আসআদ শাহীন
বিশ্বজগতে বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা নিদর্শনের মাঝে এমন কিছু স্থান রয়েছে, যা কেবল চোখে দেখার জন্য নয়—বরং অন্তরে উপলব্ধির জন্য। তেমনই এক আশ্চর্য সৃষ্টি চীনের ‘জানজাই ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম জিওলজিক্যাল পার্ক’–এ অবস্থিত ‘রংধনু পাহাড়’ বা ‘রেইনবো মাউন্টেন’, যা নানা রঙের স্তরে স্তরে গঠিত এক অসামান্য সৌন্দর্য। এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
রেইনবো মাউন্টেনের ভূতাত্ত্বিক পরিচয়
চীনের গানসু প্রদেশে অবস্থিত এই পাহাড় অঞ্চলটি মূলত ‘ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম’ নামে পরিচিত। ভূবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ২৪ মিলিয়ন বছর ধরে গঠিত এই স্তরবিন্যাস মূলত লাল বালুকা পাথর এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের জারণ বিক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে। তবে রঙিন রেখার সুষম বিন্যাস ও বৈচিত্র্য দেখে মনে হয় যেন এটি একটি কল্পনার জগৎ। লাল, কমলা, হলুদ, নীল, সবুজ—সব রঙের নিখুঁত ভারসাম্য যেন পাহাড়ের প্রতিটি বাঁকে এক নতুন কবিতা রচনা করে। যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই রং। এই পাহাড় আসমানি, কমলা, লাল, হলুদ, সবুজ—সব রঙে রাঙা। প্রকৃতি আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে সুবিশাল ক্যানভাসে তুলির টানে সৃষ্টি করেছে এই রংমহল।
ভূবিজ্ঞানীরা বলেন, টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে শুষ্ক পর্বতগাত্রে এমন রংধনুর সাত রং ফুটে উঠেছে। টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছিল শিলাস্তর। শিলাস্তরে ছিল প্রচুর খনিজ পদার্থ, রঙিন সিলিকাসহ নানা উপাদান। বহু বছর ধরে ঋতু পরিবর্তন, ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাত, নানা রকম রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রূপ পরিবর্তন করতে করতে তৈরি হয়েছে বর্তমানের রেইনবো মাউন্টেন। কিন্তু এই নিখুঁত শৈল্পিক বিন্যাস কি কেবল প্রকৃতির সপ্তম আশ্চর্যের খেলা?
আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে প্রকৃতি
পবিত্র কোরআন বারবার আমাদের চোখ ফেরাতে বলেন প্রকৃতির দিকে, কারণ প্রকৃতির সৌন্দর্য ‘আয়াত’ অর্থাৎ আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে বলা হয়েছে: ‘তুমি কি দেখ না যে আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দ্বারা বিভিন্ন রঙের ফলমূল উৎপন্ন করেন? আর পাহাড়গুলোতেও রয়েছে সাদা, লাল এবং নানান রঙের রেখাযুক্ত অংশ এবং নিকষ কালো।’ (সুরা ফাতির: ২৭)
প্রখ্যাত মুফাসসির শায়খ আবদুর রহমান আস-সাদি (রহ.) বলেন, আল্লাহ তাআলা যেভাবে পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখার জন্য পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন, সেভাবেই তিনি সেই পর্বতগুলোকেও রূপ দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় রঙের, সৌন্দর্য ও মাধুর্যের এক বিস্ময়কর আবরণে।
আয়াতে ব্যবহৃত ‘জুদাদ’ শব্দটির অর্থ—পর্বতের বুকে আঁকা রেখা বা শিরা। তিনি বলেন, একটি পর্বতের মধ্যেই দেখা যায় সাদা শিরা, লালচে বা পিঙ্গল রেখা, এবং গভীর কালো রেখা—যাকে বলা হয়েছে ‘গারাবিবু সুদ’, যার অর্থ অত্যন্ত গাঢ় কালো, যেন কাকের পালকের মতো নিখাদ কালো। (তাফসিরে সাদি: ১ / ৬৮৮)
এই আয়াতটি চীনের রংধনু পাহাড়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। এখানে বলা হয়েছে—‘নানা রঙের রেখাযুক্ত পাহাড়’ যা সুনির্দিষ্টভাবে ডেনজিয়ার বর্ণনা মনে করায়। প্রকৃতির এই রঙিন বিন্যাস কেবল চাক্ষুস আনন্দের বিষয় নয়—এটি আল্লাহর কুদরতের প্রতীক।
রংধনু পাহাড় ও ‘তাফসিরুল আয়াত’
কোরআনে একটি শব্দ বারবার ব্যবহৃত হয়েছে: তাফসিরুল আয়াত, অর্থাৎ নিদর্শনের বহুমাত্রিক ব্যাখ্যা ও পুনরাবৃত্তি। এটি প্রকৃতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যখন আমরা রংধনু পাহাড়ের মত সৌন্দর্য দেখি, তখন তা আমাদের চিন্তা-ভাবনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি পৃথিবীতে নানা রঙের বস্তু সৃষ্টি করেছেন। এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল জাতির জন্য।’ (সুরা আন-নাহল: ১৩)
চীনের রংধনু পাহাড় যেন এই আয়াতের জীবন্ত ব্যাখ্যা। এখানে রঙের যে বৈচিত্র্য দেখা যায়, তা মানুষের দৃষ্টি ও হৃদয় উভয়কে আকৃষ্ট করে, এবং বিশ্বাসী হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে স্রষ্টার প্রশংসা।
চিত্রশৈলী ও কোরআনের অলংকার
কোরআনের ভাষা অলংকারপূর্ণ, চিত্রাত্মক এবং ভাবনাবোধক। যখন আমরা পাহাড়ের রঙিন রূপ দেখি, তখন মনে পড়ে কোরআনের সেই উপমা যেখানে মেঘ, পাহাড়, আলো-আঁধারির সমন্বয়ে সৃষ্টিশীলতা ফুটে ওঠে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর সৃষ্টিকে দেখ, কীভাবে তিনি বিভিন্ন রঙের সৃষ্টি করেছেন!’ (সুরা আন-নাহল: ১৬)
জানজাই ডেনজিয়া যেন এই আয়াতের চিত্ররূপ। যেমনভাবে কোরআন একটি চিত্রকল্প সৃষ্টি করে, তেমনি এই পাহাড় তার রং ও রেখায় আমাদের সামনে একটি জীবন্ত আলোকচিত্র তুলে ধরে।
রঙিন পাহাড় ইমানের প্রতিচ্ছবি
চীনের রংধনু পাহাড় প্রকৃতির এক বিস্ময়, কিন্তু একজন মোমিনের জন্য এটি তার ইমানের শক্তি পুনর্জাগরণের উপলক্ষ। এটি প্রমাণ করে যে, পৃথিবীতে এমন কোনো কিছুর সৃষ্টি হয়নি যা উদ্দেশ্যহীন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে তা ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।’ (সুরা আদ-দুখান: ৩৮)
এখানে এই পাহাড় যেন চিৎকার করে বলে, ‘আমার পেছনে এক মহান পরিকল্পক রয়েছেন।’ এবং সেই পরিকল্পকের প্রতি আমাদের ইমান আরও গভীর হয় যখন আমরা কোরআনের আয়াত এবং পাহাড়ের রং মিলিয়ে দেখি।
আল্লাহর নিপুণ শিল্পকর্মের বহিঃপ্রকাশ
রেইনবো মাউন্টেন— এক চিত্রকরের তুলির ছোঁয়া নয় বরং আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় গঠিত প্রাকৃতিক শিল্পকর্ম। যুগে যুগে এই বৈচিত্র্য নজরে এসেছে ভূবিজ্ঞানীদের, পর্যটকদের, এমনকি সাধারণ পথিকেরও। কিন্তু আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এই বৈশিষ্ট্যের ইঙ্গিত দিয়েছেন হাজার বছর পূর্বেই, যখন মানুষের জ্ঞান এই প্রাকৃতিক রহস্যের কেবল প্রান্ত স্পর্শ করত।
উপরিউক্ত আয়াত আমাদের দৃষ্টি দেয় প্রকৃতির গভীরে এবং নির্দেশ করে এক মহান শিল্পীর দিকে, যিনি তাঁর সৃষ্টিকে শুধু প্রয়োজনের জন্যই গড়েননি, বরং দিয়েছেন সৌন্দর্য, শৈল্পিকতা ও ভাবগম্ভীরতা। প্রত্যেকটি পাহাড় যেন এক একটি মৌন কবিতা—সাদা রেখা তার পবিত্রতা, লাল তার আবেগ, আর গাঢ় কালো তার গভীরতা ও গাম্ভীর্য প্রকাশ করে। এই রঙিন পর্বতমালাগুলো শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়, বরং তারা আল্লাহর কুদরত ও জ্ঞানের সাক্ষ্য বহন করে। তারা নীরবে ঘোষণা করে, ‘তোমাদের স্রষ্টা কেবল ক্ষমতাবানই নন, তিনি অপার সৌন্দর্যেরও অধিকারী।’
লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক
বিশ্বজগতে বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা নিদর্শনের মাঝে এমন কিছু স্থান রয়েছে, যা কেবল চোখে দেখার জন্য নয়—বরং অন্তরে উপলব্ধির জন্য। তেমনই এক আশ্চর্য সৃষ্টি চীনের ‘জানজাই ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম জিওলজিক্যাল পার্ক’–এ অবস্থিত ‘রংধনু পাহাড়’ বা ‘রেইনবো মাউন্টেন’, যা নানা রঙের স্তরে স্তরে গঠিত এক অসামান্য সৌন্দর্য। এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
রেইনবো মাউন্টেনের ভূতাত্ত্বিক পরিচয়
চীনের গানসু প্রদেশে অবস্থিত এই পাহাড় অঞ্চলটি মূলত ‘ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম’ নামে পরিচিত। ভূবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ২৪ মিলিয়ন বছর ধরে গঠিত এই স্তরবিন্যাস মূলত লাল বালুকা পাথর এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের জারণ বিক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে। তবে রঙিন রেখার সুষম বিন্যাস ও বৈচিত্র্য দেখে মনে হয় যেন এটি একটি কল্পনার জগৎ। লাল, কমলা, হলুদ, নীল, সবুজ—সব রঙের নিখুঁত ভারসাম্য যেন পাহাড়ের প্রতিটি বাঁকে এক নতুন কবিতা রচনা করে। যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই রং। এই পাহাড় আসমানি, কমলা, লাল, হলুদ, সবুজ—সব রঙে রাঙা। প্রকৃতি আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে সুবিশাল ক্যানভাসে তুলির টানে সৃষ্টি করেছে এই রংমহল।
ভূবিজ্ঞানীরা বলেন, টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে শুষ্ক পর্বতগাত্রে এমন রংধনুর সাত রং ফুটে উঠেছে। টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছিল শিলাস্তর। শিলাস্তরে ছিল প্রচুর খনিজ পদার্থ, রঙিন সিলিকাসহ নানা উপাদান। বহু বছর ধরে ঋতু পরিবর্তন, ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাত, নানা রকম রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রূপ পরিবর্তন করতে করতে তৈরি হয়েছে বর্তমানের রেইনবো মাউন্টেন। কিন্তু এই নিখুঁত শৈল্পিক বিন্যাস কি কেবল প্রকৃতির সপ্তম আশ্চর্যের খেলা?
আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে প্রকৃতি
পবিত্র কোরআন বারবার আমাদের চোখ ফেরাতে বলেন প্রকৃতির দিকে, কারণ প্রকৃতির সৌন্দর্য ‘আয়াত’ অর্থাৎ আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে বলা হয়েছে: ‘তুমি কি দেখ না যে আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দ্বারা বিভিন্ন রঙের ফলমূল উৎপন্ন করেন? আর পাহাড়গুলোতেও রয়েছে সাদা, লাল এবং নানান রঙের রেখাযুক্ত অংশ এবং নিকষ কালো।’ (সুরা ফাতির: ২৭)
প্রখ্যাত মুফাসসির শায়খ আবদুর রহমান আস-সাদি (রহ.) বলেন, আল্লাহ তাআলা যেভাবে পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখার জন্য পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন, সেভাবেই তিনি সেই পর্বতগুলোকেও রূপ দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় রঙের, সৌন্দর্য ও মাধুর্যের এক বিস্ময়কর আবরণে।
আয়াতে ব্যবহৃত ‘জুদাদ’ শব্দটির অর্থ—পর্বতের বুকে আঁকা রেখা বা শিরা। তিনি বলেন, একটি পর্বতের মধ্যেই দেখা যায় সাদা শিরা, লালচে বা পিঙ্গল রেখা, এবং গভীর কালো রেখা—যাকে বলা হয়েছে ‘গারাবিবু সুদ’, যার অর্থ অত্যন্ত গাঢ় কালো, যেন কাকের পালকের মতো নিখাদ কালো। (তাফসিরে সাদি: ১ / ৬৮৮)
এই আয়াতটি চীনের রংধনু পাহাড়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। এখানে বলা হয়েছে—‘নানা রঙের রেখাযুক্ত পাহাড়’ যা সুনির্দিষ্টভাবে ডেনজিয়ার বর্ণনা মনে করায়। প্রকৃতির এই রঙিন বিন্যাস কেবল চাক্ষুস আনন্দের বিষয় নয়—এটি আল্লাহর কুদরতের প্রতীক।
রংধনু পাহাড় ও ‘তাফসিরুল আয়াত’
কোরআনে একটি শব্দ বারবার ব্যবহৃত হয়েছে: তাফসিরুল আয়াত, অর্থাৎ নিদর্শনের বহুমাত্রিক ব্যাখ্যা ও পুনরাবৃত্তি। এটি প্রকৃতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যখন আমরা রংধনু পাহাড়ের মত সৌন্দর্য দেখি, তখন তা আমাদের চিন্তা-ভাবনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি পৃথিবীতে নানা রঙের বস্তু সৃষ্টি করেছেন। এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল জাতির জন্য।’ (সুরা আন-নাহল: ১৩)
চীনের রংধনু পাহাড় যেন এই আয়াতের জীবন্ত ব্যাখ্যা। এখানে রঙের যে বৈচিত্র্য দেখা যায়, তা মানুষের দৃষ্টি ও হৃদয় উভয়কে আকৃষ্ট করে, এবং বিশ্বাসী হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে স্রষ্টার প্রশংসা।
চিত্রশৈলী ও কোরআনের অলংকার
কোরআনের ভাষা অলংকারপূর্ণ, চিত্রাত্মক এবং ভাবনাবোধক। যখন আমরা পাহাড়ের রঙিন রূপ দেখি, তখন মনে পড়ে কোরআনের সেই উপমা যেখানে মেঘ, পাহাড়, আলো-আঁধারির সমন্বয়ে সৃষ্টিশীলতা ফুটে ওঠে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর সৃষ্টিকে দেখ, কীভাবে তিনি বিভিন্ন রঙের সৃষ্টি করেছেন!’ (সুরা আন-নাহল: ১৬)
জানজাই ডেনজিয়া যেন এই আয়াতের চিত্ররূপ। যেমনভাবে কোরআন একটি চিত্রকল্প সৃষ্টি করে, তেমনি এই পাহাড় তার রং ও রেখায় আমাদের সামনে একটি জীবন্ত আলোকচিত্র তুলে ধরে।
রঙিন পাহাড় ইমানের প্রতিচ্ছবি
চীনের রংধনু পাহাড় প্রকৃতির এক বিস্ময়, কিন্তু একজন মোমিনের জন্য এটি তার ইমানের শক্তি পুনর্জাগরণের উপলক্ষ। এটি প্রমাণ করে যে, পৃথিবীতে এমন কোনো কিছুর সৃষ্টি হয়নি যা উদ্দেশ্যহীন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে তা ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।’ (সুরা আদ-দুখান: ৩৮)
এখানে এই পাহাড় যেন চিৎকার করে বলে, ‘আমার পেছনে এক মহান পরিকল্পক রয়েছেন।’ এবং সেই পরিকল্পকের প্রতি আমাদের ইমান আরও গভীর হয় যখন আমরা কোরআনের আয়াত এবং পাহাড়ের রং মিলিয়ে দেখি।
আল্লাহর নিপুণ শিল্পকর্মের বহিঃপ্রকাশ
রেইনবো মাউন্টেন— এক চিত্রকরের তুলির ছোঁয়া নয় বরং আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় গঠিত প্রাকৃতিক শিল্পকর্ম। যুগে যুগে এই বৈচিত্র্য নজরে এসেছে ভূবিজ্ঞানীদের, পর্যটকদের, এমনকি সাধারণ পথিকেরও। কিন্তু আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এই বৈশিষ্ট্যের ইঙ্গিত দিয়েছেন হাজার বছর পূর্বেই, যখন মানুষের জ্ঞান এই প্রাকৃতিক রহস্যের কেবল প্রান্ত স্পর্শ করত।
উপরিউক্ত আয়াত আমাদের দৃষ্টি দেয় প্রকৃতির গভীরে এবং নির্দেশ করে এক মহান শিল্পীর দিকে, যিনি তাঁর সৃষ্টিকে শুধু প্রয়োজনের জন্যই গড়েননি, বরং দিয়েছেন সৌন্দর্য, শৈল্পিকতা ও ভাবগম্ভীরতা। প্রত্যেকটি পাহাড় যেন এক একটি মৌন কবিতা—সাদা রেখা তার পবিত্রতা, লাল তার আবেগ, আর গাঢ় কালো তার গভীরতা ও গাম্ভীর্য প্রকাশ করে। এই রঙিন পর্বতমালাগুলো শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়, বরং তারা আল্লাহর কুদরত ও জ্ঞানের সাক্ষ্য বহন করে। তারা নীরবে ঘোষণা করে, ‘তোমাদের স্রষ্টা কেবল ক্ষমতাবানই নন, তিনি অপার সৌন্দর্যেরও অধিকারী।’
লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক
আসআদ শাহীন
বিশ্বজগতে বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা নিদর্শনের মাঝে এমন কিছু স্থান রয়েছে, যা কেবল চোখে দেখার জন্য নয়—বরং অন্তরে উপলব্ধির জন্য। তেমনই এক আশ্চর্য সৃষ্টি চীনের ‘জানজাই ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম জিওলজিক্যাল পার্ক’–এ অবস্থিত ‘রংধনু পাহাড়’ বা ‘রেইনবো মাউন্টেন’, যা নানা রঙের স্তরে স্তরে গঠিত এক অসামান্য সৌন্দর্য। এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
রেইনবো মাউন্টেনের ভূতাত্ত্বিক পরিচয়
চীনের গানসু প্রদেশে অবস্থিত এই পাহাড় অঞ্চলটি মূলত ‘ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম’ নামে পরিচিত। ভূবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ২৪ মিলিয়ন বছর ধরে গঠিত এই স্তরবিন্যাস মূলত লাল বালুকা পাথর এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের জারণ বিক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে। তবে রঙিন রেখার সুষম বিন্যাস ও বৈচিত্র্য দেখে মনে হয় যেন এটি একটি কল্পনার জগৎ। লাল, কমলা, হলুদ, নীল, সবুজ—সব রঙের নিখুঁত ভারসাম্য যেন পাহাড়ের প্রতিটি বাঁকে এক নতুন কবিতা রচনা করে। যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই রং। এই পাহাড় আসমানি, কমলা, লাল, হলুদ, সবুজ—সব রঙে রাঙা। প্রকৃতি আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে সুবিশাল ক্যানভাসে তুলির টানে সৃষ্টি করেছে এই রংমহল।
ভূবিজ্ঞানীরা বলেন, টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে শুষ্ক পর্বতগাত্রে এমন রংধনুর সাত রং ফুটে উঠেছে। টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছিল শিলাস্তর। শিলাস্তরে ছিল প্রচুর খনিজ পদার্থ, রঙিন সিলিকাসহ নানা উপাদান। বহু বছর ধরে ঋতু পরিবর্তন, ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাত, নানা রকম রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রূপ পরিবর্তন করতে করতে তৈরি হয়েছে বর্তমানের রেইনবো মাউন্টেন। কিন্তু এই নিখুঁত শৈল্পিক বিন্যাস কি কেবল প্রকৃতির সপ্তম আশ্চর্যের খেলা?
আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে প্রকৃতি
পবিত্র কোরআন বারবার আমাদের চোখ ফেরাতে বলেন প্রকৃতির দিকে, কারণ প্রকৃতির সৌন্দর্য ‘আয়াত’ অর্থাৎ আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে বলা হয়েছে: ‘তুমি কি দেখ না যে আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দ্বারা বিভিন্ন রঙের ফলমূল উৎপন্ন করেন? আর পাহাড়গুলোতেও রয়েছে সাদা, লাল এবং নানান রঙের রেখাযুক্ত অংশ এবং নিকষ কালো।’ (সুরা ফাতির: ২৭)
প্রখ্যাত মুফাসসির শায়খ আবদুর রহমান আস-সাদি (রহ.) বলেন, আল্লাহ তাআলা যেভাবে পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখার জন্য পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন, সেভাবেই তিনি সেই পর্বতগুলোকেও রূপ দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় রঙের, সৌন্দর্য ও মাধুর্যের এক বিস্ময়কর আবরণে।
আয়াতে ব্যবহৃত ‘জুদাদ’ শব্দটির অর্থ—পর্বতের বুকে আঁকা রেখা বা শিরা। তিনি বলেন, একটি পর্বতের মধ্যেই দেখা যায় সাদা শিরা, লালচে বা পিঙ্গল রেখা, এবং গভীর কালো রেখা—যাকে বলা হয়েছে ‘গারাবিবু সুদ’, যার অর্থ অত্যন্ত গাঢ় কালো, যেন কাকের পালকের মতো নিখাদ কালো। (তাফসিরে সাদি: ১ / ৬৮৮)
এই আয়াতটি চীনের রংধনু পাহাড়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। এখানে বলা হয়েছে—‘নানা রঙের রেখাযুক্ত পাহাড়’ যা সুনির্দিষ্টভাবে ডেনজিয়ার বর্ণনা মনে করায়। প্রকৃতির এই রঙিন বিন্যাস কেবল চাক্ষুস আনন্দের বিষয় নয়—এটি আল্লাহর কুদরতের প্রতীক।
রংধনু পাহাড় ও ‘তাফসিরুল আয়াত’
কোরআনে একটি শব্দ বারবার ব্যবহৃত হয়েছে: তাফসিরুল আয়াত, অর্থাৎ নিদর্শনের বহুমাত্রিক ব্যাখ্যা ও পুনরাবৃত্তি। এটি প্রকৃতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যখন আমরা রংধনু পাহাড়ের মত সৌন্দর্য দেখি, তখন তা আমাদের চিন্তা-ভাবনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি পৃথিবীতে নানা রঙের বস্তু সৃষ্টি করেছেন। এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল জাতির জন্য।’ (সুরা আন-নাহল: ১৩)
চীনের রংধনু পাহাড় যেন এই আয়াতের জীবন্ত ব্যাখ্যা। এখানে রঙের যে বৈচিত্র্য দেখা যায়, তা মানুষের দৃষ্টি ও হৃদয় উভয়কে আকৃষ্ট করে, এবং বিশ্বাসী হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে স্রষ্টার প্রশংসা।
চিত্রশৈলী ও কোরআনের অলংকার
কোরআনের ভাষা অলংকারপূর্ণ, চিত্রাত্মক এবং ভাবনাবোধক। যখন আমরা পাহাড়ের রঙিন রূপ দেখি, তখন মনে পড়ে কোরআনের সেই উপমা যেখানে মেঘ, পাহাড়, আলো-আঁধারির সমন্বয়ে সৃষ্টিশীলতা ফুটে ওঠে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর সৃষ্টিকে দেখ, কীভাবে তিনি বিভিন্ন রঙের সৃষ্টি করেছেন!’ (সুরা আন-নাহল: ১৬)
জানজাই ডেনজিয়া যেন এই আয়াতের চিত্ররূপ। যেমনভাবে কোরআন একটি চিত্রকল্প সৃষ্টি করে, তেমনি এই পাহাড় তার রং ও রেখায় আমাদের সামনে একটি জীবন্ত আলোকচিত্র তুলে ধরে।
রঙিন পাহাড় ইমানের প্রতিচ্ছবি
চীনের রংধনু পাহাড় প্রকৃতির এক বিস্ময়, কিন্তু একজন মোমিনের জন্য এটি তার ইমানের শক্তি পুনর্জাগরণের উপলক্ষ। এটি প্রমাণ করে যে, পৃথিবীতে এমন কোনো কিছুর সৃষ্টি হয়নি যা উদ্দেশ্যহীন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে তা ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।’ (সুরা আদ-দুখান: ৩৮)
এখানে এই পাহাড় যেন চিৎকার করে বলে, ‘আমার পেছনে এক মহান পরিকল্পক রয়েছেন।’ এবং সেই পরিকল্পকের প্রতি আমাদের ইমান আরও গভীর হয় যখন আমরা কোরআনের আয়াত এবং পাহাড়ের রং মিলিয়ে দেখি।
আল্লাহর নিপুণ শিল্পকর্মের বহিঃপ্রকাশ
রেইনবো মাউন্টেন— এক চিত্রকরের তুলির ছোঁয়া নয় বরং আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় গঠিত প্রাকৃতিক শিল্পকর্ম। যুগে যুগে এই বৈচিত্র্য নজরে এসেছে ভূবিজ্ঞানীদের, পর্যটকদের, এমনকি সাধারণ পথিকেরও। কিন্তু আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এই বৈশিষ্ট্যের ইঙ্গিত দিয়েছেন হাজার বছর পূর্বেই, যখন মানুষের জ্ঞান এই প্রাকৃতিক রহস্যের কেবল প্রান্ত স্পর্শ করত।
উপরিউক্ত আয়াত আমাদের দৃষ্টি দেয় প্রকৃতির গভীরে এবং নির্দেশ করে এক মহান শিল্পীর দিকে, যিনি তাঁর সৃষ্টিকে শুধু প্রয়োজনের জন্যই গড়েননি, বরং দিয়েছেন সৌন্দর্য, শৈল্পিকতা ও ভাবগম্ভীরতা। প্রত্যেকটি পাহাড় যেন এক একটি মৌন কবিতা—সাদা রেখা তার পবিত্রতা, লাল তার আবেগ, আর গাঢ় কালো তার গভীরতা ও গাম্ভীর্য প্রকাশ করে। এই রঙিন পর্বতমালাগুলো শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়, বরং তারা আল্লাহর কুদরত ও জ্ঞানের সাক্ষ্য বহন করে। তারা নীরবে ঘোষণা করে, ‘তোমাদের স্রষ্টা কেবল ক্ষমতাবানই নন, তিনি অপার সৌন্দর্যেরও অধিকারী।’
লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক
বিশ্বজগতে বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা নিদর্শনের মাঝে এমন কিছু স্থান রয়েছে, যা কেবল চোখে দেখার জন্য নয়—বরং অন্তরে উপলব্ধির জন্য। তেমনই এক আশ্চর্য সৃষ্টি চীনের ‘জানজাই ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম জিওলজিক্যাল পার্ক’–এ অবস্থিত ‘রংধনু পাহাড়’ বা ‘রেইনবো মাউন্টেন’, যা নানা রঙের স্তরে স্তরে গঠিত এক অসামান্য সৌন্দর্য। এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
রেইনবো মাউন্টেনের ভূতাত্ত্বিক পরিচয়
চীনের গানসু প্রদেশে অবস্থিত এই পাহাড় অঞ্চলটি মূলত ‘ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম’ নামে পরিচিত। ভূবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ২৪ মিলিয়ন বছর ধরে গঠিত এই স্তরবিন্যাস মূলত লাল বালুকা পাথর এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের জারণ বিক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে। তবে রঙিন রেখার সুষম বিন্যাস ও বৈচিত্র্য দেখে মনে হয় যেন এটি একটি কল্পনার জগৎ। লাল, কমলা, হলুদ, নীল, সবুজ—সব রঙের নিখুঁত ভারসাম্য যেন পাহাড়ের প্রতিটি বাঁকে এক নতুন কবিতা রচনা করে। যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই রং। এই পাহাড় আসমানি, কমলা, লাল, হলুদ, সবুজ—সব রঙে রাঙা। প্রকৃতি আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে সুবিশাল ক্যানভাসে তুলির টানে সৃষ্টি করেছে এই রংমহল।
ভূবিজ্ঞানীরা বলেন, টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে শুষ্ক পর্বতগাত্রে এমন রংধনুর সাত রং ফুটে উঠেছে। টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছিল শিলাস্তর। শিলাস্তরে ছিল প্রচুর খনিজ পদার্থ, রঙিন সিলিকাসহ নানা উপাদান। বহু বছর ধরে ঋতু পরিবর্তন, ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাত, নানা রকম রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রূপ পরিবর্তন করতে করতে তৈরি হয়েছে বর্তমানের রেইনবো মাউন্টেন। কিন্তু এই নিখুঁত শৈল্পিক বিন্যাস কি কেবল প্রকৃতির সপ্তম আশ্চর্যের খেলা?
আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে প্রকৃতি
পবিত্র কোরআন বারবার আমাদের চোখ ফেরাতে বলেন প্রকৃতির দিকে, কারণ প্রকৃতির সৌন্দর্য ‘আয়াত’ অর্থাৎ আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে বলা হয়েছে: ‘তুমি কি দেখ না যে আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দ্বারা বিভিন্ন রঙের ফলমূল উৎপন্ন করেন? আর পাহাড়গুলোতেও রয়েছে সাদা, লাল এবং নানান রঙের রেখাযুক্ত অংশ এবং নিকষ কালো।’ (সুরা ফাতির: ২৭)
প্রখ্যাত মুফাসসির শায়খ আবদুর রহমান আস-সাদি (রহ.) বলেন, আল্লাহ তাআলা যেভাবে পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখার জন্য পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন, সেভাবেই তিনি সেই পর্বতগুলোকেও রূপ দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় রঙের, সৌন্দর্য ও মাধুর্যের এক বিস্ময়কর আবরণে।
আয়াতে ব্যবহৃত ‘জুদাদ’ শব্দটির অর্থ—পর্বতের বুকে আঁকা রেখা বা শিরা। তিনি বলেন, একটি পর্বতের মধ্যেই দেখা যায় সাদা শিরা, লালচে বা পিঙ্গল রেখা, এবং গভীর কালো রেখা—যাকে বলা হয়েছে ‘গারাবিবু সুদ’, যার অর্থ অত্যন্ত গাঢ় কালো, যেন কাকের পালকের মতো নিখাদ কালো। (তাফসিরে সাদি: ১ / ৬৮৮)
এই আয়াতটি চীনের রংধনু পাহাড়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। এখানে বলা হয়েছে—‘নানা রঙের রেখাযুক্ত পাহাড়’ যা সুনির্দিষ্টভাবে ডেনজিয়ার বর্ণনা মনে করায়। প্রকৃতির এই রঙিন বিন্যাস কেবল চাক্ষুস আনন্দের বিষয় নয়—এটি আল্লাহর কুদরতের প্রতীক।
রংধনু পাহাড় ও ‘তাফসিরুল আয়াত’
কোরআনে একটি শব্দ বারবার ব্যবহৃত হয়েছে: তাফসিরুল আয়াত, অর্থাৎ নিদর্শনের বহুমাত্রিক ব্যাখ্যা ও পুনরাবৃত্তি। এটি প্রকৃতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যখন আমরা রংধনু পাহাড়ের মত সৌন্দর্য দেখি, তখন তা আমাদের চিন্তা-ভাবনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি পৃথিবীতে নানা রঙের বস্তু সৃষ্টি করেছেন। এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল জাতির জন্য।’ (সুরা আন-নাহল: ১৩)
চীনের রংধনু পাহাড় যেন এই আয়াতের জীবন্ত ব্যাখ্যা। এখানে রঙের যে বৈচিত্র্য দেখা যায়, তা মানুষের দৃষ্টি ও হৃদয় উভয়কে আকৃষ্ট করে, এবং বিশ্বাসী হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে স্রষ্টার প্রশংসা।
চিত্রশৈলী ও কোরআনের অলংকার
কোরআনের ভাষা অলংকারপূর্ণ, চিত্রাত্মক এবং ভাবনাবোধক। যখন আমরা পাহাড়ের রঙিন রূপ দেখি, তখন মনে পড়ে কোরআনের সেই উপমা যেখানে মেঘ, পাহাড়, আলো-আঁধারির সমন্বয়ে সৃষ্টিশীলতা ফুটে ওঠে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর সৃষ্টিকে দেখ, কীভাবে তিনি বিভিন্ন রঙের সৃষ্টি করেছেন!’ (সুরা আন-নাহল: ১৬)
জানজাই ডেনজিয়া যেন এই আয়াতের চিত্ররূপ। যেমনভাবে কোরআন একটি চিত্রকল্প সৃষ্টি করে, তেমনি এই পাহাড় তার রং ও রেখায় আমাদের সামনে একটি জীবন্ত আলোকচিত্র তুলে ধরে।
রঙিন পাহাড় ইমানের প্রতিচ্ছবি
চীনের রংধনু পাহাড় প্রকৃতির এক বিস্ময়, কিন্তু একজন মোমিনের জন্য এটি তার ইমানের শক্তি পুনর্জাগরণের উপলক্ষ। এটি প্রমাণ করে যে, পৃথিবীতে এমন কোনো কিছুর সৃষ্টি হয়নি যা উদ্দেশ্যহীন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে তা ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।’ (সুরা আদ-দুখান: ৩৮)
এখানে এই পাহাড় যেন চিৎকার করে বলে, ‘আমার পেছনে এক মহান পরিকল্পক রয়েছেন।’ এবং সেই পরিকল্পকের প্রতি আমাদের ইমান আরও গভীর হয় যখন আমরা কোরআনের আয়াত এবং পাহাড়ের রং মিলিয়ে দেখি।
আল্লাহর নিপুণ শিল্পকর্মের বহিঃপ্রকাশ
রেইনবো মাউন্টেন— এক চিত্রকরের তুলির ছোঁয়া নয় বরং আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় গঠিত প্রাকৃতিক শিল্পকর্ম। যুগে যুগে এই বৈচিত্র্য নজরে এসেছে ভূবিজ্ঞানীদের, পর্যটকদের, এমনকি সাধারণ পথিকেরও। কিন্তু আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এই বৈশিষ্ট্যের ইঙ্গিত দিয়েছেন হাজার বছর পূর্বেই, যখন মানুষের জ্ঞান এই প্রাকৃতিক রহস্যের কেবল প্রান্ত স্পর্শ করত।
উপরিউক্ত আয়াত আমাদের দৃষ্টি দেয় প্রকৃতির গভীরে এবং নির্দেশ করে এক মহান শিল্পীর দিকে, যিনি তাঁর সৃষ্টিকে শুধু প্রয়োজনের জন্যই গড়েননি, বরং দিয়েছেন সৌন্দর্য, শৈল্পিকতা ও ভাবগম্ভীরতা। প্রত্যেকটি পাহাড় যেন এক একটি মৌন কবিতা—সাদা রেখা তার পবিত্রতা, লাল তার আবেগ, আর গাঢ় কালো তার গভীরতা ও গাম্ভীর্য প্রকাশ করে। এই রঙিন পর্বতমালাগুলো শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়, বরং তারা আল্লাহর কুদরত ও জ্ঞানের সাক্ষ্য বহন করে। তারা নীরবে ঘোষণা করে, ‘তোমাদের স্রষ্টা কেবল ক্ষমতাবানই নন, তিনি অপার সৌন্দর্যেরও অধিকারী।’
লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক
একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
৯ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগেএ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
১ দিন আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১ দিন আগেশাব্বির আহমদ
একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলাকে নবী (সা.) ইমানের শাখা বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে...। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (সহিহ বুখারি)।
এমনকি রাস্তা থেকে কাঁটা, ময়লা বা প্রতিবন্ধকতা সরানোকে ইসলামে সদকা বা দান হিসেবে গণ্য করা হয়েছে; যা পরকালে একজন মুমিনের ক্ষমা ও জান্নাত পাওয়ার অসিলা হতে পারে। এ ছাড়া সড়ক দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা এবং যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা ইসলামে সুস্পষ্ট জুলুম ও গুনাহের কাজ।
ইসলাম ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু যান চলাচল নিশ্চিত করাকে বিশেষ সওয়াব লাভের উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাই নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে ট্রাফিক পুলিশ, চালক ও সাধারণ নাগরিক—সবারই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
চালকদের একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে—বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা বা অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটানো গুরুতর অপরাধ। আর ইচ্ছাকৃত বা স্বেচ্ছায় হত্যাকাণ্ডের পরিণাম যেমন জাহান্নাম, তেমনি অসতর্কতাবশত কাউকে হত্যা করলে সে জন্যও কঠিন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে ইসলামে।
সাধারণ নাগরিকদের কর্তব্য হলো চলাচলের সময় রাস্তার প্রধান হকগুলো মেনে চলা। যেমন, দৃষ্টি সংযত রাখা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, নিজে সালাম দেওয়া, কেউ সালাম দিলে তার উত্তর দেওয়া, অন্ধ, বৃদ্ধ, শিশু বা বিপদে পড়া ব্যক্তিকে সাহায্য করা।
আর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের উচিত সড়ক নিরাপদ রাখতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা, অযথা কাউকে হয়রানি না করা, অসদুপায় গ্রহণের সুযোগ কাউকে না দেওয়া, নিজেও গ্রহণ না করা, আইনের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করা।
একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলাকে নবী (সা.) ইমানের শাখা বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে...। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (সহিহ বুখারি)।
এমনকি রাস্তা থেকে কাঁটা, ময়লা বা প্রতিবন্ধকতা সরানোকে ইসলামে সদকা বা দান হিসেবে গণ্য করা হয়েছে; যা পরকালে একজন মুমিনের ক্ষমা ও জান্নাত পাওয়ার অসিলা হতে পারে। এ ছাড়া সড়ক দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা এবং যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা ইসলামে সুস্পষ্ট জুলুম ও গুনাহের কাজ।
ইসলাম ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু যান চলাচল নিশ্চিত করাকে বিশেষ সওয়াব লাভের উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাই নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে ট্রাফিক পুলিশ, চালক ও সাধারণ নাগরিক—সবারই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
চালকদের একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে—বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা বা অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটানো গুরুতর অপরাধ। আর ইচ্ছাকৃত বা স্বেচ্ছায় হত্যাকাণ্ডের পরিণাম যেমন জাহান্নাম, তেমনি অসতর্কতাবশত কাউকে হত্যা করলে সে জন্যও কঠিন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে ইসলামে।
সাধারণ নাগরিকদের কর্তব্য হলো চলাচলের সময় রাস্তার প্রধান হকগুলো মেনে চলা। যেমন, দৃষ্টি সংযত রাখা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, নিজে সালাম দেওয়া, কেউ সালাম দিলে তার উত্তর দেওয়া, অন্ধ, বৃদ্ধ, শিশু বা বিপদে পড়া ব্যক্তিকে সাহায্য করা।
আর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের উচিত সড়ক নিরাপদ রাখতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা, অযথা কাউকে হয়রানি না করা, অসদুপায় গ্রহণের সুযোগ কাউকে না দেওয়া, নিজেও গ্রহণ না করা, আইনের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করা।
এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
২৩ এপ্রিল ২০২৫নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগেএ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
১ দিন আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৬ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৮ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৫ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৭ মিনিট | ০৬: ৪১ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪২ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৬ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৮ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৫ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৭ মিনিট | ০৬: ৪১ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪২ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
২৩ এপ্রিল ২০২৫একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
৯ ঘণ্টা আগেএ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
১ দিন আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
বিয়ে মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি কেবল দুটি মানুষের মিলন নয়, বরং দুটি পরিবার, দুটি আত্মা ও দুটি হৃদয়ের পবিত্র বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবনে গড়ে ওঠে পারস্পরিক ভালোবাসা, শান্তি ও মধুর সম্পর্ক।
তাই ইসলাম এই সম্পর্ককে শুধু সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখেনি, বরং একে করেছে ইবাদতের অংশ। এ কারণেই নবীজি (সা.) পুরুষদের স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘নারীকে চারটি কারণে বিয়ে করা হয়। ১. তার সম্পদ, ২. তার বংশমর্যাদা, ৩. তার সৌন্দর্য, ৪. তার দ্বীনদার। অতএব তুমি দ্বীনদারকেই প্রাধান্য দাও। না হলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)
এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
কারণ, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, সম্পদ পরিবর্তনশীল, বংশমর্যাদা বাহ্যিক মর্যাদা মাত্র; কিন্তু দ্বীনদার হলো এমন এক গুণ, যা জীবনকে আখিরাতের সফলতার পথে নিয়ে যায় এবং দাম্পত্যসম্পর্ককে প্রকৃত অর্থে স্থায়ী সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা দেয়।
নবীজি (সা.)-এর এ নির্দেশনার মূল কথা হলো, যখনই দ্বীনদার কোনো নারী পাওয়া যাবে, তখন তাকেই সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো গুণসম্পন্নাকে প্রাধান্য দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।
কারণ দ্বীনদার ছাড়া অন্য সব গুণ একসময় ম্লান হয়ে যায়, কিন্তু দ্বীনদারের আলো দাম্পত্যজীবনকে চিরভালোবাসা, আস্থা ও সন্তুষ্টিতে ভরিয়ে রাখে।
অতএব, একজন মুসলিম যুবকের জন্য স্ত্রী নির্বাচনকালে সর্বোত্তম নির্দেশনা হলো, এমন নারীকে বেছে নেওয়া, যিনি দ্বীনদার, আল্লাহভীরু ও ইসলামি আদর্শে জীবন পরিচালনা করতে অভ্যস্ত। এর মাধ্যমে সংসার হবে শান্তিময়, জীবন হবে কল্যাণময় এবং আখিরাত হবে সফল।
লেখক: ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদ্রাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও ঢাকা
বিয়ে মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি কেবল দুটি মানুষের মিলন নয়, বরং দুটি পরিবার, দুটি আত্মা ও দুটি হৃদয়ের পবিত্র বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবনে গড়ে ওঠে পারস্পরিক ভালোবাসা, শান্তি ও মধুর সম্পর্ক।
তাই ইসলাম এই সম্পর্ককে শুধু সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখেনি, বরং একে করেছে ইবাদতের অংশ। এ কারণেই নবীজি (সা.) পুরুষদের স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘নারীকে চারটি কারণে বিয়ে করা হয়। ১. তার সম্পদ, ২. তার বংশমর্যাদা, ৩. তার সৌন্দর্য, ৪. তার দ্বীনদার। অতএব তুমি দ্বীনদারকেই প্রাধান্য দাও। না হলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)
এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
কারণ, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, সম্পদ পরিবর্তনশীল, বংশমর্যাদা বাহ্যিক মর্যাদা মাত্র; কিন্তু দ্বীনদার হলো এমন এক গুণ, যা জীবনকে আখিরাতের সফলতার পথে নিয়ে যায় এবং দাম্পত্যসম্পর্ককে প্রকৃত অর্থে স্থায়ী সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা দেয়।
নবীজি (সা.)-এর এ নির্দেশনার মূল কথা হলো, যখনই দ্বীনদার কোনো নারী পাওয়া যাবে, তখন তাকেই সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো গুণসম্পন্নাকে প্রাধান্য দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।
কারণ দ্বীনদার ছাড়া অন্য সব গুণ একসময় ম্লান হয়ে যায়, কিন্তু দ্বীনদারের আলো দাম্পত্যজীবনকে চিরভালোবাসা, আস্থা ও সন্তুষ্টিতে ভরিয়ে রাখে।
অতএব, একজন মুসলিম যুবকের জন্য স্ত্রী নির্বাচনকালে সর্বোত্তম নির্দেশনা হলো, এমন নারীকে বেছে নেওয়া, যিনি দ্বীনদার, আল্লাহভীরু ও ইসলামি আদর্শে জীবন পরিচালনা করতে অভ্যস্ত। এর মাধ্যমে সংসার হবে শান্তিময়, জীবন হবে কল্যাণময় এবং আখিরাত হবে সফল।
লেখক: ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদ্রাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও ঢাকা
এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
২৩ এপ্রিল ২০২৫একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
৯ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১ দিন আগেশাব্বির আহমদ
চরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ। কেউ যখন লজ্জাবোধ হারায়, তার তখন নৈতিক পতনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কেননা কোনো পাপকাজে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লজ্জাহীন ব্যক্তির আর কোনো দ্বিধা থাকে না।
নবী করিম (সা.) স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ‘লজ্জা ইমানের একটি বিশেষ শাখা।’ (সহিহ্ বুখারি)। আর এ লজ্জাবোধ মানুষকে ইমান ও স্বচ্ছতার পথে চলতে সহযোগিতা করে। বলা যায়, লজ্জা হলো একটি অভ্যন্তরীণ জবাবদিহির কাঠগড়া, যা মানুষকে পাপ ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। যার মধ্যে লাজুকতা যতটুকু থাকে, সে পাপ ও অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে ততটাই সংকোচবোধ করে।
লজ্জাহীনতা কেন নৈতিক পতনের প্রথম ধাপ? কারণ, যখন লজ্জা চলে যায়, তখন আর কোনো কিছুই নৈতিক মানদণ্ড হিসেবে অবশিষ্ট থাকে না। নবীজি (সা.) চরম লজ্জাহীনতার পরিণতি বোঝাতে গিয়ে বলেন, ‘যখন তুমি নির্লজ্জ হয়ে পড়বে, তখন যা ইচ্ছা তা-ই করো।’ (সহিহ্ বুখারি)। তাঁর এ কথাটি মূলত একটি হুঁশিয়ারি। লজ্জাহীনতা মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজের দিকে ঠেলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত তাকে ইসলামের পথ থেকে বিচ্যুত করে। পক্ষান্তরে লজ্জাশীলতা মানুষকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়। হাদিসের ভাষায়, ‘লজ্জা ইমানের অঙ্গ, আর ইমানদারের স্থান জান্নাত। লজ্জাহীনতা দুশ্চরিত্রের অঙ্গ, আর দুশ্চরিত্রের স্থান জাহান্নাম।’ (জামে তিরমিজি)
চরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ। কেউ যখন লজ্জাবোধ হারায়, তার তখন নৈতিক পতনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কেননা কোনো পাপকাজে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লজ্জাহীন ব্যক্তির আর কোনো দ্বিধা থাকে না।
নবী করিম (সা.) স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ‘লজ্জা ইমানের একটি বিশেষ শাখা।’ (সহিহ্ বুখারি)। আর এ লজ্জাবোধ মানুষকে ইমান ও স্বচ্ছতার পথে চলতে সহযোগিতা করে। বলা যায়, লজ্জা হলো একটি অভ্যন্তরীণ জবাবদিহির কাঠগড়া, যা মানুষকে পাপ ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। যার মধ্যে লাজুকতা যতটুকু থাকে, সে পাপ ও অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে ততটাই সংকোচবোধ করে।
লজ্জাহীনতা কেন নৈতিক পতনের প্রথম ধাপ? কারণ, যখন লজ্জা চলে যায়, তখন আর কোনো কিছুই নৈতিক মানদণ্ড হিসেবে অবশিষ্ট থাকে না। নবীজি (সা.) চরম লজ্জাহীনতার পরিণতি বোঝাতে গিয়ে বলেন, ‘যখন তুমি নির্লজ্জ হয়ে পড়বে, তখন যা ইচ্ছা তা-ই করো।’ (সহিহ্ বুখারি)। তাঁর এ কথাটি মূলত একটি হুঁশিয়ারি। লজ্জাহীনতা মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজের দিকে ঠেলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত তাকে ইসলামের পথ থেকে বিচ্যুত করে। পক্ষান্তরে লজ্জাশীলতা মানুষকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়। হাদিসের ভাষায়, ‘লজ্জা ইমানের অঙ্গ, আর ইমানদারের স্থান জান্নাত। লজ্জাহীনতা দুশ্চরিত্রের অঙ্গ, আর দুশ্চরিত্রের স্থান জাহান্নাম।’ (জামে তিরমিজি)
এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
২৩ এপ্রিল ২০২৫একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
৯ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগেএ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
১ দিন আগে