Ajker Patrika

সিরিয়ায় ক্ষমতাসীন এইচটিএস গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আহমেদ আল শারা। ছবি: সংগৃহীত
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আহমেদ আল শারা। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শামকে (এইচটিএস) সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।

গত বছর ডিসেম্বরে হায়াত তাহরির আল শামের নেতৃত্বেই মাত্র ১১ দিনের বিদ্রোহে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। আসাদ সরকারের পতনের পর বর্তমানে সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এইচটিএস নেতা আহমেদ আল শারা।

উল্লেখ্য, এইচটিএস নুসরা ফ্রন্ট হিসেবেও পরিচিত। শুরুতে এটি আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়েদার অংশ ছিল। ২০১৬ সালে আল-শারার নেতৃত্বে আল কায়েদা থেকে বেরিয়ে আসে এইচটিএস।

গত মাসের শেষের দিকে সিরিয়ার ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থিতিশীলতা ও শান্তির পথে সিরিয়ার যাত্রা সহজ করতেই ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা থেকে শুরু করে, ফিলিস্তিনি ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীসহ অন্য বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের ব্যাপারে দামেস্কের অবস্থান কেমন তার ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হবে বলেও জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

গত শুক্রবার সিরিয়া সরকার জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি ও সৈন্য প্রত্যাহার চুক্তি পুনরায় কার্যকর করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে ১৯৭৪ সালের ৩১ মে স্বাক্ষরিত চুক্তি উভয় পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে বিবদমান পক্ষগুলোকে সংঘাত থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই চুক্তিতে সুনির্দিষ্টভাবে বলা আছে, ‘এই চুক্তিটি কোনো শান্তি চুক্তি নয়। এটি ১৯৭৩ সালের ২২ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে একটি ন্যায়সংগত ও টেকসই শান্তির দিকে একটি পদক্ষেপ।’

৫০ বছর পর, আসাদ সরকারের পতনের পর, ইসরায়েল ঘোষণা দেয়, তারা সিরিয়ায় শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত চুক্তিটি অকার্যকর মনে করে। ২০২৪ সালে এই ঘোষণার পর ইসরায়েল সিরিয়ায় বিমান হামলা চালায়।

গত রোববার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সিরিয়া সফর করেন। গত ১৪ বছরে প্রথম কোনো ব্রিটিশ মন্ত্রীর সিরিয়া সফর এটি। তিনি বৈঠক করেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারার সঙ্গে। বৈঠকের পর সিরিয়ার জন্য ৯৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি নতুন সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই অর্থ মূলত দীর্ঘমেয়াদি পুনর্গঠন ও সিরীয় শরণার্থীদের আশ্রয়দানকারী দেশগুলোকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে দেওয়া হচ্ছে। এর আগেই যুক্তরাজ্য সিরিয়ার প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।

১৩ বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ ও আসাদ সরকারের পতনে দেশটির ৯০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আল শারা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ‘নতুন সিরিয়া’ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিলেও, তাঁর সরকারের আচরণ নিয়ে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আল-শারা তাঁর প্রশাসনে মাত্র একজন নারী মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন এবং অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিজেই সরাসরি নিয়োগ করেছেন। এ নিয়ে প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সম্প্রতিকালে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর ওপর একাধিক সহিংস হামলার ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে। এ ছাড়া, চলতি বছরের মার্চে নতুন নিরাপত্তা বাহিনী ও সাবেক শাসক বাশার আল-আসাদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে সংখ্যালঘু আলাউই সম্প্রদায়ের শতাধিক বেসামরিক ব্যক্তি প্রাণ হারান। গত এপ্রিলে ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী, নিরাপত্তা বাহিনী এবং দ্রুজ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। গত জুনে রাজধানী দামেস্কের একটি গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বদলির আদেশ ছিঁড়ে বরখাস্ত হলেন এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা

বাংলাদেশের সোনালি মুরগিতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া: গবেষণা

দরপত্র ছাড়াই জুলাই স্মৃতি জাদুঘরের কাজ পেল দুই প্রতিষ্ঠান, এরা কারা

ট্রাকে করে ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার নথি ইসিতে জমা দিয়েও নিবন্ধন পেল না এনসিপি

প্রেক্ষাপটবিহীন প্রতিবেদন কি সাংবাদিকতা হতে পারে?

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত