ইসলাম ডেস্ক
ইতিহাসে কিছু ঘটনা আছে, যা কেবল কোনো জাতির নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য চিরন্তন অনুপ্রেরণার উৎস। ইসলামের ইতিহাসে তেমনি এক অমর অধ্যায় কারবালার ঘটনা।
হিজরি ৬১ সালের ১০ মহররম, বর্তমান ইরাকের কারবালা প্রান্তরে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে জীবন উৎসর্গ করেন নবী মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় নাতি হজরত হুসাইন (রা.)। কারবালা কেবল একটি যুদ্ধ নয়—সত্য, ন্যায় ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার অনন্য উদাহরণ।
যে কারণে শহিদ হোন হুসাইন (রা.)
খলিফা হজরত মুআবিয়া (রা.) এর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র ইয়াজিদ ক্ষমতা গ্রহণ করে। ইয়াজিদের শাসনব্যবস্থা ইসলামের মূলনীতি ও নৈতিকতার পরিপন্থী হয়ে ওঠে। তাই হজরত হুসাইন (রা.) তার বায়াত (অনুগত্য) প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ‘আমার মতো মানুষ অন্যায়ের বায়াত গ্রহণ করতে পারে না।’ (তারিখে তাবারি: ৪ / ৩০৪)
হজরত হুসাইন (রা.) মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে কারবালায় পৌঁছালে ইয়াজিদের বাহিনী তাঁকে অবরুদ্ধ করে। খাবার ও পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ সময় অনাহারে থাকার পর ১০ মহররম তাঁর পরিবারসহ ৭২ জন শহীদ হন। এদের মধ্যে শিশু আলী আসগর এবং যুবক আলী আকবরও ছিলেন। হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত মানব ইতিহাসে ন্যায় ও সত্যের জন্য আত্মোৎসর্গের অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
কারবালার গুরুত্ব
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হাসান ও হুসাইন জান্নাতি যুবকদের নেতা।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩৭৪৩, সহিহ্ মুসলিম: ২৪১৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘হুসাইন আমার, আর আমি হুসাইনের। আল্লাহ ভালোবাসেন তাকে, যে হুসাইনকে ভালোবাসে।’ (জামে তিরমিজি: ৩৭৭৫)
নবিজি (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ‘এই সন্তান (হুসাইন)-কে হত্যা করা হবে। যে তাকে সাহায্য করবে না, সে ধ্বংস হবে।’ (মুসনাদে আহমদ: ৬৪৫, মুস্তাদরাকে হাকেম: ৩ / ১৭৬)
কারবালার শিক্ষা
১. সত্যের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান: কারবালা শেখায়—অন্যায়ের কাছে মাথা নত নয়। ন্যায়ের পথে জীবন উৎসর্গ করা ইমানদারের কাজ।
২. জুলুমের বিরুদ্ধে আপসহীনতা: হজরত হুসাইন (রা.) বাতিল শক্তির কাছে আপস করেননি। তিনি প্রমাণ করেছেন, সৎ চরিত্র ও সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো মানবতার সর্বোচ্চ আদর্শ।
৩. আত্মত্যাগের মহত্ত্ব: কারবালা আত্মত্যাগের এমন এক নজির—যেখানে পরিবার, সন্তান ও নিজের জীবনও সত্যের জন্য কোরবানি দেওয়া হয়েছে।
৪. ইমান রক্ষার সংগ্রাম: আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত। তবে তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারো না।’ (সুরা বাকারা: ১৫৪)
কারবালা আমাদের শিখিয়ে দেয়—কোনো অবস্থায় অন্যায়ের সামনে মাথা নত করা যাবে না। সত্য ও ন্যায়ের পথে দৃঢ় থাকা ইমানের দাবি। আজকের সমাজে, যখন অসত্য, জুলুম ও অনৈতিকতা বিস্তার লাভ করছে, তখন কারবালার এই শিক্ষা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। সত্যের পতাকা উঁচু রাখতে হজরত হুসাইন (রা.) এর আদর্শ আমাদের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকুক।
লেখক: আনওয়ার হুসাইন, শিক্ষক, মা’হাদুল মাদীনাহ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
লেখক ও সম্পাদক, মাকতাবাতুত তাকওয়া, ঢাকা।
ইতিহাসে কিছু ঘটনা আছে, যা কেবল কোনো জাতির নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য চিরন্তন অনুপ্রেরণার উৎস। ইসলামের ইতিহাসে তেমনি এক অমর অধ্যায় কারবালার ঘটনা।
হিজরি ৬১ সালের ১০ মহররম, বর্তমান ইরাকের কারবালা প্রান্তরে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে জীবন উৎসর্গ করেন নবী মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় নাতি হজরত হুসাইন (রা.)। কারবালা কেবল একটি যুদ্ধ নয়—সত্য, ন্যায় ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার অনন্য উদাহরণ।
যে কারণে শহিদ হোন হুসাইন (রা.)
খলিফা হজরত মুআবিয়া (রা.) এর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র ইয়াজিদ ক্ষমতা গ্রহণ করে। ইয়াজিদের শাসনব্যবস্থা ইসলামের মূলনীতি ও নৈতিকতার পরিপন্থী হয়ে ওঠে। তাই হজরত হুসাইন (রা.) তার বায়াত (অনুগত্য) প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ‘আমার মতো মানুষ অন্যায়ের বায়াত গ্রহণ করতে পারে না।’ (তারিখে তাবারি: ৪ / ৩০৪)
হজরত হুসাইন (রা.) মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে কারবালায় পৌঁছালে ইয়াজিদের বাহিনী তাঁকে অবরুদ্ধ করে। খাবার ও পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ সময় অনাহারে থাকার পর ১০ মহররম তাঁর পরিবারসহ ৭২ জন শহীদ হন। এদের মধ্যে শিশু আলী আসগর এবং যুবক আলী আকবরও ছিলেন। হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত মানব ইতিহাসে ন্যায় ও সত্যের জন্য আত্মোৎসর্গের অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
কারবালার গুরুত্ব
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হাসান ও হুসাইন জান্নাতি যুবকদের নেতা।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩৭৪৩, সহিহ্ মুসলিম: ২৪১৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘হুসাইন আমার, আর আমি হুসাইনের। আল্লাহ ভালোবাসেন তাকে, যে হুসাইনকে ভালোবাসে।’ (জামে তিরমিজি: ৩৭৭৫)
নবিজি (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ‘এই সন্তান (হুসাইন)-কে হত্যা করা হবে। যে তাকে সাহায্য করবে না, সে ধ্বংস হবে।’ (মুসনাদে আহমদ: ৬৪৫, মুস্তাদরাকে হাকেম: ৩ / ১৭৬)
কারবালার শিক্ষা
১. সত্যের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান: কারবালা শেখায়—অন্যায়ের কাছে মাথা নত নয়। ন্যায়ের পথে জীবন উৎসর্গ করা ইমানদারের কাজ।
২. জুলুমের বিরুদ্ধে আপসহীনতা: হজরত হুসাইন (রা.) বাতিল শক্তির কাছে আপস করেননি। তিনি প্রমাণ করেছেন, সৎ চরিত্র ও সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো মানবতার সর্বোচ্চ আদর্শ।
৩. আত্মত্যাগের মহত্ত্ব: কারবালা আত্মত্যাগের এমন এক নজির—যেখানে পরিবার, সন্তান ও নিজের জীবনও সত্যের জন্য কোরবানি দেওয়া হয়েছে।
৪. ইমান রক্ষার সংগ্রাম: আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত। তবে তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারো না।’ (সুরা বাকারা: ১৫৪)
কারবালা আমাদের শিখিয়ে দেয়—কোনো অবস্থায় অন্যায়ের সামনে মাথা নত করা যাবে না। সত্য ও ন্যায়ের পথে দৃঢ় থাকা ইমানের দাবি। আজকের সমাজে, যখন অসত্য, জুলুম ও অনৈতিকতা বিস্তার লাভ করছে, তখন কারবালার এই শিক্ষা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। সত্যের পতাকা উঁচু রাখতে হজরত হুসাইন (রা.) এর আদর্শ আমাদের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকুক।
লেখক: আনওয়ার হুসাইন, শিক্ষক, মা’হাদুল মাদীনাহ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
লেখক ও সম্পাদক, মাকতাবাতুত তাকওয়া, ঢাকা।
সন্তান আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান উপহার, এক টুকরা অস্তিত্ব, হৃদয়ের স্পন্দন। সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার সম্পর্ক ভালোবাসা ও দয়ার এক স্বর্গীয় বন্ধন। এই ভালোবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব হৃদয়ে প্রবাহিত এক অলৌকিক অনুভব।
১ ঘণ্টা আগেমানুষ শুধু শারীরিক কাঠামো নয়; বরং আত্মা ও নৈতিকতা দ্বারা পরিপূর্ণ একটি সত্তা। আত্মার পরিচর্যা ও পরিশুদ্ধিই মানুষের চরিত্রকে করে তোলে মহৎ, আত্মাকে করে আলোকিত। আত্মশুদ্ধি এমন এক গুণ, যা মানুষকে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছায়, মানবিক গুণাবলিতে পরিপূর্ণ করে, পার্থিব ও পারলৌকিক সফলতার পথ খুলে দেয়।
১ দিন আগেমানুষ সামাজিক জীব। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সমাজ প্রয়োজন। আর একটি সুস্থ, শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য প্রয়োজন সুশাসন, নৈতিকতা, আইন ও পারস্পরিক সহানুভূতি। কিন্তু যখন সমাজে শৃঙ্খলার পরিবর্তে বিশৃঙ্খলা, শান্তির পরিবর্তে হানাহানি এবং ন্যায়ের পরিবর্তে জুলুমের সয়লাব হয়...
২ দিন আগেমহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্য। পবিত্র কোরআনে স্পষ্ট ভাষায় এ কথা বলেও দিয়েছেন। সুরা জারিয়াতের ৫৬ নম্বর আয়াতে এসেছে, ‘আমি জিন ও মানুষ কেবল এ জন্যই সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার ইবাদত করবে।’ আর মানুষের মাধ্যমে ইবাদত তখনই বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব, যখন মানুষ থাকবে জীবন্ত।
২ দিন আগে