মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল-লাওয়াতি আল-তাঞ্জি, সংক্ষেপে ইবনে বতুতা, ছিলেন মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুসলিম পর্যটক, বিচারক ও ভূগোলবিদ। তিনি ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে (৭০৩ হিজরি) মরক্কোর তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার ছিল ইসলামি শিক্ষায় সমৃদ্ধ এবং তিনি মালিকি মাজহাবে পারদর্শী ছিলেন। ছোটবেলায় ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন এবং পরে কাজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। (ইবনে হাজর আল-আসকালানি, আদ-দুররুল কামিনা,৩ / ৪৮০)
ভ্রমণের সূচনা
১৩২৫ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ২১ বছর বয়সে ইবনে বতুতা হজ পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তবে এই সফরই পরবর্তীতে তাঁকে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ ভ্রমণের পথে নিয়ে যায়। হজ শেষে তিনি বিভিন্ন দেশে ইসলামের বিস্তার, সমাজব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহে ভ্রমণ অব্যাহত রাখেন। তাঁর ভ্রমণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—ইসলামি জ্ঞান অর্জন, ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং মুসলিম উম্মাহর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা। (ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা,১ / ২১৩)
বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ
ইবনে বতুতা প্রায় ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ ১৭ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করেন, যা তৎকালীন বিশ্ব বিবেচনায় অভূতপূর্ব। তিনি ৪০ টির বেশি দেশ ভ্রমণ করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি—
উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকা: মিশর, সুদান, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, মরক্কো।
মধ্যপ্রাচ্য: সৌদি আরব, সিরিয়া, ইরাক, ইরান।
উপমহাদেশ: ভারত, মালদ্বীপ, বাংলা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া: চীন, ইন্দোনেশিয়া।
ইউরোপ: তুরস্ক, আন্দালুসিয়া (স্পেন)।
ভারতে বিচারকের দায়িত্বে
১৩৩৪ সালে দিল্লির সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলকের আমন্ত্রণে ইবনে বতুতা ভারতে আসেন। সুলতান তাঁকে রাজধানী দিল্লির প্রধান কাজি (বিচারপতি) হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রায় ৬ থেকে ৮ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। তবে দিল্লির রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নানা চক্রান্তের কারণে তিনি চীনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং সুলতানের দূত হিসেবে কূটনৈতিক মিশনে অংশ নেন। (ইবনে বতুতা, রিহলা,২ / ১০৫-১১০)
বাংলায় আগমন
ইবনে বতুতা ১৩৪৬ সালে বাংলায় আসেন এবং সোনারগাঁওয়ে বাংলার সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আতিথ্য গ্রহণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলা ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী এবং এখানকার শাসকেরা ইসলামের প্রতি আন্তরিক ছিলেন। তিনি এ সময় বাংলার আলেম ও সুফিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সুলতানের আনুকূল্যে চীনের পথে যাত্রা করেন। (ইবনে বতুতা, রিহলা,২ / ১৫০-১৫৫)
রিহলা ইবনে বতুতা
ইবনে বতুতার বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনী ‘রিহলা’ (পূর্ণ নাম: তুহফাতুন্নুজ্জার ফি গারায়িবিল আমসার ওয়া আজাইবিল আসফার) তাঁর ভ্রমণের অন্যতম প্রধান ফসল। এই গ্রন্থে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, ভূগোল ও ইসলামি জীবনযাত্রার বিবরণ দিয়েছেন। এটি মধ্যযুগীয় ইসলামি ইতিহাস ও ভূগোলবিদ্যার অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। (ইবনে বতুতা, রিহলা,১ /৫-১০)
ইবনে বতুতার অবদান
ইবনে বতুতা কেবল একজন পর্যটক ছিলেন না; ছিলেন একাধারে বিচারক, পণ্ডিত, ইতিহাসবিদ ও কূটনীতিক। তাঁর অবদানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়—
বিশ্বসভ্যতার সংযোগ ঘটানো: তিনি মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সংস্কৃতি, রাজনীতি ও ধর্মীয় আদান-প্রদানের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, যা ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার প্রচার: তিনি বিভিন্ন দেশে বিচারক ও প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা ইসলামি আইন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ভূগোল ও ইতিহাসে দৃষ্টান্তমূলক অবদান: তাঁর রচনাগুলো মধ্যযুগীয় বিশ্বের ভূগোল, জনজীবন, অর্থনীতি ও শাসনব্যবস্থা বোঝার জন্য অন্যতম প্রধান উৎস।
ভ্রমণসাহিত্যে যুগান্তকারী অবদান: তাঁর ‘রিহলা’ গ্রন্থটি শুধু ভ্রমণকাহিনী নয়, বরং এটি এক ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক দলিল, যা আজও গবেষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইবনে বতুতা ছিলেন এক মহান ভ্রমণকারী, আলেম ও বিচারক। তাঁর ‘রিহলা’ শুধু তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাই নয়, বরং এটি তৎকালীন বিশ্বের একটি বাস্তব প্রতিচিত্র। তাঁর জীবন থেকে আমরা অধ্যাবসায়, ধৈর্য ও জ্ঞানার্জনের অনুপ্রেরণা পাই। তিনি ইসলামের প্রসার, বিচারব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সংযোগ ঘটানোর ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখেছেন। তাঁর ভ্রমণ শুধু পৃথিবীর মানচিত্রে ছিল না, বরং জ্ঞানের দিগন্তেও ছিল এক মহাপরিক্রমা।
তথ্যসূত্র
১. ইবনে বতুতা, রিহলা
২. ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা
৩. ইবনে হাজর আল-আসকালানি, আদ-দুররুল কামিনা

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল-লাওয়াতি আল-তাঞ্জি, সংক্ষেপে ইবনে বতুতা, ছিলেন মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুসলিম পর্যটক, বিচারক ও ভূগোলবিদ। তিনি ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে (৭০৩ হিজরি) মরক্কোর তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার ছিল ইসলামি শিক্ষায় সমৃদ্ধ এবং তিনি মালিকি মাজহাবে পারদর্শী ছিলেন। ছোটবেলায় ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন এবং পরে কাজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। (ইবনে হাজর আল-আসকালানি, আদ-দুররুল কামিনা,৩ / ৪৮০)
ভ্রমণের সূচনা
১৩২৫ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ২১ বছর বয়সে ইবনে বতুতা হজ পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তবে এই সফরই পরবর্তীতে তাঁকে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ ভ্রমণের পথে নিয়ে যায়। হজ শেষে তিনি বিভিন্ন দেশে ইসলামের বিস্তার, সমাজব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহে ভ্রমণ অব্যাহত রাখেন। তাঁর ভ্রমণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—ইসলামি জ্ঞান অর্জন, ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং মুসলিম উম্মাহর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা। (ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা,১ / ২১৩)
বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ
ইবনে বতুতা প্রায় ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ ১৭ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করেন, যা তৎকালীন বিশ্ব বিবেচনায় অভূতপূর্ব। তিনি ৪০ টির বেশি দেশ ভ্রমণ করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি—
উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকা: মিশর, সুদান, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, মরক্কো।
মধ্যপ্রাচ্য: সৌদি আরব, সিরিয়া, ইরাক, ইরান।
উপমহাদেশ: ভারত, মালদ্বীপ, বাংলা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া: চীন, ইন্দোনেশিয়া।
ইউরোপ: তুরস্ক, আন্দালুসিয়া (স্পেন)।
ভারতে বিচারকের দায়িত্বে
১৩৩৪ সালে দিল্লির সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলকের আমন্ত্রণে ইবনে বতুতা ভারতে আসেন। সুলতান তাঁকে রাজধানী দিল্লির প্রধান কাজি (বিচারপতি) হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রায় ৬ থেকে ৮ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। তবে দিল্লির রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নানা চক্রান্তের কারণে তিনি চীনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং সুলতানের দূত হিসেবে কূটনৈতিক মিশনে অংশ নেন। (ইবনে বতুতা, রিহলা,২ / ১০৫-১১০)
বাংলায় আগমন
ইবনে বতুতা ১৩৪৬ সালে বাংলায় আসেন এবং সোনারগাঁওয়ে বাংলার সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আতিথ্য গ্রহণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলা ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী এবং এখানকার শাসকেরা ইসলামের প্রতি আন্তরিক ছিলেন। তিনি এ সময় বাংলার আলেম ও সুফিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সুলতানের আনুকূল্যে চীনের পথে যাত্রা করেন। (ইবনে বতুতা, রিহলা,২ / ১৫০-১৫৫)
রিহলা ইবনে বতুতা
ইবনে বতুতার বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনী ‘রিহলা’ (পূর্ণ নাম: তুহফাতুন্নুজ্জার ফি গারায়িবিল আমসার ওয়া আজাইবিল আসফার) তাঁর ভ্রমণের অন্যতম প্রধান ফসল। এই গ্রন্থে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, ভূগোল ও ইসলামি জীবনযাত্রার বিবরণ দিয়েছেন। এটি মধ্যযুগীয় ইসলামি ইতিহাস ও ভূগোলবিদ্যার অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। (ইবনে বতুতা, রিহলা,১ /৫-১০)
ইবনে বতুতার অবদান
ইবনে বতুতা কেবল একজন পর্যটক ছিলেন না; ছিলেন একাধারে বিচারক, পণ্ডিত, ইতিহাসবিদ ও কূটনীতিক। তাঁর অবদানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়—
বিশ্বসভ্যতার সংযোগ ঘটানো: তিনি মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সংস্কৃতি, রাজনীতি ও ধর্মীয় আদান-প্রদানের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, যা ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার প্রচার: তিনি বিভিন্ন দেশে বিচারক ও প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা ইসলামি আইন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ভূগোল ও ইতিহাসে দৃষ্টান্তমূলক অবদান: তাঁর রচনাগুলো মধ্যযুগীয় বিশ্বের ভূগোল, জনজীবন, অর্থনীতি ও শাসনব্যবস্থা বোঝার জন্য অন্যতম প্রধান উৎস।
ভ্রমণসাহিত্যে যুগান্তকারী অবদান: তাঁর ‘রিহলা’ গ্রন্থটি শুধু ভ্রমণকাহিনী নয়, বরং এটি এক ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক দলিল, যা আজও গবেষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইবনে বতুতা ছিলেন এক মহান ভ্রমণকারী, আলেম ও বিচারক। তাঁর ‘রিহলা’ শুধু তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাই নয়, বরং এটি তৎকালীন বিশ্বের একটি বাস্তব প্রতিচিত্র। তাঁর জীবন থেকে আমরা অধ্যাবসায়, ধৈর্য ও জ্ঞানার্জনের অনুপ্রেরণা পাই। তিনি ইসলামের প্রসার, বিচারব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সংযোগ ঘটানোর ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখেছেন। তাঁর ভ্রমণ শুধু পৃথিবীর মানচিত্রে ছিল না, বরং জ্ঞানের দিগন্তেও ছিল এক মহাপরিক্রমা।
তথ্যসূত্র
১. ইবনে বতুতা, রিহলা
২. ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা
৩. ইবনে হাজর আল-আসকালানি, আদ-দুররুল কামিনা
মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল-লাওয়াতি আল-তাঞ্জি, সংক্ষেপে ইবনে বতুতা, ছিলেন মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুসলিম পর্যটক, বিচারক ও ভূগোলবিদ। তিনি ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে (৭০৩ হিজরি) মরক্কোর তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার ছিল ইসলামি শিক্ষায় সমৃদ্ধ এবং তিনি মালিকি মাজহাবে পারদর্শী ছিলেন। ছোটবেলায় ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন এবং পরে কাজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। (ইবনে হাজর আল-আসকালানি, আদ-দুররুল কামিনা,৩ / ৪৮০)
ভ্রমণের সূচনা
১৩২৫ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ২১ বছর বয়সে ইবনে বতুতা হজ পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তবে এই সফরই পরবর্তীতে তাঁকে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ ভ্রমণের পথে নিয়ে যায়। হজ শেষে তিনি বিভিন্ন দেশে ইসলামের বিস্তার, সমাজব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহে ভ্রমণ অব্যাহত রাখেন। তাঁর ভ্রমণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—ইসলামি জ্ঞান অর্জন, ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং মুসলিম উম্মাহর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা। (ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা,১ / ২১৩)
বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ
ইবনে বতুতা প্রায় ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ ১৭ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করেন, যা তৎকালীন বিশ্ব বিবেচনায় অভূতপূর্ব। তিনি ৪০ টির বেশি দেশ ভ্রমণ করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি—
উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকা: মিশর, সুদান, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, মরক্কো।
মধ্যপ্রাচ্য: সৌদি আরব, সিরিয়া, ইরাক, ইরান।
উপমহাদেশ: ভারত, মালদ্বীপ, বাংলা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া: চীন, ইন্দোনেশিয়া।
ইউরোপ: তুরস্ক, আন্দালুসিয়া (স্পেন)।
ভারতে বিচারকের দায়িত্বে
১৩৩৪ সালে দিল্লির সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলকের আমন্ত্রণে ইবনে বতুতা ভারতে আসেন। সুলতান তাঁকে রাজধানী দিল্লির প্রধান কাজি (বিচারপতি) হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রায় ৬ থেকে ৮ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। তবে দিল্লির রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নানা চক্রান্তের কারণে তিনি চীনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং সুলতানের দূত হিসেবে কূটনৈতিক মিশনে অংশ নেন। (ইবনে বতুতা, রিহলা,২ / ১০৫-১১০)
বাংলায় আগমন
ইবনে বতুতা ১৩৪৬ সালে বাংলায় আসেন এবং সোনারগাঁওয়ে বাংলার সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আতিথ্য গ্রহণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলা ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী এবং এখানকার শাসকেরা ইসলামের প্রতি আন্তরিক ছিলেন। তিনি এ সময় বাংলার আলেম ও সুফিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সুলতানের আনুকূল্যে চীনের পথে যাত্রা করেন। (ইবনে বতুতা, রিহলা,২ / ১৫০-১৫৫)
রিহলা ইবনে বতুতা
ইবনে বতুতার বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনী ‘রিহলা’ (পূর্ণ নাম: তুহফাতুন্নুজ্জার ফি গারায়িবিল আমসার ওয়া আজাইবিল আসফার) তাঁর ভ্রমণের অন্যতম প্রধান ফসল। এই গ্রন্থে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, ভূগোল ও ইসলামি জীবনযাত্রার বিবরণ দিয়েছেন। এটি মধ্যযুগীয় ইসলামি ইতিহাস ও ভূগোলবিদ্যার অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। (ইবনে বতুতা, রিহলা,১ /৫-১০)
ইবনে বতুতার অবদান
ইবনে বতুতা কেবল একজন পর্যটক ছিলেন না; ছিলেন একাধারে বিচারক, পণ্ডিত, ইতিহাসবিদ ও কূটনীতিক। তাঁর অবদানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়—
বিশ্বসভ্যতার সংযোগ ঘটানো: তিনি মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সংস্কৃতি, রাজনীতি ও ধর্মীয় আদান-প্রদানের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, যা ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার প্রচার: তিনি বিভিন্ন দেশে বিচারক ও প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা ইসলামি আইন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ভূগোল ও ইতিহাসে দৃষ্টান্তমূলক অবদান: তাঁর রচনাগুলো মধ্যযুগীয় বিশ্বের ভূগোল, জনজীবন, অর্থনীতি ও শাসনব্যবস্থা বোঝার জন্য অন্যতম প্রধান উৎস।
ভ্রমণসাহিত্যে যুগান্তকারী অবদান: তাঁর ‘রিহলা’ গ্রন্থটি শুধু ভ্রমণকাহিনী নয়, বরং এটি এক ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক দলিল, যা আজও গবেষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইবনে বতুতা ছিলেন এক মহান ভ্রমণকারী, আলেম ও বিচারক। তাঁর ‘রিহলা’ শুধু তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাই নয়, বরং এটি তৎকালীন বিশ্বের একটি বাস্তব প্রতিচিত্র। তাঁর জীবন থেকে আমরা অধ্যাবসায়, ধৈর্য ও জ্ঞানার্জনের অনুপ্রেরণা পাই। তিনি ইসলামের প্রসার, বিচারব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সংযোগ ঘটানোর ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখেছেন। তাঁর ভ্রমণ শুধু পৃথিবীর মানচিত্রে ছিল না, বরং জ্ঞানের দিগন্তেও ছিল এক মহাপরিক্রমা।
তথ্যসূত্র
১. ইবনে বতুতা, রিহলা
২. ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা
৩. ইবনে হাজর আল-আসকালানি, আদ-দুররুল কামিনা

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল-লাওয়াতি আল-তাঞ্জি, সংক্ষেপে ইবনে বতুতা, ছিলেন মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুসলিম পর্যটক, বিচারক ও ভূগোলবিদ। তিনি ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে (৭০৩ হিজরি) মরক্কোর তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার ছিল ইসলামি শিক্ষায় সমৃদ্ধ এবং তিনি মালিকি মাজহাবে পারদর্শী ছিলেন। ছোটবেলায় ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন এবং পরে কাজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। (ইবনে হাজর আল-আসকালানি, আদ-দুররুল কামিনা,৩ / ৪৮০)
ভ্রমণের সূচনা
১৩২৫ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ২১ বছর বয়সে ইবনে বতুতা হজ পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তবে এই সফরই পরবর্তীতে তাঁকে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ ভ্রমণের পথে নিয়ে যায়। হজ শেষে তিনি বিভিন্ন দেশে ইসলামের বিস্তার, সমাজব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহে ভ্রমণ অব্যাহত রাখেন। তাঁর ভ্রমণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—ইসলামি জ্ঞান অর্জন, ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং মুসলিম উম্মাহর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা। (ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা,১ / ২১৩)
বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ
ইবনে বতুতা প্রায় ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ ১৭ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করেন, যা তৎকালীন বিশ্ব বিবেচনায় অভূতপূর্ব। তিনি ৪০ টির বেশি দেশ ভ্রমণ করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি—
উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকা: মিশর, সুদান, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, মরক্কো।
মধ্যপ্রাচ্য: সৌদি আরব, সিরিয়া, ইরাক, ইরান।
উপমহাদেশ: ভারত, মালদ্বীপ, বাংলা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া: চীন, ইন্দোনেশিয়া।
ইউরোপ: তুরস্ক, আন্দালুসিয়া (স্পেন)।
ভারতে বিচারকের দায়িত্বে
১৩৩৪ সালে দিল্লির সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলকের আমন্ত্রণে ইবনে বতুতা ভারতে আসেন। সুলতান তাঁকে রাজধানী দিল্লির প্রধান কাজি (বিচারপতি) হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রায় ৬ থেকে ৮ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। তবে দিল্লির রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নানা চক্রান্তের কারণে তিনি চীনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং সুলতানের দূত হিসেবে কূটনৈতিক মিশনে অংশ নেন। (ইবনে বতুতা, রিহলা,২ / ১০৫-১১০)
বাংলায় আগমন
ইবনে বতুতা ১৩৪৬ সালে বাংলায় আসেন এবং সোনারগাঁওয়ে বাংলার সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আতিথ্য গ্রহণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলা ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী এবং এখানকার শাসকেরা ইসলামের প্রতি আন্তরিক ছিলেন। তিনি এ সময় বাংলার আলেম ও সুফিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সুলতানের আনুকূল্যে চীনের পথে যাত্রা করেন। (ইবনে বতুতা, রিহলা,২ / ১৫০-১৫৫)
রিহলা ইবনে বতুতা
ইবনে বতুতার বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনী ‘রিহলা’ (পূর্ণ নাম: তুহফাতুন্নুজ্জার ফি গারায়িবিল আমসার ওয়া আজাইবিল আসফার) তাঁর ভ্রমণের অন্যতম প্রধান ফসল। এই গ্রন্থে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, ভূগোল ও ইসলামি জীবনযাত্রার বিবরণ দিয়েছেন। এটি মধ্যযুগীয় ইসলামি ইতিহাস ও ভূগোলবিদ্যার অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। (ইবনে বতুতা, রিহলা,১ /৫-১০)
ইবনে বতুতার অবদান
ইবনে বতুতা কেবল একজন পর্যটক ছিলেন না; ছিলেন একাধারে বিচারক, পণ্ডিত, ইতিহাসবিদ ও কূটনীতিক। তাঁর অবদানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়—
বিশ্বসভ্যতার সংযোগ ঘটানো: তিনি মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সংস্কৃতি, রাজনীতি ও ধর্মীয় আদান-প্রদানের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, যা ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার প্রচার: তিনি বিভিন্ন দেশে বিচারক ও প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা ইসলামি আইন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ভূগোল ও ইতিহাসে দৃষ্টান্তমূলক অবদান: তাঁর রচনাগুলো মধ্যযুগীয় বিশ্বের ভূগোল, জনজীবন, অর্থনীতি ও শাসনব্যবস্থা বোঝার জন্য অন্যতম প্রধান উৎস।
ভ্রমণসাহিত্যে যুগান্তকারী অবদান: তাঁর ‘রিহলা’ গ্রন্থটি শুধু ভ্রমণকাহিনী নয়, বরং এটি এক ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক দলিল, যা আজও গবেষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইবনে বতুতা ছিলেন এক মহান ভ্রমণকারী, আলেম ও বিচারক। তাঁর ‘রিহলা’ শুধু তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাই নয়, বরং এটি তৎকালীন বিশ্বের একটি বাস্তব প্রতিচিত্র। তাঁর জীবন থেকে আমরা অধ্যাবসায়, ধৈর্য ও জ্ঞানার্জনের অনুপ্রেরণা পাই। তিনি ইসলামের প্রসার, বিচারব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সংযোগ ঘটানোর ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখেছেন। তাঁর ভ্রমণ শুধু পৃথিবীর মানচিত্রে ছিল না, বরং জ্ঞানের দিগন্তেও ছিল এক মহাপরিক্রমা।
তথ্যসূত্র
১. ইবনে বতুতা, রিহলা
২. ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা
৩. ইবনে হাজর আল-আসকালানি, আদ-দুররুল কামিনা

নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেসাকী মাহবুব

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল-লাওয়াতি আল-তাঞ্জি, সংক্ষেপে ইবনে বতুতা, ছিলেন মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুসলিম পর্যটক, বিচারক ও ভূগোলবিদ। তিনি ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে (৭০৩ হিজরি) মরক্কোর তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন।
১২ মার্চ ২০২৫
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল-লাওয়াতি আল-তাঞ্জি, সংক্ষেপে ইবনে বতুতা, ছিলেন মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুসলিম পর্যটক, বিচারক ও ভূগোলবিদ। তিনি ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে (৭০৩ হিজরি) মরক্কোর তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন।
১২ মার্চ ২০২৫
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেমুফতি খালিদ কাসেমি

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)
আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)
দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)
তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)
আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)
দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)
তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল-লাওয়াতি আল-তাঞ্জি, সংক্ষেপে ইবনে বতুতা, ছিলেন মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুসলিম পর্যটক, বিচারক ও ভূগোলবিদ। তিনি ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে (৭০৩ হিজরি) মরক্কোর তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন।
১২ মার্চ ২০২৫
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২১ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৩ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২১ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৩ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল-লাওয়াতি আল-তাঞ্জি, সংক্ষেপে ইবনে বতুতা, ছিলেন মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুসলিম পর্যটক, বিচারক ও ভূগোলবিদ। তিনি ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে (৭০৩ হিজরি) মরক্কোর তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন।
১২ মার্চ ২০২৫
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
২ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
৪ ঘণ্টা আগে
আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে