Ajker Patrika

ক্রিমিয়ার আশা ছাড়ো, ন্যাটোকে ভুলে যাও: জেলেনস্কিকে ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মস্কোর সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে লক্ষ্য করে ট্রাম্প ভারতের প্রতি সমালোচনা বাড়িয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
মস্কোর সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে লক্ষ্য করে ট্রাম্প ভারতের প্রতি সমালোচনা বাড়িয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় গতকাল রোববার বলেছেন, মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে যুদ্ধের ইতি টানার দায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর। ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, জেলেনস্কি চাইলে ‘প্রায় এখনই রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করতে পারেন, অথবা তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেন।’

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এনবিসির খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প লিখেছেন—‘মনে রাখুন, এটি কীভাবে শুরু হয়েছিল। (সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক) ওবামার আমলে ক্রিমিয়াকে দিয়ে দেওয়া হলো (রাশিয়ার হাতে, ১২ বছর আগে কোনো রক্তপাত ছাড়াই) এবং ইউক্রেন কখনো ন্যাটোতে যাবে না।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্যগুলো ক্রেমলিনের দাবিকেই প্রতিফলিত করে। ক্রেমলিন ক্রিমিয়ার রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির স্বীকৃতি এবং ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবি করেছে। রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়। বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর নিন্দার মুখে পড়ে। এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ চালায়।

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল যার কয়েক ঘণ্টা পরই ওয়াশিংটনে জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এর আগে, গত ১৫ আগস্ট ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দুই নেতা ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে না পৌঁছালেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বলেছেন যে, বর্তমানে রাশিয়ার সেনারা যেখানে যেখানে যুদ্ধ করছে সেখানেই যুদ্ধবিরতি শুরু করবে, যদি ইউক্রেন দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল রাশিয়ার বলে মেনে নেয়।

ওয়াশিংটনে শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে জেলেনস্কি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ, তাঁর মতে—এই অঞ্চল হারানোর ফলে ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা অবস্থান থেকে বঞ্চিত হবে এবং মস্কোকে ইউক্রেনে আরও আক্রমণ চালানোর সুযোগ দেবে। বর্তমানে কিয়েভ দোনেৎস্কের প্রায় এক-চতুর্থাংশ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, বাকি অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার বলেছে, ‘পুতিনের প্রস্তাব অনুযায়ী, ইউক্রেনকে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা অবস্থান ছেড়ে দিতে হবে, যা রাশিয়ার সেনারা দ্রুত আক্রমণ বা প্রবেশ করতে সক্ষম নয় এবং সম্ভবত বিনা বিনিময়ে।’

পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ফক্স নিউজকে ট্রাম্প বলেন, তিনি জেলেনস্কি যুদ্ধ শেষ করার জন্য চুক্তি করতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়া একটি খুব বড় শক্তি, ইউক্রেন নয়। তারা দুর্দান্ত সৈনিক।’ এর আগে, ২০২৪ সালে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জাতিসংঘে বলেছিলেন, ‘যদি রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করে, যুদ্ধ শেষ। যদি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে, ইউক্রেন শেষ।’

ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার ১৭ আগস্টের আলাদা প্রতিবেদনে বলেছে, রাশিয়ার দাবি ‘যুদ্ধের মূল কারণ’ সমাধানের জন্য বড় ধরনের ন্যাটো ছাড়পত্র, যা জোটের স্থায়িত্ব এবং ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। মস্কো বলেছে যে কোনো শান্তি চুক্তি ‘যুদ্ধের মূল কারণ’ দূর করতে হবে, যার মধ্যে ন্যাটোর পূর্ব দিকে সম্প্রসারণ এবং ইউক্রেনে রাশিয়ান ভাষাভাষীদের বিরুদ্ধে অভিন্নতার অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত