস্তার প্রধান হকগুলো মেনে চলা। যেমন, দৃষ্টি সংযত রাখা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, নিজে সালাম দেওয়া, কেউ সালাম দিলে তার উত্তর দেওয়া, অন্ধ, বৃদ্ধ, শিশু বা বিপদে পড়া ব্যক্তিকে সাহায্য করা।

আর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের উচিত সড়ক নিরাপদ রাখতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা, অযথা কাউকে হয়রানি না করা, অসদুপায় গ্রহণের সুযোগ কাউকে না দেওয়া, নিজেও গ্রহণ না করা, আইনের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করা।

বিষয়:

সড়কইসলাম
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২২ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৬ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৪২ মিনিট
ফজর০৪: ৪৩ মিনিট০৫: ৫৮ মিনিট
জোহর১১: ৪৪ মিনিট০৩: ৪৯ মিনিট
আসর০৩: ৫০ মিনিট০৫: ২৫ মিনিট
মাগরিব০৫: ২৭ মিনিট০৬: ৪১ মিনিট
এশা০৬: ৪২ মিনিট০৪: ৪২ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ধার্মিকতাই সুখী দাম্পত্যের মূল চাবিকাঠি

ইসলাম ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বিয়ে মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি কেবল দুটি মানুষের মিলন নয়, বরং দুটি পরিবার, দুটি আত্মা ও দুটি হৃদয়ের পবিত্র বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবনে গড়ে ওঠে পারস্পরিক ভালোবাসা, শান্তি ও মধুর সম্পর্ক।

তাই ইসলাম এই সম্পর্ককে শুধু সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখেনি, বরং একে করেছে ইবাদতের অংশ। এ কারণেই নবীজি (সা.) পুরুষদের স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘নারীকে চারটি কারণে বিয়ে করা হয়। ১. তার সম্পদ, ২. তার বংশমর্যাদা, ৩. তার সৌন্দর্য, ৪. তার দ্বীনদার। অতএব তুমি দ্বীনদারকেই প্রাধান্য দাও। না হলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)

এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।

কারণ, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, সম্পদ পরিবর্তনশীল, বংশমর্যাদা বাহ্যিক মর্যাদা মাত্র; কিন্তু দ্বীনদার হলো এমন এক গুণ, যা জীবনকে আখিরাতের সফলতার পথে নিয়ে যায় এবং দাম্পত্যসম্পর্ককে প্রকৃত অর্থে স্থায়ী সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা দেয়।

নবীজি (সা.)-এর এ নির্দেশনার মূল কথা হলো, যখনই দ্বীনদার কোনো নারী পাওয়া যাবে, তখন তাকেই সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো গুণসম্পন্নাকে প্রাধান্য দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।

কারণ দ্বীনদার ছাড়া অন্য সব গুণ একসময় ম্লান হয়ে যায়, কিন্তু দ্বীনদারের আলো দাম্পত্যজীবনকে চিরভালোবাসা, আস্থা ও সন্তুষ্টিতে ভরিয়ে রাখে।

অতএব, একজন মুসলিম যুবকের জন্য স্ত্রী নির্বাচনকালে সর্বোত্তম নির্দেশনা হলো, এমন নারীকে বেছে নেওয়া, যিনি দ্বীনদার, আল্লাহভীরু ও ইসলামি আদর্শে জীবন পরিচালনা করতে অভ্যস্ত। এর মাধ্যমে সংসার হবে শান্তিময়, জীবন হবে কল্যাণময় এবং আখিরাত হবে সফল।

লেখক: ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদ্রাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত