Ajker Patrika

ইউক্রেনের জন্য ইউরোপকে আরও বেশি মার্কিন অস্ত্র কিনতে বাধ্য করতে চান ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পে প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনা শিগগির শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে তার আগে দেশটি ইউরোপীয় মিত্রদের ইউক্রেনের জন্য আরও বেশি মার্কিন অস্ত্র কিনতে বাধ্য করতে চায়। এ বিষয়ে অবগত দুটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপ কিয়েভের আলোচনার অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারে বলে ভাবছে ওয়াশিংটন।

যদি এই পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত হয়, তবে এটি ইউক্রেনীয় নেতাদের কিছুটা আশ্বস্ত করবে। কারণ, তাদের আশঙ্কা, ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের জন্য বাড়তি সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারেন। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বর্তমানে পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার তীব্র আক্রমণের মুখে ধীরে ধীরে ভূখণ্ড হারাচ্ছে।

এর আগেও অবশ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময় ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনের জন্য মার্কিন অস্ত্র কিনেছিল। তবে তারপরও ইউক্রেনে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রই এককভাবে শীর্ষে ছিল।

ট্রাম্পের ইউক্রেন বিষয়ক দূত লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) কিথ কেলোগসহ মার্কিন কর্মকর্তারা এ সপ্তাহে জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেবেন। আর সে সময়ই ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে সম্ভাব্য অস্ত্র বিক্রয় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো।

তাঁরা আরও জানিয়েছেন, এটি ট্রাম্প প্রশাসনের আলোচ্য কয়েকটি পরিকল্পনার একটি, যার মাধ্যমে কিয়েভে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখা যেতে পারে, তবে এতে যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য আর্থিক ব্যয় কমবে।

সোমবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেলোগ এই পরিকল্পনা নিশ্চিত করতে অস্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব সময় আমেরিকায় তৈরি অস্ত্র বিক্রি করতে চায়, কারণ, এটি আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে।’

কেলোগ আরও বলেন, ‘অনেক বিকল্প রয়েছে। এই মুহূর্তে সবকিছু আলোচনায় রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত অস্ত্রের চালান এখনো ইউক্রেনে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি পরিবর্তন করার কোনো জরুরি প্রয়োজন নেই।’

মার্কিন কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক সময়ে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ওয়াশিংটনের ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যয় করা কয়েক বিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করতে চায় এবং ইউরোপকে এই লড়াইয়ে আরও বেশি অবদান রাখতে হবে বলে মনে করে।

রোববার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেন, ‘এখানে একটি মূলনীতি হলো, ইউরোপীয়দেরই এই সংঘাতের দায়িত্ব নিতে হবে।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় দেশগুলোকে বাণিজ্যিক চুক্তির মাধ্যমে, নাকি মার্কিন অস্ত্রভান্ডার থেকে সরাসরি অস্ত্র কিনতে বলবে—তা এখনো পরিষ্কার নয়। কিছু বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পন্ন হতে কয়েক বছর সময় নিতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসন কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা করছে যে, তারা ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ চালিয়ে যাবে কি না এবং কীভাবে এটি করা হবে। ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইউক্রেনে সব সহায়তা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে তাঁর কিছু উপদেষ্টা যুক্তি দিচ্ছেন যে, ওয়াশিংটনের উচিত কিয়েভে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা, বিশেষ করে যদি শান্তি আলোচনা এ বছরের শেষ পর্যন্ত বিলম্বিত হয়।

বাইডেন তাঁর আমলে ইউক্রেনের জন্য ৬৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি নিরাপত্তা সহায়তা অনুমোদন করেছিলেন, যার মধ্যে তাঁর প্রশাসনের শেষ কয়েক মাসেই কয়েক বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ কিয়েভের কর্মকর্তারা বলেছেন, মস্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসার আগে ইউক্রেনের আরও বেশি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রয়োজন।

এদিকে, ইউক্রেনকে দেওয়ার জন্য যদি ট্রাম্প প্রশাসন অতিরিক্ত তহবিলের জন্য কংগ্রেসে আবেদন করে, তবে এটি অনেক রিপাবলিকান সদস্যদের কাছ থেকেই তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে পারে।

আর তাই, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইউরোপের সঙ্গে একটি অস্ত্র বিক্রয় চুক্তিকে সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছেন। ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুট গত মাসে বলেছিলেন, ইউরোপ ইউক্রেনের জন্য মার্কিন অস্ত্রের ব্যয় বহন করবে।

অপরদিকে, ওয়াশিংটন ও মস্কো শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে ভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছে। এর ফলে জল্পনা বাড়ছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ইউক্রেন ও রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে পারবে কি না।

রোববার ট্রাম্প বলেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং তিনি বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ শেষ করার আলোচনায় অগ্রগতি করছে।

ট্রাম্পের মন্তব্যের পর রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই র‍্যাবকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছেদের কিনারায় রয়েছে’ রাশিয়া এবং ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদের প্রচেষ্টা পরিত্যাগ করতে হবে এবং রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল দখল করেছে সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।

অপর দুটি মার্কিন সূত্র জানিয়েছে, হোয়াইট হাউস যুদ্ধ বন্ধের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে একটি শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করতে কয়েক মাস সময় নেবে এবং আলোচনার আগে বেশ কয়েকটি বিষয় মীমাংসা করতে হবে।

এ সপ্তাহে ইউরোপে অবস্থান করা কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনার পথ প্রস্তুত করতে কাজ করছেন। কেলোগ মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন যাতে কিয়েভের প্রতি সহায়তা বাড়ানো যায়।

কেলোগ বলেন, ‘আমি এটাকে পরিকল্পনার একেবারে শুরুর পর্যায় বলব না, কারণ আমরা এটি নিয়ে আগে থেকেই চিন্তা করছি। এই সপ্তাহে মার্কিন কর্মকর্তারা ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন আমাদের প্রত্যাশাগুলো মিত্রদের কাছে পৌঁছে দিতে।’

ট্রাম্পের এই বিশেষ দূত আরও বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমরা তাদের কাছ থেকে শুনতে চাই।’

মার্কিন কর্মকর্তারা ইউক্রেনের সঙ্গে একটি খনিজ সম্পদ সংক্রান্ত চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন। যার ফলে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ওয়াশিংটনের প্রবেশাধিকারের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করবে।

এই চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশ হয়নি। ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের উন্নয়নে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্র তাৎক্ষণিকভাবে লাভবান হবে না। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এটিকে তাদের ইউক্রেন নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফিলিস্তিন সংকট: অবশেষে গাজার ক্ষমতা হস্তান্তরে সম্মত হামাস

এএফপি, কায়রো
টানা দুই বছরের ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার সরবরাহ ব্যবস্থা। জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে অন্তত ১৫ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। পাত্র নিয়ে পানির খোঁঁজে বেরিয়েছে শিশুরা। গতকাল গাজার খান ইউনিস এলাকায়। ছবি: এএফপি
টানা দুই বছরের ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার সরবরাহ ব্যবস্থা। জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে অন্তত ১৫ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। পাত্র নিয়ে পানির খোঁঁজে বেরিয়েছে শিশুরা। গতকাল গাজার খান ইউনিস এলাকায়। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত টেকনোক্র্যাট কমিটির কাছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার শাসনভার হস্তান্তরে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। গাজায় সক্রিয় অন্য সংগঠনগুলোও কায়রো বৈঠকের এই সমঝোতার বিষয়ে একমত হয়েছে।

হামাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্বাধীন টেকনোক্র্যাটদের নিয়ে গঠিত অস্থায়ী এই কমিটি আরব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তায় কাজ করবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকায় যেন প্রশাসনিক কোনো শূন্যতা না থাকে, সে জন্য অবিলম্বে কাজ শুরু করবে তারা।

গত শুক্রবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের সামনে আসা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সেখানে সব গোষ্ঠীকে নিয়ে একটি জাতীয় সম্মেলন আহ্বানের প্রস্তাব এসেছে। ওই সম্মেলনে জাতীয় কৌশল নির্ধারণ এবং ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার (পিএলও) পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কায়রোতে হামাস ও ফাতাহর প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ আগামী দিনগুলোতেও বৈঠক চালিয়ে যাবে এবং ইসরায়েলি চাপ মোকাবিলা করে অভ্যন্তরীণ ঐক্য জোরদারে কাজ করবে।

এই আলোচনার সমান্তরালে মিসরের গোয়েন্দাপ্রধান হাসান রাশাদ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এর মধ্যে হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদ, পিএলওর অন্তর্ভুক্ত ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ও পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে হামাস ও ফাতাহ যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা যৌথভাবে পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠনে রাজি হয়েছিল। তবে ফাতাহর অনেক নেতা তখন সেই চুক্তির সমালোচনা করেন। এখন ট্রাম্প-সমর্থিত প্রস্তাব ঘিরে নতুন করে আশার আলো দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার মুখে দীর্ঘদিন থেকে হামাস বলে আসছে, যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে তারা আর সরাসরি উপত্যকার শাসনকাজ পরিচালনায় আগ্রহী নয়। তবে পশ্চিমাদের দাবি অনুযায়ী নিজেদের যোদ্ধাদের নিরস্ত্র করার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। তারা বলছে, একমাত্র স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হলেই তাদের যোদ্ধারা অস্ত্র সমর্পণ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অস্ত্র সমর্পণের পর তাঁদের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত করা হবে।

এদিকে গাজায় স্থিতিশীলতা ফেরাতে পাঁচ হাজার সদস্যের একটি বাহিনী গঠনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পরিকল্পনায় নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে তুরস্কের আগ্রহ থাকলেও তাতে আপত্তি জানিয়েছে ইসরায়েল। তাদের আপত্তির মুখে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এই বহুজাতিক বাহিনীর জাতীয়তা নিয়ে ইসরায়েলের স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা একটি আবশ্যকীয় শর্ত।

ইসরায়েলের অভিযোগ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মুসলিম ব্রাদারহুড ও হামাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠ। ফলে গাজায় স্থিতিশীলতা ফেরানোর বাহিনী থেকে তুরস্ককে অবশ্যই বাদ দিতে হবে। অন্যদিকে এই বাহিনীতে তুরস্কের উপস্থিতি চায় হামাস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জোহরান মামদানি পতিতাবৃত্তির সমর্থক, অভিযোগ অ্যান্ড্রু কুমোর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ও মেয়র পদপ্রার্থী অ্যান্ড্রু এম. কুমো। ছবি: সংগৃহীত
নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ও মেয়র পদপ্রার্থী অ্যান্ড্রু এম. কুমো। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ও মেয়র পদপ্রার্থী অ্যান্ড্রু এম. কুমো আসন্ন নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরান মামদানির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তিনি দাবি করেছেন, মামদানি বহু বছর ধরে পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দেওয়ার আইন প্রণয়নের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। কুমোর মতে এটি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক উদ্যোগ’।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে কুমো বলেন, ‘জোহরান মামদানি পতিতাবৃত্তিকে বৈধ করার জন্য প্রস্তাবিত আইনের উদ্যোক্তা। এই আইন পাস হলে সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ আরও শোষণের শিকার হবেন এবং মানব পাচারকারীরা, গ্যাং সদস্যরা ও সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র আরও শক্তিশালী হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গভর্নর হিসেবে আমি এই বিলের বিরুদ্ধে বহু বছর লড়াই করেছি।’

কুমো অভিযোগ করেন, নিউইয়র্ক সিটি এরই মধ্যে কুইন্সে ‘মার্কেট অব সুইটহার্টস’-এর মতো এলাকাগুলোতে পতিতাবৃত্তি, অপরাধ ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। এই আইন পাস হলে শহরের প্রতিটি কোণে আবারও পতিতাবৃত্তি শুরু হবে।

তিনি বলেন, ‘এটি জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে মামদানির অতীত কর্মকাণ্ড বিবেচনায় এটি আশ্চর্যের কিছু নয়। তিনি এনওয়াইপিডির অর্থায়ন কমানোর পক্ষে ছিলেন, এমনকি পুলিশ যেন গার্হস্থ্য পারিবারিক সহিংসতার ঘটনায় হস্তক্ষেপ না করতে পারে, সেটিরও পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি পুলিশকে বর্ণবাদী, সমকামবিরোধী এবং জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।’

কুমো বলেন, ‘মামদানি যে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্টস অব আমেরিকার সদস্য, এই সংগঠনও একই নীতির সমর্থক।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমার কথা মনে রাখুন, বাস্তব জগতে এই আইন পাস হলে বিপদের দরজা খুলে যাবে। মামদানি হয়তো নিউইয়র্ক সিটির পুরোনো অন্ধকার সময়টা মনে রাখেন না, যখন টাইমস স্কয়ার ছিল অপরাধপ্রবণ, পতিতাবৃত্তির কেন্দ্র এবং মানুষ জানত, কোন এলাকাগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। আমরা সেই সময়ের ভয়াবহতা জানি এবং কেউই সেই যুগে ফিরে যেতে চায় না।’

কুমো বলেন, ‘আমাদের আরও বেশি করে সাহায্য করতে হবে সেই মানুষদের, যাঁরা জোরপূর্বক বা শোষণের শিকার হয়ে পতিতাবৃত্তিতে জড়িত হয়েছেন। নিউইয়র্ককে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে হবে—তাদের জন্য পথ সহজ করা নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্রান্সে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে এই প্রথম কোনো নারীর যাবজ্জীবন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
অভিযুক্ত বেঙ্কিরেদ ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর লোলাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। ছবি: এএফপি
অভিযুক্ত বেঙ্কিরেদ ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর লোলাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। ছবি: এএফপি

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত এক আলজেরীয় নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ফ্রান্সের একটি আদালত। দেশটিতে এই প্রথম কোনো নারীকে এমন সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হলো।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) আদালত অভিযুক্ত দাহবিয়া বেঙ্কিরেদকে (২৭) দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেন। মামলার নথি থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০২২ সালে ১২ বছর বয়সী লোলা দাভিয়েকে নির্মমভাবে নির্যাতনের পর হত্যা করেছিলেন দাহবিয়া বেঙ্কিরেদ। এই ঘটনা সে সময় পুরো ফ্রান্সকে নাড়িয়ে দিয়েছিল এবং বেঙ্কিরেদের অবৈধ অভিবাসী পরিচয় ঘিরে দেশটিতে তীব্র অভিবাসনবিরোধী ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

দাহবিয়া বেঙ্কিরেদকে গ্রেপ্তার করা হয় লোলা নিখোঁজ হওয়ার পর। এরপর শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায় প্যারিসের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের লবিতে রাখা ট্রাঙ্কে। ওই ভবনেই কেয়ারটেকারের কাজ করতেন লোলার বাবা-মা।

রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারক বলেন, ‘অপরাধটি ছিল অতি নিষ্ঠুর ও নৃশংস। এটি প্রকৃত অর্থে একধরনের নির্যাতন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমন ভয়াবহ ও অবর্ণনীয় পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার যে মানসিক আঘাত পেয়েছে, আদালত তা বিবেচনায় নিয়েছে।’

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রায় ঘোষণার আগে যুক্তি দেন, বেঙ্কিরেদের অপরাধের ‘চরম ভয়াবহতা’ ও ‘অমানবিক নিষ্ঠুরতা’ বিবেচনায় তার জন্য ‘যাবজ্জীবন’ শাস্তিই প্রাপ্য।

প্রসঙ্গত, ফরাসি দণ্ডবিধির অধীনে যাবজ্জীবন দেশটিতে সর্বোচ্চ সাজা এবং এতে কোনো শর্তে মুক্তি বা শাস্তি কমানোর সুযোগ থাকে না।

তদন্তে জানা গেছে, বেঙ্কিরেদ ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর লোলাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

বিচার চলাকালে বেঙ্কিরেদ আদালতে নিজের অপরাধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যা করেছি, তা ভয়াবহ।’ তবে তিনজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তাঁর মধ্যে ‘মনস্তাত্ত্বিকভাবে বিপজ্জনক বা সাইকোপ্যাথিক প্রবণতা’ রয়েছে এবং তাঁর মানসিক অবস্থাকে চিকিৎসার মাধ্যমে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।

ঘটনার পর ফ্রান্সের রক্ষণশীল ও অতি ডানপন্থী রাজনীতিকেরা কড়া অভিবাসন আইনের দাবি তুলেছেন। কারণ বেঙ্কিরেদ স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ফ্রান্সে অবস্থান করছিলেন এবং দেশ ছাড়ার নির্দেশনা মানেননি। তবে নিহত লোলার মা রাজনীতিবিদদের অনুরোধ করেছেন, যেন তাঁরা তাঁর মেয়ের মৃত্যুকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করেন।

প্রসঙ্গত, ফ্রান্সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। এর আগে এমন সাজা পেয়েছিলেন কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার মিশেল ফুরনিরে এবং ২০১৫ সালের প্যারিস হামলার অন্যতম অভিযুক্ত সালাহ আবদেসলেম। ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৩০ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ৪১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মহারাষ্ট্রে ভয়াবহ ঘটনা ঘটিয়েছেন এক ব্যক্তি। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে দুই বছরের যমজ কন্যাসন্তানের গলা কেটে হত্যা করেছেন ওয়াসিম জেলার এক বাসিন্দা। পরে নিজেই থানায় গিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন ওই ব্যক্তি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম রাহুল চাভান। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে ভ্রমণে বের হয়েছিলেন চাভান। পথে স্ত্রীর সঙ্গে তুমুল বাগ্‌বিতণ্ডা হয় তাঁর। ঝগড়ার একপর্যায়ে স্ত্রী রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

স্ত্রী চলে যাওয়ার পর রাহুল একাই দুই মেয়েকে নিয়ে রওনা দেন। পথে বুলধানা জেলার আঞ্চারওয়াড়ি এলাকার একটি জঙ্গলে গাড়ি থামিয়ে দুই শিশুকে সেখানে নিয়ে যান। পরে নির্মমভাবে তাদের গলা কেটে হত্যা করেন।

ঘটনার পর রাহুল সরাসরি ওয়াসিম থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন এবং দুই মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুদের মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হত্যার পর রাহুল প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে মরদেহে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেছিলেন। আংশিকভাবে দগ্ধ অবস্থায় দুই শিশুর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

তবে বুলধানা জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দগ্ধ হওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। বিষয়টি ফরেনসিক পরীক্ষা ও ময়নাতদন্তের পর স্পষ্ট হবে।

ওয়াসিম জেলার ডিএসপি মনীষা কদম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলের নমুনা সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত