পরাগ মাঝি
১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি। সংগঠন করতেন বলে থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই একটি সরোরিটি হাউসে। একই সংগঠনের আরও জনা ত্রিশেক ছাত্রী ছিলেন ওই বাড়িতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রেমের উন্মাদনা আর বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-আড্ডায় দেখতে দেখতে কেটে গেল দুই বছর। তার পরই একদিন জীবনের এক কঠিন পরিণতির মুখোমুখি হলেন তিনি।
১৯৭৮ সালের জানুয়ারি মাসের সেই দিনটি ছিল শনিবার। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্লান্ত ছিলেন ক্যাথি। দুই দিন পরই ছিল ক্যালকুলাস পরীক্ষা। তাই একটু পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু শরীর আর সায় দিল না। সেদিন তাই মাঝরাতের আগেই রুমমেট কারেন শ্যান্ডলারকে নিয়ে লাইট বন্ধ করে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
মাঝরাত পেরিয়ে গেলে ঘুমের ঘোরেই কানে বাজে রুমের দরজা খোলার আওয়াজ। চোখ মেলে আলো-আঁধারির মাঝে চশমা ছাড়াই ক্যাথি দেখতে পান একটি মানুষের শরীর। সামনে দাঁড়িয়ে যেন তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছে! এর পরই দেখা গেল একটি হাত উঁচিয়ে ধরেছে অবয়বটি। পরক্ষণেই ক্যাথির মুখের ওপর সজোরে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করল সে। ক্যাথির কাছে এই আঘাতকে একটি চড়ের মতো মনে হলো। যেন কোনো ব্যথাই পেলেন না তিনি। কিন্তু ওক গাছের একটি মোটা ডাল দিয়ে করা ওই আঘাতে ততক্ষণে চুরমার হয়ে গেছে ক্যাথির চোয়াল। গালের একপাশ ছিঁড়ে ঝুলে পড়েছে।
এর পরই ক্যাথির রুমমেট কারেনের বিছানার দিকে এগিয়ে যায় লোকটি। কারণ ততক্ষণে জেগে উঠেছিলেন কারেন। নির্মমভাবে আঘাত করা হয় তাঁকেও। ক্যাথি তখন চিৎকার করার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো আওয়াজই বের হলো না। কারেনকে আঘাত করে লোকটি যখন দ্বিতীয়বারের মতো ক্যাথির দিকে এগিয়ে এল, তখনই জানালা দিয়ে একটি গাড়ির হেডলাইটের উজ্জ্বল আলো এসে তার মুখের ওপর পড়ল। সরোরিটি হাউসে বসবাস করা এক ছাত্রীকে নামিয়ে দিতে এসেছিল ওই গাড়ি। মুখে আলো এসে পড়ায় ভরকে যায় হামলাকারী এবং রুম থেকে দৌড়ে পালায়। পালানোর সময়ও ওই বাড়ির কয়েক ব্লক দূরে আরেকটি বাড়িতে ঢুকে শেরিল থমাস নামে আরও এক নারীকে গুরুতর জখম করে যায় সে।
আদালতে প্রমাণ হয়েছিল, সেদিনের সেই হামলাকারী আর কেউ নন—আমেরিকার সবচেয়ে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি। ক্যাথি আর কারেন সৌভাগ্যক্রমে তাঁর হাত থেকে বেঁচে গেলেও সেদিন রাতে ওই সরোরিটি হাউসেরই অন্য দুই ছাত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন তিনি। তাঁদের একজন মার্গারেট বোম্যান, অন্যজন লিসা লেভি। মূলত ওই বাড়িতে সবার আগে মার্গারেটের রুমেই প্রবেশ করেছিলেন বান্ডি। মার্গারেটকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তিনি যান লিসার রুমে। নির্মমভাবে হত্যা করেন তাঁকেও। শুধু তাই নয়, লিসার নিথর হয়ে যাওয়া দেহটিকে তিনি পাশবিক উপায়ে ধর্ষণও করেন। লিসার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল তাঁর কামড়ের দাগ। আর এই কামড়ের দাগই প্রমাণ করেছিল বান্ডির অপরাধ। ফ্লোরিডার আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।
কিন্তু ফ্লোরিডার ওই ঘটনা ছিল টেড বান্ডির দ্বারা সংঘটিত সর্বশেষ নৃশংসতাগুলোর একটি। এর আগেই ওয়াশিংটন, ওরেগন, কলোরাডো, ইউটাহসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত সাতটি অঙ্গরাজ্যে আরও অসংখ্য নারীর জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছিলেন এই সুশিক্ষিত, স্মার্ট এবং সুদর্শন যুবক। নিজের জবানিতেই তিনি অন্তত ৩০ জন নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছিলেন। যদিও তাঁর শিকারের সংখ্যা ৪০-এর বেশি বলে মনে করেন অনেকে। এসব হত্যাকাণ্ডের বেশির ভাগই সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে।
১৯৭৪ সালের বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে ওয়াশিংটন এবং ওরেগন থেকে যখন একের পর এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এর নেপথ্যের ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছিল রাজ্য দুটির পুলিশ। সেবার এ দুটি রাজ্যে মাত্র ছয় মাসেই ছয়জন নারী অপহৃত হন। ওয়াশিংটনের সিয়াটলে লেক সামামিশ স্টেট পার্ক থেকে একই দিনে প্রকাশ্য দিবালোকে নিখোঁজ হয়ে যান জেনিস অ্যান ও ডেনিস মেরি নামের দুই তরুণী। এ ঘটনা পুরো অঞ্চলে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তবে সেদিনই খুনিকে ধরার জন্য একটি সূত্র পেয়ে যায় পুলিশ। এক নারী এসে দাবি করেন, সুদর্শন এক যুবক তাঁকেও অপহরণ করতে চেয়েছিলেন। সরল বিশ্বাসে তিনি ওই যুবককে সাহায্য করতে গিয়েছিলেন। কারণ যুবকের একটি হাত আর্ম স্লিংয়ে (ব্যথাযুক্ত হাত গলায় ঝুলিয়ে রাখা) বাঁধা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সন্দেহ হলে তিনি যুবকের গাড়ির কাছ থেকে দ্রুত সরে এসেছিলেন।
টেড বান্ডির কাছ থেকে বেঁচে যাওয়া সেই নারীই পুলিশকে তাঁর চেহারা, বয়স ও শরীরের গড়ন সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, ঘন বাদামি চুলের ওই যুবকের ভক্সওয়াগন টেন বিটল মডেলের গাড়িটিও ছিল বাদামি। আর তাঁর চোখের মণি দুটি ছিল নীল।
নারীর বর্ণনা শুনে আঁকা একটি ছবি পরে পত্রিকায় প্রকাশ করে সন্দেহভাজন ব্যক্তির সন্ধান চায় পুলিশ। এই ছবি দেখে পুলিশের সঙ্গে অসংখ্য মানুষ যোগাযোগ করেন এবং সন্দেহভাজনদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। তবে তাঁদের মধ্যে অন্তত চারজন ছবিটি দেখে টেড বান্ডির মতো মনে হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। এই চারজনের মধ্যে একজন ছিলেন বান্ডির ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু, একজন তাঁর সহকর্মী এবং একজন শিক্ষক ছাড়াও ছিলেন তাঁর সেই সময়ের প্রেমিকা এলিজাবেথ ক্লোয়েফার! একটি পার্টিতে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁদের। দুবার বিবাহবিচ্ছেদের মুখোমুখি হওয়া এবং এক কন্যাসন্তানের জননী এলিজাবেথ প্রথম দেখাতেই বান্ডির প্রেমে পড়েছিলেন।
এদিকে চারজন টেড বান্ডির সঙ্গে সন্দেহভাজন ব্যক্তির চেহারার মিল থাকার কথা জানালেও পুলিশ তা শুরুতে উড়িয়ে দেয়। আইনে অধ্যয়নরত, এমন সুদর্শন আর মার্জিত ব্যক্তিত্বের একজন মানুষ, অতীতে যার কোনো অপরাধের রেকর্ডও নেই, তিনি কীভাবে একের পর এক নারীকে খুন করবেন, তা ছিল পুলিশের কল্পনারও অতীত। ১৯৭৮ সালে ফ্লোরিডার আদালতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এমন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বহুবার পার পেয়ে গেছেন বান্ডি। এমনকি তাঁর প্রতি মানুষের এমন মনোভবের সুযোগ নিয়ে দুবার জেল থেকেও পালিয়েছিলেন তিনি।
সন্দেহভাজন হিসেবে শুরুতে টেড বান্ডির বিষয়টি উড়িয়ে দিলেও পুলিশ ঠিকই তাঁর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছিল। একপর্যায়ে ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট তাঁকে ট্রাফিক অমান্যের ফাঁদে ফেলে গ্রেপ্তারও করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর ভক্সওয়াগন টেন বিটল গাড়িটির ভেতরে একটি ধাতব দণ্ড, হ্যান্ডকাফ, রশি, গ্লাভস, মুখোশসহ সন্দেহজনক কিছু জিনিস জব্দ করা হয়। সে যাত্রায় জুতসই প্রমাণের অভাবে খুব দ্রুতই ছাড়া পেয়ে যান বান্ডি। তবে পুলিশের নজর বলে কথা! ফলে খুব ঘন ঘন তাঁকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয় এবং আদালতে তাঁর হাজিরা দেওয়া একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়।
১৯৭৫ সালেই বান্ডিকে ক্যারল ডেরঞ্চ নামে এক নারীকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপহরণের পর বান্ডির হাত থেকে ফসকে গিয়েছিলেন ক্যারল। ফলে এই অপহরণে অবধারিতভাবে দোষী সাব্যস্ত হন বান্ডি। তাঁকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কলোরাডোর অ্যাসপেন কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় ১৯৭৭ সালে কলোরাডোর আরেক তরুণীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে। এই মামলায় নিজেই নিজের আইনজীবী হিসেবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেন আইনের ছাত্র বান্ডি। এর ফলে তিনি আইনবিষয়ক পড়াশোনার জন্য আদালত চত্বরের লাইব্রেরিতে যাতায়াতের সুযোগ পেতেন। এই সুযোগেই একদিন লাইব্রেরির দোতলার জানালা থেকে লাফ দিয়ে পালান। কিন্তু আট দিনের মাথায় তিনি আবারও ধরা পড়ে যান।
সেই বছরের ডিসেম্বরে বান্ডি আবারও পালান। এবার অ্যাসপান কারাগারের যে কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছিল, সেই কক্ষের ছাদ কেটে ছোট একটি গর্ত তৈরি করেছিলেন তিনি। আর এই গর্ত দিয়ে সহজে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য শরীরের ১৪ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন। গর্ত দিয়ে বেরিয়ে তিনি জেলারের অফিসকক্ষে ঢুকে পড়েছিলেন। জেলার বাইরে থাকায় সেখানেই কয়েদির পোশাক পাল্টে সাধারণ মানুষের বেশে জেল থেকে বেরিয়ে যান। কেউ তাঁকে সন্দেহও করেনি। এবার আর কোনো ভুল করেননি বান্ডি। যত দ্রুত সম্ভব কলোরাডো ছেড়ে প্রায় ২ হাজার মাইল দূরের অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডায় গিয়ে হাজির হন। যথারীতি সেখানেও তিনি দুজন নারীকে হত্যার পাশাপাশি আরও তিনজনকে মারাত্মক আহত করেন। গল্পের শুরুতে বলা ক্যাথি ক্লেইনার ছিলেন তাঁদেরই একজন।
সরোরিটি হাউসে সেদিনের সেই হামলার পর ফ্লোরিডায়ই কিম্বার্লি ডায়ান লিচ নামে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকেও অপহরণের পর হত্যা করেছিলেন বান্ডি। ফেরারি জীবনে ফ্লোরিডায় কোনো পরিচয়পত্র তৈরির সুযোগ ছিল না তাঁর। ফলে চাকরিও জোটেনি। এ অবস্থায় চুরি আর ছিনতাই করেই দিন কাটছিল তাঁর। চুরি করা একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চালাতে গিয়েই ফ্লোরিডার পুলিশের হাতে তিনি ধরা পড়ে যান। তবে পুলিশ তখনো জানত না এটাই আলোচিত ও কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি।
বান্ডির পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায়ই ওই রাজ্যের তিন নারীকে হত্যা এবং আরও তিনজনের ওপর গুরুতর হামলার অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এবারও নিজের মামলা নিজেই লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই মামলা মিডিয়ার মাধ্যমে শুধু আমেরিকায় নয়, সারা পৃথিবীতেই আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়। মানুষের আগ্রহের কারণেই মামলাটির শুনানি হয় ক্যামেরার সামনে। অবাক করা বিষয় হলো, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলা চলার দিনগুলোতে আদালতকক্ষের ভেতরে বান্ডির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অসংখ্য মানুষ অবস্থান করতেন। বান্ডির এসব সমর্থকের প্রায় সবাই ছিলেন নারী। শুনানির সময় বান্ডি কোনো যুক্তি কিংবা পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করলে ওই নারীরা শিস বাজাতেন, হাততালি দিয়ে তাঁকে সাধুবাদ জানাতেন। নীল চোখে বান্ডি তাঁদের দিকে একনজর তাকিয়ে মুচকি হেসে নিজের আসনে গিয়ে বসতেন। শুনানির সেই দিনগুলোতে আদালতকক্ষে একজন নারীর উপস্থিতি ছিল অবশ্যম্ভাবী। তাঁর নাম ক্যারল অ্যান বোনি। অনেক আগে থেকেই বান্ডির প্রেমে পাগল ছিলেন তিনি। ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বান্ডিকে বিয়েও করেছিলেন। এমনকি বান্ডির একটি কন্যাসন্তানও তিনি গর্ভে ধারণ করেছিলেন।
আদালতে বান্ডির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার সময় তাঁকে উদ্দেশ্য করে বিচারক বলেছিলেন, ‘বৈদ্যুতিক শক দ্বারা আপনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আদেশ দেওয়া হলো। আপনি মারা না যাওয়া পর্যন্ত সেই বিদ্যুৎ আপনার শরীরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে। নিজের যত্ন নিন, যুবক। আপনাকে আন্তরিকতার সঙ্গেই বলছি; নিজের যত্ন নিন। এই কক্ষে মানবতার যে সম্পূর্ণ অপচয় আমি দেখেছি, তা এই আদালতের জন্য একটি চরম ট্র্যাজেডি। সুন্দর যুবক আপনি। ভালো আইনজীবী হওয়ার কথা ছিল। আপনাকে আমার সামনে প্র্যাকটিস করতে দেখলেই বেশি খুশি হতাম আমি। কিন্তু আপনি অন্য পথে চলে গেলেন, বন্ধু। নিজের যত্ন নিন।’
ফ্লোরিডার আদালতে বান্ডির মা-ও উপস্থিত ছিলেন। ছেলে এত বড় অপরাধী কিংবা তাঁর মৃত্যুদণ্ড হবে, তা তিনি ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি। তবু মায়ের মন বলে কথা। রায়ের আগে আদালতকক্ষে তিনি মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ছোটখাটো একটি বক্তব্যও দিয়েছিলেন।
জীবনের শুরুর দিকে মা ইলিনর লুইস কোয়েলকে নিজের বড় বোন হিসেবে জানতেন বান্ডি। আর নানা-নানিকে ভাবতেন বাবা-মা। কারণ মায়ের অপরিণত বয়সেই তিনি গর্ভে এসেছিলেন। সত্যিকার বাবার পরিচয় কোনো দিনও জানা হয়নি তাঁর। কোয়েল অবশ্য দাবি করতেন, জ্যাক ওর্থিংটন নামে এক নাবিকের সঙ্গে মিলনের ফলেই বান্ডির জন্ম হয়েছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে এই নামে নৌবাহিনীতে কারও অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
টেড বান্ডির রহস্যময় সেই জীবনের ইতি ঘটে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার আরও প্রায় এক দশক পর ১৯৮৯ সালে। ফ্লোরিডার কারাগারে বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুর আগে বান্ডি বলে গিয়েছিলেন, তাঁর দেহাবশেষ যেন কেসকেড মাউন্টেন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওয়াশিংটন ও ওরেগনজুড়ে বিস্তৃত এই পাহাড়ি বনাঞ্চলেই বান্ডি তাঁর বেশির ভাগ শিকারকে গুম করেছিলেন।
১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি। সংগঠন করতেন বলে থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই একটি সরোরিটি হাউসে। একই সংগঠনের আরও জনা ত্রিশেক ছাত্রী ছিলেন ওই বাড়িতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রেমের উন্মাদনা আর বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-আড্ডায় দেখতে দেখতে কেটে গেল দুই বছর। তার পরই একদিন জীবনের এক কঠিন পরিণতির মুখোমুখি হলেন তিনি।
১৯৭৮ সালের জানুয়ারি মাসের সেই দিনটি ছিল শনিবার। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্লান্ত ছিলেন ক্যাথি। দুই দিন পরই ছিল ক্যালকুলাস পরীক্ষা। তাই একটু পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু শরীর আর সায় দিল না। সেদিন তাই মাঝরাতের আগেই রুমমেট কারেন শ্যান্ডলারকে নিয়ে লাইট বন্ধ করে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
মাঝরাত পেরিয়ে গেলে ঘুমের ঘোরেই কানে বাজে রুমের দরজা খোলার আওয়াজ। চোখ মেলে আলো-আঁধারির মাঝে চশমা ছাড়াই ক্যাথি দেখতে পান একটি মানুষের শরীর। সামনে দাঁড়িয়ে যেন তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছে! এর পরই দেখা গেল একটি হাত উঁচিয়ে ধরেছে অবয়বটি। পরক্ষণেই ক্যাথির মুখের ওপর সজোরে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করল সে। ক্যাথির কাছে এই আঘাতকে একটি চড়ের মতো মনে হলো। যেন কোনো ব্যথাই পেলেন না তিনি। কিন্তু ওক গাছের একটি মোটা ডাল দিয়ে করা ওই আঘাতে ততক্ষণে চুরমার হয়ে গেছে ক্যাথির চোয়াল। গালের একপাশ ছিঁড়ে ঝুলে পড়েছে।
এর পরই ক্যাথির রুমমেট কারেনের বিছানার দিকে এগিয়ে যায় লোকটি। কারণ ততক্ষণে জেগে উঠেছিলেন কারেন। নির্মমভাবে আঘাত করা হয় তাঁকেও। ক্যাথি তখন চিৎকার করার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো আওয়াজই বের হলো না। কারেনকে আঘাত করে লোকটি যখন দ্বিতীয়বারের মতো ক্যাথির দিকে এগিয়ে এল, তখনই জানালা দিয়ে একটি গাড়ির হেডলাইটের উজ্জ্বল আলো এসে তার মুখের ওপর পড়ল। সরোরিটি হাউসে বসবাস করা এক ছাত্রীকে নামিয়ে দিতে এসেছিল ওই গাড়ি। মুখে আলো এসে পড়ায় ভরকে যায় হামলাকারী এবং রুম থেকে দৌড়ে পালায়। পালানোর সময়ও ওই বাড়ির কয়েক ব্লক দূরে আরেকটি বাড়িতে ঢুকে শেরিল থমাস নামে আরও এক নারীকে গুরুতর জখম করে যায় সে।
আদালতে প্রমাণ হয়েছিল, সেদিনের সেই হামলাকারী আর কেউ নন—আমেরিকার সবচেয়ে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি। ক্যাথি আর কারেন সৌভাগ্যক্রমে তাঁর হাত থেকে বেঁচে গেলেও সেদিন রাতে ওই সরোরিটি হাউসেরই অন্য দুই ছাত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন তিনি। তাঁদের একজন মার্গারেট বোম্যান, অন্যজন লিসা লেভি। মূলত ওই বাড়িতে সবার আগে মার্গারেটের রুমেই প্রবেশ করেছিলেন বান্ডি। মার্গারেটকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তিনি যান লিসার রুমে। নির্মমভাবে হত্যা করেন তাঁকেও। শুধু তাই নয়, লিসার নিথর হয়ে যাওয়া দেহটিকে তিনি পাশবিক উপায়ে ধর্ষণও করেন। লিসার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল তাঁর কামড়ের দাগ। আর এই কামড়ের দাগই প্রমাণ করেছিল বান্ডির অপরাধ। ফ্লোরিডার আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।
কিন্তু ফ্লোরিডার ওই ঘটনা ছিল টেড বান্ডির দ্বারা সংঘটিত সর্বশেষ নৃশংসতাগুলোর একটি। এর আগেই ওয়াশিংটন, ওরেগন, কলোরাডো, ইউটাহসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত সাতটি অঙ্গরাজ্যে আরও অসংখ্য নারীর জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছিলেন এই সুশিক্ষিত, স্মার্ট এবং সুদর্শন যুবক। নিজের জবানিতেই তিনি অন্তত ৩০ জন নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছিলেন। যদিও তাঁর শিকারের সংখ্যা ৪০-এর বেশি বলে মনে করেন অনেকে। এসব হত্যাকাণ্ডের বেশির ভাগই সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে।
১৯৭৪ সালের বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে ওয়াশিংটন এবং ওরেগন থেকে যখন একের পর এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এর নেপথ্যের ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছিল রাজ্য দুটির পুলিশ। সেবার এ দুটি রাজ্যে মাত্র ছয় মাসেই ছয়জন নারী অপহৃত হন। ওয়াশিংটনের সিয়াটলে লেক সামামিশ স্টেট পার্ক থেকে একই দিনে প্রকাশ্য দিবালোকে নিখোঁজ হয়ে যান জেনিস অ্যান ও ডেনিস মেরি নামের দুই তরুণী। এ ঘটনা পুরো অঞ্চলে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তবে সেদিনই খুনিকে ধরার জন্য একটি সূত্র পেয়ে যায় পুলিশ। এক নারী এসে দাবি করেন, সুদর্শন এক যুবক তাঁকেও অপহরণ করতে চেয়েছিলেন। সরল বিশ্বাসে তিনি ওই যুবককে সাহায্য করতে গিয়েছিলেন। কারণ যুবকের একটি হাত আর্ম স্লিংয়ে (ব্যথাযুক্ত হাত গলায় ঝুলিয়ে রাখা) বাঁধা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সন্দেহ হলে তিনি যুবকের গাড়ির কাছ থেকে দ্রুত সরে এসেছিলেন।
টেড বান্ডির কাছ থেকে বেঁচে যাওয়া সেই নারীই পুলিশকে তাঁর চেহারা, বয়স ও শরীরের গড়ন সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, ঘন বাদামি চুলের ওই যুবকের ভক্সওয়াগন টেন বিটল মডেলের গাড়িটিও ছিল বাদামি। আর তাঁর চোখের মণি দুটি ছিল নীল।
নারীর বর্ণনা শুনে আঁকা একটি ছবি পরে পত্রিকায় প্রকাশ করে সন্দেহভাজন ব্যক্তির সন্ধান চায় পুলিশ। এই ছবি দেখে পুলিশের সঙ্গে অসংখ্য মানুষ যোগাযোগ করেন এবং সন্দেহভাজনদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। তবে তাঁদের মধ্যে অন্তত চারজন ছবিটি দেখে টেড বান্ডির মতো মনে হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। এই চারজনের মধ্যে একজন ছিলেন বান্ডির ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু, একজন তাঁর সহকর্মী এবং একজন শিক্ষক ছাড়াও ছিলেন তাঁর সেই সময়ের প্রেমিকা এলিজাবেথ ক্লোয়েফার! একটি পার্টিতে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁদের। দুবার বিবাহবিচ্ছেদের মুখোমুখি হওয়া এবং এক কন্যাসন্তানের জননী এলিজাবেথ প্রথম দেখাতেই বান্ডির প্রেমে পড়েছিলেন।
এদিকে চারজন টেড বান্ডির সঙ্গে সন্দেহভাজন ব্যক্তির চেহারার মিল থাকার কথা জানালেও পুলিশ তা শুরুতে উড়িয়ে দেয়। আইনে অধ্যয়নরত, এমন সুদর্শন আর মার্জিত ব্যক্তিত্বের একজন মানুষ, অতীতে যার কোনো অপরাধের রেকর্ডও নেই, তিনি কীভাবে একের পর এক নারীকে খুন করবেন, তা ছিল পুলিশের কল্পনারও অতীত। ১৯৭৮ সালে ফ্লোরিডার আদালতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এমন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বহুবার পার পেয়ে গেছেন বান্ডি। এমনকি তাঁর প্রতি মানুষের এমন মনোভবের সুযোগ নিয়ে দুবার জেল থেকেও পালিয়েছিলেন তিনি।
সন্দেহভাজন হিসেবে শুরুতে টেড বান্ডির বিষয়টি উড়িয়ে দিলেও পুলিশ ঠিকই তাঁর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছিল। একপর্যায়ে ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট তাঁকে ট্রাফিক অমান্যের ফাঁদে ফেলে গ্রেপ্তারও করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর ভক্সওয়াগন টেন বিটল গাড়িটির ভেতরে একটি ধাতব দণ্ড, হ্যান্ডকাফ, রশি, গ্লাভস, মুখোশসহ সন্দেহজনক কিছু জিনিস জব্দ করা হয়। সে যাত্রায় জুতসই প্রমাণের অভাবে খুব দ্রুতই ছাড়া পেয়ে যান বান্ডি। তবে পুলিশের নজর বলে কথা! ফলে খুব ঘন ঘন তাঁকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয় এবং আদালতে তাঁর হাজিরা দেওয়া একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়।
১৯৭৫ সালেই বান্ডিকে ক্যারল ডেরঞ্চ নামে এক নারীকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপহরণের পর বান্ডির হাত থেকে ফসকে গিয়েছিলেন ক্যারল। ফলে এই অপহরণে অবধারিতভাবে দোষী সাব্যস্ত হন বান্ডি। তাঁকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কলোরাডোর অ্যাসপেন কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় ১৯৭৭ সালে কলোরাডোর আরেক তরুণীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে। এই মামলায় নিজেই নিজের আইনজীবী হিসেবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেন আইনের ছাত্র বান্ডি। এর ফলে তিনি আইনবিষয়ক পড়াশোনার জন্য আদালত চত্বরের লাইব্রেরিতে যাতায়াতের সুযোগ পেতেন। এই সুযোগেই একদিন লাইব্রেরির দোতলার জানালা থেকে লাফ দিয়ে পালান। কিন্তু আট দিনের মাথায় তিনি আবারও ধরা পড়ে যান।
সেই বছরের ডিসেম্বরে বান্ডি আবারও পালান। এবার অ্যাসপান কারাগারের যে কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছিল, সেই কক্ষের ছাদ কেটে ছোট একটি গর্ত তৈরি করেছিলেন তিনি। আর এই গর্ত দিয়ে সহজে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য শরীরের ১৪ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন। গর্ত দিয়ে বেরিয়ে তিনি জেলারের অফিসকক্ষে ঢুকে পড়েছিলেন। জেলার বাইরে থাকায় সেখানেই কয়েদির পোশাক পাল্টে সাধারণ মানুষের বেশে জেল থেকে বেরিয়ে যান। কেউ তাঁকে সন্দেহও করেনি। এবার আর কোনো ভুল করেননি বান্ডি। যত দ্রুত সম্ভব কলোরাডো ছেড়ে প্রায় ২ হাজার মাইল দূরের অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডায় গিয়ে হাজির হন। যথারীতি সেখানেও তিনি দুজন নারীকে হত্যার পাশাপাশি আরও তিনজনকে মারাত্মক আহত করেন। গল্পের শুরুতে বলা ক্যাথি ক্লেইনার ছিলেন তাঁদেরই একজন।
সরোরিটি হাউসে সেদিনের সেই হামলার পর ফ্লোরিডায়ই কিম্বার্লি ডায়ান লিচ নামে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকেও অপহরণের পর হত্যা করেছিলেন বান্ডি। ফেরারি জীবনে ফ্লোরিডায় কোনো পরিচয়পত্র তৈরির সুযোগ ছিল না তাঁর। ফলে চাকরিও জোটেনি। এ অবস্থায় চুরি আর ছিনতাই করেই দিন কাটছিল তাঁর। চুরি করা একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চালাতে গিয়েই ফ্লোরিডার পুলিশের হাতে তিনি ধরা পড়ে যান। তবে পুলিশ তখনো জানত না এটাই আলোচিত ও কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার টেড বান্ডি।
বান্ডির পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায়ই ওই রাজ্যের তিন নারীকে হত্যা এবং আরও তিনজনের ওপর গুরুতর হামলার অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এবারও নিজের মামলা নিজেই লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই মামলা মিডিয়ার মাধ্যমে শুধু আমেরিকায় নয়, সারা পৃথিবীতেই আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়। মানুষের আগ্রহের কারণেই মামলাটির শুনানি হয় ক্যামেরার সামনে। অবাক করা বিষয় হলো, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলা চলার দিনগুলোতে আদালতকক্ষের ভেতরে বান্ডির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অসংখ্য মানুষ অবস্থান করতেন। বান্ডির এসব সমর্থকের প্রায় সবাই ছিলেন নারী। শুনানির সময় বান্ডি কোনো যুক্তি কিংবা পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করলে ওই নারীরা শিস বাজাতেন, হাততালি দিয়ে তাঁকে সাধুবাদ জানাতেন। নীল চোখে বান্ডি তাঁদের দিকে একনজর তাকিয়ে মুচকি হেসে নিজের আসনে গিয়ে বসতেন। শুনানির সেই দিনগুলোতে আদালতকক্ষে একজন নারীর উপস্থিতি ছিল অবশ্যম্ভাবী। তাঁর নাম ক্যারল অ্যান বোনি। অনেক আগে থেকেই বান্ডির প্রেমে পাগল ছিলেন তিনি। ফ্লোরিডার কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বান্ডিকে বিয়েও করেছিলেন। এমনকি বান্ডির একটি কন্যাসন্তানও তিনি গর্ভে ধারণ করেছিলেন।
আদালতে বান্ডির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার সময় তাঁকে উদ্দেশ্য করে বিচারক বলেছিলেন, ‘বৈদ্যুতিক শক দ্বারা আপনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আদেশ দেওয়া হলো। আপনি মারা না যাওয়া পর্যন্ত সেই বিদ্যুৎ আপনার শরীরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে। নিজের যত্ন নিন, যুবক। আপনাকে আন্তরিকতার সঙ্গেই বলছি; নিজের যত্ন নিন। এই কক্ষে মানবতার যে সম্পূর্ণ অপচয় আমি দেখেছি, তা এই আদালতের জন্য একটি চরম ট্র্যাজেডি। সুন্দর যুবক আপনি। ভালো আইনজীবী হওয়ার কথা ছিল। আপনাকে আমার সামনে প্র্যাকটিস করতে দেখলেই বেশি খুশি হতাম আমি। কিন্তু আপনি অন্য পথে চলে গেলেন, বন্ধু। নিজের যত্ন নিন।’
ফ্লোরিডার আদালতে বান্ডির মা-ও উপস্থিত ছিলেন। ছেলে এত বড় অপরাধী কিংবা তাঁর মৃত্যুদণ্ড হবে, তা তিনি ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি। তবু মায়ের মন বলে কথা। রায়ের আগে আদালতকক্ষে তিনি মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ছোটখাটো একটি বক্তব্যও দিয়েছিলেন।
জীবনের শুরুর দিকে মা ইলিনর লুইস কোয়েলকে নিজের বড় বোন হিসেবে জানতেন বান্ডি। আর নানা-নানিকে ভাবতেন বাবা-মা। কারণ মায়ের অপরিণত বয়সেই তিনি গর্ভে এসেছিলেন। সত্যিকার বাবার পরিচয় কোনো দিনও জানা হয়নি তাঁর। কোয়েল অবশ্য দাবি করতেন, জ্যাক ওর্থিংটন নামে এক নাবিকের সঙ্গে মিলনের ফলেই বান্ডির জন্ম হয়েছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে এই নামে নৌবাহিনীতে কারও অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
টেড বান্ডির রহস্যময় সেই জীবনের ইতি ঘটে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার আরও প্রায় এক দশক পর ১৯৮৯ সালে। ফ্লোরিডার কারাগারে বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুর আগে বান্ডি বলে গিয়েছিলেন, তাঁর দেহাবশেষ যেন কেসকেড মাউন্টেন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওয়াশিংটন ও ওরেগনজুড়ে বিস্তৃত এই পাহাড়ি বনাঞ্চলেই বান্ডি তাঁর বেশির ভাগ শিকারকে গুম করেছিলেন।
ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও ইসলামোফোবিয়া ও মুসলমানবিরোধী ঘৃণা ছড়ানোর নতুন ঢেউ সৃষ্টি করছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট–এর (সিএসওএইচ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এআই এখন
২০ মিনিট আগেধ্বংসের ঝুঁকিতে প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেনের সমাধি। ঐতিহাসিক এই সমাধিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে এবং ছত্রাক জমে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেচার সংবাদপত্রের এনপিজে হেরিটেজ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এ কথা জানা গেছে।
২৮ মিনিট আগেইউরোপীয় দেশগুলো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরো তথা ১৬২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে কি না। এই অর্থ রাশিয়ার বিরুদ্ধেই যুদ্ধের জন্য অস্ত্র কেনায় ব্যয় হবে। তবে ঋণ অনুমোদনের আগেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক—এই অর্থের সঙ্গে কী শর্ত যুক্ত হবে তা নিয়ে।
১ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কারণ, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকারি ব্যয় ও রাজস্বের ব্যবধান দ্রুতগতিতে বাড়ছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ ট্রিলিয়ন ১৯ বিলিয়ন ৮১৩ মিলিয়ন ডলার।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর নতুন অপতৎপরতা সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট–এর (সিএসওএইচ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এআই এখন সংখ্যালঘুবিরোধী প্রচারণার এক শক্তিশালী অস্ত্রে পরিণত হয়েছে।
জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনভিত্তিক এই অরাজনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি গত ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের ওয়েবসাইটে ‘এআই জেনারেটেড ইমেজারি অ্যান্ড দ্য নিউ ফ্রন্টিয়ার অব ইসলামোফোবিয়া ইন ইন্ডিয়া বা ভারতে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের নতুন সীমানা ও এআই-নির্মিত চিত্র’—শীর্ষক ৬০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতে মুসলিমদের লক্ষ্য করে তৈরি করা ১ হাজার ৩২৬টি এআই-নির্ভর ঘৃণামূলক পোস্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো এক্স, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে সক্রিয় ২৯৭টি পাবলিক অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে।
সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রাকিব হামিদ নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, ‘এটি কেবল সমুদ্রে ভাসমান বরফের চূড়ার মতোই দৃশ্যমান ক্ষুদ্র এক অংশ। ভারতের ডিজিটাল জগতে এর পরিধি অনেক বিশাল।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে এ ধরনের কার্যক্রম ছিল তুলনামূলক কম। কিন্তু ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ বেড়ে যায়। Stable Diffusion–স্ট্যাবল ডিফিউশন, Midjourney–মিডজার্নি ও DALL·E-ডল–ই—এর মতো এআই টুল সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য সহজলভ্য হয়ে ওঠার সঙ্গে সম্পর্কিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এআই-নির্মিত ছবিগুলো এখন মুসলিমদের মানবিকতাবোধহীনভাবে উপস্থাপন, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানো, সহিংসতাকে নান্দনিকভাবে সাজানো এবং নারীবিদ্বেষ ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।’
এই প্রতিবেদন ভারতে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কারণ, এতে উঠে এসেছে কীভাবে এআই সাম্প্রদায়িক প্রোপাগান্ডার বিস্তারকে আরও দ্রুততর করছে। এতে আরও সতর্ক করা হয়, মুসলিম নারীদের যৌন অবমাননাকর এআই-নির্মিত ছবি ও কনটেন্ট তৈরির প্রবণতা ক্রমবর্ধমান।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময়টাতে ভারতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ আন্দোলন তুঙ্গে ছিল। সেপ্টেম্বরে উত্তর ভারতের কানপুর শহর থেকে শুরু হয়ে এই আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। একটি ডানপন্থী হিন্দু সংগঠন ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ ব্যানারে আপত্তি জানালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিভিন্ন রাজ্যে পুলিশ হাজার হাজার মুসলিমের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সমাবেশের’ অভিযোগ আনে, যদিও আয়োজকেরা দাবি করেন—এগুলো ছিল শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সমাবেশ।
সিএসওএইচ–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘যেকোনো সাধারণ প্রতিবাদ বা স্থানীয় সংঘাতকেও এখন সহজেই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘৃণা ছড়াতে চায় তাদের হাতে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ‘এআই-নির্মিত ছবি এসব প্রেক্ষাপটে সহজেই ব্যবহার করা সম্ভব।’
এই অনুসন্ধান প্রকাশের পর উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ, ভারত এখনো এআই-নির্মিত মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত আইনগত ও সাংস্কৃতিক সক্ষমতা অর্জন করেনি।
ডিজিটাল প্রাইভেসি অধিকারবিষয়ক গবেষক শ্রীনিবাস কোদালি নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো, এসব কনটেন্ট সমাজের বিভিন্ন অংশে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বাসকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘এআই-নির্মিত মিডিয়ার প্রভাব সরলরেখায় চলে না। কে দেখছে, কীভাবে ব্যাখ্যা করছে—তা নির্ভর করছে দর্শকের মানসিক প্রেক্ষাপটে।’
ভারত সরকারের ২০২৫ সালের রোডম্যাপ অনুযায়ী, এআই-কে ‘উন্মুক্ত, সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য’ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে উদ্ভাবন ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ঘটাবে, নাগরিকদের ক্ষমতায়িত করবে এবং বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এক ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তুলবে।’
কোদালি আরও বলেন, ‘সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিকর বক্তব্য রোধের জন্য নিয়মকানুনের পক্ষে যুক্তি দিয়েছে, কিন্তু এআই সেই সীমানাগুলোকে আরও ঘোলা করে ফেলেছে। এটি একদিকে সৃজনশীল, অন্যদিকে প্রতারণার হাতিয়ার।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানহানি, ভুয়া তথ্য বা ঘৃণাবাচক বক্তব্যের মতো প্রচলিত ক্ষতিকর ভাষার ধরন তো ছিলই, এখন এআই সেই জগতে নতুন জটিলতা যোগ করেছে।’
হামিদ বলেন, সমস্যার মূল শিকড় লুকিয়ে আছে এআই মডেল তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে, ‘যেসব কোম্পানি এই মডেল বানাচ্ছে, তারা বিপুল পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিত তথ্য, ঘৃণা ছড়ায় এমন কনটেন্ট ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দিয়ে সেগুলো প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ফলে যে কেউ চাইলে কয়েক সেকেন্ডেই এসব মডেল দিয়ে মুসলিমবিদ্বেষী কনটেন্ট বানাতে পারে।’
প্রতিবেদনটির শেষে নয়টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। যার কিছু নীতিনির্ধারকদের জন্য, আর কিছু এআই মডেল নির্মাতাদের উদ্দেশ্যে। সেখানে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানকে ‘অবিলম্বে ও ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী শনাক্তকরণ, রিপোর্টিং ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু করতে হবে, যাতে অপব্যবহার তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত ও রোধ করা যায়।’
বুধবার ভারতের ইলেকট্রনিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য নতুন নিয়মের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীদের বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হবে যে—তাদের কনটেন্ট এআই-নির্মিত কি না।
ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর নতুন অপতৎপরতা সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট–এর (সিএসওএইচ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এআই এখন সংখ্যালঘুবিরোধী প্রচারণার এক শক্তিশালী অস্ত্রে পরিণত হয়েছে।
জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনভিত্তিক এই অরাজনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি গত ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের ওয়েবসাইটে ‘এআই জেনারেটেড ইমেজারি অ্যান্ড দ্য নিউ ফ্রন্টিয়ার অব ইসলামোফোবিয়া ইন ইন্ডিয়া বা ভারতে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের নতুন সীমানা ও এআই-নির্মিত চিত্র’—শীর্ষক ৬০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতে মুসলিমদের লক্ষ্য করে তৈরি করা ১ হাজার ৩২৬টি এআই-নির্ভর ঘৃণামূলক পোস্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো এক্স, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে সক্রিয় ২৯৭টি পাবলিক অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে।
সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রাকিব হামিদ নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, ‘এটি কেবল সমুদ্রে ভাসমান বরফের চূড়ার মতোই দৃশ্যমান ক্ষুদ্র এক অংশ। ভারতের ডিজিটাল জগতে এর পরিধি অনেক বিশাল।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে এ ধরনের কার্যক্রম ছিল তুলনামূলক কম। কিন্তু ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ বেড়ে যায়। Stable Diffusion–স্ট্যাবল ডিফিউশন, Midjourney–মিডজার্নি ও DALL·E-ডল–ই—এর মতো এআই টুল সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য সহজলভ্য হয়ে ওঠার সঙ্গে সম্পর্কিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এআই-নির্মিত ছবিগুলো এখন মুসলিমদের মানবিকতাবোধহীনভাবে উপস্থাপন, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানো, সহিংসতাকে নান্দনিকভাবে সাজানো এবং নারীবিদ্বেষ ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।’
এই প্রতিবেদন ভারতে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কারণ, এতে উঠে এসেছে কীভাবে এআই সাম্প্রদায়িক প্রোপাগান্ডার বিস্তারকে আরও দ্রুততর করছে। এতে আরও সতর্ক করা হয়, মুসলিম নারীদের যৌন অবমাননাকর এআই-নির্মিত ছবি ও কনটেন্ট তৈরির প্রবণতা ক্রমবর্ধমান।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময়টাতে ভারতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ আন্দোলন তুঙ্গে ছিল। সেপ্টেম্বরে উত্তর ভারতের কানপুর শহর থেকে শুরু হয়ে এই আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। একটি ডানপন্থী হিন্দু সংগঠন ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ ব্যানারে আপত্তি জানালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিভিন্ন রাজ্যে পুলিশ হাজার হাজার মুসলিমের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সমাবেশের’ অভিযোগ আনে, যদিও আয়োজকেরা দাবি করেন—এগুলো ছিল শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সমাবেশ।
সিএসওএইচ–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘যেকোনো সাধারণ প্রতিবাদ বা স্থানীয় সংঘাতকেও এখন সহজেই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘৃণা ছড়াতে চায় তাদের হাতে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ‘এআই-নির্মিত ছবি এসব প্রেক্ষাপটে সহজেই ব্যবহার করা সম্ভব।’
এই অনুসন্ধান প্রকাশের পর উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ, ভারত এখনো এআই-নির্মিত মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত আইনগত ও সাংস্কৃতিক সক্ষমতা অর্জন করেনি।
ডিজিটাল প্রাইভেসি অধিকারবিষয়ক গবেষক শ্রীনিবাস কোদালি নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো, এসব কনটেন্ট সমাজের বিভিন্ন অংশে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বাসকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘এআই-নির্মিত মিডিয়ার প্রভাব সরলরেখায় চলে না। কে দেখছে, কীভাবে ব্যাখ্যা করছে—তা নির্ভর করছে দর্শকের মানসিক প্রেক্ষাপটে।’
ভারত সরকারের ২০২৫ সালের রোডম্যাপ অনুযায়ী, এআই-কে ‘উন্মুক্ত, সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য’ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে উদ্ভাবন ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ঘটাবে, নাগরিকদের ক্ষমতায়িত করবে এবং বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এক ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তুলবে।’
কোদালি আরও বলেন, ‘সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিকর বক্তব্য রোধের জন্য নিয়মকানুনের পক্ষে যুক্তি দিয়েছে, কিন্তু এআই সেই সীমানাগুলোকে আরও ঘোলা করে ফেলেছে। এটি একদিকে সৃজনশীল, অন্যদিকে প্রতারণার হাতিয়ার।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানহানি, ভুয়া তথ্য বা ঘৃণাবাচক বক্তব্যের মতো প্রচলিত ক্ষতিকর ভাষার ধরন তো ছিলই, এখন এআই সেই জগতে নতুন জটিলতা যোগ করেছে।’
হামিদ বলেন, সমস্যার মূল শিকড় লুকিয়ে আছে এআই মডেল তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে, ‘যেসব কোম্পানি এই মডেল বানাচ্ছে, তারা বিপুল পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিত তথ্য, ঘৃণা ছড়ায় এমন কনটেন্ট ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দিয়ে সেগুলো প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ফলে যে কেউ চাইলে কয়েক সেকেন্ডেই এসব মডেল দিয়ে মুসলিমবিদ্বেষী কনটেন্ট বানাতে পারে।’
প্রতিবেদনটির শেষে নয়টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। যার কিছু নীতিনির্ধারকদের জন্য, আর কিছু এআই মডেল নির্মাতাদের উদ্দেশ্যে। সেখানে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানকে ‘অবিলম্বে ও ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী শনাক্তকরণ, রিপোর্টিং ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু করতে হবে, যাতে অপব্যবহার তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত ও রোধ করা যায়।’
বুধবার ভারতের ইলেকট্রনিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য নতুন নিয়মের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীদের বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হবে যে—তাদের কনটেন্ট এআই-নির্মিত কি না।
১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি।
০৫ জুলাই ২০২৪ধ্বংসের ঝুঁকিতে প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেনের সমাধি। ঐতিহাসিক এই সমাধিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে এবং ছত্রাক জমে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেচার সংবাদপত্রের এনপিজে হেরিটেজ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এ কথা জানা গেছে।
২৮ মিনিট আগেইউরোপীয় দেশগুলো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরো তথা ১৬২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে কি না। এই অর্থ রাশিয়ার বিরুদ্ধেই যুদ্ধের জন্য অস্ত্র কেনায় ব্যয় হবে। তবে ঋণ অনুমোদনের আগেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক—এই অর্থের সঙ্গে কী শর্ত যুক্ত হবে তা নিয়ে।
১ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কারণ, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকারি ব্যয় ও রাজস্বের ব্যবধান দ্রুতগতিতে বাড়ছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ ট্রিলিয়ন ১৯ বিলিয়ন ৮১৩ মিলিয়ন ডলার।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
ধ্বংসের ঝুঁকিতে প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেনের সমাধি। ঐতিহাসিক এই সমাধিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে এবং ছত্রাক জমে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেচার সংবাদপত্রের এনপিজে হেরিটেজ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এ কথা জানা গেছে।
১৯২২ সালের ৪ নভেম্বর ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার সমাধিটি আবিষ্কার করেন। এই সমাধি চারটি প্রধান অংশে বিভক্ত—প্রবেশদ্বার, অ্যান্টিচেম্বার (অগ্রকক্ষ), সমাধিকক্ষ এবং ভান্ডারঘর।
গবেষণায় বলা হয়েছে, অগ্রকক্ষ এবং সমাধিকক্ষের ছাদ জুড়ে বড় ফাটলের সৃষ্টি হওয়ায় সমাধির কাঠামোটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি ঢুকে দুর্বল ‘এসনা শেল’ শিলা ভিজিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে সেখানে নতুন ফাটল ও ফিসার তৈরি হচ্ছে।
গবেষণাপত্রের লেখক ড. সায়েদ হেমেদা জানান, এই সমাধিটি দীর্ঘকাল ধরে আকস্মিক বন্যা এবং বড় ধরনের ফাটলের শিকার হয়েছে। যার ফলে এর অবস্থা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ খারাপের দিকে গেছে।’
গবেষক জিওটেকনিক্যাল মডেলিং এবং হিসাবের সাহায্যে, জয়েন্টেড রক মডেল-সহ উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যাক্সিস থ্রিডি সফটওয়্যার ব্যবহার করে সমাধির বিদ্যমান সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণাটিতে সংখ্যাগত সিমুলেশনের মাধ্যমে আকস্মিক বন্যা এবং সমাধিটির প্রধান ফাটলের স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব বিশদভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অ্যান্টিচেম্বার (অগ্রকক্ষ) ও সমাধিকক্ষের ছাদের স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করা প্রধান উপাদানগুলো, বিকৃতি ও ধ্বংসের ধরন এবং গুরুত্বপূর্ণ দুর্বল অঞ্চলগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সমাধির বর্তমান স্থিতিশীলতার স্তরও নির্ধারণ করা হয়েছে।’
এই গবেষণার লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতে সমাধির স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য কার্যকর পরামর্শ প্রদান করা। সমাধিটি সংরক্ষণের জন্য এর অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে আর্দ্রতার তারতম্য কমানো এবং সংরক্ষণের একটি সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এই গবেষণায়।
দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আর্দ্রতার কারণে হওয়া ক্ষতিই একমাত্র কারণ নয়। কায়রো ইউনিভার্সিটির প্রত্নতত্ত্ব অনুষদের স্থাপত্য সংরক্ষণ বিদ্যার অধ্যাপক মোহামেদ আতিয়া হাওয়াশের বরাতে বলা হয়, ভ্যালি অব দ্য কিংস ঘিরে থাকা পাহাড়গুলোতে বড় বড় ফাটল রয়েছে, যার কারণে পাথরের চাঁই ভেঙে পড়লে সমাধিটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অধ্যাপক হাওয়াশ সতর্ক করে বলেন, ‘যে কোনো মুহূর্তে একটি বিপর্যয় ঘটতে পারে। কিংস ভ্যালিকে রক্ষা করতে হলে খুব দেরি হওয়ার আগেই পদক্ষেপ নিতে হবে। এটিকে একটি কঠোর সতর্কতা হিসেবে মানার আহ্বান জানান তিনি।
ধ্বংসের ঝুঁকিতে প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেনের সমাধি। ঐতিহাসিক এই সমাধিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে এবং ছত্রাক জমে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেচার সংবাদপত্রের এনপিজে হেরিটেজ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এ কথা জানা গেছে।
১৯২২ সালের ৪ নভেম্বর ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার সমাধিটি আবিষ্কার করেন। এই সমাধি চারটি প্রধান অংশে বিভক্ত—প্রবেশদ্বার, অ্যান্টিচেম্বার (অগ্রকক্ষ), সমাধিকক্ষ এবং ভান্ডারঘর।
গবেষণায় বলা হয়েছে, অগ্রকক্ষ এবং সমাধিকক্ষের ছাদ জুড়ে বড় ফাটলের সৃষ্টি হওয়ায় সমাধির কাঠামোটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি ঢুকে দুর্বল ‘এসনা শেল’ শিলা ভিজিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে সেখানে নতুন ফাটল ও ফিসার তৈরি হচ্ছে।
গবেষণাপত্রের লেখক ড. সায়েদ হেমেদা জানান, এই সমাধিটি দীর্ঘকাল ধরে আকস্মিক বন্যা এবং বড় ধরনের ফাটলের শিকার হয়েছে। যার ফলে এর অবস্থা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ খারাপের দিকে গেছে।’
গবেষক জিওটেকনিক্যাল মডেলিং এবং হিসাবের সাহায্যে, জয়েন্টেড রক মডেল-সহ উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যাক্সিস থ্রিডি সফটওয়্যার ব্যবহার করে সমাধির বিদ্যমান সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণাটিতে সংখ্যাগত সিমুলেশনের মাধ্যমে আকস্মিক বন্যা এবং সমাধিটির প্রধান ফাটলের স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব বিশদভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অ্যান্টিচেম্বার (অগ্রকক্ষ) ও সমাধিকক্ষের ছাদের স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করা প্রধান উপাদানগুলো, বিকৃতি ও ধ্বংসের ধরন এবং গুরুত্বপূর্ণ দুর্বল অঞ্চলগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সমাধির বর্তমান স্থিতিশীলতার স্তরও নির্ধারণ করা হয়েছে।’
এই গবেষণার লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতে সমাধির স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য কার্যকর পরামর্শ প্রদান করা। সমাধিটি সংরক্ষণের জন্য এর অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে আর্দ্রতার তারতম্য কমানো এবং সংরক্ষণের একটি সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এই গবেষণায়।
দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আর্দ্রতার কারণে হওয়া ক্ষতিই একমাত্র কারণ নয়। কায়রো ইউনিভার্সিটির প্রত্নতত্ত্ব অনুষদের স্থাপত্য সংরক্ষণ বিদ্যার অধ্যাপক মোহামেদ আতিয়া হাওয়াশের বরাতে বলা হয়, ভ্যালি অব দ্য কিংস ঘিরে থাকা পাহাড়গুলোতে বড় বড় ফাটল রয়েছে, যার কারণে পাথরের চাঁই ভেঙে পড়লে সমাধিটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অধ্যাপক হাওয়াশ সতর্ক করে বলেন, ‘যে কোনো মুহূর্তে একটি বিপর্যয় ঘটতে পারে। কিংস ভ্যালিকে রক্ষা করতে হলে খুব দেরি হওয়ার আগেই পদক্ষেপ নিতে হবে। এটিকে একটি কঠোর সতর্কতা হিসেবে মানার আহ্বান জানান তিনি।
১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি।
০৫ জুলাই ২০২৪ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও ইসলামোফোবিয়া ও মুসলমানবিরোধী ঘৃণা ছড়ানোর নতুন ঢেউ সৃষ্টি করছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট–এর (সিএসওএইচ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এআই এখন
২০ মিনিট আগেইউরোপীয় দেশগুলো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরো তথা ১৬২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে কি না। এই অর্থ রাশিয়ার বিরুদ্ধেই যুদ্ধের জন্য অস্ত্র কেনায় ব্যয় হবে। তবে ঋণ অনুমোদনের আগেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক—এই অর্থের সঙ্গে কী শর্ত যুক্ত হবে তা নিয়ে।
১ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কারণ, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকারি ব্যয় ও রাজস্বের ব্যবধান দ্রুতগতিতে বাড়ছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ ট্রিলিয়ন ১৯ বিলিয়ন ৮১৩ মিলিয়ন ডলার।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরো তথা ১৬২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে কি না। এই অর্থ রাশিয়ার বিরুদ্ধেই যুদ্ধের জন্য অস্ত্র কেনায় ব্যয় হবে। তবে ঋণ অনুমোদনের আগেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক—এই অর্থের সঙ্গে কী শর্ত যুক্ত হবে তা নিয়ে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বড় তিন দেশ—ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি—চায়, ইউক্রেন যে অর্থে অস্ত্র কিনবে, তা যেন ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পেই খরচ হয়। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর হাতে সেই অর্থ না যায়।
তবে রোববার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকে এই ইস্যুতে তীব্র আলোচনা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৈঠকে ইউরোপীয় কমিশনকে ঋণের আইনি প্রস্তাব তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। রাশিয়ার জব্দ সম্পদ থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে এই ঋণ দেওয়া হবে। এটি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা চাহিদা ও বাজেট ঘাটতি দুই ক্ষেত্রেই ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে, যদিও কী পরিমাণ কোথায় ব্যয় হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎস এর আগে প্রস্তাব করেছিলেন যে, এই ঋণ ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করতেও কাজে লাগানো উচিত। তাঁর ভাষায়, ‘এটি ইউরোপের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ কিন্তু নেদারল্যান্ডস, নর্ডিক ও বাল্টিক দেশগুলো বলছে, ইউক্রেনের প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ ব্যয়ের স্বাধীনতা থাকা উচিত। তারা মনে করে, ইউক্রেন চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রও কিনতে পারবে।
বার্লিন ও প্যারিসের চাপের কারণে ইইউ সম্মেলনের খসড়া বিবৃতিতে ‘ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা’ উল্লেখ করা হয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, এই শর্ত আসলে ভণ্ডামি। এক ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, ‘যদি লক্ষ্য হয় ইউক্রেনকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সাহায্য করা, তাহলে কেনা-বেচার শর্ত খোলা রাখা উচিত।’ তাদের মতে, ‘শুধু ইউরোপীয় অস্ত্র কিনতে হবে’—এমন নিয়ম দিলে ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র, যেমন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি প্যাট্রিয়ট মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, পাবে না।
ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অরপো বলেন, ‘আমরা চাই ইউক্রেন ইউরোপ থেকে আরও বেশি অস্ত্র কিনুক। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ইউরোপের সব সক্ষমতা এখনো নেই। তাই যুক্তরাষ্ট্র থেকেও কেনার সুযোগ রাখতে হবে।’
গত সপ্তাহে ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের এক বৈঠকেও এই বিভাজন প্রকাশ পায়। লিথুয়ানিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দোভিলে শাকালিয়েনে বলেন, ইউক্রেনের সবচেয়ে জরুরি চাহিদা পূরণের জন্য এই ঋণ ব্যবহার করা উচিত—সেই অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের হলেও। তিনি ন্যাটোর একটি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র দেবে, কিন্তু এর দাম পরিশোধ করবে ইউরোপীয় দেশগুলো।
আরও খবর পড়ুন:
ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরো তথা ১৬২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে কি না। এই অর্থ রাশিয়ার বিরুদ্ধেই যুদ্ধের জন্য অস্ত্র কেনায় ব্যয় হবে। তবে ঋণ অনুমোদনের আগেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক—এই অর্থের সঙ্গে কী শর্ত যুক্ত হবে তা নিয়ে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বড় তিন দেশ—ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি—চায়, ইউক্রেন যে অর্থে অস্ত্র কিনবে, তা যেন ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পেই খরচ হয়। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর হাতে সেই অর্থ না যায়।
তবে রোববার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকে এই ইস্যুতে তীব্র আলোচনা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৈঠকে ইউরোপীয় কমিশনকে ঋণের আইনি প্রস্তাব তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। রাশিয়ার জব্দ সম্পদ থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে এই ঋণ দেওয়া হবে। এটি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা চাহিদা ও বাজেট ঘাটতি দুই ক্ষেত্রেই ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে, যদিও কী পরিমাণ কোথায় ব্যয় হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎস এর আগে প্রস্তাব করেছিলেন যে, এই ঋণ ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করতেও কাজে লাগানো উচিত। তাঁর ভাষায়, ‘এটি ইউরোপের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ কিন্তু নেদারল্যান্ডস, নর্ডিক ও বাল্টিক দেশগুলো বলছে, ইউক্রেনের প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ ব্যয়ের স্বাধীনতা থাকা উচিত। তারা মনে করে, ইউক্রেন চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রও কিনতে পারবে।
বার্লিন ও প্যারিসের চাপের কারণে ইইউ সম্মেলনের খসড়া বিবৃতিতে ‘ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা’ উল্লেখ করা হয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, এই শর্ত আসলে ভণ্ডামি। এক ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, ‘যদি লক্ষ্য হয় ইউক্রেনকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সাহায্য করা, তাহলে কেনা-বেচার শর্ত খোলা রাখা উচিত।’ তাদের মতে, ‘শুধু ইউরোপীয় অস্ত্র কিনতে হবে’—এমন নিয়ম দিলে ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র, যেমন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি প্যাট্রিয়ট মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, পাবে না।
ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অরপো বলেন, ‘আমরা চাই ইউক্রেন ইউরোপ থেকে আরও বেশি অস্ত্র কিনুক। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ইউরোপের সব সক্ষমতা এখনো নেই। তাই যুক্তরাষ্ট্র থেকেও কেনার সুযোগ রাখতে হবে।’
গত সপ্তাহে ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের এক বৈঠকেও এই বিভাজন প্রকাশ পায়। লিথুয়ানিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দোভিলে শাকালিয়েনে বলেন, ইউক্রেনের সবচেয়ে জরুরি চাহিদা পূরণের জন্য এই ঋণ ব্যবহার করা উচিত—সেই অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের হলেও। তিনি ন্যাটোর একটি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র দেবে, কিন্তু এর দাম পরিশোধ করবে ইউরোপীয় দেশগুলো।
আরও খবর পড়ুন:
১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি।
০৫ জুলাই ২০২৪ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও ইসলামোফোবিয়া ও মুসলমানবিরোধী ঘৃণা ছড়ানোর নতুন ঢেউ সৃষ্টি করছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট–এর (সিএসওএইচ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এআই এখন
২০ মিনিট আগেধ্বংসের ঝুঁকিতে প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেনের সমাধি। ঐতিহাসিক এই সমাধিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে এবং ছত্রাক জমে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেচার সংবাদপত্রের এনপিজে হেরিটেজ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এ কথা জানা গেছে।
২৮ মিনিট আগেযুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কারণ, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকারি ব্যয় ও রাজস্বের ব্যবধান দ্রুতগতিতে বাড়ছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ ট্রিলিয়ন ১৯ বিলিয়ন ৮১৩ মিলিয়ন ডলার।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কারণ, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকারি ব্যয় ও রাজস্বের ব্যবধান দ্রুতগতিতে বাড়ছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ ট্রিলিয়ন ১৯ বিলিয়ন ৮১৩ মিলিয়ন ডলার।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এই ঋণের পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য গড়ে প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার ডলারের সমান। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক থিংকট্যাংক পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, এই ঋণ চীন, ভারত, জাপান, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির সম্মিলিত মূল্যের সমান।
মাত্র দুই মাসের কিছু বেশি সময় আগে, চলতি বছরের আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে দেশটির ঋণ ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ২০২৪ সালের নভেম্বরে ঋণ ছিল ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার, আর ওই বছরের জুলাই মাসে ৩৫ ট্রিলিয়ন ডলার। পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল এ পিটারসন বলেছেন, মার্কিন আইনপ্রণেতারা তাদের ‘মৌলিক আর্থিক দায়িত্ব’ পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এক ট্রিলিয়নের পর আরেক ট্রিলিয়ন ঋণ যোগ করে সংকটের পর সংকটে বাজেট তৈরি করা, এমন এক মহান জাতির জন্য একেবারেই উপযুক্ত নয়। এর পরিবর্তে ঋণের ঘড়ির কাঁটা যতই দ্রুত ঘুরছে, ততই সংসদ সদস্যদের উচিত দায়িত্বশীল সংস্কারের সুযোগ নেওয়া, যা দেশকে ভবিষ্যতের জন্য শক্তিশালী পথে নিয়ে যেতে পারে।’
এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিজ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণের মান ‘Aaa’ থেকে নামিয়ে ‘Aa1’ করেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, একের পর এক প্রশাসন বৃহৎ বার্ষিক বাজেট ঘাটতি ও সুদের ব্যয় বৃদ্ধির প্রবণতা উল্টে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে ফিচ ও স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস যথাক্রমে ২০১১ ও ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং নামিয়ে দেয়।
যদিও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে এখনো বিতর্ক আছে, যুক্তরাষ্ট্র কতটা ঋণ নিতে পারে আর্থিক বিপর্যয় সৃষ্টি না করে, তবু সবাই একমত যে বর্তমান ঋণের ধারা টেকসই নয়। ২০২৩ সালের এক বিশ্লেষণে পেন ওয়ারটন বাজেট মডেলের অর্থনীতিবিদেরা অনুমান করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ যদি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২০০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, তাহলে আর্থিক বাজার তা সহ্য করবে না।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষ কংগ্রেসনাল বাজেট অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশটির ঋণ জিডিপির ২০০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এর পেছনে বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রণীত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’-এর আওতায় দেওয়া ব্যাপক করছাড়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কারণ, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকারি ব্যয় ও রাজস্বের ব্যবধান দ্রুতগতিতে বাড়ছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ ট্রিলিয়ন ১৯ বিলিয়ন ৮১৩ মিলিয়ন ডলার।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এই ঋণের পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য গড়ে প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার ডলারের সমান। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক থিংকট্যাংক পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, এই ঋণ চীন, ভারত, জাপান, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির সম্মিলিত মূল্যের সমান।
মাত্র দুই মাসের কিছু বেশি সময় আগে, চলতি বছরের আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে দেশটির ঋণ ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ২০২৪ সালের নভেম্বরে ঋণ ছিল ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার, আর ওই বছরের জুলাই মাসে ৩৫ ট্রিলিয়ন ডলার। পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল এ পিটারসন বলেছেন, মার্কিন আইনপ্রণেতারা তাদের ‘মৌলিক আর্থিক দায়িত্ব’ পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এক ট্রিলিয়নের পর আরেক ট্রিলিয়ন ঋণ যোগ করে সংকটের পর সংকটে বাজেট তৈরি করা, এমন এক মহান জাতির জন্য একেবারেই উপযুক্ত নয়। এর পরিবর্তে ঋণের ঘড়ির কাঁটা যতই দ্রুত ঘুরছে, ততই সংসদ সদস্যদের উচিত দায়িত্বশীল সংস্কারের সুযোগ নেওয়া, যা দেশকে ভবিষ্যতের জন্য শক্তিশালী পথে নিয়ে যেতে পারে।’
এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিজ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণের মান ‘Aaa’ থেকে নামিয়ে ‘Aa1’ করেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, একের পর এক প্রশাসন বৃহৎ বার্ষিক বাজেট ঘাটতি ও সুদের ব্যয় বৃদ্ধির প্রবণতা উল্টে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে ফিচ ও স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস যথাক্রমে ২০১১ ও ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং নামিয়ে দেয়।
যদিও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে এখনো বিতর্ক আছে, যুক্তরাষ্ট্র কতটা ঋণ নিতে পারে আর্থিক বিপর্যয় সৃষ্টি না করে, তবু সবাই একমত যে বর্তমান ঋণের ধারা টেকসই নয়। ২০২৩ সালের এক বিশ্লেষণে পেন ওয়ারটন বাজেট মডেলের অর্থনীতিবিদেরা অনুমান করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ যদি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২০০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, তাহলে আর্থিক বাজার তা সহ্য করবে না।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষ কংগ্রেসনাল বাজেট অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশটির ঋণ জিডিপির ২০০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এর পেছনে বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রণীত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’-এর আওতায় দেওয়া ব্যাপক করছাড়।
১৯৭৬ সালে বাড়ি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলেন ক্যাথি ক্লেইনার। জীবনে এমন মধুর সময় তাঁর আর কখনোই আসেনি। বিশেষ করে মায়ের বকুনি আর কড়া শাসন থেকে দূরে এসে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তিনি। সারা দিন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন, কার সঙ্গে ঘুরেছেন—এসবেরও ছিল না কোনো জবাবদিহি।
০৫ জুলাই ২০২৪ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও ইসলামোফোবিয়া ও মুসলমানবিরোধী ঘৃণা ছড়ানোর নতুন ঢেউ সৃষ্টি করছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেট–এর (সিএসওএইচ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এআই এখন
২০ মিনিট আগেধ্বংসের ঝুঁকিতে প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের ত্রয়োদশ ফারাও তুতানখামেনের সমাধি। ঐতিহাসিক এই সমাধিতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে এবং ছত্রাক জমে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেচার সংবাদপত্রের এনপিজে হেরিটেজ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এ কথা জানা গেছে।
২৮ মিনিট আগেইউরোপীয় দেশগুলো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা ১৪০ বিলিয়ন ইউরো তথা ১৬২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে কি না। এই অর্থ রাশিয়ার বিরুদ্ধেই যুদ্ধের জন্য অস্ত্র কেনায় ব্যয় হবে। তবে ঋণ অনুমোদনের আগেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক—এই অর্থের সঙ্গে কী শর্ত যুক্ত হবে তা নিয়ে।
১ ঘণ্টা আগে