Ajker Patrika

জীবনে বরকত বয়ে আনে মিতব্যয়

আব্দুল্লাহ আফফান
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মানবতার ধর্ম ইসলাম। মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ বিধান দিয়েছে ইসলাম। শক্তি-সামর্থ্য, অর্থ-সম্পদ ও সময়-সুযোগ—সবকিছুতেই মিতব্যয় ও মধ্যপন্থা অবলম্বন দুনিয়ায় শান্তি এবং পরকালে মুক্তির জন্য অপরিহার্য। কোনো কিছুতেই বাড়াবাড়ি ও সীমা লঙ্ঘন অনুমোদিত নয়।

মধ্যপন্থা ও মিতব্যয় মুমিনের গুণ। মিতব্যয় আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের মিতব্যয়ী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। সুরা বনি ইসরাইলের ২৯ নম্বর আয়াতে তিনি বলেন, ‘তুমি একেবারে ব্যয়কুণ্ঠ (কৃপণ) হয়ো না, আবার একেবারে হাতখোলা হয়ো না; তাহলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে।’

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, মহান আল্লাহর নিয়ামতগুলো তাঁর নির্দেশিত পদ্ধতিতে ভোগ করতে হয়, অন্যথায় মানুষকে বিপদ-আপদ, অভাব-অনটনের সম্মুখীন হতে হয়, রিজিকের বরকত উঠে যায়। তাই মানুষের উচিত, আল্লাহর নিয়ামতগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা। অপব্যয় ও কৃপণতা থেকে বিরত থাকা।

সুরা আরাফের ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা খাও ও পান করো এবং অপব্যয় কোরো না। আল্লাহ অপব্যয়কারীকে পছন্দ করেন না।’

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা অপব্যয় করতে নিষেধ করেছেন। এ ছাড়া রাসুলে কারিম (সা.)ও অপব্যয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ছিলেন। একবার তিনি সাদ (রা.)-কে অজুর মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যয় করতে দেখে বলেন, ‘হে সাদ, অপচয় করছ কেন?’ সাদ (রা.) বলেন, ‘অজুতে কি অপচয় হয়?’ নবীজি (সা.) বলেন, ‘হ্যাঁ। প্রবহমান নদীতে বসেও যদি তুমি অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করো, তা অপচয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪২৫)

মিতব্যয়ী হলে মহান আল্লাহ দারিদ্র্যমুক্ত জীবন দান করবেন। এমনটাই বোঝা যায় রাসুল (সা.)-এর এই হাদিস থেকে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে কারিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পরিমিত ব্যয় করে, সে নিঃস্ব হয় না।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৭/৩০৩)। অর্থাৎ যে ব্যক্তি অর্থব্যয়ে পরিমিতবোধের চর্চা করবে, অনটন তার নাগাল পাবে না।

আমরা অনেক সময় অনর্থক খরচ করি। লোকদেখানো খরচ করি। আল্লাহর দেওয়া রিজিক আমরা যথাযথভাবে খরচ করি না। অপব্যয় করি। এগুলো আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের তিন বস্তু পছন্দ করেন আর তিন বস্তু অপছন্দ করেন। আল্লাহর পছন্দনীয় বিষয়গুলো হলো—তাঁর ইবাদত করা, তাঁর সঙ্গে কাউকে অংশীদার না করা এবং সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকা বা বিচ্ছিন্ন না হওয়া। আর আল্লাহর অপছন্দের বিষয় তিনটি হলো, অহেতুক কথা বলা, অহেতুক প্রশ্ন করা ও অনর্থক সম্পদ বিনষ্ট করা। (সহিহ মুসলিম: ১৭১৫)

আমাদের আচার-আচরণে, আয়-উপার্জনে, ব্যয়ে ও দানে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে হবে। পিতামাতা, ভাইবোন ও স্ত্রী-সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে হবে। এসব ব্যয়ের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, অনর্থক খরচ যেন না হয়। আমাদের উচিত মিতব্যয়ী হওয়া, কখনো অপচয় না করা। আল্লাহ তাআলা অপচয়কারীর ব্যাপারে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান নিজ প্রতিপালকের প্রতি ঘোর অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৭)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেটার ডেটা সেন্টার হওয়ার পর শুকিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়দের টিউবওয়েল

‘সুদে ১৭ লাখ নিয়ে ১৮ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছি, তবুও বাড়ি দখল’

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

ফজর নামাজ পড়ে বাসার ছাদে যান আওয়ামী লীগ নেতা, সিঁড়ির পাশে রক্তাক্ত লাশ

ভারতীয় নারী ক্রিকেটারের খেলা দেখে ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন মারুফা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ