Ajker Patrika

জোহরান মামদানির পক্ষে নিউইয়র্কের বাংলাদেশিরা, কে তিনি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, ১৪: ৪৫
নিউইয়র্কে কোরবানির ঈদের জামাতে জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত
নিউইয়র্কে কোরবানির ঈদের জামাতে জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত

জোহরান কোয়ামে মামদানি নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত প্রার্থী। ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে বেশ মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন তিনি। নিউইয়র্ক টাইমস এবং অন্যান্য গণমাধ্যমে ব্যাপক কভারেজ পাচ্ছেন তিনি।

সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশি অভিবাসী জ্যাকসন হাইটস এলাকায় ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশিদের অকুণ্ঠ সমর্থন করেছেন। সেখানে তাঁকে নিয়ে বাংলাদেশি অভিবাসীদের উচ্ছ্বাসের কথা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন জোহরান মামদানি। ভিডিওতে বাংলাদেশি অভিবাসীরা জোহরানের পক্ষে তাঁদের অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা জোহরানের পক্ষে স্লোগান দিয়েছেন।

জোহরান মামদানির এক্স পোস্টের বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়:

‘আমার মেয়র! তোমার মেয়র!

পার্কচেস্টার থেকে জ্যাকসন হাইটস পর্যন্ত, বাংলাদেশি নিউ ইয়র্কবাসীরা প্রথম দিন থেকেই এই প্রচারাভিযানে অংশ নিচ্ছেন—এবং আমি তাঁদের সমর্থন পেয়ে গর্বিত।’

জোহরান মামদানি নিজেকে একজন ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে পরিচয় দেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচারে তিনি নিউইয়র্ক সিটিতে জীবনযাত্রার ব্যয় মোকাবিলায় প্রগতিশীল নীতিমালার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর প্রধান প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে: সাশ্রয়ী আবাসন, বিনা মূল্যে গণপরিবহন, সর্বজনীন চাইল্ড কেয়ার, উচ্চতর ন্যূনতম মজুরি, নগর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন মুদি দোকান ইত্যাদি।

শুরু থেকে পুরোনো ও অভিজ্ঞ প্রার্থীদের এগিয়ে রাখা হলেও সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে জোহরান মামদানির উত্থান স্পষ্ট। এমনকি সম্ভাব্য শীর্ষস্থানীয় প্রার্থী অ্যান্ড্রু কোমোর সঙ্গে ব্যবধান উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এই গতি তাঁর তৃণমূলের সমর্থন, আকর্ষণীয় নীতি প্রস্তাব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের ফল বলে মনে করা হচ্ছে।

মামদানি প্রগতিশীল আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয় নেতা মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধিকক্ষের সদস্য আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কার্তেজের উল্লেখযোগ্য সমর্থন পেয়েছেন। কিছু সংবাদমাধ্যমের মতে, তিনি ‘বামপন্থী’ গোষ্ঠী যেমন ‘জুয়িশ ভয়েস ফর পিস’ এবং ‘জুস ফর রেসিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক জাস্টিস’ থেকেও সমর্থন পেয়েছেন। এ ছাড়া ভারমন্টের স্বতন্ত্র সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সও তাঁর পক্ষে প্রচারে অংশ নিয়েছেন।

জোহরান মামদানি আফ্রিকার উগান্ডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়েছে। তাঁর জন্ম উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায়। সাত বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে নিউইয়র্ক সিটিতে চলে আসেন।

জোহরান নির্বাচিত হলে নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম এবং ভারতীয়-আমেরিকান মেয়র হবেন। তাঁর মা পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার। ‘সালাম বোম্বে!’ ও ‘নেমসেক’ এর চলচ্চিত্রের নির্মাতা তিনি। জোহরানের বাবা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মাহমুদ মামদানি। তাঁর বিখ্যাত বই ‘গুড মুসলিম, ব্যাড মুসলিম’।

জোহরান মামদানি ২০২০ সালে কুইন্সের একটি জেলার প্রতিনিধিত্ব করে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ইসরায়েলের প্রতি মামদানির তীব্র সমালোচনামূলক অবস্থান কিছু মহলে, বিশেষ করে ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের সমালোচনা করায় অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে ইহুদি-বিদ্বেষের অভিযোগ তোলে। জোহরান কলেজে ‘স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন’-এর একটি শাখার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

২০২৫ সালের ২৪ জুনের ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির ব্যালটে জোহরান মামদানির নাম রয়েছে। অ্যান্ড্রু কোমো-সহ আরও বেশ কয়েকজন উল্লেখযোগ্য প্রার্থীও এতে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন।

মোটকথা, জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের দৌড়ে একটি সাহসী প্রগতিশীল চ্যালেঞ্জের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাঁর নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তিনি জোরালো সমর্থন পাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত