পরাগ মাঝি

১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি। সংগঠন করতেন বলে থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই একটি সরোরিটি হাউসে। একই সংগঠনের আরও জনা ত্রিশেক ছাত্রী ছিলেন ওই বাড়িতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রেমের উন্মাদনা আর বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-আড্ডায় দেখতে দেখতে কেটে গেল দুই বছর। তার পরই একদিন জীবনের এক কঠিন পরিণতির মুখোমুখি হলেন তিনি।
১৯৭৮ সালের জানুয়ারি মাসের সেই দিনটি ছিল শনিবার। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্লান্ত ছিলেন ক্যাথি। দুই দিন পরই ছিল ক্যালকুলাস পরীক্ষা। তাই একটু পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু শরীর আর সায় দিল না। সেদিন তাই মাঝরাতের আগেই রুমমেট কারেন শ্যান্ডলারকে নিয়ে লাইট বন্ধ করে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
মাঝরাত পেরিয়ে গেলে ঘুমের ঘোরেই কানে বাজে রুমের দরজা খোলার আওয়াজ। চোখ মেলে আলো-আঁধারির মাঝে চশমা ছাড়াই ক্যাথি দেখতে পান একটি মানুষের শরীর। সামনে দাঁড়িয়ে যেন তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছে! এর পরই দেখা গেল একটি হাত উঁচিয়ে ধরেছে অবয়বটি। পরক্ষণেই ক্যাথির মুখের ওপর সজোরে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করল সে। ক্যাথির কাছে এই আঘাতকে একটি চড়ের মতো মনে হলো। যেন কোনো ব্যথাই পেলেন না তিনি। কিন্তু ওক গাছের একটি মোটা ডাল দিয়ে করা ওই আঘাতে ততক্ষণে চুরমার হয়ে গেছে ক্যাথির চোয়াল। গালের একপাশ ছিঁড়ে ঝুলে পড়েছে।
এর পরই ক্যাথির রুমমেট কারেনের বিছানার দিকে এগিয়ে যায় লোকটি। কারণ ততক্ষণে জেগে উঠেছিলেন কারেন। নির্মমভাবে আঘাত করা হয় তাঁকেও। ক্যাথি তখন চিৎকার করার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো আওয়াজই বের হলো না। কারেনকে আঘাত করে লোকটি যখন দ্বিতীয়বারের মতো ক্যাথির দিকে এগিয়ে এল, তখনই জানালা দিয়ে একটি গাড়ির হেডলাইটের উজ্জ্বল আলো এসে তার মুখের ওপর পড়ল। সরোরিটি হাউসে বসবাস করা এক ছাত্রীকে নামিয়ে দিতে এসেছিল ওই গাড়ি। মুখে আলো এসে পড়ায় ভরকে যায় হামলাকারী এবং রুম থেকে দৌড়ে পালায়। পালানোর সময়ও ওই বাড়ির কয়েক ব্লক দূরে আরেকটি বাড়িতে ঢুকে শেরিল থমাস নামে আরও এক নারীকে গুরুতর জখম করে যায় সে।
আদালতে প্রমাণ হয়েছিল, সেদিনের সেই হামলাকারী আর কেউ নন—আমেরিকার সবচেয়ে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি। ক্যাথি আর কারেন সৌভাগ্যক্রমে তাঁর হাত থেকে বেঁচে গেলেও সেদিন রাতে ওই সরোরিটি হাউসেরই অন্য দুই ছাত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন তিনি। তাঁদের একজন মার্গারেট বোম্যান, অন্যজন লিসা লেভি। মূলত ওই বাড়িতে সবার আগে মার্গারেটের রুমেই প্রবেশ করেছিলেন বান্ডি। মার্গারেটকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তিনি যান লিসার রুমে। নির্মমভাবে হত্যা করেন তাঁকেও। শুধু তাই নয়, লিসার নিথর হয়ে যাওয়া দেহটিকে তিনি পাশবিক উপায়ে ধর্ষণও করেন। লিসার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল তাঁর কামড়ের দাগ। আর এই কামড়ের দাগই প্রমাণ করেছিল বান্ডির অপরাধ। ফ্লোরিডার আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।
কিন্তু ফ্লোরিডার ওই ঘটনা ছিল টেড বান্ডির দ্বারা সংঘটিত সর্বশেষ নৃশংসতাগুলোর একটি। এর আগেই ওয়াশিংটন, ওরেগন, কলোরাডো, ইউটাহসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত সাতটি অঙ্গরাজ্যে আরও অসংখ্য নারীর জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছিলেন এই সুশিক্ষিত, স্মার্ট এবং সুদর্শন যুবক। নিজের জবানিতেই তিনি অন্তত ৩০ জন নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছিলেন। যদিও তাঁর শিকারের সংখ্যা ৪০-এর বেশি বলে মনে করেন অনেকে। এসব হত্যাকাণ্ডের বেশির ভাগই সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে।
১৯৭৪ সালের বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে ওয়াশিংটন এবং ওরেগন থেকে যখন একের পর এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এর নেপথ্যের ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছিল রাজ্য দুটির পুলিশ। সেবার এ দুটি রাজ্যে মাত্র ছয় মাসেই ছয়জন নারী অপহৃত হন। ওয়াশিংটনের সিয়াটলে লেক সামামিশ স্টেট পার্ক থেকে একই দিনে প্রকাশ্য দিবালোকে নিখোঁজ হয়ে যান জেনিস অ্যান ও ডেনিস মেরি নামের দুই তরুণী। এ ঘটনা পুরো অঞ্চলে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তবে সেদিনই খুনিকে ধরার জন্য একটি সূত্র পেয়ে যায় পুলিশ। এক নারী এসে দাবি করেন, সুদর্শন এক যুবক তাঁকেও অপহরণ করতে চেয়েছিলেন। সরল বিশ্বাসে তিনি ওই যুবককে সাহায্য করতে গিয়েছিলেন। কারণ যুবকের একটি হাত আর্ম স্লিংয়ে (ব্যথাযুক্ত হাত গলায় ঝুলিয়ে রাখা) বাঁধা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সন্দেহ হলে তিনি যুবকের গাড়ির কাছ থেকে দ্রুত সরে এসেছিলেন।
টেড বান্ডির কাছ থেকে বেঁচে যাওয়া সেই নারীই পুলিশকে তাঁর চেহারা, বয়স ও শরীরের গড়ন সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, ঘন বাদামি চুলের ওই যুবকের ভক্সওয়াগন টেন বিটল মডেলের গাড়িটিও ছিল বাদামি। আর তাঁর চোখের মণি দুটি ছিল নীল।
নারীর বর্ণনা শুনে আঁকা একটি ছবি পরে পত্রিকায় প্রকাশ করে সন্দেহভাজন ব্যক্তির সন্ধান চায় পুলিশ। এই ছবি দেখে পুলিশের সঙ্গে অসংখ্য মানুষ যোগাযোগ করেন এবং সন্দেহভাজনদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। তবে তাঁদের মধ্যে অন্তত চারজন ছবিটি দেখে টেড বান্ডির মতো মনে হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। এই চারজনের মধ্যে একজন ছিলেন বান্ডির ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু, একজন তাঁর সহকর্মী এবং একজন শিক্ষক ছাড়াও ছিলেন তাঁর সেই সময়ের প্রেমিকা এলিজাবেথ ক্লোয়েফার! একটি পার্টিতে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁদের। দুবার বিবাহবিচ্ছেদের মুখোমুখি হওয়া এবং এক কন্যাসন্তানের জননী এলিজাবেথ প্রথম দেখাতেই বান্ডির প্রেমে পড়েছিলেন।
এদিকে চারজন টেড বান্ডির সঙ্গে সন্দেহভাজন ব্যক্তির চেহারার মিল থাকার কথা জানালেও পুলিশ তা শুরুতে উড়িয়ে দেয়। আইনে অধ্যয়নরত, এমন সুদর্শন আর মার্জিত ব্যক্তিত্বের একজন মানুষ, অতীতে যার কোনো অপরাধের রেকর্ডও নেই, তিনি কীভাবে একের পর এক নারীকে খুন করবেন, তা ছিল পুলিশের কল্পনারও অতীত। ১৯৭৮ সালে ফ্লোরিডার আদালতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এমন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বহুবার পার পেয়ে গেছেন বান্ডি। এমনকি তাঁর প্রতি মানুষের এমন মনোভবের সুযোগ নিয়ে দুবার জেল থেকেও পালিয়েছিলেন তিনি।
সন্দেহভাজন হিসেবে শুরুতে টেড বান্ডির বিষয়টি উড়িয়ে দিলেও পুলিশ ঠিকই তাঁর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছিল। একপর্যায়ে ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট তাঁকে ট্রাফিক অমান্যের ফাঁদে ফেলে গ্রেপ্তারও করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর ভক্সওয়াগন টেন বিটল গাড়িটির ভেতরে একটি ধাতব দণ্ড, হ্যান্ডকাফ, রশি, গ্লাভস, মুখোশসহ সন্দেহজনক কিছু জিনিস জব্দ করা হয়। সে যাত্রায় জুতসই প্রমাণের অভাবে খুব দ্রুতই ছাড়া পেয়ে যান বান্ডি। তবে পুলিশের নজর বলে কথা! ফলে খুব ঘন ঘন তাঁকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয় এবং আদালতে তাঁর হাজিরা দেওয়া একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়।
১৯৭৫ সালেই বান্ডিকে ক্যারল ডেরঞ্চ নামে এক নারীকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপহরণের পর বান্ডির হাত থেকে ফসকে গিয়েছিলেন ক্যারল। ফলে এই অপহরণে অবধারিতভাবে দোষী সাব্যস্ত হন বান্ডি। তাঁকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কলোরাডোর অ্যাসপেন কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় ১৯৭৭ সালে কলোরাডোর আরেক তরুণীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে। এই মামলায় নিজেই নিজের আইনজীবী হিসেবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেন আইনের ছাত্র বান্ডি। এর ফলে তিনি আইনবিষয়ক পড়াশোনার জন্য আদালত চত্বরের লাইব্রেরিতে যাতায়াতের সুযোগ পেতেন। এই সুযোগেই একদিন লাইব্রেরির দোতলার জানালা থেকে লাফ দিয়ে পালান। কিন্তু আট দিনের মাথায় তিনি আবারও ধরা পড়ে যান।
সেই বছরের ডিসেম্বরে বান্ডি আবারও পালান। এবার অ্যাসপান কারাগারের যে কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছিল, সেই কক্ষের ছাদ কেটে ছোট একটি গর্ত তৈরি করেছিলেন তিনি। আর এই গর্ত দিয়ে সহজে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য শরীরের ১৪ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন। গর্ত দিয়ে বেরিয়ে তিনি জেলারের অফিসকক্ষে ঢুকে পড়েছিলেন। জেলার বাইরে থাকায় সেখানেই কয়েদির পোশাক পাল্টে সাধারণ মানুষের বেশে জেল থেকে বেরিয়ে যান। কেউ তাঁকে সন্দেহও করেনি। এবার আর কোনো ভুল করেননি বান্ডি। যত দ্রুত সম্ভব কলোরাডো ছেড়ে প্রায় ২ হাজার মাইল দূরের অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডায় গিয়ে হাজির হন। যথারীতি সেখানেও তিনি দুজন নারীকে হত্যার পাশাপাশি আরও তিনজনকে মারাত্মক আহত করেন। গল্পের শুরুতে বলা ক্যাথি ক্লেইনার ছিলেন তাঁদেরই একজন।
সরোরিটি হাউসে সেদিনের সেই হামলার পর ফ্লোরিডায়ই কিম্বার্লি ডায়ান লিচ নামে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকেও অপহরণের পর হত্যা করেছিলেন বান্ডি। ফেরারি জীবনে ফ্লোরিডায় কোনো পরিচয়পত্র তৈরির সুযোগ ছিল না তাঁর। ফলে চাকরিও জোটেনি। এ অবস্থায় চুরি আর ছিনতাই করেই দিন কাটছিল তাঁর। চুরি করা একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চালাতে গিয়েই ফ্লোরিডার পুলিশের হাতে তিনি ধরা পড়ে যান। তবে পুলিশ তখনো জানত না এটাই আলোচিত ও কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি।
বান্ডির পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায়ই ওই রাজ্যের তিন নারীকে হত্যা এবং আরও তিনজনের ওপর গুরুতর হামলার অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এবারও নিজের মামলা নিজেই লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই মামলা মিডিয়ার মাধ্যমে শুধু আমেরিকায় নয়, সারা পৃথিবীতেই আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়। মানুষের আগ্রহের কারণেই মামলাটির শুনানি হয় ক্যামেরার সামনে। অবাক করা বিষয় হলো, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলা চলার দিনগুলোতে আদালতকক্ষের ভেতরে বান্ডির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অসংখ্য মানুষ অবস্থান করতেন। বান্ডির এসব সমর্থকের প্রায় সবাই ছিলেন নারী। শুনানির সময় বান্ডি কোনো যুক্তি কিংবা পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করলে ওই নারীরা শিস বাজাতেন, হাততালি দিয়ে তাঁকে সাধুবাদ জানাতেন। নীল চোখে বান্ডি তাঁদের দিকে একনজর তাকিয়ে মুচকি হেসে নিজের আসনে গিয়ে বসতেন। শুনানির সেই দিনগুলোতে আদালতকক্ষে একজন নারীর উপস্থিতি ছিল অবশ্যম্ভাবী। তাঁর নাম ক্যারল অ্যান বোনি। অনেক আগে থেকেই বান্ডির প্রেমে পাগল ছিলেন তিনি। ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বান্ডিকে বিয়েও করেছিলেন। এমনকি বান্ডির একটি কন্যাসন্তানও তিনি গর্ভে ধারণ করেছিলেন।
আদালতে বান্ডির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার সময় তাঁকে উদ্দেশ্য করে বিচারক বলেছিলেন, ‘বৈদ্যুতিক শক দ্বারা আপনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আদেশ দেওয়া হলো। আপনি মারা না যাওয়া পর্যন্ত সেই বিদ্যুৎ আপনার শরীরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে। নিজের যত্ন নিন, যুবক। আপনাকে আন্তরিকতার সঙ্গেই বলছি; নিজের যত্ন নিন। এই কক্ষে মানবতার যে সম্পূর্ণ অপচয় আমি দেখেছি, তা এই আদালতের জন্য একটি চরম ট্র্যাজেডি। সুন্দর যুবক আপনি। ভালো আইনজীবী হওয়ার কথা ছিল। আপনাকে আমার সামনে প্র্যাকটিস করতে দেখলেই বেশি খুশি হতাম আমি। কিন্তু আপনি অন্য পথে চলে গেলেন, বন্ধু। নিজের যত্ন নিন।’
ফ্লোরিডার আদালতে বান্ডির মা-ও উপস্থিত ছিলেন। ছেলে এত বড় অপরাধী কিংবা তাঁর মৃত্যুদণ্ড হবে, তা তিনি ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি। তবু মায়ের মন বলে কথা। রায়ের আগে আদালতকক্ষে তিনি মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ছোটখাটো একটি বক্তব্যও দিয়েছিলেন।
জীবনের শুরুর দিকে মা ইলিনর লুইস কোয়েলকে নিজের বড় বোন হিসেবে জানতেন বান্ডি। আর নানা-নানিকে ভাবতেন বাবা-মা। কারণ মায়ের অপরিণত বয়সেই তিনি গর্ভে এসেছিলেন। সত্যিকার বাবার পরিচয় কোনো দিনও জানা হয়নি তাঁর। কোয়েল অবশ্য দাবি করতেন, জ্যাক ওর্থিংটন নামে এক নাবিকের সঙ্গে মিলনের ফলেই বান্ডির জন্ম হয়েছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে এই নামে নৌবাহিনীতে কারও অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
টেড বান্ডির রহস্যময় সেই জীবনের ইতি ঘটে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার আরও প্রায় এক দশক পর ১৯৮৯ সালে। ফ্লোরিডার কারাগারে বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুর আগে বান্ডি বলে গিয়েছিলেন, তাঁর দেহাবশেষ যেন কেসকেড মাউন্টেন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওয়াশিংটন ও ওরেগনজুড়ে বিস্তৃত এই পাহাড়ি বনাঞ্চলেই বান্ডি তাঁর বেশির ভাগ শিকারকে গুম করেছিলেন।

১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি। সংগঠন করতেন বলে থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই একটি সরোরিটি হাউসে। একই সংগঠনের আরও জনা ত্রিশেক ছাত্রী ছিলেন ওই বাড়িতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রেমের উন্মাদনা আর বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-আড্ডায় দেখতে দেখতে কেটে গেল দুই বছর। তার পরই একদিন জীবনের এক কঠিন পরিণতির মুখোমুখি হলেন তিনি।
১৯৭৮ সালের জানুয়ারি মাসের সেই দিনটি ছিল শনিবার। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্লান্ত ছিলেন ক্যাথি। দুই দিন পরই ছিল ক্যালকুলাস পরীক্ষা। তাই একটু পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু শরীর আর সায় দিল না। সেদিন তাই মাঝরাতের আগেই রুমমেট কারেন শ্যান্ডলারকে নিয়ে লাইট বন্ধ করে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
মাঝরাত পেরিয়ে গেলে ঘুমের ঘোরেই কানে বাজে রুমের দরজা খোলার আওয়াজ। চোখ মেলে আলো-আঁধারির মাঝে চশমা ছাড়াই ক্যাথি দেখতে পান একটি মানুষের শরীর। সামনে দাঁড়িয়ে যেন তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছে! এর পরই দেখা গেল একটি হাত উঁচিয়ে ধরেছে অবয়বটি। পরক্ষণেই ক্যাথির মুখের ওপর সজোরে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করল সে। ক্যাথির কাছে এই আঘাতকে একটি চড়ের মতো মনে হলো। যেন কোনো ব্যথাই পেলেন না তিনি। কিন্তু ওক গাছের একটি মোটা ডাল দিয়ে করা ওই আঘাতে ততক্ষণে চুরমার হয়ে গেছে ক্যাথির চোয়াল। গালের একপাশ ছিঁড়ে ঝুলে পড়েছে।
এর পরই ক্যাথির রুমমেট কারেনের বিছানার দিকে এগিয়ে যায় লোকটি। কারণ ততক্ষণে জেগে উঠেছিলেন কারেন। নির্মমভাবে আঘাত করা হয় তাঁকেও। ক্যাথি তখন চিৎকার করার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো আওয়াজই বের হলো না। কারেনকে আঘাত করে লোকটি যখন দ্বিতীয়বারের মতো ক্যাথির দিকে এগিয়ে এল, তখনই জানালা দিয়ে একটি গাড়ির হেডলাইটের উজ্জ্বল আলো এসে তার মুখের ওপর পড়ল। সরোরিটি হাউসে বসবাস করা এক ছাত্রীকে নামিয়ে দিতে এসেছিল ওই গাড়ি। মুখে আলো এসে পড়ায় ভরকে যায় হামলাকারী এবং রুম থেকে দৌড়ে পালায়। পালানোর সময়ও ওই বাড়ির কয়েক ব্লক দূরে আরেকটি বাড়িতে ঢুকে শেরিল থমাস নামে আরও এক নারীকে গুরুতর জখম করে যায় সে।
আদালতে প্রমাণ হয়েছিল, সেদিনের সেই হামলাকারী আর কেউ নন—আমেরিকার সবচেয়ে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি। ক্যাথি আর কারেন সৌভাগ্যক্রমে তাঁর হাত থেকে বেঁচে গেলেও সেদিন রাতে ওই সরোরিটি হাউসেরই অন্য দুই ছাত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন তিনি। তাঁদের একজন মার্গারেট বোম্যান, অন্যজন লিসা লেভি। মূলত ওই বাড়িতে সবার আগে মার্গারেটের রুমেই প্রবেশ করেছিলেন বান্ডি। মার্গারেটকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তিনি যান লিসার রুমে। নির্মমভাবে হত্যা করেন তাঁকেও। শুধু তাই নয়, লিসার নিথর হয়ে যাওয়া দেহটিকে তিনি পাশবিক উপায়ে ধর্ষণও করেন। লিসার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল তাঁর কামড়ের দাগ। আর এই কামড়ের দাগই প্রমাণ করেছিল বান্ডির অপরাধ। ফ্লোরিডার আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।
কিন্তু ফ্লোরিডার ওই ঘটনা ছিল টেড বান্ডির দ্বারা সংঘটিত সর্বশেষ নৃশংসতাগুলোর একটি। এর আগেই ওয়াশিংটন, ওরেগন, কলোরাডো, ইউটাহসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত সাতটি অঙ্গরাজ্যে আরও অসংখ্য নারীর জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছিলেন এই সুশিক্ষিত, স্মার্ট এবং সুদর্শন যুবক। নিজের জবানিতেই তিনি অন্তত ৩০ জন নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছিলেন। যদিও তাঁর শিকারের সংখ্যা ৪০-এর বেশি বলে মনে করেন অনেকে। এসব হত্যাকাণ্ডের বেশির ভাগই সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে।
১৯৭৪ সালের বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে ওয়াশিংটন এবং ওরেগন থেকে যখন একের পর এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এর নেপথ্যের ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছিল রাজ্য দুটির পুলিশ। সেবার এ দুটি রাজ্যে মাত্র ছয় মাসেই ছয়জন নারী অপহৃত হন। ওয়াশিংটনের সিয়াটলে লেক সামামিশ স্টেট পার্ক থেকে একই দিনে প্রকাশ্য দিবালোকে নিখোঁজ হয়ে যান জেনিস অ্যান ও ডেনিস মেরি নামের দুই তরুণী। এ ঘটনা পুরো অঞ্চলে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তবে সেদিনই খুনিকে ধরার জন্য একটি সূত্র পেয়ে যায় পুলিশ। এক নারী এসে দাবি করেন, সুদর্শন এক যুবক তাঁকেও অপহরণ করতে চেয়েছিলেন। সরল বিশ্বাসে তিনি ওই যুবককে সাহায্য করতে গিয়েছিলেন। কারণ যুবকের একটি হাত আর্ম স্লিংয়ে (ব্যথাযুক্ত হাত গলায় ঝুলিয়ে রাখা) বাঁধা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সন্দেহ হলে তিনি যুবকের গাড়ির কাছ থেকে দ্রুত সরে এসেছিলেন।
টেড বান্ডির কাছ থেকে বেঁচে যাওয়া সেই নারীই পুলিশকে তাঁর চেহারা, বয়স ও শরীরের গড়ন সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, ঘন বাদামি চুলের ওই যুবকের ভক্সওয়াগন টেন বিটল মডেলের গাড়িটিও ছিল বাদামি। আর তাঁর চোখের মণি দুটি ছিল নীল।
নারীর বর্ণনা শুনে আঁকা একটি ছবি পরে পত্রিকায় প্রকাশ করে সন্দেহভাজন ব্যক্তির সন্ধান চায় পুলিশ। এই ছবি দেখে পুলিশের সঙ্গে অসংখ্য মানুষ যোগাযোগ করেন এবং সন্দেহভাজনদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। তবে তাঁদের মধ্যে অন্তত চারজন ছবিটি দেখে টেড বান্ডির মতো মনে হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। এই চারজনের মধ্যে একজন ছিলেন বান্ডির ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু, একজন তাঁর সহকর্মী এবং একজন শিক্ষক ছাড়াও ছিলেন তাঁর সেই সময়ের প্রেমিকা এলিজাবেথ ক্লোয়েফার! একটি পার্টিতে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁদের। দুবার বিবাহবিচ্ছেদের মুখোমুখি হওয়া এবং এক কন্যাসন্তানের জননী এলিজাবেথ প্রথম দেখাতেই বান্ডির প্রেমে পড়েছিলেন।
এদিকে চারজন টেড বান্ডির সঙ্গে সন্দেহভাজন ব্যক্তির চেহারার মিল থাকার কথা জানালেও পুলিশ তা শুরুতে উড়িয়ে দেয়। আইনে অধ্যয়নরত, এমন সুদর্শন আর মার্জিত ব্যক্তিত্বের একজন মানুষ, অতীতে যার কোনো অপরাধের রেকর্ডও নেই, তিনি কীভাবে একের পর এক নারীকে খুন করবেন, তা ছিল পুলিশের কল্পনারও অতীত। ১৯৭৮ সালে ফ্লোরিডার আদালতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এমন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বহুবার পার পেয়ে গেছেন বান্ডি। এমনকি তাঁর প্রতি মানুষের এমন মনোভবের সুযোগ নিয়ে দুবার জেল থেকেও পালিয়েছিলেন তিনি।
সন্দেহভাজন হিসেবে শুরুতে টেড বান্ডির বিষয়টি উড়িয়ে দিলেও পুলিশ ঠিকই তাঁর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছিল। একপর্যায়ে ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট তাঁকে ট্রাফিক অমান্যের ফাঁদে ফেলে গ্রেপ্তারও করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর ভক্সওয়াগন টেন বিটল গাড়িটির ভেতরে একটি ধাতব দণ্ড, হ্যান্ডকাফ, রশি, গ্লাভস, মুখোশসহ সন্দেহজনক কিছু জিনিস জব্দ করা হয়। সে যাত্রায় জুতসই প্রমাণের অভাবে খুব দ্রুতই ছাড়া পেয়ে যান বান্ডি। তবে পুলিশের নজর বলে কথা! ফলে খুব ঘন ঘন তাঁকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয় এবং আদালতে তাঁর হাজিরা দেওয়া একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়।
১৯৭৫ সালেই বান্ডিকে ক্যারল ডেরঞ্চ নামে এক নারীকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপহরণের পর বান্ডির হাত থেকে ফসকে গিয়েছিলেন ক্যারল। ফলে এই অপহরণে অবধারিতভাবে দোষী সাব্যস্ত হন বান্ডি। তাঁকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কলোরাডোর অ্যাসপেন কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় ১৯৭৭ সালে কলোরাডোর আরেক তরুণীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে। এই মামলায় নিজেই নিজের আইনজীবী হিসেবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেন আইনের ছাত্র বান্ডি। এর ফলে তিনি আইনবিষয়ক পড়াশোনার জন্য আদালত চত্বরের লাইব্রেরিতে যাতায়াতের সুযোগ পেতেন। এই সুযোগেই একদিন লাইব্রেরির দোতলার জানালা থেকে লাফ দিয়ে পালান। কিন্তু আট দিনের মাথায় তিনি আবারও ধরা পড়ে যান।
সেই বছরের ডিসেম্বরে বান্ডি আবারও পালান। এবার অ্যাসপান কারাগারের যে কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছিল, সেই কক্ষের ছাদ কেটে ছোট একটি গর্ত তৈরি করেছিলেন তিনি। আর এই গর্ত দিয়ে সহজে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য শরীরের ১৪ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন। গর্ত দিয়ে বেরিয়ে তিনি জেলারের অফিসকক্ষে ঢুকে পড়েছিলেন। জেলার বাইরে থাকায় সেখানেই কয়েদির পোশাক পাল্টে সাধারণ মানুষের বেশে জেল থেকে বেরিয়ে যান। কেউ তাঁকে সন্দেহও করেনি। এবার আর কোনো ভুল করেননি বান্ডি। যত দ্রুত সম্ভব কলোরাডো ছেড়ে প্রায় ২ হাজার মাইল দূরের অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডায় গিয়ে হাজির হন। যথারীতি সেখানেও তিনি দুজন নারীকে হত্যার পাশাপাশি আরও তিনজনকে মারাত্মক আহত করেন। গল্পের শুরুতে বলা ক্যাথি ক্লেইনার ছিলেন তাঁদেরই একজন।
সরোরিটি হাউসে সেদিনের সেই হামলার পর ফ্লোরিডায়ই কিম্বার্লি ডায়ান লিচ নামে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকেও অপহরণের পর হত্যা করেছিলেন বান্ডি। ফেরারি জীবনে ফ্লোরিডায় কোনো পরিচয়পত্র তৈরির সুযোগ ছিল না তাঁর। ফলে চাকরিও জোটেনি। এ অবস্থায় চুরি আর ছিনতাই করেই দিন কাটছিল তাঁর। চুরি করা একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চালাতে গিয়েই ফ্লোরিডার পুলিশের হাতে তিনি ধরা পড়ে যান। তবে পুলিশ তখনো জানত না এটাই আলোচিত ও কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি।
বান্ডির পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায়ই ওই রাজ্যের তিন নারীকে হত্যা এবং আরও তিনজনের ওপর গুরুতর হামলার অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এবারও নিজের মামলা নিজেই লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই মামলা মিডিয়ার মাধ্যমে শুধু আমেরিকায় নয়, সারা পৃথিবীতেই আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়। মানুষের আগ্রহের কারণেই মামলাটির শুনানি হয় ক্যামেরার সামনে। অবাক করা বিষয় হলো, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলা চলার দিনগুলোতে আদালতকক্ষের ভেতরে বান্ডির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অসংখ্য মানুষ অবস্থান করতেন। বান্ডির এসব সমর্থকের প্রায় সবাই ছিলেন নারী। শুনানির সময় বান্ডি কোনো যুক্তি কিংবা পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করলে ওই নারীরা শিস বাজাতেন, হাততালি দিয়ে তাঁকে সাধুবাদ জানাতেন। নীল চোখে বান্ডি তাঁদের দিকে একনজর তাকিয়ে মুচকি হেসে নিজের আসনে গিয়ে বসতেন। শুনানির সেই দিনগুলোতে আদালতকক্ষে একজন নারীর উপস্থিতি ছিল অবশ্যম্ভাবী। তাঁর নাম ক্যারল অ্যান বোনি। অনেক আগে থেকেই বান্ডির প্রেমে পাগল ছিলেন তিনি। ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বান্ডিকে বিয়েও করেছিলেন। এমনকি বান্ডির একটি কন্যাসন্তানও তিনি গর্ভে ধারণ করেছিলেন।
আদালতে বান্ডির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার সময় তাঁকে উদ্দেশ্য করে বিচারক বলেছিলেন, ‘বৈদ্যুতিক শক দ্বারা আপনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আদেশ দেওয়া হলো। আপনি মারা না যাওয়া পর্যন্ত সেই বিদ্যুৎ আপনার শরীরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে। নিজের যত্ন নিন, যুবক। আপনাকে আন্তরিকতার সঙ্গেই বলছি; নিজের যত্ন নিন। এই কক্ষে মানবতার যে সম্পূর্ণ অপচয় আমি দেখেছি, তা এই আদালতের জন্য একটি চরম ট্র্যাজেডি। সুন্দর যুবক আপনি। ভালো আইনজীবী হওয়ার কথা ছিল। আপনাকে আমার সামনে প্র্যাকটিস করতে দেখলেই বেশি খুশি হতাম আমি। কিন্তু আপনি অন্য পথে চলে গেলেন, বন্ধু। নিজের যত্ন নিন।’
ফ্লোরিডার আদালতে বান্ডির মা-ও উপস্থিত ছিলেন। ছেলে এত বড় অপরাধী কিংবা তাঁর মৃত্যুদণ্ড হবে, তা তিনি ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি। তবু মায়ের মন বলে কথা। রায়ের আগে আদালতকক্ষে তিনি মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ছোটখাটো একটি বক্তব্যও দিয়েছিলেন।
জীবনের শুরুর দিকে মা ইলিনর লুইস কোয়েলকে নিজের বড় বোন হিসেবে জানতেন বান্ডি। আর নানা-নানিকে ভাবতেন বাবা-মা। কারণ মায়ের অপরিণত বয়সেই তিনি গর্ভে এসেছিলেন। সত্যিকার বাবার পরিচয় কোনো দিনও জানা হয়নি তাঁর। কোয়েল অবশ্য দাবি করতেন, জ্যাক ওর্থিংটন নামে এক নাবিকের সঙ্গে মিলনের ফলেই বান্ডির জন্ম হয়েছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে এই নামে নৌবাহিনীতে কারও অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
টেড বান্ডির রহস্যময় সেই জীবনের ইতি ঘটে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার আরও প্রায় এক দশক পর ১৯৮৯ সালে। ফ্লোরিডার কারাগারে বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুর আগে বান্ডি বলে গিয়েছিলেন, তাঁর দেহাবশেষ যেন কেসকেড মাউন্টেন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওয়াশিংটন ও ওরেগনজুড়ে বিস্তৃত এই পাহাড়ি বনাঞ্চলেই বান্ডি তাঁর বেশির ভাগ শিকারকে গুম করেছিলেন।

দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান বা চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির গত রোববার মন্তব্য করেছেন যে, গাজায় ‘হলুদ রেখা’ নামে যে সীমারেখা বরাবর দখলদার বাহিনী পিছু হটেছে সেটিই এখন গাজা উপত্যকাকে ফিলিস্তিনিদের বাকি অধিকৃত ভূখণ্ড থেকে আলাদা করা এক নতুন সীমান্ত হিসেবে কাজ করবে।
১ ঘণ্টা আগে
কয়েক দিন আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের স্কুলশিক্ষক সর্বেশ কুমারকে তাঁর বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে তিনি নাকি একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন, যেখানে তাঁকে কাঁদতে দেখা যায়। সেখানে তিনি নির্বাচনী কাজের চাপের কথা বলেছিলেন এবং সময়মতো কাজটি শেষ করতে না পারায় খুবই হতাশ ছিলেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ এবং আসন্ন ‘তেলেঙ্গানা রাইজিং গ্লোবাল সামিট’-এর আগে রাজ্যের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি। তিনি হায়দরাবাদের একটি প্রধান সড়কের নামকরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক দূত জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি ‘সত্যিই খুব কাছাকাছি।’ শুধু দুটি প্রধান সমস্যার সমাধান বাকি। তবে ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাবে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান বা চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির গত রোববার মন্তব্য করেছেন যে, গাজায় ‘হলুদ রেখা’ নামে যে সীমারেখা বরাবর দখলদার বাহিনী পিছু হটেছে সেটিই এখন গাজা উপত্যকাকে ফিলিস্তিনিদের বাকি অধিকৃত ভূখণ্ড থেকে আলাদা করা এক নতুন সীমান্ত হিসেবে কাজ করবে। সামরিক এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় অবস্থিত ইসরায়েলি সৈন্যদের সঙ্গে আলাপকালে জমির বলেন, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজার বিশাল এলাকার ওপর কার্যত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে এবং এই নিরাপত্তা রেখা বরাবর তাদের অবস্থান ধরে রাখারই ইচ্ছে রয়েছে।
তিনি হলুদ রেখাটিকে একটি অগ্রবর্তী নিরাপদ বেষ্টনী এবং একই সঙ্গে চলমান সামরিক কার্যকলাপের একটি ক্ষেত্র হিসেবে বর্ণনা করেন। মার্কিন মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে ইসরায়েলি বাহিনী বর্তমানে এই সীমারেখার পেছনে অবস্থান করছে। তবে সেটি কার্যত গাজাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে।
জেনারেল ইয়াল জামির বলেন, ‘গাজা স্ট্রিপের বিস্তৃত অংশে আমাদের অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং আমরা সেই প্রতিরক্ষা রেখাগুলোতে থাকব। হলুদ রেখাটি একটি নতুন সীমান্তরেখা, যা আমাদের সম্প্রদায়গুলির জন্য একটি সামনের রক্ষণাত্মক রেখা এবং অপারেশনাল কার্যকলাপের একটি রেখা হিসাবে কাজ করছে।’
এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, দখলদার শক্তি এই রেখাটিকে পূর্বের চুক্তিতে সংজ্ঞায়িত একটি সাময়িক অবস্থান হিসেবে না দেখে এটিকে দীর্ঘমেয়াদি ভূখণ্ড দখল ও জাতিগত নির্মূলকরণের একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। মার্কিন মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে, চুক্তির বৃহত্তর কাঠামো যখন বাস্তবায়িত হচ্ছে, তখন ইসরায়েলি বাহিনী হলুদ রেখার পেছনে সরে আসে।
জমিরের এই ঘোষণা দখলদার শক্তির আসল উদ্দেশ্যকে নগ্ন করে দেয়—যা ছিল সাময়িক পুনঃস্থাপনার রেখা, তাকেই কার্যত এমন এক সীমান্তে পরিণত করা, যা ভূখণ্ডগত চুরিকে পাকাপাকি করবে। হলুদ রেখাটিকে একটি স্থায়ী সীমান্ত হিসেবে পুনঃসংজ্ঞায়িত করার মাধ্যমে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘমেয়াদি ভূমি দখল, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক রদবদল এবং গাজার ক্রমিক সংযুক্তিকরণের এক বিস্তৃত প্রকল্পের ইঙ্গিত দিচ্ছে—যা যুদ্ধবিরতি মানার আড়ালে তাদের বৃহত্তর সম্প্রসারণবাদী নীতিরই বিস্তার।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলি সামরিক কমান্ড গত অক্টোবরে গাজা উপত্যকার ভেতরে যুদ্ধবিরতির হলুদ রেখাটিকে বাস্তবিক অর্থে শক্তিশালী এবং আনুষ্ঠানিকভাবে চিহ্নিত করার নির্দেশ দেয়। তারা সেখানে আউটপোস্ট, দু-তলা বালির বাঁধ, কাঁটাতার এবং হলুদ রঙের কংক্রিটের মার্কার বসানোর পাশাপাশি ড্রোন ও সাঁজোয়া ইউনিট মোতায়েন করে।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গাজা সিটির পূর্বে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শুজাইয়া এলাকার ওপর নজর রাখা একটি ইসরায়েলি আউটপোস্ট ঘুরে দেখেছে। তারা বলেছে, সেখানে কাঁটাতার দেওয়া একটি দু-তলা বালির বাঁধ, তার নিচ দিয়ে যাওয়া দুটি গাড়ির উপযুক্ত বালির রাস্তা এবং মাথার ওপর ড্রোন উড়তে দেখা যায়।
জানা গেছে, দখলদার বাহিনী এই সীমারেখা বরাবর হলুদ রং করা কংক্রিটের ব্লক বসাচ্ছে এবং সামরিক কর্মকর্তারা কাগজটিকে বলেছেন যে, চিহ্নিতকরণের কাজটির মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন মধ্যস্থতায় তৈরি হওয়া এই রেখাটি বর্তমান আউটপোস্টগুলি ও নতুন করে তৈরি করা অবস্থানগুলি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, যেখানে বালির বাঁধের পেছনে সৈন্য ও ট্যাঙ্ক সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
ডাব্লিউএসজে-এর আগের একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছিল যে, গাজাকে দুই ভাগ করা এবং তথাকথিত হলুদ রেখার পেছনের এলাকাগুলি পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনাটি মার্কিন বিশেষ দূত জ্যারেড কুশনার ও মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্সের পক্ষ থেকে উত্থাপিত হয়েছিল।
তথাকথিত যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ শত শত ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। প্রতিবেদন বলছে, অন্তত ৩৭০–৩৭৫ জন নিহত হয়েছেন এবং গড়ে দৈনিক আটজন বেসামরিক মানুষ মারা যাচ্ছেন। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে, গাজার মানুষকে সুরক্ষা দিতে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর নয়।

দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান বা চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির গত রোববার মন্তব্য করেছেন যে, গাজায় ‘হলুদ রেখা’ নামে যে সীমারেখা বরাবর দখলদার বাহিনী পিছু হটেছে সেটিই এখন গাজা উপত্যকাকে ফিলিস্তিনিদের বাকি অধিকৃত ভূখণ্ড থেকে আলাদা করা এক নতুন সীমান্ত হিসেবে কাজ করবে। সামরিক এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় অবস্থিত ইসরায়েলি সৈন্যদের সঙ্গে আলাপকালে জমির বলেন, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজার বিশাল এলাকার ওপর কার্যত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে এবং এই নিরাপত্তা রেখা বরাবর তাদের অবস্থান ধরে রাখারই ইচ্ছে রয়েছে।
তিনি হলুদ রেখাটিকে একটি অগ্রবর্তী নিরাপদ বেষ্টনী এবং একই সঙ্গে চলমান সামরিক কার্যকলাপের একটি ক্ষেত্র হিসেবে বর্ণনা করেন। মার্কিন মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে ইসরায়েলি বাহিনী বর্তমানে এই সীমারেখার পেছনে অবস্থান করছে। তবে সেটি কার্যত গাজাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে।
জেনারেল ইয়াল জামির বলেন, ‘গাজা স্ট্রিপের বিস্তৃত অংশে আমাদের অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং আমরা সেই প্রতিরক্ষা রেখাগুলোতে থাকব। হলুদ রেখাটি একটি নতুন সীমান্তরেখা, যা আমাদের সম্প্রদায়গুলির জন্য একটি সামনের রক্ষণাত্মক রেখা এবং অপারেশনাল কার্যকলাপের একটি রেখা হিসাবে কাজ করছে।’
এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, দখলদার শক্তি এই রেখাটিকে পূর্বের চুক্তিতে সংজ্ঞায়িত একটি সাময়িক অবস্থান হিসেবে না দেখে এটিকে দীর্ঘমেয়াদি ভূখণ্ড দখল ও জাতিগত নির্মূলকরণের একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। মার্কিন মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে, চুক্তির বৃহত্তর কাঠামো যখন বাস্তবায়িত হচ্ছে, তখন ইসরায়েলি বাহিনী হলুদ রেখার পেছনে সরে আসে।
জমিরের এই ঘোষণা দখলদার শক্তির আসল উদ্দেশ্যকে নগ্ন করে দেয়—যা ছিল সাময়িক পুনঃস্থাপনার রেখা, তাকেই কার্যত এমন এক সীমান্তে পরিণত করা, যা ভূখণ্ডগত চুরিকে পাকাপাকি করবে। হলুদ রেখাটিকে একটি স্থায়ী সীমান্ত হিসেবে পুনঃসংজ্ঞায়িত করার মাধ্যমে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘমেয়াদি ভূমি দখল, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক রদবদল এবং গাজার ক্রমিক সংযুক্তিকরণের এক বিস্তৃত প্রকল্পের ইঙ্গিত দিচ্ছে—যা যুদ্ধবিরতি মানার আড়ালে তাদের বৃহত্তর সম্প্রসারণবাদী নীতিরই বিস্তার।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলি সামরিক কমান্ড গত অক্টোবরে গাজা উপত্যকার ভেতরে যুদ্ধবিরতির হলুদ রেখাটিকে বাস্তবিক অর্থে শক্তিশালী এবং আনুষ্ঠানিকভাবে চিহ্নিত করার নির্দেশ দেয়। তারা সেখানে আউটপোস্ট, দু-তলা বালির বাঁধ, কাঁটাতার এবং হলুদ রঙের কংক্রিটের মার্কার বসানোর পাশাপাশি ড্রোন ও সাঁজোয়া ইউনিট মোতায়েন করে।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গাজা সিটির পূর্বে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শুজাইয়া এলাকার ওপর নজর রাখা একটি ইসরায়েলি আউটপোস্ট ঘুরে দেখেছে। তারা বলেছে, সেখানে কাঁটাতার দেওয়া একটি দু-তলা বালির বাঁধ, তার নিচ দিয়ে যাওয়া দুটি গাড়ির উপযুক্ত বালির রাস্তা এবং মাথার ওপর ড্রোন উড়তে দেখা যায়।
জানা গেছে, দখলদার বাহিনী এই সীমারেখা বরাবর হলুদ রং করা কংক্রিটের ব্লক বসাচ্ছে এবং সামরিক কর্মকর্তারা কাগজটিকে বলেছেন যে, চিহ্নিতকরণের কাজটির মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন মধ্যস্থতায় তৈরি হওয়া এই রেখাটি বর্তমান আউটপোস্টগুলি ও নতুন করে তৈরি করা অবস্থানগুলি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, যেখানে বালির বাঁধের পেছনে সৈন্য ও ট্যাঙ্ক সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
ডাব্লিউএসজে-এর আগের একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছিল যে, গাজাকে দুই ভাগ করা এবং তথাকথিত হলুদ রেখার পেছনের এলাকাগুলি পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনাটি মার্কিন বিশেষ দূত জ্যারেড কুশনার ও মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্সের পক্ষ থেকে উত্থাপিত হয়েছিল।
তথাকথিত যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ শত শত ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। প্রতিবেদন বলছে, অন্তত ৩৭০–৩৭৫ জন নিহত হয়েছেন এবং গড়ে দৈনিক আটজন বেসামরিক মানুষ মারা যাচ্ছেন। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে, গাজার মানুষকে সুরক্ষা দিতে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর নয়।

১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি।
০৫ জুলাই ২০২৪
কয়েক দিন আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের স্কুলশিক্ষক সর্বেশ কুমারকে তাঁর বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে তিনি নাকি একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন, যেখানে তাঁকে কাঁদতে দেখা যায়। সেখানে তিনি নির্বাচনী কাজের চাপের কথা বলেছিলেন এবং সময়মতো কাজটি শেষ করতে না পারায় খুবই হতাশ ছিলেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ এবং আসন্ন ‘তেলেঙ্গানা রাইজিং গ্লোবাল সামিট’-এর আগে রাজ্যের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি। তিনি হায়দরাবাদের একটি প্রধান সড়কের নামকরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক দূত জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি ‘সত্যিই খুব কাছাকাছি।’ শুধু দুটি প্রধান সমস্যার সমাধান বাকি। তবে ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাবে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কয়েক দিন আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের স্কুলশিক্ষক সর্বেশ কুমারকে তাঁর বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে তিনি নাকি একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন, যেখানে তাঁকে কাঁদতে দেখা যায়। সেখানে তিনি নির্বাচনী কাজের চাপের কথা বলেছিলেন এবং সময়মতো কাজটি শেষ করতে না পারায় খুবই হতাশ ছিলেন।
ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন, ‘বিশ দিন ধরে আমি এক ফোঁটা ঘুমাতে পারিনি। হাতে যদি একটু সময় থাকত, তা হলে এই কাজটা শেষ করে দিতে পারতাম।’ সর্বেশ ছিলেন সেই সব হাজার হাজার সরকারি কর্মীর একজন, যাদের গত ৪ নভেম্বর থেকে ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫০ কোটিরও বেশি ভোটারের তালিকা তৈরির কাজে নামানো হয়েছিল।
ভারত সরকার পরিচালিত স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা বিশেষ নিবিড় সংশোধনী—এসআইআর নামে পরিচিত এই কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইছে, প্রত্যেক যোগ্য ভোটারের নাম তালিকায় তোলা হোক এবং অযোগ্য নামগুলো বাতিল করা হোক।
সাধারণত সরকারি স্কুলশিক্ষক, কর্মচারী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও হিসেবে ইসির তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফরম বিতরণ করেন, কাগজপত্র যাচাই করেন, নানা প্রশ্নের জবাব দেন ও নির্ভুল তথ্য আপলোড করেন। এই পুরো কাজের সময়সীমা মাত্র এক মাস।
তবে শুধু এটুকুই নয়। অনেক নির্বাচনী কর্মী—যাদের অনেকেই আবার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বা অঙ্গনওয়াড়ি (সরকার পরিচালিত শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র) কর্মী—বলেন, অনেক সময় তাঁদের নিজের নিয়মিত কাজের পাশাপাশি নির্বাচনী দায়িত্বও সামলাতে হয়।
বিবিসি রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে দশ জন বিএলও’র সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, সামান্য বিশ্রাম, কম ঘুম ও নগণ্য পারিশ্রমিক নিয়ে তাঁদের দিনে ১৪-১৫ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে। এই দুই রাজ্যেই এসআইআর কাজ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এই শ্রমসাধ্য সময়সূচির কারণে বিএলওদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিশেষত কুমারসহ এক ডজনেরও বেশি কর্মীর মৃত্যুর পর এই ক্ষোভ আরও বেশি বেড়েছে। তাঁদের পরিবার এই মৃত্যুগুলোকে—যার মধ্যে কথিত আত্মহত্যা বা হার্ট অ্যাটাক রয়েছে—নির্বাচনী কাজসংক্রান্ত মানসিক চাপের ফল বলে মনে করছেন। তবে বিবিসির পক্ষে মৃত্যুর কারণগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। বিবিসির পাঠানো বিস্তারিত প্রশ্নের তালিকার কোনো জবাব ভারতের নির্বাচন কমিশন দেয়নি।
গুজরাটে অরবিন্দভাই ভাধের নামে এক প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক নাকি গত মাসেই ‘বিএলও–এর কাজের অত্যাচারের কারণে’ আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর পরিবার বিবিসিকে জানিয়েছে। মৃত্যুর আগে তাঁর লেখা একটি নোট বিবিসি দেখেছে। সেখানে ভাধের বলেছিলেন, বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি ‘অবিরাম ক্লান্তি ও মানসিক চাপে’ ভুগছিলেন।
অন্য এক ঘটনায় গুজরাটের এক স্কুলের প্রধান রমেশভাই পারমার এসআইআর-এর কাজের চাপ নেওয়ার পর রাতে ঘুমন্ত অবস্থাতেই মারা যান বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। পারমারের মেয়ে শিল্পাবেন বলেন, তাঁর বাবা প্রায়ই অনেক লম্বা সময় ধরে বা রাত অবধি কাজ করতেন। যেদিন তিনি মারা যান, সেদিনও তিনি এসআইআর-এর কাজে অনেক বার বাইরে গিয়েছিলেন এবং না খেয়েই শুতে গিয়েছিলেন।
এতগুলো মৃত্যুর পর এখন পোল কর্মীদের কাজের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী দলের নেতারা ইসির ও সরকারের সমালোচনা করেছেন, এত দ্রুত এসআইআর কাজ শেষ করতে চাওয়ার জন্য। (এর আগে ২০০২-২০০৩ সালে এসআইআর-এর কাজ ছয় মাস ধরে করা হয়েছিল।)
আদালতে পেশ করা একটি হলফনামার সূত্রে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, এসআইআর-এর কাজের সঙ্গে বিএলওদের মৃত্যুর যোগ থাকার বিরোধীদের দাবি নির্বাচন কমিশন অস্বীকার করেছে। তারা এই সব দাবিকে ‘মিথ্যা, অত্যুক্তিপূর্ণ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছে। গত সপ্তাহে ইসি জানিয়েছে, এসআইআর-এর সময়সীমা ৪ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ১১ ডিসেম্বর করা হবে। তবে এর কারণ তারা জানায়নি।
কিন্তু উত্তর প্রদেশের নয়ডায় একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে এসআইআর-এর নেতৃত্ব দেওয়া এক স্কুলশিক্ষিকা মনীষা কুমারী (ছদ্মনাম) বলছেন, এই বাড়তি সময়ের মধ্যেও তিনি কাজ শেষ করতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন। গত এক মাস ধরে কুমারী ভোর পাঁচটায় উঠে বাড়ির কাজ সারেন ও ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি করেন। তারপর সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা-ছয়টা অবধি এসআইআর-এর কাজ করেন।
তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘যেটুকু অল্প বিরতি পাই, সেটা খরচ হয় সেই সব লোকদের খুঁজে বের করার জন্য, যাঁরা প্রথমবার যখন গিয়েছিলাম, তখন বাড়িতে ছিলেন না।’ সন্ধ্যায়ও তাঁর নিস্তার নেই। বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করার পর তিনি এসআইআর অ্যাপে লগইন করে যাচাই করা ফরমগুলো আপলোড করেন। কিন্তু অ্যাপটি প্রায়ই ‘ক্র্যাশ’ করে, তাই কাজ শেষ করতে তাঁকে আবার মাঝরাতের পর চেষ্টা করতে হয়। তিনি বলেন, ‘৪ নভেম্বর থেকে আজ অবধি আমার একটিও ছুটি নেই।’ তিনি আরও জানান, ক্লাসে তাঁর অনুপস্থিতির কারণে ছাত্রছাত্রীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
ভারতের বহু সরকারি স্কুলে কর্মীর অভাব রয়েছে। শিক্ষকেরা বলছেন, এই ধরনের কাজের জন্য তাঁদের ক্লাস থেকে তুলে নিলে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতি হয়। কিছু বিএলও বিবিসিকে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যের ওপর এর খারাপ প্রভাব থাকা সত্ত্বেও তাঁরা এই কঠিন কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ তাঁরা আইনি পদক্ষেপের ভয় পান।
সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের কর্মকর্তারা এসআইআর-এর কাজে অবহেলার অভিযোগে পোল কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আর অন্য রাজ্যগুলোতেও কাজ করতে না চাইলে জেল বা চাকরি হারানোর হুমকির খবর পাওয়া গেছে। উত্তর প্রদেশের হিসাবরক্ষক সুধীর কুমার কোরি নাকি তাঁর বিয়ের জন্য এক দিনের ছুটি নেওয়ায় তাঁর ঊর্ধ্বতন তাঁকে বকাবকি করেছিলেন। এরপরই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর পরিবার বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছে।
গাজিয়াবাদের এক পোল কর্মী সুনীল সিং (ছদ্মনাম) বলেছেন, গত কয়েক দিনে তাঁর ‘প্লেটলেট সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে গেছে’ কিন্তু এসআইআর-এর কাজের জন্য তাঁকে ছুটি নিতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমাকে ডাক্তার বিশ্রাম নিতে বলেছেন, কিন্তু এই কর্মকর্তারা কানেও নিচ্ছেন না। ছুটি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো হাসপাতালে ভর্তি হওয়া।’ তিনি আরও জানান, তিনি রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভাগের তাঁর চাকরিটি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন।
বিএলওদের তাঁদের কাজের চাপ নিয়ে আবেদন জানানোর কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই। কিন্তু তাঁরা বিক্ষোভ করেছেন এবং সময়সীমা বাড়ানোর ও ভালো কাজের পরিবেশের জন্য ইসি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে চিঠিও লিখেছেন। কিছু রাজ্য এই কাজের জন্য ছাত্র স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে লাগাচ্ছে, আবার উত্তর প্রদেশের কিছু জেলায় সেরা কাজ করা বিএলওদের নগদ অর্থ, উপহার ও অন্য পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে যে, বিএলওদের দীর্ঘ কাজের সময় কমাতে এসআইআর কাজের জন্য যেন অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়। এখন ইসি বিএলওদের পারিশ্রমিক ছয় হাজার রুপি থেকে বাড়িয়ে বারো হাজার রুপি করেছে এবং সুপারভাইজারদের পারিশ্রমিক বারো হাজার রুপি থেকে আঠারো হাজার রুপি করেছে। এর পাশাপাশি বিএলওদের জন্য ছয় হাজার রুপির এসআইআর উৎসাহ-ভাতা যোগ করেছে। কিন্তু অনেক বিএলও বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা এখনো কোনো টাকাই পাননি, আর তাঁদের প্রাপ্য কত টাকা, তা-ও অনেকে জানেন না।
এর আগে এক ক্ষেত্রে, ইসি পশ্চিমবঙ্গে বিএলওদের টাকা দিতে দেরি হওয়ার জন্য রাজ্যকে দায়ী করেছিল, আবার রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তহবিল আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছিল। অনেক বিএলও বিবিসিকে বলেন, তাঁরা এসআইআর-এর কাজের জন্য নিজেদের টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নয়ডার এক পোল কর্মী বলেন, ‘টাকা পাই কি না, দেখি। আশা খুবই কম।’

কয়েক দিন আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের স্কুলশিক্ষক সর্বেশ কুমারকে তাঁর বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে তিনি নাকি একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন, যেখানে তাঁকে কাঁদতে দেখা যায়। সেখানে তিনি নির্বাচনী কাজের চাপের কথা বলেছিলেন এবং সময়মতো কাজটি শেষ করতে না পারায় খুবই হতাশ ছিলেন।
ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন, ‘বিশ দিন ধরে আমি এক ফোঁটা ঘুমাতে পারিনি। হাতে যদি একটু সময় থাকত, তা হলে এই কাজটা শেষ করে দিতে পারতাম।’ সর্বেশ ছিলেন সেই সব হাজার হাজার সরকারি কর্মীর একজন, যাদের গত ৪ নভেম্বর থেকে ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫০ কোটিরও বেশি ভোটারের তালিকা তৈরির কাজে নামানো হয়েছিল।
ভারত সরকার পরিচালিত স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা বিশেষ নিবিড় সংশোধনী—এসআইআর নামে পরিচিত এই কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইছে, প্রত্যেক যোগ্য ভোটারের নাম তালিকায় তোলা হোক এবং অযোগ্য নামগুলো বাতিল করা হোক।
সাধারণত সরকারি স্কুলশিক্ষক, কর্মচারী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও হিসেবে ইসির তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফরম বিতরণ করেন, কাগজপত্র যাচাই করেন, নানা প্রশ্নের জবাব দেন ও নির্ভুল তথ্য আপলোড করেন। এই পুরো কাজের সময়সীমা মাত্র এক মাস।
তবে শুধু এটুকুই নয়। অনেক নির্বাচনী কর্মী—যাদের অনেকেই আবার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বা অঙ্গনওয়াড়ি (সরকার পরিচালিত শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র) কর্মী—বলেন, অনেক সময় তাঁদের নিজের নিয়মিত কাজের পাশাপাশি নির্বাচনী দায়িত্বও সামলাতে হয়।
বিবিসি রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে দশ জন বিএলও’র সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, সামান্য বিশ্রাম, কম ঘুম ও নগণ্য পারিশ্রমিক নিয়ে তাঁদের দিনে ১৪-১৫ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে। এই দুই রাজ্যেই এসআইআর কাজ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এই শ্রমসাধ্য সময়সূচির কারণে বিএলওদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিশেষত কুমারসহ এক ডজনেরও বেশি কর্মীর মৃত্যুর পর এই ক্ষোভ আরও বেশি বেড়েছে। তাঁদের পরিবার এই মৃত্যুগুলোকে—যার মধ্যে কথিত আত্মহত্যা বা হার্ট অ্যাটাক রয়েছে—নির্বাচনী কাজসংক্রান্ত মানসিক চাপের ফল বলে মনে করছেন। তবে বিবিসির পক্ষে মৃত্যুর কারণগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। বিবিসির পাঠানো বিস্তারিত প্রশ্নের তালিকার কোনো জবাব ভারতের নির্বাচন কমিশন দেয়নি।
গুজরাটে অরবিন্দভাই ভাধের নামে এক প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক নাকি গত মাসেই ‘বিএলও–এর কাজের অত্যাচারের কারণে’ আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর পরিবার বিবিসিকে জানিয়েছে। মৃত্যুর আগে তাঁর লেখা একটি নোট বিবিসি দেখেছে। সেখানে ভাধের বলেছিলেন, বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি ‘অবিরাম ক্লান্তি ও মানসিক চাপে’ ভুগছিলেন।
অন্য এক ঘটনায় গুজরাটের এক স্কুলের প্রধান রমেশভাই পারমার এসআইআর-এর কাজের চাপ নেওয়ার পর রাতে ঘুমন্ত অবস্থাতেই মারা যান বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। পারমারের মেয়ে শিল্পাবেন বলেন, তাঁর বাবা প্রায়ই অনেক লম্বা সময় ধরে বা রাত অবধি কাজ করতেন। যেদিন তিনি মারা যান, সেদিনও তিনি এসআইআর-এর কাজে অনেক বার বাইরে গিয়েছিলেন এবং না খেয়েই শুতে গিয়েছিলেন।
এতগুলো মৃত্যুর পর এখন পোল কর্মীদের কাজের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী দলের নেতারা ইসির ও সরকারের সমালোচনা করেছেন, এত দ্রুত এসআইআর কাজ শেষ করতে চাওয়ার জন্য। (এর আগে ২০০২-২০০৩ সালে এসআইআর-এর কাজ ছয় মাস ধরে করা হয়েছিল।)
আদালতে পেশ করা একটি হলফনামার সূত্রে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, এসআইআর-এর কাজের সঙ্গে বিএলওদের মৃত্যুর যোগ থাকার বিরোধীদের দাবি নির্বাচন কমিশন অস্বীকার করেছে। তারা এই সব দাবিকে ‘মিথ্যা, অত্যুক্তিপূর্ণ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছে। গত সপ্তাহে ইসি জানিয়েছে, এসআইআর-এর সময়সীমা ৪ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ১১ ডিসেম্বর করা হবে। তবে এর কারণ তারা জানায়নি।
কিন্তু উত্তর প্রদেশের নয়ডায় একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে এসআইআর-এর নেতৃত্ব দেওয়া এক স্কুলশিক্ষিকা মনীষা কুমারী (ছদ্মনাম) বলছেন, এই বাড়তি সময়ের মধ্যেও তিনি কাজ শেষ করতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন। গত এক মাস ধরে কুমারী ভোর পাঁচটায় উঠে বাড়ির কাজ সারেন ও ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি করেন। তারপর সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা-ছয়টা অবধি এসআইআর-এর কাজ করেন।
তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘যেটুকু অল্প বিরতি পাই, সেটা খরচ হয় সেই সব লোকদের খুঁজে বের করার জন্য, যাঁরা প্রথমবার যখন গিয়েছিলাম, তখন বাড়িতে ছিলেন না।’ সন্ধ্যায়ও তাঁর নিস্তার নেই। বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করার পর তিনি এসআইআর অ্যাপে লগইন করে যাচাই করা ফরমগুলো আপলোড করেন। কিন্তু অ্যাপটি প্রায়ই ‘ক্র্যাশ’ করে, তাই কাজ শেষ করতে তাঁকে আবার মাঝরাতের পর চেষ্টা করতে হয়। তিনি বলেন, ‘৪ নভেম্বর থেকে আজ অবধি আমার একটিও ছুটি নেই।’ তিনি আরও জানান, ক্লাসে তাঁর অনুপস্থিতির কারণে ছাত্রছাত্রীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
ভারতের বহু সরকারি স্কুলে কর্মীর অভাব রয়েছে। শিক্ষকেরা বলছেন, এই ধরনের কাজের জন্য তাঁদের ক্লাস থেকে তুলে নিলে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতি হয়। কিছু বিএলও বিবিসিকে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যের ওপর এর খারাপ প্রভাব থাকা সত্ত্বেও তাঁরা এই কঠিন কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ তাঁরা আইনি পদক্ষেপের ভয় পান।
সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের কর্মকর্তারা এসআইআর-এর কাজে অবহেলার অভিযোগে পোল কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আর অন্য রাজ্যগুলোতেও কাজ করতে না চাইলে জেল বা চাকরি হারানোর হুমকির খবর পাওয়া গেছে। উত্তর প্রদেশের হিসাবরক্ষক সুধীর কুমার কোরি নাকি তাঁর বিয়ের জন্য এক দিনের ছুটি নেওয়ায় তাঁর ঊর্ধ্বতন তাঁকে বকাবকি করেছিলেন। এরপরই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর পরিবার বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছে।
গাজিয়াবাদের এক পোল কর্মী সুনীল সিং (ছদ্মনাম) বলেছেন, গত কয়েক দিনে তাঁর ‘প্লেটলেট সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে গেছে’ কিন্তু এসআইআর-এর কাজের জন্য তাঁকে ছুটি নিতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমাকে ডাক্তার বিশ্রাম নিতে বলেছেন, কিন্তু এই কর্মকর্তারা কানেও নিচ্ছেন না। ছুটি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো হাসপাতালে ভর্তি হওয়া।’ তিনি আরও জানান, তিনি রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভাগের তাঁর চাকরিটি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন।
বিএলওদের তাঁদের কাজের চাপ নিয়ে আবেদন জানানোর কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই। কিন্তু তাঁরা বিক্ষোভ করেছেন এবং সময়সীমা বাড়ানোর ও ভালো কাজের পরিবেশের জন্য ইসি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে চিঠিও লিখেছেন। কিছু রাজ্য এই কাজের জন্য ছাত্র স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে লাগাচ্ছে, আবার উত্তর প্রদেশের কিছু জেলায় সেরা কাজ করা বিএলওদের নগদ অর্থ, উপহার ও অন্য পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে যে, বিএলওদের দীর্ঘ কাজের সময় কমাতে এসআইআর কাজের জন্য যেন অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়। এখন ইসি বিএলওদের পারিশ্রমিক ছয় হাজার রুপি থেকে বাড়িয়ে বারো হাজার রুপি করেছে এবং সুপারভাইজারদের পারিশ্রমিক বারো হাজার রুপি থেকে আঠারো হাজার রুপি করেছে। এর পাশাপাশি বিএলওদের জন্য ছয় হাজার রুপির এসআইআর উৎসাহ-ভাতা যোগ করেছে। কিন্তু অনেক বিএলও বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা এখনো কোনো টাকাই পাননি, আর তাঁদের প্রাপ্য কত টাকা, তা-ও অনেকে জানেন না।
এর আগে এক ক্ষেত্রে, ইসি পশ্চিমবঙ্গে বিএলওদের টাকা দিতে দেরি হওয়ার জন্য রাজ্যকে দায়ী করেছিল, আবার রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তহবিল আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছিল। অনেক বিএলও বিবিসিকে বলেন, তাঁরা এসআইআর-এর কাজের জন্য নিজেদের টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নয়ডার এক পোল কর্মী বলেন, ‘টাকা পাই কি না, দেখি। আশা খুবই কম।’

১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি।
০৫ জুলাই ২০২৪
দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান বা চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির গত রোববার মন্তব্য করেছেন যে, গাজায় ‘হলুদ রেখা’ নামে যে সীমারেখা বরাবর দখলদার বাহিনী পিছু হটেছে সেটিই এখন গাজা উপত্যকাকে ফিলিস্তিনিদের বাকি অধিকৃত ভূখণ্ড থেকে আলাদা করা এক নতুন সীমান্ত হিসেবে কাজ করবে।
১ ঘণ্টা আগে
বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ এবং আসন্ন ‘তেলেঙ্গানা রাইজিং গ্লোবাল সামিট’-এর আগে রাজ্যের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি। তিনি হায়দরাবাদের একটি প্রধান সড়কের নামকরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক দূত জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি ‘সত্যিই খুব কাছাকাছি।’ শুধু দুটি প্রধান সমস্যার সমাধান বাকি। তবে ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাবে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ এবং আসন্ন ‘তেলেঙ্গানা রাইজিং গ্লোবাল সামিট’-এর আগে রাজ্যের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি। তিনি হায়দরাবাদের একটি প্রধান সড়কের নামকরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
মার্কিন কনস্যুলেট জেনারেলের পাশ দিয়ে যাওয়া এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি খুব শিগগিরই ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাভিনিউ’ হিসেবে পরিচিত হতে চলেছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মনে করছেন, কোনো ক্ষমতাসীন বা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের নামে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কোনো প্রধান সড়কের নামকরণ এটাই প্রথম।
তবে এই নামকরণের স্রোত কেবল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। হায়দরাবাদকে দেশের অন্যতম টেক হাব হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যে সমস্ত বৈশ্বিক ব্যবসায়িক এবং প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর অবদান রয়েছে, তাদেরও সম্মান জানাতে চাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই তালিকায় রয়েছে একাধিক প্রধান সড়কের নামকরণ:
এই অঞ্চলে অ্যালফাবেটের প্রযুক্তি সংস্থাটির বিপুল বিনিয়োগ ও উপস্থিতিকে স্বীকৃতি দিতে একটি প্রধান রাস্তার নামকরণ করা হচ্ছে ‘গুগল স্ট্রিট’। এ ছাড়া, ‘মাইক্রোসফট রোড’ এবং ‘উইপ্রো জংশন’-এর মতো অন্যান্য বিশ্বখ্যাত নামগুলোও বিবেচনাধীন।
রাজ্য সরকার রাভিরালাতে নেহরু আউটার রিং রোডকে প্রস্তাবিত ফিউচার সিটির সঙ্গে সংযোগকারী ১০০ মিটার গ্রিনফিল্ড রেডিয়াল রোডটির নামকরণ পদ্মভূষণ রতন টাটার নামে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাভিরালার ইন্টারচেঞ্জ ইতিমধ্যেই ‘টাটা ইন্টারচেঞ্জ’ হিসাবে মনোনীত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী রেড্ডি এই উদ্যোগের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এবং বৃহৎ করপোরেশনগুলোর নামে রাস্তার নামকরণ দ্বৈত উদ্দেশ্য সাধন করবে। এটি একদিকে যেমন তাদের প্রতি উপযুক্ত শ্রদ্ধা জানানো হবে, তেমনই সাধারণ মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হবে। একই সঙ্গে, এটি হায়দরাবাদকে বিশ্ব দরবারে এক উচ্চতর স্থানে পৌঁছে দেবে।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা বন্ডি সঞ্জয় কুমার। তিনি রেড্ডির সমালোচনা করে বলেন, হায়দরাবাদের নাম পরিবর্তন করে ‘ভাগ্যনগর’-এ ফিরিয়ে আনা উচিত।
এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘কংগ্রেস সরকার যদি নাম পরিবর্তনে এতই আগ্রহী হয়, তবে তাদের এমন কিছু দিয়ে শুরু করা উচিত যার ঐতিহাসিক তাৎপর্য এবং অর্থ আছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, রেভান্থ রেড্ডি ‘যারা ট্রেন্ডিং’-শুধু তাদের নামেই জায়গার নামকরণ করছেন। সঞ্জয় কুমার আরও দাবি করেন, শুধু বিজেপিই সরকারের মধ্যে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং মহাধর্ণা-এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রকৃত সমস্যা নিয়ে লড়ছে।
বিজেপি সরকার অবশ্য উত্তর প্রদেশ, আসামসহ বিভিন্ন রাজ্যে বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রামের নাম পরিবর্তন করেছে। বিশেষ করে মুসলিম শাসনামলে দেওয়া নামগুলো পরিবর্তন করে তারা হিন্দুধর্ম সংশ্লিষ্ট নাম দিচ্ছে।
আবার অপারেশন সিঁদুর ও ট্যারিফ ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিজেপি সরকারের টানাপোড়েন চলছে।

বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ এবং আসন্ন ‘তেলেঙ্গানা রাইজিং গ্লোবাল সামিট’-এর আগে রাজ্যের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি। তিনি হায়দরাবাদের একটি প্রধান সড়কের নামকরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
মার্কিন কনস্যুলেট জেনারেলের পাশ দিয়ে যাওয়া এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি খুব শিগগিরই ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাভিনিউ’ হিসেবে পরিচিত হতে চলেছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মনে করছেন, কোনো ক্ষমতাসীন বা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের নামে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কোনো প্রধান সড়কের নামকরণ এটাই প্রথম।
তবে এই নামকরণের স্রোত কেবল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। হায়দরাবাদকে দেশের অন্যতম টেক হাব হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যে সমস্ত বৈশ্বিক ব্যবসায়িক এবং প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর অবদান রয়েছে, তাদেরও সম্মান জানাতে চাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই তালিকায় রয়েছে একাধিক প্রধান সড়কের নামকরণ:
এই অঞ্চলে অ্যালফাবেটের প্রযুক্তি সংস্থাটির বিপুল বিনিয়োগ ও উপস্থিতিকে স্বীকৃতি দিতে একটি প্রধান রাস্তার নামকরণ করা হচ্ছে ‘গুগল স্ট্রিট’। এ ছাড়া, ‘মাইক্রোসফট রোড’ এবং ‘উইপ্রো জংশন’-এর মতো অন্যান্য বিশ্বখ্যাত নামগুলোও বিবেচনাধীন।
রাজ্য সরকার রাভিরালাতে নেহরু আউটার রিং রোডকে প্রস্তাবিত ফিউচার সিটির সঙ্গে সংযোগকারী ১০০ মিটার গ্রিনফিল্ড রেডিয়াল রোডটির নামকরণ পদ্মভূষণ রতন টাটার নামে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাভিরালার ইন্টারচেঞ্জ ইতিমধ্যেই ‘টাটা ইন্টারচেঞ্জ’ হিসাবে মনোনীত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী রেড্ডি এই উদ্যোগের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এবং বৃহৎ করপোরেশনগুলোর নামে রাস্তার নামকরণ দ্বৈত উদ্দেশ্য সাধন করবে। এটি একদিকে যেমন তাদের প্রতি উপযুক্ত শ্রদ্ধা জানানো হবে, তেমনই সাধারণ মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হবে। একই সঙ্গে, এটি হায়দরাবাদকে বিশ্ব দরবারে এক উচ্চতর স্থানে পৌঁছে দেবে।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা বন্ডি সঞ্জয় কুমার। তিনি রেড্ডির সমালোচনা করে বলেন, হায়দরাবাদের নাম পরিবর্তন করে ‘ভাগ্যনগর’-এ ফিরিয়ে আনা উচিত।
এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘কংগ্রেস সরকার যদি নাম পরিবর্তনে এতই আগ্রহী হয়, তবে তাদের এমন কিছু দিয়ে শুরু করা উচিত যার ঐতিহাসিক তাৎপর্য এবং অর্থ আছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, রেভান্থ রেড্ডি ‘যারা ট্রেন্ডিং’-শুধু তাদের নামেই জায়গার নামকরণ করছেন। সঞ্জয় কুমার আরও দাবি করেন, শুধু বিজেপিই সরকারের মধ্যে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং মহাধর্ণা-এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রকৃত সমস্যা নিয়ে লড়ছে।
বিজেপি সরকার অবশ্য উত্তর প্রদেশ, আসামসহ বিভিন্ন রাজ্যে বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রামের নাম পরিবর্তন করেছে। বিশেষ করে মুসলিম শাসনামলে দেওয়া নামগুলো পরিবর্তন করে তারা হিন্দুধর্ম সংশ্লিষ্ট নাম দিচ্ছে।
আবার অপারেশন সিঁদুর ও ট্যারিফ ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিজেপি সরকারের টানাপোড়েন চলছে।

১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি।
০৫ জুলাই ২০২৪
দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান বা চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির গত রোববার মন্তব্য করেছেন যে, গাজায় ‘হলুদ রেখা’ নামে যে সীমারেখা বরাবর দখলদার বাহিনী পিছু হটেছে সেটিই এখন গাজা উপত্যকাকে ফিলিস্তিনিদের বাকি অধিকৃত ভূখণ্ড থেকে আলাদা করা এক নতুন সীমান্ত হিসেবে কাজ করবে।
১ ঘণ্টা আগে
কয়েক দিন আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের স্কুলশিক্ষক সর্বেশ কুমারকে তাঁর বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে তিনি নাকি একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন, যেখানে তাঁকে কাঁদতে দেখা যায়। সেখানে তিনি নির্বাচনী কাজের চাপের কথা বলেছিলেন এবং সময়মতো কাজটি শেষ করতে না পারায় খুবই হতাশ ছিলেন।
৩ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক দূত জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি ‘সত্যিই খুব কাছাকাছি।’ শুধু দুটি প্রধান সমস্যার সমাধান বাকি। তবে ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাবে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক দূত জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি ‘সত্যিই খুব কাছাকাছি।’ শুধু দুটি প্রধান সমস্যার সমাধান বাকি। তবে ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাবে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নিজেকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবে স্মরণীয় করে রাখতে চাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের এই মারাত্মক সংঘাত থামানো তাঁর প্রেসিডেন্সির সময়কালের অন্যতম অধরা বিদেশনীতির লক্ষ্য হয়ে রয়েছে।
রাশিয়ার মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী আর ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে দনবাস (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ে গঠিত) অঞ্চলে আট বছর ধরে চলা লড়াইয়ের পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে। ট্রাম্পের ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলগ আগামী জানুয়ারিতে পদত্যাগ করতে চলেছেন। তিনি গতকাল রোববার রিগান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোরামে বলেছেন, সংঘাত মেটানোর প্রচেষ্টা ‘শেষ ১০ মিটারের’ মধ্যে আছে, যা সব সময়ই সবচেয়ে কঠিন।
কেলগ জানিয়েছেন, যে দুটি প্রধান সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়েছে—তার মধ্যে একটি হলো ভূখণ্ড। মূলত দনবাসের ভবিষ্যৎ। অন্যটি হলো—ইউরোপের বৃহত্তম জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভবিষ্যৎ, যা এখন রাশিয়ার দখলে।
ক্যালিফোর্নিয়ার সিমি ভ্যালিতে রোনাল্ড রেগান প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরি ও জাদুঘরে কেলগ বলেন, ‘আমরা যদি এই দুটি সমস্যার সমাধান করতে পারি, তবে আমার মনে হয় বাকি সবকিছুই বেশ ভালোভাবে মিটে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি।’ কেলগ জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা সত্যি, সত্যি খুব কাছাকাছি।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত সপ্তাহে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে ক্রেমলিনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বৈঠকের পুতিনের প্রধান বিদেশনীতি বিষয়ক সহকারী ইউরি উশাকভ জানিয়েছিলেন যে ‘ভূখণ্ডগত সমস্যা’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ক্রেমলিনের ভাষায় এর মানে হলো, রাশিয়া পুরো দনবাসের ওপর তাদের দাবি জানাচ্ছে। যদিও ইউক্রেন এখনও ওই অঞ্চলের অন্তত ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রায় সব দেশই দনবাসকে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়াটা বেআইনি হবে এবং এর ফলে রাশিয়া ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণ করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম পেয়ে যাবে।
রুশ সংবাদমাধ্যম রোববার উশাকভের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ইউক্রেন সংক্রান্ত ‘নথিপত্রগুলোতে আমেরিকাকে গুরুতর, আমি বলব, মৌল পরিবর্তন’ আনতে হবে। মস্কো ঠিক কী ধরনের পরিবর্তন চাইছে, সে ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। জেলেনস্কি শনিবার জানিয়েছেন, উইটকফ এবং কুশনারের সঙ্গে তার দীর্ঘ ও ফোনালাপ হয়েছে। ক্রেমলিন বলেছে, তারা আশা করছে সম্ভাব্য চুক্তিটির খসড়া তৈরির প্রধান কাজটি কুশনার করবেন।
ভিয়েতনাম, পানামা ও ইরাকে দায়িত্ব পালন করা সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেলগ বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রাণহানি ও আহতের মাত্রা ‘ভয়াবহ’ এবং আঞ্চলিক যুদ্ধের দিক থেকে দেখলে এটি নজিরবিহীন। কেলগ বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় পক্ষে সম্মিলিতভাবে ২০ লাখের বেশি হতাহত হয়েছে। রাশিয়া বা ইউক্রেন কেউই তাদের ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য হিসাব প্রকাশ করে না।
রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মধ্যে আছে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া, সমগ্র লুহানস্ক, দোনেৎস্কের ৮০ শতাংশের বেশি, খেরসন ও জাপোরিঝিয়ার প্রায় ৭৫ শতাংশ এবং খারকিভ, সুমি, মিকোলাইভ ও নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ।
গত মাসে ফাঁস হওয়া ২৮টি মার্কিন শান্তি প্রস্তাবের একটি খসড়া ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল। তাদের দাবি—ন্যাটো, ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর ওপর বিধিনিষেধের মতো মস্কোর প্রধান দাবিগুলোর কাছে এটি নতি স্বীকার করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক দূত জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি ‘সত্যিই খুব কাছাকাছি।’ শুধু দুটি প্রধান সমস্যার সমাধান বাকি। তবে ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাবে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নিজেকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবে স্মরণীয় করে রাখতে চাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের এই মারাত্মক সংঘাত থামানো তাঁর প্রেসিডেন্সির সময়কালের অন্যতম অধরা বিদেশনীতির লক্ষ্য হয়ে রয়েছে।
রাশিয়ার মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী আর ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে দনবাস (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ে গঠিত) অঞ্চলে আট বছর ধরে চলা লড়াইয়ের পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে। ট্রাম্পের ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলগ আগামী জানুয়ারিতে পদত্যাগ করতে চলেছেন। তিনি গতকাল রোববার রিগান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোরামে বলেছেন, সংঘাত মেটানোর প্রচেষ্টা ‘শেষ ১০ মিটারের’ মধ্যে আছে, যা সব সময়ই সবচেয়ে কঠিন।
কেলগ জানিয়েছেন, যে দুটি প্রধান সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়েছে—তার মধ্যে একটি হলো ভূখণ্ড। মূলত দনবাসের ভবিষ্যৎ। অন্যটি হলো—ইউরোপের বৃহত্তম জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভবিষ্যৎ, যা এখন রাশিয়ার দখলে।
ক্যালিফোর্নিয়ার সিমি ভ্যালিতে রোনাল্ড রেগান প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরি ও জাদুঘরে কেলগ বলেন, ‘আমরা যদি এই দুটি সমস্যার সমাধান করতে পারি, তবে আমার মনে হয় বাকি সবকিছুই বেশ ভালোভাবে মিটে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি।’ কেলগ জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা সত্যি, সত্যি খুব কাছাকাছি।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত সপ্তাহে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে ক্রেমলিনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বৈঠকের পুতিনের প্রধান বিদেশনীতি বিষয়ক সহকারী ইউরি উশাকভ জানিয়েছিলেন যে ‘ভূখণ্ডগত সমস্যা’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ক্রেমলিনের ভাষায় এর মানে হলো, রাশিয়া পুরো দনবাসের ওপর তাদের দাবি জানাচ্ছে। যদিও ইউক্রেন এখনও ওই অঞ্চলের অন্তত ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রায় সব দেশই দনবাসকে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়াটা বেআইনি হবে এবং এর ফলে রাশিয়া ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণ করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম পেয়ে যাবে।
রুশ সংবাদমাধ্যম রোববার উশাকভের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ইউক্রেন সংক্রান্ত ‘নথিপত্রগুলোতে আমেরিকাকে গুরুতর, আমি বলব, মৌল পরিবর্তন’ আনতে হবে। মস্কো ঠিক কী ধরনের পরিবর্তন চাইছে, সে ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। জেলেনস্কি শনিবার জানিয়েছেন, উইটকফ এবং কুশনারের সঙ্গে তার দীর্ঘ ও ফোনালাপ হয়েছে। ক্রেমলিন বলেছে, তারা আশা করছে সম্ভাব্য চুক্তিটির খসড়া তৈরির প্রধান কাজটি কুশনার করবেন।
ভিয়েতনাম, পানামা ও ইরাকে দায়িত্ব পালন করা সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেলগ বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রাণহানি ও আহতের মাত্রা ‘ভয়াবহ’ এবং আঞ্চলিক যুদ্ধের দিক থেকে দেখলে এটি নজিরবিহীন। কেলগ বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় পক্ষে সম্মিলিতভাবে ২০ লাখের বেশি হতাহত হয়েছে। রাশিয়া বা ইউক্রেন কেউই তাদের ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য হিসাব প্রকাশ করে না।
রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মধ্যে আছে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া, সমগ্র লুহানস্ক, দোনেৎস্কের ৮০ শতাংশের বেশি, খেরসন ও জাপোরিঝিয়ার প্রায় ৭৫ শতাংশ এবং খারকিভ, সুমি, মিকোলাইভ ও নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ।
গত মাসে ফাঁস হওয়া ২৮টি মার্কিন শান্তি প্রস্তাবের একটি খসড়া ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল। তাদের দাবি—ন্যাটো, ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর ওপর বিধিনিষেধের মতো মস্কোর প্রধান দাবিগুলোর কাছে এটি নতি স্বীকার করেছে।

১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি।
০৫ জুলাই ২০২৪
দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান বা চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির গত রোববার মন্তব্য করেছেন যে, গাজায় ‘হলুদ রেখা’ নামে যে সীমারেখা বরাবর দখলদার বাহিনী পিছু হটেছে সেটিই এখন গাজা উপত্যকাকে ফিলিস্তিনিদের বাকি অধিকৃত ভূখণ্ড থেকে আলাদা করা এক নতুন সীমান্ত হিসেবে কাজ করবে।
১ ঘণ্টা আগে
কয়েক দিন আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের স্কুলশিক্ষক সর্বেশ কুমারকে তাঁর বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে তিনি নাকি একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন, যেখানে তাঁকে কাঁদতে দেখা যায়। সেখানে তিনি নির্বাচনী কাজের চাপের কথা বলেছিলেন এবং সময়মতো কাজটি শেষ করতে না পারায় খুবই হতাশ ছিলেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ এবং আসন্ন ‘তেলেঙ্গানা রাইজিং গ্লোবাল সামিট’-এর আগে রাজ্যের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি। তিনি হায়দরাবাদের একটি প্রধান সড়কের নামকরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
৪ ঘণ্টা আগে