Ajker Patrika

মামদানিকে হারাতে দিল্লি ও নিউইয়র্কে সোচ্চার কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে নিউইয়র্ক সিটির নির্বাচনী মাঠে জোহরান মামদানির বিরুদ্ধে এক সুগঠিত ও ব্যাপক আক্রমণ চালাচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি ও তার সমর্থক গোষ্ঠীগুলো মামদানির সমালোচনা করে তাকে ‘হিন্দুবিদ্বেষী’ ও ‘দেশবিরোধী’ হিসেবে তুলে ধরছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয়-আমেরিকান হিন্দু সম্প্রদায়, যারা প্রায় সরাসরি মোদির রাজনৈতিক শিবিরের সঙ্গে যুক্ত এবং মামদানির বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে লড়াই করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদের প্রাথমিক নির্বাচনের দুই দিন আগে একটি বিমান উড়ে যায় স্ট্যাচু অব লিবার্টির ওপর দিয়ে। সেই বিমানের সামনে একটি ব্যানার ঝোলোনো হয় নির্বাচনের প্রধান প্রার্থী জোহরান মামদানিকে লক্ষ্য করে। ব্যানারে লেখা ছিল ‘সেভ নিউইয়র্ক ফ্রম গ্লোবাল ইন্তিফাদা অ্যান্ড রিজেক্ট মামদানি (ইন্তিফাদার বিশ্বায়ন থেকে নিউইয়র্ককে বাঁচাও’ এবং মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করো।)

উল্লেখ্য, ইন্তিফাদা শব্দটি সাধারণত ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদ বা উত্থান বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। ‘ইন্তিফাদার বিশ্বায়ন’ মানে এই প্রতিবাদ বা সংগ্রামের মডেল বা ভাবনাকে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া, যাতে তা বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিচিতি পায় বা অন্য জায়গায় প্রতিবাদ-আন্দোলনের উৎস হয়ে দাঁড়ায়।

ব্যানারটি মূলত শহরের ইহুদি ভোটারদের উদ্দেশ্য করে তৈরি হলেও এর পেছনে রয়েছে ভারতীয়-আমেরিকান হিন্দু গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠী মামদানিকে ‘হিন্দু ও ভারতবিরোধী’ বলে অভিযুক্ত করেছে।

মামদানি একজন মুসলিম এবং বহুদিন ধরেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে সরব। এদিকে মোদি একজন জনপ্রিয় নেতা, যিনি ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদের সঙ্গে সংযুক্ত এবং মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে তাদের ওপর অবিচারের অভিযোগ রয়েছে।

গত মে মাসে মোদিকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলে অভিহিত করেছেন মামদানি। তিনি মোদির নিউইয়র্ক সফরে বাধা দেওয়ারও চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে একটি রাজ্য অ্যাসেম্বলি সদস্যকে ভারতীয়-আমেরিকানদের দেওয়া নির্বাচনী তহবিল ফিরিয়ে দিতে বলেছিলেন। তিনি সেই ভারতীয়–আমেরিকানদের ‘হিন্দু ফ্যাসিবাদী’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

২০২০ সালে স্টেট অ্যাসেম্বলি নির্বাচনের প্রচারের সময় মামদানি টাইমস স্কয়ারে একটি বিক্ষোভে যোগ দেন। সেখানে হিন্দু মন্দির নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী একটি গোষ্ঠী ‘Who are Hindus? Bastards!’ (হিন্দু কারা? জারজ!’ ) স্লোগান দিয়েছিল।

মামদানি ওই বক্তব্যগুলো নিয়ে কখনো প্রকাশ্যে নিন্দা করেননি এবং এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তার নির্বাচনী প্রচার দল কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করে।

নিউ ইয়র্কের প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় মেয়র হওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে মোদি সমর্থকদের আক্রমণের মুখে পড়ছেন মামদানি।

এই প্রচেষ্টা দেখিয়ে দেয় কীভাবে দিল্লির রাজনীতি নিউইয়র্কের নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতে মোদিপক্ষের সংবাদমাধ্যমগুলো লাখ লাখ টিভি ও স্মার্টফোনে মামদানির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। সরাসরি মোদি ও তাঁর শাসক বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ভারতীয়-আমেরিকান কিছু গোষ্ঠী একটু সূক্ষ্ম পদ্ধতিতে কাজ করছে। তারা মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে।

রকিব নায়েক, ‘সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট’-এর পরিচালক বলেছেন, ভারতভিত্তিক হিন্দু জাতীয়তাবাদী ও আমেরিকান হিন্দু গোষ্ঠী একসঙ্গে মামদানিকে ‘হিন্দুবিরোধী’ প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করছে।’

তবু অনেক দক্ষিণ এশীয় বিশেষ করে তরুণ, মুসলিম ও উদারপন্থীদের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছেন মামদানি। তিনি দক্ষিণ এশীয় বসতি এলাকায় বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন এবং বেশ কিছু অ্যানালাইসিস অনুযায়ী বেশির ভাগ এশীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় প্রথম পছন্দ ভোটের ৫২ শতাংশ পেয়েছেন।

নিউইয়র্কে প্রায় ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪ দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ বসবাস করেন, যাঁরা ভোটারের বড় অংশ। তবে সবার দৃষ্টিভঙ্গি একই রকম নয়। তাই হিন্দুদের বিরোধিতা মামদানির ভোটে কতটা প্রভাব ফেলবে তা স্পষ্ট নয়। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে পিউ রিসার্চ সেন্টার অনুমান করেছে, নিউইয়র্কের জনসংখ্যার ২ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৮০ হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

নিউইয়র্ক যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর। ফলে এই শহরের মেয়রের একটি বৈশ্বিক প্রভাব থাকে। এখন মামদানি সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাটদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন যে তিনি একজন যোগ্য প্রার্থী। তবে একই সঙ্গে তাকে দূরদেশের এক শক্তিশালী দলের রোষানলে পড়তে হচ্ছে।

মামদানিবিরোধী বার্তাটি এসেছে একেবারে ওপরের স্তর থেকে। ভারতের বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সঞ্জু বর্মা সম্প্রতি মামদানিকে ‘হিন্দুবিদ্বেষী কট্টরপন্থী’ এবং ‘উন্মাদ মিথ্যাবাদী’ বলে অভিহিত করেছেন।

এ ধরনের বক্তব্য বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মোদি সমর্থক গণমাধ্যম এবং প্রভাবশালীদের একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে।

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেইটের মতে, গত ১৩ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ভারতে পরিচিত ডানপন্থী অ্যাকাউন্ট এবং হিন্দু জাতীয়তাবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক্স প্রোফাইলগুলো থেকে মামদানিকে নিয়ে ছয় শতাধিক সমালোচনামূলক পোস্ট প্রকাশিত হয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টের অনুসারী কয়েক লাখ।

সান্তা ক্লারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোহিত চোপড়া বলেন, ‘মামদানির মুসলিম পরিচয় এবং মোদির প্রতি তীব্র সমালোচনাই যথেষ্ট ছিল তাকে ভারতীয়-আমেরিকানদের মধ্যে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এবং একই সঙ্গে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিষয়টি রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

তাঁর পারিবারিক পরিচয়ও হিন্দুত্ববাদীদের হাতে বাড়তি অস্ত্র তুলে দিয়েছে। ৩৩ বছর বয়সী মামদানি জন্মগ্রহণ করেন উগান্ডার কামপালায়। তবে তাঁর বাবা ভারতের গুজরাট রাজ্যের—নরেন্দ্র মোদির নিজ রাজ্য, যেখানে ২০০২ সালে দাঙ্গায় শত শত মানুষ নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে অনেকেই মুসলিম ছিলেন। তার মা চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার, ভারতের প্রগতিশীল বাম রাজনীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ মুখ।

যুক্তরাষ্ট্রে মামদানির প্রতি কিছু হিন্দুর অবিশ্বাস এখন শুধু ভাবনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই—এটা রাজনৈতিক কার্যকলাপে রূপ নিয়েছে। মোদি ও তার দলের সঙ্গে প্রবাসী ভারতীয় গোষ্ঠীগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে এই প্রচেষ্টা আরও সক্রিয় ও শক্তিশালী হয়েছে।

কুইন্সে অবস্থিত ‘গুজরাটি সমাজ অব নিউইয়র্ক’ একটি ভারতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন, যার প্রায় ৪ হাজার সদস্য আছে। এই সংগঠন মোদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রাখে এবং মামদানির প্রতিপক্ষদের সক্রিয়ভাবে সমর্থন করছে।

সংগঠনের সভাপতি হর্ষদ প্যাটেল বলেন, এই সংগঠনের সদস্যরা ফেব্রুয়ারিতে ভারতে মোদির সঙ্গে দেখা করেছেন এবং এখনো তাঁর সঙ্গে ‘সরাসরি যোগাযোগে’ রয়েছেন। গত জুলাইয়ে গোষ্ঠীটি বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের জন্য একটি তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অ্যাডামস একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মামদানির বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০২৩ সালে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে অ্যাডামস মোদির সঙ্গে এক মঞ্চে অংশ নেন।

ইন্ডিয়ান-অ্যামেরিকানস ফল কুওমো প্যাক নামের একটি রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রতিষ্ঠাতা সত্য দোসাপতি। এই গোষ্ঠীই স্ট্যাচু অব লিবার্টির ওপর দিয়ে ওড়ানো ব্যানারের জন্য অর্থ প্রদান করেছিল। এর আগে ২০১৩ সালে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া মোদিকে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ না জানানোয় প্রতিবাদ করেছিল এই গোষ্ঠী।

বর্তমানে সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন মামদানি এবং তিনি আরও বেশি মানুষের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি মামদানি বলেন, ‘গ্লোবালাইজ দ্য ইন্তিফাদা’—এই বিতর্কিত স্লোগান ব্যবহারে তিনি নিরুৎসাহিত করবেন। উল্লেখ্য, স্ট্যাচু অব লিবার্টির ওপর দিয়ে ওড়ানো ব্যানারে এই বাক্যই লেখা ছিল। এটি অনেকের কাছে সহিংসতার আহ্বান হিসেবে মনে হয়েছে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, নভেম্বরের নির্বাচনের দিকে এগোতে এগোতে মামদানি কি মোদির প্রতি তাঁর সমালোচনা কিছুটা কমিয়ে আনবেন?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলার মামদানির ভিডিও ক্লিপটি হিন্দু ভোটারদের মধ্যে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে তিনি ভারতীয় রাজনীতি নিয়ে তুলনামূলক অনেক কম কথা বলছেন।

তথ্যসূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীন বিরল খনিজ রপ্তানি বন্ধের পর টনক নড়ল ট্রাম্পের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অর্থনীতি বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তারা কুয়ালালামপুরে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। এই বৈঠকের অন্যতম লক্ষ্য হলো দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমিত করা। পাশাপাশি আগামী সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বৈঠককে সফল করা।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হে লিফেংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এই আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো—চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের নতুন ১০০% শুল্ক আরোপ এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার হুমকির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা। বিরল খনিজ পদার্থ ও ম্যাগনেট রপ্তানির ওপর চীনের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ঠেকাতে ট্রাম্প নতুন এই হুমকি দেন।

এ বৈঠক আগামীকাল শনিবার শুরু হবে মালয়েশিয়ার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সম্মেলনের সাইডলাইনে। এটি বেসেন্ট, গ্রিয়ার ও হে লিফেংয়ের মধ্যে গত মে মাসের পর পঞ্চম বৈঠক। আগের বৈঠকগুলো বিভিন্ন ইউরোপীয় শহরগুলোতে হয়েছে। এবার যুক্তরাষ্ট্র ও চীনা উভয় অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল এশীয় রপ্তানিকারক মালয়েশিয়ায় স্থানান্তরিত হলো।

বিরল খনিজ যুদ্ধ

এ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু আবারও চীনের হাতে থাকা বিরল খনিজ পদার্থ ও ম্যাগনেটের বৈশ্বিক সরবরাহের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ। উচ্চপ্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য এসব উপাদান বেইজিং দীর্ঘদিন ধরে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে কৌশলগত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

এপ্রিল মাসে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেন, যা দ্রুত উভয় পক্ষেই শুল্ক তিন অঙ্কের হারে বৃদ্ধি পায়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চীন যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ পদার্থ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকট্রিক যানবাহন, সেমিকন্ডাক্টর এবং অস্ত্র উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে।

মে মাসে জেনেভায় প্রথম বৈঠকে দুই পক্ষ এই শুল্কযুদ্ধে ৯০ দিনের বিরতি দিতে সম্মত হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৫ শতাংশ এবং চীনে ১০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে আনে এবং ম্যাগনেট রপ্তানি আংশিকভাবে পুনরায় শুরু হয়। পরবর্তী বৈঠকগুলো লন্ডন, স্টকহোম ও সেপ্টেম্বরে মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে টিকটকের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে হস্তান্তর করার বিষয়ে একমত হয় চীন।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ কালো তালিকার নিয়ম কঠোর করলে ওই অস্থায়ী সমঝোতা ভেঙে যায়। ফলে হাজার হাজার চীনা প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এর জবাবে ১০ অক্টোবর চীন নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে বৈশ্বিক বিরল খনিজ পদার্থ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।

বেসেন্ট ও গ্রিয়ার চীনের এই পদক্ষেপকে ‘বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনের ওপর দখল নেওয়ার চেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেন। তাঁরা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও তাঁর মিত্ররা এই নিষেধাজ্ঞা মেনে নেবে না।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন এখন সফটওয়্যারনির্ভর বহু পণ্য (ল্যাপটপ থেকে শুরু করে জেট ইঞ্জিন পর্যন্ত) চীনে রপ্তানি সীমিত করার ব্যাপারে চিন্তা করছে।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, কুয়ালালামপুরে তাদের আসল চ্যালেঞ্জ হবে আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া, যাতে ম্যাগনেটের সরবরাহ বজায় থাকে এবং যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আর না বাড়ায়। তা না হলে আগামী বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় অ্যাপেক সম্মেলনে ট্রাম্প-সি বৈঠক বাতিল হয়ে যেতে পারে।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনিশিয়েটিভ ফর ইউএস-চায়না ডায়ালগ’-এর সিনিয়র ফেলো ডেনিস ওয়াইল্ডার এক ওয়েবিনারে বলেন, ‘আমি আশাবাদী, এই বৈঠকে অন্তত কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যাতে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা যায়। ট্রাম্প নতুন ১০০% শুল্ক আরোপে যাবেন না, আর চীনও বিরল খনিজ পদার্থ রপ্তানিতে কিছুটা নমনীয়তা দেখাবে।’

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার টেবিলে চীনের কাছে আমেরিকান সয়াবিন পুনরায় কেনা শুরু করার দাবি জানাতে পারে। কারণ, চীন সেপ্টেম্বরে একদমই সয়াবিন কেনেনি, যা ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিকর।

তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের মূল অভিযোগগুলো (চীনের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতি, অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতা এবং দেশীয় ভোগ বৃদ্ধির অভাব) আলোচনার কেন্দ্রে আসবে না।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অর্থনীতি বিভাগের পরিচালক ফিলিপ লাক বলেন, ‘আমরা মূল সমস্যায় যেতে পারছি না। কারণ, আমাদের তো তাদের বলতে হচ্ছে, “সয়াবিন কেন, ঠিক না?”’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চ্যাটজিপিটির পরামর্শে জীবনের মোড় ঘুরে গেল জুলির

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দক্ষিণ ফ্রান্সের ছোট্ট শহর উজেসে জুলি নেইস। ছবি: সিএনএন
দক্ষিণ ফ্রান্সের ছোট্ট শহর উজেসে জুলি নেইস। ছবি: সিএনএন

দক্ষিণ ফ্রান্সের ওসিতানি অঞ্চলের ঐতিহাসিক শহর উজেসের ছোট্ট চত্বর স্কয়ার ‘প্ল্যাস ওজ হার্বে’-তে প্রতিদিন সকালে কফি হাতে বসে থাকেন জুলি নেইস। ফোয়ারার পাশে বসে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা আর পুরোনো পাথরের রাস্তায় হাঁটা এখন তাঁর জীবনের সহজ ও প্রিয় অভ্যাস। তিনি বলেন, ‘এখনো বিশ্বাস করতে পারি না, আমি সত্যিই এখানে থাকি!’

জুলির জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে। টেক্সাসে বেড়ে ওঠা জুলি ছয় মাস আগেও কখনো ফরাসি ওই ছোট্ট শহরে পা রাখেননি। অথচ আজ উজেসই তাঁর স্থায়ী ঠিকানা। আর এই সিদ্ধান্তটা তিনি নিয়েছেন একেবারে অন্যভাবে। আসলে তিনি সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞেস করে!

জুলি বলেন, ‘শুনতে পাগলামির মতো লাগলেও, আমি চেয়েছিলাম জীবনের এই বিভ্রান্তি থেকে কিছুটা মুক্তি। ভাবলাম, এটা যদি একটুখানি অ্যাডভেঞ্চার হয়, মন্দ কী!’

ক্লান্তি থেকে নতুন শুরু

মার্কিন নারী হলেও ফ্রান্সের সঙ্গে জুলির সম্পর্ক অনেক পুরোনো। কৈশোরে স্কুলে ফরাসি ভাষা শেখা থেকেই তাঁর প্রেম শুরু। ২০০৪ সালে তিনি প্যারিসে গিয়ে পাঁচ বছর ছিলেন। পরে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান এবং প্রযুক্তি খাতে খুব ভালো ক্যারিয়ার গড়েন। ভালো বেতন, ভ্রমণ—সবই ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি ভয়াবহ বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও ক্লান্তিতে ভুগতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘নিজেকে একেবারে ফাঁকা খোলস মনে হতো।’

তাই আবারও ফ্রান্সে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জুলি। প্যারিসে ফিরে গেলেও শহরের কোলাহলে তিনি আবারও ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তিনি চাইছিলেন শান্ত, ছোট্ট কোনো জায়গা—যেখানে জীবন একটু ধীরে বয়ে যায়।

কিন্তু কোন শহর? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই তিনি তাঁর জীবনকথা, পছন্দ–অপছন্দ, মূল্যবোধ ও প্রত্যাশার কথা লিখে দেন চ্যাটজিপিটিকে। তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি চাই ভালো আবহাওয়া, বাজার, প্রবাসী সমাজ এবং শান্ত গতি।’

পরামর্শ হিসেবে চ্যাটজিপিটি তখন দুটি শহরের নাম প্রস্তাব করেছিল। এর একটি হলো সারলা-লা-কানেদা, আর অন্যটি উজেস। তবে চ্যাটজিপিটি এটাও জানায়, সারলা কিছুটা নির্জন, তাই উজেস-ই উপযুক্ত হবে।

এই পরামর্শ পেয়ে জুলি তখন চ্যাটজিপিটিকে বলেন, ‘ঠিক আছে, তাহলে চল যাই!’

উজেস শহরের ‘প্ল্যাস ওজ হার্বে’ স্কয়ার। ছবি: সিএনএন
উজেস শহরের ‘প্ল্যাস ওজ হার্বে’ স্কয়ার। ছবি: সিএনএন

নতুন জীবন, নতুন তাল

নতুন সিদ্ধান্তের পর যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে চাকরি ছেড়ে, গাড়ি বিক্রি করে, মাত্র দুটি স্যুটকেস নিয়ে গত মার্চে তিনি উড়ে যান ফ্রান্সের নিস শহরে। সেখান থেকে ট্রেনে আভিনিওঁ, তারপর গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছান উজেসে। শহরটিতে ঢুকেই তাঁর মন বলে ওঠে, ‘এই তো, ঠিক জায়গায়ই এসেছি!’

এক কামরার ছোট্ট এক অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেন জুলি—যার জানালা দিয়ে দেখা যায় মধ্যযুগীয় একটি টাওয়ার। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে তাঁর নতুন জীবন।

তবে একা থাকার ভয় ছিল তাঁর। জুলি বলেন, ‘বন্ধু ও কমিউনিটি আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

শুরুর দিনগুলোতে শহরটিতে তিনি পরিচিতি পান ‘সব সময় একা থাকা আমেরিকান মেয়ে’ হিসেবে। পরে নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘ফ্রেঞ্চ জুলি ট্রাভেলস’-এর মাধ্যমে স্থানীয় ও প্রবাসী মানুষদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। জুলির চ্যানেলে এখন দেখা যায়—ফরাসি ছোট্ট বাজার, রাস্তার কফিশপ ও তাঁর নতুন জীবনের নানা মুহূর্ত।

নতুন শহরে গড়ে উঠেছে জুলির নতুন বন্ধুমহল। ছবি: সিএনএন
নতুন শহরে গড়ে উঠেছে জুলির নতুন বন্ধুমহল। ছবি: সিএনএন

ভারসাম্যের জীবন

নিজ জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জুলি বলেন, ‘ফ্রান্সে মানুষ কাজের চেয়ে জীবনের আনন্দকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এখানে কেউ প্রথমেই জিজ্ঞেস করে না—তুমি কী কাজ করো।’

তাঁর মতে, এটাই এক ধরনের মুক্তি।

তবে ছোট শহরে কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। রোববার দোকান বন্ধ। সেদিন কিছু কেনার প্রয়োজন হলে যেতে হয় দূরের নিস শহর কিংবা আভিনিওঁতে। তবু তিনি বলেন, ‘এখানে আসার পর মনে হয়, আমি আবার নিজেকে খুঁজে পেয়েছি। চাকরি ছেড়ে আসা ভয়ানক সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু আমি আগের চেয়ে অনেক সুখী। চ্যাটজিপিটির পরামর্শে আমার জীবন বদলে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ১৪ শিশুর চোখ কেড়ে নিল দিওয়ালির নতুন খেলনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ০১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দিওয়ালিকে কেন্দ্র করে ভারতে ছেয়ে গেছে ‘কার্বাইড গান’ নামে নতুন একটি খেলনা। কিন্তু এই খেলনাই এখন ভয়াবহ ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে। বিপজ্জনক এই খেলনার বিস্ফোরণে দেশটির শুধু মধ্যপ্রদেশ রাজ্যেই অন্তত ১৪ শিশু স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে এবং তিন দিনে রাজ্যজুড়ে ১২০ জনেরও বেশি শিশুকে গুরুতর চোখের আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ‘কার্বাইড গান’ দেখতে সাধারণ খেলনার মতো হলেও, এটি আসলে এক ধরনের রাসায়নিক বিস্ফোরক যন্ত্র। প্লাস্টিক বা টিনের পাইপে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও পানি মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই যন্ত্র। মিশ্রণে উৎপন্ন হয় অ্যাসিটিলিন গ্যাস, যা আগুনের সংস্পর্শে এলে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরিত হয়। খেলনাটির দাম মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ রুপি হলেও, এর ক্ষতি ভয়াবহ।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের শুধু হামিদিয়া হাসপাতালেই ৭২ ঘণ্টায় ২৬ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই প্রদেশের বিদিশা জেলা। সেখানকার স্থানীয় বাজারে খেলনাটি দেদারসে বিক্রি হচ্ছিল। এ অবস্থায় গত ১৮ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে খেলনাটির বিক্রয় বন্ধে নির্দেশ দিলেও দেওয়ালির সময় তা আর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি।

চোখ হারানো শিশুদের চিকিৎসকেরা বলছেন, এটি কোনো আতশবাজি নয়, বরং একটি রাসায়নিক বোমা। ভোপাল মেমোরিয়াল হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড. হেমলতা যাদব জানিয়েছেন, এই খেলনাটিতে যে বিস্ফোরণ ঘটে তাতে চোখের কর্নিয়া, আইরিস ও রেটিনা সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে ড. আদিতি দুবে সতর্ক করে বলেছেন, অ্যাসিটিলিন গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে মস্তিষ্কে প্রদাহ, মাথা ঘোরা, এমনকি দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিভ্রংশ ঘটাতে পারে।

ভোপালের এখনো প্রায় ৬০ জন আহত শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ বিদিশা জেলায় অন্তত ছয়জন বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করেছে এবং রাজ্যজুড়ে অভিযান চলছে।

অন্যদিকে বিহারের রাজধানী পাটনায়ও অন্তত ৫০ শিশুর দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আইজিআইএমএস হাসপাতালের চোখের বিশেষজ্ঞ ড. বিভূতি প্রসন্ন সিনহা জানিয়েছেন, সঠিক পরিসংখ্যান জানা না গেলেও রাজ্যজুড়ে ১৫০–২০০ জন গুরুতর বা আংশিকভাবে আহত হয়েছেন বলে ধারণা।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোই এই ‘কার্বাইড গান’–এর জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবে বহু ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ নিজে হাতে বানিয়ে এই যন্ত্র বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে—যার শেষ পরিণতি এখন এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চ্যাংরাবান্ধা সীমান্তে পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার

কলকাতা প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত এলাকা থেকে পাঁচজন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানা-পুলিশ। এ ঘটনায় একই সঙ্গে এক ভারতীয় নারীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটক ব্যক্তিরা গতকাল বৃহস্পতিবার সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর চ্যাংরাবান্ধা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডোরাডাবরি সীমান্তসংলগ্ন একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন।

খবর পেয়ে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে এক ভারতীয় নারীকে আটক করা হয়েছে। আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম—মো. রবিউল ইসলাম, মো. আরিফুল, মো. সোহাগ হোসেন, মো. লাজু ও রুবেল ইসলাম।

মেখলিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহবাজ জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তাঁরা গরু পাচার, বিভিন্ন চোরাচালান ও সীমান্তের অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত থাকতে পারেন। আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে যে ভারতীয় নারী রয়েছেন, তিনি স্থানীয় বাসিন্দা এবং তাঁদের আশ্রয় দিয়ে আইন ভঙ্গ করেছেন। ওসি আরও জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সমস্ত প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত